#স্বপ্ন_জুড়ে_তুমি
#পর্ব_১৪
#সামসুন_নাহার
“আজ খালেদরা প্রিয়শাকে দেখতে আসছে।আরহান প্রিয়শাকে নাকি অনেক আগে থেকে পছন্দ করে তাই আজকে তারা পাকা কথা বলতে আসছে।আরহান ছেলে হিসেবে অনেক ভালো তাই আমি আর মানা করিনি।”
এই উপরক্ত কথাটি শুনে আতিফা বেগম ও আয়শা খুশি হলেও প্রিয়শা খুশি হতে পারল না।প্রিয়শার কায়া যেন নড়ে উঠল।সবকিছু বোধহয় থমকে গেছে ক্ষনিকের জন্য।শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে চোখ দিয়ে আপন গতিতে পানি বের হচ্ছে।এই কথায় যেন তার চোখের পানির কারণ।
মাথায় শুধু একটা কথায় বাজছে। চোখ দিয়ে টুপটুপ পানি বের হচ্ছে আপন গতিতে।বুকে হৃৎপিণ্ডটায় ব্যাথা অনুভব হচ্ছে।
আতিফা বেগম খুশি হয়ে হাসি মুখে নিজের স্বামীর উদ্দেশ্যে বললেন,
” অনেক ভালো কথা বললে তুমি।তোমাদের এসব কথা কখন হলো।আমি তো জানতাম না।”
সাইদুর রহমান বললেন,
“কয়েকদিন আগে যখন ব্যবসার কাজে চট্টগ্রাম গেলাম।তখন খালেদ জানিয়েছিল তাদের প্রিয়শাকে পছন্দ।তাছাড়া আমরা দুই বন্ধু ওটা ভেবেই রেখেছিলাম। যেকোনো দিন আমাদের বাসায় আসবে।তবে ভাবিনি আজকে আসবে।”
“যাই হোক।আমার মেয়ের কপালে এত ভালো সম্মন্ধ আসছে এই অনেক।আমি বরং যাই। ভালো ভালো রান্নার ব্যবস্থা করি।”
আতিফা বেগম চলে গেলেন।সাইদুর রহমান বাকা হেসে আয়শাকে বললেন,
“কি হলো আয়শা কেমন লাগল এবার।তুমি তো সবসময় আমার মতের বিপক্ষে যাও। এবারও কি মতের বিপক্ষে যাবে।প্রিয়শাকে সুন্দর করে সাজিয়ে নিয়ে আসো”
বলে সাইদুর রহমান চলে গেলেন।প্রিয়শার সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন আয়শা।তিনি পিছনে ঘুরে দেখলেন প্রিয়শা উলটো দিকে মুখ করে বসে আছে।শরীর মৃদু কাঁপছে।অজানা ভয় পেয়ে গেলেন।মনের শঙ্কাকে প্রশয় দিয়ে তিনি ঘরের দরজা লাগিয়ে প্রিয়শার কাছে বসলেন।প্রিয়শার কাঁধে হাত রেখে মৃদু স্বরে নমনীয় কন্ঠে বলল,
“প্রিয় কি হয়েছে মা।”
আয়শার এমন আদুরে কন্ঠ শুনে প্রিয়শা আর নিজেকে আর ধরে রাখতে পারল না।হুহু করে কেঁদে দিল।আয়শাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দিল।হেঁচকি উঠে গেছে।আয়শা মনে যা ভয় পাচ্ছিলেন তাই কি হলো।তিনি প্রিয়শাকে আগলে নিলেন।প্রায় অনেকটা সময় অতিবাহিত হওয়ার পর আয়শা প্রিয়শাকে বলল,
“আমাকে সব কিছু খুলে বল।এভাবে চুপ করে থাকিস না।”
প্রিয়শা মরুর বুকে যেন পানির দেখা পেল।মনিকে সে অনায়াসে সবকিছু বলে দিতে পারে।প্রিয়শার কাঁদতে কাঁদতে হেচকি উঠে গেছে।প্রিয়শা বলল,
“ম-ম মনি আ আ আমি একএকজন। ”
আয়শা প্রিয়শাকে থামিয়ে পানির গ্লাস এগিয়ে দিয়ে বলল বলল,
“আগে পানি খেয়ে নি।তারপর বল।”
প্রিয়শা পানি খেল।নিজকে শক্ত করে বলল,
“মনি আমি একজনকে ভালোবাসি।”
প্রিয়শার বলা কথাটি যেন আয়শার আছে অনেক ভারী লাগল।সাইদুর রহমান যে এগুলো পছন্দই করেনা।তাই তো তিনি ছেলে মেয়েদের কড়া শাসনে রাখেন।আয়শা প্রিয়শাকে আশ্বস্ত করে বল,
“সবকিছু আমাকে খুলে বল।কিছু লুকাবি না।নাহলে আমি কিছু করতে পারব না।”
প্রিয়শা একে একে তার আর ফাইয়াজের সবকিছু খুলে বলল।সবকিছু শুনে আয়শা অবাকের সপ্তম পর্যায়ে গেলেন।সাইদুর রহমানের কড়া শাসনে থেকে প্রিয়শা প্রায় একবছর যাবত প্রেম করছে।তবে এখন অবাক হওয়ার সময় না।এখন ঠান্ডা মাথায় কাজ করতে হবে।আয়শা শক্ত কন্ঠে প্রিয়শাকে বলল,
“এতই যখন ভালোবাসিস তাহমিদকে তাহলে তাকে প্রস্তাব নিয়ে আসতে দেইস নি কেন।”
প্রিয়শা কান্না করতে করতে বলল,
“আমি ভেবেছিলাম এই বছরটা গেলে নাহয় বলা যাবে।”
আয়শা প্রিয়শাকে ধমকে বলে উঠলেন,
“ভাবলেই তো সবকিছু হয়না।তুই জানিস না তোর আব্বু কেমন।তবুও তুই তাহমিদকে প্রস্তাব নিয়ে আসতে মানা করেছিস।এখন তাহমিদ মনে করে আরহানকে বিয়ে করো।”
আয়শার এমন কথায় প্রিয়শা শব্দ করে কেঁদে উঠল।আয়শা পরল মহা ঝামেলায়।এখন কি করবে।প্রিয়শা যে এমন কান্ড ঘটাবে তিনি ভাবতেই পারেননি।প্রিয়শার সব কথা শুনে তার মাথা ঘুরছে।আয়শা যতই সাইদুর রহমানের সাথে সেবিষয়ে তর্ক করুক না কেন এই বিষয়ে কি কথা বলা যায়।আয়শা বললেও সাইদুর রহমান মেনে নিবেন না।তিনি আরও জেদ ধরে তাড়াতাড়ি মেয়ের বিয়ে দিবেন।কি করব আয়শা ভেবে পাচ্ছে না।
প্রিয়শার কান্নার শব্দে আয়শা নিজের ঘোর থেকে বেরিয়ে আসল।তিনি আবার প্রিয়শাকে ধমকে বললেন,
“চুপ।এখন কান্না করে কি হবে।বাসায় মানুষ আছে চুপ করে থাক।মুখ দিয়ে কোনো শব্দ করবি না।”
প্রিয়শা কেঁদেই যাচ্ছে।তার মনি তাকে এভাবে বকছে তার আব্বু শুনলে তো তাকে শেষ করে দিবে।তবে কি এখানে তার ও তাহমিদের প্রনয়নের সমাপ্তি ঘটল।কথাটি মাথায় আসতে প্রিয়শা আবার কাঁদতে লাগল।
আয়শা প্রিয়শাকে একনজর দেখল।কান্নার ফলে চোখ মুখ ফুলে গেছে।টমেটোর মত লাল হয়ে গেছে মুখ।আয়শা লম্বা একটা নিশ্বাস ফেলে নিজেকে শান্ত করল। এখন যা করতে হবে ঠান্ডা মাথায় করতে হবে।এভাবে ধমকে হবে না।তিনি শান্ত কণ্ঠে প্রিয়শার মাথায় হাত রেখে বলল,
“কাঁদিস না মা।আমি দেখছি কি করা যায়।আমি আমার সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করব তোদের হয়ে কথা বলতে।”
প্রিয়শা যেন একটু ভরসার হাত পেল।প্রিয়শাকে শান্ত হতে দেখে আয়শা দীর্ঘশ্বাস ফেললেন। কারন এরপর যে কথাটি বলবেন তিনি সেই কথা শুনে প্রিয়শা হয়তো আরও ভেঙ্গে পরবে।আয়শা প্রিয়শাকে বলল,
“এখন আমি তোকে রেডি করে দিব।তুই ওদের কাছে যাবি।”
আয়শার এমন কথায় প্রিয়শা এক ঝটকায় নিজের হাত সরিয়ে নিয়ে অবিশ্বাসের সাথে বলল,
“মনি তুমি কি বলছ।তোমার মাথা ঠিক আছে।সব জেনেও তুমি ওদের সামনে আমাকে যেতে বলবে।আমি পারব না যেতে।”
আয়শা ভেবেছিল প্রিয়শা এমন করবেই।তিনি আবার বললেন,
“প্রিয় সোনা মা আমার।বাসায় মানুষ আছে এখন যদি তাদের সামনে না যাস তাহলে তোদের পরিবারের মান সম্মান থাকবে।আচ্ছা মান সম্মানের কথা বাদ দিলাম এখন যদি তোর আব্বু তোর এসব বিষয়ে জানে তাহলে তোর আব্বু কি করবে জানিস?”
প্রিয়শা প্রশ্নসূচক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল নিজের মনির দিকে।আয়শা আবার বললেন,
“তোকে এই মুহুর্তে জোর করে আরহানের সাথে বিয়ে দিয়ে দিবে।এটা নিশ্চয় তুই চাস না।তুই যদি এখন ঝামেলা করিস তাহলে যেই টুক সুযোগ আছে সেটাও হাত ছাড়া হবে।তাই বলছি এখন যা হচ্ছে হতে দে।এরা সবাই যাক তারপর ঠান্ডা মাথায় ভেবে চিনতে করা যাবে।”
তাহমিদের সাথে তার একেবারেই বিচ্ছেদ হবে প্রিয়শা সেটা কখনো মানতে পারবে না।আর তার মনি এখন ঠিক কথায় বলছে। তার ঝামেলার জন্য যদি তার আব্বু এখন বিয়ে দেয় তাহলে সে চিরদিনের জন্য অপরাধী হয়ে থাকবে।নিজের কাছে আর তাহমিদের কাছেও।বেঁচে থেকেও যেন মৃতের মত হবে।প্রিয়শা নিরবে চোখের পানি ফেলল।
প্রিয়শার নীরবতাকে সম্মতির লক্ষন ধরে আয়শা প্রিয়শা শাড়ি পরিয়ে দিলেন।সাথে চোখে কাজল।তিনি প্রিয়শাকে আরও সাজাতে চাইলে প্রিয়শা বাধ সাঝল।তাই তিনি আর জোর করলেন না।সাজানো শেষে তিনি প্রিয়শার দিকে তাকালেন।সামান্য সাজেও যেন অপুর্ব লাগছে প্রিয়শাকে।যেন নজর ফেরানো দায়।
……………………………..
ড্রয়িং রুমে সোফার মাঝখানে শাড়ি পরিহিত রমনীর দিকে মন্ত্রমুগ্ধের ন্যায় তাকিয়ে আছে একজোড়া চোখ।যেন এখনই ভষ্ম করে দিবে তার হৃদয়। চোখ ফেরাতেই ইচ্ছে করছে না।
হঠাৎ পাশ থেকে কেউ ফিসফিস করে বলল,
“বিয়ের আগেই এভাবে আপুকে দেখছিস।বিয়ের পর কি হবে ভাইয়া।”
আনিসার কথায় আরহানের ঘোর ভাঙ্গল।আরহান বোনের দিকে করমর দৃষ্টিতে তাকাল।একটু ভালো করে দেখতেও দেবে না তার স্বপ্নের প্রিয়সিকে।আরহান বোনের মাথায় হালকে মেরে বলল,
“চুপ করে থাক কোনো কথা বলবি না। বেশি কথা বলা শিখে গেছিস।”
আনিসা আর কিছু বলল না। তবে এর প্রতিশোধ সে নিবেই।আরহানের মা আসমানি প্রিয়শার চিবুক ধরে বললেন,
“দারুণ সুন্দর লাগছে।কারো যেন নজর না লাগে।আমার ছেলের পছন্দের প্রশংসা করতেই হয়।কি দারুণ পছন্দ।”
বাড়ির সবার মুখে হাসির ঝিলিক।তনে একজন ছাড়া।প্রিয়শার কথাগুলো ভালো লাগল না।কথাগুলো বুকের মধ্যে কাটার মত বিধল।তার নিজের জন্য আজ এই অবস্থা। ইচ্ছে করছে একছুটে তাহমিদের কাছে যেতে।কিন্তু তা যে সম্ভব না এই মুহুর্তে।
আসমানি একটা রিং বের করে আরহানের হাতে দিয়ে বলল,
“আমার ভবিষ্যত ঘরের রানীকে এটা পড়িয়ে দাও।আমার ঘরের সুখকে।”
আরহান হেসে হাতে আংটি নিয়ে প্রিয়শার সামনে দাঁড়াল।কিন্তু প্রিয়শা এখনো বসে আছে।সবার নজর এখন প্রিয়শার দিকে।আয়শা প্রয়শার কাছে গিয়ে প্রিয়শাকে দাঁড় করিয়ে হেসে বললেন,
“মেয়ে তো লজ্জায় শেষ।এখন এত লজ্জা পেতে নেই।”
আয়শার কথায় সবাই হাসল।প্রিয়শা নিজের হাত মুঠোবন্দি করে রেখেছে।আয়শা প্রিয়শার হাত আরহানের দিকে এগিয়ে দিল।আরহান হেসে প্রিয়শার অনামিকা আঙ্গুলে আংটি পরাতে গিয়ে দেখল সেখানে একটি সুন্দর ডায়মন্ড রিং চকচক করছে।
আরহানের হৃদয় ধক করে৷ উঠল।মনে প্রশ্ন জাগল তবে কি প্রিয়শা অন্য কাউকে ভালোবাসে।
সাইদুর রহমান প্রিয়শার এমন কাজে রাগান্বিত হলেন কিন্তু প্রকাশ করলেন না।তিনি কন্ঠ স্বাভাবিক রেখে বললেন,
“প্রিয়শা এত দামী আংটি কই পেলে তুমি।আমি তো কিনে দেয়নি।”
নিজের আব্বুর প্রশ্নে প্রিয়শা নিজের আঙ্গুলের দিকে নজর দিল।এই আংটি তো তা তাহমিদ তাকে দিয়েছে ভালোবাসার অংশ হিসেবে।আংটি দেখে প্রিয়শার কষ্টগুলো বারতে লাগল।প্রিয়শা জানে না তাহমিদ এসব শুনলে কেমন প্রতিক্রিয়া দিবে।প্রিয়শা জানে না।কিন্তু তাহমিদ এসব শুনলে হয়তো পাগলের মত করবে।
সাইদুর রহমান প্রিয়শার উত্তরের আশায় আছে।কিন্তু প্রিয়শা নিজের ভাবনায় ব্যস্ত।সাইদুর রহমান আবার বললেন,
“প্রিয়শা আমি কিছু জিজ্ঞেস করেছি তোমাকে।”
প্রিয়শার অসহায় দৃষ্টিতে তাকাল আয়শার দিকে।আয়শা প্রিয়শার মনে কথা বুঝল।আয়শা মিথ্যে হেসে সবার উদ্দেশ্যে বলল,
“আজ প্রিয়শার জন্মদিন তাই গিফট হিসেবে আমি এই আংটি প্রিয়শাকে দিয়েছি।আমি বরং প্রিয়শাকে অন্য আঙ্গুলে আমার দেওয়া আংটি পড়িয়ে দিচ্ছি।”
আদিল বোনের দিকে তাকিয়ে আরহানের উদ্দেশ্যে বলল,
“আরহান ভাইয়া তুমি বরং আপুর অন্য আঙ্গুলে আংটি পরিয়ে দাও।সবাই এক আঙ্গুলে পরায়।তোমরা নাহয় ব্যতিক্রম হও।ব্যাপারটা কিন্তু ইন্টারেস্টিং হবে।”
আনিসাও আদিলের সাথে তাল মিলিয়ে বলল,
“হুম ভাইয়া আদিল ঠিক কথায় বলেছে।আমরা নাহয় ব্যতিক্রমী চিন্তার শুরু করলাম।”
আরহান হেসে বলল,
“আচ্ছা ঠিক আছে।আন্টি আপনাকে আর আপনার দেওয়া আংটি খুলতে হবে না।”
আরহান প্রিয়শার আঙ্গুলে আংটি পরিয়ে প্রিয়শা মোহনীয় কণ্ঠে ফিসফিস করে বলল,
“কেমন লাগল সারপ্রাইজ প্রিয়।আমি তখন এটার কথায় বলেছিলাম।”
কিছুক্ষণ থেমে।আবার বলল,
“তুমি আমার হৃদয়ে পুরোপুরি এসো।তোমাকে সুখে ভাসিয়ে রাখব।কোনো দুঃখ তোমাকে ছুতে পারবে না।ভালোবাসায় মুড়িয়ে রাখব তোমায়।”
আরহানের এই কথায় প্রিয়শা তাচ্ছিল্যের হাসি হাসল।আরহান প্রিয়শাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখছে।প্রিয়শা তাহমিদকে নিয়ে স্বপ্ন দেখছে।আর তাহমিদকে নিয়ে স্বপ্ন দেখছে আরশি।কার ভাগ্যে কি আছে কেউ জানে না।তবে প্রিয়শা মনে প্রানে চায় তার ও তাহমিদের প্রনয়ন যেন পূর্ণতা পায়।সেটা কি আসলে বাস্তবেও হবে।
#চলবে…………………….
#স্বপ্ন_জুড়ে_তুমি
#পর্ব_১৫
#সামসুন_নাহার
“প্রিয় কিছু বলবে কি।এত তড়িঘড়ি করে ডাকলে।ভার্সিটিতে তো দেখা হতোই অযথা এখানে ডেকে এনে কথা না বলে চুপ করে আছো।কিছু বলার থাকলে তাড়াতাড়ি বলো আমার মিটিং আছে।”
ফাইয়াজ বিরক্ত হয়ে উপরক্ত কথা বলল।এবার নিয়ে দুইবার এই কথাটি বলল কিন্তু প্রিয়শা চুপ করে আছেই।কোনো কথা বলছে না।সকালে হুট করে প্রিয়শা ফাইয়াজকে কল দিয়ে এখানে আসতে বলল।ফাইয়াজ ভার্সিটিতে দেখা করতে চেয়েছিল কিন্তু না প্রিয়শা এখানেই কথা বলবে। তাই একপ্রকার বাধ্য হয়ে আসতে হয়েছে।
ফাইয়াজ বিরক্ত হলো প্রচুর।বিরক্তি মাখা কণ্ঠে প্রিয়শাকে উদ্দেশ্য করে বলল,
“প্রিয়….”
ফাইয়াজের কথা শেষ হওয়ার আগেই হঠাৎ করে প্রিয়শা শব্দ করে কেঁদে উঠল।ফাইয়াজ চকিত দৃষ্টিতে প্রিয়শার দিকে তাকালো। মনে প্রশ্ন জাগল প্রিয়শার কিছু হলো নাকি যে কোনো কথা না বলে কান্না করছে।ফাইয়াজের এতক্ষণের বিরক্তিভাবটা কেঁটে গেল।মনে মায়ার জন্ম হলো।
ফাইয়াজ নিজের দুইহাত প্রিয়শার গালে রেখে মোহময়ী আদুরে কন্ঠে বলল,
“কি হয়েছে প্রিয়।কান্না করতেছ কেনো।কালকের জন্য।আরে আমিই তো কিছুই মনে রাখিনি।তুমি মন খারাপ করো না।তোমার মন খারাপ আর চোখের চল আমাকে বদ্ধ পোড়ায়।আর কাঁদে না সোনা।”
কি আদুরে কন্ঠ। যে কেউ সেই আদুরে কন্ঠে মুগ্ধ হবে।আদুরের কন্ঠের মালিকের এই ভালোবাসা যেন আরো সুন্দর।প্রিয়শা ফাইয়াজের মুখের দিকে তাকালো। ভাবল শুধু সে কান্না করেছে সেই জন্য তার তাহমিদ কতই না চিন্তিত হয়েছে।যখন জানবে তার প্রিয়’র বিয়ে ঠিক হয়েছে তখন কি করবে তার তাহমিদ।সব জানার পর কি তাকে আগলে নিবে নাকি ছুড়ে ফেলে দিবে।ছুড়ে ফেলে দিলে সে কি করবে।
প্রিয়শাকে চুপ থাকতে দেখে ফাইয়াজ আবার আদুরে কন্ঠে বলল ,
“কি হয়েছে প্রিয় বলো আমাকে। ভয় পেও না।আমি আছি তো।তোমার পাশে আমি সবসময় আছি আর থাকব।”
প্রিয়শা দিক,ক্ষণ,কাল ভুলে তাহমিদকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে কেঁদে বলল,
“তুমি সবটা শোনার পর আমাকে ভুল বুঝবে না তো। তুমি আমাকে ছেড়ে চলে যাবে না তো।”
প্রিয়শার কথা শুনে অজানা কারনে ফাইয়াজের মনে ভয় ঢুকল।প্রিয়শা এমন কি বলবে যার কারনে এত ভয় পাচ্ছে।ফাইয়াজ নিজেও ভয় পাচ্ছে কিন্তু নিজের ভয়টাকে সরিয়ে প্রিয়শাকে সাহস জুগিয়ে বলল,
“আচ্ছা আমি এসব কিছুই করব না।আগে বলো কি হয়েছে।”
“আমার আব্বু আমার বিয়ে ঠিক করেছে।”
ফাইয়াজ এক ঝটকায় প্রিয়শার কাছে থেকে সরে আসল।প্রিয়শার এক বাক্যের কথা যেন ফাইয়াজের কাছে হাজার টন মণ এর মত ভারী।যা সহ্য করা অনেক কষ্টকর। এতদিনের নিজের মনের ভেতরে থাকা ভয় সত্যি হয়ে গেল।না কিভাবে তাহমিদ পারবে তার প্রিয়কে অন্যের হতে দিতে।
বুকে চিনচিন ব্যাথা অনুভব হচ্ছে।তাহমিদ ধপাস করে সেখানেই বসে গেল।চারদিক যেন ঘুরছে।চোখ দিয়ে পানি বের হলো।কে বলে ছেলেরা কান্না করেনা।যখন নিজের প্রিয় জিনিস নিজের থেকে অন্যের হয় তখন সেই সময়টা অনেক কষ্টকর।
প্রিয়শা দূরে দাঁড়িয়ে শুধু চোখের পানি ফেলছে।আজ এসবের জন্য শুধুই সে দায়ী।নিজের করা কাজের জন্য অপরাধবোধ কাজ করছে।
হঠাৎ করে ফাইয়াজ উঠে প্রিয়শার দুইহাত চেপে ধরে রাগের সহিত বলল,
“আর তুমিও রাজি হয়ে গেলে বিয়ে করতে।তারমানে তুমি এতদিন ধরে এইদিনটির অপেক্ষা করছিলে।তাই তুমি আমাকে প্রস্তাব নিয়ে যেতে মানা করেছ।আমার ভালোবাসার এই পরিনাম দিলে তুমি এভাবে।এভাবে পারলে আমাকে ঠকাতে।”
তাহমিদ এত জোরে প্রিয়শার হাত ধরছে যে প্রিয়শার অনেক জোরে লাগছে।প্রিয়শা ভয়ে ভয়ে বলল,
“আমার লাগছে তাহমিদ। ”
ফাইয়াজ প্রিয়শাকে ছেড়ে দিয়ে নিজের ডান হাত দিয়ে বুকের বাম পাশে জোরে মেরে বলল,
“আমার যে এখানে ব্যাথা লাগছে,কষ্ট হচ্ছে প্রচুর। বলো কিভাবে আমার ব্যাথা তুমি উপসম করবে।আমার মনে হচ্ছে আমি এখনই মরে যাব।আমি তো তোমাকে ছাড়া অন্য কাউকে নিয়ে নিয়ে করার চিন্তা করিনি।”
ফাইয়াজ বলে প্রিয়শার উলটো মুখ হয়ে নিজের চুল টেনে ধরে চিৎকার করে বলল,
“তুমি এখানে কেনো আসছো আমালে বিয়ের দাওয়াত দিতে।”
ফাইয়াজ এখনো নিজের চুল টানছে।প্রিয়শা আর সহ্য করতে না পেরে ফাইয়াজকে পিছন দিক থেকে শক্ত জড়িয়ে ধরল।ফাইয়াজ সরাতে চাইলেও প্রিয়শা সরল না।প্রিয়শা কান্না করতে করতে বলল,
“এভাবে নিজেকে কষ্ট দিও না।আমি শুধু তোমাকে ভালোবাসি তাহমিদ।তোমাকে ছাড়া আমি অন্য কাউকে বিয়ে করতে পারব না।তোমাকে ছাড়া অন্য কাউকে বিয়ে করার কথা আমিই ভাবতেই পারি না।আমার সবকিছু দিয়ে শুধু তোমাকেই ভালোবাসি।”
প্রিয়শার এই কথায় ফাইয়াজ যেন সামান্য শান্ত হলো।প্রিয়শার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বলল,
“কি বলতে চাচ্ছ তুমি ভালো করে বলো।”
প্রিয়শা মাথা নিচু করে বলল,
“আব্বু কালকে হঠাৎ করে আমার আর আরহান ভাইয়ের বিয়ের কথা বলল।কিন্তু আমি আরহান ভাইকে বিয়ে করতে চাই না।আমি তোমাকে বিয়ে করে তোমার সাথে স্বপ্ন বুনতে চাই।”
“বলতে কি চাচ্ছ তুমি।তোমার অনুমতি নিয়ে তো সব হচ্ছে।”
“না কেউ আমার অনুমতি নেয়নি।আমার কাছ থেকে অনুমতি নিলে আমি কখনোই রাজি হতাম না।কারন আমি তোমাকে ভালোবাসি। তোমাকে ভালোবেসে আমি অন্য কারোর সাথে কিভাবে বিয়ে করার স্বপ্ন দেখব তুমি বলো।”
“তার মানে তুমি বলতে চাচ্ছ সবকিছু তোমার পরিবার করছে তুমি রাজি না।”
“হুম।তুমি কিছু করো তাহমিদ তুমিই যে আমার শেষ ভরসা। তুমি এভাবে মুখ ফিরিয়ে নিলে আমার কি হবে।আমি যে তোমার দিকে পথ চেয়ে আছি।”
ফাইয়াজ আর কিছু বলল না।ভাবল মনের মধ্যে কিছু।কিছুক্ষণ নিরবতার পর ফাইয়াজ প্রিয়শাকে বলল,
“তুমি এখন বাড়ি যাও।যা করার আমি করছি।”
“আমি কিন্তু তোমার আশায় থাকব।জানি আজ যা হচ্ছে সব আমার জন্য।আমি প্রচন্ড অপরাধ বোধে ভুগছি।প্লিজ তুমি আমাকে ভুল বুঝে দূরে ঠেলে দিও না।”
ফাইয়াজ প্রিয়শাকে আশ্বাসবাণী দিয়ে বলল,
“প্রিয় এখন বাড়ি যাও। আমি দেখছি কি করা যায়।”
………………………………
প্রিয়শাদের বাড়ির ড্রয়িং রুমে বসে আছে তাহমিদ ফাইয়াজ আর ফাইয়াজের মা-বাবা।তাদের সামনে বসে আছে প্রিয়শার বাবা।পাশে দাঁড়িয়ে আছে আয়শা।সাইদুর রহমান তীক্ষ্ণ নজরে দেখে যাচ্ছেন সবকিছু। ফাইয়াজের বাবা অর্থাৎ ফিরোজ ইসলাম গলা ঝেড়ে সাইদুর রহমানের উদ্দেশ্যে বললেন,
“দেখুন আমি ঘুড়িয়ে পেচিয়ে কথা বলা পছন্দ করি না।যা বলার জন্য এসছি শুধু সেটাই বলব।”
সাইদুর রহমান ফিরোজ ইসলামের দিকে তাকিয়ে বললেন,
“বলুন কি বলবেন।আপনাদের কথা শোনার জন্যই তো বসে আছি।”
“আমি আমার ছেলে তাহমিদ এর সাথে আপনার মেয়ে প্রিয়শার বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে এসেছি।”
ফিরোজ ইসলামের কথায় সাইদুর রহমান নড়েচড়ে বসলেন।বললেন,
“দুঃখিত আমি আমার মেয়ের সাথে আপনার ছেলের বিয়ে দিতে পারব না।”
“কারনটা জানতে পারি।আমার ছেলের কোনোদিক থেকে কম না।তাহলে কেন আমার ছেলের সাথে আপনার মেয়ের বিয়ে দিবেন না।”
“আমি আমার মেয়ের সাথে কার বিয়ে দিব কি না দিব সেটা আমার বিষয়।”
“আর আমার ছেলের মত আপনি আর কোনো ছেলে পাবেন না।”
সাইদুর রহমান গম্ভীর মুখে বললেন,
“আপনারা বললেন আর আমি মেনে নিব।এবার আপনারা আসতে পারেন।অনেক কথা বলেছি আর না।আমি আর কথা বাড়াতে চাচ্ছি না।”
ফাইয়াজ এতক্ষণ ধরে ধৈর্য ধরে বসে ছিল।কিন্তু এখন আর ধৈর্য ধরে বসে থাকা সম্ভব হলো না।ফাইয়াজ দাঁড়িয়ে গেল।চোখ মুখ রাগে লাল হয়ে আছে।হাত মুষ্টিবদ্ধ করে বলল,
“বিয়ে তো আপনি করবেন না।বিয়ে করবে আপনার মেয়ে।আপনার মেয়ের সিদ্ধান্ত আপনি নিয়েছেন।সে এই বিয়েতে রাজি আছে কি-না জিজ্ঞেস করেছেন একবারের জন্য। আপনার পছন্দ হলো আর বিয়ে ঠিক করে দিলেন তা তো হবে না।”
সাইদুর রহমান ফাইয়াজের দিকে রেশ ভরা দৃষ্টিতে তাকিয়ে গম্ভীরমুখে বললেন,
“আমার মেয়ের কিসে ভালো হবে সেটা আমি ছাড়া কে জানে।আমার মেয়ের জন্য আমি যেটা ঠিক করে দিব সেটায় ঠিক।তোমার সাহস দেখে আমি অবাক না হয়ে পারছি না।আমার বাড়িতে দাঁড়িয়ে আমাকেই কথা শোনাচ্ছ।যাও এখনই বেড়িয়ে যাও আমার বাড়ি থেকে।”
“আমি আমার প্রশ্নের উত্তর না শোনা অব্ধি আমি কোথাও যাব না।ডাকুন আপনার মেয়েকে।আপনার মেয়ে এসে সবার সামনে বলুক সবকিছু। ”
“আমার মেয়ের সাথে তোমার কি।”
ফাইয়াজ উত্তেজিত হয়ে বলল,
“আপনার মেয়েকে আমি ভালোবাসি।আর সেও আমাকে ভালোবাসে। আপনি তার অনুমতি ছাড়া তাকে বিয়ে দিচ্ছেন কিভাবে।”
সাইদুর রহমান রাগে ক্ষিপ্ত হয়ে চেঁচিয়ে বললেন,
“অনেক বলেছো আর না।কিসের ভালোবাসা। আমি যা বলব সেটায় হবে।আজন্মে প্রিয়শা তোমার হবে না।যাও এখনই বেড়িয়ে যাও।”
ফাইয়াজও সমানতালে চেঁচিয়ে বলল,
“না আমি যাব না।আমি প্রিয়শাকে নিজের করেই যাব।”
“এত বড় সাহস তোমার। এখনই বেড়িয়ে যাও আমার বাড়ি থেকে নাহলে সবাইকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দিব।বেয়াদব কোথাকার। ”
ফাতেমা বেগম ছেলের আর অপমান সহ্য করতে না পেরে বলল,
“কি পেয়েছেন টা কি।আপনাদের বাসায় আমরা থাকতে এসেছি।এমন মানুষের বাসায় আমার ছেলেকে আমি কখনো বিয়ে দিব না।কি ভেবেছেন আপনার মেয়েকে আমার বাড়ির বউ করার জন্য বসে আছি।আমার ছেলের জন্য এমন অনেক ছেলে বসে আছে।যার বাবা এমন না জানি তার মেয়ের ব্যবহার কেমন হবে।”
সাইদুর রহমান রাগে গিজগিজ করতে করতে বললেন,
“কি বলতে চাচ্ছেন আপনি।”
“যা বলার আমি বলে দিয়েছি।”
তারপর ফাতেমা বেগম ছেলের উদ্দেশ্যে বললেন,
“তাহমিদ বাড়ি চল।আর এক মুহূর্ত না এই বাড়িতে। এই বাড়ির মেয়েকে আমার বাড়ির বউ বানাব না।চল।”
ফাইয়াজ চেঁচিয়ে বলল,
“না আমি যাব না।আমি প্রিয়শাকে নিয়েই যাব।আমাদের ভালোবাসা এভাবে অপূর্ণ রাখতে দিব না।”
ফাতেমা বেগম ছেলের হাত ধরে বললেন,
“আমার কসম তাহমিদ। তুমি এখন আমার সাথে বাড়ি যাবে।”
ফাইয়াজ যেন কথা বলার খেই হারিয়ে ফেলল।এভাবে তার মা তাকে বলবে সে ভাবেই নি কখনো। ফাইয়াজ অসহায়ের মত নিজের বাবার দিকে তাকালো। ফিরোজ ইসলাম ছেলের দিকে তাকিয়ে বললেন,
“তোমার মা যা বলেছে ঠিক বলেছে।যারা মানুষের সাথে সামান্য ভালোভাবে কথা বলতে পারে না।সেই বাড়ির মানুষের সাথে আর কোনো কথা না।”
বলেই তিনি চলে গেলেন।ফাতেমা বেগম ছেলের হাত ধরে বেড়িয়ে যেতে লাগলেন।তখন ফাইয়াজ নিজের মা-কে থামিয়ে সাইদুর রহমানের উদ্দেশ্যে বলল,
“আমি আজ যাচ্ছি তবে আমি প্রিয়শাকে নিজের করেই ছাড়ব।আপনি আমাদের কোনোদিনও আলাদা করতে পারবেন না।চ্যালেঞ্জ করলাম আপনাকে।”
………………………..
সাইদুর রহমান রাগে গিজগিজ করতে করতে ড্রয়িং রুমে পায়চারি করছেন।তার বাড়িতে এসে তাকেই অপমান করে গেল।তিনি কিছুতেই এই অপমান মেনে নিতে পারছে না।তিনি কিছুক্ষণ পর চেঁচিয়ে বলে উঠলেন,
“প্রিয়শা। তাড়াতাড়ি আমার কাছে এসো।”
প্রিয়শা নিজের বাবার এমন চিৎকার শুনে ভয়ে কেঁপে উঠল। এতক্ষণ সে আড়ালে নিরব দর্শক ছিল।সাইদুর রহমান আবার বলে উঠলেন,
“কি হলো এক কথা কয়বার বলতে হয়।”
প্রিয়শা কি করবে ভেবে পাচ্ছে না।তখন আয়শা প্রিয়শার কাঁধে হাত রেখে বলল,
“ভয় পেলে কোনোদিন জিততে পারবি না।যদি তুই তোর বাবার সামনে সত্যি বলতে না পারিস।আর ভালোবাসার জন্য তোকে কথা বলতে হবে।তুই যদি কথা সাহস না করে কথা বলতে না পারিস তাহলে ভুলে যা তোর ভালোবাসা। পারবি তুই তোর ভালোবাসার জন্য কথা বলতে।”
প্রিয়শা হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়ল।নিজের ভালোবাসার জন্য একবুক সাহস নিয়ে বাবার কাছে গেল।সাইদুর রহমান মেয়ের দিকে তাকিয়ে বলল,
“ওরা কি বলে গেল।”
প্রিয়শা ভয় না পেয়ে স্বাভাবিকভাবে বলল,
“যা বলেছে ঠিক বলেছে।একটা কথাও মিথ্যে বলেনি।”
সাইদুর রহমান মেয়ের কথা শুনে রাগের খেই হারিয়ে ফেলল। প্রচন্ড রাগে চেঁচিয়ে বলল,
“কি বলতে চাচ্ছ তুমি।”
প্রিয়শা জোরে বলে উঠল,
“হ্যাঁ। ওরা যা বলেছে ঠিক বলেছে।আমি তাহমিদকে ভালোবাসি।আমি বিয়ে করলে তাহমিদকে করব।আর কাউকে না।”
“ঠাসসসস।তোমার সাহস দেখে আশ্চর্য না হয়ে পারছি না।”
প্রিয়শা গালে হাত দিয়ে আছে।হয়তো এমন কিছু লেখা কিছু তার কপালে। থাপ্পড় খেয়ে যেন সাহস বেড়ে গেল।প্রিয়শা আবার চেঁচিয়ে বলল,
“তুমি মারলেও এটা মিথ্যে হবে না।এটা সত্যি। আমি তাহমিদকে ভালোবাসি।তুমি চাইলে আমাদের আলাদা করতে পারবে না।”
সাইদুর রহমান আবার প্রিয়শাকে মারার জন্য এগিয়ে আসলে আতিফা বেগম প্রিয়শাকে সরিয়ে নিয়ে স্বামীর উদ্দেশ্যে বলল,
“কি করছো কি তুমি।এভাবে মেয়ের গায়ে হাত দিচ্ছ।”
সাইদুর রহমান চেঁচিয়ে বলল,
“তোমার মেয়েকে ভালো হতে বলো।বেশি সাহস বেড়ে গেছে।আমি যত তাড়াতাড়ি বিয়ে দিয়ে দিব। আমার কথার বিরুদ্ধে কিছু হবে না।আমি যা বলব তাই হবে।”
#চলবে……………………