বিষাদ বৃক্ষ পর্ব-১০

0
129

#বিষাদ_বৃক্ষ
#নূপুর_ইসলাম
#পর্ব- ১০

বিথী বিরক্ত মুখে দু- হাত কোমরে রেখে মিথির দিকে তাকালো। মিথি অবশ্য তার বিরক্তির ধারও ধরল না। সে লাল পাইপ আইসক্রিম কিনেছে। সেটাকেই এখন মনের সুখে দু- হাতে ঘষে ঘষে পানি বানাচ্ছে। পানি বানিয়ে এককোণা ছোট ছিদ্র করে মজা করে খাবে। কি খারাপ অভ্যাস। সে বিরক্ত মুখেই বলল, তোর ঘষা ঘষি শেষ হয়েছে?

মিথিও সমান তালে বলল, – আমার ঘষা ঘষিতে তোর সমস্যা কি? তোর কাজ তুই কর না।

— সেটাই তো করতে পারছি না। তোরে লাগবো!এদিকে আয়।

— আমি তোর মতো শাকচুন্নিরে সাহায্য করি না। যা ভাগ।

— মিথির বাচ্ছা মেজাজ গরম করবি না।

— করলে কি করবি? আমি তোর বাপ, চাচা, নাকি ভাই। যে দুইয়ে দুইয়ে মেজাজ ঠান্ডা করব ?

বিথী রাগে ঠোঁটে ঠোঁট চাপলো। চেপে আবার গাছের দিকে তাকালো। তারা আছে তাদের বাইর বাড়িতে। এখানে তাদের দুনিয়ার গাছগাছালি। বিথীর কয়েকটা কাঁচা আম লাগবে। এই শেষ বিকেলে তার মা গাছে হাত দেওয়া পছন্দ করে না। তা না হলে রমিজ ভাইকে বললেই ব্যবস্থা হয়ে যেত। সেই উপায় নেই, তাই নিজেই চেষ্টা করছে। সব গাছ বড় বড়। তাই লাগর পাচ্ছে না। তখনি কারো গলা খাঁকারিতে সে ফিরে তাকালো।

জহির ভাই দাঁড়িয়ে আছে। জহির ভাই তাদের গ্রামের চেয়ারম্যান চাচার ছেলে। তাদের বাড়ির দু- বাড়ি পরেই বাড়ি। আসতে যেতে চেহেরা দেখতে হয়। দেখতে মানে বেশিই দেখতে হয়। এই যেমন স্কুল শেষে মোল্লা কাকার চায়ের দোকানে। বাড়িতে থাকলে বাড়ির আশে পাশে। কোথাও গেলে সাইকেল নিয়ে টুং টাং করতে করতে পেছনে।

আর তাই দেখলেই বিথীর মেজাজ খারাপ হয়। কেননা যখনি দেখা হয় লাইন মারার চেষ্টা করে। করুক! তাতে সমস্যা নাই। কিন্তু সমস্যা হলো লাইনটা মারছে কার সাথে বুঝা যায় না। তার সাথে না মিথির সাথে। দু- জনের সাথেই গলে গলে পড়ে।

সে বিরক্ত মুখে বলল, — গলার ভেতরে হাতি ঢুকছে?

জহির হাসলো! হেসে বলল,– কি করছিস?

— সাতার কাটি। চারিদিকে এতো সুন্দর পানি। লোভ সামলিয়ে রাখি কেমনে। তাই এই ভর সন্ধ্যায় নেমে পড়লাম।

— ভালো হবি না তুই বলেই মিথির দিকে তাকালো। তার ঘষা ঘষি শেষ হয়েছে। সে এখন এক মাথা কৌশলে ছিদ্র করতে ব্যস্ত।

তার দিকে তাকিয়ে জহির বলল, – ভালো আছ মিথি?

মিথি কোন উত্তর দিলো না। সে আইসক্রিম মুখে নিয়েই এই সাইডে ঐ সাইডে মুখ বাঁকালো।

জহির দীর্ঘশ্বাস ফেললো! ফেলে বলল, — দে আমি পেরে দেই।

বিথী সাথে সাথেই লাঠি ধরিয়ে দিলো। এমনিতেও লাঠি দিয়ে খোঁটাখুঁটি করতে করতে তার হাতের বারোটা বেজে গেছে।

জহির লাঠি নিলো। আম পাড়তে পাড়তে বলল, — আজ স্কুলে যাসনি কেন?

বিথী মুখ বাঁকালো! সে আর মিথি এবার ক্লাস টেনে। নামের মাত্র পড়া। পড়ালেখার পও এদের ভালো লাগে না। শুধু বাপ, ভাইদের জন্য যাওয়া। ইচ্ছে হলে স্কুলে যায়, না হলে নেই। হাই স্কুল দু- তিন গ্রাম পরে। রমিজ ভাইয়ের দায়িত্ব তাদের নিয়ে যাওয়া নিয়ে আসা। অবশ্য এই দায়িত্ব সে খুব কম সময়ই পায় পালন করতে। কেননা বেশিভাগ সময়’ই তারা বাড়িতে। মুর্শিদা অবশ্য এসব ব্যাপারে কখনো কিছু বলে না। সেই ব্যস্ত আছে ছেলে খুঁজতে। বাপ, দাদার নাম আছে বলে গায়ের রং কালো হলেও সম্বন্ধ আসে ভালো ভালে ঘর থেকে। ব্যস এখন চার তিথি মিললেই বিয়ের সানাই শুরু।

সে মুখ বাঁকিয়েই বলল, — আপনার কাছে কৈফিয়ত দিতে হবে নাকি?

— দিলে সমস্যা কি?

— ওরে বাবারে! হন টা কে আপনি শুনি?

— সেটা তুই ঠিক কর তাহলেই তো হয়ে যায়।

— সেটার জন্য আপনার একটু অপেক্ষা করতে হবে। কেননা মিথির চেয়ে আমি মাস দেড়েকের বড়। তাই বিয়ে হলে হবে আমার আগে। তাই আপনার এই মাস দেড়েকের বড় আপার জন্য আরেকটু ধৈর্য্য ধরেন।

জহির হেসে ফেললো! হেসে মিথির দিকে তাকালো। সে এখন ব্যস্ত তার জিহ্বা নিয়ে। লাল রঙের আইসক্রিম খেয়েছে। জিহ্বা লাল কতটুকু হয়েছে দেখার চেষ্টা করছে।

সে হেসে প্রায় ফিসফিস করে বলল,– বড় আপা হবি কেন রে গাধী? বউ হয়ে যা।

বিথী অবশ্য শুনল না। বেশ কয়েকটা আম পড়েছে। সে সেগুলো কুড়াতে লাগলো। জহির কিছুক্ষণ নিশ্চুপ সেই দিকে তাকিয়ে রইল। তারপর বলল,

— আরো লাগবে?
— না।
— আজাদ ভাই নাকি বিয়ে করে বউ নিয়ে এসেছে?
— হ্যাঁ।
— হঠাৎ?

বিথী আম কুড়িয়ে ভ্রু কুঁচকে তাকালো। তাকিয়ে বলল, — আমার ভাই হঠাৎ করুক আর দশ গ্রাম জানিয়ে করুক তাতে আপনার কি?

— না এমনিই।

বিথী ভেংচি কাটলো। কেটে চলে যেতে নিলো। জহির ডাকলো।
— বিথী?

বিথী দাঁড়ালো না। যেতে যেতে পেছনে ফিরে একটা আম ছুড়ে মারলো। জহির সাথে সাথে ক্যাচ করে ধরল। ধরতেই মিথি এগিয়ে এলো। মুখকে এই প্রান্ত থেকে ঐ প্রান্ত বাঁকিয়ে বলল, — আপনার কলিজার তারিফ না করে পারছি না জহির ভাই। অবশ্য কলিজা বললেও কম হয়ে যাবে। পাটা, পাটা! বুকের পাটা। একেবারে পা থেকে গলা পর্যন্ত আপনার বুকের পাটা।

জহির হাসলো! দুটোর’ই নাট – বল্টু ঢিলা। সে হেসেই বলল — কেন?

— আমরা বিষধর সাপ দেখলে দৌড়ে পালাই। আপনি গলায় পেঁচানের জন্য ওত পেতে বসে আছেন, তাই।

জহির বড় একটা শ্বাস ফেলে বলল, — তোর মাথায় যতটুকু বুদ্ধি তার সিকিভাগ তোর মাস দেড়েকের বড় বোনের মাথায় থাকলে আমার খুব সুবিধা হতো।

— ইশ! এসেছে আমার সুবিধাবাদী। আল্লাহ এতো বড় কলিজা দিছে। মুখ দিতে ভুলে গেছে নি?

— সেই সুযোগ কই?

মিথি জহিরের হাত থেকে আম টেনে নিলো। নিয়ে মুখ বাঁকিয়ে যেকে যেতে বলল, — ছ্যাঁকা খাবেন গো জহির ভাই। বিরাট সাইজের একটা ছ্যাঁকা খাবেন। ছেলে খোঁজা হচ্ছে। সুযোগ – টুযোগ সাইডে রেখে বাপেরে গিয়ে ধরেন। তা না হলে পাখি ফুরুৎ। এ পাখি প্রেমে মজবে না।

আনতারা রাতে ভাত খেলো এই এতটুকু। জ্বর গেলেও মুখে স্বাদ নেই। তাছাড়া ইচ্ছেও নেই। তার খাওয়া দেখে মুর্শিদা ধমকে বলল, — ভাত না খাইলে শক্তি পাইবা কই থিকা। বেশি কইরা ভাত নেও। নাকি আমেনার মতো সারা জীবন কুঁকাইতে কুঁকাইতে যাইতে চাও?

আনতারা কিছু বলল না। শবনম আস্তে করে বলল, — থাক মা। সবে জ্বর গেছে তো। ধীরে ধীরে খেতে পারব।

মুর্শিদা বিরক্ত মুখে তাকালো। এই বাড়িতে খাবার বৈঠক বসে দু- বার। একবার ছেলেরা তারপরে মেয়েরা। এখন বলতে গেলে সব মেয়েরাই খাবার ঘরে। শবনমের কথা শুনে বিথী তেজের সাথে বলল — তুমি এতো পটরপটর করো ক্যা। মায় তুমারে কিছু বলছে? নাকি জালের জন্য দরদ বাইয়া ছাইয়া পড়তাছে।

শবনম দীর্ঘশ্বাস ফেললো! তবে আর কিছু বলল না। তার খাওয়া শেষ। সে সব কিছু গোছাবে তখনি আসাদের গলা পাওয়া গেলো। রুমের জগে পানি নেই। সে দৌড়ে গেল। এই লোক যতক্ষণ বাড়িতে থাকে শবনমের দৌড়াতে দৌড়াতে জান বের হয়ে যায়।

মুর্শিদা বিরক্ত মুখ নিয়েই খাবারে মন দিলো। একটা বউও যদি মনের মতো আসে। এজন্যই বলে জাতের মেয়ে কালোও ভালো। তারা দেখছে রুপ। গুণ আর থাকবো কই থিকা। জামাই আহনের আগে কি কি লাগবো, সব গুছাইয়া রাখবো তা না। দিনভরে টই টই করে শুধু ঘোরা। আর আমাগো শাশুড়ি রাত ছাড়া চুলার কাছ থেকে উঠতে দিত না। তবুও মুখ ফোটনের আগে সব হাজির করতাম। আর এরা এত আরাম আয়েশ কইরাও জামাইয়ের খেদমত করার সময় পায় না।

আনতারা খাবার পর রুমের দরজার সামনে এসে দাঁড়ালো। সন্ধ্যার পর আজাদ এসেছে। তখন সে রুমে ছিল না। এই বাড়িতে বসার ঘরে সাদা কালো টিভি আছে। সন্ধ্যায় পরে প্রায় সব মেয়েরাই সেই ঘরে থাকে। শবনম ভাবি তাকেও নিয়ে গিয়েছে। খাবারের আগ পর্যন্ত সে সেই ঘরেই ছিল।

এখন আনতারা কি করবে বুঝতে পারল না। সে সেভাবেই কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে রইল। দরজাটা চাপানো। সে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে আস্তে করে দরজায় হাত রাখলো। রাখতেই দরজা খুললো। আজাদ চেয়ারে বসা। টেবিল দিকে ঝুঁকে কিছু একটা হিসেব করছে। আর এই হিসেবের জন্যই চেয়ার টেবিলের সব কাপড়ের স্তুপ এখন খাটের কোনায়। সে জড়সড় ভাবেই ভেতরে পা রাখলো। রাখতেই আজাদ স্বাভাবিক ভাবে বলল, — জ্বর আর এসেছে?

আনতারা বোকার মতো দু- পাশে মাথা নাড়লো। আজাদ তার দিকে ফিরেনি। তার মাথা নাড়ানো কিভাবে দেখবে তার মাথাও আসে নি।

— খাটের ওখানে ঔষুধ আছে। তোমার গুলোর সাথে এগুলোও খাও। আশা করি আর আসবে না।

আনতারা বোকার মতো এবারো মাথা কাত করল। আজাদ আর কিছু বলল না। আনতারা কি করবে বুঝতে পারল না। সে যেভাবে ছিল, সে ভাবেই দাঁড়িয়ে রইল।

কিছুক্ষণ পরে আজাদ ঘুরে তাকালো। আনতারার নিশ্বাস বন্ধ হয়ে এলো। বিয়ের দিন রাতে মহুয়া চাচি মাথায় হাত বুলিয়ে বলেছে, — শ্বশুর বাড়িতে মেয়েরা চারাগাছের মতো। সেখানে শাশুড়ি, ননদ, জা, সবাই বাতাস, বৃষ্টি, রোদের মতো। কখনও খারাপ, কখনও ভালো। কিন্ত স্বামী সে হলো শক্ত খুঁটি। সেই খুঁটিকেই আঁকড়ে ধরতে হয়। তাকে যদি ভালো ভাবে আঁকড়ে ধরতে পারো তখন যতই বাতাস, বৃষ্টি, রোদের তাপ হোক। সব অনায়াসেই উতরে যায়। তাই স্বামী যেভাবে বলে সেই ভাবেই চইলো। আর শাশুড়ি তার সাথে কখনও বেয়াদবি কইরো না। স্বামী স্ত্রীর জন্য শক্ত খুঁটি হলেও, মা তার জমিন । তাই খুঁটি যত শক্তই হোক চারা গাছ চারা গাছই। যে কোন সময় সেই জমিন থেকে টেনে উপড়ে ফেলা যায়। তবে যেই পর্যন্ত মাটির নিচের শেকড় শক্ত আর উপরে লাগর না পাওয়া পর্যন্ত উঁচু হয়। সেই পর্যন্ত মা সব মাইনা চাইলো। একবার শক্ত হইয়া গেলেই তখন কেউ চাইলেই আর টেনে উপড়ে ফেলতে পারবো না। ফেলতে গেলেও দশবার ভাবতে হইবো। তাই সেই সময় না আসা পর্যন্ত স্বামী, শাশুড়ির মনের মতো চলার চেষ্টা কইরো মা। মনে কইরো না তোমার কেউ নাই বলে এ কথা বলতাছি। আসলে প্রত্যেক মেয়েদেরই জীবনই এমন। তাদের নিজের বলে কিছু নাই। সারা জীবন অন্যের খাঁচায় পোষ মানাতে মানেতেই জীবন শেষ হইয়া যায়।

আজাদ কিছুক্ষণ সেই দম বন্ধ করে দাঁড়িয়ে থাকা আনতারার মুখের দিকে তাকিয়ে রইল। তাকিয়ে আগের মতোই বলল — তোমার আর কোন কাজ আছে?

আনতারা আবারো আস্তে করে দু- পাশে মাথা নাড়লো।

— তাহলে দাঁড়িয়ে আছো কেন? শুয়ে পড়। নাকি আশা করছ তোমার নানা ভাইয়ের মতো তোতা – ময়না করে মাথায় হাত বুলিয়ে তারপর ঘুম পাড়াবো।

আনতারা চোখ তুলে তাকালো। আজাদ মুখ বাঁকিয়ে হাসলো। আনতার সেই বাঁকা হাসিও দেখলো। তবে কিছু বলল না। সে খুবই শান্ত, শিষ্ট মেয়ে। রাগ জেদও কম। তবে এই লোকের কথা সাথে বাঁকা হাসি তার পছন্দ হলো না। সে এসবে অভ্যস্ত না। তবে সে এইটুকু বুঝল। এই লোক তাকে খুব তাড়াতাড়িই অভ্যস্ত করে ফেলবে।

সে চোখ ফিরিয়ে নিঃশব্দেই খাটের দিকে এগিয়ে গেল! কাপড়ের স্তুপ গুছিয়ে আলনায় রাখলো। খাট হালকা ঝড়লো। মশারি টানালো। নিঃশব্দ এই রুমে তার চুড়ির টু টাং শব্দ গানের মতো বাজতে লাগলো। আনতারা আর তাকায়নি। তাই সে জানেনা আজাদ আগের মতোই বসে আছে। আর দৃষ্টি তার দিকেই। সে মশারির ভেতরে যাবে তখনি আজাদ বলল, — মানছি হঠাৎ বিয়ে। চেনা নেই, জানা নেই। তো? স্বামী তো স্বামীই। সেই হিসেবে বলতে গেলে আজ আমাদের প্রথম রাত। প্রথম রাতে স্বামীকে পায়ে হাত দিয়ে সালাম করতে হয়। জানো না?

আনতারা ফিরে তাকালো! এখনো আজাদের ঠোঁটের কোণে আগের মতোই হাসি। সে সেই হাসির দিকে তাকিয়েই মশারির ভেতরে ঢুকলো। ঢুকে নিজের মতো হাত থেকে এক এক করে চুড়ি খুললো। অভ্যাস নেই তাই এগুলো পরে ঘুম আসবে না। সে খুলেই ওপাশ ফিরে শুয়ে পড়ল।

আর আজাদের ঠোঁটের কোণের হাসি, এখন ঠোঁট ছাড়িয়ে গেছে। সে সেই হাসি নিয়েই উঠল। বাতি নেভালো। নিভিয়ে মশারির ভেতরে গিয়ে খাটের আরেক পাশে নড়ে চড়ে প্রায় ভূমিকম্প তুলে শুতে শুতে বলল, — যাক নিশ্চিন্ত হলাম। আজাদেন পাঁজরের হাড় থেকেই আপনি তৈরি। আজাদই বাঁকা তার হাড় সোজা হবে কি করে?

আনতারা শুনল তবে টু শব্দও করল না। একই রুমে, একই খাটে অচেনা একটা মানুষের সাথে থাকা অন্তত তার জন্য চাট্টি খানি কথা না। তার গলা শুকিয়ে আসতে লাগলো।

চলবে……..