মায়াবতীর ইচ্ছা পর্ব-০৬

0
16

#মায়াবতীর_ইচ্ছা
#ইশরাত_জাহান
#পর্ব_৬
🦋
সাউন্ড বক্সে সফট গান চলছে।সেই সাথে নিজেকে সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলছে মায়া।গানের তালে তালে নিজেকে সাজাচ্ছে।নীল শাড়ি চোখে মোটা গাঢ় কাজল ঠোঁটে গাঢ় গোলাপি লিপস্টিক চুলগুলো কাধ অব্দি পাম্প করে রাখা।চুলের কিছু কিছু অংশ লাল কালার করা।এছাড়া মুখে আর কোনো এক্সট্রা মেকআপ দেয়নি।হাসি এসেছে মায়ার ঘরে।মায়ার পিছনে এসে দাঁড়ায়।

হাসিকে দেখে মায়া বলে,”আমাকে কেমন লাগছে হাসি?একদম পারফেক্ট লাগছে তো?”

“তোমাকে সব সময় সময় পারফেক্ট লাগে।আজকে একটু বেশি মায়াবতী লাগছে।”

“মায়াবতী! জানো হাসি আমাকে কাল একজন মায়াবতী বলে সম্মোধন করেছে।”

“তুমিও কি তার মায়াবতী নাম দেওয়া উপাধিতে মোহিত হয়েছো?”

মায়া তাকায় আয়নার দিকে।ভালো ভাবে দেখে নিজেকে। কাল থেকে তার নিজের ভিতরেও অনেক পরিবর্তন এসেছে।এই যে আজকে সে পারফেক্ট সাজতে চাইছে।কই এতদিন তো পারফেক্ট লাগার শখ বা ইচ্ছা হয়নি। এখন কেনো হচ্ছে এমন?সে কি তবে মন্ত্রী মশাইয়ের এক বানীতেই গভীর জলে ডুব দিলো।

মায়া নিজেকে ঠিক করে বলে,”কি যে বলো না তুমি!এক দেখায় কেউ ভালোবাসতে পারে নাকি?”

হাসি মায়ার কাছে এসে মায়াকে নিজের দিকে ফিরিয়ে বলে,”আপন মা না হলেও তোমার জীবনের দ্বিতীয় মা আমি।দুনিয়া তোমার আসল সত্যি নাই জানতে পারে তবে আমি জানি তোমার আসল সত্যিটা কি।জীবনে উদ্দেশ্য সফল করতে যেয়ে অনেক বাধা আসে ঠিক তেমনই আসে এক আগন্তুক।যে তোমার জীবনকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।সবার জীবনে এক সঙ্গীর প্রয়োজন।”

“কিন্তু হাসি লোকটিকে আমি তেমন ভালো করে চিনি না।যদি মায়ের মত আমার জীবনও…”

বাকিটা বলার আগে হাসি বলে,”তোমার মা নরম মনের সহজ সরল ছিলেন।তুমি তার এক অংশও না।তুমি হয়েছো তোমার মায়ের আদর্শ ও চারিত্রিক গুণাবলীর দিক দিয়ে।ভালোবাসার কোনো বর্ণনা নেই।ভালোবাসা তোমাকে ডাক দিয়ে আসবে না।ভালোবাসা এক দেখাতেও হতে পারে আবার কয়েক বছর একসাথে থাকতে থাকতেও হতে পারে।এই যে লোকে বলে এক দেখায় ভালোবাসা যায় না এটা কিন্তু সম্পূর্ণ ভুল।তুমি দোকানে গেলে কি একটি ড্রেসের জন্য কি দশবার তার খোঁজ নেও? নেও না নিশ্চয়ই!ভালো লেগেছে কিনে নিয়েছো।কারণ ওটা তোমার ভালোবাসার জিনিস।মানুষের ক্ষেত্রেও তেমন।লোক কেমন কি এটা ফ্যাক্ট না লোকটিকে দেখে তোমার কেমন লেগেছে এটাই ফ্যাক্ট।কিন্তু জীবনে চলতে গেলে ভালোবাসার পাশাপাশি তোমাকে দেখতে হবে ভালোবাসার মানুষটি তোমার জন্য ঠিক কি না।”

মায়া হাতে গোলাপী রঙের কাচের চুরি পড়তে পড়তে বলে,”তুমি একদম ঠিক বলেছো হাসি।আমি ভেবে দেখবো আমি আদৌ ভালোবেসেছি নাকি শুধু অধিকারবোধ জমিয়েছে বলে আবেগে ভাসছি।কারণ আমি তো ছোট থেকেই ভালোবাসা পাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে আছি।”

হাসি মায়ার চোখ থেকে কাজল নিয়ে মায়ার গলার কিনারায় দিতে দিতে বলে,”নজর না লাগুক আমার মায়াবতী মায়ের উপর।”

মায়া হাসিকে আলিঙ্গন করে বিদায় জানায় অফিসে যাবে বলে।রাজ আসার এখনও কয়েক মিনিট দেরি আছে।তার আগেই আজ মায়া চলে এসেছে। বড় বড় তিনটি গাড়ি শো শো করে চলে এলো কোম্পানির সামনে।প্রথম গাড়ি থেকে বের হলো দুজন দেহরক্ষী তারপর বের হলো রাজ।রাজ আজ কালো রঙের পাঞ্জাবি পড়েছে।কালো পাঞ্জাবি কালো জিন্স পাঞ্জাবির হাতা ফোল্ড করা।রাজকে দেখতে একদম পারফেক্ট মন্ত্রী মশাই লাগছে মায়ার কাছে।রাজকে দেখেই মায়ার মুখে ভেসে ওঠে এক মিষ্টি হাসি। রাজও তাকিয়ে আছে মায়ার দিকে।দেখতে থাকে তার মায়াবতীকে।অনেক সুন্দর লাগছে রাজের মায়াবতীকে।রাজ ফুল দিয়ে সাজানো রাস্তা দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে মায়ার কাছে আসে।চোখ তার মায়ার দিকেই আবদ্ধ।মায়ার এই মোটা করে দেওয়া কাজল কালো চোখ যেনো আরো বেশি আকর্ষণীয় রাজের কাছে।রাজ মায়ার কাছে আসার সাথে সাথে মায়া একটি ফুলের তোড়া দিয়ে রাজকে সাগতম জানায়।তারপর রাজকে একটি রঙিন কাগজের সাজানো কেচি দেওয়া হয় ফিতা কাটার জন্য।

রাজ কেচি নেওয়ার পর মায়ার দিকে তাকিয়ে বলে,”শুধু আমি একা কেনো ফিতা কাটবো? যার কোম্পানি সে কি ফিতা কাটবে না?একজন সফল নারী হয়ে তার সফলতার দিনে এক পাশে চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকলে কি মানায় নাকি?দুজনে একসাথে ফিতা কাটবো।”

সবাই সম্মতি জানায় রাজের কথায়।অতঃপর মুচকি হেসে মায়া দাড়ায় রাজের পাশে। পিয়াশ তাকিয়ে থাকে মায়া ও রাজের দিকে।মনে মনে বলে,”ম্যামের গেটআপ ও স্যারের গেটআপ দেখলে পারফেক্ট জুটি লাগছে।অবশ্য বস তো ম্যামকেই তার রাজ্যের রানি বানাবে।সে যেভাবেই হোক।”

মায়া ও রাজ একসাথে ফিতা কাটার জন্য কেচি ধরতে গেলে একজনের হাতের সাথে আরেকজনের হাতের ছোঁয়া লেগে যায়।মায়া এই প্রথম কোনো ছেলের হাত ধরলো নিজে থেকে।মায়া সবসময় ছেলেদের থেকে দূরেই থেকেছে।কেউ তাকে প্রোপজ করতে আসলে পাত্তা পায়না। সেই মায়া যখন কারো থেকে মায়াবতী সম্মোধন পেয়ে আবার ভালোবাসার অধিকার পায়,তখন তার হালকা ছোঁয়া মনের ভিতর দুর্বলতার সৃষ্টি করে।মায়ার মনের ভিতরও রাজের জন্য দুর্বলতা তৈরি হচ্ছে।রাজ মায়ার চোখের দিকে তাকিয়ে আছে।মায়াও রাজের চোখের দিকে তাকিয়ে আছে।মায়া কোনো এক ঘোরে চলে যায় কিন্তু রাজের হুশ আছে।তাই তো রাজ ঠোঁটে শুষ্ক এক হাসি দিয়ে মায়ার সাথে ফিতা কাটতে থাকে।

ফিতা কাটার পর সবাই রাজ ও মায়ার মাথায় ফুল দিয়ে কোম্পানির ভিতরে ওয়েলকাম করে। রাজ মায়ার হাত ছাড়েনি।মায়া হাত ছাড়ানোর জন্য চেষ্টা করে কিন্তু রাজের মত শক্তিশালী পুরুষের সাথে পেরে ওঠা সহজ নয়।মায়ার এক হাত ধরে মায়ার চুলের ভাজে লেগে থাকা ফুলগুলো এক একটি করে ফেলে দেয় রাজ।মায়া রাজের চোখের দিকে তাকিয়ে আছে।রাজ মায়ার হাত ধরেই কোম্পানির ভিতরে ঢুকতে থাকে। মায়ারাজ এর প্রথম পা একসাথে দিতেই সবাই লাইট জ্বালিয়ে হাত তালি দেয়।কোম্পানির ভিতরে ঢোকার পর রাজ নিজের থেকেই মায়ার হাত ছেড়ে দিয়ে মায়ার কাছে দাঁড়িয়ে বলে,”বলেছিলাম না!আমি যেটা চাই সেটা করেই ছাড়ি।তোমার একটাই কাজ,লক্ষ্মী মেয়ের মত আমাকে ভরপুর ভালোবাসা দিবে।সত্যি বলছি মায়াবতী।তোমার সকল ইচ্ছা পূর্ণ করবে এই রাজ শুধু রাজের জীবনে একবার এন্ট্রি নেও।”

মায়া রাজের দিকে রাগী লুক নিয়ে তাকিয়ে আছে।রাজ কথাটি বলেই মায়ার দিকে তাকিয়ে এক চোখ টিপ দিয়ে দুষ্টু হাসি দেয়।পিয়াশ মায়া ও রাজের কান্ড দেখছে।অন্যরা ভাবছে মন্ত্রী ও কোম্পানির সিইও হয়তো কোম্পানির বিষয়ে কোনো কনভারসেশনে আছে।কিন্তু পিয়াশ তো সবকিছুই জানে।ওয়েলকাম ফাংশনে মৌও এসেছে। মৌ পিয়াশের কাছে এসে বলে,”ওই বুঝি তোমার বসের মায়াবতী?”

“হ্যা,এনার জন্যই তোমার থেকে আমাকে দুই রাত আলাদা থাকতে হয়েছে।আরো তো আছে তিন রাত।এদিকে দেখো এরা কি সুন্দর একসাথে গল্প করছে।”

মৌ হেসে দেয় পিয়াশের কথায়। পিয়াশ মূলত থাকতে চেয়েছিলো মৌয়ের কাছে।যতই রাজ বলুক পাঁচ রাত আলাদা থাকবে,রাজ তো আর যেয়ে যেয়ে দেখছে না তাদেরকে। মৌ ইচ্ছা করে পিয়াশকে শাস্তি দিয়েছে।এখনও মৌয়ের পরিবার কথা বলে না মৌয়ের সাথে। একটু শাস্তি তো পিয়াশের প্রাপ্য।

মায়া ও রাজ এখন আলাদাভাবে আলাদা ক্লাইন্টদের সাথে কথা বলছে।তখনই সেখানে হাজির হয় পুরো সরদার ফ্যামিলি।মাহমুদ সরদার এনেছে তাদের।মায়া তাদের দেখে এক ডেভিল হাসি দিয়ে বলে,”Wellcome to the whole family.”

রুদ্র মিলি হিয়া ও সিয়া অবাক হয়ে তাকায় মায়ার দিকে।এই মেয়ে তো সেদিন মাজারে ঝামেলা করেছিলো।বাবা চাচারা যদি এই মেয়ের সাথে সম্পর্ক রাখতে পারে তাহলে তাদের আর কি?তাই তারা কোনো বাক বিতর্কে না জড়িয়ে নিজেদের মত ইনজয় করতে শুরু করে।মাহমুদ সরদার এসে মায়ার সাথে আলাদা কথা বলে।মোহন সরদার তার মত অন্য কলিগ পেয়ে কথা বলছে।মাহমুদ সরদারের কাছে মায়ার কথা বলা ও চলাফেরা খুবই ভালো লাগে।মায়ার ভিতর যে প্রতিভা আছে তিনি সেগুলো তার হিয়া ও সিয়ার ভিতরেও দেখতে চান।আজকালকার মেয়েদের তো এমনই হওয়া উচিত।

রুদ্র চলে যায় ড্রিংক সেক্টরে।সেখানে সে এখন তার তৃষ্ণা মেটাবে।মিলি সিয়া ও হিয়া মিলে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে।হঠাৎ করে কিছু কাপল কলিগ বলে ওঠেন,”এখন আমাদের কাপল ড্যান্স হোক।কোম্পানির গ্র্যান্ড ওপেনিং হয়েছে আজ।সবকিছু আলিশান ভাবে গড়ে তুলেছেন মিস মায়া।এখন আপনার জন্য আমরা কিছু কাপল ড্যান্স পারফরম্যান্স উপহার দিয়ে অনুষ্ঠানের আনন্দ আরো বেশি করে বাড়িয়ে দিতে চাই।”

মায়া খুশি হয়ে বলে,”শিওর।আপনাদের এই আনন্দে আমার অনুষ্ঠান আরো ভালোভাবে পরিপূর্ণ হবে।”

সবাই হাত তালি দিয়ে ড্যান্স করতে থাকে।সব লাইট বন্ধ করে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ঝাড়বাতি জ্বলছে এখন।কিছু কাপল সফট গানের সাথে ড্যান্স করছে তো কিছু মানুষ উপভোগ করছে।আবার কিছু কিছু ছেলে মেয়েরা ড্রিংক নিয়ে ব্যাস্ত।ড্যান্সের সময় রুদ্র আসে হিয়ার সামনে।হিয়ার সামনে এসে হিয়ার দিকে হাত বাড়িয়ে বলে,”Will you be my dance partner, হিয়াপাখি?”

হিয়া বিরক্ত হয়ে তাকায় রুদ্রের দিকে।বলে,”Not interested.”

রুদ্র কোনো প্রতিক্রিয়া না করে চলে যেতে নেয় ঠিক তখনই ধাক্কা লাগে রুদ্রর বয়সী এক মেয়ের সাথে।মেয়েটির নাম জেনি রুদ্রকে দেখে বলে,”হেয় হ্যান্ডসাম,আমার সাথে কাপল ড্যান্স করবে?”

“Not interested.”
বলে রুদ্র আবার চলে গেলো ড্রিংক সেক্টরে।হিয়া কোনো প্রতিক্রিয়া জানালো না।সে তার মত কিছুক্ষণ নিরব থেকে এদিক ওদিক তাকায়।হঠাৎ চোখ যায় এক কোনায়।সেখানে মায়ার এসিস্ট্যান্ট নাম তারেক সে আর পিয়াশ মিলে নিজেদের মত চারপাশের দেখাশোনা করছে।দুই এসিস্ট্যান্টের কানেই ব্লুটুথ কানেক্ট।বাইরের সিকিউরিটির সাথে তাদের কনভারসেশন চলতে থাকে।হিয়া যায় তারেকের কাছে।তারেককে উদ্দেশ্য করে হিয়া বলে,”আপনি আমার সাথে ড্যান্স করবেন?”

তারেক না বলতে যাবে তার আগে হিয়া তারেকের হাত ধরে ড্যান্স ফ্লোরে নিয়ে আসে।দুজনে একসাথে কাপল ড্যান্স করতে থাকে।রুদ্র হিয়ার দিকে তাকিয়ে শক্ত করে ড্রিংকের গ্লাস ধরে।কিছুক্ষণ গ্লাসের সাথে জোর খাটিয়ে থাকে বলে গ্লাস ভেঙ্গে কিছু কাচের টুকরো রুদ্রের হাতে ঢুকে যায়।টুপ টুপ করে রক্ত পড়ে রুদ্রের হাত থেকে।হিয়া খেয়াল করেনি সেদিকে।কিভাবে খেয়াল করবে ড্যান্সের সময় তো হিয়া তাকায় না রুদ্রের দিকে।যখন সে বুঝাইতে চায় যে তার জীবনে রুদ্রের মূল্য নেই,তখন কেনো তাকাবে সেই রুদ্রের দিকে?

মায়া দুর থেকে রুদ্রের কান্ড কারখানা দেখতে থাকে।মায়ার কিছুটা অনুমান হয়েছে রুদ্র হিয়ার প্রতি দূর্বল।এবার যেনো মায়া সুযোগ পেলো কোনো কিছু করার।মোহন সরদারের বংশীয় পুত্র রুদ্র। একেই করতে হবে মায়ার আসল শিকারী।মায়ার তুরুপের তাস হবে রৌদ্রদ্বীপ রুদ্র।

মাহমুদ সরদার অনেক আগেই মোহন সরদারের কাছে গেছে।তখনই এগুলো ভাবছিলো মায়া।মায়ার ভাবনার বিচ্ছেদ ঘটে রাজের কথায়।রাজ এসে দাড়ায় মায়ার পাশে।বলে,”আজ অন্যদের কাপল পারফরম্যান্স দেখছি আর আফসোস করছি। ইশ মন্ত্রী না হয়ে যদি সাধারণ কোনো ব্যাবসায়িক হতাম এখন তোমার সাথে কাপল ড্যান্স করতে পারতাম।”

মায়া তাকায় রাজের দিকে কিছু না বলে আবার দেখতে থাকে সবার ড্যান্স।রাজ দেখছে অনেক হ্যান্ডসাম ছেলেরাই মায়ার দিকে তাকিয়ে আছে।মায়ার প্রশংসা করছে।রাজের এবার একটু হিংসা হলো।মায়াকে উদ্দেশ্য করে বলে,”এরপর থেকে চোখে কাজল আর ঠোঁটে লিপস্টিক দিবে না।তোমার ঐ ডাগর ডাগর চোখে আর গোলাপী ঠোটের নেশা শুধুমাত্র আমি একা উপভোগ করবো। শাহমীর রাজ তার মায়াবতীর দিকে কারো নজর দেওয়া সহ্য করবে না।

চলবে…?