তোমার নেশায় মুগ্ধ পর্ব-০১

0
74

গল্প:- #তোমার_নেশায়_মুগ্ধ
লেখিকা:- #রাইমা । #পর্ব:- ১

🥀কঠোরভাবে প্রাপ্তবয়স্ক ও মুক্তমনাদের জন্য🥀
“তোমার দেহের এমন কোনো ইঞ্চি বাকি নেই যা আমার ঠোঁটের স্পর্শ পেতে বাকি রয়েছে।তাহলে কিসের এতো সংকোচ বোধ MY SNOWFLAKE❄️??”

এমন লজ্জাহীন কথা কর্নগহ্বর হতেই লজ্জায় ও ঘৃণায় চক্ষুদ্বয় কুঁচকে আসে মুগ্ধতার।কেঁদে চোঁখ-মুখ রক্তাভ হয়ে গেছে মুগ্ধতার। তালুকদার বাড়ীর সকলের মেঝের দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ। মুগ্ধতা ক্ষিপ্ত ভাবে ঘৃণার দৃষ্টি ফেলে সামনে বসে থাকা যুবকটির দিকে।

“আমার সব শেষ করতে তো কিছুই আর বাকি রাখলেন না,এবার অন্তত আমায় মুক্তি দিন প্লীজ” অনুরোধ করতে করতে মাটিতে বসে পরে মুগ্ধতা।
হাউ মাউ করে কেঁদে ওঠে সে।সামনে বসে থাকা যুবকটি এভাবে নিজের প্রাণপ্রেয়সী কে কাঁদতে দেখে মুগ্ধতার সামনে এসে হাঁটু গেঁড়ে বসে।নিজের বন্দুকের সামনের অংশ দ্বারা মুগ্ধতার চিবুক ওপরে উঠায়।

“মুক্তি?😆😆😆।হাসালে Snowflake ❄️। মুক্তি তো তুমি আমার থেকে আমার মৃত্যুর পরেও পাবে না।আমার মৃত্যু হলেও তুমি একান্ত আমার আমানতই থাকবে।”
__________________

গ্রামের গণ্য মান্য ব্যাক্তি ইয়াজউদ্দিন তালুকদারের বাড়ি আজ বহু যুগ পর আলোকসজ্জায় সজ্জিত হয়েছে।আজ তার বড়ো নাতনি মুগ্ধতা তালুকদারের বিয়ে।তিন পুত্র,পুত্রবধূ ও পাঁচ নাতি-নাতনি নিয়ে তার সুখী যৌথ পরিবার। ইয়াজউদ্দিন তালুকদারের পরিবারে রয়েছেন তার বড়ো পুত্র হামিদুল তালুকদার ও তার স্ত্রী নাজিয়া বেগম।তাদের দুই সন্তান,পুত্র আরফিন ও কন্যা মুগ্ধতা। মেজো পুত্র এনামুল তালুকদার ও তার স্ত্রী সুমাইয়া বেগম,তাদের এক কন্যা মেহেক।ছোটো পুত্র আজিজুল তালুকদার ও তার স্ত্রী সুরাইয়া বেগম এবং তাদের যমজ পুত্র আদিল ও অহিল।( গল্পের আসল লেখিকা রাইমা)

মুগ্ধতা আজ বেজায় খুশি অবশেষে সে আজকের পর থেকে একটা নতুন মনের মতোন জীবন বাঁচতে পারবে,এর থেকে ভালো ও স্পেশাল birthday gift আর কি হতে পারে?

মেহেক মুগ্ধতার রুমে এসে দেখে এখনো সে বিছানায় শুয়ে আছে।

“আপাই তুমি এখনো শুয়ে আছো?? আজ না তোমার বিয়ে।”
“বিয়ে থাকলে বুঝি সাত সকালে না উঠলে অঘটন ঘটে??” বিছানা ছেড়ে উঠে বসে বলে মুগ্ধতা।
“না অঘটন ঘটে কিনা জানি না তবে দাদাজান পাঁচ মিনিটের মধ্যে তোমাকে নিচে হলে না দেখলে তুলকালাম কান্ড যে বাঁধবে সেটা আমি গ্যারান্টি দিতে পারি😁😁।”

উত্তরে কিছু না বলে মুগ্ধতা স্নান করতে যায়।কিছুক্ষণ পর বেরিয়ে আসে সে একটা রানি কালারের শাড়ি পরে।

“আপাই একটা কথা বলবো??”
“তুই আবার ফর্মালিটি করা কবে থেকে ধরলি মেহেক??”
“না আসলে…….তুমি ওই ছেলেটাকে বিয়ে কেনো করছো?? ওনার সাথে তোমাকে একেবারে মানায় না।সে তোমার যোগ্য নয়।”

মুগ্ধতা চমকে পিছন ফিরে তাকায় দরজা লাগানো আছে কিনা? তা খোলা দেখে সে ছুটে গিয়ে দরজা লাগায়।বলে,” আসতে মেহু।কিসব বলছিস বোন?? দাদাজান শুনতে পেলে কি হবে ভাবতে পারছিস??”
“অতো ভয় কেনো পাও তুমি আপাই?? আমার মন বলছে আজ তোমার বিয়েটা হবে না, দেখে নিও।” রুম থেকে বেরিয়ে যায় মেহেক।

মেহেককে কীকরে বোঝাবে মুগ্ধতা যে এই বিয়েটা করা যে খুব দরকার তার জন্য।তার জীবনের যে কালো অতীতটা রয়েছে সেটা ধামা চাপা দিতে তাকে ইচ্ছার বিরদ্ধে হলেও এই বিয়েটা করতে হবে।একবার সেই অতীত সামনে চলে আসলে অনেক কিছু ধ্বংস হয়ে যাবে।
__________________

ফ্রান্স পৃথিবীর প্রাচীনতম দেশগুলির মধ্যে একটি এবং ইউরোপের সবচেয়ে জাতিগতভাবে বৈচিত্র্যময় দেশ। এক দ্বিতল বাংলোতে ঘুটঘুটে অন্ধকার রুমের মেঝেতে শুয়ে আছে এক বছর বত্রিশের যুবক। জিম করা পিটানো শরীরে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমেছে তার। চোখ বুজে নিজ ভাবনায় মগ্ন সে।এক হাতে দামী হুইস্কি old fashioned glass, আরেক হাতে তার প্রাণপ্রেয়সীর ছবি।

“মুগ্ধ মুগ্ধ মুগ্ধ….my Snowflake ❄️!!!! আজ কুড়ি বছর বয়স হয়ে গেলো তবুও তোমার বুদ্ধি হলোনা জান। ইভান চৌধুরীর হাত থেকে বাঁচার আশা করা হলো তোমার দিবাস্বপ্ন। স্পর্ধা ভালো Snowflake ❄️, কিন্ত এই স্পর্ধার ফল….😈😈”

ভয়ানক অট্টহাসিতে ফেটে পড়ে ইভান।তার হাসিতে রুমে উপস্থিত তার ম্যানেজার অয়ন ও বেস্টফ্রেন্ড তানহারও রুহ্ যেন কেঁপে ওঠে।

“ইভান অনেক চেষ্টা করেও আমরা সেই মহিলাটিকে খুঁজে পাইনি।উনি মনে হয় পালিয়ে…..” ভয়ে ভয়ে বলে তানহা।
“মানুষের কাছে নিজের প্রাণ বড্ড বেশি প্রিয়।তোর কাছে সেটা মূল্যহীন কেনো হয়ে পড়ছে বলতো??……. বাঁচতে চাইলে যেখান থেকে পারবি নিয়ে আসবি ওই মহিলাকে।নইলে তোর প্রানটাও হয়তো…… Go went gone. ”
_______________

মুগ্ধতা তার দাদাজানের ঘরে গিয়ে দেখে তিনি তার স্ত্রীর ছবির দিকে তাকিয়ে আছেন।
“দাদাজান আপনি ডাকছিলেন?”

চোখের জল মুছে পিছনে ঘোরেন দাদাজান।বলেন,” ভেতরে এসো”। মুগ্ধ গিয়ে তার দাদাজানের পাশে বসে।

“মন খারাপ দাদাজান??”
“আজ তোমাদের দাদি এখানে থাকলে খুব খুশি হতেন।তোমার বিয়ে দেখার ওনার অনেক সখ ছিলো।……….সে যাই হোক যেটা বলার জন্য তোমায় ডেকেছি,বরযাত্রী কিছুক্ষণের মধ্যেই এসে পরবে।বিয়েটা ছেলের বাড়ি চাইছে এবলতেই হোক।তাই আমিও আর না করিনি।তুমি গিয়ে তৈরী হও।”
“কিন্তু দাদাজান এই কিছুক্ষণের মধ্যে পার্লারে গিয়ে সাজবো কি করে??”
“বাড়িতেই নিজের মতো সেজে নাও মুগ্ধতা।আমি তোমার মত জানতে তোমায় ডাকিনি।………আর এমনিতেও ছেলে বিদেশে তাই বিয়েটা এখন আপাতত ফোনেই হবে।”
_________________

মুগ্ধ শুধু একটা লাল জামদানি শাড়ি আর কানে গলায় হালকা কিছু স্বর্ণের গহনা পরে মাথায় ঘোমটা দিয়ে বধূ সাজে বসে আছে।তার কবুল বলা শেষ। তার হবু বর যখনই কবুল বলতে যাবে ঠিক সেই মুহুর্তেই ফোনের স্ক্রিনে ছিটে রক্তেই দেখা মেলে।গোটা তালুকদার বাড়ি স্তব্ধ হয়ে তাকিয়ে ফোনের স্ক্রিনের দিকে। ফোনের ওপারে থাকা ব্যাক্তিটির মাথাটিকে এফোর ওফোর করে দিয়েছে গুলিতে।ধীরে ধীরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে ছেলেটি। চির চেনা ভয়ে অন্তরাত্মা কেঁপে ওঠে মুগ্ধতার। বির বির করে তার মুখ দিয়ে বেরিয়ে আসে,” ইভান “।

#চলবে