#প্রণয়ী
লেখনীতেঃ #ঈশিতা_ইশা
|০৭.|
(লেখা কপি করা নিষেধ)
…………
‘একটু দেখে চলাফেরা করবা। আরেকটু হলেই দুর্ঘটনা ঘটে যেতো।’
প্রিয়তা বুকে হাত দিয়ে লম্বা শ্বাস নেয়। আরেকটু হলেই হয় প্রাণটা যেতো না হয় হা পা ভাঙতো। এ যাত্রায় জোর বাঁচা বেঁচে গেছে সে।
‘তুমি ঠিক আছো মা?’
‘জি আন্টি আমি ঠিক আছি। আপনাকে ধন্যবাদ। আপনি না থাকলে দুর্ঘটনা ঘটে যেতো।’
‘আরে বোকা কি বলো এইসব। বাঁচানোর মালিক আল্লাহ আমি শুধু উচিলা।’
প্রিয়তা কোনো কথা বলে না। মিসেস পারুল প্রিয়তাকে ধরে রাস্তার এক পাশে দাঁড় করায়। ব্যাগ থেকে পানির বোতল বের করে পান করতে দেয়। নিঃশব্দে প্রিয়তা পানি পান করে নেয়।
‘এখন ভালো লাগছে?’
‘জি আন্টি।’
‘একটু সাবধানে চলাফেলা করবা। যারা গাড়ি চালায় এরা মনে করে গাড়ি না প্লেন চালায় তাই তো মনের সুখে স্পীড দিয়ে চালায়।’
‘ঠিক আছে।’
‘তুমি বাসায় যেতে পারবা নাকি দিয়ে আসবো?’
‘না আন্টি যেতে পারবো। আপনাকে আবারো ধন্যবাদ।’
‘হ্যা মা যাও সাবধানে।’
মাথা নাড়িয়ে প্রিয়তা বাসার দিকে হাঁটা দেয়। মিসেস পারুল প্রিয়তার যাওয়ার পানে তাকিয়ে গাড়ির দিকে যায়। উনি ঠিক সময়ে এসে প্রিয়তার হাত ধরে টান না দিলে সত্যিই আজ ঘটে যেতো অনার্থক কান্ড।
মিসেস পারুল এসেছিলেন কিছু কেনাকাটা করতে। ছেলে-মেয়ে সবাই নিজ নিজ কাজে ব্যস্ত তাই সে একাই ঘুরে আর কেনাকাটা করেন।
বাসায় ফেরার পর প্রিয়তার মস্তিষ্কে সকাল থেকে ঘটা ঘটনা ঘুরতে থাকে। কি হচ্ছে কেনো হচ্ছে সবটাই ঝাপসা। সিদ্ধান্ত নেয় রাতে তুহিন ফিরলে আশরাফের বিষয়ে কথা বলবে। আপাততঃ বাবা কিংবা মায়ের সাথে বিষয়টা শেয়ার করে না সে।
রাতের বেলায় তুহিন ফেরে যখন প্রিয়তা সেই সময় পড়ার টেবিলে বসে এসাইনমেন্ট করছিলো। দেরি করে গোসল করাতে চুল গুলো ছেড়ে তারপর নিজের কাজ করছিলো।
‘আশরাফ ভাইয়ের সঙ্গে ঠিকঠাক ভাবে কথা বলেছিস তো?’
তুহিনের গলা পেয়ে প্রিয়তা মুখ তুলে তাকায়।
‘হ্যা’
‘যাওয়ার আগে কিছু বলে গেছে?’
প্রিয়তা কি উত্তর দিবে বুঝে উঠতে পারে না। তার সাথে তো আশরাফের আর দেখাই হয়নি। তাকে ধরে যে ওরা তিনজন বাথরুমের দিকে নিয়ে গেলো এরপর কি ঘটেছে তা তার অজানা।
‘কিরে জবাব দিচ্ছিস না কেনো?’
‘না কিছু বলে যায়নি।’
প্রিয়তার উত্তর পেয়ে তুহিন খানিকটা চিন্তায় পড়ে যায়। আশরাফকে সে কল দিয়েছিলো কিন্তু সে কল রিসিভ করেনি। কাজের চাপে অফিসেও আশরাফের সাথে আর দেখা হয়নি।
‘শোন বাবাকে এসব বলার দরকার নেই। আশরাফ ভাইকে আগে দেখ যদি পছন্দ হয় তারপর বিষয়টা আগাবো।’
তুহিনের কথা শুনে প্রিয়তা চোখমুখ কুঁচকে ফেলে। ঐ টাক ওয়ালা লোককে তার মোটেও ভালো লাগেনি। তার উপরে লোকটা অহেতুক কথা বলে বেশি। বেশি কথা প্রিয়তার অপছন্দ।
‘কিন্তু ভাইয়া..’
প্রিয়তাকে থামিয়ে তুহিন বলে,’তোর কাউকে পছন্দ আছে নাকি?’
প্রিয়তা মাথা নাড়ায়।
‘তাহলে যা বলি সেটা কর।’
তুহিন কক্ষ হতে বেরিয়ে যায়। প্রিয়তার মাথায় ঝিম ধরে যায়। পড়ায় মন বসে না। তুহিন চাইছে টা কি? জানালার পর্দা একটু সরিয়ে উদাস মনে রাতের আকাশ দেখতে শুরু করে সে। কিছু ভালো লাগে না তার। তুহিনকে সম্মান করে বলে তার সামনে চুপ থাকে। আজকে আশরাফকে তার ইচ্ছে করছিলো কিছু কথা শুনিয়ে দিতে শুধু তুহিনের কারণে পারেনি। কোথাকার জল কোথায় গড়াবে সেটাই দেখার পালা।
__________
পরের দিন ভার্সিটিতে প্রেজেন্টেশন শেষ করে রিমি আর প্রিয়তা গাছ তলায় এসে বসেছে। হৈমন্তীর অন্য কোর্সের প্রেজেন্টেশন থাকায় বেচারি এখনো ক্লাসে।
‘গতকালকে আমাদের রেখে তুই কই গেছিলি? কিরে প্রেম ট্রেম করিস নাকি?’
রিমি প্রিয়তাকে কনুই দিয়ে গুঁতা মেরে জিজ্ঞেস করে।
‘দূর যা ভাবছিস তেমন কিছু না।’
‘তাহলে গেছিলি কই?’
প্রিয়তা চুপ করে থাকে। সে চাইছে না আশরাফের বিষয়টা বলতে।
‘প্রিয়তা তোমার ক্লাস শেষ?’
হঠাৎ সমানে আশরাফকে দেখে প্রিয়তা চমকায়। রিমি পা থেকে মাথা পর্যন্ত আশরাফকে স্ক্যান করে নেয়।
প্রিয়তার কানে ফিসফিস করে রিমি জিজ্ঞেস করে,’কিরে এটা তোর মামা নাকি চাচা?’
প্রিয়তা শুকনো কাশি দিয়ে নিজেকে সামলায়।
রিমিকে ধমকে বলে,’চুপ।’
আশরাফ এসে তাদের সামনে দাঁড়াতেই দু’জনে উঠে দাঁড়ায়।
রিমি বলে,’হায় আঙ্কেল আমি প্রিয়তার বান্ধবী।’
প্রিয়তা বেকায়দায় পড়ে যায় রিমির এমন বেফাঁস কথাবার্তায়।
আশরাফ শুকনো হেঁসে বলে,’আরে ভুল বুঝছো আমি তোমার আঙ্কেল কেনো হবো! আমার বয়স এই পঁচিশ ছাব্বিশ হবে বেশি না তো। ভাইয়া ডাকবা আমাকে। আমাকে দেখে কি আঙ্কেল মনে হয়?’
কথাগুলো হাত দিয়ে টাকের আশেপাশে থাকা চুলগুলোকে ঘষে দেয় সে। রিমি ফট করেই আশরাফের কথা শুনে হেসে দেয়।
‘সরি আঙ্কেল আইমিন ভাইয়া আমি হাসি আঁটকে রাখতে পারি না।’
রিমির কান্ডে প্রিয়তা লজ্জা পায়। আশরাফ যদি তার ভাইকে গিয়ে এসব বলে তাহলে সে ভাববে প্রিয়তা তার বান্ধবীকে দিয়ে এসব ইচ্ছে করে করিয়েছে।
আশরাফ খানিকটা রেগে যায় রিমির কান্ডে। সে প্রিয়তাকে বলে,’প্রিয়তা চলো কোথাও বসি। গতকালকে তো ঠিকমতো আলাপ করতে পারিনি।’
প্রিয়তা উত্তর দেয়,’আসলে আমার ক্লাস আছে আজকে সম্ভব না।’
‘ঠিক আছে আমি তুহিনকে কল দিয়ে বলছি। এমনিতেও গতকালকের ঘটনার পর আমার ইচ্ছা ছিলো না আসার তুহিনই জোর করলো বলে আসলাম।’
প্রিয়তা এবার ফ্যাসাদে পড়ে যায়। তুহিনকে জানালে সে তাকে বকবে।
‘আচ্ছা চলেন কিন্তু দূরে কোথায়ও না আর বেশি সময় দিতে পারবো না।’
এতক্ষণ প্রিয়তা আর আশরাফের কথা শুনে রিমি বুঝার চেষ্টা করে দু’জনের মধ্যে চলছে কি। প্রিয়তার হাত টেনে পিছনে নিয়ে জিজ্ঞেস করে,’কিরে এই আঙ্কেলকে শেষে তোর পছন্দ হইছে? আমি কিন্তু এই ব্যাটারে দুলাব্রো মানি না। হ্যান্ডসাম দুলাব্রো চাই আমার।’
রিমির কথা শুনে প্রিয়তা তার কাছ থেকে হাত ছাড়িয়ে নেয়।
‘পরে এসে ঘটনা সব বলছি এখন হাত ছাড়।’
‘বলবি তো সব?’
প্রিয়তা মাথা ঝাকায়। রিমি প্রিয়তার হাত ছেড়ে দিলে সে হাঁটা দেয়।
ভার্সিটি থেকে বেরিয়ে রাস্তার মোড়ের ফুচকার দোকানে এসে দাঁড়ায় আশরাফ। প্রিয়তা বিরক্ত হয়। বান্ধবীদের ছাড়া কখনো এভাবে খোলা জায়গায় আসেনি সে কারো সাথে। এমন কি তার ভাই তুহিনের সাথেও না। চুপচাপ সবটা সহ্য করা ছাড়া উপায় নেই।
‘প্রিয়তা কি খাবা ফুচকা নাকি চটপটি?’
‘আমি কিছু খাবো না আপনি খান।’
‘আরে লজ্জা পেয়ো না।’
প্রিয়তা কথার জবাব দেয় না। আশরাফ ফুচকার অর্ডার দিয়ে প্রিয়তার বিপরীতে এসে বসে।
‘আপনি আবার আজকে এলেন? ভার্সিটি কি করে চিনলেন?’
‘তুহিন বললো এসে তোমার ভার্সিটি থেকে ঘুরে যেতে। এমনিতে প্রাইভেট ভার্সিটিতে যারা পড়ে তাদের আমার অপছন্দ। শুধু তুমি তুহিনের বোন তাই আসলাম। না হলে আমাকে টেনেও কেউ আনতে পারতো না।’
প্রিয়তা কথার টপিক পাল্টাতে প্রশ্ন করে,’গতকালকে কি হয়েছিলো?’
‘আরে গতাকালকে জানো এলাকার মাস্তান পোলাপানদের চক্করে পড়ছিলাম। ওরা ভেবেছিলো আমাকে ভয় দেখিয়ে টাকা পয়সা হাতাবে কিন্তু আমি তো আশরাফ আমারে ভয় দেখানো এতো সহজ নাকি। আমি তিনটারে তিনটা বন চটকানা দিতেই পায়ে ধইরা “ভাই মাফ করেন আর করবো না ভাই” বলতে শুরু করে। আমিও ওয়ানিং দিয়ে ওদের ছেড়ে দেই। পোলাপান মানুষ তাই বেশি কিছু বলিনি।’
আশরাফের কথা শুনে প্রিয়তা অবিশ্বাস্য চোখে তাকায়। তার কাছে ঘটনা বিশ্বাসযোগ্য মনে হয় না।
‘তুমি তো জানো না আমাদের গ্রামে আমাকে পোলাপান এক নামে চিনে। সবাই ভয় পায়। এলাকার মুরব্বিরা আমাদের বাড়িতে প্রস্তাব নিয়ে এসে বসে থাকে। তাদের একটাই কথা তাদের মেয়েকে আমার হাতে না দিয়ে যাবে না। আমিও বলে দিছি লম্বা চুল আর ভদ্র মেয়ে ছাড়া বিয়ে করবো না। যে মেয়ে জামাইয়ের সেবা করবে সকল আদের মেনে চলবে তারেই বউ বানাবো।’
আশরাফের কাহিনী শুনে প্রিয়তা বিশ্বাস করতে পারলো না। উল্টো বিরক্ত হয় এতো কথা শুনে। বারবার ঘড়িতে দেখছে কতক্ষণ হলো। লোকটা এতে বকবক করে।
প্রিয়তা বলে,’ভাইয়া আমার ক্লাস আছে আজকে উঠি?’
‘আরে ক্লাস তো করতে পারবা বসো। ফুচকা আসবে খাবা তারপর গল্প করে যাবা।’
প্রিয়তা বুঝে নেয় সে আবারো এই টাকলু আশরাফের চক্করে পড়ে গেছে। মনে মনে সৃষ্টিকর্তাকে বলে এখান থেকে তাকে বাঁচাতে।
‘কিরে তোর দোকানে ছাগলের আনাগোনা দেখি বাড়ছে। তোরে না বলছি ছাগলটাগলরে দোকানে জায়গা দিবি না।’
মারুফের গলা পেয়ে প্রিয়তা পিছনে তাকায়।
শাকিল বলে,’ছাগল শালা মহা চালাক। আজকেও গোলাপকে টেনে আনছে।’
মারুফ বলে,’ব্যাটা তো জানে না কার বাগানের গোলাপে হাত দিছে।’
মারুফ আর শাকিল এসে চেয়ার টেনে আশরাফের দুই পাশে বসে তার কাঁধে হাত রাখে। এদের দেখে আশরাফ তরতর করে ঘামতে শুরু করে। মনে মনে দোয়া ইউনুস পড়তে শুরু করে।
আশরাফ প্রিয়তার সামনে সাহসী সাজতে বলে,’কি ভাই আজকে আবার আপনারা? আমি তো আজকে কিছু করিনি। আপনারা আমাদের হয়রানি করা বন্ধ না করলে পরিণাম খারাপ হবে।’
‘গতকালকের কথা মনে নাই? আজকেও চেকিং করানো লাগবো?’
মারুফের কথা শুনে আশরাফ ঢোক গিলে। চোখের সামনে ভেসে উঠে গতকালকে বাথরুমে ঘটা ঘটনা।
আশরাফকে টেনে রফিক,মারুফ আর শাকিল বাথরুমে নিয়ে যায়।
‘এই টয়লেটে কারা কারা আছিস বের হ।’
ভেতরে দুইটা বাথরুম ছিলো সেগুলোর দরজায় আঘাত করে মারুফ বলে।
দুই বাথরুম থেকে দুইজন বের হয়। বেসিনে হাত ধুইতে গেলে মারুফ বলে,’হাত ধোঁয়া লাগবে না যা ভাগ। এমনিতেও তোরা হাত না ধুয়েই বের হস আমরা জানি। শুধু শুধু পানির অপচয়।’
ছেলে দুইজন ভয়ে আর কিছু না বলে দ্রুত বের হয়ে যায়। ওরা যেতেই রফিক দরজা লাগিয়ে দেয়।
আশরাফ ভয় দেখাতে বলে,’আপনারা যদি পুলিশ হন আইডি কার্ড দেখান। এভাবে আমাকে হয়রানি করলে আমি কিন্তু আপনাদের নামে কেস করবো।’
আশরাফের কথা শুনে তিনজনই শব্দ করে হেসে দেয়।
শাকিল বলে,’কিরে মামা টাকলু কয় কি? আমগো নামে কেস করবে।’
মারুফ আশরাফের টাকে হাত রেখে তবলা বাজানোর মতো ভঙ্গি করে।
‘কেস করবি আচ্ছা করিস আগে তোর তল্লাশি করে নেই।ঐ শাকিল ওর পকেট চেক দে।’
শাকিল নাক মুখ কুঁচকে বলে,’ছিঃ! ব্যাডা মানুষ হয়ে আমি আরেক ব্যাডার পকেটে হাত দেই না।’
রফিক হুট করে বলে,’ওরে দেইখা মনে হয় সাথে টুনটুনি ছাড়া কিছুই নাই।’
রফিকের কথা শুনে শাকিল আর মারুফ হো হো করে হাসতে শুরু করে।
মারুফ হাসতে হাসতে বলে,’কিরে টাকলু হাচানি কথাডা?’
শাকিল আন্দাজ করে বলে,’শালার মুখের এক্সপ্রেশন দেইখা মনে হয় টুনটুনি তিন ইঞ্চির বেশি না। আমি কিন্তু টাকলুর পকেটে হাত দিতে পারুম না।’
রফিক বলে,’ভাই আমিও পারুম না। আমারো ইচ্ছা নাই শরীফ থেকে শরীফা হওয়ার।’
মারুফ টাক ছেড়ে আশরাফের কাঁধে হাত রাখে,’দেশে চারিদিকে যেই অবস্থা কে শরীফ আর কে শরীফা বোঝা দায় তাই কেউ রিস্ক নিতে চায় না। তাই চুপচাপ প্যান্টটা খুলে দে আমরা চেকিং করবে।’
আশরাফ অনুনয় করে বলে,’ভাই মাফ করেন। এই যে পায়ে ধরি আপনাদের।’
মারুফের পা চেপে ধরে আশরাফ।
শাকিল বলে,’তোরে আয়নাতে দেখ আর ঐ মেয়েকে দেখ। বল তোর লগে কি যায় ওর? তুই শালা কেন সাহসে ঐ মেয়ের সাথে দেখা করতে আসছিস?’
আশরাফ বলে,’আর জীবনেও আসমু না ভাই।’
হাতে পায়ে ধরে অনেক অনুরোধ করার পর তাকে ছাড়া হয় তবে শর্ত থাকে সে আর কখনো এদিকে আসবে না।
‘কিরে মনে পড়ছে?’
মারুফের ডাকে আশরাফ বর্তমানে ফেরে।
প্রিয়তা বলে,’আপনারা ওনাকে বিরক্ত করছেন কেনো? লোকটাকে ছেড়ে দিন।’
শাকিল মুখ ঘুরিয়ে বলে,’শালার যার জন্য আমরা করলাম চুরি সে বলে চোর।’
রফিক বলে,’আপু আমাদের হাতে কিছু নাই আপনি জান ভাইয়ের সাথে কথা বলেন।’
মারুফও সায় দিয়ে বলে,’হ্যা জান বললে আমরা ছেড়ে দিবো। এমনিও এই তিন ইঞ্চির মালটার আশেপাশে বেশিক্ষণ থাকার ইচ্ছা নাই আমাগো।’
প্রিয়তা বিরক্তি নিয়ে বলে,’আপনারা রীতিমতো গুন্ডামী করছেন এগুলো ঠিক না।’
প্রিয়তার কথায় তিনজন পাত্তা দেয় না।শেষে আশরাফ মুখ খুলে,’প্রিয়তা আমাকে এদের হাত থেকে ছাড়াও।’
প্রিয়তা চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ায়। আশেপাশে তাকাতেই দেখে একটু দূরে বাইকে বসে বাদাম খাচ্ছে জাইন। হনহনিয়ে সেদিকে হাঁটা দেয় সে।
প্রিয়তা যেতেই মারুফ আশরাফকে বলে,’সত্যি করে বল তো তুই কোন হুজুরের তাবিজ আইনা মেয়েটারে বশ করছিস? এই মেয়ে তোর লগে বের হইতে রাজি কেমনে হয়? শালা জ্বি ন চালান দিছোস নাকি?’
শাকিল বলে,’এতো সুন্দর চেহারা নিয়া কারটা ফালাইলাম আজ পর্যন্ত! একটা গরুও আমার দিকে সুন্দর লুক দিলো না। আর মাইয়া মানুষ এর লগে ফুচকা খাইতে আহে।’
রফিক দুঃখ প্রকাশ করে,’সবই নিয়ে যায় মোশতাক আর এদের মতো টাকলু আঙ্কেলরা। আমাদের জন্য একটা কাক পক্ষী ও নাই।’
হঠাৎ ফুচকার দোকানের ছেলেটা জিজ্ঞেস করে,’মামা ফুচকা রেডি, দিমু?’
মারুফের মাথায় একটা শয়তানি বুদ্ধি চাপে। সে শাকিলের দিকে তাকিয়ে হাসি দিতেই সে বুঝে যায়। আজকে আশরাফের খবর আছে।
……..
(চলবে..)