ফিলোফোবিয়া
ঊর্মি প্রেমা (সাজিয়ানা মুনির )
১০.
( কার্টেসি ছাড়া কপি নিষেধ)
সকাল থেকে চেয়ারম্যান বাড়িতে হৈচৈ। যার আওয়াজ প্রিয়’দের বাড়িতেও আসছে। বারন্দায় গিয়ে। মাথা বের করে চেয়ারম্যান বাড়ির দিক কয়েকবার তাকাল প্রিয়। কিন্তু কারণ আবিষ্কার করতে পারলো না কোন। হতাশ হয়ে ঘরে ফিরে।সোফায় পা ঝুলিয়ে শুয়ে পড়ল। রান্নাঘর থেকে পেশার কুকারের শুঁশুঁ আওয়াজ আসছে। কাজের খালা রান্না করছে। এমনি সব সময় খালা রান্না করে। মাঝেসাঝে ব্যস্ততায় আ্টকে পড়লে কাজের খালা রান্না করে। সকাল থেকে শরীরটা ম্যাচম্যাচ করছে। তাই আজ স্কুল কামাই করেছে। এখন বাসায় শুয়ে বসে অলস সময় কাটাচ্ছে।
মাত্রই চোখ লেগেছে এমন সময় কলিং বেল বাজল।এমন সময় কে এলো? কপাল কুঁচকে বিরক্তির মুখ করে ঢোলতে ঢোলতে দরজার কাছে গেল। দরজা খুলে জুবাইদাকে মিষ্টি’র প্যাকেট হাতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে। অবাক কন্ঠে জিজ্ঞেস করল,
‘ তুই এখানে! স্কুলে যাসনি?’
প্রিয়’কে ঠেলে ভিতরে ঢুকলো। টেবিলার উপর মিষ্টির প্যাকেট রেখে। হাত পা ছড়িয়ে। সোফায় আরাম করে বসলো। ক্লান্ত স্বরে বলল,
‘ হাঁপিয়ে গেছি। এক গ্লাস পানি আনতো প্রিয়।’
‘ কি এমন উদ্ধার করে এসেছিস। যে হাঁপিয়ে গেছিস।’
‘ আগে পানি আন। বলছি।’
কপাল কুঁচকে বিরবির করে পানি আনতে চলে গেল প্রিয়। জুবাইদার হাতে পানির গ্লাসটা দিতেই এক নিশ্বাসে সবটা গিলে নিলো। হাঁপানি থামল। একটু সময় নিয়ে বলল,
‘ আজ শতাব্দ ভাইয়ের মেডিকেলের রেজাল্ট এসেছে। ঢাকা মেডিকেলে চান্স পেয়েছে। সকাল থেকে বাড়িতে উৎসব চলছে। বড় আব্বা বিশ মণ মিষ্টি আনিয়েছে। খুশিতে সারা গ্রাম বিলি করছে। এসব ফেলে স্কুলে কি মন বসবে? তাই কামাই দিয়েছি আজ।’
শতাব্দের রেজাল্টের খবর শুনে মন নেচে উঠল প্রিয়’র। চোখে মুখে খুশির ঝলক। জুবাইদা খুশিতে গদগদ করে বলল,
‘ সামনের মাস থেকে ক্লাস। ভাইয়া শিফট হবে ঢাকায়। হোস্টেলে থাকবে। এরপর আমাকে পায় কে? শুধু উড়বো আর নাঁচবো।’
শতাব্দের শিফট হওয়ার কথাটা শুনে কেন জানি ভালো লাগলো না প্রিয়’র। হাসিখুশি মুখটা নিমিষেই চুপসে গেল। মলিন কন্ঠে জিজ্ঞেস করল,
‘ ঢাকায় শিফট হবে কেন? ‘
‘ প্রতিদিন এখান থেকে যাতায়াত করা অসম্ভব। তাই সেখানে হোস্টেলেই থাকবে।’
‘ মাত্র তিন- চার ঘন্টার-ই তো পথ এখান থেকে যেতে সমস্যা কোথায়!’প্রিয় ফেকাশে কন্ঠে বলল,
তীর্যক দৃষ্টিতে জুবাইদা বলল,
‘ তিন -চারঘন্টার পথ! তোর কাছে সামান্য মনে হচ্ছে প্রিয়?বছরে শুধু দুই ঈদে কেনাকাটার জন্য ঢাকা যাওয়া হয়। ওই দুইবারে আমার প্রাণ যায় যায় অবস্থা হয়। আর ডেইলি তিন- চার ঘন্টা জার্নিটাকে সামান্য বলছিস তুই। তাছাড়া এসব নিয়ে তুই এতো কেন ভাবছিস? ভাইয়াকে তোর অপছন্দ। শিফট হলে তোরই ভালো।’
চুপ করে বসে রইল প্রিয়। জুবাইদাকে কি করে বুঝাবে! তার সমস্যাটা এখন অন্য জায়গায়। আজকাল মানুষটাকে যে চোখে হারায় সে।
জুবাইদার ডাকে ভাবনাচ্ছেদ হলো প্রিয়। জুবাইদা বলল,
‘ আজ সন্ধ্যায় বাড়িতে ছোটখাটো পার্টির ব্যবস্থা করা হয়েছে। ভাইয়ার বন্ধুবান্ধবরা আসবে। ছাদে আমরা কাজিনরা খাওয়া দাওয়া গান বাজনার আয়োজন করছি। বড়মা তোকে দাওয়াত করেছে। তোকে কিন্তু আসতেই হবে!’
চুপসে থাকা মুখ নিয়ে।আমতা স্বরে বলল প্রিয়, ‘ তোদের কাজিনদের মাঝে আমি যেয়ে কি করবো?’
জুবাইদা রেগে গেল। ঝাঁঝালো গলায় বলল,
‘ তুই এমন কেন বলতো? কোথায় যেতে বললে শত তালবাহানা তোর। অতশত বুঝিনা। বড়মা যেতে বলেছে। যেতে হবে তোকে।’
মুখে কোন উত্তর দিলো না প্রিয়। বাধ্য মেয়ের মত মাথা নাড়াল শুধু।
প্রিয়’র বিছানা জুড়ে কাপড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে। পড়ার মত একটাও কাপড় দেখছেনা সে। সবগুলো কাপড়ই গাঢ় রঙ্গের। গাঢ় রঙ্গ না পড়ার শতাব্দের কড়া নিষেধ। অনেক খোঁজাখুঁজির পর আলমারির ধাপে সাদা রঙ্গের জামাটা মিলল। গত বৈশাখে প্রভার সাথে মিলিয়ে মা জামাটা কিনে দিয়েছিল। রাউন্ড নেক, আর্ট সিল্কের সাদাসিধা সেলোয়ার-কামিজ। সাথে রঙিন দোপাট্টা। সাদা রঙ্গটা খুব একটা পছন্দ না বলে। ভাঁজ খোলেনি এখনো। আজ কোন উপায়ন্তর না পেয়ে এই জামাটাই পড়তে হয়েছে। চুল ছেড়ে খুব সাধারণ ভাবে সাজলো। হালকা লিপস্টিক আর কানে কুন্দনের জয়পুরি ছোট ঝুমকো ঝুলিয়ে নিলো।
বিকালের পর এই নিয়ে দুবার ডেকে গেছে জুবাইদা। খালাকে বলে ঝটপট বেরিয়ে গেল। চেয়ারম্যান বাড়িতে প্রবেশ করে হতবাক প্রিয়। চারদিকে কি সুন্দর সাজানো। হল ঘর না যেন কোন রাজমহল। ইউনিক সোনালী রঙ্গা ফার্নিচারে সাজানো। এক পাশের দেয়াল ঘেঁষে বিশাল একুরিয়াম। দেশ বিদেশি সেখানে নানা রকমের মাছ। এমন সুন্দর সুসজ্জিত বাড়ি এর আগে দেখেনি প্রিয়। দুতিন বছর আগে যখন ক্লাস সিক্সে পড়ে । মিনি নামের তার এক ক্লাসমেট ছিল। তাদের বাড়িতে এমন রাজকীয় আসবাবপত্র দেখেছিল। যদিও এতো সুন্দর কারুকাজের ছিলনা তাতে। এগুলো আরো বেশি ইউনিক আর দামী দেখাচ্ছে। এদিক সেদিক দেখছে প্রিয়। এতবড় বাড়ি!জুবাইদার ঘরটা কোন দিক?
খানিকক্ষণ এদিক সেদিক চোখ বুলিয়ে অপেক্ষা করল। কাউকে দেখতে না পেয়ে আনুমানিক একদিক হাঁটা ধরল। এমন সময় কেউ ডাকল। পিছন ফিরে তাকালো প্রিয়। ছাই রাঙ্গা বেগুনি পাড়ের শাড়িতে একজন মহিলা দাড়িয়ে।টান টান সুশ্রী চোখমুখ। উজ্জ্বল গাঁয়ের রঙ। কত হবে বয়স? ত্রিশ -বত্রিশ! ঘাবড়ে গেল প্রিয়। তড়িঘড়ি করে সালাম জানাল।
ঠোঁটে হাসি ঝুলিয়ে। অতিপরিচিত ভঙ্গিতে সালামের উত্তর দিয়ে। তিনি জিজ্ঞেস করল,
‘ কেমন আছো প্রিয়?’
প্রিয় চমকাল। মহিলাটা তার নামও জানে? কি করে? উনার সাথে এর আগে দেখা হয়েছে বলে মনে পড়েছে না তো। অতি বলিষ্ঠ স্বরে উত্তর দিলো সে,
‘ জি ভালো।আপনি..’
কথা কেটে তিনি বললেন,
‘ ভালো। আমি অভিলাষা। শাদ সমুদ্র শতাব্দের আম্মা। জুবাইদা’র বড়মা।’
প্রিয় ‘হা’ করে চেয়ে রইল। কি সুন্দর! দেখতে এখনো কত ইয়াং। প্রিয়’র মত যেইকেউ ভুল করবে। কেউ বলবেই না যে তিন ছেলের আম্মা! নামের মত ব্যক্তিত্বটাও সুন্দর আর ভারী।
তিনি আবার বললেন,
‘যতটা শুনেছি! তুমি দেখতে তার থেকে অনেক বেশি সুন্দরী আর মিষ্টি। চেহারার গড়ল কিছুটা তোমার বড় খালার মত হলেও। রঙরূপে তার থেকেও এক কাঠি উপরে।’
লাজুক হাসলো প্রিয়। এই কথাটা মাও বলে প্রায়। যে, সে কিছুটা বড় খালার মত দেখতে। আড়চোখে এদিক সেদিক তাকাচ্ছে প্রিয়। জুবাইদাকে দেখতে পাচ্ছেনা কোথায়। বাড়ি আসতে বলে মেয়েটা কোথায় চলে গেল?
প্রিয়’র বিচলিত চাহনির ভাষা বুঝতে পারল অভিলাষা বেগম। বিনয়ী সুরে বললেন,
‘ জুবাইদাকে খুঁজছ? ও ছাদে গেছে। এখনি চলে আসবে। তুমি ঘরে যেয়ে বসো।’
রান্না ঘরে থেকে আওয়াজ এলো। অভিলাষা বেগমকে ডাকছে। তিনি সেদিকে পা বাড়াতে পেছন থেকে ডাকল প্রিয়। জড়সড় কন্ঠে জিজ্ঞেস করল
‘ জুবাইদার ঘরটা কোন দিক?’
‘ ওইতো সিড়ি দিয়ে যেয়ে দোতলার সামনের ঘরটা।’
অভিলাষা বেগম চলে গেলেন। জড়সড় পায়ে সিড়ি বেয়ে উপরে উঠল প্রিয়। দোতলায় উঠে বিভ্রান্তিতে পড়ল। দুই দিকেই ঘর। কোন দিকে যাবে সে? অনেক ভেবে ডানদিকের ঘরটায় গেল। দরজা ভিড়ানো। টোকা দিবে কি? থাক! কি দরকার। ঘরে তো আর কেউ নেই।
দরজা ঠেলে ভিতরে ঢুকল প্রিয়। আবছা অন্ধকার ঘর। বাহিরে সন্ধ্যা নেমেছে। বারান্দায় মিটিমিটি জ্যোতি জ্বলছে। কাঁচের আড়াল থেকে তার আধোআধো আলো এসে ঘরে পড়ছে। সুইচবোর্ড খুঁজল । পেলনা প্রিয়। ছোট ছোট পা ফেলে ভিতর দিকে গেল। অনেক বড় ঘর। অন্য স্বাভাবিক দুই রুমের সমান প্রায়। অন্ধকারে কোনদিকে যাবে! বুঝতে পারছেনা প্রিয়। আচমকা কিছুর সাথে বেধে কার্পেটের উপর পড়ল। এমন সময়ই ওয়াশরুম থেকে কেউ বের হলো। বেড সাইডের লাইটটা জ্বালালো। ততক্ষণে তড়িঘড়ি করে উঠে দাঁড়িয়েছে প্রিয়। মাথা তুলে সামনে তাকাতেই হতভম্ব প্রিয়। তয়লা পেঁচিয়ে সামনে দাঁড়িয়ে আছে শতাব্দ। ঝটপট পা চালিয়ে। ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে চাইল। তার পূর্বেই শতাব্দ হাত টেনে ধরল। গম্ভীর হয়ে বলল,
‘ বারান্দায় যেয়ে বসো।’
বাধ্য মেয়ের মত বারান্দার দিক পা বাড়াল প্রিয়। গুটিসুটি হয়ে চেয়ারটায় গিয়ে বসল।
মিনিট পাঁচেক পর পেইন রিলিভ স্প্রে হাতে শতাব্দ এলো। কালো টিশার্ট, অফহোয়াইট থ্রিকটার পড়েছে। আঙুল দিয়ে ভেজা চুল গুলো ব্যাকব্রাশ করতে করতে প্রিয়’র সামনের চেয়ারটায় বসল। হাত টেনে দেখতে চাইল,
‘দেখি! কোথায় লেগেছে।’
কনুইতে লেগেছে। অনেকটাই নীলাভ হয়ে আছে। রাতে হয়তো ব্যথা বড়বে। আড়চোখে তাকালো প্রিয়। অন্ধকারে মাথার উপর ঝুলতে থাকা হলদেটে আলোটা শতাব্দের মুখে পড়ছে। ফর্সা মুখশ্রীতে খোঁচা খোঁচা দাড়ি। মাত্র গোসল করে আসায় ভীষণ স্নিগ্ধ দেখাচ্ছে। সরু দৃষ্টিতে তাকালো শতাব্দ। চোখাচোখি হতেই দৃষ্টি নামিয়ে নিলো প্রিয়। আমতা আমতা করে বলল,
‘ সরি। আসলে.. জুবাইদার ঘর ভেবে ভুলে চলে এসেছি।’
‘ আমি কৈফিয়ত চেয়েছি?’
দু’দিকে মাথা ঝাকাল প্রিয়। মানে ‘না’।
‘ তাহলে! এক্সপ্লেইন করছ কেন?’
চুপ করে বসে রইল প্রিয়। ঝিরিঝিরি বাতাস বইছে। অবাধ্য কেশগুলো তিরতির করে কাঁপছে। চোখেমুখে লাগছে বারবার। নিমিষ তাকিয়ে আছে শতাব্দ। হাত বাড়িয়ে যত্ন করে কানের পিছে গুছিয়ে দিলো। আলতো স্পর্শে কেঁপে উঠল প্রিয়। অন্যরকম আবেশে বুজে নিলো চোখ। ধুকপুক করছে বুক। থরথর করে কাঁপছে হাতপা। ধীর স্বরে ডাকল শতাব্দ। উত্তর দিলো না। প্রচন্ড ঘামছে প্রিয়। আরেকটু ঝুকে এলো শতাব্দ। আঙুল দিয়ে নাকের ডগার ঘামটা মুছে দিলো। কন্ঠে আদর মিশিয়ে ডাকল। বলল,
‘ প্রিয়! আমার দিক তাকাও।’
পিটপিট দৃষ্টি মেলে তাকাল প্রিয়। গভীর দৃষ্টিতে চেয়ে আছে শতাব্দ। কি দারুণ সেই চাহনি! আচ্ছা, কিছুদিন পর সত্যি সত্যি মানুষটা দূরে চলে যাবে? যখন তখন এভাবে দেখা হবে না আর। ভেবেই বুকটা কেঁপে উঠল। অশ্রুতে ভরে এলো চোখ। ঠাহর করল শতাব্দ। নরম স্বরে জিজ্ঞেস করল,
‘ কি হয়েছে! হাত কি খুব ব্যথা করছে?’
না সূচক মাথা নাড়াল প্রিয়।
‘ তো?’
প্রিয় অশ্রুভারাক্রান্ত দৃষ্টি নিয়ে মাথা তুলে তাকালো। ছোট ঢোক গিলল। নিশ্বাস টেনে বলল,
‘ আপনি সত্যি সত্যি ঢাকায় চলে যাবেন?’
ম্লান হাসল শতাব্দ। বলল,
‘ তুমি কি চাও! থেকে যাই ?’
উত্তর দিলো না প্রিয়। নিচের দিক তাকিয়ে চুপ করে রইল। মৌনতা সম্মতির লক্ষণ।
প্রিয়’র হাত টেনে হাতে মুঠোয় নিয়ে নিলো শতাব্দ। গাঢ় করে চুমু দিলো। বৃদ্ধাঙ্গুলি দিয়ে আলতো করে হাতের পিঠ ছুঁয়ে দিতে দিতে বলল,
‘ এখনো তুমি অনেক ছোট। তোমার কোমল মন আমার ভালোবাসা, টান সহ্য করতে পারবেনা প্রিয়। তাই এখন আপাতত তোমার থেকে দূরে থাকাই শ্রেয়।’
বুঝল না কিছু। অনেকক্ষণ ধরে চোখে আটকে থাকা জলটা টপ করে প্রিয়’র গালে এসে পড়ল। বুকে অদ্ভুত এক যন্ত্রণা অনুভব করল। বিষিয়ে যাচ্ছে সব। মনে মনে বলল, শতাব্দ পালাচ্ছে! আমি কি এতোটাই অযোগ্য।
প্রিয়’র মনের কথাটা শতাব্দ বুঝল হয়তো। কোমর টেনে কাছে টানল। শক্ত করে বুকে জড়িয়ে নিলো। মাথায় আলতো হাত বুলিয়ে গভীর কন্ঠে বলল,
‘ অযোগ্য নও। তুমি আমার অতি যোগ্য। ভ*য়ানক নেশা। গভীর ঘোর।’
একটু চুপ থেকে গম্ভীর হয়ে বলল,
‘নিজেকে নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। তোমাকে পেতে অনেক সাধনা করতে হবে। আপাতত দূরে যাবো, নয়তো এই ভ*য়ঙ্কর প্রেম জ্বা*লিয়ে দিবে তোমায়।’
মাথা উঁচু করে সরল দৃষ্টিতে তাকালো প্রিয়। কি গভীর, নিষ্পাপ সেই চাহনি। মৃদু হাসলো শতাব্দ। কাছে টেনে গভীর চুমু এঁকে দিলো কপালে। আবেশে চোখজোড়া বুজে নিলো প্রিয়।
চলবে……
ফিলোফোবিয়া
ঊর্মি প্রেমা ( সাজিয়ানা মুনির)
১১.
( কার্টেসি ছাড়া কপি নিষেধ )
প্রেমের দরজা খুলো না
ভালোবাসি বলো না
তুমি দুরে দুরে আর থেকো না
এ চোখে চেয়ে দেখো না
তোমার প্রেমে আমি প্রজাপ্রতি হবো
ফুলে ফুলে উড়ে ভালোবাসার কথা কবো [২]
তুমি আমায় কাছে ডাকোনা
প্রেমের সুরভী মাখো না
তুমি দুরে দুরে আর থেকো না
টিভির পর্দায় channel16 ভেসে। গান চলছে একের পর এক। তখনকার দিনে বাবা মায়েরা কিশোরীদের খুব একটা মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে দিতোনা। শহরে গুটিকয়েক কিশোরীদের হাতে দেখা গেলেও। গ্রামের দিক অনেকটাই অসাধ্য প্রায়। তখনকার দিনে ইন্টারনেট ওয়াইফাই’য়ের ব্যবহার ছিলনা অত। সকাল বিকাল নতুন জনপ্রিয় হওয়া শিল্পী ইলিয়াস, পূজা, ইমরানদের গান গুলো চ্যানেল সিক্সটিনে চালানো হতো বারবার।
মনযোগ দিয়ে গানটা শুনছে প্রিয়। গানের প্রত্যেক বাক্য যেন তারই মনবচন। বুকে অভিমানের বরফ জমেছে। সেই যে শতাব্দ ঢাকায় গেল। আজ পনেরদিন কোন খোঁজখবর নাই তার। কথা ছিল প্রতি সাপ্তাহে আসবে একবার। শতাব্দের কথা ভাবতে ভাবতেই ছবির এলবামটা ফ্লোরে আছড়ে রাখলো।
আজ শুক্রবার। ছুটিরদিন। সেই সাথে ঘরবাড়ি পরিষ্কারেরও দিন। রোজ শুক্রবারের মত সকাল সকাল নাস্তা সেরে খালার সাথে ঘর পরিষ্কারে হাত লাগিয়েছে। বসার ঘরে ছোট কাঠের আলমারিটা খুলেছে আজ। পুরানো কাগজপত্র, দলিলপত্রাদি আছে এখানে। সেই সাথে আছে অনেক আগের ছবির এলবাম। আলমারি পরিষ্কার করতে গিয়ে ভেতর থেকে একটা ছবি ছিটকে পড়ল। বেশ পুরানো। প্রিয় ভ্রু কুঁচকে হাতে নিয়ে দেখল। ছবিতে খালাকে চিনতে পারছে। কিন্তু খালার পাশে ঘেঁষে দাঁড়িয়ে থাকা লোকটাকে দেখেনি আগে! কে এই লোক? খালার সাথে কি সম্পর্ক তার? কোন বন্ধু! প্রিয়’র মনে প্রশ্ন জাগলো। ছবি উঁচিয়ে জিজ্ঞেস করল খালাকে,
‘ খালা। ছবিতে তোমার সাথে এই লোকটা কে?’
খালার ফুরফুরে মেজাজটা দমে গেল হঠাৎ। রাশভারি হয়ে এলো চোখমুখ। গম্ভীর কন্ঠে বললেন,
‘ কেউনা। এসব কিছু ঘাটাঘাটি করতে হবেনা তোকে। আরেকটু পর আজান দিবে। যা গোসল করে নামাজ পড় গিয়ে।’
‘ হাতের কাজটা শেষ করে যাই?’
খালা আগের মত গম্ভীর হয়েই বললেন,
‘ তোকে করতে হবেনা। করছি আমি।’
খালা রেগে গেছে। প্রিয় কথা বাড়ালো না আর। উঠে ঘরে চলে গেল চুপচাপ।
বিকালে ছাদে রেলিং-এ পা তুলে বসে ছিল প্রিয়। উদাসীন মন। বাতাসে তিরতির কাঁপছে ওড়নার পাড়। হ্ঠাৎ এমন সময় জুবাইদা তানহার আগমন হলো। দুজনকে দেখে প্রিয় ভ্রু কুঁচকালো।রেলিং থেকে নেমে ভারী কন্ঠে জিজ্ঞেস করল,
‘ দুজন জোট বেঁধে এসেছিস। কোন কান্ড বাঁধাবি নিশ্চয়ই। সত্যি সত্যি বল কেন এসেছিস?’
জুবাইদা চেয়ারে গা এলিয়ে। টি টেবিলে পা তুলে দিয়ে বসলো। ভণিতা করে বলল,
‘ কি ঠোঁট কাটা মেয়ে দেখেছিস তানহা? মেহমান এসেছে কই চা বিস্কুট আনবে না। তা না! কেন এসেছি জিজ্ঞেস করছে। বলছি আদবকায়দা কি উঠে গেছে দুনিয়া থেকে?’
কথা শেষ হতেই দুজন খিলখিল করে হেসে উঠল। বিরক্ত হলো প্রিয়। এক সকাল থেকে খালার মেজাজ গরম। শুধু শুধু কথা শোনাচ্ছে। তার উপর শতাব্দের চিন্তায় বিকল হয়ে আছে মাথা। এখন এদের ঠাট্টা মশকরাতে আরো মেজাজ খারাপ হচ্ছে। কন্ঠে বিরক্তি ঢেলে বলল প্রিয়,
‘ মজা ভালো লাগছে না। বন্ধ কর।’
তানহা জুবাইদার সাথে তাল দিলো। প্রিয়’কে ঠেস মেরে। জুবাইদার মত ভণিতা করে বলল,
‘ আমরা মজার মানুষ ভাই। আমাদের অত প্যারা নাই। যার ভালোবাসার মানুষ দূর শহরে প্যারা নিবে সে।’
হতভম্ব হলো প্রিয়। গোলগোল বিস্মিত চোখে দু’জনের দিক তাকাল। প্রিয়’র এমন চাহনিতে কিটকিটে হেসে উঠল তারা। জুবাইদা বলল,
‘ তুই কি ভেবেছিস! আমার ভাইয়ের সাথে প্রেম করছিস। তুই না বললে জানবো না আমি? সব দেখেছি। সেদিন ভাইয়ের ওইভাবে রেগে যাওয়া দেখেই বুঝতে পেরেছি।আরিফ ভাইকে কি ঝাঁরাটাই না ঝাঁরলো। বাপরে! কি দোষ ছিল বেচারা! নরমাল হাই হ্যালো। সামান্য ফ্লাটিং-ই তো করছিল। ‘
বিস্ময় কাটিয়ে চোখে মুখে বিরক্তি রেখা টানল প্রিয়। কন্ঠ রাশভারি করে বলল,
‘ বাজে কথা। উনার সাথে প্রেম করতে যাবো কেন।’
‘ আচ্ছা! তাহলে সেদিন সবাই যাওয়ার পর ছাদে কি চলছিল?’
অবাক হওয়ার ভান করে বলল জুবাইদা। প্রিয় ইনিয়েবিনিয়ে কথা কা*টাতে চাইল। শুনলো না তারা। এটাওটা বলে খোঁচাখুঁচি শুরু করল। কপাল কুঁচকে বসে রইল প্রিয়। জুবাইদা হ্ঠাৎ বলল,
‘ পরশু ভাইয়ের জন্মদিন।’
চমকাল প্রিয়। মন আকুম-বাকুম নেচে উঠল। চোখেমুখে প্রকাশ করল না কিছু। গম্ভীর হয়েই উত্তর দিলো,
‘তো? আমি কি করবো।’
জুবাইদা ভনিতা করে বলল,
‘যদি না জেনে থাকিস তাই জানালাম।’
খানিক চুপ থেকে, আমতা আমতা করে জিজ্ঞেস করল,
‘ আগামীকাল আসবে সে?’
‘ তুই জেনে কি করবি? এসবে তোর মাথাব্যথা নাই। তাইনারে প্রিয়?’
মুখ ফুলিয়ে বসে রইল প্রিয়। জুবাইদা তানহার সাথে সারা বিকাল আড্ডা দিলো। সন্ধ্যা নামতেই তানহারা চলে গেল।
রাতে পড়ার টেবিলে বসে সেদিনের কথা ভাবছিল প্রিয় । কি ভ*য়টাই না পেয়েছিল!
চেয়ারম্যান বাড়ির ছেলেমেয়ে সহ শতাব্দের বন্ধুবান্ধবও উপস্থিত ছিল সেখানে সেদিন। ছাদে মুরগী পোড়াচ্ছিল। সেই সাথে গিটার গান বাজনাও ছিল। ছেলেমেয়েদের আলাদা আলাদা বসার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। বেশ জমজমাট ঝমকালো আয়োজন। খাওয়া দাওয়া শেষে। প্রিয় জুবাইদাদের সাথে জমিয়ে আড্ডা দিচ্ছিলো। এমন সময় শতাব্দের এক বন্ধু এসে পাশে বসলো। প্রথমে স্বভাবিক ‘হাই-হ্যালো’ কুশল বিনিময় করলে পরবর্তীতে বেশ গায়ে পড়ে কথা বলছিল। ব্যপারটা বুঝতে পেরে প্রিয় বিনয়ী ভাবে এড়িয়ে যেতে চাইলে। ছেলেটা আরো বেশি ছলাকলা শুরু করল। প্রিয় ভীষণ বিরক্ত হলো। এক পর্যায় জায়গা ছেড়ে উঠে গেল। ছেলেটাও পিছন পিছন এলো। সরাসরি প্রেম নিবেদন করে বসল। প্রথমদিকে এসব কিছু খেয়াল না করলেও প্রপোজালের ব্যাপারটা চোখে পড়ল শতাব্দের। ক্ষি*প্ত বাঘের মত এগিয়ে আসলো। চোখমুখ ভয়ংকর লাল। দেখে ঘা*বড়ে গেল প্রিয়। ভ*য়ে হাত কচলাতে শুরু করল। হাত পা কাঁপছে অনবরত।
প্রিয়’র দিক রাগী দৃষ্টি নিক্ষেপ করল। সামনের ছেলেটার দিক ক্ষি*প্ত হয়ে তাকাতেই। ছেলেটা আমতা আমতা করে বলল,
‘ ভাই এতো সিরিয়াস হচ্ছিস কেন? শুনলাম জুবাইদার বন্ধু তাই টাইমপাস করছিলাম জাস্ট।’
ছেলেটার কলার চেপে ধরল শতাব্দ। দাঁত চিবিয়ে চিবিয়ে ক্রু*দ্ধ কন্ঠে বলল,
‘ তোর চেনাজানা যেই সেই মেয়ে না ওঁ। প্রিয় ফ্যামিলি মেম্বার। ও আমার। বন্ধু বলে ছাড় দিচ্ছি। অন্যকেউ হলে টেনে চোখ তুললাম।’
ছেলেটা ঘাবড়ে দু’পা পিছিয়ে গেল। মাথা নুয়ে বেরিয়ে গেল। ভারী ভারী ক্ষিপ্ত নিশ্বাস ফেলছে শতাব্দ। ভয়*ঙ্কর রেগে আছে তখনো।
ততক্ষণে গানবাজনা বন্ধ হয়ে গেছে সব। এদিকেই তাকিয়ে আছে সবাই। চুপচাপ রেলিং চেপে দাঁড়িয়ে আছে প্রিয়। শরীর কাঁপছে থরথর।
রাত দুইটা তিন পর্যন্ত পার্টি চলবে কথা ছিল। দশটার পর পরই থেমে গেল। পরিস্থিতী দেখে বাতি নিভিয়ে, সবকিছু গুছিয়ে সবাইকে নিয়ে নেমে যাচ্ছিল সমুদ্র। সুযোগ বুঝে প্রিয়ও পা বাড়াল। এমন সময়ই শতাব্দের গম্ভীর গর্জনী কানে এলো,
‘ আমি যেতে বলিনি প্রিয়।’
প্রিয়’র বাড়ন্ত পা’জোড়া থেমে গেল। শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে রইল। এক এক করে সবাই নেমে গেল। মূর্তির মত প্রিয় দাঁড়িয়ে রইল ঠাই! খানিকক্ষণ এভাবেই কাটলো। রেলিং চেপে দাঁড়িয়ে আছে প্রিয়।
রাগ দমিয়ে একটু সময় নিয়ে। পাশে এসে দাঁড়াল শতাব্দ। জোসনা রাত। আকাশে পূর্ণ চাঁদ। চাঁদের উজ্জ্বল আলো মুখ ছুঁইছে প্রিয়’র। ভীতু ভীতু মুখটা দেখতে মায়াবী ভীষণ। রেলিং -এর উপর রাখা প্রিয়’র হাতটার উপর হাত রাখলো শতাব্দ। আদুরে স্বরে ডাকলো। ভীতু পিটপিট দৃষ্টি তুলে তাকালো প্রিয়। চোখে চোখ রাখলো। প্রিয়’র চোখমুখে এখনো একরাশ ভয়। আলতো করে তার তুলতুলে গালে আঙ্গুল ছুঁয়ে দিতে দিতে। শতাব্দ গভীর কন্ঠে বলল,
‘আমি কোন বাঘ ভাল্লুক না। সাধারণ একজন। কিন্তু যদি কেউ আমার পছন্দের জিনিসে নজর দেয়! আমি ভ*য়ানক হিং*স্র হবো। এখানে না থাকলেও তোমার উপর নজর থাকবে আমার। তোমার প্রত্যেক মিনিটের মিনিটের খবর পৌঁছাবে! বি কেয়ারফুল।’
শেষের কথা গুলো অনেকটা শা*সিয়েই বলল শতাব্দ। ঘা*ড়বে গেল প্রিয়। ভ*য়ে চোখমুখ নামিয়ে ফেলল। কোমর টেনে কাছে আনল শতাব্দ। চিবুক তুলে প্রিয়’র চোখ চোখ রেখে বলল,
‘ এই চোখে ভয় না প্রেম দেখতে চাই প্রিয়। অসীম প্রেম। এতটা প্রেম, যতটা আগামী বিরহ ভুলাতে যথেষ্ট।’
প্রিয় উত্তর দিলোনা কোন। শতাব্দের অদ্ভুত সুন্দর চোখ জোড়ায় চেয়ে রইল শুধু। মনে মনে বলল,’ এতো সুন্দর কেন আপনি? ইচ্ছে করছে হাত বাড়িয়ে ছুঁয়ে দেই। একটু ছুঁয়ে দিলে খুব অন্যায় হবে কি!’
পরের দিন স্কুলে গিয়ে। অনেক তালবাহানা বুঝিয়ে তানহাকে দিয়ে সিম কিনে আনলো প্রিয়। তানহা বুঝল। কিন্তু প্রকাশ করল না কিছু। মিটমিটিয়ে হাসলো শুধু। বাড়ি এসে রাতে খালা ঘুমিয়ে যাবার পর। চুপিচুপি খালার ঘর থেকে মোবাইল আনলো। খালা প্রেসারের রুগী। ঘুমের একটু এদিক সেদিক হলেই সমস্যা। তাই স্লিপিং পিল খেয়ে ঘুমায়। সকাল অবধি টের পাবেনা কোন। তখন রাত এগারোটা ছাপ্পান্ন। মোবাইলে নতুন সিম লাগিয়ে শতাব্দের নাম্বারে ডাইল করল প্রিয়। দুইতিন বার বাজতেই তাড়াতাড়ি করে কেটে দিলো। তার ভয় করছে খুব। এসব কিছু কোনদিন করেনি আগে। হাতপা কাঁপছে অনবরত। দুই তিনবার হাত ফসকে ফোন পড়লো জমিনে । কাঁপাকাঁপি হাতে ফোন তুললো।
আরেকবার ফোন করবে কি? নাকি ছোট করে একটা ম্যাসেজ পাঠাবে! অনেক ভেবেচিন্তে ম্যাসেজ পাঠানোর সিন্ধান্ত নিলো প্রিয়। কাঁপাকাঁপি হাতে ম্যাসেজ টাইপ করল,
‘ Happy birthday’
চোখ বুজে সেন্ড করে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলল। মিনিট দু’এক পরেই শতাব্দের নাম্বার থেকে ফোন এলো। ফোনের শব্দে কেঁপে উঠল প্রিয়। তাড়াতাড়ি করে রিসিভ করে কানে ধরতেই। অপর পাশ থেকে চিরপরিচিত সেই আওয়াজ ভেসে এলো,
‘ কেমন আছো প্রিয়?’
ভড়কে উঠল প্রিয়। বিস্মিত স্বরে বলল,
‘ আ…আপনি কি করে বুঝলেন ‘এটা আমি’?’
শতাব্দ ঠোঁট মেলে হাসলো। বলল,
‘ কোন একভাবে বুঝলাম।’
‘ শুভ জন্মদিন’
‘ থ্যাংক ইউ।’
‘ জেগে ছিলেন?’
‘ হ্যাঁ পড়ছিলাম। নাম্বারটা কার?’
‘ তানহাকে দিয়ে কিনেছি আজ।’
‘ কেন?’
‘ আপনার জন্মদিনে তা….
মুখ ফসকে বলতে যেয়ে থেমে গেল প্রিয়। শতাব্দ হাসলো। বলল,
‘ আমার জন্মদিনের কথা কে জানালো?’
‘ জুবাইদা’
‘ ওদের যত বাড়াবাড়ি! বার্থডে সেলিব্রেট করা পছন্দ না আমার। এদের য*ন্ত্রণায় এই দিন বাড়ির বাহিরেই সময় কা*টাই। এতটুকু কারণে এত রাত অবধি জেগে থাকার প্রয়োজন ছিলনা প্রিয়’
প্রিয়’র মন ছোট হয়ে এলো। এত রাত অবধি জেগে থাকাটা দেখল। কেন থাকলো কারণটা দেখলো না শতাব্দ। তাকে উইশ করার জন্যই তো জেগে ছিল। বিরবির করে জিজ্ঞেস করল প্রিয়,
‘ আপনি আসবেন কাল?’
‘ তুমি কি চাও! আসি?’
প্রিয় মনে মনে চিৎকার করে বলল, ‘ হ্যাঁ! হ্যাঁ আমি চাই আপনি আসেন। অনেকদিন দেখিনা আপনায়! চোখে তৃষ্ণা জমেছে দেখার।’ মুখে কিছু বলল না। চুপ করে রইল শুধু।
অপর পাশ থেকে আদুরে কন্ঠে ডাকল শতাব্দ। বলল,
‘ প্রিয়! আসলে, বার্থডে গিফট পাবো তো?’
কিছু না বুঝে তড়িঘড়ি জিজ্ঞেস করল প্রিয়,
‘ কি গিফট চাই আপনার?’
প্রমত্ত কন্ঠে বলল শতাব্দ’ স্পেশাল কিছু।’
চলবে…..