স্বপ্নের_crush ? (in reality)
Part-21+22
writer : Borno ☺
ছদ্দনামঃ Samiya Arohi
.
পরের দিন আরোহি রেডি হয়ে কলেজে যায়।
কলেজে,
আরোহিঃ (আজ কলেজে ঢুকতেই দেখি অহি গাড়ির সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে ফোনে কিছু একটা করছে, আই থিংক গেম খেলছে, এই ছেলে এতো বড় হয়েও গেম খেলে ? ভালো করে তাকিয়ে দেখলাম আজ একটা হোয়াইট শার্ট আর জিন্স পড়ে এসেছে, উপরের ২ টা বোতাম খোলা, এমনিতেই জিম করা বডি ? হাতে ঘড়ি আর পায়ে হোয়াইট কেডস, আর কিছুই না, হায় হায় আমি তো শেষ ?)
আহানঃ ( চোখ তুলে তাকাতেই দেখি আরোহি আমার দিকে তাকিয়ে আছে) ? [ একটা টেডি স্মাইল দিলাম]
আরোহিঃ ( হঠাৎ অহি আমার দিকে তাকাতেই আমি চোখ নামিয়ে ফেললাম, আবার তাকিয়ে দেখলাম মি. আমার দিকে একটা টেডি স্মাইল দিয়ে তাকিয়ে আছে,, এই প্রথম অহিকে টেডি স্মাইল দিতে দেখলাম, ওর স্মাইল এমনিতেই সুন্দর তার উপর এই টেডি স্মাইলটা আরও সুন্দর ? আমি হ্যাবলার মতো হা করে তাকিয়ে আছি, আমাকে তাকিয়ে থাকতে দেখে অহি…)
আহানঃ ( দেখলাম ম্যাডাম আমার দিকে তাকিয়ে আছে তাই আমিও একটা ? চোখ টিপ মারলাম)
আরোহিঃ ইশশশশশ ( ওর চোখ টিপ মারায় বুঝতে পারলাম আমি এতক্ষন ওর দিকে তাকিয়ে ছিলাম,, তার উপর এইভাবে চোখ টিপ মেরে আমার দিকে এখনো টেডি স্মাইল দিয়ে তাকিয়ে আছে ৷ আমি তো লজ্জায় মরেই যাচ্ছি ?)
আহানঃ ( দেখলাম ম্যাডাম লজ্জায় একে বারে লাল হলুদ হয়ে যাচ্ছেন,, ইশশ যদি গাল গুলো একটু ছুয়ে দিতে পারতাম)
আরোহিঃ ( আমি আর এ্ক মুহুর্তও ওখানে না দাঁড়িয়ে ক্লাসে চলে এলাম)
আহানঃ (কি আর করার ও চলে যেতেই আমিও ক্লাসে চলে এলাম)
ক্লাসে,
আহানঃ ( আজ সিনিয়র জুনিয়র একসাথে প্রাক্টিক্যাল ক্লাস আছে, টিচার শর্ট তাই একসাথে হবে। তাই আমি ক্লাসে গিয়ে আরোহির পাশেই বসলাম)
আরোহিঃ ???? ( মনে মনে) একিইইইইই ?
আহানঃ ( ওর এক্সপ্রেশন দেখে মনে হচ্ছে ও ভীষনভাবে শকড) কি হলো? এভাবে কেন তাকাচ্ছো? আমি কি বসতে পারি না? ?
আরোহিঃ ( একটু আগেই তো হাসি দিলো এখন আবার রেগে আছে কেন?) না মানে তা কখন বললাম,, আসলে…
আহানঃ এ কয়দিন আপনাকে ইগনোর করেছি আপনার বোকামির দোষে
আরোহিঃ আমি আবার কি করলাম ?
আহানঃ ক্লাস থেকে বের হউ তোমার খবর আছে
আরোহিঃ ( হুহ আমি তো কিছুই করিনি ? আশেপাশে তাকিয়ে দেখি আজ নিহা আসেনি) ওহ আজ নিহা আসেনি তাই?
আহানঃ ? তোমাকে তুলে এক আছাড় মারবো, ক্লাস শেষে আমার সাথে দেখা করবা
আরোহিঃ (মনে মনে) হুহ বয়েই গেছে, আমি যাবোই না
আহানঃ তাহলে তুলে নিয়ে যাবো
আরোহিঃ ?? ( মনের ভেতরেও শান্তি নাই ?)
ওদিকে সায়র আহান আরোহিকে একসাথে দেখে জ্বলছে ?
__________________________
ক্লাস শেষে,
আরোহিঃ (অহি ক্লাস থেকে বের হওয়ার ১০ মিনিট পর আমি ক্লাস থেকে বের হলাম,, আসলে মিতুর কাছে থেকে সাজেশনস নেওয়ার ছিলো। আমি বের হতেই দেখি সামনে সায়র) ??৷ ( পাশ কাটিয়ে আসতে নিলেই আমার হাত ধরে ফেলে)
আরোহিঃ কি হচ্ছে?? হাত ছাড়ো
সায়রঃ (আমি কিছু বলার আগেই….]
আরোহিঃ ( আমি আমার হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করছিলাম, হঠাৎ কেউ সায়রকে পাঞ্চ মারলো, তাকিয়ে দেখি সে আর কেউ না,, অহি)
আহানঃ ( আরোহির লেট হচ্ছিলো তাই ওকে ডাকতে এসে দেখি সায়র ওর হাত জোর করে ধরে আছে, দেখেই রাগ উঠে গেলো তাই দিলাম এক ঘুষি)
আরোহিঃ ( দেখলাম অহি রাগে লাল হয়ে গেছে, সায়রের ঠোট কেটে গেছে, পাঞ্চটা যে সত্যি অনেক জোরে ছিলো, আমাকে মারলে তো আমি বোধ ১ মাস সেন্সলেস থাকতাম ??)
সায়রঃ ( উফফফ এই আহান এমনিতেই জিম করে তার উপর এতো জোরে পাঞ্চ ??)
আহানঃ সায়র তোকে যদি আর একবার আরোহি আশেপাশে দেখেছি ? তাহলে তোর খবর আছে (বলেই ধাক্কা দিয়ে আরোহির হাত ধরে টেনে নিয়ে চলে এলাম)
আরোহিঃ [ ও আমার হাত ধরে টানতেই আমিও চুপচাপ ওর সাথে গেলাম, নয়তো যা খেপে আছে ? আমার খবর করে ছাড়বে ]
আহানঃ [ আরোহিকে নিয়ে কলেজের পাশের লেকের কাছে চলে এলাম, রাগ কন্ট্রোল করে বললাম ] দেখো আরোহি,, তোমার কিছু সত্যি জানা উচিত। আমি জানি তুমি ভাবো নিহা আমার গার্লফ্রেন্ড,, ভাবারই কথা, আমি ওকে নিয়ে তোমার সামনে ড্রামা করতাম যেন তুমি জেলাস হউ আর স্বীকার করো যে তুমি আমায় ভালোবাসো। কিন্তু তুমি? স্বীকার তো করোই নি উল্টো ষড়যন্ত্রে ফেসেছো। যাই হোক নিহা তোমায় ম্যাসেজ করে মিথ্যা বলেছে, আমার আর ওর কোনো জন্মেও রিলেশন ছিলো না, তুমি অর্ণবকে জিজ্ঞেস করতে পারো।
আরোহিঃ (অবাক হয়ে) ? আপনি ম্যাসেজের কথা জানলেন কিভাবে??
আহানঃ সেটা এখন তোমার না জানলেও চলবে, যাই হোক,, আগের বার ফিল্মি স্টাইলে প্রপোজ করেছিলাম রিজেক্ট করেছিলে, এইবার এতো ড্রামা না করে ডিরেক্ট বলছি আই লাভ ইউ আর আমি জানি তুমিও আমায় ভালোবাসো, এখন বলো রিলেশন করবা নাকি ডাইরেক্ট বিয়ে?
আরোহিঃ ?? আল্লাহ এইটা কেমন প্রপোজ!!
আহানঃ ভালো প্রপোজ তো তুমি রিজেক্ট করো তাই এই উপায়,, আর সায়র যে ভিডিও তোমাকে দেখিয়েছিলো ওটা ভুল ছিলো, সায়র আমার কোনো ক্ষতিই করতে পারবে না, দেখলে না এক ঘুষিতেই ও শেষ,।।
আরোহিঃ আপনার ঘুষিটা সত্যি অনেক জোরে ছিলো ?
আহানঃ এখন ২য় ঘুষিটা তুমি না খেতে চাইলে এন্সার দাও।
আরোহিঃ ( ? কি করবো বুঝতে পারছি না এক হাত দিয়ে আমার অপর হাত ঘষছি)
আহানঃ ওকে ওকে টেক ইওর টাইম [ বলে যেতে নিলেই আরোহি আমার জামার হাতা টেনে ধরলো]
আরোহিঃ আসলে আমি রিলেশন পছন্দ করি না
আহানঃ এই যুগের মেয়ে হয়ে রিলেশন পছন্দ করো না ? [ (মনে মনে) ওয়াও!! অন্য মেয়েরা যেখানে আমার সাথে এক রাতের জন্যও রেডি আর তুমি রিলেশন পছন্দ করো না ? তুমি সত্যি আলাদা ] আরোহি তুমি কি জানো তুমি একদম অন্য মেয়েদের মতো না
আরোহিঃ (একটু সিরিয়াস হয়ে) তুমি একদম ঠিক বলেছো , আমি একদম অন্য মেয়েদের মতো না, অন্য মেয়েদের মতো স্টাইল করতে পারি না, অন্য মেয়েদের মতো আপডেট না। কিন্তু কখনো কোনো রিলেশন করিনি মানে এই না আজকাল কার রিলেশন সম্পর্কে আমার কোনো ধারনা নেই। আজকালকার রিলেশন মানে হলো প্রথমে হাত ধরা, তারপর জড়িয়ে ধরা, তারপর কিস করা, আর তারপর ফিজিক্যাল হওয়া, আর যুক্তি কি? যুক্তি হলো, “আমরাই তো! বিয়ে তো আমি তোমাকেই করবো , আগে করলে ক্ষতি কি? তুমি কি আমায় বিশ্বাস করো না?” তারপর যখন ব্রেক আপ হয় তখন? কোনো কোনো মেয়ে মানিয়ে নেয়,, কিন্তু মানিয়ে নিলেই কি হলো? আমি ওরকম না, আমি আনস্মার্ট, কনজারভেটিভ, ইমোশনাল একটা মেয়ে, যাকে ভালোবাসবো তাকে সবটা দিয়েই ভালোবাসবো, অনেক বিশ্বাস করবো, তাই চাই আমি যেন না ঠকি, অতিরিক্ত বিশ্বাসই মানুষকে ঠকতে বাধ্য করে, ( বলেই কাদতে শুরু করলাম) আমি এইজন্য কখনো রিলেশন করতে চাই না
আহানঃ (হঠাৎ আরোহি কান্না কেন করছে ? আমি তো এমন কিছুই বলিনি) আরোহি প্লিজ কান্না কোরো না। আমি জানি আমি এখনো এমন কিছু করিনি যাতে আমি তোমার বিশ্বাসের যোগ্য হয়ে উঠতে পারি। কিন্তু শুধু আমাকে একবার বলো আমাকে কি তুমি ভালোবাসো না? আমার জন্য কি তোমার কোনো ফিলিংস নেই? আমার দিকে তাকিয়ে বলো,, অস্বীকার কোরো না। কেন আমাকে এভাবে এখন দূরে সরিয়ে দিচ্ছো?
আরোহিঃ আমি অস্বীকার করছি না,, আমি জানি না এইটাই ভালোবাসা কি না,, যখন তুমি আশে পাশে থাকো আমি তোমাতেই হারিয়ে যাই, যখন তোমার পাশে থাকি আমার নিশ্বাস নিতে কষ্ট হয়, যখন কলেজে তোমার উপর পড়ে গেছিলাম তখন আমার হার্ট বিট অনেক ফাস্ট হয়ে গেছিলো যা এখনও হচ্ছে। হ্যা আমি তোমাকে পছন্দ করি, কিন্তু আবার মনে হয় তাহলে আমি আহানের জন্য কেন কাদি? আবার তোমার জন্যও কেদেছি
আহানঃ তুমি আনস্মার্ট না, তুমি আমার দেখা সব থেকে স্মার্ট মেয়ে। আর তোমার এই সব ফিলিংস বলে দেয় তুমি আমাকে ভালোবাসো। তুমি আমার কাছে হাওয়ার মতো, যাকে অনুভব করা যায়, কিন্তু যাকে হয়তো ছোয়া যাবে না, আবার তাকে ছাড়া বাচাও যাবে না। ভালোবাসা মানেই শুধু স্পর্শ না। দূর থেকেও ভালোবাসা যায়। অনেকে বলে ভালোবাসা হলো আন্ডারস্টান্ডিং, কিন্তু আমি বলি ভালোবাসা মানে একে অপরকে সম্মান করা। আমার কাছে তুমি হলে পবিত্র, স্নিগ্ধ। আজকের আগে আমি তোমায় পছন্দ করতাম আর আজ থেকে সম্মান করি, যার চিন্তায় কোনো পাপ নেই সে আসলেই পবিত্র।
আরোহিঃ ( আমি মুগ্ধ হয়ে অহির কথা শুনছি, কেউ কিভাবে এতোটা ভালোবাসতে পারে? আমি হুট করেই কথা গুলো বলে ফেললাম, তার আমার উপর রাগ করার কথা ছিলো কিন্তু সে? ?) আর যদি কখনো ছুতে ইচ্ছে করে?
আহানঃ তাহলে তোমাকে বিয়ে করে ফেলবো (বলেই চোখ টিপ দিলাম, সাথে একটা টেডি স্মাইল)
আরোহিঃ (আমি হেসে দিলাম) সিরিয়াসলি বলো
আহানঃ ( ওর হাসিটা দেখার জন্যই একটু দুষ্টুমি করলাম,, ওর চোখে চোখ রেখে বললাম) এন্সারটা সিরিয়াসলি ই ছিলো তবুও আর যদি কখনো ছুতে ইচ্ছে করে, তাহলে মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকবো, আরও বেশি ভালোবাসবো ☺
আরোহিঃ (ছলছল চোখে) আই লাভ ইউ অহি
আহানঃ ? আমি ভাবিনি তুমি এতো তাড়াতাড়ি বলে দিবা। যাই হোক আই লাভ ইউ টু আরু, আর আমার সামনে একদম চোখে পানি আসতে দিবে না, বুঝলে পাগলি
আরোহিঃ এটা সুখের পানি পাগল
.
to be continued…….. ?
স্বপ্নের_crush ? (in reality)
Part-22
writer : Borno ☺
ছদ্দনামঃ Samiya Arohi
.
আহান আরোহি নিজের নিজের বাসায় চলে যায়।
আহানের বাসায়,
অর্ণবের মাঃ আহান ফ্রি আছিস?
আহানঃ আরেএএ ছোট মা। তোমার জন্য তো আমি অলয়েজ ফ্রি
অর্ণবের মাঃ তা কি করছিলি?
আহানঃ তোমার বউমার কথা ভাবছিলাম
অর্ণবের মাঃ (খুশি হয়ে) ওমাাাা পেয়ে গেছিস? ? ( এবার একটু মন খারাপ করে) তাহলে আমার পছন্দের মেয়েটাকে বাদ দিতে হবে
আহানঃ তুমি কাউকে আমার জন্য পছন্দ করেছিলে ???
অর্ণবের মাঃ হুম, যাই হোক বাদ দে, তোর পছন্দের মেয়েটাকে তো দেখা
আহান আরোহির ছবি দেখালো। ছবিটা আহান আর আরোহি যখন নাচছিলো অনুষ্ঠানে তখন অর্ণব তুলেছিলো
অর্ণবের মাঃ ভারী মিষ্টি তো। একে তো আমি চিনি
আহানঃ ?? মানে?
অর্ণবের মাঃ—————- [top secret conversation,, কি কথা হলো তা পরে জানাবো ??]
আহানঃ ওহ লাভ ইউ ছোট মা। আচ্ছা ছোট মা তোমাদের যা ইচ্ছা হয় তা করো, তবে আর একটা কথা,,,, আরোহির ছোট বোনকে অর্ণব পছন্দ করে
অর্ণবের মাঃ ??? হায় খোদা আমার ছেলে কয়টার সাথে লাইন মারে!! আমি তো জানতাম আমার ছেলে গুলা মেয়েদের পাত্তাই দেয়না,, এখন অরনির কি হবে ?
আহানঃ ? আরে আরেএএ ছোট মা,, আরোহি অরনি ২ বোন। আরোহি বড় আর অরনি ছোট
অর্ণবের মাঃ এই ডিটেকটিভটাকে তো আমি মেরেই ফেলবো, আরোহি-অরনির সব খবর দিলো অথচ ওদের কোনো বোন আছে এইটাই বলেনি আমাকে ?
আহানঃ (অবাক হয়ে) ?? তুমি খোজ নিতে ডিটেকটিভ লাগিয়েছিলে ?
অর্ণবের মাঃ হুম আমার ছেলেদের বউ হবে বলে কথা। ওহ যাই হোক ? আমার ছেলে গুলা ঠিক আছে তাহলে ?
আহানঃ জ্বি মিসেস খান
অর্ণবের মাঃ তাহলে আমি এক্ষুনি তোদের বিয়ের সম্বন্ধ নিয়ে যাচ্ছি [ বলেই দরজার দিকে পা বাড়ালাম]
আহানঃ [ছোট মা যেতে নিলেই হাত ধরলাম ] আরেএ ছোট মাাাা এখন তো রাত, এই রাত ৮ টার সময় কেউ কারও বাসায় যায়?
অর্ণবের মাঃ আচ্ছা তাহলে কালকেই যাবো।
আহানঃ ?? ওকে
অর্ণবের মাঃ ( আহানের গালে হাত দিয়ে) আচ্ছা এখন ঘুমিয়ে পড়৷ তোর জন্য তাড়াতাড়িই বউ নিয়ে আসবো, তাই এখনই রাতের ঘুম হারাম করার দরকার নেই
আহানঃ (হেসে) ? ছোট মা, আমি অনেক লাকি তোমাদের মতো মা বাবা পেয়ে,, তোমাদের নিজের নই তবুও কতো ভালোবাসো, কখনও অর্ণবের থেকে কম করে দেখইনি আমাকে
অর্ণবের মাঃ (রেগে) ? কে বলেছে তুই আমাদের ছেলে না? লাকি তো আমরা কারণ তুই আমাদের উপর রাগ করিস না, অর্ণবকেও ভালোবাসিস, ওর ওপরও রাগ করিস না
আহানঃ ছোট মা তোমাদের কোনো দোষ ছিলো না, তাহলে রাগ কিসের। বরং তোমরা আমায় কতো ভালোবাসো
অর্ণবের মাঃ (ভাব নিয়ে) আমি দুই দুই জন সেলিব্রিটির মা বুঝতে হবে ?
আহানঃ ??
অর্ণবের মাঃ ( আহানের কপালে চুমু দিয়ে) ? এখন ঘুমা বাবা, গুড নাইট
আহানঃ গুড নাইট
কথাবার্তার পর আহান তার রুমের বারান্দায় চলে যায়। আকাশের তারার দিকে তাকিয়ে আরোহির কথা ভাবতে থাকে,
আহানঃ আরোহি, তুমি জানোই না তুমি ডাইরেক্টলি ইনডাইরেক্টলি আমাকেই ভালোবাসো ?? তোমায় আর কষ্ট দিবো না। আচ্ছা কিন্তু আরোহি হঠাৎ করে কেন ঐ কথাগুলো বলেছিলো? অরনিকে জিজ্ঞেস করা দরকার।
আহান অর্ণবের কাছে থেকে অরনির নাম্বার নিয়ে আসে
_____________________
অরনিকে কল দেয়,
আহানঃ হায় অরনি
অরনিঃ জ্বি কে?
আহানঃ আমি আহান
অরনিঃ ওহ ভাইয়া,, এক মিনিট ( অরনি বারান্দায় চলে আসে) জ্বি বলেন সব ঠিক আছে তো?
আহানঃ হ্যা সব ঠিক, আসলে আরোহির ব্যাপারে কিছু জানার ছিলো
অরনিঃ জ্বি
আহানঃ আরোহি কেন রিলেশন পছন্দ করে না?
অরনিঃ ওহ,, আচ্ছা তাহলে শোনেন,
এইটা আরোহি আপু যখন ক্লাস ৮ এ পড়তো তক্ষনকার ঘটনা। আরোহি আপু আগে থেকেই রিলেশনশিপ পছন্দ করতো না, আমার বোন কিন্তু এই বিষয়ে অনেক যুক্তিবাদী। আপু যখন ক্লাস ৮ এ পরতো তখন আপুর এক বেস্টফ্রেন্ড হয়, নাম আদিবা। মিতু আর নিশা আপু তখন আরোহি আপুর তেমন ক্লোজ ফ্রেন্ড ছিলো না। আদিবা আপুও অনেক ভালো মেয়ে ছিলো। আরোহি আপু আর আদিবা ২ জনের অনেক মিল ছিলো শুধু রিলেশন বিষয়টা ছাড়া। ওরা একে অপরকে ছাড়া থাকতেই পারতো না। একে অপরকে ফ্রেন্ডশিপ লেটারও লিখতো। আদিবা আপু ক্লাস ৮ এ ফার্স্ট রিলেশন করে, আরোহি আপু অনেক নিষেধ করে কিন্তু বলেনা টিন এজ,, তাই রিলেশনে জড়িয়ে যায়। অবশ্য ছেলেটা ভালো ছিলো তাই আরোহি আপুও আর নিষেধ করেনি। কিন্ত আদিবা আপু ওর বাবা মায়ের কাছে ধরা পড়ে যায় আর ওদের রিলেশন ভেঙ্গে যায়। আদিবা আপুর বাবা ছেলেটাকে পুলিশে দিবে বলে ওকে ভয় দেখায়। ওরা একে অপরকে অনেক ভালোবাসতো, কিন্তু ছেলেটার ভালোর জন্য আদিবা তাকে ছেড়ে দেয়। কিন্তু সমস্যাটা ছিলো অন্য জায়গায়। আদিবা ব্রেকআপের পর অনেক ভেঙ্গে পড়ে। ওদের ব্রেক আপের পর একটা বাজে ছেলে আদিবাকে ইমোশনালি কথা বলে তার সাথে রিলেশন করতে বলে। ছেলেটা তখন ইন্টার ২য় বর্ষে পড়তো। আদিবা আপুর প্রথম বয়ফ্রেডও নিষেধ করেছিলো। আর আদিবা আপু বোকার মতো জেদ করে আগের রিলেশনটা ভোলার জন্য নিউ রিলেশন করে। আরোহি আপু আনেক নিষেধ করতো তাই আদিবা আপু আর আরোহি আপুকে বলতো না ওদের রিলেশনের কথা। একদিন আদিবা আপু কাদতে কাদতে আমাদের বাসায় আসে। তখন আপু ক্লাস ৯ এ। আদিবা আপু বলে ছেলেটা নাকি ওকে ফাসিয়ে জোর করেছে। আর এখন আর রিলেশন রাখতে চায় না। তার উপর ওদের নাকি বাজে ভিডিও বানিয়েছে। আরোহি আপু আদিবার উপর ক্ষেপে যায় তাই আর কথা বলেনি ওর সাথে। একদিন খবর পাই আদিবা আপু সুইসাইড করেছে। আদিবা আপু আরোহি আপুর জান ছিলো। আরোহি আপু অনেক বেশি ভেঙ্গে পড়ে। আরোও ভেঙ্গে পড়ে যখন দেখে আদিবা আপুর মৃত্যুর পর ঐ বাজে ছেলেটা ভিডিওটা আদিবার বাবাকে দেখায়, এতে আদিবার বাবার হার্ট এটাক করে। আঙ্কেল আরোহি আপুকে নিজের মেয়ের মতো দেখতেন। এতো কিছুর পর আপু পুরো ক্লাস ৯ অনেক ডিপ্রেসড থাকতো। তারপর মিতু আপু আর নিশা আপু আরোহি আপুর ক্লোজ ফ্রেন্ড হয় আর ওকে স্বাভাবিক হতে সাহায্য করে
আহানঃ ? ওহ মাই গড ছেলেটাকে পুলিশে দেয় নি?
অরনিঃ (একটা দীর্ঘ নিশ্বাস ছেড়ে) তাকে মার্ডার করা হয়েছে
আহানঃ হোয়াট ? কে করেছে?
অরনিঃ মনে হয় আদিবা আপুর প্রথম বয়ফ্রেন্ড। আমরা সিওর না আবার সে ছাড়া আর কেউ হতে পারে না। আমরা কাউকে কিছু বলিনি তাই পুলিশও আর ধরতে পারেনি।
আহানঃ ওহ,,, বুঝেছি। আচ্ছা তোমাকে ধন্যবাদ, আর সরি এতো রাতে ডিসটার্ব করলাম
অরনিঃ না না ঠিক আছে
আহানঃ আর শোনো আর একটা কাজ করবে, কালকে তোমার বাসায় কিছু মহিলা যেতে পারেন, তুমি শুধু তাদের সাপোর্ট করবে। ওকে
অরনিঃ ওকে জিজু
আহানঃ ? ওকে শালী জি বাই
অরনিঃ বাই
.
to be continued……… ☺