শিরোনাম পর্ব-০২

0
95

#শিরোনাম
#পর্বসংখ্যা_০২
#মুসফিরাত_জান্নাত

স্বামীকে অন্য রমনীর হাত ধরে বাবা হওয়ার আনন্দে ভাসতে দেখে হৃদয় ভেঙে চুরমার হয়ে যায় জেরিনের।
মনে পড়ে যায় সাত বছর আগের কথা।যখন তাদের সম্পর্ক থাকাকালীন সে প্রথম জানতে পেরেছিলো নিজের বন্ধ্যাত্বের কথা।জুবায়ের তখন জেরিন বলতে পা’গল ছিলো।সবকিছুর উর্ধ্বে গিয়ে তার জেরিনকে চাই এমন মনোভাব ছিলো।এই মনোভাব, এই চাওয়াটা এতোই প্রবল ছিলো যে সবকিছুকে তুচ্ছ করে, সব বাধা বিপত্তি উপেক্ষা করে জেরিনকে নিজের করে নিয়েছিলো সে।জেরিন নিজের বন্ধ্যাত্বের মতো ওমন একটা খারাপ সংবাদ শুনে প্রথমে বিয়ে করতে রাজী হয়নি।জুবায়ের নিজেই বুঝিয়ে রাজি করেছিলো।জেরিনের হাতদুটো ধরে ব্যাকুল হয়ে বলেছিলো,

“আমার সন্তান লাগবে না জেরিন।আমার শুধু তোমাকে লাগবে।শুধু তোমাকে।আমি অন্য কাওকে বিয়ে করলে সে আমাকে সন্তান সুখ নাও দিতে পারে।অথবা দিতেও পারে।কিন্তু আমি একজন প্রেমিক হয়ে আমার প্রেমিকাকে ঠকাতে পারি না।তুমি আমাকে যেই প্রেমের সুখ দিয়েছো, যতটুকু মানসিক প্রশান্তি দিয়েছো সেটা আঁকড়ে ধরে আমি বাঁচতে চাই।তুমি নামক অবলম্বনটুকু না পেলে এই দুনিয়ার সর্ব সুখ, সর্ব সফলতা তুচ্ছ আমার নিকট।তুমিহীনা দুনিয়ায় কোনো কিছুই আমাকে সুখী করতে পারবে না।প্লিজ আমাকে অসুখী করে চলে যেও না।আমি শুধু তোমাকেই চাই।আমার বেঁচে থাকার সম্বল তুমি।এটুকু কেড়ে নিয়ে আমাকে জীবন্ত মৃ’ত্যু দিও না প্লিজ।অনেক ভালোবাসি তোমায়।”

কি যেনো ছিলো জুবায়ের এর সেদিনের বলা কথাগুলোয়।জেরিনের প্রেমিকাসুলভ মন বাস্তবতাকে প্রকট করে আবেগের কাছে ধরে রাখতে পারেনি।তার মনে হয়েছিলো জুবায়ের ভিন্ন কোনো বাস্তবতাই এ দুনিয়ার বুকে প্রকট নয়।মাত্র ছয় মাসের প্রণয়ের সম্পর্কেই পরিণয়ে জড়িয়েছিলো তারা।জেরিনের খুঁতকে ভালোবাসার সুতোয় সযত্নে গেঁথে রেখে জুবায়ের ঢাকঢোল পিটিয়ে বিয়ে করেছিলো মেয়েটিকে।আজ কোথায় গেলো জুবায়ের এর সেই ভালোবাসা?কোথায় গেলো তার অতটা ব্যাকুলতা?তার বড় মুখ করে বলা সন্তান নামক তুচ্ছতা কোথায় হারালো?সেই সন্তানের মোহেই তাকে তুচ্ছ করে অন্য নারীর হাত কি করে ধরলো সে?এই হাত দিয়েই না জেরিনকে আঁকড়ে ধরে জুবায়ের বাঁচতে চেয়েছিলো একসময়?সেই চাওয়াটা এত দ্রুতই বদলে গেলো?এত দ্রুত?

জেরিনের চোখ ঝাপসা হয়ে আসে।বুক ছিটকে কান্না আসে।গলা চে’পে ধরে কিছু একটা।সে কাঁদতে চায় না।বেইমানদের সামনে, প্রতারকদের সামনে নিজের অনুভুতির প্রকাশ সে করতে চায় না।কিন্তু চোখ তার নিয়ন্ত্রণ হারায়।টইটম্বুর হয়ে যায় নোনাজলে।ব্যাথার দানাটুকু আড়ালে হারাতে দু চোখ বন্ধ করে ফেলে সে।দাঁত দিয়ে ঠোঁট কামড়ে ধরে তাচ্ছিল্যের হাসি হেসে বলে,

“এক হাতে ক’জনের হাত ধরতে পারো হে পুরুষ? মনের দাঁড়িপাল্লায় একই ভারে ক্ষণে ক্ষণে কি করে দুপাশের ওজন বদলাও?এত সক্ষমতা কীসে তোমাদের?পুরুষ নামক বিশেষণ পেয়ে?”

জেরিনের কথায় মুখটা চুপসে যায় জুবায়ের এর।তটস্থ চোখে সে একবার জেরিনকে দেখে। আবার পাশে দাঁড়ানো সন্তানসম্ভবা রমনীকে দেখে।জেরিন ততক্ষণে চোখের পানিটুকু লুকিয়ে ফেলে।শূণ্য চোখে তাকিয়ে বলে,

“বার বার বলেছিলে তোমার সন্তান লাগবে না।অথচ এই সন্তানের মোহেই বিয়ের এত বছরে এসে পর নারীর সাথে পরকীয়ায় গা ভাসাইলা?এ কেমন না লাগা তোমার?এ কেমন না লাগা?”

জুবায়ের নির্বাক।ঘটনাক্রমে এভাবে যে জেরিনের সামনে ধরা পড়ে যাবে ভাবেনি সে।ভাবেনি মনোয়ারা ও জিনাতও।ফলে সব আনন্দ এক ছুটে পালিয়ে যায়।মুখের ভাষায় কুলুপ এঁটে যায়।তাদেরকে খুশির ঝলকে মাতিয়ে রাখা পাশে দাঁড়ানো রমনী এসব দেখে ভ্যাবাচ্যাকা খায়।এতক্ষনে এসে সে অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে,

“উনি কে জুবায়ের?এসব কি বলছেন উনি?”

জুবায়ের হয়তো এই কথাটার ধাক্কার জন্যই ভী’ত ছিলো এতসময়।প্রশ্নটা শুনতে বেশি সময় লাগলো না।কিছুটা সময় নিয়ে নিজেকে ধাতস্থ করলো সে।মেয়েটি আবারও বললো,

“কি হলো?কথা বলছো না কেনো?আম্মা, জিনাত কে উনি?”

জুবায়ের নিজেকে ধাতস্থ করতেই বলে উঠলো,

“তুমি উত্তেজিত হইয়ো না কনা।মাত্রই সুখবরটা শুনালে।এখন শান্ত হও।বাড়িতে চল। বিশ্রাম নিবে।তারপর সবকিছু বলবো।”

কনা শান্ত হয় না।বরং আরও অশান্ত হয়ে জবাব চায়,

“কে উনি?কি লুকাতে চাইছো বলো?”

এ প্রশ্নের কি জবাব দিবে তা ভেবে অস্থির হয়ে যায় জুবায়ের।মুখ শুকিয়ে যায় মনোয়ারা ও জিনাতেরও।তাদের জবাব দেওয়ার কাজটুকু জেরিন নিজেই করে দেয়।তাচ্ছিল্য করে হেসে বলে,

“তার আগে বলেন আপনারা লুকিয়ে বিয়েটা করে ফেলেছেন নাকি বাচ্চা পেটে আসলে তবেই বিয়ে করবে এই চুক্তিতে তার মতো বদ লোকের সাথে দেহ মিলিয়েছেন?কোনটা?”

জেরিনের কথা শুনে রাগে গা ঘিনঘিন করে ওঠে কনার।সে চোখ রাঙিয়ে বলে,

“মুখ সামলে কথা বলবেন?আমাকে এসব বলছেন কোন অধিকারে?কে আপনি?”

জেরিন নিজ মুখে জোরপূর্বক দুঃখের হাসি বজায় রেখে কণ্ঠ খাদে নামায়।শান্ত কণ্ঠে বলে,

“যার সন্তান পেটে ধরার আনন্দে গা ভাসাচ্ছিলেন এত সময়।আমি তার প্রথম ভালোবাসা, প্রথম স্ত্রী।আমার জামাই আমার অনুমতি ব্যতিরেকে অন্য কাওকে দ্বিতীয় বিয়ে করলো, নাকি না করেই সন্তান নিলো তা জানতে চাইতে পারি না?না মানে সে কেবল আমাকে এভাবেই ঠকাইলো নাকি ইসলাম মতে বিয়ের পরের পরোকীয়ার শাস্তিতে নিজের মৃ’ত্যু ডেকে এনে আমাকে বিধবা বানানোর পায়তারা করলো সেটাই জানতে চাইছি আরকি।”

তার কথায় কনার দুনিয়া যেনো ওলট-পালট হয়ে যায়।নিজের কানকে যেনো বিশ্বাস করতে পারে না সে।জুবায়ের বিবাহিত এটা তার অজানা।হুট করে এমন খুশির দিনে এ ধরনের সত্যি শুনে মাথায় আস্ত একটা আকাশ ভেঙে পড়ে তার।সে অবিশ্বাস্য চোখে তাকিয়ে থাকে।উত্তেজিত হয়ে জিজ্ঞেস করে,

“এটা কি সত্যি জুবায়ের, এটা সত্যি আম্মা?উনি আগে বিয়ে করেছিলেন?এটা কেনো লুকিয়েছেন আপনারা।মিথ্যা বলে কেনো আমাকে বিয়ে করিয়েছিলেন?কি দোষ ছিলো আমার?কেনো প্রতারণা করলেন আমার সাথে?জবাব দিন?”

ক্লিনিক মানুষে ভর্তি।এমন পরিবেশে এমন শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থায় পড়তে হবে তা ক্ষুণাক্ষরেও ভাবেনি জুবায়েররা কেও।ফলে নিজেদের সামলে নিতে সময় লাগলো তাদের। আগে হোক পাছে হোক এই ঘটনার মুখোমুখি তাদের হতেই হতো।কিন্তু এভাবে যে হতে হবে তা ভাবেনি জন্যই এতোটা সময় নিতে হলো।জুবায়ের চট করে কনার হাত আঁকড়ে ধরলো।ঠিক যেভাবে একদিন জেরিনের হাত আঁকড়ে ধরে বিয়েতে রাজী করিয়েছিলো, ঠিক সেভাবেই তার হাত আঁকড়ে ধরে পরিস্থিতি সামাল দিতে নানান বাহানার কথা শুনিয়ে শান্ত করতে চাইলো কনাকে।সময় পেরুতেই মনোয়ারা ও জিনাতও যেনো মনে জোর ফিরে পেলো।নিজেদের রুপে ফিরে গেলো তারা।কনার পেটে যখন একবার সন্তান চলেই এসেছে তখন আর বাহানা করে কি লাভ?এটাই তো তাদের দুজনকে মুখোমুখি করে জেরিনের পরাজয় বরণ করে কুকুর বেড়ালের মতো উচ্ছিষ্ট খেয়ে সংসার করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময়। অথবা ডিভোর্সির খেতাবপ্রাপ্তা হয়ে বাড়ি থেকে দূর হওয়ার সময়।দু চোখ মেলে এই চোখের শান্তিটুকুই তো দেখতে চেয়েছিলেন ওনারা।মনোয়ারা গজগজ করে বলেন,

“হ্যাঁ ও সত্যি বলতেছে।ও জুবায়ের এর প্রথম বউ।কিন্তু শুধু বউ না বলে বলতে হবে বন্ধ্যা বউ।জীবনে কোনোদিন মা হতে পারবে না জেনেই আমার ছেলেকে প্রেমের জালে ফাঁসাইছিলো।তারপর বিয়ে করে আমার সোনাধারী বংশকে নির্বংশ করে ফেলতে জুড়ে বসেছে।বাজে মেয়েলোক!”

জেরিনের দিকে ঘৃণাভরে তাকিয়ে কথাগুলো বলে থামলেন তিনি।তারপর কনার দিকে কোমল চোখে চেয়ে বললেন,

“কিন্তু আল্লাহ যদি চায় মানুষ ফাঁসায়া কি আর বেশিদিন টিকতে পারে বলো?আমার জুবায়ের এর সুবুদ্ধি হইছে।ও তোমাকে বিয়ে করতে না করতেই আল্লাহ সন্তানের মুখ দেখার ব্যবস্থা করে দিছে।এখন তোমাকে আমরা ধুমধাম আয়োজন করে ঘরে তুলতে চাই।তুমি চাইলে ওই মেয়েকে তালাক দিয়ে বিদায় করে দিবে জুবায়ের।সমস্যা কি?”

জিনাত গদগদ হয়ে বলে,

“এটাই উচিত কর্ম হবে।এমন ফাঁসাফাঁসির নেচার থাকা মেয়েলোককে ঘরে রাখা উচিত হবে না।না কি বলো নতুন ভাবি?”

কথাটা বলে কিভাবে যেনো হাসলো জিনাত।জুবায়ের এর দিকে তাকিয়ে তাদের কথায় পূর্ণ সমর্থনের চেহারা দেখতে পাওয়া গেলো।জেরিন রোষিত কণ্ঠে বললো,

“ফাঁসাফাঁসির নেচার তো তোমাদের জিনাত।তোমাদের মতো নিকৃষ্ট মানুষদের ঘর করার শখ আমারও নেই।আমি নিজেই ডিভোর্স দিয়ে চলে যাবো তোমার ভাইকে।”

এ কথা শুনে বিদ্রুপ করে হাসে তারা।মেয়ের তেজ আছে বলতে হয়।এই তেজটুকু অবশ্য তাদের চোখে মুখে শান্তিই খেলে দিলো।ঝামেলা নিজে থেকে বিদায় হতে চাইলো মন্দ হবে না।এদিকে এসব দেখে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে কনা।মনোয়ারা ও জিনাতের কথাগুলো কানে বাজতে থাকে তার।মেয়ে হয়ে জন্মেও আরেক মেয়েকে কেবল বন্ধ্যা বলেই এতোটা ঘৃণা করা যায়?শাশুড়ী বা ননদ বলেই কি এটা সম্ভব?নাকি যে কারোর জন্যই তারা এমন ঘৃণা ভরে কথা বলতেন?আর জুবায়েরও বা এগুলোর সাথে একমত পোষণ করছে কি করে?মানসিকভাবে কি কোনো কালে ওই মেয়েটার স্বামী হয়ে উঠতে পারেনি সে?যদি নাই পারে তবে বিয়ে করেছিলো কেনো?কেনো করেছিলো ভালোবাসার ছলনা?জেরিনের শক্ত খোলসের আড়ালের সবটুকু দুঃখ পড়ে ফেলে তার অভাবের সাথে যুচতে থাকা দয়ালু হৃদয়।জুবায়েরদের দেখতেই মন বিষিয়ে ওঠে।এই মানুষগুলো কেমন ধাঁচের তা সে হাড়ে হাড়ে বুঝতে পারছে।যখন তার বাবার অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে, অতগুলো পাওনা টাকার বিনিময়ে মিষ্টি মধুর কথায় হুট করেই তাকে বিয়ে করেছিলো তখনই তার মন বলছিলো এরা অত ভালো নয়।কিন্তু মেয়ে মানুষের মন তো?সংসারের টানে, কবুল বলার শক্তিতে তবুও মন দিয়ে ফেলেছিলো।এদের নিজের করে ভেবে আপন করেছিলো।অথচ মানুষগুলো এতো খারাপ?এতো খারাপ?এদের কাছে মানুষের কোনো মূল্য নেই?মূল্য কেবলই সন্তান জন্ম দেওয়ার সক্ষমতা বা অক্ষমতার উপর?সে অক্ষম হলে তাকেও কি ঠিক এভাবেই ছুঁড়ে ফেলে দিবে বলে বিয়েটা এমন গোপন রেখেছিলো?যদি সে সন্তানসম্ভবা না হতো তবে তার পরিণতিও তো এই মেয়ের মতোই হতো।ভাবতেই কেমন একটা লাগে তার।চোখ দু’টো জ্বলে ওঠে স্বভাবের বশে।সে তাচ্ছিল্য করে বলে,

“ আমাকে ফাঁসিয়ে ছেলের বউ বানিয়ে আপনার ছেলেকে সেই মেয়ের ফাঁসানোর শোধটুকু তুললেন নাকি আম্মা?”

এমন কথা শুনতেই আঁতকে ওঠে জুবায়ের।কনার কথা কোনো অশনিসংকেত দেয় তাকে।গা ছমছম করে ওঠে।সে কনার হাত নিজের হাতের মুঠোয় পুড়ে বলে,

“এসব তুমি কি বলতেছো কনা?আমরা তোমাকে ফাঁসাবো কেনো?আমরা তো তোমাকে বউ বানিয়েছি।আমাদের সন্তান হবে দেখো।আমরা ঘর পাতবো এক সনে।ফাঁসালে কি কেও ঘর পাততো বলো?সন্তানই কি নিতো বলো?”

কথাটা শুনতেই গায়ে আগুন জ্ব’লে উঠলো কনার।সে তো জেরিনের সাথেও ঘর পেতেছিলো।ওটা তাহলে কি?সবাইকে অবাক করে দিয়ে ছিটকে গিয়ে নিজের হাতকে ছাড়িয়ে নিলো সে।কাঠ হয়ে বললো,

“আমাদের সন্তান হবে না জুবায়ের।ও কেবল আমার সন্তান হবে।আমার।কোনো প্রতারক পুরুষের পরিচয় তো দূর ছায়াও আমার সন্তান পাবে না।আমি যাচ্ছি।ভুলেও আমার পিছু নিবে না।কোনো প্রতারকের সাথে আমি ঘর বাঁধবো না।যে পুরুষ অন্য নারীর সাথে প্রতারণা করতে পারে, সে পুরুষ আমার সাথেও করতে পারে।পঁচা শামুকে পা কে’টেছে বলে সেখানে পা বসিয়ে রাখার মেয়ে আমিও নই।ক’ষ্ট হলেও এক ঝটকায় ঠিকই উঠে আসবো আমি।যথাসময়ে ডিভোর্স লেটার পাঠিয়ে দিবো।এবং এটাই তোমার প্রাপ্য।”

তার কথার দমকা হাওয়ায় হুট করেই পরিস্থিতি বদলে গেলো।তার এমন প্রতিক্রিয়ায় হতভম্ব হয়ে গেলো সবাই।জুবায়ের, জিনাত বা মনোয়ারা তো বিশ্বাস করতে পারলোই না কনা এমন কথা বলবে।জেরিনেরও বিশ্বাস হতে কষ্ট হলো।সে কেবল ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকলো।জুবায়েরকে ঘৃণাভরে কথাগুলো বলে জেরিনের কাছে এগিয়ে এলো কনা।তার হাতটি ধরে বললো,

“আমাকে ভুল বুঝবেন না বোন।একজন নারী হয়ে অন্য নারীর ঘর ভাঙার কারণ হওয়ার মতো মেয়ে আমি নই।ভাগ্যের দোষে এমনটা হয়ে গিয়েছে।পারলে আমাকে ক্ষমা করবেন বোন।আমি না জেনে আপনার সংসারে প্রবেশ করেছি।আমি নিজে থেকেই আমার অজানার ভুল সংশোধন করে নিবো।কিন্তু যে বিশ্বাসঘাতক জেনেশুনে এমন নিকৃষ্ট কাজ করেছে তাকে কখনো ক্ষমা করবেন না।বিশ্বাসঘাতকদের ক্ষমা করা অর্থ আরেক বিশ্বাসঘাতক জন্মের পথ প্রশস্ত করা।”

চলবে