প্রণয়ের জলসাঘরে পর্ব-১৪+১৫

0
422

#প্রণয়ের_জলসাঘরে
#পর্বঃ১৪ #লেখনীতে_রেহানা_পুতুল
তোমাকে খুঁজে খুঁজে এই শহরে আমি। বলল শুভ।

পিয়াসা ধ্যাবড়া করে হেসে ফেলল।
ভ্রু নাচিয়ে কৌতুহলী গলায় জিজ্ঞেস করলো, ঠিক বুঝলাম না শুভ ভাই। আমাকে আপনি খোঁজার কারণ?

আমার আরেকটা স্টুডেন্ট আছে। পড়াতে যেতে হবে। তোমার মোবাইল নাম্বার দাও। ডিটেইলস ফোন দিয়ে জানাবো।

পিয়াসা কিছু না বলতেই, আলিশা তার খাতার পৃষ্ঠার এক কোন ছিঁড়ে নিল। বড় বড় করে পিয়াসার নাম্বার লিখে শুভ হাতে দিয়ে দিল।

শুভ সারামুখে খুশির আবরণ ছড়িয়ে দিয়ে, আলিশাকে থ্যাংক ইউ জানাল। তার পর চলে গেল।

পিয়াসা আলিশার দিকে চেয়ে,
আমার নাম্বার দিতে বলছি তোমাকে আলিশা?

আলিশা পিয়াসার চিবুক নেড়ে,
বারে আমি তোমার কলেজ পড়ুয়া হবু ননদিনী। তাই অনুমতির দরকার মনে করিনা হবু ভাবি। আর শুভ স্যারের কথার ঢংয়ে বুঝতে পারলাম তোমার এলাকার ছেলে। নিশ্চয়ই তোমার বাবা মারা যাওয়ার পর তুমি কোথায় আছ,কিভাবে আছ তা জানার জন্যই মনে হয় খুঁজেছে।

আলিশার কথা শুনে পিয়াসা একটু ভাবল। ক্ষণ পরেই বলল, তোমার কথা লজিক্যাল। বাট আমাকে খোঁজার মতো কাছের কেউ নয় উনি। তবে আমাদের একই গ্রাম। দুই বাড়ি পরেই উনাদের বাড়ি। উনি ঢাকায় পড়াশোনা করে এটা জানতাম। বাবা মাঝে মাঝেই বাসায় উনার প্রসঙ্গ তুলতো আমার সাথে।

আর বিয়ের আগে একটিবার ও আমাকে ভাবি বলবেনা। প্লিইইজ।আমার কেমন জানি লাগে বলেই পিয়াসা দৌড় দিলো। বারান্দার দিকে। না দেখা সত্ত্বেই আয়মানের গায়ের সাথে ধাক্কা খেল। আয়মান একপাশ থেকে হাত চেপে ধরলো পিয়াসার। পিয়াসা জোর করে হাত ছাড়িয়ে লাজুক হাসি হেসে ফেলল। আবার ছুট দিল বারান্দার দিকে৷

আয়মান মুখে কিছুই বললনা, শুধু পাশ ফিরে চাইলো পিয়াসার দিকে।

বাংলা সিনেমার একটা গানের কলি তার মস্তিষ্কের প্রতিটি কোষে কোষে খেলে যাচ্ছে।

” ওই চাঁদ মুখে যেন লাগে না গ্রহণ /জোছনায় ভরে থাক সারাটি জীবন।
হাজার বছর বেঁচে থাক তুমি,
বুকে নিয়ে স্বর্গের সুখ।
দুঃখ ব্যথা সব ভুলে যাই যে,
দেখলে তোমার ঐ চাঁদ মুখ।
ফুলও তুমি। ফাগুনও তুমি,
গন্ধ বিলাও সারাক্ষণ।
ঐ চাঁদ মুখে যেন…”

আয়মান এগিয়ে বোনের কাছে জানতে চাইলো,
পিয়াসার কি হলোরে?

কি আর হবে। হবু ভাবি বলতেই উনি লাজুক লাজুক বদনে কাঁচুমাচু হয়ে পালালো।

ভেরি গুড়। লজ্জা নারীর ভূষণ। তোর পড়াশুনার কি খবর? শুভ স্যার কেমন অংক করায়? ব্রেনে কিছু যাচ্ছে?
খুউব যাচ্ছে ভাইয়া।

শুভ স্যার পিয়াসাপুর পরিচিত।

আয়মান কিঞ্চিৎ অবাক হলো। কি বলছিস? কিভাবে?

আলিশা যতটুকু দেখেছে ও শুনেছে আয়মানকে জানাল। আয়মান স্বাভাবিক ভঙ্গিতে চলে গেল নিজের রুমে।

আয়মানের মা ছেলেকে নিজের রুমে ডাকলেন। ছেলের সাথে যুক্তি পরামর্শ করে বিয়ের বিষয়ে একটা খসড়া তৈরি করলেন। এবং ছেলেকে আদেশ দিলেন, যেহেতু পিয়াসা আমাদের কাছেই আছে।

তাই ওকে সঙ্গে নিয়েই ওর কেনাকাটাগুলো করিস। আর বিয়েটা হবে সামনের সপ্তাহের শুক্রবারে । ‘ বধু বরন ‘ সেন্টারটি ভাড়া করে ফেলিস। গায়ে হলুদ ছাদে বা বাসায় হবে। প্রায় দুই সপ্তাহ সময় আছে। তোর কোন আপত্তি আছে এতে বাবা ?

আপত্তি নেই মা। তুমি যা ভালো মনে করো।

তবে বিয়ের প্রথম, দ্বিতীয়, ও তৃতীয় শাড়ি আমরা সবাই মিলে কিনবো। আর বাইশ ক্যারট সোনার ভরির দাম অনেক পড়বে। তাই আপাতত আমার গহনাগুলো দিয়েই ওকে বৌ সাজানো হবে। শুধু একবার ঘষেমেজে নিলেই চকচক করবে নতুনের মতো।

মা তুমি যেভাবে চাইবে সেভাবেই হবে।

আয়মানের মা সন্তুষ্টির চোখে ছেলের মুখপানে চাইলেন। মনে মনে প্রার্থনা করলেন, আমার সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে।

পাশ থেকে আলিশা বলল,আরে কোন গয়না না দিলেও সমস্যা নেই। আপু কুল মাইন্ডের মেয়ে।

তার মা বলল, তা ঠিক বলছিস। কিন্তু আমি চাইনা মেয়েটার এটা মনে হোক, যে আজ এতিম অসহায় বলে এমন সাদামাটা বিয়ে হয়েছে আমার। যদি বাবা মা থাকতো সাধ্যমতো অনুষ্ঠানাদি করতো।

আমরা কি অনুষ্ঠান করব না? সব কিছুই আমাদের এবিলিটির মধ্যে হবে। দশটা নয় পাঁচটা নয় একটা মোটে ভাই। আমার ভাইয়ের মতো ভাই বলেই আলিশা ভাইয়ের বুকে মুখ রাখল।

আয়মান বোনের মাথায় চুল এলোমেলো করে দিয়ে শাসনের সুরে বলল,
বিয়ের নামে পড়াশোনায় ফাঁকি দেওয়া চলবেনা। মনে থাকে যেন। শিক্ষা জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময় হলো এই সময়। ফিউচার ডিফেন্ড করবে কলেজের রেজাল্টের উপরে। মনে থাকে যেন।

ধুর ভাইয়া। কিসের ভিতর কি পান্তা ভাতে ঘি। বোরিং কথা শুনতে এক ঘেয়েমি লাগে। বিরক্তি নিয়ে বলল আলিশা।

শুনলে মা তোমার ফাঁকিবাজ মেয়ের কথা। গেলাম। ও হ্যাঁ। মা পিয়াসাকে আমার রুমে একটু ডেকে নিই? ওর পছন্দের বিষয়গুলো জেনে নিই। কি বল?

অনুমতি নিতে হবেনা মায়ের। যা ডেকে নে।

আয়মান বের হয়ে গেল। পুলক পুলক মনে বলল,
আরেহ মা আজ একটু বেশী সময় পিয়াসাকে রুমে রাখব। আর পারছিনা থাকতে। আজ বলেই ফেলব ভালোবাসি। এই বাক্য বলতেই তো আমি ঘন্টা লাগিয়ে ফেলব। তোমরা আবার যদি মাইন্ড করো অনেক সময় পিয়াসাকে না দেখে। তাই আগেই বলে নিলাম।

আয়মান রুমে গিয়ে পিয়াসাকে মেসেজ দিল। একটু জরুরী দরকার ছিল। যদি আসতে।

পিয়াসা মেসেজ পেয়েই চঞ্চল হরিণীর মতো ছুটে এলো। দরজা ফাঁক করে ধীর ভঙ্গিতে রুমে ঢুকল।
দরজাটা লক করে দাও।

পিয়াসা চোখ কটমট করে পিয়াসার দিকে চাইলো।

আজব। এভাবে তাকাচ্ছ কেন? খারাপ কিছু বলেছি আমি? জাস্ট দরজা বন্ধ করতে বললাম। এই বাক্যটি কি অশালীন?

পিয়াসা দরজা বন্ধ করলনা। আয়মান উঠে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দিল।

তোমার বিয়ের তারিখ শুনেছ?

আপনার কি জরুরী কাজ সেটা বলেন। নিরস স্বরে বলল পিয়াসা।

এত রাগ দেখিয়ে বললে, ভুলে যাব যে জরুরি কথাটাও।

ওকে বলুন। আয়মান পিয়াসার কপালের কালো টিপ খুলে আবার পরিয়ে দিল। কপালের উপরে উড়ে আসা চুলগুলো ফুঁ দিয়ে দুপাশে সরিয়ে দিল।

এসব ফাজলামো করা আপনার জরুরী কাজ?

নাহ। মা বলছে তোমার বিয়ের কেনাকাটা আমার সাথে গিয়ে করে নিতে। আর তোমার বিয়ে পরের সপ্তাহের শুক্রবারে। এটা বলার জন্যই ডেকেছি।

পিয়াসা মাথা নিচু করে ফেলল। উঠে দাঁড়ালো চলে আসার জন্য। অমনি হাতে থাকা তার মোবাইল বেজে উঠলো। দেখলো আননোন নাম্বার। আয়মান ইশারা দিল তার সামনেই বসে কথা বলার জন্য। লাউড স্পিকার অন করে দিলো আয়মান। প্রথমবার রিসিভ করতে পারেনি পিয়াসা। দ্বিতীয়বার ফের ফোন বেজে উঠলো।

পিয়াসা রিসিভ করেই হ্যালো বলে সালাম দিল। জিজ্ঞেস করলো কে?

অপর পাশের কথাও আয়মান স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছে।

ওয়ালাইকুম আসসালাম। পিয়াসা শুভ বলছি। আলিশার স্যার আর তোমার পাশের বাড়ির সেই ছেলেটি। কেমন আছ তুমি?

আলহামদুলিল্লাহ শুভ ভাই। দিব্যি আছি। আপনি?

আমি এখন বেশী ভালো আছি তোমাকে দেখার পর হতেই।

পিয়াসা অস্বস্তি অনুভব করল শুভর কথায়।

বলেন কেন ফোন দিয়েছেন শুভ ভাই?

শুন চাচা মারা যাওয়ার পর যখন মা বাড়ি থেকে জানালো। তখন আমি খুব ঝামেলায় ছিলাম। তাই সাথে সাথে তোমাদের বাসায় যেতে পারিনি। আর যখন গিয়েছি তখন তোমাকে পেলাম না। পাশের এক মহিলা বলল,
তোমাকে তোমার পরিচিত কে তাদের বাসায় নিয়ে গিয়েছে। ভাগ্যক্রমে তোমাকে এ বাসায় পাব কল্পনাই করতে পারিনি। এ যেন কোন অচেনা রাজপুরীর গল্প।

আচ্ছা ধন্যবাদ শুভ ভাই। আর কিছু বলবেন?

বলব মানে? আসল কথাটি বাকিই রয়ে গেল যে।

বলেন শুনি।

আচ্ছা একটা সত্যিই কথা বলবে পিয়াসা?

অবশ্যই শুভ ভাই।

চাচা কি তোমাকে আমার বিষয়ে কিছু বলেনি?

পিয়াসা বিস্মিত হয়ে গেল শুভ কথার সুর অন্যরকম দেখে।

হ্যাঁ প্রায়ই বলতো আপনার পড়াশোনার কথা।

আরেহ নাহ। চাচা আমাকে কথা দিয়েছে তোমার পড়াশোনা শেষ হলে আমার সাথে তোমার বিয়ে দিবে।

পিয়াসা চকিতেই বিষম খেল। কণ্ঠে জোর এনে বলল,আমিতো এমন কিছুই জানিনা। আর বাবা যদি বলেও থাকে তা বাবার বিষয়। আমি আপনাকে ছোটবেলা থেকেই বড় ভাইয়ের মতো জানি। সুতরাং এ বিষয়টা আপনি ভুলে যান। আমি আপনাকে বিয়ে করতে পারবোনা। লেখিকা রেহানা পুতুল।

কেন পিয়াসা ? কারো সাথে তোমার এফেয়ার চলছে? ফোনের ওপাশে আহত গলায় জিজ্ঞেস করলো শুভ।

হ্যাঁ চলছে । তার সাথেই আমার বিয়ে হবে।

বিয়ে হবে। এখনো হয়নি কিন্তু পিয়াসা। তাকে বুঝিয়ে বল। নয়তো আমিই বলব।

শুভ ভাই আপনি এমন কিছু করে আমার চোখের বিষ হতে চাইবেন না আশাকরি।

বাহ পিয়াসা বাহ! নিজের মৃত বাবার ওয়াদার চেয়ে নিজের প্রেমকে বড় করে দেখলে। ছিহঃ বলে শুভ লাইন কেটে দিলো।

আয়মান এতক্ষন নিরব থেকে লাউড স্পিকারে সব শুনেছে। উপুড় হয়ে শুয়ে আছে চোখ বন্ধ করে। একহাত দিয়ে মাথার পিছনের চুলগুলো খামচে খামচে ধরছে। অজস্র কষ্টের চুলা বুকের ভিতর জ্বলছে দাউদাউ করে।

পিয়াসা একটু থেমে আয়মানকে ডাক দিলো। আয়মান চুপ হয়ে আছে। কিছুই বলছেনা।
আবারো ডাকলো পিয়াসা,
স্যার আপনার শরীর খারাপ? চুপ হয়ে আছেন যে।

আয়মান বিছানা থেকে উঠে দাঁড়ালো। আরক্ত চোখে পিয়াসার মুখপানে চাইল। বলল তুমি শুভকেই বিয়ে করো। মিথ্যা বলার কারণ কি ছিল? তুমিতো আর আমাকে ভালোবাসনা। মায়ের জন্যই রাজী হয়েছ। আমি মাকে এক্ষুনি বলি গিয়ে বিয়ে ক্যান্সেল।

ছলছল চোখে পিয়াসা বলল, আমার দিকে চাপাচ্ছেন কেন? আপনি ও তো আমাকে ভালোবাসেন না। মায়ের জন্য রাজী হয়েছেন।

আয়মান চটে গেল। হ্যাঁ আমি কিভাবে ভালোবাসি। আমার কি মন বলতে কিছু আছে নাকি। আমি ভালো বাসতে পারিনি বলেই তো একবার রায়হান তোমার প্রেমিক হয়। আবার প্রেমিক হয় শুভ। বাহবা! চারদিকে পিয়াসার প্রেমিকের ছড়াছড়ি।

চলে যাও বলে আয়মান পা বাড়ালো দরজা খুলে দেওয়ার জন্য। তখনি পিয়াসা আয়মানের পায়ের কাছে হাঁটু গেড়ে বসে পড়লো। আয়মানের হাঁটুতে মাথা ঠেকিয়ে লুটিয়ে কাঁদতে লাগলো।

আয়মান তাজ্জব বনে গেল। পিয়াসাকে ধরে দাঁড় করালো। কি হয়েছে তোমারতো আনন্দ হওয়ার কথা।

পিয়াসা নরম গলায় বলল,
স্যার আমি শুভকে বিয়ে করবনা। কারণ স্কুলে থাকতে ধরেই আমি একজনকে এক পৃথিবী সমান ভালোবাসি। প্রগাঢ়ভাবে তাকে মিস করি প্রতিটিমুহুর্তে। আপনি পারলে আমাকে তার বুকে নিয়ে দিন।

শুনে আয়মানের মাথার মগজ টগবগ করে ফুটতে শুরু করলো। পিয়াসাকে ছেড়ে দিয়ে খানিক দূরে দাঁড়াল।

চোয়াল শক্ত করে বলল,
এ দেখি প্রেমিকের সিরিয়াল পিয়াসাকে দিয়ে পিয়াসা মিটানোর জন্য। তাহলে আমার সাথে বিয়েতে রাজী হলে কেন ছলনাময়ী কোথাকার ?

চলবেঃ ১৪

#প্রণয়ের_জলসাঘরে
#পর্বঃ১৫ #লেখনীতে_রেহানা_পুতুল
শুনে আয়মানের মাথার মগজ টগবগ করে ফুটতে শুরু করলো। পিয়াসাকে ছেড়ে দিয়ে খানিক দূরে দাঁড়াল। জিজ্ঞেস করলো, তাহলে আমার সাথে বিয়েতে রাজী হলে কেন ছলনাময়ী?

তো কার সাথে রাজি হবো? অনুযোগের ন্যায় বলল পিয়াসা।

যাকে ডুবে ডুবে ভালোবাস তার সাথেই রাজী হবে।

তার সাথেইতো রাজী হয়েছি। মিচকা বান্দর। এখনো মনে রেখেছে এটা। গোপনে ভেংচি কেটে বলল পিয়াসা।

আয়মান স্তব্দ হয়ে গেল। নিজের কানকে বিশ্বাস করতেই নাস্তানাবুদ হয়ে যাচ্ছে। চেয়ার টেনে বসে পড়ল।

কি বললে তুমি? আবার বল। বিষ্পোরিত দৃষ্টিতে জিজ্ঞেস করলো পিয়াসাকে।

পারবোনা বলতে।

পারবে কিভাবে তুমি? না পারাটাই স্বাভাবিক। মিথ্যে কথা বারবার বলা যায়না। রাগত স্বরে বলল আয়মান।

পিয়াসা গলায় হালকা তেজ ঢেলে বলল, আমি মিথ্যে বলছি?

নয়তো কি? কই কখনো তোমার আচরণে ভালোবাসার কিছুইতো প্রকাশ পায়নি পিয়াসা? বরং আমার মনে হয়েছে তুমি আমার প্রতি মাঝে মাঝে বিরক্ত হও।

আমি প্রকাশ হতে দেইনি তাই বুঝেন নি। মাথা নামিয়ে নিচু গলায় অধিকারসুলভ ভঙ্গিতে বলল পিয়াসা।

আয়মানের রাগ স্তিমিত হয়ে গেল পিয়াসার উপরে। আকুল করা ব্যাকুল কন্ঠে জানতে চাইলো। কেন দাওনি বুঝতে আমাকে। কি কারণে পিয়াসা?

কারণ আপনিও আমাকে শুরু থেকেই অপছন্দ করেন। এবং শুরু থেকেই একাধিকবার এমন কিছুই ঘটে যাচ্ছে৷ তাই প্রকাশ করার সাহস পাইনি।

আচ্ছা আমার বিষয় পরে বলছি। আগে তোমার চ্যাপ্টার শেষ হোক। তুমি বলছ তুমি আমাকে ভালোবাস। এইতো?

হুম । ছোট্ট করে জবাব দিল পিয়াসা।

আমি বিশ্বাস করিনা যে?

কি করতে হবে আমার বিশ্বাস করাতে হলে? মেঘমুখে জিজ্ঞেস করলো পিয়াসা?

যা বলব তা করতে হবে কিন্তু। বিশ্বাসটা পাকাপোক্ত হওয়া চাই। দুদিন বাদেই আমরা দাম্পত্য সঙ্গী হতে যাচ্ছি। মনে রেখ।

পিয়াসা চুপ হয়ে মনে মনে ফোঁড়ন কাটছে। ডুবে ডুবে কি শুধু আমিই ভালোবেসেছি প্রেমিক? তুমি ভালোবাসনি?

কি ভাবছ? শুভকে বিয়ে করবে? শুনো,
আমরা দুজনের যেকেউ চাইলেই আমাদের আসন্ন সম্পর্কটা চিরতরে গুড়িয়ে দিতে পারি। আবার সারাজীবনের জন্য এক ও করে ফেলতে পারি।

পিয়াসা ক্ষেপে গেল। আয়মানের দিকে চেয়ে,
শুভ ভাইয়ের সাথে আমার সব রিপ্লাই আপনি শুনছেন। সো তা নিয়ে দ্বিতীয় বাক্য বলা অসংগত, অযৌক্তিক,অশোভনীয়।

আয়মান ফুরফুরে মেজাজে বলল, ওকে বাদ দিলাম। এবার আমার প্রতি গভীর প্রণয়ের প্রমাণটা হয়ে যাক।

পিয়াসা কম্পিত কণ্ঠে, আমি বলছি গভীর প্রণয়?

তাহলে? তুমি না আমাকে চাও? বলে আয়মান চোখ বড় বড় করে তাকালো পিয়াসার দিকে।

পিয়াসা মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে সেই একি স্থানে। বলল, চাই অল্প অল্প করে।

তাহলে অল্প করেই দাও কিছু।

কি দিব আমি? আমার অন্তরে কাউকে দেওয়ার মতো অবশিষ্ট আর কিছুই নেই। যা দেওয়ার আগেই দিয়ে দিয়েছি।

নিজে নিজে বললে হবে নাকি নেই? আমার চোখ নেই? আমি দেখিনা? অঢেল ধন সম্পদের মালিক তুমি। যা হৃদয় দিয়ে অনুভব করা যায়, আমি এমন কিছু চাচ্ছিনা কিন্তু। আমি চাই যা ধরা যায়। ছোঁয়া যায়। এমন কিছু।

দূর আমি যাই। আপনি শুধু পচাঁ কথা বলছেন । পিয়াসা দরজা খুলতে যাচ্ছে। আয়মান বসা থেকেই দাঁড়িয়ে গেল নিমিষেই। পিয়াসাকে পাঁজাকোলা করে তুলে নিল কোলে। খাটে বিছানার উপর নিয়ে শুইয়ে দিল। পিয়াসা থ বনে গেল। লজ্জায় চোখ বন্ধ করে ফেলল। আয়মান পিয়াসার কানের কাছে ফিসফিসিয়ে বলল, তোমাকে এমন করেই আরেকবার কোলে নিয়েছি। মনে আছে?

জানিনা বলে পিয়াসা উসখুস করছে। কিন্তু আয়মানের বলিষ্ঠ বন্ধন থেকে মুক্ত হতে পারছেনা। আয়মান বন্ধনকে আরো ভিড়িয়ে নিল নিজের শরীদের দিকে৷ কাতর কন্ঠে পিয়াসার চোখে তাকিয়ে,
পিয়াসা মরুর বুকে ঝড় তুলবে একটু?

বিয়ের পরে ঝড় নয় শুধু টনের্ডোও সৃষ্টি করব। এখন যাই। প্লিজ ছাড়ুন বলছি।

ছাড়বো। একটু নমুনা দেখতে চাই। এমন করছ কেন। এমনিতেই অনেক ঠকিয়েছ আমাকে। ঠকবাজ প্রণয়িনী আমার। আচ্ছা এটা করো অন্তত । আমার শুকনো ঠোঁট দুটোকে একটু ভিজিয়ে দাওনা। বিয়ের আগে একটু উম্মাতাল প্রণয় হোক দুজনার। বঞ্চিত করোনা এই অধমকে।

আচ্ছা দিচ্ছি বলে পিয়াসা চট জলদি বিছানা ছেড়ে নেমে গেলো। আয়মানের দুচোখের পাতা বুঁজে দিল নিজ হাতে। তার কানের কাছে মুখ লাগিয়ে বলল,
নেত্র পল্লব মেলা যাবেনা কিন্তু। নইলে ভিজবেও অল্পস্বল্প। আয়মান চোখ বন্ধই রাখল। তার হার্টবিট অনবরত উঠানামা করছে।

পিয়াসা বিড়াল পায়ে এগিয়ে গিয়ে বেসিন থেকে হাত ভিজিয়ে নিল দ্রুত। আয়মানের ঠোঁটে ভেজা হাত বুলিয়ে ভিজিয়ে দিল। বলল চোখ খুলুন। পিয়াসা হাসতে হাসতে দরজা খুলে পালালো। আয়মান পিয়াসাকে না ধরার সুযোগ পেল। না কিছু বলার সুযোগ পেল। ভীষণ ক্রুদ্ধ হলো পিয়াসার উপরে।

পিয়াসা সুখ সুখ মনে বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়ল। রাত বাড়লে পিয়াসার পেটের ভিতর ক্ষুধায় ছোঁ ছোঁ শুরু হলো। একদিকে আয়মানকে আজ বলতে পেরেছে, বুকের ভিতর এতদিনের পুষে রাখা অব্যক্ত প্রণয়ের কথাটি।
আরেকদিকে শুভ ভাইয়ের কথাগুলোও বিরক্তি ধরিয়ে দিয়েছে মনে। তাই খেতে ইচ্ছে করেনি।

পিয়াসা ডিম লাইটের মৃদু আলোতে আস্তে করে রুম থেকে বের হয়ে গেল। রান্নাঘরে গিয়ে লাইট জ্বালিয়ে ফ্রিজ খুলল। প্লেটে ভাত সবজি নিয়ে ওভেনে গরম করে খেয়ে নিল। পানি খেয়ে তৃপ্তির ঢেকুর তুলল মনে । আহ পেট শান্তিতো দুনিয়া শান্তি। নিজের রুমে ঢুকতে গিয়েও ঢুকলনা।

দেখিতো আমার মদনে কি করে বলে পা টিপে টিপে আয়মানের রুমে গেল। চাপানো দরজা একটু ফাঁক করল। আয়মান ঘুমায়নি। জেগেই ছিল। টের পেল পিয়াসা দরজায় এসেছে। আয়মান ঘুমের ভান করে কাত হয়ে ছিলো।

পিয়াসা রুমে ঢুকে আয়মানকে দেখল। আয়মানকে ঘুমন্ত ভেবে মাথার কাছে গেল। ঘাড়ের কাছে গিয়ে ফুঁ দিল। পায়ের নিচে তালুতে সুড়সুড়ি দিতেই আয়মান নড়ে উঠল। ও বাবারে বলে পিয়াসা দৌড় দিল। আয়মান চোখ মেলে আপন মনে হেসে ফেলল।

শুভ পড়াতে এলো আলিশাকে। আলিশা পড়ার ফাঁকে একটু গল্প করার বাহানা খুঁজছে। এটা ওটা বলছে। কিন্তু শুভর মাঝে তা নিয়ে কোন ভাবান্তর হলনা। কারণ শুভ যখন যে কাজ করে। তা পূর্ণ মনোযোগ দিয়েই করে। আলিশা মুখে তেমন কিছুই বলেনা শুভকে। পাছে মা ভাই বুঝে ফেলে সেই আশংকায়।

কলমের ভাষায় আকার ইংগিতে শুভকে বোঝাতে চায় তার ভালোলাগার কথা। আজ অংকের নিচে লিখে দিল,
স্যার আপনার কি রকম গান শুনতে ভালোলাগে? আর কোন কবির কবিতা বেশী পছন্দ করেন?

শুভ রিপ্লায় দিয়ে আলিশার সামনের দিকে খাতাটি ঠেলে দিল৷

” তুমি এমন ফাজলামো করা বন্ধ না করলে আমি তোমাকে পড়ানো বন্ধ করে দিব। ”

আলিশা প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করলো এভাবে,
স্যার আপনার সাথে এভাবে কথা বললে আমি মনে খুব শান্তি পাই। কারো শান্তি হরণ করার অধিকার আপনার নেই।

খাতাটা এগিয়ে দিল শুভ’র সামনে। শুভ পড়ল। আলিশার টুকরো সাধকে ব্যর্থ করে দিল। কোন রিপ্লাই দিলনা। টেবিলে থাকা গ্লাস থেকে অর্ধেক পানি খেয়ে উঠে চলে গেল। আজ নাস্তাও খায়নি শুভ। আলিশা বাকি পানিটুকু নিমিষেই খেয়ে নিল দুচোখ বন্ধ করে।

পরের দিন পিয়াসা আলিশার মন খারাপের কারণ জানতে চাইলে, আলিশা শুভকে পছন্দ করে জানাল। এবং শুভ তাকে প্লেস দিচ্ছেনা তাও বলল।
আচ্ছা আপু কিভাবে ইমপ্রেস করতে হয় তুমি জান?

আমি কি কখনো প্রেম করেছি?কিভাবে জানব? মুচকি হেসে উত্তর দিল পিয়াসা।

তাহলে কোন হেল্প তোমার থেকে পাবনা?

পাবে। আমি শুভ ভাইকে বুঝিয়ে বলব। হয়তো কাজ হতেও পারে।

কখন কিভাবে বুঝিয়ে বলবে?

দেখি। তবে আমার বিয়ের পরে। এই কয়দিন বাসায় কাজ বেশী যে। দেখতে পাচ্ছনা?

আয়মান, তার মা,আলিশা ও পিয়াসা সহ শপিং করতে বের হলো। সবার পছন্দে সব কেনাকাটা সম্পন্ন হলো। আয়মানের মা ও বোন ওদের রেখে আগে চলে গেল বাসায়।

আয়মান পিয়াসার হাতে কিছু টাকা দিয়ে বলল,
পার্সোনাল জিনিসগুলো তুমি গিয়ে কিনে নাও। আমি এখানে অপেক্ষা করছি। পিয়াসার লজ্জায় মরি মরি দশা৷ আপনি কি বলছেন এসব? বাসায় চলেন বলছি।

ন্যাকামি দেখলে বিরক্ত লাগে পিয়াসা। খারাপ কি বললাম। আমি আন্দাজে কি ভাবে কিনব। তাইতো তোমাকে বললাম।

আমার কিছুরই দরকার নেই। মাথা নামিয়ে বলল পিয়াসা।

নো! এটা হবেনা। বিয়ের সময় শরীরের উপরে সব থাকবে নতুন। আর ভিতরে থাকবে পুরোনো ব্যবহৃত জিনিস। মানিনা। সব কিছুই টাটকা নতুন হওয়া চাই আমার।

আচ্ছা বাসায় চলুন। পরে কেনা যাবে।

আরেহ পরে সময় হবেনা। আচ্ছা বুঝেছি তুমি লজ্জা পাচ্ছ। এক কাজ করো মোবাইলে নাম্বার টা লিখে দাও আমি নিয়ে আসছি৷

পিয়াসা সংকোচবোধ করেও দুটো নাম্বার লিখে দিল মোবাইলে। আয়মান পিয়াসাকে দাঁড় করিয়ে গিয়ে কিনে নিয়ে আসল।

তারপর একটি ফাস্টফুড দোকানে ঢুকে তারা লাচ্ছি আর শর্মা খেল। মা বোনের জন্যও কিনে নিল।

রিক্সায় বসে আয়মান পিয়াসাকে বলল,শুভ কে না করে দিব আলিশাকে যেন আর পড়াতে না আসে। তাহলে আর সে তোমাকে দেখতে পাবেনা। দেখলে হয়তো তার আফসোসের মাত্রা বেড়ে যাবে।

শুনে পিয়াসা বলল,
করতে পারেন। তবে আমি এটার প্রয়োজন মনে করিনা। আলিশা এখন অংক আগের চেয়ে ভালো বোঝে। আর উনার সাথে আমার তেমন কথাও হয়নি কখনো। তবে আব্বু যে বলছে,
এটা আমার বিশ্বাস হয়েছে। কারণ আব্বু প্রায়ই তার কথা আমার সাথে বলতো। কিন্তু আব্বু থাকলেও আমার অনভূতিকেই প্রাধান্য দিত।

তুমি শুভকে মন দিলেই পারতে। কেন আমাকে ভালো বাসতে গেলে? দুস্টমির ছলে হেয়ালি করে বলল পিয়াসা৷

একই কথা আমিও বলছি। উত্তর দেন।

আমি কি বলছি তোমাকে ভালোবাসি?

পিয়াসা আয়মানের হাতে চিমটি কেটে জিজ্ঞেস করলো। মানলাম। তাহলে আপনি আমাকে ভালোবাসেন না এটার প্রমাণ দেন।

বাসায় চল দিব।
প্রমিজ?

প্রমিজ। রাতে সবাই ঘুমিয়ে গেলে আমার কাছে এসো। তখন বলব। ভারী মুখে বলল আয়মান।

রাতে কেন? দিনেই বলতে হবে।

আচ্ছা তাই হবে।

বাসায় গিয়ে বাকি কেনাকাটার জিনিস টেবিলে রাখল আয়মান। মা বোনের জন্য আনা খাবার দিল মরিয়মের হাতে। ছুটা বুয়া মরিয়ম এই সপ্তাহ ধরে প্রায় সারাদিনই এ বাসায় থাকে। বিয়ে উপলক্ষে কাজ বেশী বাসায়। তাই তাকে রাখা হয়েছে। অন্য বাসাগুলোতে সে কাজ সেরেই চলে আসে।

আয়মান নিজের রুমে চলে গেল। পিয়াসা ও তার রুমে চলে গেল। আয়মানের মোবাইল বেজে উঠল। রিসিভ করতেই শুভ যৌক্তিক ভিন্ন কারণ দেখিয়ে জানিয়ে দিল আলিশাকে আর পড়াবেনা।

আয়মান আর কথা বাড়ালোনা। কোন সন্দেহ ও মনে দানা বাঁধলোনা। বরং শুভর উপর সন্তুষ্ট হয়েছে এই ভেবে, শুভ খুব ভালো ছেলে। পিয়াসার প্রতি অন্যরকম টান অনুভব করলে ভুলেও এই টিউশনি ছাড়তোনা।

আলিশার আবেগের বয়স ৷ ভুলের বয়স। নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ হারাবার বয়স। জীবনের প্রথম ভালোলাগা শুভ স্যার। সেই প্রিয়র থেকেও প্রিয় শুভ স্যারকে সে আর কখনোই দেখতে পাবেনা। এটা ভেবেই সে কেঁদে কেঁদে নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে। সে শুভ ছাড়া আর কারো কাছেই পড়বেনা।

পিয়াসা আয়মানের কাছে গেল এক সন্ধ্যার পরে। এই যে হ্যালো, সেটা শুনতে আসছি?

আয়মান চোখের পাতা উল্টিয়ে ইশারায় জিজ্ঞেস করল কোনটা?

আমাকে আপনি ভালোবাসেন না এটার প্রমাণ দিবেন বলছেন।

ও হ্যাঁ। ভুলেই তো গেলাম। জানতে হলে কাছে আসতে হবে।

পিয়াসা এক পা আগাতেই আয়মান পিয়াসাকে হ্যাঁচকা টানে বিছানায় ফেলে দিল। পায়ের তালুতে সুড়সুড়ি দিতে দিতে লাগল।

পিয়াসা সুড়সুড়ি নিতেই পারছেনা। হেসেই খুন হয়ে যাচ্ছে। এপাশ ওপাশ করে মোচড় খাচ্ছে অনবরত। এভাবে বুকের উপর থেকে ওড়না খসে পড়ল। সেলোয়ারের উপর থেকে জামা পেটের উপর উঠে গেল। লেখিকা রেহানা পুতুলের সংগেই যুক্ত হবেন। প্লাজো হাঁটুর কাছাকাছি উঠে গেল। চোখ লাল হয়ে কাঁদো কাঁদো অবস্থা পিয়াসার। আয়মান এবার সুড়সুড়ি দেওয়া বন্ধ করল।

বলল, সেদিন রাতে আমার পায়ে কে সুড়সুড়ি দিলে কেন? আর এটা হলো তোমার পাওনা ন্যায্য শাস্তি। আমার ঠোঁট ভুল পানি দিয়ে ভিজিয়ে দেওয়ার প্রতারণার অভিযোগে। মজা লাগছে?

ইসসস রে। কিসের ভুল পানি? সেটা কলের ফ্রেস পানি ছিল।
আর আমি যে এসেছি আপনি বলতে পারবেন? নাক কুঁচকে জিজ্ঞেস করলো পিয়াসা।

আয়মায় পিয়াসার নাকের ডগায় নিজের নাক ঘষে বলল, সবই বলতে পারব। আমি কলের পানি চেয়েছি দুষ্ট? তখন চাইলেই আটকাতে পারতাম। কিন্তু আমি ভালোবাসিনা তোমাকে। তাই যেতে দিলাম।

থ্যাংক ইউ স্যার। বুঝতে পেরেছি। গেলাম টাটা বাই বাই বলে পিয়াসা আয়মানের চুল খামচি দিয়ে ধরে টান মারল।

আয়মান পিয়াসার হাত টেনে বলল,কেন যে শুক্রবার আসতেছেনা। সাত দিনকে সাত সহস্র বছর মনে হচ্ছে আমার কাছে। হাহ!

দরজায় ঠকঠক শব্দ হতেই পিয়াসা গেট খুলল। মরিয়ম আপা কিই?

ভাইয়া কই? আলিশা আপু কেমন জানি করতাছে। জলদি আসেন। জলদি।

চলবেঃ ১৫