তুমি_ছারা_আমি_শূন্য পর্ব_২৫+২৬

0
1689

তুমি_ছারা_আমি_শূন্য
পর্ব_২৫+২৬
#লেখক_Mohammad_Asad

আজকে সকাল থেকেই আকাশটা মেঘলা, আস্তে আস্তে কতগুলো দিন কেঁটে গেছে। দু’জনের বিয়ে হয়েছে। আজকে নিশাত যানতে পেরেছে, সে পেগনেন্ট। ছাদিক আজকে অনেক খুশি যা লিখে প্রকাশ করা যাবে না। মেয়েটাকে কোলে তুলে সারাবাড়ি ঘুরে নিয়ে বেড়িয়েছে। বিছানায় বসে আছে নিশাত, ছাদিক এখন স্কুলে আরেকটু পর স্কুল ছুঁটি দিলে ছাদিক বাসায় আসবে। এখন আর দেরি করে না ছেলেটা।

আব্বু আম্মু ভাইয়া সকলে যদি যানতে পারতো খবরটা, তাহলে কতই না খুশি হতো। আচ্ছা আব্বু আম্মু কি আমার উপর এখনও রাগ করে আছে।

নিশাত, আব্বু আম্মুর কথা ভেবে খুব কান্নাকাটি করে। ছাদিক রুমে এসে দেখে মেয়েটা কান্না করছে।
-নিশাত কান্না করছো কেন?
-এমনি, যানো আব্বু আম্মু ভাইয়ার কথা খুব মনে পরছে আমার।
-ওহ আচ্ছা।
-হু,

ছাদিক নিশাতের গালে হাত দিয়ে বলে।
-পেত্নী কান্না করতে নেই। তোমার মধ্যে আমাদের দুজনের ভালোবাসার ফুল ফুটতে চলেছে, দেখবে আমাদের বাবুটাকে দেখে ঠিক মেনে নিবে, তোমার আব্বু আম্মু।
-হু তাই যেন হয়।
-হ্যাঁ তাই হবে তো, আমার নিশাত অনেক বড় হয়ে গেছে তো এখন। আমার পেত্নীটা মা হতে চলেছে।
“নিশাত হিহিহিহি করে হেঁসে বলে”
-তোমার পেত্নী শুধু কি মা হতে চলেছে। হনুমানটাও যে বাবা হতে চলেছে।
-পেত্নী একটা,
-দুপুরের কিছু খেয়েছো?
-নাহ্ কিছু খাওয়া হয়নি!
-কেন খাওনি? বাজার থেকে কিছু খেয়ে নিলেই তো পারো।
-হু,
-হনুমান, টেবিলে ভাত রেখেছি খেয়ে নেও।
-উঁহু না, তুমি খাইয়ে দেও।
-এই’সময় পাগলামী করো কেন? দেখছো না আমাদের বাবুটা আমার পেটের ভিতরে। যানোতো হনুমান আমি বাবুটাকে খুব ভালোবাসি। তবে যানোতো হনুমান মাঝে মাঝে বাবুটা কেন আমায় লাথি দেয়। খুব ব্যথ্যা করে আমার। শুনেছি বাবু জন্ম দিতে গিয়ে নাকি অনেক মেয়েরা মারাও যায়, আমার যদি এমন হয়।

“ছাদিক নিশাতের চোখের দিকে তাকিয়ে আছে। কিছুটা ভিতু হয়ে বলে।
-এই দেখো পেত্নী, তোমার কিছু’ই হবে না। এরকম করে বলো কেন? আল্লাহর কাছে দোয়া করি তোমার কিছু হবে না।
” নিশাত ছাদিকের ভিতু মুখটা দেখে ফিঁক করে হেঁসে দেয়।”
-পাগল একটা, আমার কিছু হবে না। তুমি ছারা আমি শূন্য, বুঝেছো।
-হুম বুঝেছি। এবার দেখি তো, আমাদের বাবুটা কি বলছে।

ছাদিক নিশাতের পেটে চুমু দিয়ে বলে, এই যে আমাদের পিচ্চি বাবু, তোমার আম্মুকে ব্যথ্যা দিও না ওকে। তুমি তো যানোনা তোমার আম্মুটার কতটা কষ্ট হয়।
-হনুমান আমাদের বাবু কি তোমার কথা শুনবে?
-হু শুনবেই তো।
-হিহিহিহি,
-হ্যাঁসো কেন পেত্নী?
-আমাদের বাবুটা যদি খুব দুষ্টু হয়!
-হুম তাই তো,
-আচ্ছা অনেক তো পাগলামি হয়েছে, এবার ভাত খেয়ে নেও। আজকে মিম রান্না করেছে।

ছাদিক ভাত খেয়ে মিমের রুমে যায়। টেবিলে বসে বসে ফোন টিপছে, তা দেখে ছাদিক একটু রাগি সুরে বলে।
-এই মিম কি করছিস রে ফোন নিয়ে।

মিম একটু ভয় পেয়ে যায়।
-ভাইয়া তুমি।
-হ্যাঁ আমি, তোর ভাবির সঙ্গে একটু তো থাকতে পারিস!
-স্যরি ভাইয়া, কাল থেকে থাকবো।
-পাজি একটা,
-হু
-আচ্ছা মিম আচার আছে।
-হ্যাঁ আছে তো, প্রতেকদিন তো নিয়ে যাও, আজকে বলছো কেন?
-উঁহু নারে, তোর হাতের টক আচার অনেক ভালো হয়। তোর ভাবির অনেক ভালো লাগে।
-আচ্ছা ভাইয়া নিয়ে যাও। টেবিলে রেখে দিয়েছি।
-তোর হাতের রান্না অনেক ভালো হয়েছে। আর শুন কাল থেকে তোর ভাবির সঙ্গে থাকবি ওকে।
-আচ্ছা ভাইয়া ঠিক আছে।

এভাবে কেঁটে যায় ১০ টি মাস। এই ১০ মাস অনেক কষ্টে কেঁটেছে ছাদিক এবং নিশাতের। হঠাৎ করে মাঝ রাতে উঠে নিশাত বমি করে দেয়। ঠিক মতো খাবার খায় না। মুখটা নাকি তেতো তেতো করছে খুব। ছাদিক একটুও বিরক্ত হয়না। সবকিছু মুচকি হেঁসে মেনে নেয়। কে যানে পাগলীটার কতটা কষ্ট হচ্ছে।

একদিন হঠাৎ করেই ফোনে কল আসে। ছাদিক তখন স্কুলে ক্লাস নিচ্ছে।
-আসসালামু আলাইকুম, কে বলছেন?
-হ্যালো ভাইয়া আমি মিম বলছি। ভাবি কেমন যানি করছে।
-কেন কি হয়েছে ওর!
-ভাবি পেট নিয়ে ছটপট করছে।
“ছাদিক ছুঁটে বাসায় আসে। এসে দেখে নিশাত ছটপট করছে, মিম ছাদিক, খালাম্মা খালু, সকলে মিলিয়ে হসপিটালের নিয়ে যায়।
ছাদিকের বুকটা ভয়ে ধুকধুক করছে আজ।
হসপিটালের পার্শের মসজিদে চলে যায় ছাদিক। আল্লাহর দরবারে কান্না করতে থাকে। আল্লাহ্ যানিনা ওর কতটা কষ্ট হচ্ছে। তুমি ওকে আমার কাছ থেকে কেঁড়ে নিও না আল্লাহ্।

ছাদিক মোনাজাত অবস্থায় থাকে। আর আল্লাহ কাছে কান্নাকাটি করে। ফোনের রিংটোন যখন বেজে উঠে। ফোনের দিকে তাকিয়ে দেখে মিম কল দিয়েছে।
-ভাইয়া তুমি কোথায় বলতো, তারাতাড়ি হসপিটালে এসো।

ছাদিক দৌড়ে হসপিটালে যায়, ভিতরে গিয়ে দেখে মিম খালাম্মা খালু, তিনজনে একটা পচকুর কান্না থামানোর চেষ্টা করছে। ছাদিক বাচ্চাটাকে কোলে তুলে নেয়। কিছুক্ষণ পর বাবুটা কান্না থামিয়ে দেয়।
-দেখছো আব্বুকে পেয়ে মেয়েটা কেমন করে কান্না থামিয়েছে।

ছাদিক নিজের চোখের জলগুলো মুছে নিজের মেয়েটার দিকে তাকিয়ে থাকে। হ্যাঁ আজকে ছাদিকের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। আজকে ছাদিক কতটা খুশি তা লিখে প্রকাশ করার না।

ছাদিক নিশাতের কাছে বাবুটা দিয়ে, মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে থাকে। মা-মেয়ে দুজনে সুস্থ আছে। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করে ছাদিক।

(চলবে?)
#তুমি_ছারা_আমি_শূন্য
#পর্ব_২৬
#লেখক_Mohammad_Asad

“আমাদের পিচ্চি বাবুটা আস্তে আস্তে অনেকটাই বড় হয়েছে। আনহার বয়স এখন ৩ বছর। রুমের মধ্যে দুষ্টু মেয়েটা ঘুমিয়ে আছে। নিশাত রাতের ভাত তরকারি রান্না করছে। মিম নিজের রুমে পড়াশোনা করছে। খালাম্মা খালু টিভি নিয়ে বসে আছে।

কিছুক্ষণ পর ছাদিক বাড়িতে আসে। স্কুল ছুঁটি হয়ে গেলে সারাবিকেল কোচিং করাতে হয়। রাত ৮টার সময় কোচিং ছুঁটি হয়ে থাকে।

বাড়িতে এসেই আনহা আনহা বলে ডাকতে থাকে ছাদিক। রুমি গিয়ে দেখে পিচ্চি মেয়েটা ঘুমিয়ে আছে। ছোট্ট মুখটায় চুমু দিয়ে রান্নাঘরে চলে আসে ছাদিক। এসে দেখে নিশাত রান্না করছে। ছাদিক নিশাতের কোমড় জরীয়ে ধরে বলে।
-আমাদের মেয়েটা ঘুমিয়ে আছে কেন?
” নিশাত একটু রাগি সুরে বলে”
-তোমার মেয়ে ঘুমিয়ে আছে তো, আমি কি করবো।
-আমার লক্ষি মেয়েটাকে ঘুমিয়ে হুম!
-এই তুমি গোসল করে আনহার কাছে যাও, আমাকে ডিস্টার্ব করো না তো।
-ওকে পেত্নী যাচ্ছি। তবে একটা সুসংবাদ আছে।
-হ্যাঁ বলো, কি সেই সুসংবাদ!
-তোমার আব্বু ফোন করেছিলো।
-মা,,,,নে,,,আব্বু কি বলেছে”
“নিশাত অনেক খুশি হয়ে যায়। খুশিতে চোখে জল চলে আসে।

ছাদিক নিশাতের চোখের জলগুলো বুড়ো আঙুল দিয়ে মুছে দিয়ে বলে,
-তোমার আব্বু ফোন করে অনেক কান্না করছিলো। বলেছে আমার মেয়েটার এতো কিসের রাগ আমাদের উপর একটু খোঁজ ও নেয়না।
-“নিশ্চুপ”
-আমি বলেছিলাম আপনারা মেনে নিবেন না। তাই খোঁজ নিতে দ্বিধাবোধ করেছি। তোমার আব্বু কি বলেছে যানো।
-হু কি বলেছে আব্বু?
-বলেছে। তোমার উপর কোনো রাগ নেই তাদের।
-সত্যি,
-হ্যাঁ সত্যি। তোমার সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলো, আমি বলেছি আমি তো এখন স্কুলে, রাত ৮;৩০ মিনিটে ফোন দিয়েন।

নিশাতের সঙ্গে কথা বলতে বলতে রিংটোন বেজে উঠে। ছাদিক বলে উঠে এই তো কল দিয়েছে। পকেট থেকে ফোনটা বের করে রিসিভ করে ছাদিক।
-আসসালামু আলাইকুম,
-হ্যালো জামাই, আমি নিশাতের আব্বু বলছি। তুমি তো বলেছিলে রাত ৮;৩০ কল দিতে, নিশাত কি তোমার কাছে আছে এখন।

ছাদিক নিশাতের হাতে ফোন তুলে দেয়।
-এই নাও তোমার আব্বু কল দিয়েছে।

নিশাত ফোন হাতে নিয়ে কান্না করে দেয়। কাঁদো কাঁদো কন্ঠে বলে।
-আব্বু কেমন আছো তুমি।
-এই তো মা অনেক ভালো আছি। তুই কেমন আছিস!
-ভালো, আব্বু আব্বু ছোট ভাইয়া কেমন আছে। ৫ বছরে তো ছোট ভাইটা অনেক বড় হয়ে গেছে তাই না। আর আম্মু কেমন আছে।
-তোর আম্মু ছোট্ট ভাইয়া সকলে ভালো আছে। স্যরি রে মা তোকে ভুল বুঝার জন্য ক্ষমা করে দিস আমাকে।
-আব্বু তুমি ক্ষমা চাইছো কেন! তুমি তো আমার খারাপ চাওনি বলো।
-হ্যাঁ রে মা। নিজের ভুল বুঝতে পেরেছি আমি। তোর সঙ্গে যে ছেলেটার বিয়ে ঠিক করেছিলাম। সে ছেলেটা অনেক খারাপ। আমাদের বাড়িতে এসে হুমকি দিয়ে যায় সেদিন।
-আব্বু আলামিন তোমাদের কোন ক্ষতি করে নি তো।
-না ক্ষতি করে নি, তবে কয়েকদিন পর আমাদের এলাকায় আর দেখা যাইনি ছেলেটাকে।
-ওহ আচ্ছা ভালোই হয়েছে।
-মা’রে এই শুক্রবারে আমাদের এখানে আসিস। তোর জামাইকে বলেছি সব।
-আচ্ছা আব্বু যাবো। আর একটা খুশির খবর আছে আব্বু।
-কি খুশির খবর নিশাত।
-আমাদের দুজনের একটা পিচ্চি মেয়ে হয়েছে, তোমার নাতিন।
-সত্যি নিশাত,
-হ্যাঁ আব্বু সত্যি।

নিশাত আব্বুর সঙ্গে কথা বলছে এদিকে আনহা ঘুম থেকে উঠে কান্না শুরু করেছে রুমে কাউকে না পেয়ে। ছাদিক নিজের রুমে যাবার পর আনহাকে কোলে তুলে নেয়।
-মামনী তুমি কান্না করছো কেন?

ছাদিক আনহার চোখের দিকে তাকিয়ে থাকে। একা একা রুমে থেকে অনেকটা ভয় পেয়েছে মেয়েটা। নিশাত এবং ছাদিকের আদরের মেয়ে আনহা, একটু দুষ্টু হলেও বাচ্চা তো বাচ্চাই, একা রুমে কাউকে না দেখে ভয় পেয়েছে।
-মামনী ভয় পেয়েছো কেন?

আনহা কিছু বলছে না চুপ করে আছে। ছাদিক মেয়েটাকে কোলে তুলে নিয়ে আছে।
আনহার গালে চুমু দিয়ে যাচ্ছে।
-মামনী এই তো তোমার আব্বু চলে এসেছে ভয় পায়না কেমন। চলো তো তোমার আম্মুর কাছে যাবে।

ছাদিক আনহাকে নিয়ে রান্নাঘরে আসে। এসে দেখে নিশাত রান্না করছে।
-পেত্নী কান্না করছো কেন? কথা বলা হয়েছে?
-হু
-ভাত তরকারি কখন হবে শুনি।
-এই তো আরেকটু পর।

নিশাত আনহার দিকে তাকায়।
-হনুমান আমাদের বাবুটা তাহলে ঘুম থেকে উঠেছে।
-হুম উঠেছে। ভয়ে কান্না করছিলো আম্মু আম্মু করে।
-ওলে বাবালে,

পিচ্চি মেয়েটা ছোট্ট কয়টা দাঁত বের করে খিকখিক করে হেঁসে দেয়। নিশাত আনহার গুলুমুলু গাল দুইটায় চুমু দিয়ে বলে।
-রান্না হয়ে গেলে তোমাকে কোলে নিবো ওকে।
‘আনহা তুতলিয়ে বলে,
-আচ্চা আম্মু’ই
.
.
ছাদিক ১০ দিনের ছুঁটি নিয়ে নিশাতের আব্বুর বাড়িতে যাওয়ার জন্য বের হচ্ছে আজ। আজকে নওগাঁ যেতে হবে রাজশাহী থেকে নওগাঁ যেতে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে যেতে পারে। নিশাত সুটকেচে কাপড় গুছিয়ে নিচ্ছে। তার পার্শে বসে আছে আনহা পিচ্চি মেয়েটা। নিশাত কাপড় গুলো গুচ্ছাচ্ছে আর আনহা কাপড় গুলো এলোমেলো করে দিচ্ছে আর খিকখিক করে হেঁসে যাচ্ছে।

-এই দেখো তোমার মেয়ে কি শুরু করেছে। কাপড় গুলো এলোমেলো করে দিচ্ছে।
“ছাদিক মিস্টি হেঁসে আনহা পিচ্চিটাকে কোলে তুলে নেয়। আনহার গুলুমুলু মুখটায় চুমু দিয়ে বলে।
-করুক না নিশাত এমন করে বলছো কেন। আমাদের মেয়েটা তো একটু দুষ্টু’ই।
-উঁহু রে, তোমার মেয়ে বড় হলে অনেক পাজি হবে দেখবে। এখন থেকে যা শুরু করেছে।
-হা হা, আমাদের মেয়েটা তোমার মতো হবে একটা দুষ্টু নিশাত।
-এই কি বললে,
-না না কিছু বলে নি সুটকেচ গুচ্ছিয়ে চলো। রাতে বলেছিলাম সুটকেচ গুছিয়ে নেও, নিলে না তো। এখন এই ভর দুপুরে সুটকেচ গুচ্ছাও।
-হইছে আর বলতে হবে না।

আজকে আনহা নানুর বাড়িতে যাবে তাই লাল টুকটুকে একটা ফ্রক পড়েছে। নিশাত পড়েছে সাদা কালো হিজাব। আর ছাদিক পড়েছে, ব্লু শার্ট এবং সাদা পেন্ট।

খালাম্মা খালুদের থেকে বিদাই নিয়ে তিন জন বের হয়ে পরে। বাসে এসে উঠলে। কিছুক্ষণের মধ্যে বাস ছেঁড়ে দেয়। আনহাকে বুকে জরীয়ে আছে ছাদিক। কাঁধে মাথা দিয়ে আছে নিশাত। কিছুটা পথ পের হলেই যে অনেক অনেকটা আনন্দ।

এদিকে ছাদিক নিশাত, আনহা আসবে বলে। বাড়িতে হৈ-হুল্লোড় ফেলে দিয়েছে নিশাতের আব্বু। ছাদিকের ফোনে কল দেয় নিশাতের আব্বু।
-আসসালামু আলাইকুম, জামাই তোমরা এখন কোথায় আছো?
-এই তো আব্বা, সন্ধ্যা আগে পৌচ্ছে যাবো।
-আচ্ছা তারাতাড়ি এসো।
-জ্বি।

আনহা ঘুমিয়ে পড়েছে। নিশাত জানালার ধারে বসে আছে ছাদিকের কাঁধে মাথা দিয়ে। কাঁধ থেকে মাথা উঠিয়ে বলে নিশাত।
-হনুমান যানো আজকে আমি অনেক খুশি।
-হুম যানি,
-সত্যি আব্বু আমাকে ক্ষমা করে দিয়েছে। আর নিজের ভুল বুঝতে পেরেছে। আগে যদি সবকিছু ঠিক হয়ে যেত তাহলে কতই না ভালো হতো বলো তো।
-হুম
-আনহা কি ঘুমিয়ে গেছে।
-হু
-আমাদের পিচ্চি মেয়েটা একদম তোমার মতো খুব অলস।
-নাহ্ আমার মতো না তোমার মতো, খুব দুষ্টু।
-হিহিহিহি হুম,

নিশাত এখন অনেকটাই পরিবর্তন হয়ে গেছে। মা হয়েছে বলে কথা। এখন আর আগের মতো পাগলামি করে না নিশাত, বরং ছাদিক পাগলামি করে আনহাকে নিয়ে।

আনহাকে বুকের উপর নিয়ে সুয়ে থাকে ছাদিক। আর নিশাত ছাদিকের কাঁধে মাথা দিয়ে। এই তিন বছরে আনহা অনেক জালাতন করেছে আব্বু আম্মুকে। মাঝ রাতে হিসু করে দেয়। আবার কখনো কখনো কান্না শুরু করে। আবার পিচ্চিটাকে আদর করে দিলে থেমে যায়। এই তো কয়দিন আগের কথা। ছাদিক স্কুল থেকে এসে আনহাকে কোলে তুলে নিয়েছে। আর পাজি মেয়েটা হিসু করে দিয়েছে। ছাদিক আর কি করবে ওয়াশরুমে গিয়ে ধুয়ে আসে। আর এদিকে নিশাত হ্যাঁসতে হ্যাঁসতে শেষ।
-এই তুমি হ্যাঁসছো কেন?
-তোমাদের বাবা-মেয়ের কান্ড দেখে।
-হা হা হ্যাঁসো হ্যাঁসো। সেদিন তো তোমার শাড়ীতে হাগু করে দিছিলো। আর আমার বুকে নাহয় হিসু করেছে।

এই কথা বলাতে নিশাত ঝগড়া লেগে যায়। তা দেখে আনহা ছোট্ট ছোট্ট হাত দিয়ে তালি দিতে থাকে। এই তিন বছরে আব্বু আম্মুকে পাগল বানিয়ে ছেড়েছে পিচ্চি মেয়েটা।

“চলবে?”