তোমাকে চাই পর্ব-১৬

0
92

#তোমাকে_চাই ।১৬।
#সাইরা_শেখ

বাড়ি ফেরার পর থেকেই নাওফিল প্রিয়তাকে লাগাতার ফোন করছে। রিসিভ হচ্ছে না কল। ওদিকে প্রিয়তাও মগ্ন কাজিনদের আড্ডায়, ফোন নামক বস্তুটি মাথাতেই নেই ওর।
বিকালে শপিংয়ে যায় ওরা। প্রিয়তার জন্য হলুদের শাড়ি, বিয়ের শাড়িসহ প্রয়োজনীয় সব জিনিস কেনা হলো।

গাড়ির বাইরে দাঁড়িয়ে আইসক্রিম খেতে খেতে প্যাকেটগুলো দেখছে প্রিয়তা। মেহেক এসে পাশে দাঁড়িয়ে বলল,
– কেমন লাগছে আপু ২ বার বিয়ে করতে পেরে? হ্যাঁ, বর ১টাই, বিয়ে একই মানুষের সাথে হচ্ছে বাট বিয়ে শুনলেই একটা অদ্ভুত ফিলিং কাজ করে। তাইনা?

প্রিয়তা মেহেকের কান টেনে বলল,
– খুব পেঁকেছিস। তোর বর কই?
– কেন ওর-ও কান টানবি?
– সম্পর্কে বড় এবং বন্ধু হওয়ায় শুধু টানবো না, ছিড়ে ফেলবো। আমার বোনকে ২ মাসে পাঁকিয়ে ফেলেছে। কত্তবড় সাহস।
ইমতিয়াজ মেহেককে ছাড়িয়ে নিয়ে বলল,
– খবরদার, আমার বউয়ের কান ধরবি না।
প্রিয়তা ভ্রু কুঁচকে বলল,
– বউয়ের বড়বোনকে সম্মান জানাতে ভুলে গেছো জামাই? ব্যাপারটা ঠিক মেনে নিতে পারলাম না। সম্মানে বাঁধলো, এখন যদি কিছু করি সে দায় কিন্তু একান্তই তোমার, আমার নয়।

ইমতিয়াজ ক্ষমা চাওয়ার ভঙ্গিতে হাতজোড় করে বলে,
– আমার ভুল হয়েছে। সম্মানের সাথে বলছি, অনুগ্রহ করে আমার বউয়ের কান টানবেন না। এইটুকুন কান তার, ছিড়ে গেল সবাই আমাকে কানছেড়া মেহেকের বর বলবে। শুনতে অদ্ভুত লাগবে না?

মেহেক লাফিয়ে আহ্লাদি গলায় বলল,
– উহ, আপনিও? আমি আপনাদের কারোর সঙ্গেই আর কথা বলবো না।

ইমতিয়াজ, প্রিয়তা হেসে উঠলো। মেহেক বুকের ওপর হাত গুজে গাড়ির অপর পাশে গিয়ে দাঁড়ায়। প্রিয়তা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল,
– যান, জনাব। দ্রুত বউয়ের রাগ ভাঙান। নয়তো সে সত্যিই কথা বলা বন্ধ করে দেবে। গো ফাস্ট..

ইমতিয়াজ হেসে চলে যায়।প্রিয়তা ভাবলো নাওফিলকে ফোন করে এখানে আসতে বলবে।বাইকে আসলে পনেরো মিনিটও লাগবে না। কিন্তু পরে খেয়াল করলো সে তাড়াহুড়োয়, ফোন না নিয়ে চলে এসেছে।

সবাই বাড়িতে ফিরলো সন্ধ্যা ৭টায়। বাড়ি ফিরেই সবার চক্ষু চড়কগাছ। সবার থেকে বেশি অবাক হলো প্রিয়তা। বসার ঘরে জামাইআদর চলছে, সকলের মাঝে পিষ্ট হচ্ছে বেচারা নাওফিল। দাদি-নানিরা চেপে ধরেছে তাকে। একথা, সেকথা। অস্বস্তিতে বসে থাকতে পারছে না সে। চেহারা কেমন ফ্যাকাশে হয়ে আছে। প্রিয়তাকে দেখামাত্র সে দাঁড়িয়ে পড়ে। প্রিয়তা এগিয়ে গেল। নাওফিল বলল,
– ফোন কোথায়?
প্রিয়তা কিছু বলতে যাবে তার আগেই নাওফিল যেতে যেতে বলল,
– ঘরে চলো, কিছু কথা আছে। আমাকে দ্রুত ফিরতে হবে, তাই টাইম ওয়েস্ট করোনা।
– হুম।

প্রিয়তা ধীরপায়ে হাটছে দেখে নাওফিল তাড়া দিল,
– কি কচ্ছপের মত হাটছ? দ্রুত এসো নয়তো সবার সামনে কোলে তুলে আনবো। তোমার কোলে চড়তে ইচ্ছে করলে আমার কোলে নিতে আপত্তি নেই।

প্রিয়তা নাওফিলের কথা শুনে দ্রুত পা চালালো। দেরি করা যাবে না, নয়তো সত্যি সত্যি কোলে তুলে ফেলবে।
ঘরে পৌঁছে নাওফিল সরাসরি প্রশ্ন করে,
– এখানে থাকতে রাজি হলে কেন?

নাওফিলের প্রশ্ন এড়িয়ে প্রিয়তা বিছানায় আরাম করে বসল। ঘরে ঠান্ডা পানি এনে রেখেছে নিতু। প্রিয়তা পানি পান করে বলল,
– সামনেই তো ছিলেন। জানেন না কেন রাজি হয়েছি? আপনার ভাগ্য ভালো বিয়েটা অস্বীকার করিনি। আমি তো ভেবেছিলাম সবাইকে বলবো ঝগড়া মেটাতে বিয়ে করেছি, ঝগড়া মিটে গেছে এখন বিয়ে ক্যান্সেল। আমি নতুন করে ভালো ছেলে দেখে বিয়ে করতে চাই। কিন্তু বাড়ির সম্মানের কথা ভেবে এমন করতে পারলাম না।

নাওফিল রেগে তাঁকায়। প্রিয়তা দরজার আড়ালে থাকা ছাঁয়াটির দিকে একনজর তাঁকিয়ে বলল,
– দেখুন আয়নায়,নিজের এক্সপ্রেশন দেখুন। এই রগটগ ফুলে যাওয়া চেহারা দেখতে কার ভালো লাগবে? কোথায়, নরম মিষ্টি চেহারা দেখবো, প্রশান্তি লাগবে, তা না। এই প্যাচামুখো চেহারা দেখে দিন খারাপ করছি।
নাওফিল চোখ রাঙিয়ে বলল, ‘তাই না?’
– ইয়েস! একদম তাই।

নাওফিল প্রিয়তার পাশে বসে। তাকে কিছুটা অস্বাভাবিক লাগছে। চেহারা দেখে মনে হচ্ছে কিছু নিয়ে ভীষণ চিন্তিত। প্রিয়তা ইশারায় দরজার দিকে তাঁকাতে বলল।
এবার নাওফিলও দরজার আড়ালে থাকা মেহেককে দেখে স্বাভাবিক স্বরে বলল,
– প্রবলেম আমার নাকি তোমার,একটু ভেবে দেখ তো। ভালোমুখ তোমার সহ্য হয়? ট্রাই করে দেখিনি কতটা কাজে দিয়েছে? নিজে ভেবে বলো,, তুমি কি পরিমাণে জেদি, আর ঘাড়ত্যাড়া।
– একজন বুদ্ধিমান পুরুষ বউকে এত খোচায় কি করে? আপনাকে সহ্য করা অসম্ভব ব্যাপার।

মেহেক চলে যেতেই প্রিয়তা নিজেকে ধাতস্থ করে বলল,
– এবার বলুন কেন এসেছেন?
– শা’স্তি দিতে। আমার কথা একবারও না ভেবে চলে আসার শা’স্তি নেবে না?
প্রিয়তা চোখ রাঙায়। নাওফিল এজন্য আসেনি। কেন সত্য বলছে না?
– না বললে, চলে যান। আমি ক্লান্ত, রেস্ট নেব।

নাওফিল প্রিয়তার ক্লান্ত চেহারা দেখে অকস্মাৎ একটি কান্ড ঘটিয়ে বেড়িয়ে গেল। প্রিয়তা হতবাক হয়ে চেয়ে আছে। আয়নায় নিজের ঠোঁটের দিকে তাঁকিয়ে স্তব্ধ হয়ে যায় সে। লালচে হয়ে মুহূর্তেই ফুলে উঠেছে ঠোঁট। প্রিয়তা রাগ চেপে দাঁতে দাঁত পিসে বলল,
– এই মানুষ শোধরানোর না।অসভ্য, নির্লজ্জ পুরুষ।

রাতে ঘর থেকে বের হলো না প্রিয়তা। মেহেকরা ঘরে এসে সে-কি হাসি-ঠাট্টা।বাকিদেরও ডেকে ডেকে বলছে নিজেদের অনুমান করা ঘটনা। লজ্জায় প্রিয়তার মুখ একটুখানি হয়ে গেল। ছোট বোনদের সামনে এভাবে লজ্জায় পড়তে হবে কখনও ভাবেনি প্রিয়তা। মেহেক উৎসুক দৃষ্টি মেলে বলল,
– আপু? তোকে ভাইয়া ওবাড়িতেও এমন করে রাখে নাকি? শ্বশুর-শাশুড়ির সামনে বের হোস কি করে?
– থাপড়ে গাল লাল করে দেবো বেয়াদব।
– কেন? কেন? তোমরা দেখিয়ে দেখিয়ে রোম্যান্স করতে পারবে আর আমি বললেই দোষ? কি তুবা আপু, তুমি কিছু বলো।
তুবা আপু মেহেকের কান টেনে বলল,
– পাঁকা হয়েছিস অনেক। দেখছিস বড় আপু স্বামীর ভালোবাসার চাপে পড়ে চ্যাপ্টা হয়ে যাচ্ছে, ফুলে-টুলে যাচ্ছে, দেখ ঘাড়ের কাছটায়, চিহ্নগুলো দেখেও কেন খোচাচ্ছিস? তোর ঢেকে রাখা চিহ্ন দেখে আমি কিছু বলেছি?

মেহেক দ্রুত ওরনা ঠিক করে বলল,
– একদম না,আমার কোনো চিহ্নটিহ্ন নেই। মিথ্যে বলছ তুমি।
তুবা হেসে বলল,
– আমার বোনগুলো এ কাদের খপ্পড়ে পড়েছে? আল্লাহ! কেমন বর পেয়েছে এরা? বরগুলো এদের দেখলেই ঝাপিয়ে পড়ে মনে হচ্ছে।আমার কোমলমতি বোনগুলোর এই অবস্থা দেখে সহ্য করতে পারছি না। আহ্! কি কষ্ট।

প্রিয়তা রাগতস্বরে বলল,
– ভুলে যেওনা বিয়ের প্রথম দিকে তোমারও এই দশা ছিল আপু। আমার কাছে কিন্তু প্রমাণও আছে। দেখাবো ছবিগুলো?

তুবা হাসি থামিয়ে বলল,
– ভালো কথা মনে করিয়েছিস। তোর এই লুকে দুটো ছবি তুলে রাখতে হবে যাতে শুধু আমার ছবি দেখিয়ে ব্লাকমেইল করতে না পারিস। দেখি সুন্দর একটা পোজ দে।

প্রিয়তা রাগে গজগজ করছে। নাওফিলকে সে ছাড়বে না। একদম ছাড়বে না, এর শোধ যতদ্রুত সম্ভব তুলবে প্রিয়তা।
.
.
রাত ১১ টার দিকে নাওফিলকে কল করে প্রিয়তা। সবাই চলে গেছে, কথা বলার জন্য এটা উপযুক্ত সময়। নাওফিল ফোন রিসিভ করতেই প্রিয়তা গম্ভীর গলায় বলল,
– আই ওয়ান্ট দেয়ার ডে’ডবডি নাওফিল।
নাওফিল মৃদু হেসে বলে,
– আন্দাজ করেছিলাম, তবে এতটা আশা করিনি। তুমি তাহলে সব জানতে!
প্রিয়তা গা ছাড়া ভাব নিয়ে বলল,
– তখন অ্যাকশন নিলে, ওরা গ্রামটাকে জ্বা’লিয়ে দিত। প্রফেশনাল কিলার এ্যাপোয়েন্ট করে রেখেছে। চারদিক থেকে তারা ঘিরে রেখেছিল আমাদের। আমি স্বাভাবিক থেকেছি যাতে কেউ সন্দেহ না করে, যেমনটা আপনি থেকেছেন। এই বিষয়ে আপাততো কেউ জানবে না। ওরা ভয় পাবে, সবাই আনন্দে মেতে আছে,এসব চিন্তা ওদের মাথায় ঢোকানোর কোনো প্রয়োজন নেই।

নাওফিল কিছুটা থেমে বলল,
– কিলারকে চিনলে কি করে?
– এক্সিডেন্টলি পরিচয় হয়েছিল, নয়নের ছেলের সাথে ভার্সিটিতে এসেছিল আমার কাছে, মেধা আপুর নাম করে খোঁজখবর নিতে। ওরা ক্লোজ ফ্রেন্ড, তবে ওদের বেখেয়ালির জন্য আমি জেনে গিয়েছিলাম ওরা টাকার বিনিময়ে জীবনের মূল্য হাঁকে। তখন গুরুত্ব দেইনি, কে কার বন্ধু সেটা আমার দেখার বিষয় নয় বলে। আজ গুরুত্ব দিয়েছি, আমার পরিবার ও গ্রামের জন্য। আমার পরিবারের দিকে যে সামান্য কুনজরে তাঁকাবে তার চোখ উপড়ে ফেলতেও দ্বিধাবোধ করবো না আমি। বলে রাখা ভালো ওদের মাঝে এক ছদ্মবেশী খালা ছিলেন, ওনার হাতে একটি ব্যাগ ছিল, যেটা উনি দাদুর চেয়ারের পাশে রেখে যান। আপনারা পরে ব্যাগটি সংগ্রহ করেছেন, কি ছিল তাতে? আমার ধারণা ভুল না হলে তাতে চকলেট বোম ছিল। ওরা আনন্দ উৎসব করার পূর্ণ ব্যবস্থা করে এসেছিল, তাই না?

নাওফিল হতভম্ব হয়ে গেল বউয়ের কথা শুনে,
– এটাও জানতে? আমাকে আগে বলোনি কেন? যাই হোক বম্বটি এখন অকেজো। এক্সপার্ট বলল, একটি গ্রামকে ধংসস্তুপে পরিণত করার জন্য সেটা যথেষ্ট। ওরা তোমার ক্ষমার প্রতিদানে একটি কবরস্থান উপহার দিতে চেয়েছিল। আফসোস তুমি সে উপহার ফিরিয়ে দিচ্ছ।

প্রিয়তা হেসে বলল,
– এবার তো শুধু ডে’ডবডিতে কাজ হবে না নাওফিল। ওদের দেহগুলো টুকরো টুকরো করতে মন চাচ্ছে।
– আহ্ বউ! এভাবে বোলো না।আমি ভেবেছি তুমি র’ক্ত পছন্দ করো না। প্রতিবাদও পছন্দ করো না। এখন তো অন্যকিছু দেখছি। এমন গোপন তথ্য আরও থাকলে দ্রুত বলে দাও। তোমার ব্যাপারে আর কি জানি না আমি?
প্রিয়তা নাওফিলের ঠাট্টায় ক্ষেপে গেল,
– আমি আপনার মত খারাপ নই কিন্তু, শত্রুদের জন্য পর্যাপ্ত খারাপ হতে পারবো।
– তুমি বলতে চাচ্ছ আমি খারাপ?
– অবশ্যই। রেগুলার মা’রপিট করা ছেলে,রাগের সময় যে বউকে ছুড়ে ফেলে, বউয়ের থেকে সবকিছু লুকিয়ে চলে যে, সে কি করে ভালো হতে পারে? আপনি হচ্ছেন ব্যাডবয়!
– ওকে ম্যাডাম। প্রকৃতপক্ষে ব্যাডবয় কেমন হয় সেটা দ্রুত জেনে যাবেন।
প্রিয়তা হালকা হেসে বলল,
– হাহ্, অপেক্ষায় আছি।
নাওফিল সময় নিয়ে, নরম সুরে বলল,
– ধন্যবাদ প্রিয়।

প্রিয় জানে এই ‘ধন্যবাদ’ জ্ঞাপনের কারণ। নাওফিলের কন্ঠ শুনেই আজকাল ওর মনের কথা ধরে ফেলার মত বিস্ময়কর দক্ষতা অর্জন করে ফেলেছে প্রিয়তা। তাই জবাবে সে গম্ভীর হয়ে বলল,
– আপনার ধন্যবাদ আমি নেব না। বিয়ের দিন আমার আম্মু আপনার সামনে আমাকে একটি কথা বলেছিল, সেটা বোধ হয় ভুলে গিয়েছেন। আম্মু বলেছিল আপনার পরিবার এখন আমার পরিবার, আপনার ভাই-বোন আমার ভাইবোন। আমার মেহেক যেমন, সুহা সফিও তেমন নাওফিল। রাগের বশে মেহেক যদি আমাকে কষ্ট দেয় আমিও কি আমার বোনকে কষ্ট দেব প্রতিশো’ধ নিতে? সুহাদের কাজকে আমি অন্যায় বলে চালিয়ে দিতে পারিনা, শুধু ওদের ‘ননদ’ ট্যাগ আছে বলে। আমি এমন ‘ভাবি’ হতে চাই না যে ননদের সঙ্গে গৃহযু’দ্ধ করে বেড়াবে। পরিবারের সবাইকে আমি জানি, বুঝি। তাছাড়া মানিয়ে চলার মত একটি বাজে স্বভাবও আমি জন্মসূত্রে পেয়েছি। আপনি বলেছিলেন ওরা খারাপ নয়, ওদের মন বিষিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাহলে ওদের ভুলটা কোথায়? ওরাও তো পরিস্থিতির শিকার। যেখানে ওদের নিজেদের চিন্তা কাজ করে না সেখানে ওদের অকাজকে আমি অন্যায় মানতে পারিনা। তাছাড়া এখন সব ঠিক হয়ে গিয়েছে, ওরাও নিজেদের ভুল বুঝতে পেরেছে, আমাকে ভালোবাসছে। এজন্য আপনার এই টপিকটা বারবার টেনে আনা আমার একদম পছন্দ হচ্ছে না। এই বিষয়ের ভিত্তিতে আপনার উপযুক্ত একটি শা’স্তি প্রয়োজন, তাই কিছু করা উচিত আমার।

নাওফিল ভীতকন্ঠে বলল,
– ভয় দেখানোর চেষ্টা করছ? কি করবে শুনি?
– ভয় দেখানোর চেষ্টা করবো কেন? আপনি এটাকে থ্রেট হিসেবে নিতে পারেন, গতকাল রাতে যে প্যাকেটটি নিয়ে এসেছিলেন, সেটা হাতে না পাওয়া পর্যন্ত বিয়ে করবো না আমি। আর শ’ত্রুদের নিউজও দ্রুত চাই।
নাওফিল অস্থির হয়ে বলল,
– উফ! কি বউ বিয়ে করে আনলাম। নজর সবদিকে থাকে। আমার বোকা প্রিয় কোথায়? আই মিস হার ব্যাডলি। আমি এই বুদ্ধিমতি প্রিয়তাকে চাইনা।
প্রিয়তা থমথমে গলায় বলল,
– চান না? ওকে।

প্রিয়তা ফোন কেটে দিল। নাওফিল বুঝল প্রিয়তার অভিমান। তবে তৎক্ষণাৎ কলব্যাক করলো না। পরের দিন সকালে, দুপুরে, রাতে কল করল। কল রিসিভ হলো না। ম্যাসেজ আসলো, ‘এতবড় একটা কথা বলার জন্য, আমি আপনার সাথে ফোনে আর কথা বলবো না। যখন সশরীরে আসবেন তখন-ই কথা হবে। তার আগে নয়।’

পাল্টা ম্যাসেজ গেল, ‘টাস্ক কমপ্লিট বউ। তারা এখন প্রতিশোধের এই অমূল্য দায়িত্বের ভার থেকে মুক্তি পেয়েছে। পুরোটাই আইনিভাবে হয়েছে, আপনার স্বামীর নামের সঙ্গে কিছু যুক্ত হয়নি। আমার এক ফ্রেন্ড সবকিছু হ্যান্ডেল করেছে, তাদের নামের কেসগুলো রিওপেন করে কায়দা বুঝে বুলেট ইউজ করেছে। আগামীকাল সকালে তাদের জানাজা পড়ানো হবে। পয়েন্ট টু,
আপনার দেওয়া শা’স্তি মাথা পেতে নিচ্ছি, মেনে নেওয়া ছাড়া এই অসহায় স্বামীর আর কি করার আছে? তবে যদি মনে দয়া মায়ার উদয় হয়, নিজের কোমল কন্ঠস্বর ভয়েস ক্লিপের মাধ্যমে পাঠানোর অনুরোধ রইল। অপেক্ষা করছি, প্রিয়।’

প্রিয়তা রাগ দেখানোর চেষ্টা করেও পারল না। হেসে ফেলল। ভয়েস পাঠাল, ‘প্রথমত আপনি অসহ্যকর।
দ্বিতীয়ত কিছু নর্দমার কিট পরিষ্কার করার জন্য ধন্যবাদ। অবশেষে নির্দোষ প্রাণগুলোর অপরাধি তার উপযুক্ত শা’স্তি পেল। কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্য ভয়েস পাঠানোর অনুরোধ মঞ্জুর করা হলো জনাব।’

চলবে…