রেড রোজ পর্ব-১৯

0
6

#রেড_রোজ
পার্ট [১৯]
#লেখিকা_ফারহানা_নিঝুম

(কপি করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ)
(কঠোর ভাবে প্রাপ্ত বয়স্ক এবং মুক্তমনাদের জন্য উন্মুক্ত)

“তুমি কী রিক কে লাভ করো কিউট গার্ল?”

উৎসা কাউচের উপর কুশান গুলো সুন্দর করে গুছিয়ে রাখছিল, তৎক্ষণাৎ কেয়া আচমকা এমনতর প্রশ্ন করে। উৎসা কী জবাব দিবে তার জানা নেই, ঐশ্বর্যের প্রতি মনের কোণে সুপ্ত অনূভুতির উদয় হলেও তা তার ব্যবহারে মাটি চা’পা পড়েছে।
“তোমাকে একটা কথা বলি কেয়া আপু?”

“ইয়া অফকোর্স।”

কেয়া কফি কাপ রেখে উৎসার সামনে এসে বসলো,উৎসা মিনমিনে গলায় বলল।
“ঐশ্বর্য ওনার কী কোনো প্রবলেম আছে?”

কেয়া ঘাবড়ে গেল।
“এক্সুয়েলি কিউট গার্ল রিক লাভে ট্রাস্ট করে না।বাট তোমাকে কেনো বিয়ে করলো আই ডোন্ট নো।”

উৎসা ফের শুধায়।
“আমার প্রশ্নের উত্তর কিন্তু এটা না আপু।”

কেয়া আমতা আমতা করে বলল।
“তুমি যা ভাবছো তা না বাট রিক সত্যি বলছি রিক কেমন তা আমি আর জিসানের থেকে কেউই বেটার বলতে পারবে না ”

উৎসা নির্বাক,সে কী বলবে সত্যি বুঝতে পারছে না।
ঐশ্বর্য রিক চৌধুরী কী তাহলে সত্যি তার প্রতি আ’স’ক্ত? এসবের মানে কি?
“ততুমি সত্যি বলছো আপু? আমি কিছুই বুঝতে পারছি না। হঠাৎ বিয়ে!তার উপর আমি কিছু জিগ্গেস করলে ঠিক ভাবে বলছেও না।”

“ইয়া অ্যাম ট্যালিং দ্যা ট্রুথ।”

উৎসার নিঃশ্বাস ভারী হয়ে আসছে। কাঁপা কাঁপা গলায় বলল।
“আচ্ছা আপু ওনার কি কোনো মানসিক..

“কী বলছো এসব?কিউট গার্ল একটা কথা বলি শুনো। ঐশ্বর্য একটু ম্যাড,আগে মেয়েদের সাথে…তবে শুধু তোমার বেলাতেই সে চেঞ্জ হয়ে গেছে।”

উৎসা আর কিছু বলতে পারলো না, বলবেই বা কী? মস্তিষ্ক যেনো কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে।কেয়া উৎসার অবস্থা দেখে বোঝানোর চেষ্টা করে বললো।
“কিউট গার্ল ইউ ডোন্ট ওয়ারি রিক লাভস্ ইউ।দ্যাটস্ হোয়াই হি ম্যারিড ইউ।”

উৎসা তাচ্ছিল্য করে বলল।
“ওহ্।”

উৎসা অপেক্ষা করলো না ভেতরের রুমে চলে গেলো,কেয়া টেনশনে পড়ে গেলো।সে কী এসব বলে ভুল করে ফেলেছে?
উৎসার কষ্ট হচ্ছে,এই লোকটা ফিজিক্যাল নি’ড’স ছাড়া কিছুই বুঝে না। তাহলে ওকে কী করে ভালোবাসবে?সব মিথ্যে!
________________
“হ্যা আঙ্কেল বলো।”

মিস্টার রাজেশ চৌধুরী কেবিনে বসেই ছিলেন,তখন ঐশ্বর্য প্রবেশ করে ওর সঙ্গে জিসানও আছে।
মিস্টার রাজেশ চৌধুরী ল্যাপটপের শাটার অফ করে বললো।
“একটা গুড নিউজ আছে রিক।”

ঐশ্বর্য চেয়ার টেনে বসলো, জিসান বেশ উৎসাহ নিয়ে শুধোয়।
“কী গুড নিউজ আঙ্কেল?”

রাজেশ চৌধুরী চওড়া হাসলেন, টেবিলের উপর থেকে একটি ফাইল ঐশ্বর্যের দিকে এগিয়ে দিয়ে বললো।
“সি।”

ঐশ্বর্য ফাইল হাতে নিয়ে চেক করতে লাগলো, অতঃপর অধর বিস্তৃর্ণ করে হাসলো।
“ওয়াও আঙ্কেল অবশেষে আমরা পেয়েই গেলাম।”

জিসান ঐশ্বর্যের হাত থেকে ফাইলটা দেখে নেয়। ঐশ্বর্য গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রির নতুন ব্রাঞ্চ অফিস খুলছে বাংলাদেশে। ঐশ্বর্য চেয়েছিল বাংলাদেশে একটা ব্রাঞ্চ হোক ওদের,তার একটা মূলত কারণও আছে। অবশেষে আজ সে সফল।

মিস্টার রাজেশ বেশ উৎসাহ নিয়ে বললেন।
“ইয়েস মাই বয়,আমরা পেরেছি।”

ঐশ্বর্য সত্যি ভাবতে পারেনি এত সুন্দর একটা নিউজ পাবে।

কলিং বেল বাজাতে লাগল ঐশ্বর্য, কিন্তু কেউ দরজা খুলেনি। কপালে ভাঁজ পড়লো তার, ভেতরে তো উৎসা আছে তাহলে দরজাটা খুলছে না কেন?
বেশ বিরক্ত নিয়ে ফুলের টব সরিয়ে নিচ থেকে আরো একটি চাবি বের করে দরজা খুলে ঐশ্বর্য। ভেতরে প্রবেশ করতেই চোখ গেলো বা দিকে করিডোরের পাশে বসে আছে উৎসা। দৃষ্টি তার বিশাল সুইমিং পুলের দিকে।
করিডোরের দিক সামনাসামনি বিশাল জায়গা জুড়ে সুইমিং পুল। ঐশ্বর্য ডোর লক করে পরণের স্যুট খুলে কাউচের উপর ছুড়ে ফেলে করিডোরের দিকে এগিয়ে গেলো।
“রেড রোজ?

চিরচেনা কন্ঠস্বর শুনে ঘাড় ঘুরিয়ে তাকালো উৎসা, কিন্তু সেকেন্ডের ব্যবধানে আবারও সুইমিং পুলের স্বচ্ছ পানির দিকে দৃষ্টি ফেলে।
ঐশ্বর্য গিয়ে উৎসার পাশাপাশি বসলো।
“মুড অফ?”

ঐশ্বর্যের কথায় কোনো প্রকার প্রতিক্রিয়া দেখালো না উৎসা,তাতে যেনো শান্ত থাকা সিংহ ক্ষে’পে উঠছে। নিজেকে ধাতস্থ করতে ফের বললো।
“এনিথিং রং রেড রোজ?”
কথাটা বলে উৎসার হাতের উপর হাত রাখল ঐশ্বর্য,
উৎসা ফুস করে উঠে।
“একদম ছুঁবেন না আপনি, চ’রিত্রহী’ন লোক একটা!”

ঐশ্বর্য অধর বাঁ’কিয়ে হাসলো।
“চরি’ত্রহীন ইউ মিন টু সে ক্যারেক্টারলেস!”

উৎসা রাগে গজগজ করে বলে।
“কেনো করলেন আমার সাথে এমন? আমি স্টুডেন্ট ছিলাম চাকরি চেয়েছি তো দিলেন কেয়ারটেকার বানিয়ে। এরপর আমাকে হোস্টেল থেকে বের করে দিলো আপনি কী করলেন?থাকতে দিলেন লিভ ইন রিলেশনশিপে বাধ্য করলেন। এরপর এখানেই থেমে নেই আপনি। আমাকে জোর করে বিয়ে করলেন। কেনো করছেন এসব?হোয়াই.”

ঐশ্বর্য শুনলো, কিন্তু কিছু বললো না।উৎসা ঐশ্বর্যের কলার চেপে ধরলো।
“আমি এতক্ষন ধরে ভেবেছিলাম আপনি হয়তো আমাকে পছন্দ করেন তাই এত কিছু করে বিয়ে করেছেন। কিন্তু না আপনি তো হলেন ক্যারেক্টারলেস,মেয়ে বা’জ ছেলে।যে কী না মেয়েদের টিস্যুর মত ইউজ করে।”

ঐশ্বর্য এবারেও অধর বাঁকিয়ে হাসলো, আচমকা উৎসা কে ধাক্কা দিয়ে সুইমিং পুলে ফেলে দেয়। ঘটনার আকস্মিকতায় হতভম্ব হয়ে গেলো উৎসা।এমনিতেও সে সাঁতার জানে না,যার দরুন শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে।
ঐশ্বর্য তৎক্ষণাৎ লাফ দেয় সুইমিং পুলে ,উৎসা কে টেনে নিজের কাছে নিয়ে আসে।উৎসা খামচে ধরে ঐশ্বর্যের শার্ট,ভিজে জবজবে হয়ে উঠেছে দুজনেই।
উৎসা ঘনঘন নিশ্বাস ফেলছে যা উপছে পড়ছে ঐশ্বর্যের মুখে। ঐশ্বর্য মুগ্ধ চোখে দেখছে সদ্য ভেজা লাল টকটকে গোলাপের দিকে।
উৎসা কে বেশিরভাগ সময়ই ঐশ্বর্য লাল রঙে দেখেছে,আজকেও তাই।লাল রঙের কামিজ পড়েছে সে,ভিজে লেপ্টে গেছে তার ধনুকের ন্যায় শরীরের সাথে।
“রেড রোজ ইউ আর লুকিং সো প্রীটি, ট্রাস্ট মি।”

উৎসা এতক্ষণে হু’শে ফিরল, ঐশ্বর্যের কথায় পিলে চমকে উঠে তার। ঐশ্বর্য ভেজা হাতে উৎসার মুখের উপর থেকে ভেজা চুল গুলো সরিয়ে অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকালো।
উৎসা মিহিয়ে যাচ্ছে, ঐশ্বর্যের উপর প্রচন্ড রকম রাগ হচ্ছে তার । কিন্তু সে ছাড়তেও পারছে না,কারণ সাঁতার জানা নেই তার।
ঐশ্বর্য এতক্ষণে ধরে উৎসা কে দেখছে। মেয়েটা অপূর্ব সুন্দরী, কিন্তু তার কেন জানি পারমিশ ছাড়া উৎসা কে ছুঁতে ভালো লাগে না। মেয়েটার চোখে মুখে শুধু মায়া।
“এই জন্যই মুড অফ?”

ঐশ্বর্যের কথায় নিঃশ্বাস ভারী হয়ে আসছে উৎসার।!উৎসা ঐশ্বর্য কে সরিয়ে যেতে নেয়। কিন্তু একটু এগুতেই মনে হয় ডু’বে যাবে সে, ঐশ্বর্য উৎসার জড়িয়ে ধরে।
“প্লিজ রেড রোজ আমি আছি তো,কেন যেতে চাইছো?ডুবে যাবে!”

উৎসা সরতে পারছে না, ঐশ্বর্য উৎসার হাত ধরে আছে।উৎসা ভয়ে জড়সড় হয়ে দাঁড়িয়েছে,এই বুঝি ডুবে যাবে।
“না, প্লিজ আমাকে তুলুন।ভয় লাগছে,ডুবে যাবো সত্যি!”

ঐশ্বর্য উৎসার দিকে অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকালো, উৎসা কপাল কুঁচকে নেয়।

“ক,,কী দেখছেন?তুলুন আমাকে।”

ঐশ্বর্য উৎসার কপালে লেপ্টে থাকা চুল গুলো সরিয়ে দিতে দিতে বলে।

“রেড রোজ ক্যান আই কিস ইউ প্লিজ!”

উৎসা চমকে উঠে,কী অদ্ভুত মানুষ? উৎসা মুচড়ে গেল।

“দেখুন ভালোয় ভালোয় বলছি আমাকে উপরে তুলুন।”

ঐশ্বর্য উৎসা কে আরেকটু কাছে টেনে নেয়।

“প্লিজ সুইটহার্ট জাস্ট ওয়ান কিস।”

“নো ওয়ে।”

উৎসা ঐশ্বর্যের থেকে ছাড়া পেতে চাইলো, কিন্তু ঐশ্বর্য ছাড়লো না। ঐশ্বর্য ধীর গতিতে উৎসা কে কাছে টানলো, অল্প দূরত্ব মূহুর্তে ঘুচিয়ে দিল। আলতো ভাবে উৎসার ঠোঁট স্পর্শ করে। দুজনের অধর মিলিত হয়, ঐশ্বর্য আশ্লেষে চুষে নিচ্ছে মধু সুধা।ক্ষণে ক্ষণে কেঁপে উঠছে উৎসা, ঐশ্বর্য কোমড় জড়িয়ে ধরে উৎসার। আরেকটু কাছে টেনে নেয়,ধীর গতিতে তার ঠোঁটে প্রবেশ করাচ্ছে উৎসার অধর দুখানি। মাঝে মাঝে ছোট্ট কামড় বসিয়ে দেয়, উৎসা ঐশ্বর্যের গভীর স্পর্শ পেয়ে চমকালো ভ’ড়কালোও বটে। মিনিট দশেকের মতো ঐশ্বর্য লিপ কিস করলো।উৎসা কে ছাড়া মাত্র প্রাণ ফিরে পায় উৎসা, কাশি উঠে গেল তার।

“অস’ভ্য রিক চৌধুরী, ছাড়ুন আমায়।”

ঐশ্বর্য ফের উৎসার ঠোঁটে শব্দ করে ভেজা চুমু খেলো।
“বেইবি ইউ আর টেস্টি।”

উৎসা ফোঁস করে উঠে।
“ছাড়ুন!”
ঐশ্বর্য হয়তো শুনলো না,উৎসার কে ধীরে ধীরে সুইমিং পুলের উপরে নিয়ে আসে। উৎসা যেনো হাফ ছেড়ে বাঁচল, মনে হচ্ছিল এই বুঝি প্রাণ পাখি বেরিয়ে যেতো।কী ভ’য়ংকর লোক, এখুনি তাকে মে’রে ফেলতো।
উৎসা রাগে দুঃখে গজগজ করতে করতে নিজের রুমের দিকে গেল। ঐশ্বর্য সেখানেই বসে রইল। বসে আছে বললে ভুল হবে, ঐশ্বর্য কিছুটা দূরেই গিয়ে শুয়ে পড়লো।
সকাল সকাল ঐশ্বর্য কে কোথাও না পেয়ে করিডোরের দিকে আসলো উৎসা।
ভেতর থেকে এক রাশ দীর্ঘ শ্বাস বেরিয়ে এলো উৎসার। ঐশ্বর্য ওখানেই শুয়ে আছে।
ঐশ্বর্য নড়েচড়ে উঠলো,ঘুম ঘুম চোখে তাকায় উৎসার দিকে। কোনো রকমে উঠে বসলো ঐশ্বর্য,উৎসা এখনও তাকিয়ে আছে।
“গুড মর্নিং সুইটহার্ট।”

উৎসা কোনো রিপ্লাই করলো না,উঠে দ্রুত পায়ে সেখান থেকে ভেতরের রুমে চলে গেলো ।
ঐশ্বর্য কিছুটা চেঁচিয়ে বলল।
“সুইটহার্ট অ্যাম স্যরি।”
উৎসা আশ্চর্য হয়ে গেলো ঠোঁট কিঞ্চিৎ ফাঁক হয়ে গেল তার। নিজের মুখ চেপে ধরে সে, ঐশ্বর্য বাঁকা হা’সলো। উৎসা অবাক হলো, ঐশ্বর্য কিসের জন্য স্যরি বললো? যত্তসব ঢং, আসলেই পাগল। না হলে এত কিছু করে এখন স্যরি বলছে, ফা’ল’তু মানুষ। ফা’ল’তু কাজকর্ম , তাকে কী না টেস্টি…

বাকিটা ভাবতেই থতমত খেয়ে যাচ্ছে উৎসা।

চলবে………….।✨