#তুমি_শুধু_আমারই_হও
লেখনীতে- অরনিশা সাথী
|২৪|
বেশ কিছুক্ষণ যাবত মিসেস অদিতির সাথে ফোনে কথা বলছেন শায়লা বেগম। নূর আর উৎসবও সেখানেই আছে। দুই ভাই-বোন অধীর আগ্রহে তাকিয়ে আছে মায়ের দিকে। শায়লা বেগম কথা শেষ করে ফোন রাখতেই উৎসব আর নূর উৎসুক দৃষ্টিতে তাকালো। শায়লা বেগম মুচকি হেসে বললেন,
–“রাজি হয়েছেন, যাও গিয়ে নিয়ে আসো অর্নিকে।”
কথাটা শোনা মাত্রই উৎসবের চোখমুখে খুশির ঝলক দেখা গেলো। নূরও প্রচন্ড খুশি। উৎসব শায়লা বেগমকে জড়িয়ে ধরলো। তারপর বেরিয়ে গেলো ঘর থেকে। নূর পেছন থেকে ডেকে বললো,
–“ভাইয়া দাঁড়াও, আমিও যাবো সাথে।”
উৎসব পেছন ফিরলো না আর। নিজের ঘরে যেতে যেতেই বললো,
–“পাঁচ মিনিট সময় দিলাম। এর মাঝে রেডি হতে পারলে যেতে পারবি নয়তো রেখেই চলে যাবো।”
উৎসবের কথা শুনে নূর একদৌড় দিয়ে নিজের ঘরে চলে গেলো রেডি হতে৷
অর্নিদের ড্রয়িংরুমে বসে আছে উৎসব আর নূর। মিসেস অদিতি সামনে হরেক রকমের নাস্তা দিয়েছেন। বিয়ের পর প্রথম উৎসব এ বাড়িতে এসেছে। যত্ন-আত্তির কোনো ত্রুটি রাখছেন না। ওদিকে অর্নি ঘরে ঘাপটি মেরে বসে আছে। লোকটা তার মানে নিজের কথাই রাখবে? অর্নি কিভাবে যাবে উৎসবের সামনে সেটাই ভাবছে। কাল রাতের বিষয় গুলো এখনো অর্নির মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। কথাগুলো ভাবতেই গা শিরশিরিয়ে উঠছে। মিসেস অদিতি বেশ কয়েকবার হাঁক ছেড়ে ডাকলেন অর্নিকে। ড্রয়িংরুমে ওদের পাশে গিয়ে বসতে বললো। কিন্তু অর্নি বেরই হচ্ছে না। এবার নূর-ই গেলো অর্নিকে ডাকতে। অর্নি বিছানার এক কোনে বসে ছিলো। নূর অর্নিকে এক পাশ থেকে জড়িয়ে ধরে বললো,
–“কি ব্যাপার ভাবী? তুমি এখানে বসে আছো যে? ওদিকে আমার ভাইয়া তো তোমার অপেক্ষায় বসে আছে। একবার আমার ভাইকে দর্শন দাও।”
অর্নি চোখ রাঙিয়ে তাকালো নূরের দিকে। নূর ফিক করে হেসে দিলো৷ অর্নি বললো,
–“মজা নিচ্ছিস?”
নূর ইনোসেন্ট গলায় বললো,
–“মজা নিবো কেন? সত্যিটাই তো বললাম, তুই তো আমার ভাবী-ই লাগিস। ভাবীকে ভাবী ডাকবো না?”
–“উঁহু, আগে যেমন ছিলাম তেমনই থাকবো।”
–“ভাইয়ার সামনে তোর নাম ধরে ডাকলে ভাইয়া চটে যাবে। ভাইয়া আমার থেকে কত বড় জানিস? আর সেই ভাইয়ার বউ তুই, সুতরাং তুই সম্পর্কে আমার অনেক বড়। বড় ভাইয়ের বউকে নাম ধরে ডাকি কি করে বল?”
–“সে তোর ভাইকে আমি দেখে নিবো___”
নূর বাঁকা হেসে বললো,
–“এখনই দেখা-দেখি হয়ে যাচ্ছে?”
অর্নি চোখ রাঙালো। নূর অর্নির কাছে গিয়ে বললো,
–“আচ্ছা দোস্ত, কাল কিছু হইছিলো তোদের মাঝে? না মানে দেখলাম ভাইয়া দরজা খুলে হনহনিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো৷ ক্ষানিক বাদে তুই-ও ভাইয়ার রুম থেকে বের হলি৷ এরপর দুজনে আর দুজনের দিকে একবারের জন্যও তাকাসনি। তোর চোখমুখেও কেমন একটা লজ্জা লজ্জা ভাব ছিলো। আর আজকেই বা ভাইয়া হুট করে তোকে আমাদের বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য জেদ ধরলো কেন? কাল কি রোমান্স টোমান্স করেছিলি নাকি? যার জন্য ভাইয়া তোকে ছাড়া আর এক মূহুর্ত থাকতে পারছে না?”
অর্নি লজ্জা পেলো। তবুও সেটা মুখে প্রকাশ করলো না। কঠিন স্বরে বললো,
–“কি যা-তা বলছিস?”
নূর অর্নির দিকে আরেকটু চেপে বসে বললো,
–“যা-তা না একদম ঠিক বলছি আমি। আচ্ছা কিস টিস করেছিলো তো অন্তত তাই না? এই বল না, কিস হয়েছে তোদের?”
এবার অর্নি লজ্জা ভাবটা আর লুকিয়ে রাখতে পারলো না। গাল দুটো লাল হয়ে গেলো মূহুর্তেই৷ নূর মুচকি হেসে বললো,
–“বাহ! ব্লাশ করছিস? তার মানে নিশ্চয়ই ভাইয়া কাল___”
–“অফ যা না ইয়ার।”
নূর ঠোঁট চেপে হাসলো। বললো,
–“আচ্ছা আচ্ছা, হাসছি না আর। তবে আজ রাতে তোদের মাঝে কি কি হবে সেটা বলবি আমায়৷ নয়তো তোর খবর আছে।”
অর্নি ভ্রু কুঁচকে ফেললো। এই মেয়েটাও না বড্ড ফাজিল হয়েছে। একদম ভাইয়ের মতো৷ যেমন ভাই তার তেমন বোন তো হবেই। কথাটা ভেবে একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো অর্নি। কিচেন থেকে মিসেস অদিতি আবারো ডাকলেন অর্নিকে। অর্নি এবার আর বসে না থেকে গুটিগুটি পায়ে বেরিয়ে গেলো ঘর থেকে।
একেবারে রাতের ডিনার করে অর্নিদের বাসা থেকে বেরিয়েছে উৎসব। আসার সময় অর্নি মিসেস অদিতি আর অর্নবকে জড়িয়ে ধরে সে কি কান্না। নূর বেশ কষ্টে অর্নিকে বুঝিয়ে শুনিয়ে শান্ত করায়। তারপর সবার থেকে বিদায় নিয়ে বেরিয়ে পড়ে ওদের বাসার উদ্দেশ্যে।
–
নূরের ঘরে বসে দুই বান্ধবী মিলে জম্পেশ আড্ডা দিচ্ছে। ওদিকে উৎসব নিজের ঘরে বসে অপেক্ষা করছে অর্নির জন্য৷ কিন্তু অর্নির আসার কোনো নাম গন্ধই নেই৷ বেশ কয়েকবার অর্নিকে টেক্সট করে উৎসব। কিন্তু অর্নি সিন করে রেখে দিয়েছে। কোনো রিপ্লাই অব্দি করেনি। এবার বেশ রাগ হলো উৎসবের। ধৈর্য্য হারা হয়ে পা বাড়ালো নূরের ঘরের দিকে।
উৎসবের উপস্থিতিতে অর্নি আর নূরের আড্ডায় ব্যাঘাত ঘটে। নূর ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করলো,
–“কি চাই?”
উৎসব চট করেই অর্নিকে কোলে তুলে নিয়ে বললো,
–“বউ চাই।”
কথাটা বলে নূরকে কোনো কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই নিজের ঘরে চলে এলো উৎসব। অর্নিকে বিছানায় বসিয়ে দিয়ে দরজা আটকে লাইট অফ করে দিলো। তারপর অর্নির পাশে গিয়ে বসে। অর্নি বললো,
–“আপনি এভাবে নূরের সামনে থেকে কোলে করে নিয়ে এলেন কেন? কি ভাবলো নূর?”
উৎসব ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বললো,
–“যা ভাবার ভাবুক, তোমাকে এতগুলো টেক্সট করে যে ঘরে আসতে বলেছি আসোনি কেন?”
–“ইচ্ছে হয়নি।”
–“তোমার ইচ্ছের উপর ডিপেন্ড করে চলতে হবে আমায়?”
অর্নি কিছু বললো না। উৎসব অর্নিকে টেনে নিজের কাছে এনে বলে,
–“দূরে দূরে কেন থাকতে চাও তুমি?”
অর্নি উৎসবের গলা জড়িয়ে ধরে বললো,
–“আমি দূরে দূরে থাকাতে আপনি যে ফেস এক্সপ্রেশনটা দেন ওটা আমার খুব ভালো লাগে দেখতে।”
বলেই ইনোসেন্ট হাসি দিলো অর্নি। উৎসব অর্নির নাকে নিজের নাক ঘঁষে দিয়ে বললো,
–“কিন্তু আমার এ দূরত্ব একদমই ভালো লাগে না বউ।”
অর্নি উৎসবের গাল বেশ জোরে কামড়ে ধরলো। উৎসব একটুও টু শব্দ করলো না। বরং উপভোগ করলো যেন বিষয়টা৷ উৎসব আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো অর্নিকে। অর্নি বেশ কিছুক্ষণ উৎসবের গাল কামড়ে ধরে রেখে ছেড়ে দিলো। উৎসবের গালভর্তি কাট করা চাপদাড়ি। তাই সহজেই কামড়ের দাগটা চোখে পড়বে না। কিন্তু একটু ভালো ভাবে লক্ষ্য করলেই বোঝা যাবে দাড়ির নিচে ফর্সা গালে কামড়ের দাগ বসে গেছে। অর্নি কামড় দেওয়া স্থানে চুমু দিয়ে বললো,
–“দূরত্ব-ই ভালোবাসার প্রখরতা বোঝায়।”
উৎসব টুক করে অর্নির ঠোঁটে চুমু খেয়ে অর্নির ঘাড়ে নাক ঘঁষে নেশালো কন্ঠে বললো,
–“কিছু কিছু সময় ভালোবাসার প্রখরতা বুঝতে এই দূরত্ব ঘুচাতে হয়।”
–
সকাল বেলা ঘুম ভেঙে নিজেকে এলোমেলো অবস্থায় দেখে কাল রাতের কথা মনে পড়ে যায় অর্নির। ঠোঁটের কোনে মৃদু হাসি ফুটে উঠলো। পাশে তাকিয়ে উৎসবকে দেখতে না পেয়ে সারা-রুমে চোখ বুলালো। কোথাও নেই উৎসব৷ অর্নি জামা-কাপড় গায়ে জড়িয়ে নেমে দাঁড়ালো বিছানা থেকে। এমন সময় উৎসব ব্যালকোনি থেকে রুমে এলো। উৎসবকে দেখে অর্নি এদিক সেদিক ওড়না খুঁজতে লাগলো। ওড়না না পেয়ে চাদর টেনে ধরে গায়ে জড়িয়ে নেয়। উৎসব মুচকি হেসে অর্নিকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে বললো,
–“এভাবে লজ্জা পেয়ে ঢেকে ফেলার কি আছে বউ?”
উৎসবকে ঠেলে দূরে সরাতে চাইলো অর্নি। কিন্তু পারলো না। উৎসব আরো শক্তপোক্ত ভাবে জড়িয়ে ধরে ঘাড় থেকে চুল সরিয়ে শব্দ করে চুমু খেলো। তারপর কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে বললো,
–“কাল তোমার সবকিছুই আমার দেখা হয়ে গেছে, ইন ফ্যাক্ট স্পর্শও করা___”
–“ছিঃ অসভ্য একটা।”
–“কাল রাতে যখন প্র্যাক্টিকালি করছিলাম তখন তো অসভ্য বলোনি, আর আজ শুধু মুখে বলাতে আমার গায়ে অসভ্যের তকমা লাগিয়ে দিচ্ছো? দিস ইজ নট ফেয়ার বউ।”
–“শাওয়ারে যাবো___”
উৎসব অর্নির গায়ে থেকে চাদর সরিয়ে দিয়ে কোলে তুলে নিয়ে বললো,
–“হ্যাঁ তো চলো না, একসাথেই শাওয়ার নিবো।”
কথাটা বলেই অর্নির দিকে তাকালো উৎসব। অর্নি মৃদু হেসে উৎসবের গলা জড়িয়ে ধরলো। উৎসব একগাল হেসে অর্নিকে নিয়ে পা বাড়ালো ওয়াশরুমের দিকে।
–
উৎসব অর্নি আর নূরকে ভার্সিটির সামনে নামিয়ে দিয়ে অফিসে চলে গেলো। দুই বান্ধবী কথা বলতে বলতে ক্লাসের দিকে এগোচ্ছে। আজ রুশান আসেনি, তাই ওরা দুজনেই আছে। অর্নি বললো,
–“শান্ত ভাইয়ার সাথে কি ঝগড়া হইছে তোর?”
অর্নির কথায় নূর দাঁড়িয়ে পড়লো। অর্নির দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলো,
–“কেন শান্ত তোকে কিছু বলেছে?”
–“টেক্সট করেছিলো আমায়, তুই নাকি ভাইয়ার টেক্সটের রিপ্লাই করছিস না, ফোন ধরছিস না।”
–“ধরবোও না আর।”
অর্নি ভ্রু কুঁচকে ফেললো নূরের কথা শুনে। জিজ্ঞেস করলো,
–“কেন?”
নূর আবারো হাঁটতে শুরু করলো। বললো,
–“শান্ত’র এক কাজিন ওর একটা পিক নিজের আইডিতে আপলোড করে ক্যাপশন দিছে ‘আস্তো এক ভালোবাসা’।”
–“হ্যাঁ তো?”
–“তো মানে? এখন ইশা আপু যদি ভাইয়ার ছবি আপলোড করে এমন ক্যাপশন দিতো তোর রাগ হতো না? আমারও রাগ হয়েছে। আমি শান্তকে বলেছি পিক ডিলিট করে দেওয়ার জন্য বলতে। কিন্তু শান্ত আমার কথা পাত্তা দিলো না? উল্টো একগাল হেসে বললো ওকে সিরিয়াসলি নেওয়ার কিচ্ছু নেই, আমাদের কাজিনমহলে ও এরকমই সবার সাথে মজা করে।”
–“তাহলে আর কি? ভাইয়া তো বললোই মজা করেছে।”
–“আমার জিনিস নিয়ে আমি কাউকে মজা করতে দিবো না৷ শান্ত একান্তই আমার। সেখানে ওকে নিয়ে ওর কাজিন এরকম কিছু আপলোড করবে কেন?”
–“বুঝলাম, এই নিয়ে রাগের বসে ফোন ধরছিস না?”
নূর কিছু বললো না৷ অর্নিও আর কিছু জানতে চাইলো না। আচমকাই নূরের হাতে টান পড়ায় পাশে তাকালো। দেখলো শান্ত নূরের হাত ধরে আছে। নূর ছাড়া পাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। শান্ত শক্ত করে নূরের হাত চেপে ধরে অর্নিকে বললো,
–“উৎসব ভাইয়ের বউ ভাবী, তুমি একটু এখানটায় দাঁড়িয়ে দেখো তো এদিকটায় যাতে কেউ না আসে।”
অর্নি মুচকি হেসে সম্মতি জানাতেই শান্ত নূরকে টেনে নিয়ে পাশের ক্লাসে ঢুকে পড়লো।
নূরের এক হাত দেয়ালের সাথে চেপে ধরে ওর মুখোমুখি দাঁড়িয়েছে শান্ত। নূর তখনো মোচড়ামুচড়ি করছে। রাগী চোখে তাকিয়ে বললো,
–“ছাড়ো আমায়। এখানে নিয়ে এসেছো কেন?”
–“তার আগে বলো আমার ফোন ধরছো না কেন?’
নূর অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে বললো,
–“ইচ্ছে হয়নি তাই।”
শান্ত আরো শক্ত ভাবে নূরের হাত চেপে ধরে বললো,
–“আমারও ইচ্ছে করছে না তোমায় ছাড়তে। যতক্ষণ না আমার ইচ্ছে হবে আমি তোমায় ছাড়বো না।”
–“আমি কিন্তু চিৎকার করবো।”
–“করো চিৎকার, তাহলে তো ভালোই হয়। খুব তাড়াতাড়ি আমাদের বিয়েটা হয়ে যাবে তোমাকে কাছে পেয়ে যাবো আমি।”
নূর কিছু বললো না। শান্ত বললো,
–“ছবি ডিলিট করে দিয়েছে তো, এরপরও রেগে থাকবে?”
–“তোমার ছবি আপলোড করবে কেন ওই মেয়ে?”
–“কাজিন হয় তো।”
–“সে যাই হোক, তোমার দিকে কেউ অন্য নজরে তাকাতে পারবে না। তাহলে তার চোখ খুলে লুডু খেলবো আমি বলে দিলাম। এটা তোমার ওই কাজিনকেও বলে দিও।”
–“অনেক ভালোবাসো আমায় তাই না?”
নূর কিছু না বলে অন্যদিকে মুখ ঘোরালো৷ চোখ জলে ভরে উঠেছে। শান্ত বললো,
–“ও হাফ-বউ শুনো না__”
শান্ত’র মুখে হাফ-বউ নাম শুনে ভ্রু কুঁচকে তাকালো নূর। বললো,
–“হাফ-বউ কি?”
শান্ত একগাল হেসে বললো,
–“আমাদের তো শুধু এনগেজমেন্ট হয়েছে পুরোপুরি বিয়ে হয়নি, সে ভাবে দেখতে গেলে তো তুমি আমার হাফ-বউ ই তাই না?”
শান্ত’র এমন কথায় নূর হেসে উঠলো। নূরের হাসিমাখা মুখের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো শান্ত৷ নূরের হাসিমুখটা দেখতে বেশ লাগছে ওর কাছে৷ কেমন অন্যরকম একটা ঘোরে চলে যাচ্ছে। ঘোরের মাঝেই আচমকা নূরের ঠোঁট জোড়া দখলে নিয়ে নিলো শান্ত। নূর ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে তাকিয়ে আছে শান্ত’র দিকে। শান্ত তখন নিজ কাজে ব্যস্ত। মিনিট দুয়েক বাদে নূর কামড় দেয় শান্ত’র ঠোঁটে। ব্যাথা পেয়ে নূরকে ছেড়ে দূরে সরে দাঁড়ায় শান্ত। নূর মুচকি হেসে বেরিয়ে যায় ক্লাস থেকে। ওদিকে নূরের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে মাথা চুলকে মুচকি হাসে শান্ত।
চলবে~
#তুমি_শুধু_আমারই_হও
লেখনীতে- অরনিশা সাথী
|২৫|
রুশান অর্নি নূর তিনজনে ক্যাম্পাসের বটগাছ তলায় বসে আছে। রুশান অর্নির কাঁধে মাথা রেখে বসে আছে। ওর চোখমুখে অসহায়ত্ব এর ছাপ। আর এদিকে অর্নি ডান হাতের আঙুল কামড়াচ্ছে আর কিছু ভেবে চলছে। অন্যদিকে নূরও একধ্যানে বসে কিছু একটা ভাবছে। হঠাৎ অর্নি জোরে চিৎকার দিয়ে বললো,
–“পাইছি___”
নূর আর রুশান উৎসুক দৃষ্টিতে তাকালো অর্নির দিকে। নূর অর্নির দিকে ঘুরে বললো,
–“কি আইডিয়া পেয়েছিস? দ্রুত বল, আমাদের হাতে আজকের দিনটায় আছে সময়।”
রুশান কাঁদোকাঁদো চোখে তাকিয়ে বললো,
–“দোস্ত আমি তরীকে সত্যিই হারিয়ে ফেলবো তাই না?”
নূর রুশানের মাথায় গাট্টা মেরে বললো,
–“একদম নেগেটিভ ভাববি না বলে দিলাম। তোর তরী তোরই থাকবে।”
–“হ্যাঁ আমরা আছি কি করতে? তরী তোরই হবে, আর সেটা যে করেই হোক আমরা সম্ভব করবো।”
অর্নি খুব সিরিয়াস ভঙ্গিতে বললো কথাটা। রুশান একটু হলেও আশার আলো পেলো। ও জানে ওর এই দুই বন্ধু থাকতে আর কোনো চিন্তা নেই। ওরা ওদের সর্বস্ব দিয়ে চেষ্টা করবে তরীকে ওর লাইফে এনে দেওয়ার জন্য৷ অর্নি বললো,
–“বিয়ের আসর থেকে কনে ভাগিয়ে নিয়ে আসবো আমরা।”
অর্নির কথায় নূর হাসলো এবং বললো,
–“জোস আইডিয়া দোস্ত। বিয়ের আসর থেকে কনে ভাগানোর এক্সপিরিয়েন্সটা হয়ে যাবে রুশান আর তরীকে মিল করার সুবাদে।”
অর্নি চিন্তিত গলায় বললো,
–“তরী কি রাজি হবে?”
এই কথাটা ভেবে নূরও ক্ষানিকটা চিন্তিত হলো। রুশানকে বললো,
–“তরীকে ফোন কর এক্ষুনি। আর আমাদের প্ল্যানের কথাটা জানা ওকে।”
রুশান তৎক্ষনাৎ ফোন করে তরীকে জানালো সব। তরী রাজি আছে বিয়ের আসর ছেড়ে চলে আসতে। তরীর বাবা বেঁচে নেই, মায়ের অন্য জায়গায় বিয়ে হয়েছে, সেই থেকে মামা-মামীর সংসারেই বড় তরী। নানা অবহেলা, কটাক্ষ কথা, অত্যাচার সহ্য করেও পরে ছিলো এতদিন মামার বাড়িতে। কারন তরীর যে আর যাওয়ার মতো কোনো জায়গা ছিলো না৷ নিজের টিউশনের টাকায় নিজের খরচ বহন করেছে। এখন ওর থেকে বয়সে অনেক বড় এক পাত্র জোগাড় করে তার সাথেই তরীর বিয়ের বন্দবস্ত করছে ওর মামা-মামী। তরী এই বিয়েতে রাজি না৷ তাই ওর মামি বেশ মারধরও করেছে ওকে৷ বাসায় থেকে বের হওয়া বন্ধ করে দিয়েছে৷ আজ সন্ধ্যায় তরীর হলুদ। ঘরোয়া ভাবেই কোনোভাবে বিয়েটা সারতে চায় তরীর মামা-মামী। এসবকিছু ভেবে তপ্ত শ্বাস ফেললো রুশান৷ অর্নি রুশানের কাঁধে হাত রেখে বললো,
–“চিন্তা করিস না, এখন যা হবে সব ঠিকঠাকই হবে৷”
অর্নির কথায় নূর সায় দিয়ে বললো,
–“আমরা থাকতে তোদের আলাদা হতে দিবো না দোস্ত।”
রুশান জাপ্টে ধরলো দুই বন্ধুকে৷ বললো,
–“এজন্যই তো তোদের এত ভালোবাসি৷ তোরা এভাবেই সবসময় আমার সাথে থাকিস দোস্ত।”
রুশানের কথায় অর্নি আর নূর মুচকি হেসে ওর পিঠে হাত রাখলো। তারপর দুজনে একসাথেই বললো,
–“অবশ্যই থাকবো৷ দুনিয়া এফোঁ’ড়-ওফোঁ’ড় হয়ে গেলেও আমাদের বন্ধুত্বে চুল পরিমান দূরত্ব আসবে না। আমরা অলওয়েজ একসাথে থাকবো।”
–
অর্নি আর নূর রেডি হয়েছে তরীদের বাসায় যাওয়ার জন্য। এমন সময় শায়লা বেগম আসলেন সেখানে। দুজনকে রেডি হতে দেখে ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করলো,
–“তোরা কোথাও বেরোচ্ছিস নাকি?”
–“হ্যাঁ আম্মু, একটু দরকার ছিলো।”
নূরের কথায় শায়লা বেগম অর্নির দিকে তাকালো। জিজ্ঞেস করলো,
–“উৎসব জানে? ওকে বলে বের হচ্ছিস তো?”
অর্নি অসহায় চোখে তাকালো। শায়লা বেগম বললেন,
–“তারমানে জানে না? যেখানেই যাচ্ছিস উৎসবের থেকে পারমিশন নিয়ে যা। নয়তো পড়ে জানতে পারলে প্রচন্ড ক্ষেপে যাবে।”
অর্নি শায়লা বেগমকে জড়িয়ে ধরে বললো,
–“শাশুমা__”
–“একটা থাপ্পড় মারবো ফাজিল মেয়ে, শাশুমা কি?”
অর্নি হাসলো। হেসে বললো,
–“আচ্ছা মা, তুমি তোমার ছেলেকে একটু ম্যানেজ করে নিও প্লিজ?”
শায়লা বেগম অর্নির থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে বললেন,
–“না বাপু, আমি ওসবে নেই৷ আমার কথায় সে মানবে না৷ এখন তুই যদি না জানিয়ে যেতে চাস তো যাবি। পরে বাড়ি ফিরে তোর বরকে তুই সামলাবি, তখন তোদের মাঝে একদম ডাকবি না আমাকে।”
অর্নি কাঁদোকাঁদো চোখে তাকালো শায়লা বেগমের দিকে। নূর বললো,
–“ভাইয়াকে ফোন দিয়ে বল।”
–“তোর ভাইয়া যদি আসল কারন জানে জীবনেও বের হতে দিবে না বাসা থেকে।”
অর্নির কথায় শায়লা বেগম ভ্রু কুঁচকে তাকালো ওদের দিকে। সন্দিহান গলায় প্রশ্ন করলো,
–“এই সত্যি করে বল তো কোথায় যাচ্ছিস? নিশ্চয়ই কোনো উল্টাপাল্টা কাজে যাচ্ছিস৷ নয়তো উৎসবকে জানালে ও যেতে দিবে না কেন?”
–“কাজটা ভালোভাবে মিটে গেলে বাসায় এসে বলবো।”
কথাটা শায়লা বেগমকে বললো নূর৷ তারপর অর্নির দিকে তাকিয়ে বললো,
–“ভাইয়াকে ফোন কর।”
অর্নি ফোন করলো উৎসবকে। কয়েকবার রিং হতেই ফোন রিসিভ করলো উৎসব। বাঁকা হেসে বললো,
–“আজ আকাশে সূর্য কোনদিকে উঠেছে? আমার বউ নিজ থেকে ফোন করেছে যে আমায়?”
–“একটা দরকার ছিলো__”
–“হুম বলো।”
–“আমি আর নূর একটু বের হচ্ছি।”
ভ্রু কুঁচকে ফেললো উৎসব। গম্ভীর কন্ঠে জিজ্ঞেস করলো,
–“কোথায় যাবে?”
–“আস্ আসলে একটু দর্ দরকার ছি__”
–“তোতলাচ্ছো কেন? যা জিজ্ঞেস করেছি স্পষ্ট ভাবে বলো।”
অর্নি কিছু বললো না। নূর ফোন নিয়ে লাউডে দিলো৷ তারপর বললো,
–“ভাইয়া আমরা একটু শপিংয়ে যাবো।”
–“তো এই কথাটা বলতে তোর বান্ধবী এত তোতলাচ্ছে কেন? কাল ফ্রি আছি, আমি নিয়ে যাবো।”
নূর মৃদু চিৎকার করে বললো,
–“নাহ, আমাদের আজই দরকার।”
ভ্রু কুঁচকালো উৎসব৷ হাত ঘড়িতে সময় দেখে বললো,
–“সন্ধ্যার পর আমি বাসায় আসছি, তারপর নিয়ে যাবো।”
নূর ভাবলো কিছু সেকেন্ড, তারপর চট করেই বললো,
–“রুশান যাবে আমাদের সাথে। ও-ই শপিং করবে তা্ তাই আমাদের নিয়ে যাবে সাথে চুজ করার জন্য।”
–“সত্যি বলছিস তো?”
–“হ্যাঁ একদম।”
–“আচ্ছা তাহলে যা। সাবধানে চলাফেরা করিস৷ আর তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরবি।”
নূর সম্মতি জানাতেই উৎসব লাইন কেটে দিলো৷ এতক্ষণে দুই বান্ধবী হাঁফ ছাড়লো। শায়লা বেগম ওদের কথাটা বিশ্বাস করতে পারলেন না। বললেন,
–“যদি উল্টাপাল্টা কিছু করে ঝামেলায় পড়িস আর সেটা যদি উৎসব জানে তাহলে তোদেরকে বাঁচাতে একদমই তোদের হয়ে উৎসবের সাথে কথা বলবো না আমি।”
কথাটা বলে শায়লা বেগম চলে গেলেন। অর্নি আর নূরও বেরিয়ে পড়লো বাসা থেকে।
–
তরীদের বাসার সামনে এসে দাঁড়িয়েছে অর্নি নূর আর রুশান। তিনতলা বাড়িটার দোতালায় ভাড়া থাকে তরীর মামা-মামী৷ রুশানকে বিল্ডিংয়ের পেছনের দিকে গিয়ে দাঁড়াতে বলে তরীদের বাসায় ঢুকে পড়লো অর্নি আর নূর৷ ওদের দুজনকে দেখে তরীর মামী ভ্রু কুঁচকে ফেললেন। এ দুজনকে তো ওনি চিনেন না। তাহলে এরা এখানে এসেছেন কেন? তরীর মামির এসব ভাবনার মাঝেই তরী ঘর থেকে বেরিয়ে বললো,
–“মামী ওরা দুজন আমার ফ্রেন্ড। আমিই ওদের ডেকেছিলাম। আজ তো আমার হলুদ আমার বন্ধুরা থাকবে না তা কি হয়?”
তরীর মামী বেশ কিছুক্ষণ সন্দেহের দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে বললেন,
–“আচ্ছা ঘরে নিয়ে যা। আর একটু পরই ছেলের বাসা থেকে ছেলের বোনেরা আসবে হলুদ দিতে রেডি থাকিস।”
তরী সম্মতি জানিয়ে ওদের দুজনকে নিয়ে নিজের রুমে গেলো। অর্নি তরীকে পরখ করে বললো,
–“বাহ! তোমাকে তো হলুদের শাড়িতে কোনোরমম সাজ ছাড়াই বেশ লাগছে। সাজলে তো আর কোনো কথাই ছিলো না।”
তরী হাসলো। তারপর জিজ্ঞেস করলো,
–“রুশান কোথায় আপু?”
–“তোমার ব্যালকোনি বরাবর নিচেই আছে ও। এখন দ্রুত চলো।”
এই বলে নূর ব্যাগ থেকে মোটা একটা দড়ি বের করে ব্যালকোনিতে গেলো। সাথে অর্নি আর তরীও গেলো। তরী নিচে তাকাতেই রুশানকে দেখতে পেলো। নূর আর অর্নি মিলে শক্তভাবে দড়িটা ব্যালকোনির রেলিঙে বেঁধে তরীকে ইশারা করলো নামার জন্য। তরীও দেরী না করে দড়ি বেয়ে নিচে নামতে শুরু করলো৷ অর্নি রুশানকে টেক্সট করলো,
–“মেইন রোডের কাছে গিয়ে ওয়েট কর, আমরা আসছি।”
রুশান ছোট্ট একটা টেক্সট করে দিলো। তরী নামতেই ওকে নিয়ে সরে গেলো এখান থেকে৷ এবার নূর আর অর্নির যাওয়ার পালা। সবার সামনে দিয়ে গেলে তো হাজারটা প্রশ্ন করবে৷ মাত্রই আসলো আবার হলুদ না লাগিয়ে চলে গেলে সবাই নানা প্রশ্ন করবে। তাই দুজনে ভাবলো ওরা দড়ি বেয়েই নিচে নামবে। নূর দ্রুত ব্যাগটা কাঁধে ঝুলিয়ে আগে নেমে পড়লো। লাস্টে গিয়ে হাতের বাঁধন আলগা হয়ে পড়ে গেলো নূর। পায়ে হালকা ব্যাথা পেলো। সেটা আমলে না নিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে জামা ঝাড়া দিলো। এবার অর্নির পালা। অর্নি গিয়ে আগে রুমের লক খুলে দরজাটা হালকা ভিরিয়ে আসলো। তারপর আল্লাহর নাম মুখে নিয়ে দড়ি বেয়ে নামতে শুরু করলো। রেলিঙে বেজে অর্নির ডান হাতের কুনইতে ক্ষানিকটা ছিলে যায়৷ হালকা রক্ত বেরিয়েছে। নিচে নেমে অর্নি আর নূর দুজনে একসাথে মেইন রোডের দিকে এগোলো। হঠাৎ অর্নি মৃদু চিৎকার করলো। নূর ভ্রু কুঁচকে তাকালো অর্নির দিকে। অর্নি বসে পড়লো মাটিতে। বা পা উঁচু করে দেখলো তালুতে একটা ভাঙা কাঁচের টুকরো বিঁধে আছে। নূর দ্রুত ওর পাশে বসে বললো,
–“দেখে হাঁটবি তো, ইশ্ কতটা ঢুকে গেছে।”
অর্নি মৃদু হেসে বললো,
–“ব্যাথা তুই-ও পেয়েছিস, পড়ে গেলি যে? বাসায় গিয়ে ব্যাথার মেডিসিন নিয়ে নিবি আগে।”
কথাটা বলতে বলতে অর্নি নিজেই চোখ বন্ধ করে একটানে কাঁচ বের করে ফেলে। গলগলিয়ে রক্ত বেরিয়ে আসে কাটা স্থান থেকে। নূর ব্যাগ থেকে রুমাল বের করে অর্নি পায়ে বেঁধে দিয়ে বললো,
–“হাঁটতে পারবি?”
–“পারবো।”
নূর ধরে দাঁড় করালো অর্নিকে। তারপর খুড়িয়ে খুড়িয়ে হেঁটে মেইন রোডে রুশানদের কাছে গিয়ে দাঁড়ালো। রুশান ভ্রু কুঁচকে নূরকে জিজ্ঞেস করলো,
–“তোর জামা-কাপড়ে মাটি লেগে আছে কেন?”
–“দড়ি বেয়ে নামতে গিয়ে পড়ে গেছিলাম।”
তরী উতলা হয়ে প্রশ্ন করলো,
–“সেকি আপু তুমি ঠিক আছো?”
–“ওই একটু ব্যাথা লেগেছে সেরে যাবে। অর্নি ঠিক নেই, পা কেটেছে অনেকটা।”
রুশান বিচলিত হয়ে গেলো কথাটা শুনে৷ অর্নির পায়ের দিকে তাকালো। রুমালটাও রক্তে ভিজে আছে৷ রুশান অর্নির হাত ধরে বললো,
–“চল এখনই কাছের একটা হসপিটালে গিয়ে ড্রেসিং করিয়ে নিয়ে আসবো।”
–“এত অস্থির হোস না তো, সামান্য লেগেছে। এখন আগে কাজী অফিসে চল, আগে বিয়ে হবে তোদের তারপর বাকীসব।”
–“তোর পা থেকে রক্ত বের হচ্ছে এখনো___”
রুশানের কথায় অর্নি চোখ রাঙিয়ে তাকালো। বাধ্য হয়ে রুশান একটা সিএনজি ডেকে লোকেশন বলে উঠে পড়লো তাতে।
তিনবার কবুল আর কাবিননামায় সাইন করে তরীকে সারাজীবনের জন্য নিজের করে নিলো রুশান। ভালোভাবেই ওদের বিয়েটা সম্পন্ন হয়েছে। রুশান বেশ কিছুক্ষণ তরীকে জড়িয়ে ধরে রেখেছিলো। তরীও খুশিতে কাঁদছিলো রুশানকে নিজের করে পেয়ে। তরী অর্নি আর নূরকে জড়িয়ে ধরেই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। রুশানও নিজের বেস্ট ফ্রেন্ডদের জড়িয়ে ধরে বললো,
–“তোর ছিলিস বলেই তরীকে পেয়েছি আমি। লাভ ইউ সো মাচ দোস্ত, তরীকে আমার হতে এত হেল্প করার জন্য।”
নূর ভ্রু কুঁচকে বললো,
–“এখন কি থ্যাংকিউ বলে আমাদের পর করে দিবি নাকি?”
অর্নি বললো,
–“তা কিন্তু হবে না। আমাদের দুজনকে বড় করে একটা ট্রিট দিতে হবে।”
–“সেটা অবশই পাবি।”
চারজনেই হাসলো৷ তারপর একসাথেই বেরিয়ে পড়লো কাজী অফিস থেকে। রুশান তরীকে নিয়ে নিজের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলো আর নূর আর অর্নিও একটা রিকশা ডেকে উঠে পড়লো বাসায় ফেরার জন্য।
চলবে~