দখিনা দুয়ারে প্রেমের ছোয়া পর্ব-০১

0
3

গল্পের নাম : #দখিনা_দুয়ারে_প্রেমের_ছোয়া
লেখনীতে : #আরফিন_জাহান_আনিকা
পর্বসংখ্যা : ১ (সূচনা পর্ব)

(❌সবার জন্য ‘উন্মুক্ত’ তবে কপি করা নিষেধ❌)
“শহরের মেয়েদের চরিত্র ঠিক হয় না। ওরা বিছানাতেই সুন্দর। ঘরের বউয়ের জায়গায় না। এজন্য আমি শহরের মেয়েদের বিয়েও করব না ভেবেছি। সরি।”

নিজের ফিয়ান্সের জায়গায় গ্রামের মেম্বারের ছোট ছেলেকে দেখে যতটা অবাক হয়েছিল নবনী, তার থেকে বেশি অবাক হচ্ছে তার মুখে এমন ঘৃণ্য কথা শুনে। ভাবতেও অবাক লাগে, আজকের যুগে এসেও দু একজন মেয়ের জন্য, সবার নামে মিথ্যা অপবাদ দিতে এসব ছেলেদের বিবেকে একটুও বাদে না।

অথচ নবনীর সামনে যিনি বসে আছেন, সে নিজে মোটেও চরিত্রবান লোক নন। নাম “মাহিয়ান ইসলাম মুগ্ধ “। পুরো গ্রামবাসীর কাছে তার নামে নানান কথা ছড়িয়ে আছে। তার দলের অনেক লোক মেয়েদের ইভটিজিং করে, নেশা করে আরো কত কি? তবে তার বা তার দলের লোকের বিরুদ্ধে সরাসরি প্রমাণ না পাওয়া আর তার বাবার ক্ষমতার ভয়ে কেউ কিচ্ছু করতে পারে।

যেই ছেলে নিজে এমন জঘন্য একটা লোক। এত বাজে লোকদের নিজের দলে রাখে, সে এসেছে ভার্সিটির মেয়েদের চরিত্র মাপতে? বিষয়টা হাস্যকর। একটা তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে তার দিকে তাকিয়ে নবনী বলে,

“মিস্টার মুগ্ধ। আপনার মতো নিচু মন মানুষিকতায় ঘেরা লোককে বিয়ে করার আমার বিন্দু মাত্র রুচি নেই। আপনার বাবার জোর করাতে আমার নানা আমাকে আপনার সাথে দেখা করতে পাঠিয়েছে। নয়ত এমন কুরুচিপূর্ণ লোকের দিকে এই নবনী কখনো ফিরেও তাকায় নাহ। তাছাড়া গ্রামে বিয়ে করার আমার এইটুকু ইচ্ছাও নেই।”

মেয়েটার প্রতিটা কথায় গায়ে কাটা দিয়ে উঠল মুগ্ধর। এত সাহস মেয়েটা পায় কোথায়? যার সামনে দাড়িয়ে গ্রামের কেউ একটা টু শব্দ করার সাহস পায় না। তার সামনে এই শহুরে মেয়েটা এত কথা বলার সাহস দেখাচ্ছে?

মুগ্ধ ভাবে সে তো ভুল কিছু বলেনি। মেয়েরা যে কতটা চরিত্রহীন তার প্রমাণ তো হোয়াটসঅ্যাপ এ ঢুকলেই সে পায়। বিভিন্ন দলীয় ব্যানারে যেই নম্বর সে লোকদের সাহায্যের জন্য লাগিয়ে রেখেছে, সেসবে কল করে কমতো জালায় না মেয়েগুলো। কেউ কেউ তো নিজের ছবি, ভার্সিটি, ঠিকানা সহ সব দিয়ে দেয়।

আর পাগলামো করবে নাই বা কেন? বাবরি চুলওয়ালা এই পুরুষ মানুষটির সৌন্দর্য কয়েক গুণ বৃদ্ধি করতে তার চাপদাড়িই যথেষ্ট। মেয়েদের সৌন্দর্য লম্বা চুলে, আর ছেলেদের দাড়িতে। সাথে সে যথেষ্ট ব্যক্তিত্ববান।

কেউ কেউ তো হাত কেটে নাম লিখেও পাগলামি করে। তবে এসব মেয়েদের প্রতি যে মুগ্ধর একদম ইনটারেস্ট নেই। আর শহরের মেয়েদের কথা তো প্রশ্নই আসে না।

মুগ্ধ হেসে বলে উঠে,

“আপনি তো ভার্সিটিতে পড়েন। নিশ্চয়ই ফ্রি মিক্সিন এ অভ্যস্ত? ওসব মেয়েরাতো জাস্ট ফ্রেন্ড নাম করে ছেলেদের সাথে..”

সজোড়ে থাপ্পড় খেয়ে মুখ বন্ধ হয়ে যায় মুগ্ধর। হঠাৎ যেন সবটা থমকে যায় তার কাছে। গালে হাত দিয়ে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে নবনী নামের মেয়েটার দিকে। এত সাহস! শহরের মেয়েরা মুখ চালায় বেশি তা সে জানত। তাই বলে হাতও।

ছোট থেকেই মুগ্ধ বরাবর মেয়েদের একটু এড়িয়ে চলার চেষ্টা করে। মেয়ে মানুষ জীবনে জড়ালে রাজনীতি করা যায় না। তার বাবা মেম্বার হলেও চাচা আর পরিবারের বাকিরা অনেক উচ্চ পদেও আছে। তার মেঝো কাকাতো শহরে গিয়ে রাজনীতিতে জড়িয়েছে। এসব প্রয়োজনেও সেখানে কত যেতে হয় মুগ্ধর। মেয়েরা দুর্বল প্রজাতি। অল্পতেই ভয় পেয়ে যায়। তবে ছলনা দেয়ার ক্ষেত্রে ইনফিনিটি বুদ্ধি সম্পন্ন।

রাগে জিদে ফেটে পড়ে মুগ্ধ। হাতের মুষ্টি শক্ত করে ধরায় ঘাড়ের প্রতিটা রগ যেন ভেসে উঠেছে। ফর্সা মুখটা যেন মুহুর্তের মধ্যে রাগে লাল হয়ে উঠেছে। শার্টের কলারটা ঠিক করে, দাতে দাত কামড়িয়ে কোনোভাবে নিজেকে শান্ত করার চেষ্টা করছে সে। সামনে বসা মানুষটা মেয়ে না হয়ে যদি ছেলে হতো এতক্ষণে মাটিতে পুতে ফেলত সে। তবে মেয়ে মানুষের শরীরে হাত দেয়াটা কাপুরুষতা।

অপমান আর রাগকে কন্ট্রল করতে না পেরে নিজের বাবরি চুলগুলো একটু ঠিক করে, সে উঠে দ্রুত রেস্টুরেন্ট থেকে বেড়িয়ে যায়। বাহিরে দাড় করিয়ে রাখা বাইকটায় উঠে সোজা রওনা দেয় তার আড্ডাখানার উদ্দেশ্যে।

নবনী একদম ঠাই মেরে বসে আছে। এত অল্প সময়ে কি থেকে কি হয়ে গেল মাথায় ঢুকছে না একদম। বসে বসে ভাবতে থাকে এক সপ্তাহ আগের কথা। যখন থেকে এসব জামেলার শুরু।

এক সপ্তাহ আগে..

“তোমার আর গ্রাম থেকে শহরে ফেরা হইবো না আপা। মেম্বারের পোলার লগে দাদায় তোমার বিয়া ঠিক করছে। দেইখো এহন থেকে গ্রামেই থাকোন লাগবো। ”

ছোট্ট মামাতো বোন নাফিজার কথা শুনে বড় বড় চোখে তাকায় নবনী। কি বলছে মেয়েটা? সাত সকালে শুধু শুধু মিথ্যা বলার কোনো মানে হয়? সামনে ছোট ছোট করে কাটা চুলগুলো কানের পিছে গুজে দিয়ে, নবনী নাফিজার কান ধরে জোরে ডলে দেয়।

“আহ!আফা, লাগতাছে তো।ছাড়ো কইছি।”

নবনী আরো জোরে কান চেপে বলে, “সকাল সকাল একটু প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে বের হয়েছি তোর ভালো লাগল না? পেছন পেছন বানানো গল্পের ঝুড়ি নিয়ে হাজির হলি?”

নাফিজা নবনীর হাতটা কোনোভাবে ছাড়িয়ে এক দৌড়ে পুকুর পারে চলে যায়। ওদের গ্রামের মাটির ঘরটার পেছনে বড় বাগান। তার একপাশে পুকুর, আরেক পাশে বিশাল বড় চাষের জমি।একদম পারের কাছে চলে যেতেই নবনী চিল্লিয়ে বলে,

“আরে সাবধান! পরে যাবি তো।”

“তাতে কি হইছে? আমরা গ্রামের মাইয়া। সাতার জানি। তোমার মতোন শহরের ফ্লাটে বড় হইয়া ফার্মের মুরগি হই নাই।”

নবনীর মেজাজটা আরো গরম হয়। আসার পর কতজনের মুখে যে এই মুরগি কথাটা শুনেছে হিসেব নেই। আচ্ছা, গ্রামের মানুষ ওদের মুরগির সাথে তুলনা করে কেন? এই জবাবটাই নবনী পেল না।

খারাপ মুডটা ঠিক করতে ভিতরে গিয়ে নিজের লাকেজ থেকে একটা হুডি বের করে নবনী। এবছর ভার্সিটিতে উঠেছে সে। বাবা মায়ের একমাত্র মেয়ে। চালচলনে বেশ মডার্ন তবে শালীনতা বজায় লাখতে সে জানে। তার ছোট ছোট চোখের ফর্সা চেহারা যে কারো নজর কাড়তে পারে খুব সহজেই। প্রায় তিন চারদিন হলো শহর থেকে গ্রামে নানাবাড়ি বেড়াতে এসেছে তারা।

বাড়ির সবাই এখনো ঘুমোচ্ছে। শুধু সেই এত সকাল সকাল উঠে পড়েছে। গোল জামার উপর হুডিটা পড়ে মাথায় টুপি দিয়ে সে বেরিয়ে পড়ল। শীত আসবে আসবে ভাব। সকাল বেলায় একটু কুয়াশা পড়তে শুরু করেছে। আর কিছুদিন পর হয়ত এত সকালে কিছু দেখাই যাবে না।

একটু গ্রামটা ঘুরে দেখা যাক। পিছে অবশ্য লুকিয়ে লুকিয়ে নাফিজাও এসে পড়বে তা নবনী জানে।

লোহাপুর গ্রাম। নামে লোহা থাকলেও গ্রামের কোথাও লোহা দিয়ে বানানো কোনো বাড়ি বা বিশাল কিছুই দেখতে পায়নি নবনী। হেটে হেটে গ্রামের মেঠোপথ দিয়ে স্কুলের পথে যাচ্ছে সে। কি সুন্দর পরিবেশ! রাস্তার দুপাশে কত রকমের ছোট বড় গাছ আকাশে মাথা ছুইয়ে আছে। দুপাশে দূর দুরান্ত অব্দি শুধু ধানের ক্ষেত দেখা যায়। মাঝে দুই একটা বাড়ি।

নানির মুখে ছোটবেলায় গ্রামটা নিয়ে কত গল্প শুনেছে সে। আগে নাকি গ্রামে মানুষজনে ভরপুর ছিল। প্রতি তিনমাস পরপর নাকি স্কুলের মাঠে বড় করে মেলা বসত। গ্রামে তো শহরের মতো সচরাচর দোকানপাট তেমন নেই। সবাই প্রয়োজনীয় জিনিস কিনত, ঘুরত, আরো কত কি। এখানে কারো সাথে কারো তেমন ঝগড়া, হিংসা এসব নেই।

তবে এখন গ্রামটা আর তেমন নেই। হাতে গোনা দশ, বিশটা বাড়ির লোকজনই আছে। বাকিরা চাকরি আর একটু ভালো থাকার আশায় শহরে পারি জমিয়েছে আরো অনেক আগে। তবে গিয়ে আফসোস করেনি, এমন হয়ত কাউকে পাওয়াই যাবে না। তাইতো প্রতি ছুটিতে সুযোগ পেলেই সবাই চলে আসে এই গ্রামের মাটিতে।

এজন্যই নবনীর নানু ভাই তার দুই ছেলের একজনকেও শহরে যেতে দেয় নি। ছোট মামা গ্রামে জমিতে কাজ করে। তার বড় মামা আবার গ্রামের প্রাইমেরির গণিত শিক্ষক। এজন্য তাদের পরিবারকেও সবাই খুব সম্মান করে ভালো জানে। তবে মেয়েরা তিনজনই বিয়ে করে শহরে পাড়ি জমিয়েছে।

“ইশশ! আমাদের ঢাকা বিভাগের পরিবেশটাও যদি এমন হতো। যান্ত্রিক জীবণে আর ব্যস্ত নিয়মে বাধা পড়ে মানুষ যেন এই রূপকথার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য থেকে এখন অনেক দূরে সরে গিয়েছে।”

একা একাই বলে উঠে নবনী। তার মনে আছে, ছোট থাকতে একবার পুরো একটা বছর সে এই গ্রামে কাটিয়েছিল। যদিও তখন সে খুব ছোট থাকায় বেশি কথা মনে নেই। তবে এই স্কুলে সে পড়েছে এটা মনে আছে। সাথে কিছু পুরোনো স্মৃতি। দাদাবাড়ির সাথে একটু ঝগড়া হওয়ায় তার মা তাকে নিয়ে একবছর এখানে ছিল। পরে সব মিটমাট হলে তারা আবার ফিরে যায়।

তবে এখন মনে হচ্ছে না ফিরলেই ভালো হতো।

“কি ভাবতাছো আপামনি?” নাফিজার কথায় পাশে তাকায় নবনী। হাটতে হাটতে স্কুলের সামনে মেইন রাস্তায় উঠে গিয়েছে তারা। ঐতো স্কুল দেখা যাচ্ছে।

“এত সকালে তো ইসকুল খুলে নাই গা।”

“জানি তো। এজন্যই আসলাম। চল স্কুল আর নদীর পাশ দিয়ে ঘুরে আসি।”

“আইচ্ছা চলো। বেশি কাছে জাইয়ো না নদীর। তুমিতো আবার সাতার পারো নাহ। পইড়া গেলে কি করমু। ইসকুলের আশেপাশে বাড়িও নাই কোনো। মেম্বারগো বাড়ি যাইতে আরো পাচঁ মিনিটের পথ।”

“তো কি হয়েছে? তুইতো পারিস। আপুকে কষ্ট করে উঠাবি।”

নাফিজা মুখে ভেংচি কেটে বলে, “শখ কতো? একটু আগে আমার কান ডইলা দিছো। আমি উঠাইতাম না।”

নবনী হাসে। স্কুলের সামনে গিয়ে দাড়ায়। পুরোনো বিল্ডিংটা মেরামত করা হয়না অনেকদিন যাবৎ। দোতলা বিল্ডিং দেখে পুরোনো স্মৃতি মনে পড়ে। বারান্দায় ছোটাছুটি। কিছু দুষ্টুমি। পুরোনো বান্ধবী। আরো কত কি। চোখ পড়ে স্কুলের পাশ দিয়ে বয়ে চলা নদীটার উপর।
….

মেম্বার বাড়ির বৌয়েরা সবাই সকাল সকাল কাজে ব্যস্ত। বেশ অদ্ভুত নিয়ম কানুন মেনে চলে এ বাড়ির মানুষজন। অদ্ভুত না, আসলে পুরোনো সব নিয়ম। যেমন বাড়ির বৌয়েরা বিয়ের পর পড়াশোনা করতে পারবে না। বিনা কারণে পরপুরুষের সামনে যেতে পারবে। সবাইকে কর্তার কথামতোই চলতে হবে। তারা ঘরের কাজ করবে। আরো কত কি নিয়ম!

বাড়ির সবাইকে কর্তার কথামতোই চলতে হয়। আর তিনি হচ্ছেন মতিসুর মাতব্বর। এই গ্রামের মেম্বার। বেশ নাম ডাক আছে তার গ্রামে। সবাই তাকে খুব সম্মানও করে। তবে সেই সম্মানের আড়ালে পারিবারিক জীবণে সে কেমন সেটা সবার অজানা। এইযে বাড়ির কোনো মেয়েকে সে বিন্দুমাত্র স্বাধীনতা দেননি। সেই সম্পর্কে বাহিরের কেউ হয়ত কখনো ভাবতেও পারে নি।

মেম্বারের দুই ছেলে। বড় ছেলে স্নিগ্ধ। বুয়েটের প্রফেসর। বেশ গম্ভীর স্বভাবের। শহরেই থাকে। বিয়ে করে বৌ রেখে গেছে। কিছুদিন পর তাকেও নিয়ে যাবে। আর ছোটটা গ্রামেই থাকে। নাম মুগ্ধ। বাপ চাচার সাথে ঘুরে ঘুরে রাজনীতির কাজকর্ম থেকে শুরু করে, কোথায় কার কি লাগবে, সব দেখাশোনার দায়িত্ব তার।

প্রতিপক্ষের সাথে মারামারির জামেলাতেও প্রায়ই জড়িয়ে যায় সে। গ্রামের সবাই তাকে পছন্দ করে খুব। তবে বিপক্ষ দলের কেউ কেউ তাকে নিয়ে বাজে কথাও ছড়িয়েছে। অথচ সবার প্রয়োজনে সবার আগে এই মানুষটাকেই পাওয়া যায়। অনার্স শেষ করে শহরে ফেরত যায় নি মুগ্ধ। এখানেই রয়ে যায়।

মেম্বারের বাকি দুজন ছোট ভাইয়ও আছেন।একজন শহরে রাজনীতি করে। আরেকজন গ্রামেই জমি বিক্রি করে বৌ নিয়ে এ বাড়িতে থাকছে। নেশার বড্ড বাজে স্বভাব আছে তার। জমি জমা বিক্রি করে রাত বিকেলে নেশা করে পড়ে থাকে শরীফ। সবাই বলে বুঝেও তাকে ঠিক করতে পারেনি।

স্ত্রীর শরীরে হাত তোলা তার নিত্যদিনের রুটিন। গ্রামে ভাইয়ের জন্য প্রায়ই ছোট হতে হয় মতিসুর মাতব্বরকে। তবে বড় ভাইয়ের সামনে বেশ ভালো সেজে থাকার চেষ্টাই করে শরীফ। শরীফের একটাই ছেলে শাওন। মুগ্ধর বয়সী।

“ভাবী, পাতিলটা এদিকে দিনতো। তাড়াতাড়ি টেবিলে খাবার রেডি করি। মুগ্ধর বাবা হয়ত উঠে পড়েছে। দেরী হলে খবর হয়ে যাবে।”

মুগ্ধর মা মালেহা বেগমের কথায় সব কিছু এগিয়ে দিতে থাকেন সায়েরা খাতুন। তিনি সম্পর্কে তার ছোট জা। আর শরীফের স্ত্রী। বেশ ভালো মহিলাটার কপাল পোড়া ছিল বলেই এত বড় বাড়ির বৌ হয়েও ভাগ্যে শান্তি জোটে নি। এই বাড়ির অদ্ভুত সব নিয়ম আর শরীফের চরিত্র সম্পর্কে জানলে কখনো বিয়ে করে আসতেন না তিনি। আর কারো সাহস নেইও প্রতিবাদ করার। বাড়ির কর্তা খুব বেশি নারীবিদেষী।

এ বাড়ির সবাইকে বেশ রোবটের মতো করেই থাকতে হয়। মেম্বারের বানানো নিয়মে চলা, নির্দিষ্ট সময়ে খাওয়া, সবকিছু। তার সাথে বিরোধীতা করার সাহস কারো নেই। তবে পুরুষদের ক্ষেত্রে কিছুটা ছাড় দেয়া হয়েছে। এমন সময় মুগ্ধর বাবার চিল্লাচিল্লি শোনা গেল।

#চলবে ….