মেঘলা আকাশে রংধনু হবো পর্ব-৩৬+৩৭

0
7

#মেঘলা_আকাশে_রংধনু_হবো
#লেখনীতে_তাইয়্যেবা_বিনতে_কেয়া
#পর্ব_৩৬

হৃদানকে এখন কি করতে হবে সেটা ও খুব ভালো করে যানে তাই হৃদান কোনো কিছু না ভেবে হিয়ার রুমে যায়। হিয়া তখন পড়াশোনা করতে থাকে তবে হৃদানকে এই সময় দেখে অবাক হয় কারণ হৃদান নরমালি হিয়ার পড়াশোনা করার সময় বিরক্ত করে নাহ। হিয়া জিজ্ঞেস করে –

“- আপনি এখানে কোনো কাজ আছে “।

“- হুম আছে আসলে কালকে আমার আব্বুর এক বন্ধুর বাড়িতে আপনাকে নিয়ে যাবো। অনেকদিন হলো ওনার সাথে দেখা হয় না তাই ঘুরতে যাবো রেডি থাকবেন “।

“- কিন্তু কালকে আমার কোচিং রয়েছে সো সেখানে যেতে হবে “।

“- একদিন কোচিং না গেলে তেমন কিছু হয়ে গেছে যাবে না সো টেনশন করবেন না। আর বেশি সমস্যা হলে আমি রাব্বির সাথে কথা বলে নিবো “।

হিয়া হৃদানের কথা শুনে বেশ অবাক হয় কারণ হৃদান নিজে হিয়াকে কোচিং মিস করতে বলছে। হৃদান হিয়ার পড়াশোনার বিষয় কতটা সিরিয়াস সেটা সবাই যানে তাহলে হঠাৎ করে কারো বাসায় বেড়াতে যাওয়ার জন্য পড়াশোনা বন্ধ রাখব৷। হিয়ার কথাটা বেশ অদ্ভুত লাগলো কিন্তু তবুও রাজি হলো মনে হয় এই লোকটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। হিয়া হ্যা সম্মতি দিলো আরে বলে –

“-আচ্ছা ঠিক আছে কালকে রেড়ি হয়ে থাকবো “।

“- হুম ঠিক আছে আমি দুপুরে এসে আপনাকে পিক করে নিবো রেডি হয়ে থাকবেন। পড়ুন এখন “।

হৃদান আর কোনো কথা না বলে চলে যায় ইদানিং হৃদানের ব্যবহার হিয়ার মাথা উপর দিয়ে যাচ্ছে। হিয়া বেশ একটু ভেবে আবার বই খুলে পড়াশোনা শুরু করে দেয় হৃদান ঘরের বাহিরে যায়।এখন হৃদানের মাথায় শুধু এইসব বিষয় ঘুরছে হাবিব যদি কোমায় থাকে তাহলে এইসব করেছে কে।আর হিয়ার মাকে কে খুন করেছে যদি তিনি পাহাড় পছন্দ না করেন তাহলে এতো উঁচু জায়গায় কোনো গেলেন। সব ঘটনা হৃদানের মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে। হৃদান বলে –

“- এইসব ঘটনার উত্তর ওই বাড়িতে গেলে যানা যাবে আর হিয়াকে নিয়ে যাওয়ার কারণ ওকে এখন সত্যিটা জানতে হবে “।

হৃদান আর হিয়ার রুমে যায় না নিজের কাজে মনোযোগ রাখতে পারছে না আসলে এইসব কাজের পিছনে কে আছে সেটা ওকে জানতে হবে। কিন্তু কি করে জানবে এইসব বিষয় নিয়ে ভাবতে থাকে আর ফলে রাতে ভালো করে ঘুম হয় নাই। হিয়া পড়াশোনা করে ঘুমিয়ে পড়ে সকালে উঠে নিজের পড়াশোনা শেষ করে রান্নাঘরে যায়। রুটি আর ভাজি করতে থাকে তবে কিছু পিঠের চাল বিজিয়ে রাখে বিকালে পিঠা তৈরি করবে।

শীতকাল চলে এসেছে শীতের তাপদাহ এইভার ভালো করে পড়বে সেটা বুঝা যাচ্ছে। আর শীতে যদি মেয়ের জামাই শশুড়বাড়িতে আসে তাকে পিঠা খাওয়ানো গ্রামের নিয়ম। হিযা যেহেতু গ্রামের মেয়ে তাই সে অনুযাযী জীবন মেনে চলে। আবির এই বাড়ির জামাই তাই ওর জন্য পিঠা তৈরি করবে। হিয়া অনেকদিন ধরে পিঠা তৈরি করবে চিন্তা করছিলো কিন্তু সময়ের অভাবে সেটা হয়ে উঠে নাই। তাই আজকে করবে দুপুরে দাওয়াত খেয়ে এসে বিকালে পিঠা তৈরি করবে।

হিয়া নিজের খাবার বানানো শেষ করে রান্না টেবিলে খাবার সাজিয়ে রাখে। হৃদান সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে আসে হিয়াকে পুরো গিন্নি রূপে দেখে একটা মুচকি হাসি দেয়। সত্যি মেয়েটার মধ্যে সব গুণ রয়েছে নিজের পছন্দ নিয়ে তার এখন গর্ব হয়। হৃদান সত্যি অনেক ভাগ্যমান যে হিয়ার মতো এতো ভালো একটা মেয়েকে বউ হিসাবে পেয়েছে তাই সে অনেক খুশি। হৃদান নেমে এসে বলে –

“- হিয়া রান্না করা শেষ। কিন্তু তানিয়া কোথায়?

“-তানিয়া আপু মনে হয় ঘুম থেকে উঠে নাই সকালে বেশ শীত করে তাই একটু বেশি ঘুমিয়ে রয়েছে। কিন্তু আপনি এতো সকালে রেডি হয়ে কোথায যাচ্ছেন “।

“- অফিসে যাবো আসলে আজকে যেহেতু আব্বুর বন্ধুর বাড়িতে যাবো তাই তাড়াতাড়ি অফিস থেকে এসে পড়তে হবে। আর অফিসে নতুন একটা টেন্ডার এসেছে তাই কাজ প্রচুর। তাই তাড়াতাড়ি যেতে হবে “।

হিয়া হৃদানকে খাবার বেড়ে দেয় হৃদান সেটা খেয়ে অফিসের জন্য চলে যায়। হৃদান গাড়িতে বসে রয়েছে ওর মাথায় একটা কথা আসে তাই ফোন বের করে কল দেয় –

“হ্যালো পুলিশ কমিশনার আমি ম্যাজিস্ট্রেট হৃদান চৌধুরী বলছি “।

“- আরে হৃদান স্যার আপনি হঠাৎ করে আমাকে কেনো কল দিলেন। কোনো দরকার ছিলো নাকি “।

“- হুম আসলে আমার একটা কাজে আপনার সাহায্য দরকার। আমি একটু পুরানো কেস রিওপেন করতে চাই তাই যদি আপনি থানায় বলে দিতেন তাহলে ভালো হতো “।

“- ওহ আচ্ছা স্যার সমস্যা নাই আর আপনার জন্য কিছু করতে পারা ভাগ্যর বিষয়। এই শহরের উন্নয়নের জন্য আপনি অনেক কাজ করেছেন তাই আপনার সাহায্য করতে পারলে আমার ভালো লাগবে “।

“- ধন্যবাদ আপনাকে স্যার আমি আপনাকে কেসের ডিটেলস পাঠিয়ে দিচ্ছি আপনি রিওপেন করার করেন। আর তাড়াতাড়ি করবেন সত্যি আমার জন্য কাজটা গুরুত্বপূর্ণ “।

“- ওকে সমস্যা নাই আমি দেখছি আর যে অফিসার এই কাজের দায়িত্ব থাকবে তার নাম্বার আপনাকে দিযে দিবো “।

“- হুম বাই “।

হৃদান বেশ খুশি হয়ে যায় কেসটা আবার রিওপেন করা যাবে। হিয়া সবাইকে খাবার দিয়ে নিজের রুমে চলে যায় সেখানে গিয়ে পড়াশোনা করতে থাকে তবে এখন দিন অনেক ছোট হয়ে গেছে। খুব তাড়াতাড়ি আযান দিযে দেয় তাই হিয়া গোসল করে নেয় রেডি হতে হবে হৃদানের সাথে যেতে হবে। হৃদান অফিসের কাজ শেষ করে গাড়ি নিয়ে বাড়ি পৌঁছে যায়। যদিও আজকে অনেক কাজ ছিলো তবুও এখন হাবিব চাচার বাড়িতে যাওয়া অনেক দরকার।

হিয়া রেডি হয়ে আয়নার দিকে তাকিয়ে থাকে সত্যি সুন্দর লাগছে ওকে কিন্তু যার জন্য এই সাজ সেইতো নাই। হৃদানের যে কি হয়েছে কয়েকদিন ধরে হিয়া বুঝতে পারে না লোকটা কেমন যোনো নিরামিষ হয়ে গেছে। হিয়া রেডি হয়ে নিচে নামে হৃদান ওকে মেসেজ দিয়ে আসতে।

হিয়া নিচে আসতেই হৃদান ওর দিকে এক ধ্যানে তাকিয়ে থাকে সত্যি মেয়েটা অদ্ভুত সুন্দর। কিন্তু এতোদিন নিজের এই ঝামেলার জন্য হিয়ার দিকে নজর দেয় নাই। হৃদান হিয়ার কাছে যায় আর ওর চোখের কাজল থেকে একটু নিয়ে চুলের পিছনে টিপ দিযে দেয় আর বলে –

‘- হৃদান চৌধুরী বউয়ের উপর যেনো কারো নজর না লাগে ”

“- আচ্ছা এতোদিন কোথায় ছিলো আপনার এইসব কথা যান এখান থেকে একদম নজর দিবেন না “।

“- সমস্যা নাই আমার নজর লাগলে সমস্যা হবে না বউটাতো আমার “।

“- আমার ডায়লগ আমাকে দিচ্ছেন “।

“- হুম দিচ্ছি কারণ আমার বউয়ের সবকিছু অনেক সুন্দর হয় “।

“- চলুন এখন যাওয়া যাক “।

হৃদান আর হিয়া হেঁসে গাড়িতে উঠে যায় তবে শাফআনের বাড়ির পৌঁছানোর পর হিয়ার যোনো কেমন লাগছে। এখানো আলাদা একটা শান্তি রয়েছে যেমন সেই পাহাড়ে গিয়ে লেগেছিলো তবে কোনো এইরকম লাগছে হিয়া বুঝতে পারে না। হিয়া কখনো এখানে আগে আসে নাই তাহলে। হৃদান হিয়াকে দেখে বুঝতে পারে ওর মনের অবস্থা কিন্তু ওরা পৌঁছে গেছে তাই গাড়ি থেকে নামতে হবে তাই হৃদান বলে –

“- হিয়া আমরা পৌঁছে যেছি নামুন গাড়ি থেকে “।

“- হুম “।

হৃদান আর হিয়া গাড়ি থেকে নেমে বাড়ির গেট দিয়ে ভিতরে পৌঁছে যায় একজন কাজের লোক দরজা খুলে দেয়। হিয়ার এই বাড়িটা অনেক পরিচিত লাগছে। হৃদান বলে –

“- আমরা শাফআন সাহেবের সাথে দেখা করতে এসেছি “।

কাজের লোক জবাব দেয় –

“- আচ্ছা ঠিক আছে স্যারকে ডেকে দিচ্ছি “।

কাজের লোক শাফআন সাহেবকে ডাকতে যায় আর হিয়া বাড়িটা দেখতে থাকে। শাফআন সাহেব নিচে নেমে আসে তবে ড্রায়নিং রুমে কাউকে দেখে বল৷ উঠে –

“- তুমি এখানে “।

#চলবে

#মেঘলা_আকাশে_রংধনু_হবো
#লেখনীতে_তাইয়্যেবা_বিনতে_কেয়া
#পর্ব_৩৭

“- তুমি এখানে “।

শাফআন চৌধুরীকে দেখে হৃদান বসা থেকে উঠে যায় বেশ অনেকদিন পর দেখছে শাফআন চৌধুরীকে। সেই ছোটবেলা আসতো তাদের বাড়িতে পরে কাজের চাপে আর আসা হয় নাই। হৃদান হাসি মুখে বলে –

“- হাই আঙ্কেল আমি হৃদান। রায়হান চৌধুরীর ছেলে চিনতে পেরেছেন “।

শাফআন সাহেব হৃদানকে দেখে চিনতে পারে কারণ ওনার মনে বেশ ভালো থাকে তাছাড়া হৃদান এখন ম্যাজিস্ট্রেট তাই ওকে চিনে। তবে হৃদানের সাথে সরাসরি ওনার দেখা খুব কম হয় এখন হয় নাহ বলতে পারেন। শাফআন সাহেব বলে –

“- হুম তুমিযে হৃদান সেটা ভালো করে জানি তাহ ম্যাজিস্ট্রেট সাহেব এতোদিন পর মনে পড়লো আমাদের কথা। এতোদিনে একবার ও আসো নাই কোনো আমাদের বাড়িতে

“- না মানে আসলে আঙ্কেল এখান দিয়ে যাচ্ছিলাম হঠাৎ আপনার বাসা সামনে পড়লো তাই ভাবলাম দেখা করে যায়। বাই দ্যা ওয়ে মিট মাই ওয়াইফ হিয়া চৌধুরী “।

শাফআন সাহেব হৃদানের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা মেয়েটাকে দেখলো মুখটা বেশ মায়াবী মনে হলো এর আগে দেখেছে। কিন্তু কোথায় দেখেছে সেটা মনে নাই। হিয়া ও শাফআন সাহবকে দেখে লোকটাকে এতো পরিচিত লাগছে কোনো মনে হচ্ছে জীবনে একবার হলেও এই লোককে সে দেখেছে কিন্তু কোথায় দেখেছে। যদিও এই বাড়িতে আসার পর থেকে হিয়া অদ্ভুত ফিলিংস হচ্ছে মনে হচ্ছে সব ওর পরিচিত। তবে হিয়ক এইসব কথা বাদ দিয়ে শাফআন সাহেবের দিকে তাকায় আর বলে –

“- আসসালামু আলাইকুম আঙ্কেল “।

শাফআন সাহব হাসি মুখে বলে –

“- ওয়ালাইকুম সালাম “।

হৃদানকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে শাফআন চৌধুরী বসতে বলে তারা একে অপরের সাথে কথা বলতে থাকে। শহরের অবস্থা নিয়ে কিন্তু হিয়ার বেশ বোরিং লাগছে সে শহরের উন্নয়নের কথা কি বুঝবে সে কি হৃদানের মতো ম্যাজিস্ট্রেট নাকি। হৃদান কথার ফাঁকে ফাঁকে হিয়াকে দেখছে মেয়েটা বেশ বিরক্ত ফিল করছে সেটা বুঝতে পারছে। হৃদান সেইজন্য এইসব করছে কারণ তাকে নিজের কাজ করতে হবে। হৃদান বলে –

“- হিয়া আপনার কি এখানে থাকতে ভালো লাগছে না “।

“- না মানে আসলে আপনারা শহরের উন্নয়ন নিয়ে কথা বলছেন তাই “।

হিয়া আর কোনো কথা বলে না শাফআন সাহেব বলে –

“- ওহ মনে হয় সত্যি বোর হচ্ছে তাহ হিয়া তুমি পুরো বাড়ি ঘুরে দেখো। তাহলে ভালো লাগবে উপরে সাদ রয়েছে বাগান আছে। যাও ঘরে আসো “।

হৃদানের কাজ আরো সহজ হয়ে যায় ও মনে করেছিলো হিযাকে হৃদান কিছু বলবে কিন্তু শাফআন সাহেব আরো আগে বলে দিলো। শাফআন সাহেবের কথা শুনে হিয়া আড়চোখে তাকিয়ে দেখে হৃদানের দিকে। মূলত হৃদানের অনুমতি নিতে চাই ও হৃদান সেটা দিয়ে দেয় –

“- যান ঘুরে আসেন “।

হিয়া উঠে সিঁড়ি বেয়ে উপরে চলে যায় হৃদান একটা হাসি দিয়ে আবার শাফআন সাহেবের সাথে কথা বলতে থাকে। হিয়া উপরে গিয়ে দেখতে থাকে কিন্তু ও আগে ছাদে না গিয়ে রুমগুলো দেখতে থাকে বেশ সুন্দর। কিন্তু একটা রুমে বেশ অনেক নিরবতা দরজা বন্ধ রয়েছে। হিয়ার কোনো যেনো এই রুমের উপর আগ্রহ বেশি হয়ে গেছে তাই সে যখন দরজা ধাক্কা দেয় তখন খুলে যায়। হিয়া যখন দরজা খুলতে যাবে তখন পিছন থেকে একজন বলে –

“- হিয়া তুমি এখানে “।

হিয়া পিছন থেকে কারো ডাকের আওয়াজ শুনে তাকিয়ে দেখে অনিল। অনিলকে দেখে হিয়া বেশ অবাক হয় কারণ এই বাড়িতে অনিল থাকতে পারে সেটা হিয়া যানতো না তাই হিয়া জিজ্ঞেস করে –

“- তুমি সেই পিছনের সিটে বসা ঘুমিয়ে থাকা ছেলেটা না। নাম অনিল “।

“- হুম আমি অনিল কিন্তু তুমি এখানে কি করো “।

“- সেটাতো আমার ও কথা তুমি এখানে কি করো “।

“- বাহ রে আমার বাড়িতে আমি থাকব না “।

“- এইটা তোমার বাড়ি “।

“- হুম এইটা আমার বাড়ি আমি শাফআন সাহেবের ছেলে অনিল “।

“- আর আমি হৃদান চৌধুরী ওয়াইফ হয় হিয়া চৌধুরী “।

হিয়ার মুখ থেকে হৃদানের ওয়াইফ শুনে অনিল বেশ অবাক হয় ওয়াইফ মানে। হিয়ার বিয়ে হয়ে গেছে সেটা ও যানতো না বেশ অবাক করা বিষয়। কিন্তু অনিল কিছু বলে না তবে হিয়াকে এই দরজার সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে বলে –

“- তুমি এই রুমে কি করো এইটা আমার আঙ্কেল রুম ওনি এখন কোমায়। এই রুমে যাওয়ার অনুমতি কারো নাই সো এখান থেকে চলে যাও “।

“- ওহ সরি চলে যাচ্ছি “।

হিয়া উপরে সিঁড়ি বেয়ে ছাদে চলে যায় অনিল কোনো কথা না বলে ওর চাচার রুমে চলে যায়। তবে বাহির থেকে যখন অনিল হিয়ার নাম ধরে ডাক দিয়েছে তখন ওর কোনো ঘটনা মনে পড়ে। অনিল রুমে ঢুকে দেখে কাচের জিনিস ভেঙে গেছে তাই অবাক হয়। রুমে কাচের জিনিস ভেঙে কি করে গেছে এই রুমেতো বিড়াল আসে নাই তাহলে কি চাচা ভেঙেছে। কিন্তু সেটা কি করে সম্ভব ওনিতো কোমায়।

হিয়া উপরে উঠে ছাদ দেখতে থাকে কিন্তু অনেক সময় পার হয়ে যায় বলে নিচে নেমে আসে। হৃদান শাফআন সাহেবের সাথে কথা বলতে থাকে বেশ ভালো লাগছে কথা বলতে তার। কিন্তু হিয়া খুব সুন্দর করে নিচে নেমে এসেছে দেখে হৃদানের মন খারাপ হযে যায়।হিয়ার কি হাবিবের সাথে দেখা হয় নাই তাহলে তো হিয়া এতো শান্ত হযে থাকবে না। কিন্তু হৃদান নিজ থেকে কিছু জিজ্ঞেস করতে পারবে না।

হিয়া আর হৃদানের জন্য খাবার নিয়ে আসা হয় ওরা একসাথে নাস্তা করে। এরপর দুপুরে খেয়ে বাড়ি থেকে চলে আসে হিয়া ঠিক আছে কিন্তু হৃদান এখনো অস্থির।হিয়া কি কিছু জানতে পারে নাই সেখানে গিয়ে। হৃদান বলে –

“- হিয়া আপনি সেই বাড়িতে গিয়ে কি কিছু জানতে পেরেছেন “।

হৃদানের এমন অদ্ভুত কথায় হিয়া বেশ অবাক হয় সে কি জানতে পারবে। হিয়া জিজ্ঞেস করে –

“- কি জানতে পারব বাড়ি থেকে “।

” না তেমন কিছু নাহ “।

হৃদান বুঝতে পারে হিয়া হাবিবের বিষয়ে কোনো কথা জানতে পারে নাই তাই ওকে অন্য উপায় ভাবতে হবে। হৃদান গাড়িতে কোনো কথা বলে না চুপচাপ বসে থাকে হিয়া হৃদানের মুখের দিকে খেয়াল করে অনেক সময় ধরে চুপচাপ কারণটা বুঝতে পারছে না। কি হয়েছে ওনার। বাড়ি ফিরে আসে হৃদান নিজের রুমে চলে আসে এরপর ফোন বের করে দেখে পুলিশ কমিশনার এসপির নাম্বার পাঠিয়ে দিযেছে। হৃদান ফোন করে –

“- হ্যালো আমি ম্যাজিস্ট্রেট হৃদান চৌধুরী বলছি “।

হিযার মায়ের কেসে যিনি দায়িত্ব পালন করবেন তার কাছে ফোন করে হৃদান। ওনি ফোন ধরে বলে –

“- জি ম্যাজিস্ট্রেট স্যার বলেন। আসলে পুলিশ কমিশনার স্যার আমাকে ফোন করে কেসের বিষয়ে বলেছেন। স্যার আমি অলরেডি সেই কেসে কাজ করা শুরু করে দিয়েছি আশা করি খুব তাড়াতাড়ি সমাধান করতে পারব “।

“- বেরি গুড তবে আমি আপনাকে কিছু ডিটেলস দিবো। আগে এই কেসকে আত্নহত্যা হিসাবে দেখিয়েছে কিন্তু আসলে এইটা মার্ডার। এই কেসটা যে মার্ডার তার অনেক প্রমাণ আমার কাছে আছে সেইসব পাঠিয়ে দিবো আপনাকে আমি “।

“- ওকে স্যার আশা করি খুব তাড়াতাড়ি কেস সমাধান হয়ে যাবে “।

“- জি ধন্যবাদ “।

হৃদান ফোন রেখে আবার ঘরে থেকে বেরিয়ে সিঁড়ি দিয়ে নিচে নেমে যায় আর গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়ে। হৃদান এখন হিযার কোচিং যাচ্ছে যদিও হিয়া সাথে নাই তার। হৃদানের গাড়ি কোচিং পৌঁছে যায যদিও এখন কোচিং ছুটি হয়ে গেছে। অনেক ছাএরা বেরিয়ে পড়ছে হৃদান গাড়ি থেকে নেমে অপেক্ষা করতে থাকে। ঠিক তখন অনিলের দেখা পায় সে হৃদান অনিলের কাছে যায় আর জিজ্ঞেস করে –

“- কেমন আছো অনি “।

অনিল হঠাৎ কারো কথা শুনতে পেরে পিছনে তাকিয়ে দেখে হৃদান। বাসায় হৃদান গিয়েছিলো কিন্তু অনিলের সাথে দেখা হয় নাই। কারণ অনিল সারাটা সময় তার চাচার রুমে থেকে। তবে হৃদানকে হঠাৎ করে দেখে বলে –

“- হুম ভালো কিন্তু তুমি কোচিং “।

“- হুম এসেছি আমার একটা সাহায্য লাগবে তোমার থেকে

“- কি সাহায্য”।

হৃদান অনিলকে সব কথা খুলে বলে অনিল সব কথা বুঝতে পারে আর ওর বাবার প্রতি রাগ আরো বেড়ে যায়। অনিলের মায়ের মৃত্যুর জন্য ওর বাবা দায়ী ছিলো এরপর ওনি বিদেশে গিয়ে বিয়ে করেন সেখানে ওনার বাচ্চা রয়েছে। কিন্তু দেশে শুধু ব্যবসার জন্য থাকেন। হাবিবের সাথে যা করেছে তার জন্য অনিল নিজের বাবাকে মাফ করবে না। অনিল বলে –

“- ঠিক আছে আমি তোমাকে সাহায্য করব “।

“- তাহলে এবার শাফআন সাহেবের পতন আর আসল সত্যি সবাই জানতে পারবে.

#চলবে