বাঁধনহীন সেই বাঁধন অকারণ পর্ব-১৯+২০

0
611

#বাঁধনহীন_সেই_বাঁধন_অকারণ|১৯|
#শার্লিন_হাসান

-আর বলিস না কী অদ্ভুত জায়গায় এসে পড়লাম। কানা লোকটা মনে হয় তার মাকে পাঠিয়েছে। মেয়ে দেখলেই হলো! আবার কী বলে জানিস একটা নার্সের সাথে ধাক্কা লাগলো না। এমন ছেলেদের টাইট না দিতে পারলে আমার মনে হয় নারী তুমি ব্যর্থ।

-হ্যাঁ আমি তো এটাই বুঝানো ট্রাই করছি। চলে আসো, বিয়েটা করে নেই। তারপর যা টাইট দেওয়ার দিও। আর শোনো আমার আশেপাশে অনেক সুন্দরী নার্স ঘুরাঘুরি করে চোখ তো একটুআধটু যাবেই। আমার মতো ছেলেকে টাইট না দিতে পারলে নারী তুমি আসলেই ব্যর্থ।

মেঘ পাশে তাকাতে নিবরাসকে দেখে। নিবরাস তার দিকে তাকিয়ে হাসছে। লজ্জায় মাথা নিচু করে নেয় মেঘ। তাড়াতাড়ি লিমার কল কাটে।
তখন নিবরাস বলে,
-আচ্ছা বায় পরে কথা হবে।
ফোন কানের কাছ থেকে সরায়। মেঘ খেয়াল করো লোকটা কলে কথা বলছিলো। নিশ্চিত হয় মেঘ, তাকে কথাগুলো বলেনি। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে ভেতরের দিকে অগ্রসর হয়। সেই সাথে নিবরাসের চৌদ্দগুষ্টি তুষ্টি উদ্ধার করছে মেঘ।

মেঘ যেতে নিবরাস হাসে। কলে সে কারোর সাথেই কথা বলেনি। শুধু মেঘকে দেখাতে চেয়েছে সে অন্য কাউকে এসব বলছে। মেঘ লজ্জা পেয়েছে এটাও বেশ ভালো বুঝেছে নিবরাস।

*****
এরই মাঝে কেটে গেছে দুইসপ্তাহ। মেঘ বাড়ীতে চলে এসেছে। আজকে আবার ক্লাস শুরু। সেকন্ড ইয়ারে ভর্তি হয়ে এসেছে দুইদিন আগে। সকাল,সকাল রেডি হয়ে নেয় মেঘ। মনটা বিষন্নতায় ছেয়ে গেছে। দু’দিন হলো রুদ্রর খোঁজ মেলেনি। কাউকে জিজ্ঞেস ও করতে পারছে না মেঘ। ড্রয়িং রুমে আসতে থমকালো মেঘ। নিবরাসে মা আর একটা মেয়ে বসে আছে। মিসবাহ কে দেখে চিনতে ভুল হয়নি। সাথে তার আন্টি আজিয়া আছে। কলেজ ড্রেস পড়া অষ্টাদশী কন্যাকে দেখে মরিয়ম নওয়াজ বলে উঠেন,

-আরে মেঘ যে কেমন আছো মা?

মেঘ সালাম দিয়ে বলে,
-আলহামদুলিল্লাহ, আপনি?

তখন আজিয়া বলে,
-মেঘ এখানে আসো। বসো?

-না আন্টি আমার লেট হয়ে যাচ্ছে। তোমরা কথা বলো না?

তখন মরিয়ম নওয়াজ উঠে আসেন। মেঘের হাত ধরে সোফায় বসায়। তার পেছন দিয়ে রাখি নাস্তার ট্রে নিয়ে হাজির হয়। মহীউদ্দীন তালুকদার বসে আছে সামনের সোফায়। তখন মরিয়ম নওয়াজ বলেন,

-ও তো কলেজ যাবে। আংটিটা এখন পড়িয়ে দেই?

থমকায় মেঘ। এসব কী হচ্ছে? এই মহিলা কথাবার্তা ছাড়াই সব করে ফেলছে? তখন মহীউদ্দীন তালুকদার বললেন,
-সমস্যা নেই আরেকদিন এসেও পড়িয়ে দিতে পারবেন। কথাবার্তা ফাইনাল হোক আগে।

-আর যাই বলেন, আপনার মেয়েকে আমি ছাড়ছি না।

মরিয়ম নওয়াজের কথায় হাসে মহীউদ্দীন তালুকদার সাথে আজিয়া ও। মেঘ তখন রাখিকে চোখের ইশারা করে। রাখি বুঝে কিন্তু কী বলবে? মরিয়ম নওয়াজ মেঘকে তার পাশে বসিয়ে রেখেছে। ঝটপট করে নিজের হাতের বালা জোড়া পড়িয়ে দিলেন। হেসে বললেন,

-আংটিটা নাহয় অনুষ্ঠান করেই পড়িয়ে যাবো। এখন তুমি কলেজ যাও মা।

মেঘ মাথা নাড়িয়ে বেড়িয়ে পড়ে। আফরোজা বেগম তো মরিয়ম নওয়াজের ব্যবহারে মুগ্ধ। মহিলাটা এতো মিশুক আর নিরহংকারী দেখে বুঝার উপায় নেই, না মেশা অব্দি। মেঘকে এখানে বিয়ে দিলে সুখেই থাকবে। এই বিয়েতে তার দ্বিমত নেই।

তাদের কথাবার্তার পাট চুকে যেতে মরিয়ম নওয়াজ বলেন,
-আগামী কালকে আপা সহ আমাদের বাসায় আসবেন। প্লিজ আপনারা যাবেন। আংটিবদলের ডেট ফিক্সড করা যাবে আপনারা এমনিতে গিয়ে ঘুরে আসবেন।

তখন আফরোজা বেগম বলেন,
-আচ্ছা যাবো। আপনারাও আসবেন। এই তো মাত্র শুরু,বিয়েশাদি হলে তো আরো বেশী,বেশী আসতে হবে।

হাসে মরিয়ম নওয়াজ। মাইশা,মিসবাহ কে নিয়ে বিদায় নেয়। তালুকদার বাড়ীর গেটের সামনে তাদের গাড়ী রাখা আছে। আজিয়া বেগম আজকে তালুকদার বাড়ীতে থেকে যাবেন। মায়া,মোহনা মেঘের সাথে চলে আসবে কলেজ শেষে।

রাখি রান্না চাপিয়ে লিভিং রুমে এসে বসেছে। আফরোজা বেগম আর আজিয়া বেগম তারা কথা বলছে। তখন মহীউদ্দীন তালুকদার বলেন,
-রুদ্রর বিয়ের জন্য তো পাত্রী খোঁজা হচ্ছে। আর ফাইজা চৌধুরী মেঘের কথা বলেছিলো সেখানে আবার মেঘকে অন্য জায়গায়…!

-মেহরাব না করে দিয়েছে তো। আর রুদ্রকে মেহরাব ভালো চেনে জানে তাকে বুঝে। হয়ত রুদ্রর জন্য বেটার কেউ আসবে। আত্নীয়র মাঝে আত্মীয় আমার পছন্দ না। রুদ্র মেঘের টিচার হয় সে জায়গায় স্টুডেন্ট বিয়ে করবে? কেমন খাপছাড়া লাগছে না?

আফরোজা বেগমের কথায় রাখি বলে,
-আর ভাইয়া এখন বিয়ে করবে না। কম করে হলেও ছয় মাস যাবে। একটু সমস্যা আছে তো।

-মরিয়ম নওয়াজ তো মেঘকে সাদরে গ্রহণ করতে চাইছেন। নির্ভেজাল পরিবার, ছেলেও জানা শোনায় ভালো। সমস্যা কোথায়?

আফরোজা বেগমের কথায় সম্মতি দেয় রাখি,আজিয়া বেগম।
রাখি চায় না মেঘকে রুদ্র অবহেলা করুক। রুদ্রর সব ঠিকঠাক করে সোজা হয়ে ঘুরে দাঁড়াতে কম করে ছয়মাস তো লাগবে। আর মির্জা পরিবার ভালো,মেঘের জন্য ও ঠিক আছে। শুধু, শুধু ভালো কিছু রেখে অস্থায়ী সম্পর্কের আশায় থাকা বোকামী। তাও রুদ্রর মত নেই!

*****
হাতের বালা জোড়ার দিকে তাকিয়ে আছে মেঘ। খুলে ব্যাগে ঢুকিয়ে নেয়। কলেজে চুড়ি পড়ে আসা আস্ত বস্তি ছাড়া কিছু না। হৃদ লিমার সাথে বসে,বসে সবটা শেয়ার করে মেঘ। লিমা তো নিবরাসকে বলে যাচ্ছে সাথে মেঘের কানে তাকে নিয়ে উল্টাপাল্টা ঢুকাচ্ছে। হৃদ ভেজায় খুশি! সে চায় না রুদ্রর সাথে মেঘের বিয়েটা হেক। মেঘ ভালোবাসার জন্য কষ্ট পাক। রুদ্র মেঘকে অবহেলা করুক এমন কিছুই চায় না হৃদ। ওদের কথায় মাঝে গেট দিয়ে প্রবেশ করে রুদ্র। মেঘ তাকিয়ে রয় সেদিকে। লোকটা কত চেন্জ হয়ে গেলো। মুখটা শুকিয়ে গেছে, মুখে অসহায়ত্বের চাপ টা জেনো আরো বেশী প্রগাঢ় হলো। এই রুদ্রকে মেঘ ভালোবাসে। অথচ অন্য কারোর হতে বেশীদিন নেই মেঘের।

-একবার হলে মনে হয় কষ্ট পেলে পাবো! তবুও ভালোবাসার মানুষটাকে নিজের করে পাবো তো? এই একটু আধটু অবহেলা সহ্য করাই যায় ভালোবাসার ক্ষেত্রে। আবার মনে হয়, থাক না আড়ালে কিছু কথা। কিছু সম্পর্ক অপূর্ণতাতে ভালো মানায়।

-ওরে মেঘ ট্রিট দিবি কবে?
হৃদের কথায় মেঘ তাকায়। হেসে বলে,
-আবার আগের মতে জীবন্ত হই তারপর নাহয় ট্রিট দেবো। মন খুলে তোদের সাথে কথা বলবো,হাসবো।

-এখন কী মৃত নাকী তুই?
লিমার কথায় মেঘ জবাব দেয়,
-নারী শখের পুরুষকে বিসর্জন দেওয়ার পর আদৌ জীবিত থাকে তো? উঁহু! থাকে না! সব শখ, চাওয়া-পাওয়া, আশা-প্রত্যাশা শখের পুরুষকে বিসর্জন দেওয়ার সাথে,সাথে সেসবও বিসর্জন দিয়ে দেয়।

-আমার জীবনে এমন একটা শখের পুরুষ আসলো না রে বোইন।

-তাহলে কী মাইশা ও আমায় না পেলে এটা বলবে?

-ধুর মাইশা কী তেকে পছন্দ করে নাকী? আর না তোকে ভালোবাসে যেমনটা মেঘ বাসে রুদ্র স্যারকে।
লিমার কথায় মেঘ বলে,

– খুব বাজে একটা অনুভূতি। সামনাসামনি থেকেও বলতে পারছি না আমি তাকে ভালোবাসি। মন তাকে চায়!

-ভাই মেঘের এমন বিরহবেদনা, কান্নাকাটি, দুঃখ আমি নিতে পারছি না। মেঘের বাচ্চা তোরে কে বলছে রুদ্র স্যারকে ভালোবাসতে? কে বলেছে তাকে সিরিয়াস ভাবে মনে গেঁথে নিতে? এসব বাদ দে তো। তোর জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু হবে। সেটায় মন দে। আর রুদ্র স্যার তোকে ভালোবাসে না রে। তাকে ভেবে মন খারাপ করিস না।

হৃদের কথায় তাকায় মেঘ। অসহায় লাগছে নিজেকে। সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে মেঘ। কাউকে বুঝাতে পারছে না মন কী চায়। কাকে চায়?

-এই আমি যাকে চাই সে তো আমায় চায় নারে।

-এই বাক্যটা সবচেয়ে বেশী অসহায়ত্ব প্রকাশ করে। আর নিজেকে কারোর সামনে এমন দুর্বল প্রমাণ করবি না। নিবরাস মির্জা খারাপ কই? তুই হ্যাপি থাকবি বোইন। রুদ্র স্যারকে ভুলে নতুন করে সব শুরু কর।

লিমার কথায় জবাব দেয়না মেঘ। ক্লাসের সময় হতে ক্লাস রুমে চলে যায়। মনের মাঝে উথালপাতাল ঝড় বইছে। মেঘ মনোযোগ দিতে পারছে না ক্লাস গুলোতে। তৃতীয় পিরিয়ডে রুদ্রর ক্লাস। মেঘ চুপচাপ বসে আছে। নিজের ডায়েরিটা খুঁটছে। এই একটা ডায়েরি যেটায় রুদ্রকে ঘিরে মনের হাজারে অনুভূতি,চাওয়া-পাওয়া ফুটিয়ে তুলেছে মেঘ। এখন ও কয়েক লাইন লিখেছে। নিজের মনের ইচ্ছে, চাওয়া-পাওয়া। রুদ্রকে না বলতে পারা কথা গিলে ফেলা।

শেষ কলমে লিখলো,
– আপনি আমার ভীষণ শখের হলেও সাধ্যে নেই। তাই এই শখ আর কোনদিন পূরণ হবে না। আপনি আমার জন্য দূর থেকেই সুন্দর । তবুও বলবো আপনার প্রতি আমার এক তরফা অনুভূতির “বাঁধনহীন সেই বাঁধন অকারণ” ভালোবাসা হয়েই রইলো।

মেঘের মনোযোগী লেখা রুদ্রর চক্ষুগোচর হতে মেঘের সামনে আসে রুদ্র। ডায়েরিটার দিকে একনজর তাকায়। মেঘ পারছে না ডায়েরিটা লুকিয়ে ফেলতে। রুদ্র গম্ভীর কণ্ঠে বলে,
-স্ট্যান্ড আপ।

মেঘ দাঁড়ায়। রুদ্র একবার ডায়েরিটা একবার মেঘের দিকে তাকিয়ে বলে,
-কী লিখছিলেন এটায়?

-না মানে স্যার! সোজা কথায় বলি, আমার ডায়েরি আমার কত পার্সোনাল কথাই থাকতে পারে সেটাই লিখছি। আর আমার পার্সোনাল কথা এভাবে পাবলিক প্লেসে বলবো কেন?

-টিচারের সাথে কীভাবে কথা বলতে হয় ভুলে গেলেন?

-আমি স্যার স্টুডেন্ট ক্যারেক্টারে ঢুকার আগে আপনার বেয়াইনের ক্যারেক্টারে ঢুকে গেছি। আচ্ছা বাদ দিন সেসব কথা। আপনি তো সম্পর্কের মূল্য বুঝেন না।

-এই আপনার প্রবলেমটা কী বলুন তো? কথা একটা বলার আগে সম্পর্কের মূল্যের কাছে চলে যান। আমি আপনার টিচার আপনি আমার স্টুডেন্ট। টিচারদের থেকে স্টুডেন্টরা শিখে। আন্ডারস্ট্যান্ড?

-কী শিখবে স্যার? এই গম্ভীরতা?

রুদ্র জবাব দেয় না। মেঘের থেকে ডায়েরিটা নেয়। মেঘ হাত বাড়িয়ে নিতে যাবে রুদ্র থামিয়ে দেয়।

-আল্লাহ এবারের মতো বাচিয়ে দাও। আমার মুড সুয়িং এখন বাঁশ খাওয়িংয়ে রুপ নিচ্ছে। এই ডায়েরিটা পড়লে আমার সন্মান কই থাকবে? ধুর এক তরফা ভালোবাসা এখন মনে হচ্ছে গলার কাটা। কী দরকার ছিলো মেঘ ডায়েরিটা ব্যাগে রাখার?

মেঘের ভাবনার মাঝে রুদ্র বলে উঠে,
-সরি বাট নট সরি আপনি ক্লাস টাইমে ক্লাসে মনোযোগ না দিয়ে ডায়েরি লিখছেন। একটা বেয়াদবির মাঝে পড়ে এটা। সেজন্য ডায়েরিটা আমি নিলাম।

-স্যার,স্যার,স্যার প্লিজ এমনটা করবেন না। আপনি আমায় অন্য শাস্তি দিন তাও আমার ডায়েরিটা নিবেন না স্যার।

-রুদ্র একবার যা বলে তাই করে৷

-তো বলে ফেলনা ভাই মেঘ চলো বিয়েটা করে নেই। তা কী আর বলবি? তুই যা হা’রামি। ছ্যাকা খেয়ে ব্যাকা তো হয়েছিস ঠিকই সোজা হবি কীভাবে? মেঘ হলে না তোকে চঞ্চল বানাতো। কিন্তু না তুই তো এমন গম্ভিরই থাকবি। যাক দোআ দেই তোর বউটা চঞ্চল হোক। তোকে এমন সোজা করে যাতে টাটকা হয়ে যাস।

কথাগুলো মনে,মনে ভেবে মেঘ মেকি হাসি টানে। রুদ্র ডায়েরি নিয়ে চলে গেছে। মেঘ সেখানে দাঁড়িয়ে দেখছে। কিছু বলতেেও পারছে না। তবে তার মনে, মনে খুব ইচ্ছে হলো রুদ্রর মাথা বারি দিয়ে ফাটানোর। সব ইচ্ছে কী আর পূরণ হয়?

রুদ্র ক্লাস শেষ করে ডায়েরি নিয়ে বেড়িয়ে গেছে। মেঘ পেছন,পেছন যেতে গিয়েও থেমে গেছে। আপাতত আফসোস ছাড়া কিছুই করার নেই তার কাছে। মনে,মনে গালি দিচ্ছে রুদ্রকে সে সাথে নিজের ভাগ্যকে।

-ধুর বাপ সকাল,সকাল কার মুখ দেখে কলেজের জন্য বেড় হলাম? ওহ্! ওই নিবরাসের মা! নিবরাস যেমন ভিলেন তার মা পুরোই বাংলা সিনেমার ভিলেন। মেয়ে ভিলেন? তাহলে কী? ধুর বাপ! এই রুদ্র সব পড়ে নিবে ডায়েরির।

রুদ্র ডায়েরিটার উপরের অংশ ভালো করে দেখে। তবে খোলার ইচ্ছে থাকলেও খোলে না ডায়েরি। আরেকজনের পার্সোনাল কিছু অনুমতি ছাড়া পড়বে?
তবুও বেশ কৌতুহল মনে ডায়েরিটা পড়ার জন্য।

#চলবে

#বাঁধনহীন_সেই_বাঁধন_অকারণ|২০|
#শার্লিন_হাসান

রুমে বসে আছে মেঘ। পরিবেশ ঠান্ডা তবে বুঝতে পারছে না বিয়েটা ভেঙেছে কীনা। কাউকে জিজ্ঞেস ও করতে পারছে না। সবচেয়ে বড় শোক ডায়েরিটা নিয়ে। রুদ্র তাকে কত ছ্যাচড়া ভাববে। ভাবতে মাথা কা’টা যাচ্ছে। তার আত্ম সন্মান কী এতেটাই ঠুনকো নাকী? রুদ্রকে ভালোবাসে সেটা স্বীকার ও করে মেঘ কিন্তু আত্ম সন্মান তার সবার আগে। সেটা রুদ্র বা কারোর চোখে ঠুনকো হোক সেটা চায় না মেঘ।

এরই মাঝে আজিয়া আসে রুমে। মেঘকে বসে থাকতে দেখে বলেন,

-আরে এমন গোমড়া মুখ করে বসে আছো কেন মেঘ? মায়া,মোহনা,রাখি ওরা তো সব প্লানিং করছে তুমিও আসো না?

-ওইটা মায়ার বিয়ে হলে আমিও বসে,বসে প্লানিং করতাম আন্টি।

কথা বাড়ায়নি আজিয়া বেগম। মেঘের মাথায় হাত ভুলিয়ে চলে গেলেন তিনি। মেঘ বিরক্ত হচ্ছে বারবার। ফেবুতে ঢু মেরে আসা যাক ভেবে ফোন হাতে নেয়।
এরই মাঝে হৃদ নক দেয়। মেঘ সীন করে আরো বেশী বিরক্ত হয়। হৃদ এসেছে নিবরাসের আইডি নিয়ে তার কাছে। এই ছেলেকে সিসিটিভি বললে কম হয়ে যায়।
এরই মাঝে হৃদ কল দেয়। মেঘ রিসিভ করে।

-এটা তো আইডিটা? আমি তো দেখিনি তাকে জাস্ট নামটা জানি।

-হ্যাঁ এটাই সেই বদলোক। ভাই তোকে নোবেল না দিলে মনে হয় নোবেল বানানো স্বার্থক হবে না।

-তোর মতো গাধা নাকী আমি? শুধু মাইশা পটে না রে। আর নাহয় সবই ঠিক ছিলো।

-বাদ দেএ। আইডিটা স্টক করে আসি দেখি তার মেয়ে ফ্রেন্ড আছে কীনা।

-এই না তোর ইন্টারেস্ট নেই।

-হুঁশ! এমন একটু আধটু খোঁজ নেওয়াই লাগে ভাই। যদি কোন ছুতোয় ভাঙা যায় বিয়েটা।

-কিছুই পাবি না। যা সর! গাধা কোথাকার।

হৃদ কল কেটে দেয়। মেঘ আইডি স্টক করে। তেমন কিছুই পায়নি তবে নিবরাসের কয়েকটা সুন্দর,সুন্দর পিকচার পেয়েছে। আচ্ছা নিবরাস সুন্দর তো? প্রশ্ন জাগে মেঘের মনে। খুঁটিয়ে দেখে তাকে। গায়ের রং ফর্সাই। মেঘের থেকেও বেশী ফর্সা। চিকন খাড়া নাক খোঁচাখোঁচা দাঁড়ি, চোখে কালোর ফ্রেমের চশমা। লোকটা মন্দ না।

রুদ্রর কথা ভাবতে ফোনটোন রেখে বাইরে চলে আসে মেঘ। লিভিং রুমে বাকীরা বসে আছে। মেঘের মনে হচ্ছে পারে না এক্ষুণি বিয়েটা দিয়ে দে।

****

-নিবরাস আগামী কালকে তালুকদার বাড়ীর সদস্যরা আসবে। ডেট ফিক্সড করলে আংটিবদল হবে তোমাদের। আর মেয়ের ছবি তোমার হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়ে দিয়েছি দেখে নিও সময় করে।

মরিয়ম নওয়াজ বললেন। নিবরাস খেতে বসেছে। তার বিয়ে নিয়ে যেভাবে পড়েছে সবাই। এবার আর ছাড়া পাবে না নিবরাস। চুপচাপ খেয়ে রুমে চলে যায় নিবরাস। হোয়াটসঅ্যাপে ঢুকে তার হবু বউয়ের পিক দেখে। এটা আর কেউ না সেই কোমড় ভাঙা লাউডস্পিকার। নিবরাস হাসে। শেষমেশ কোমড় ভাঙা মেয়েটা তার ভাগ্যে জুটবে। খারাপ না! বউ বানানো যায়ই।

ইমার্জেন্সি কল আসায় নিবরাস রেডি হয়ে নেয়। জিয়াউর রহমান কল করেছে। ইমার্জেন্সি তার বাড়ীতে যেতে রোগী আছে। নিবরাস লেট করেনি রেডি হয়ে গাড়ীতে বসে। জিয়াউর রহমানের সাথে তার সম্পর্কটা একটু না একটু বেশী প্রগাঢ়। নিবরাসের বাবা মারা যায় দেড়বছর আগে। জিয়াউর তার বাবার সবচেয়ে ভালো এবং কাছের বন্ধু ছিলো। সেই সুবাদে সম্পর্কটাও একটু বেশী প্রগাঢ় তাদের।

রুদ্রর ফ্লাটে এসেছে রাইহান চৌধুরী। কিন্তু ফ্লাটের দরজা বাইরে থেকে তালা লাগানো। চৌধুরী বাড়ীতেও রুদ্র যায়নি। সময়টা রাত সাড়ে এগারোটা বাজে। ফাইজা চৌধুরীকে দুইবার মাথায় পানি দেওয়া শেষ। রাইহান চৌধুরী চিন্তিত। তার ছেলের আবার কী হলো? হুট করে উদাও? এর পেছনে আয়মান বা সাদিয়া নেই তো?

চিন্তিত হয়ে চৌধুরী বাড়ীতে চলে যান রাইহান চৌধুরী।
চৌধুরী বাড়ীর সবাই লিভিং রুমে বসে আছে। কেউ,কেউ রুদ্রর ফোনে কল দেওয়া ট্রাই করছে। কলেজ থেকে আর বাড়ী ফিরেনি রুদ্র। কী থেকে কী হলো! এমন তো কখনো হয়না। রাইহান চৌধুরী সোফায় বসে আছেন। সাদিয়াকে এখন পেলে নির্ঘাত তিনি খু’ন করে ফেলতেন।

***

এক পলকে তাকিয়ে আছে রুদ্রর দিকে আনায়া। রুদ্রর দর্শন পাবে ভাবতে পারেনি। কত প্রতিক্ষার পর ছবির লোকটিকে বাস্তবে দেখলো আনায়া। এই যে রুদ্রর হাতে স্পর্শ করেছে তাতে নিজেকে ভাগ্যবতী মনে হচ্ছে। এই লোকটাকে যে নিজের করে পাবে সে আরো বেশী ভাগ্যবতী।

এরই মাঝে নিবরাস আসে। জিয়াউর রহমান তাকে দেখে খুশি হয়। তড়িঘড়ি ভেতরের ঘরে নিয়ে গেলেন। যেখানে রুদ্র শুয়ে আছে। তার কিছুটা দূরত্বে আনায়া দাঁড়িয়ে আছে।

রুদ্রকে দেখে নিবরাস তড়িঘড়ি তার কাছে যায়। মাথা,হাত,পা ড্রেসিং করিয়ে বেন্ডেজ করে নেয়। সাথে কিছু মেডিসিন লিখে দেয়।
কাজ শেষ হতে ঘন্টাখানেক সময় কেটে গেছে। নিবরাস বলে,

-আগামী কালকে ভদ্রলোককে নিয়ে আমার কাছে যাবেন। কিছু চেকআপ বাকী আছে। বিশেষ করে মাথাটা সিটি স্ক্যান করতে হবে। দেখে মনে হচ্ছে বেশ ভালোই আঘাত লেগেছে।

-হ্যাঁ,হ্যাঁ আগামী কালকে নিয়ে যাবো।

-জ্ঞান ফিরলে কিছু খাইয়ে দিয়েন।

-আচ্ছা দেবো।

নিবরাস জিয়াউর রহমানের সাথে লিভিং রুমে এসে বসে। আনায়া কফি বানাতে গিয়েছে। কথার মাঝে নিবরাস জিজ্ঞেস করে,
-কোথায় পেলেন ভদ্রলোককে?

-গ্রামে গিয়েছিলাম তোমার আন্টিকে দিয়ে আসতে। আসার পথেই ওর দেখা মিলে। অবশ্য চিনতে অসুবিধা হয়নি ও আমার বোনের ছেলে। কেউ ওকে অনেক মেরেছে। কীভাবে পালিয়ে এসেছে ওই একমাত্র ভালো বলতে পারবে।

-খুবই দুঃখজনক ব্যপারটা। ভদ্রলোককে দেখে তো মনে হচ্ছে জামেলা মুক্ত থাকার চেষ্টা করে। উনাকে কেউ মারবে কোন দুঃখে?

-হ্যাঁ ওর মুখ থেকে শুনি আমি কাউকে ছাড়বো না।

-জ্বী আংকেল অবশ্যই প্রাপ্য শাস্তি দিবেন তাদের। ভদ্রলোকের খেয়াল রাখবেন।

-সে তো বটে! তা নিবরাস বিয়েটা করছো কবে?

-ওহ্! আংকেল বলা হলো না। মা তো মেয়ে দেখে নিয়েছে। সবই ঠিকঠাক, এই কয়েকদিনের মাঝে আংটিবদল হয়ে বিয়ের দিন তারিখ ঠিক হবে। আন্টি ঢাকায় ফিরবেন কবে?

-সে তে তার মাকে দেখতে গিয়েছে। অসুস্থ তো। বলবো চলে আসতে।

-জ্বী চলে আসতে বলুন। অবশ্যই বিয়েতে থাকতে হবে।

-নিবরাস ভাইয়া ভাবীকে দেখাও।

কফির মগ নিয়ে লিভিং রুমে আসতে,আসতে বললো আনায়া। নিবরাস মুচকি হাসে আনায়ার কথায়। ফোন হাতে নিয়ে হোয়াটসঅ্যাপে ঢুকে। মেঘের একটা ছবি আনায়াকে দেখায়।

-বাহ্! সুন্দর তো। আন্টির পছন্দ আছে বলতে হবে।

মুচকি হাসে নিবরাস। জিয়াউর রহমানের সাথে কথা বলতে,বলতে কফিটা শেষ করে নিবরাস। তাদেরকে বিদায় দিয়ে রওনা হতে,হতে দুইটার কাছাকাছি বেজে যায়।
বাসার দিকে না গিয়ে একটু ফ্লাইওভারের দিকে যায় নিবরাস। একটু হাটাহাটি করে গাড়ীতে এসে বসে। সকালে আবার ডিউটি আছে তার। আর সময় নষ্ট না করে তিনটার দিকে বাড়ীর উদ্দেশ্য রওনা দেয় নিবরাস। রুমে এসে ফ্রেশ হয়ে তাহাজ্জুদ আদায় করে নেয়। এখন আর ঘুমাবে না। কিছুক্ষণ কোরআন তেলাওয়াত করে নামাজ পড়ে,সকালে একটু হাটাহাটি করে, দ্যান নাস্তা করে রেডি হয়ে নিবে। কিছুক্ষণ কোরআন তেলাওয়াত করে নিবরাস।

এটা নতুন না! রাতের বেলায় সময় সুযোগ মিললে প্রায় কোরআন তেলাওয়াত করে সে।

মনে,মনে একটাই চাওয়া নতুন যে সম্পর্কটা শুরু হতে যাচ্ছে সেটা যাতে চিরস্থায়ী হয়। নিজের অর্ধাঙ্গিনীর প্রতি মায়া,টান বাড়ুক। হালাল সব সময় সুন্দর বিশ্বাস করে নিবরাস। এই হালালের মাঝে বাকীটা জীবন কাটাতে চায়।

ফজরের আজান পড়তে নামাজ আদায় করে নেয় নিবরাস। বাইরে বের হয়! শীতল পরিবেশ অনুভব করার জন্য। কিছুক্ষণ হাটাহাটি করে ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে নেয় নিবরাস। জিয়াউর রহমান কল করেছে। ভদ্রলোকের জ্ঞান ফিরেছে শেষ রাতে সেটাও জানিয়েছে। নিবরাস বলে দিয়েছে হসপিটালে নিয়ে আসতে বাকীটা সে দেখবে।

মরিয়ম নওয়াজ নাস্তা রেডি করে টেবিলে রাখলেন। মিসবাহ ব্রেড জেল দিয়ে খাচ্ছে। নিবরাস ও ধীরেসুস্থে নাস্তা খাচ্ছে। এরই মাঝে মাইশা বলে উঠে,

-আজকে তো ওনারা আসবে। ডেট কবে দিবে?

-আগামী কালকে। আমার ছুটি সেজন্য বললাম।

গম্ভীর কণ্ঠে উত্তর দেয় নিবরাস। মরিয়ম নওয়াজ ও না করেননি। নিনরাসকে বিদায় দিয়ে কাজে নেমে পড়েন। মাইশা সব গোছাচ্ছে। মরিয়ম নওয়াজ নাস্তা, খাবার রেডি করায় ব্যস্ত।

*******

রুদ্রর খোঁজ বা সংবাদ মেলেনি এখন অব্দি। রাইহান চৌধুরী এবং আফিয়ান চৌধুরী যাবেন থানায় ডায়েরি করতে। ফাইজা চৌধুরী কয়েকবার জ্ঞান হারিয়েছেন। রাখি চলে এসেছে সকাল,সকাল চৌধুরী বাড়ীতে। মেহরাব এসেছে তবে তার স্কুলে যেতে হবে। কিছুক্ষণ স্বান্তনা দিয়ে সেও রওনা হয়েছে। চৌধুরী বাড়ীতে এক প্রকার শোকের ছায়া বিরাজ করছে। রাখি কেঁদেকেটে অস্থির। ফাইজা চৌধুরী সেও কাঁদছে। তার নাতি কোথায় হারালো হুট করে? কার সাথে এতো শত্রুতা তার নাতির। এতো চুপচাপ গম্ভীর হয়েও এমন দশা হলো। যদি তেজী হতো তখন? কখনো কারোর সাথে তর্কে জড়ায়নি না কারোর চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলেছে রুদ্র।

মেঘের কলেজ যেতে মন সায় দিচ্ছে না। সকাল,সকাল এতো খারাপ একটা সংবাদ শুনে চোখের পানি আটকে রাখতে পারেনি। পারবে কীভাবে? রাখি তো এই বাড়ী থেকে কেঁদেকেটে গেছে। মেঘ আড়ালে নিজেও চোখের পানি ফেলেছে। ইশশ গতকালকে তো রুদ্র ডায়েরিটা নিলো। সে তো খুব করে চাইলো রুদ্র ডায়েরি না পড়ুক। না পড়ার উসিলাটা বুঝি এই! রুদ্র ভ্যানিশ।
মেঘের সব এলোমেলো লাগছে। রুদ্র কোথায় হারালো? আসলে রুদ্র তার ভাগ্যে নেই! সেজন্য এতো ঝড়ঝাপটা। মায়া,মোহনা রেডি হয়ে নিয়েছে। তারা কলেজ যাবে। মেঘ যাবেনা মাথা ব্যথার উসিলা দিয়েছে। কেউই আর জোর করেনি।

মহীউদ্দীন তালুকদার রেডি হয়ে নিয়েছে। চৌধুরী বাড়ীতে যাবে। আজিয়া বেগম সাথে আফরোজা বেগম ও রেডি হয়ে নিয়েছে। আগে চৌধুরী বাড়ীতে যাবে সময় থাকলে মির্জা বাড়ীতে যাবে। প্রয়োজনে বিকেলে যাবে।

মেঘ একা বাসায়। কতদিন পর এমন একটা মূহুর্ত ফেলো সে। একা,একা বাসায় থাকবে নিজের যত দুঃখ, কষ্ট আছে আজকে ধুয়ে মুছে নিবে।

****

রুদ্রকে নিয়ে হসপিটালের উদ্দেশ্য রওনা দিয়েছে জিয়াউর রহমান সাথে আছে আনায়া। সকালে নাস্তা করে তারা বেড়িয়েছে। অবশ্য জিয়াউর রহমানকে চিনতে ভুল হয়নি রুদ্রর। তার মামা হয়।

নির্দিষ্ট সময় তারা হসপিটালে আসে। নিবরাসের সাথে রুদ্রর কথা হয়। কিছু পরীক্ষা, সাথে মাথা সিটি স্ক্যান করে নেয়। মেডিসিন নিয়ে দুপুর দেড়টার দিকে রওনা হয় বাড়ীর উদ্দেশ্য। রুদ্রর হুট করে মনে পড়ে ডায়েরির কথা। কিন্তু সেটা কোথায় জানা নেই! আদৌ পাবে তো ডায়েরিটা? এটা তো মেঘের পার্সোনাল ডায়েরি। এখন কী জবাব দেবে রুদ্র? যন্ত্রণায় মাথা ছিঁড়ে যাচ্ছে তার। এরই মাঝে পেছন থেকে আনায়া চেঁচিয়ে বলে,

-বাবা গাড়ী থামাও। আইসক্রিম নেও আগে।

জিয়াউর রহমান গাড়ী থামিয়ে নেমে পড়ে। রুদ্র বিরক্ত হয় আনায়ার প্রতি। ধমকের স্বরে বলে,

-গলার আওয়াজ এতো বেশী কেন? দেখছেন রোগী বসে আছে তার মাথায় প্রব্লেম তাও চেঁচামেচি করছেন?

-তো আপনার জন্য আমি আইসক্রিম মিস দেবো? এই কানের মধ্যে তুলো দিয়ে বসে থাকুন তাহলে আমার গলা আর আপনায় শুনতে হবে না।

-আমার ঠেকা পড়েছে তো।

-তাহলে কী আমার ঠেকা পড়েছে?

-না,না কারোরই ঠেকা পড়েনি। কীসব ডিজগাস্টিং মানুষ সাথে করে নিয়ে আসে মামু। যারা মেনার্স তো শিখেনি এমনকি নূন্যতম সেন্স টুকুও নেই।

-আমার সেন্স নেই?

-তা নয়তো কী? আজা ইরা কোথাকার।

আনায়া কথা বাড়ায়নি। জারিফ এতো তেতো কেন? অপমান করতে গেলে এক অক্ষর ও ছাড় দেয়না। এই করলার জুশকে কে বিয়ে করবে? অবশ্য আমার কী? ওকে কেউ বিয়ে করুক নাহয় তজাহান্নামে যাক। এর কপালে মেয়ে জুটবে কীনা সন্দেহ। যেই ঘ্যানঘ্যান করে।

#চলবে