প্রতিশোধ পর্ব-১২

0
200

#প্রতিশোধ
#শিখা
#পর্ব_১২

চোখ খুলতে দেখি, আমার ফেইক শাশুড়ী আমার সামনে বসে আছে, মানে সুবর্ণা..

সুবর্ণাঃ আরে বৌমা যে, ঘুম ভেঙে গেছে তোমার, চলো চলো তোমাকে কিছু দেখাবো..

এটা বলে ওই মহিলা আমার হাত ধরে আমাকে রুম থেকে বের করে। আমি আশেপাশে দেখছিলাম..

আশেপাশে শুধু দেওয়ালই দেখা যাচ্ছিল, দূরে দূরে কয়টা দরজা, না জানি জায়গা এটা। মহিলাটা আমাকে টেনে সামনের দিকে নিয়ে গেল..

কিছুদূর যেতেই আমি লক্ষ্য করলাম, আমার সামনে কিছু মানুষ শুভ আমার শশুর তাদের ছাড়া আর কিছু লোক আছে…
আমি শুভ আর আমার নামের শশুরকে ছাড়া আর কাউকে চিনি না সেখানে, এদের দেখতে কশাই এর মত লাগছিলো কিন্তু এদের থেকে বেশি আমি এটা দেখে ভয় পাচ্ছিলাম শুভর সামনে একটি মেয়ে বসেছিল..

তার সামনে একটা টেবিলে নানান ধরনের অস্ত্র রাখা।তাতে ছিল কয়েক ধরনের চাকু, চাপাটী, গুলি, ছোট থেকে বড় সব ধরনের ছুরি, রড, শিকল, একটা কৌটায় বিচ্ছু ও ছিলো এসব ছাড়া আরও অনেক ধরনের অস্ত্র সেখানে রাখা ছিল..

শুভ মেয়েটার চারপাশে ঘুরতে ছিল রাউন্ড রাউন্ড করে, আমি দূর থেকে দাঁড়িয়ে দেখতেছিলাম সবকিছু ..

শুভ টেবিলে থাকা একটা ছোট ছুরি হাতে নেয়, আর মেয়েটার হাত ধরে ওই মেয়েটার একটা আঙ্গুল ওপর একটাই আঘাত করে, সাথে সাথে মেয়েটার আঙ্গুল ছুটে পড়ে যায়…রক্ত টপ টপ করে পরতে থাকে…

আমি সাথে সাথে চিৎকার দিয়ে চোখ এ হাত রাখি, শুভ একবার শুধু আমার দিকে তাকায়

এরপর আমার দিকে তাকিয়েই মেয়েটার গলা থেকে মাথা আলাদা করে দেয়..

আমি তখনো চোখ বন্ধ করে ছিলাম,শুভ আমার সামনে এসে দাঁড়ায়, এরপর আমার গালে হাত রাখে।
আর আমার চোখের সামনে থেকে আমার হাত সরায়, আমার সারা শরীর কাঁপছিল, আমি হাত সরাতেই শুভকে সামনে দেখতে পাই, শুভর সারা শরীর রক্তে ভরা ছিল, আমার চোখের সামনে ঝাপসা হয়ে আসছিলো, আমি শুভকে ধাক্কা দিয়ে পিছিয়ে যাই..

কিন্তু যখনই আমার চোখ সামনে পড়ে, আমি মেয়েটার মাথা আলাদা দেখতে পাই। সাথেসাথে আমার চোখ বন্ধ হয়ে আসে..

শুভ আমাকে কোলে নিয়ে ওই রুমটাতে রেখে আসে, এরপর বাহির থেকে দরজা লাগিয়ে দেয়..

সুবর্ণা: আমার মনে হয় শিখা কেউ শেষ করতে হবে, আর না হলে ওর বাহুরে গিয়ে সব বলে দেবে.

আশেপাশের সবাইও বলে ওঠে হ্যাঁ ওইটাই করতে হবে, তাছাড়া শিখা মরলে সব শুভই পাবে..টাকা পয়সা..

শুভ সবার দিকে তাকায়, এক সেকেন্ডের ভিতর পরিবেশ একদম ঠান্ডা হয়ে যায়, এরপর শুভ বের হয়ে যায়..

শুভ বের হয়ে একজনের সাথে দেখা করতে যায়, অচেনা লোকটা যার সাথে এর আগে শুভআর লায়লা কথা বলেছিল

বসঃ তোমাকে আমি একটা কাজ দিয়েছি, সেটা হচ্ছে শিখাকে শেষ করতে, তুমি এর আগে যতগুলা খুন করেছ সব আমি লুকিয়ে আসছি, এমনকি তোমার সবকিছু আমার দেওয়া, তোমাকে তৈরি আমি করেছি!আর তুমি আমার একটা কাজ করতে পারলে না..

শুভহ সরি বস আমি আসলে বুঝতে পারিনি, এখন আর এমন হবে না, আমি খুব তাড়াতাড়ি শেষ করে ফেলবো শিখাকে..

এদিকে আমার বাড়ির লোক সবাই আমাকে খুজছে, বাবা বারবার শুভকে কল করে জিজ্ঞেস করছে কোথায় আছি,আমার সাথে কথা বলতে পারছে না

শুভ একটা কথাই বলছে আমরা আসলে বাহিরে এসেছি ঘুরতে, বাসায় গিয়ে আপনার বাসায় নিয়ে যাব..

আব্বু অফিসে বসে ছিল আর ভাবছিল

ম্যানেজার: স্যার কি ভাবছেন?
আমাদের তো একটা মিটিং ছিল? কি করব বলেন?

আব্বু: বুঝলা রফিক মেয়েটার কথা ভাবতেছি, এক সপ্তাহ হয়ে গেছে মেয়েটা কল করে না, বাসায় গেলাম কয়েকবার তারপর দেখতে পেলাম না, কোথায় নাকি বেড়াতে গিয়েছে কিন্তু আমার জানি কেমন লাগছে..

রফিক ম্যানেজার: স্যার আপনি চিন্তা করবেন না, শিখা মামনি ঠিকি আছে, যে লক্ষী একটা মেয়ে আমাদের মামনি, শুভও তো অনেক ভালো শুনেছি, ভালোই আছে তারা দুজন হয়তো..

আব্বু: না রফিক তুমি বুঝতাছো না? আমার কেমন জানি লাগছে, তুমি শিখার মার খবর পেয়েছো কোথায় গিয়েছিল.?

রফিক ম্যানেজার: বুঝতেছিনা স্যার ম্যাডাম একেক দিন একেক জায়গায় যাচ্ছে, কেনা কাটা করছেন..

আব্বু: কি বলব আমি বলো? মেয়েটার ভালোর জন্য বিয়ে করেছিলাম কিন্তু নিজের মেয়েকে হারিয়ে ফেললাম, আমার মেয়ে আমার সাথে কথাই বলতে চায় না

রফিকঃ স্যার আপনি যদি বলেন? তাহলে আমি কি কাউকে পাঠাবো শিখা মামনীর বাসায়..

আব্বুঃ তুমি এটা করতে পারবে?

রফিক ম্যানেজার: কি যে বলেন স্যার আমি নিজেই যাবো…

পরের দিন সকালে

আব্বুর ফোনে বারবার কল আসতেছিল একটা আননোন নাম্বার থেকে

আব্বুঃ কে বলতেছেন?

হ্যালো আপনি কি মি:খান বলতেছেন..?

আব্বুঃ জি কে আপনি?

আমি থানা থেকে বলছিলাম আমরা একটি লাশ পেয়েছি, যার ফোনের ফার্স্ট নাম্বার আপনার ছিল, আপনি অবশ্যই পুলিশ স্টেশনে এসে আমাদের সাথে দেখা করবেন..

আব্বু: কি বলছেন লাস? আমি এখনই আসছি..

…চলবে?

(কোন ভুল হলে হ্মমার দৃষ্টিতে দেখবেন)