#বিনিদ্র_রজনী
#পর্ব_১৩
#মুমতাহিনা_তারিন
,,,তুলিকে একটা দোকানে ফ্যানের নিচে বসিয়ে রেখে সারা বাজার ঘুরে ঘুরে নিলয় বাজার করেছে । প্রায় দুইঘন্টা ধরে বেছে খুঁটে বাজার করেছে নিলয় ,,,সব কিছু পারফেক্টলি করার চেষ্টা সবসময় তার । নীলচে রঙের শার্ট শরীরের ঘামে ভিজে গেছে ,,,কপালে জমেছে বিন্দু বিন্দু জল নিলয়ের কালো চোখে তাও কোনো ক্লান্তির ছাপ দেখতে পেল না তুলি ।তুলির দিকে তাকিয়ে হালকা হাসলো নিলয় দুই হাতে বাজারের ব্যাগ ।
” উঠ সামনে রিকশা দাড় করিয়ে রেখেছি ”
” ওহ চলো”
_______________
শাপলা বেগম টক বানাচ্ছে ,,,নিলয় আসার সময় তুলির জন্য ফুচকা কিনে এনেছিল। সেগুলো আগে ভাগেই ভেজে রেখেছে শাপলা বেগম।বাইরে কেমন করে বানায় তার থেকে ভালো বাড়ি বানিয়ে খাওয়া । তুলি গোসল করতে গিয়েছে আর নিলয় নিজের বাসায় ফ্রেশ হতে গিয়েছে ।
হঠাৎ কলিং বেলার আওয়াজে বিরক্ত হলো শাপলা বেগম । তবে নিলয় এসেছে ভেবে আর বিরক্তি রাখতে পারলো না দ্রুত পা চালিয়ে দরজা খুলে দিল ।
মুখ থেকে অস্ফুট স্বরে বেরিয়ে আসলো –
“তুমি!”
নিজের অবাক হাওয়া ভাবটা কিছুটা গিলে নিলো শাপলা বেগম । মেকি হেসে বললো ,,,
” ভিতরে আসো ,,,,”
আদনান লজ্জমিসৃত হাসলো ,,,কুশল বিনিময় শেষ করেই ঘরে প্রবেশ করলো । ছোটো ঘরে সংকীর্ণ ড্রয়িং রুম তাতে ছোটো ছোটো সোফা রাখা । এতোদিন পর শাপলা বেগমের সাথে দেখা কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না আদনান । এই মহিলাটা বিয়ের প্রথম দিকে কত বার কল দিয়ে একবার আসতে বলতো ঘুরে যেতে বলতো কিন্তু সেসব কানে দিত না আদনান । গ্রামের কাচা রাস্তা তারপর তুলিদের বাড়িতে কমফোর্ট ফিল হতো না আদনানের ।
গোসল সেরে টেবিলের পাশে রাখা ছোটো আয়নায় চোখ রেখে লম্বা ঘন চুলগুলো আঁচড়ে নিচ্ছে তুলি । বাইরে কথোকথনের শব্দ শুনেও তাতে তার হেলদোল নেই । নিশ্চয় নিলয় এসেছে ,,,,মিন মিন করে আদনান কথা বলাই সঠিক ভাবে কণ্ঠ সনাক্ত করতে পারেনি তুলি । চুল আঁচড়ে ফুলে উঠা পেটে একটু তেল মালিশ করলো ,,,কিছুদিন যাবত উপর দিয়ে চুলকাচ্ছে ,,,। আর মাঝে মাঝে লাথি তো আছেই ,,,যখন লাথি দেয় তুলির দম বন্ধ হয়ে আসে চোখে পানি জমে ,,,ভারী শরীর নিয়ে হাঁটতে চলতে সমস্যা হয় ,,ঠিক মত শুয়ে থাকতে পারে না ,,আরাম করে বসতে ও কষ্ট হয় ,,,এতো কষ্টের ফল একটা ছোটো প্রাণ পৃথিবীতে আনা।
ধিরপায়ে হেঁটে ঘরের ছিটকিনি খুলে বাইরে আসলো তুলি । সোফার দিকে নজর যেতেই আদনানকে দেখে তুলি থমকে দাড়ালো ।
গায়ে ঢিলাঢালা মেক্সি পরা ,,মুখের উজ্জ্বলতা কয়েকগুণ বেড়ে গেছে তুলির ,,অনেক কিউট লাগছে দেখতে চুল থেকে বেয়ে পড়ছে স্বচ্ছ জলের ধারা ,,ভিজিয়ে দিয়েছে গলার কিছু অংশ । মুগ্ধ দৃষ্টিতে দেখছে আদনান চোখের পলক পড়ছে না ,,,কত টা দিন পর সেই পরিচিত মুখ দেখতে পেলো! তৃষ্ণার্ত চোখ জোড়া আজকে তৃপ্তি পেলো । এক মাস ,,দুই মাস ,,তিন মাস কতদিন পর তুলির দেখা যেই মেয়েটা সারাদিন চুপি চুপি তাকে দেখার জন্য বিভিন্ন মিথ্যে অজুহাত দিয়ে ঘরে আসত সেই মেয়েটাকে দেখার মধ্যে এতো ভালো লাগা আছে আজকে উপলব্ধি করতে পারলো আদনান ।
নিজের প্রথম ভালোবাসা কি ভোলা সম্ভব? যাকে পাওয়ার জন্য মানুষের কাছে পাওয়া শত অপমান সহ্য করে মাটি আকড়ে পড়ে ছিল সে আজকে তার দুয়ারে! কেনো কি দরকার তার! বুকটা ধুক ধুক করছে তুলির সেই ধারা আরো বাড়িয়ে দিয়ে আদনান তুলির সামনে দাড়ালো । তুলি স্থির,,,নিজেকে হাজার বুঝিয়ে সুঝিয়ে কিছু বলতে আরম্ভ করবে তার আগেই ,,,আদনান তুলির হাত দুটো আলতো করে ধরলো চোখে চোখ রেখে একটা বড় নিশ্বাস নিয়ে বললো –
” আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি ,,,তুমি কি আমাকে ভালবাসবে?আবার নতুন করে সব শুরু করবে?কারোর জন্য না হোক নিজের সন্তানের জন্য? আমি অনেক কষ্টে আছি তুলি আমি ভালো নেই তোমাকে ছাড়া তুমি ফিরে চলো প্লীজ। পৃথিবীর যত সুখ আছে সব সুখ তোমাকে এনে দেবো আমি আমাকে একটু জায়গা দাও তোমারে জীবনে”
কথা শেষ হতেই চোখ থেকে দুফোঁটা জল গড়িয়ে পড়ল আদনানের । তুলির অবাক চোখ গুলো বিস্মিত হয়ে আদনানকে দেখছে সব যেনো স্বপ্নের মত মনে হচ্ছে তার কাছে…শাপলা বেগমের দিকে একবার তাকিয়ে আবারও আদনানের দিকে দৃষ্টি স্থির করলো তুলি । আদনান এর হাত থেকে নিজের হাতটা ছড়িয়ে নিলো ,, দুই পা পিছিয়ে চোখে টলমল করা পানিটুকু পড়ার আগেই মুছে নিল । চোখে ভেসে উঠলো সেইদিনের করা অপমান,,মানুষের চোখে তার জন্য থাকা ঘৃণা আর তাচ্ছিল্য ,,, লজ্জা অপমানে অর্ধেক মরেই গিয়েছিল তুলি একমাত্র রাহেলা ছাড়া কেউ তো ছিল না তার সাথে । অরোরা কে বিশ্বাস করে কি দারুন ভাবে ঠকে গিয়েছিল তুলি কিন্তু কিভাবে কি করেছে তারা সেটা আজও অজানা ,,জানার আগ্রহ বিন্দুমাত্র নেই ।
” একজন দুশ্চরিত্রা মেয়ের কাছে আসতে আপনার লজ্জা লাগলো না?”
তুলির মুখে বিষাদের ছাপ স্পষ্ট । ব্যাথাতুর কন্ঠ তার ,,,তুলির এমন কথায় ব্যাস্ত হয়ে পড়ল আদনান ,, হড়বড় করে বললো –
” আমি জানি তুমি কিছু করো নি,,,”
চোখের কোনে জমে উঠেছে আবার ও জল ,,,মুখ ঘুরিয়ে জানালার দিকে তাকালো তুলি ,,সে চায়না আদনান তার চোখের জল দেখে আবার তাকে দুর্বল ভাবুক,,,ভাবুক সে ফিরে যাবে,,,
” তার মানে আগে ও জানতেন? নাকি কিছুদিন আগে জানলেন?”
” তুমি ভুল বুঝছো তুলি ,,,,আমি জানি আমি তোমার সাথে অন্যায় করেছি আমি চাইলেই সেইদিন সবার থেকে তোমাকে সেভ করতে পারতাম কিন্তু আমি করি নি ।আমি মানছি আমি ভুল ছিলাম আমাকে একটা সুযোগ দাও আমি সব ঠিক করে দেবো। আমাকে মাফ করে দাও তুলি ,,,”
তাচ্ছিল্য হাসলো তুলি মাফ করার কথা শুনে ,,,, গলায় থাকা উড়নার এক কোনা দিয়ে চল দিয়ে বেয়ে পড়ার অশ্রুর ধারা মুছে ফেললো,,ঘুরে দাড়ালো তুলি ,,,
” মাফ চাচ্ছেন! মাফ করে দেবো যদি আমার হারানো সম্মান ফিরিয়ে এনে দিতে পারেন,,সেই মুহূর্ত যেই মুহূর্তে আদুরী আপু আমার গালে সপাটে চড় দিয়ে বিশ্রী ভাবে আমাকে অপমান করেছিল সেই মুহূর্ত আমাকে ফিরিয়ে দিতে পারেন,,,আপনার ভাবি চাচী যখন আমার চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলছিলো তখনকার সময় ফিরিয়ে দেন ,,,জানেন আমার মধ্যে খুব আক্ষেপ থেকে গিয়েছে সেদিন আমি কেনো চুপ ছিলাম!!! কেনো সবার সামনে খুলে দিতে পারিনি আপনাদের ভদ্র বেশে থাকা নোংরা মুখ যা আপনারা লুকিয়ে রাখেন”
,,নিলয় ফ্রেশ হয়ে জামা কাপড় চেঞ্জ করে নিয়েছে,,মনে হচ্ছে জ্বর হবে তাই আর গোসল করেনি । এই অসময়ে জ্বর বাঁধলে কেউ দেখার নেই । বাসায় টাকা পাঠাতে হবে ,,আম্মুর জন্য কতকরে বলেছে তার সাথে এইখানে চলে আসতে রাজি হয়নি তার আম্মু । ঘর থেকে বের হয়ে তুলিদের ঘরের সামনে দাড়াতে তুলির কন্ঠ শুনতে পেলো ,,,অনেক রাগী রাগী ভাব কণ্ঠে ,,,দেরি না করে দরজায় টোকা দিতেই দরজা খুলে গেলো ভিতরে প্রবেশ করে দরজা আটকে দিয়ে শাপলা বেগমের পাশে দাঁড়ালো নিলয় । ও কিছু বুঝতে ঊঠতে পারছে না ,,,দরজা আটকানোর শব্দ কারোর কানে যায়নি ,,
আদনান তুলির দিকে চেয়ে আছে তাই নিলয় আদনানের মুখ দেখতে পাই নি ,,,
কারোর পায়ের শব্দ শুনে পাশে তাকালো শাপলা বেগম ,,নিলয় জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে নিয়ে শাপলা বেগমের দিকে তাকিয়ে আছে ,,,কোনো কথা না বলে চোখের ইশারায় রান্না ঘরে আসতে বললো শাপলা বেগম ।নিলয় রান্না ঘরে চলে গেল সাথে গেলো,,
” কাকিমা কে ওই লোক?”
শাপলা বেগম কণ্ঠ খাদে নামিয়ে সব কিছু বললো নিলয়কে ।
” এখন কি করবে তুলি?”
” কি জানি বাবা ,,,ওর জীবন আরো একটা বাচ্চার জীবন ও আর সাথে জড়িয়ে আছে তবে আমি তুলিকে কোনকিছুতে চাপ দেবো না ওর জীবন ওকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে কি করবে না করবে ”
” হুম”
______________________
,,,তখন হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিল অত মানসিক চাপ নিতে পারেনি শরীর ,,অতিরিক্ত উত্তেজিত হয়ে যাওয়ার ফলস্বরূপ ঢলে পড়েছিল আদনানের বুকে ,,,তারপর ডাক্তার ডেকে আনলে ডাক্তার তুলিকে মানসিক চাপ নিতে বারণ করেছে ,,, খুব বেশিদিন নেই ডেলিভারির ।
তুলির হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে যাওয়ায় ঘাবড়ে গিয়েছিল আদনান । নিলয়কে দেখে অবাক হলেও কিছু বলেনি আদনান ,,,আর নিলয় কিছু শোনার অথবা বলার সুযোগ পায়নি ,,তুলির অবস্থা নিয়ে সবাই তখন ব্যাস্ত হয়ে পড়েছিল। তুলিকে শুয়ে দিয়ে তুলির হাত চেপে ধরে রেখেছিল আদনান আজকে ওর শান্তির ঘুম হবে ,,,তুলিকে দেখে বুকে জ্বলে থাকা আগুন যেনো নিভে গিয়েছে । ওর বিশ্বাস তুলি ওর সাথে যাবে ,,,না গেলে যত কিছু করতে হয় আদনান করবে যদি সারাদিন তুলির বাড়ির সামনে দাড়িয়ে ও থাকতে হয় তাতে আদনান কষ্ট বোধ করবে না । নিজের সন্তান আর ভালোবাসার মানুষের জন্য সবটুকু করবে ,,,অতীত ভেবে আর বর্তমানকে নষ্ট করার মানে নেই যা করেছে সেটা ঠিক করা সম্ভব নয় কিন্তু পরে যা করবে সেইটা ওর কাছে সম্ভব ,,, নতুন ভাবে অনুপ্রেরণা পেলো আদনান । অনেক মন চাইলো একবার তুলির পেটে হাত দিয়ে নিজের অনাগত সন্তানকে অনুভব করতে । কিন্তু শাপলা বেগম আর নিলয়ের উপস্থিতি অনেক অস্বস্তিতে ফেলছে আদনানকে ।
নিলয়ের ফোন অনেক কর্কশ শব্দ করে বেজে উঠলো ,,নিজের মায়ের নম্বর দেখে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো নিলয় হাতের ইশারায় বুঝিয়ে গেলো একটু পর আসছে ,,,এই সুযোগটা কাজে লাগালো আদনান শাপলা বেগমের দিকে তাকিয়ে ইতস্তত ভাব মুখে ফুটিয়ে তুললো –
” আম্মু এক গ্লাস পানি হবে ”
আদনান মুখে আম্মু ডাক শুনে চোখ বড় বড় হয়ে গেলো শাপলা বেগমের । জগে পানি আছে তাও বাইরে গেলো পানি আনতে । দুএকবার উকিঝুকি মেরে শাপলা বেগম চলে গেছে কিনা নিশ্চিত হয়ে পেটে আলতো হাত রাখলো আদনান । এক অন্যরকম অনুভূতি তাকে ঘিরে ধরলো ,,,কি অসাধারণ অনুভূতি সেটা হয়তো ভাষায় বোঝানো যাবে না । বুকটা হু হূ করে উঠলো আদনানের মনে হলে জোরে জোরে কান্নাকাটি করে দিতে ,,মন চাইলো একটু তুলিকে জড়িয়ে ধরে ধন্যবাদ বলতে,, অন্যকোনো মেয়ে হলে হয়তো নিজের ভবিষ্যতের কথা ভেবে বাচ্চা নষ্ট করে ফেলত কিন্তু তুলি সেটা করেনি ,,,তার রক্ত প্রবাহিত হতে দিয়েছে একটা ছোট্ট শরীরে তুলিকে জড়িয়ে ধরে বুকের ভিতর লুকিয়ে ফেলতে ইচ্ছা হলো আদনানের। বসা থেকে উঠে তুলির পেটে চুমু দিল আদনান চোখ থেকে পানি গড়িয়ে পড়ছে তার । অনেক চেষ্টা করছে নিজেকে আটকিয়ে রাখতে অশ্রু না ফেলতে কিন্তু কিছুতেই বাধ মানছে না চোখ দুটো ,,,মানুষ কি বলবে ছেলে মানুষকে এইভাবে কাদতে দেখলে! তুলির পেটে মাথা রেখে হৃদস্পন্দন শোনার চেষ্টা করলো ,,,কিন্তু সেটা কি সম্ভব নাকি !! মাথা উঠিয়ে আরেকটা চুমু দিল পেটে ,,বির বির করে বলে উঠল
” আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসবো ,,,আমার মত শৈশব তোমাকে দেবো না ,,একজন আদর্শ বাবা হয়ে থাকবো দেখো !আমি জানি তুমি রেগে আছো কিন্তু আমি এসে গেছি না আর চিন্তা নেই ”
বাইরে থেকে কারোর আসার শব্দ পেয়ে তাড়াতাড়ী উঠে বসলো আদনান । বাইরে দিকে তাকিয়ে পর্যবেক্ষণ করে জলদি তুলির কপালে একটা চুমু দিয়ে দিলো ,,,
আদনান যখন তুলির পেটে হাত বুলাচ্ছিল তখনই শাপলা বেগম চলে এসেছিলেন কিন্তু আদনানকে ওমন অবস্থায় দেখে মায়া হলো তার। একটু সময় দেওয়ার জন্য দরজা থেকে সরে দারিয়ে ছিলেন শাপলা বেগম । নিলয় সদর দরজা দিয়ে ঘরে আসার আগেই তাড়াতাড়ী করে তার কাছে গিয়ে তুলির জন্য প্রেসক্রাইব করা কয়টা ওষুধ আনতে বলে দিয়েছিলেন ,,,যাতে আদনান একটু সময় পায় ।
_____________________
আদনান চলে গিয়েছে,,, বিকেল থেকে সন্ধ্যা নেমে গিয়েছে রান্নাঘরে যেমন চাইলো তেমন ভাবেই পড়ে রয়েছে । নিলয় তুলির শিয়রে বসে আছে কপালে চিন্তার ছাপ,, পিট পিট করে চোখ মেলে চাইলো তুলি … তুলিকে চোখ খুলতে দেখে হালকা হাসলো নিলয় ,,,
চলবে,,,,