প্রণয়ী পর্ব-৪

0
131

#প্রণয়ী
লেখনীতেঃ #ঈশিতা_ইশা
|০৪.|
(লেখা কপি করা নিষেধ)
…………

বালুর মাঠে ফেলে আলামিনকে একের পর এক আঘাত করছে জাইন। ঘুষি,কিল কিছুই বাদ রাখেনি সে। শক্ত মোটা লাঠিটা তুলে ঠাস ঠাস করে অনেকগুলো আঘাত করে। যার দরুন মাথা ফেটে রক্ত ঝরছে যা বালুর সাথে মিলে একাকার অবস্থা। আলামিনের শরীরে অবশিষ্ট শক্তি নেই প্রতিবাদ করার। সে হাত উচিয়ে নিজেকে রক্ষা করার বৃথা চেষ্টা চালাচ্ছে।
এতক্ষণ চুপচাপ সব দেখলেও এখন অবস্থা বেগতিক দেখে শাকিল দৌড়ে এসে জাইনকে ধরে। অনিচ্ছা সত্ত্বেও মারুফও এগিয়ে এসে জাইনকে বাঁধা দেয়। জাইনের টগবগে মেজাজ তখনো ঠান্ডা হয়নি এমনকি আলামিনকে এখন সে আরেক দফায় পেটালেও সে ঠান্ডা হবে না। কিন্তু আর মারলে আলামিনকে বাঁচানো কঠিন হয়ে যাবে।

পাশেই আলামিনের সহযোগী দুই ছেলে থরথর করে কাঁপছে আলামিনের অবস্থা দেখে। তারা বারবার ঢোক গিলছে। রফিক এদের পিছনে দাঁড়িয়ে আছে। তারও সাহস হচ্ছে না জাইনের সামনে যাওয়ার। জাইনের রাগ মারাত্মক সেটা সে জানে তবে আজকে একটু বেশিই মনে হচ্ছে।

ঘটনার সূত্রপাত আজকে সকাল বেলা..
সকালে যখন বাজারে দোকানদাররা দোকান খুলে তখন তারা একটু ভয়ে ছিলো আলামিন কি করবে সেটা ভেবে। কিন্তু দোকান খেলার দুই ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও আলামিন আসে না। মোটামুটি সকলে নিশ্চিত থাকে। প্রিয়তার বাবা বেল্লাল হোসেনও চিন্তা মুক্ত থাকেন কিছুটা। ভাবেন আজকে আলামিন না এলে কালকে যেভাবে হোক টাকার ব্যবস্থা করে রাখবেন। গত কালকে থেকে অনেক জায়গায় ধার চেয়েও টাকা পাননি। তারও সাহসে কুলায়নি ছেলেকে এই বিষয়ে বলার। শুধু প্রিয়তাই জানে এই ঝামেলার বিষয়ে।
সকলের আশায় ধুলো দিয়ে আলামিন আট দশজনকে নিয়ে বাজারে উপস্থিত হয়। বাজারে ঢুকেই একেক দোকানে যেতে থাকে চাঁদা তুলতে। যারা চাঁদা দেয় তাদেরকে ছেড়ে দেয়। আর যারা চাঁদা দেয় না তাদের দোকানের চাবি কেঁড়ে নেওয়া হয়। এমন অবস্থা দেখে বেল্লাল হোসেন তরতর করে ঘামতে শুরু করে। তার এক মাত্র আয়ের উৎসটা চলে গেলে তিনি কীভাবে চলবেন? বুড়ো বয়সে তো আর ছেলের কাছে হাত পাততে পারেন না। যেভাবেই হোক তার কিছু করা দরকার। চিন্তা করেন অনুরোধ করবে কাজ না হলে হাতে পায়ে ধরবে।
তিনি দোকান থেকে বেরিয়ে আলামিনের কাছে যায় অনুরোধ করতে।
অনুরোধের স্বরে বলতে শুরু করে,’বাবা আমি তো টাকা আজকে সবটা যোগাড় করতে পারিনি। আমাকে যদি আরকটু সময় দিতে।’

আলামিন বেল্লাল হোসেনকে দেখে নেয়।
বেল্লাল হোসেনকে উদ্দেশ্য করে বলে,’কি চাচা আবারো ঝামেলা করেন কেন? দেখতাছেন না সবাই টাকা দিতেছে। ওরা তেইলে কই থেকে ম্যানেজ করছে? বেশি তো চাই না আপনার থেইকা। ভাতিজা হিসেবে কিছু দিবেন তাও নখড়ামি করতাছেন।’

বেল্লাল হোসেন নরম গলায় বলে,’বাবা তোমাকে টাকাটা দিবো শুধু আর কিছুদিন সময় দাও।’

কথাটা বোধহয় আলামিনের কর্ণে পৌঁছালো না। সে একজনকে ডেকে বলে,’ঐ গিয়া ফার্মেসীতে তালা মাইরা চাবিডা নিয়া আয়।’

বেল্লাল হোসেন সাথে সাথে কান্নায় ভেঙে পড়ে অনুরোধ করতে শুরু করে। কাজের কাজ কিছুই হয় না৷ তার ফার্মেসীতে তালা ঝুলিয়ে চাবি দখল করে নেয় আলামিন।
দোকানের সামনের বসে অশ্রু বিসর্জন দিতে শুরু করে বেল্লাল হোসেন। প্রিয়তা ছুটে এসে বাবার কাঁধে হাত রাখে। মেয়েকে দেখে বেল্লাল হোসেন আবেগী হয়ে পড়েন। প্রিয়তা আশেপাশে তাকিয়ে পরিস্থিতি দেখে বুঝে নেয় আলামিন টাকা না নিয়ে ক্ষান্ত হবে না। যেই ভয় পাচ্ছিলো সে তা ই হলো। বাবার চিন্তায় ভার্সিটিতে গিয়ে ক্লাস না করে ফিরে এসেছে এখানকার অবস্থা দেখতে। এসে বেল্লাল হোসেনকে কাঁদতে দেখে তারও কান্না পাচ্ছে। ছোট বেলায় সে কাঁদলে তার বাবা তাকে আদর করে থামাতো আজ সেই বাবাকে কাঁদতে দেখে তার নিজেকে বড্ড অসহায় লাগছে।

বেল্লাল হোসেনের পাশ থেকে উঠে আলামিনের দিকে প্রিয়তা এগিয়ে যায়। প্রিয়তাকে দেখে আলামিন লোভাতুর দৃষ্টিতে তাকায়। মাথার ওড়না টেনে প্রিয়তা বলতে শুরু করে,’আপনাদের যা চাহিদা সেই টাকা দেওয়া হবে শুধু আমাদের দোকানের চাবিটা দিয়ে দিন।’

প্রিয়তার কথা শুনে আলামিন তার দিকে এগিয়ে এসে বলে,’উফ আগে যদি জানতাম বুড়োর এমন একটা মেয়ে আছে তাহলে তো টাকার কথা বলতামই না। দোকানের চাবি দিবো এক শর্তে। যদি তুমি আমার সঙ্গে..’

বাকিটা বলার পূর্বেই প্রিয়তা আলামিনের গালে কষিয়ে চড় বসায়। উপস্থিত সকলে বিস্ময় নিয়ে তাকায়। আলামিন নিজেও এমন কিছু আশা করেনি। বেল্লাল হোসেন দৌড়ে আসেন মেয়েকে সামলাতে। তিনি জানেন তার মেয়ে আলামিনকে এক চড় বসিয়ে চুপ থাকবে না।

চড় খেয়ে আলামিন আরো ক্ষুদ্ধ হয়ে যায়।
‘শালি তোর এতো সাহস আমারে চড় দেস। আজকে তোরে এই বাজারে বেইজ্জতি করুম।’

বেল্লাল হোসেন বলে,’আমাদের দোকান লাগবে না ঐইটা রেখে দাও। তবুও আমার মেয়েকে আজেবাজে কথা বোলো না। আমার মেয়েকে আমি শিক্ষা দিয়েছি অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে তাই সে চুপ থাকবে না।’

বেল্লাল হোসেনের কথা আগুনে ঘি ঢালার মতো কাজ করলো। আলামিন ক্ষিপ্ত গলায় বলে,’শালা বুইড়া তুই তোর মেয়ে আর পরিবার নিয়া কেমনে শান্তিতে থাকোস আমিও দেখুম। তোর পরিবারকে যদি রাস্তায় নামাইয়া অপমান না করি আমার নামও আলামিন না।’

প্রিয়তা কিছু বলতে নিলে বেল্লাল হোসেন তার হাত চেপে ধরে বাসার দিকে হাঁটা দেয়। আলামিন রাগে ফুঁসতে থাকে। তবে সেই রাগ বেশিক্ষণ স্থায়ী হয় না। এক দোকানে গিয়ে চাঁদার টাকা গুনছিলো তখনই কেউ পিছন থেকে লাথি দেয়। লাথি খেয়ে চেয়ার সহ উল্টে মাটিতে পড়ে যায় সে। কে মেরেছে দেখার জন্য মাথা তুলতেই দেখে জাইন অগ্নি দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে আছে। জাইনকে দেখে আলামিনের সাথে থাকা ছেলে গুলো পালায়। শুধু চারজনকে ধরতে পারে জাইনের লোকেরা। পরে অবশ্য মার খেয়ে সেখান থেকেও দু’জন পালায়। আলামিনকে টানতে টানতে পাশের বালুর মাঠে নিয়ে যায় রাম ধোলাই দিতে।

শাকিল জাইনকে শান্ত করতে বলে,’দোস্ত থাম বহুত মারছিস। আর মারলে প্রাণে বাঁচবে না।’

মারুফও বলে,’হ এবারের মতো ছেড়ে দে।’

শক্ত গলায় জাইন বলে,’ছাড় আমাকে।’

শাকিল আর মারুফ জাইনকে ছেড়ে দেয়। জাইন বালুতে কাতরাতে থাকা আলামিনের দিকে তাকায়।
মারুফ শাকিলকে কানে কানে জিজ্ঞেস করে,’জাইন এতো ক্ষেপলো কেন?’

শাকিল জবাব দেয়,’রফিক এসে খবর দিয়েছে আলামিন নাকি বাজারে প্রিয়তাকে বাজে কথা বলেছে আর ওর বাবাকে হেনস্তা করেছে।’

মারুফ বলে,’তাহলে তো ওরে আরো কয়েক ঘা দেওয়া উচিত।’

মারুফের কথা শুনে শাকিল চোখ রাঙায়। উপস্থিত সকলকে বেশ খুশি দেখা যায় জাইন আলামিনকে উত্তম মাধ্যম দেওয়াতে। তবে এই জল কতদূর গড়ায় তা এখন সময়ের অপেক্ষা।

…..

সারাদিন মন খারাপ করে নিজের কক্ষে বসে ছিলো প্রিয়তা। দুপুরে খাবারও খায়নি। বেল্লাল হোসেন টাকার ব্যবস্থা করতে ছুটে চলেছে। এসব খবর মিসেস মাসুমার কানে আসতেই তিনি বিলাপ করে চলেছেন। এতোদিন এসবের কিছু না জানলেও আজকে বাজারে আলামিনকে প্রিয়তা চড় দেওয়ার পর সেটা পুরে মহল্লায় ছড়িয়ে গেছে। মিসেস মাসুমার মতে যা হয়েছে তাতে প্রিয়তার দোষ রয়েছে। সারাদিন মায়ের বিলাপ শুনে বিরক্ত হয়ে যায় সে। বিকালে যেই বাচ্চাটাকে পড়ায় ওকে পড়ানোর জন্য নির্ধারিত সময়ের পূর্বেই বাসা থেকে বের হয়। বাচ্চাটাকে পড়িয়ে মাসে আড়াই হাজার টাকা পায় সে। এই টাকাটাও সে মায়ের হাতে দিয়ে দেয় যাতে কিছু প্রয়োজন হলে তার মা খরচ করতে পারে। প্রিয়তার বাবা কিংবা ভাই জানে না এই টিউশনের ব্যপারে। প্রিয়তা তার মাকে অনুরোধ করেছে তাদেরকে না জানাতে। মাস শেষে তার বাবা তাকে যা দেয় তা দিয়েই পুরো মাস চলে সে।

সন্ধ্যার পর পড়ানো শেষ করে বাসার দিকে যাচ্ছিলো প্রিয়তা এমন সময় রফিককে দেখতে পায় সে। রফিককে দেখে চিনতে অসুবিধা হয় না তার। নামটাও শুনেছিলে আবার জাইনের সাথে সবসময় দেখে আসছে।
রফিক এগিয়ে এসে বলে,’আসসালামু আলাইকুম আপু। জান ভাই আপনার সাথে একটু কথা বলতে চায়।’

প্রিয়তা সরাসরি বলে দেয়,’আমার কাছে সময় নেই গুন্ডার বিলাপ শোনার।’

‘খুবই গুরুত্বপূর্ণ কথা বলবে।’
রফিকের কথায় পাত্তা না দিয়ে প্রিয়তা হাঁটা দেয়। আশেপাশের মানুষ দেখলে যা তা ভেবে বসবে যা সে চায় না।

‘জান ভাই আপনার বাবার দোকানের বিষয়ে কিছু বলতে চায়।’
এবার প্রিয়তার পা থেমে যায়। ঘাড় ঘুরিয়ে রফিকের দিকে তাকায় সে।

‘আধা ঘন্টা পর জান ভাই আপনাদের ছাদের পাশের ছাদে আসবে আপনি চলে আসবেন। সেখানেই বলবে সবটা।’
কথাগুলো বলে রফিক হনহনিয়ে স্থান ত্যাগ করে।
প্রিয়তা আশেপাশে তাকিয়ে দেখে কেউ শুনেছে কিনা। সন্ধ্যা হওয়াতে এখন মানুষের আনাগোনা কম। দ্রুত পা চালিয়ে সে-ও বাসার দিকে যায়। বাসায় এসে দেখে তার মা ঘরে নেই। দরজা চাপিয়ে সে পাশের ফ্ল্যাটে গেছে গল্প করতে। নিজের কক্ষে এসে চিন্তা করতে থাকে ছাদে যাবে কি যাবে না। প্রথমে সিদ্ধান্ত নেয় যাবে না। তাই বই খুলে পড়তে বসে যায়৷ অনেকক্ষন পেরিয়ে গেলেও পড়ায় মন বসাতে পারে না সে। শেষে সিদ্ধান্ত নেয় ছাদে গিয়ে একবার দেখবে। তার মা আসতে আসতে আরো দেরি হবে ততক্ষণে সে ছাদে গিয়ে চলে আসবে।

গুটিগুটি পায়ে ছাদের দরজার সামনে এসে মাথার ওড়নাটা ঠিক করে নেয়। এরপর ভেতরে প্রবেশ করে। পাশের ছাদে তাকিয়ে দেখে কেউ নেই। ছাদ দু’টো একদম পাশাপাশি। ভালো করে দেখার জন্য ছাদের রেলিং ধরে উঁকি দেয়।

‘কাউকে খুঁজছো?’
আচমকা ভরাট গলা শুনে প্রিয়তা বেশ চমকায়। সাথে সাথে ঘাড় ঘুরিয়ে দেখে এক হাত দূরত্বে জাইন দাঁড়িয়ে আছে একই ছাদে।

দুষ্ট স্বরে জাইন জিজ্ঞেস করে,’কি হলো খুঁজছো কাউকে? নাকি আমাকে খুঁজছিলে?’

নিজেকে সামলে প্রিয়তা উত্তর দেয়,’আমি কাউকে খুঁজছিলাম না।’

‘তাহলে রেলিং এর কাছে দাঁড়িয়ে উঁকি ঝুঁকি মারছো কেনো?’

‘এমনিতেই হাওয়া খাচ্ছিলাম। আপনি না কি বলবেন বলুন।’

‘তার মানে আমার কথা শুনতে এসেছো?’

‘উফফ! গেলাম আমি।’
প্রিয়তা হাঁটা দেয় বিরক্তি নিয়ে। জাইন বুঝে যায় প্রিয়তা অধৈর্য্য নারী। সে তার কথা শুনতেও চাইছে আবার ধৈর্য্যও করতে চাইছে না।

প্রিয়তাকে আটকাতে জাইন বলে,’না শুনেই চলে যাচ্ছো।’

প্রিয়তা উত্তর দেয়,’আপনার কথা আপনার কাছেই রাখুন আমি শুনতে ইচ্ছুক নই।’

‘তোমার বাবার ফার্মেসীর বিষয়েও না?’
জাইনের প্রশ্ন শুনে প্রিয়তা ফিরে আসে। উৎফুল্ল হয়ে জিজ্ঞেস করে,’কি হয়েছে ফার্মেসীর?’

জাইন পকেট থেকে চাবি বের করে তার সামনে ধরে। প্রিয়তা বেশ খুশি হয়ে যায় চাবিটা দেখে।

‘এটা আপনি কোথায় পেলেন? আলামিন নিয়ে গিয়েছিলো তো।’

‘এতো প্রশ্ন না করে বলো এটা ফেরত চাও কিনা।’

জাইনের প্রশ্ন শুনে প্রিয়তা মাথা উপর নিচ করে বলে,’অবশ্যই চাই।’
হাত বাড়িয়ে চাবিটা ধরতে নিলে জাইন সেটা মুঠোবন্দি করে ফেলে।

‘দিবো তবে আমার একটা শর্ত আছে বলো শর্তে রাজি কিনা।’

এতোক্ষণ প্রিয়তা খুশি হলেও এবার শর্তের কথা শুনে মুখ আঁধার করে ফেলে।
গম্ভীর গলায় প্রশ্ন করে,’কি শর্ত?’

জাইন অলস ভঙ্গিতে বলে,’আগে বলো রাজি কিনা। রাজি না হলে গেলাম আমি। এমনিতেও হাত,পা ব্যথা প্রচুর। বাড়িতে তো টিপে দেওয়ার লোক নেই তাই নিজের যত্ন নিজেরই করতে হয়।’

প্রিয়তা চিন্তায় পড়ে যায় কি করবে। আর জাইন কি শর্ত দিবে তা ও বুঝতে পারছে না। সব ভেবে সিদ্ধান্ত নেয় সে।
প্রিয়তাকে চুপ দেখে জাইন বলে,’চিন্তার কিছু নেই সহজ একটা কাজ দিবো।’

‘বলুন কি শর্ত আমি রাজি।’
শর্তে প্রিয়তা রাজি শুনে জাইনের ওষ্ঠে হাসি দেখা যায়। মৃদু আলোতে তা প্রিয়তায় চোখ এড়ায় না।

জাইন বলে,’রোজ নিয়ম করে এই সময় ছাদে এসে আমায় দেখা দিবা। যদি দেখো আমি আসিনি বুঝবা ব্যস্ত আছি। রাত এগারোটার দিকে আরেকবার আসবা।’

জাইনের শর্ত শুনে প্রিয়তার কপালে ভাজ পড়ে।
‘আমি কেনো আপনাকে দেখা দিতে যাবো? ভণিতা না করে আপনার কি উদ্দেশ্য সেটা বলুন।’

প্রিয়তার সন্দিহান কথা শুনে জাইন বেশ মজা পায়।
‘আমি তোমার বাবার ফার্মেসীর চাবি এনে দিলাম এর বিনিময় তুমি জাস্ট একবার করে ছাদে এসে দেখা দিবা ব্যস আর কিচ্ছু না।’

প্রিয়তা মুখের উপর বলে দেয়,’পারবো না।’

‘আচ্ছা ভেবে দেখো এখন চাবিটা নাও।’

চাবি সমেত হাত বাড়ায় জাইন। চাবি নিতে গিয়ে প্রিয়তা খেয়াল করে জাইনের হাতে আঘাতের চিহ্ন।
সে বিরবির করে বলে,’গুন্ডা।’

কথাটা এবার জাইনের কর্ণ এড়ায় না। চাবি নিয়েই সিঁড়ির দিকে হাঁটা দেয় প্রিয়তা। পেছন থেকে জাইন বলে,’কালকে এসো নইলে দাবি রাখবো। আর আমি তোমার অপেক্ষায় থাকবো প্রিয়।’

প্রিয়তার জায়গায় প্রিয় শুনে প্রিয়তার পা থেমে যায়। পিছনে না তাকিয়ে দ্রুত ছাদ থেকে নেমে যায় সে। হুট করে তার কেমন জানি লাগছে। এর আগে তাকে কেউ প্রিয় বলে ডাকেনি। প্রথমবার কেউ ডাকলো তাই? কিন্তু জাইন কেনো তাকে প্রিয় ডাকলো? তবে কি সে জাইনের প্রিয়?

…..
(চলবে..)