#হয়তো_তোমারই_জন্য
#পর্বসংখ্যা_৪
#সাদিয়া_তাসনিম
‘ কী করছিলি এখানে? আড়িপাত ছিলি?’
সৌহার্দ্যের কথাটা শুনে সাঁঝ সৌহার্দ্যের মুখের দিকে আটকে রইল। সৌহার্দ্যের শৈলপ্রান্তের মতো শক্ত মুখ আর সাথে তার তীক্ষ্ণ চোখ যেন সাঁঝের মনের মধ্যে একটা অস্থির স্রোত তৈরি করল। সাঁঝ সৌহার্দ্যের প্রশ্নে কোনো উত্তর দিতে পারলো না। ভয়ে নিশ্বাস ধীরে ধীরে ভারী হয়ে এলো। সৌহার্দ্য সাঁঝে নিচে বসে হাত ডলতে দেখে বুঝতে পারলো, পরে গিয়ে মেয়েটা ব্যথা পেয়েছে তাই সৌহার্দ্য একটু নিচু হয়ে সাঁঝের দিকে হাত বাড়িয়ে দিলো ।সে ভ্রুঁ উঁচু করে সাঁঝে নিজের হাতটা ধরতে বললো। সাঁঝ সৌহার্দ্যের মুখে একরকমের আশ্বাস দেখে দ্বিধাগ্রস্তভাবে সৌহার্দ্যের হাতটা ধরলো। সাঁঝ সৌহার্দ্যের হাতটা ধরার সাথে সাথে সৌহার্দ্য তাকে নিচে থেকে এক টানে তুলে দাঁড় করালো। সাঁঝ সৌহার্দ্যের হাত ধরে উঠে দাঁড়িয়ে মৃদু কন্ঠে বলে উঠলো,
‘ সকলে খেলার জন্য তোমাকে ডাকতে পাঠিয়ে।আমি রুমে ঢুকতে যাবো তাট আগেই তুমি দরজাটা খুলে ফেলেছো যার ফলে পরে গেছি।’
সৌহার্দ্য সাঁঝের কথাটা শুনে এক দৃষ্টিতে কিছুক্ষণ সাঁঝের দিকে তাকায় রয়লো। সাঁঝ সৌহার্দ্যের দিকেই তাকিয়ে আছে। সাঁঝে সকলে জোর করে এখানে পাঠিয়েছে সে তো কোনো মিথ্যা কথা বলেনি তবে সব সত্যিও বলেনি ও।
সৌহার্দ্য কিছুক্ষণ সাঁঝের দিকে তাকিয়ে মৃদু কন্ঠে বলে উঠলো,
‘ নিচে আয়।’
সৌহার্দ্য কথাটা বলে আর রুমের মধ্যে থাকলো না। নিচে যাওয়ার জন্য পা বাড়ালো। সাঁঝও নিজের গালে একটা থাপ্পড় দিয়ে সৌহার্দ্যের পিছনে নিচে নেমে আসলো। ভাগ্যিস সৌহার্দ্য তাকে বিশ্বাস করেছে তা না হলে যদি সৌহার্দ্য সত্যি সত্যি মেনে নিতো সে আড়িপাতে গিয়ে ছিলো তখন তার মান-সম্মান সব মাটিতে মিশে যেতো। সাঁঝ সৌহার্দ্যের পিছনে হাঁটতে হাঁটতে মনে মনে ভেবে বসলো সে আর কখনই এমন ভাবে সৌহার্দ্যের রুমে আড়িপাতবে না।
.
.
ক্যারাম বোর্ডটাকে ঘিরে সাদ, সৌহার্দ্য, সাঁঝ আর সাঈদ বসে আছে। তার তাসনিয়া এবং সুবহা তাদেরই পাশে বসেছে খেলা দেখবে বলে। তাসনিয়া আর সুবহা ক্যারাম খেলার কোনো আগ্রহ নেই তাই তারা চুপ করে বসে আছে। এই দুইটা মেয়ে বাড়িতে ক্যারাম থাকা স্বত্বেও কখনো খেলবার চেষ্টা করে দেখেনি তাই ক্যারাম সম্পর্কে তাদের ধারণা কম। ক্যারামের বোর্ডে ৯টা কালো, ৯টদ সাদা গুটি, একটি লাল গুটি ( কুইন) বোর্ডের মাঝখান বরাবর ত্রিভুজাকারে সাজানোর পর সাঈদ নিজের হাতের গুঁড়া ঝাড়া দিতে দিতে তাসনিয়াকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠলো,
‘ সারা দিন ফোন না টিপি সাঁঝের মতো দাদুভাইয়ের কাছ থেকে গেইমটা শিখে নিলে তো এখন খেলতে পারতিস।’
তাসনিয়া সুবহার সাথে কথা বলছিলো ঠিক তখনই নিজের ভাইয়ের কথাটা শুনে সে বিরক্তে চোখ মুখ কুঁচকে নিলো তারপর নিজের মুখ বাঁকিয়ে বলে উঠলো,
‘ নিজের চরকায় তেল দে ভাইয়া। আমার পিছনে লাগতে আসিস না।’
‘ তাসনিয়া সম্মান দিয়ে কথা বল।সারাদিন খায় দায় আর ফোন টিপা। ক্যারামটা শিখলে কত ভালো হতো! তোকে আর সাঁঝে আজ হারিয়েই ছাড়তাম।’
‘ নিজের জিতবার ঠিক নেই। আমাদের হারানোর শখ কত!’
সাঈদ তাসনিয়ার কথা শুনে তাসনিয়ার মাথায় একটা চাটি মেরে বলে উঠলো,
‘ বেহনা, আগে-আগে দেখো হোতা হ্যায় কিয়া। তুম মুঝে আন্ডারএস্টিমেট মত করনা। আজ ম্যায় হি জিতুঙ্গা কিউকি আজ ম্যায় সৌহার্দ্য ভাই কো হারাকার ক্যারম কা চ্যাম্পিয়ন বনুঙ্গা।’
সাঈদের কথা শুনে সাঁঝ হেসে বলে উঠলো,
‘ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আগে স্ট্রাইকারটা ঠিক করে ধরতে শেখো নাকি? ‘
সাঁঝের কথাটা শুনে সেখানে উপস্থিত সকলে হেঁসে উঠলো কারণ সকলেই জানে সাঈদ ক্যারাম তেমন একটা ভালো খেলতে পারে না আর সবসময় নতুন কোনো ভাবে গুটি পকেটে ঢোকানোর জন্য স্ট্রাইকারটা যেভাবে ধরে যা দেখে সকলে হাঁসতে বাধ্য হয়। সাঁঝের কথাটা শুনে সাঈদ নিজের নির্লপ্ত দৃষ্টিতে সাঁঝের দিকে চোখ পাকিয়ে তাকিয়ে রয়লো।
এদিকে সৌহার্দ্য এক চুমুক কফি নিয়ে হালকা হাসি দিয়ে বলে উঠলো,
‘ আজ কিন্তু আমি কাউকে ছাড় দিবো না। সবগুলোকে হারিয়ে ছাড়বো রেডি থেকিস সবাই । ‘
সৌহার্দ্যের কথাটা শেষ হতে না হতেই সাঁঝ সঙ্গে সঙ্গে বলে ওঠলো ,
‘ দেখা যাবে। আমি কিন্তু আজ তোমাকে সমান-সামন টক্কর দিব ভাইয়া।’
‘ তুই টক্কর দিবি আর আমরা বসে বসে দেখে যাবো নাকি?’
ছোট ছোট চোখ মুখ করে বলে উঠলো সাঈদ। সাঈদের সাথে সাদও মাথা নাড়ালো। সাদ কিছু বলতে যাবে তার আগে সুবহা বলে উঠলো,
‘ তোমাদের সকলে এভাবে লড়াই করতে থাকো তোমাদের লড়াই দেখার জন্যই আমরা বসে আছি তো।’
সুবহা কথাটা শেষ হতে না হতেই তাসনিয়াও সকলকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠলো,
‘ তোমরা যা-ই বলো না কেনও আজ কিন্তু সৌহার্দ্য ভাইয়াই জিতবে।’
সাঁঝ গুটির দিকে নজর দিকে সকলের কথা শুনছিলো তাসনিয়ার কথাটা শুনতেই সাঁঝ চোখ পাকিয়ে তাসনিয়ার দিকে তাকালো। সে তাসনিয়ার মাথায় চাটি পেরে ব্যঙ্গ করে বলে উঠলো,
‘ আমার বান্ধবী হয়ে তুই এখন নেমকহারামি মূলক কথা কিভাবে বলতে পারিস? শয়তান মেয়ে একটা।’
সাঁঝের কথাটা শেষ হলে তাসনিয়া নিজের মাথায় হাত বোলাতে বোলাতে বলে উঠলো,
‘ বেয়াদব আমার যা মনে হলো আমি তাই বললাম। এখানেও দোষ? ‘
সাঁঝ তাসনিয়ার কথাটা শুনে তেলেবেগুনে জ্বলে উঠে কিছু বলতে যাবে তা আগেই সৌহার্দ্য গুটিগুলোতে হাত দিয়ে বলে উঠলো,
‘ এসসব কথা বাদ দাও। গেম শুরু করো। গেম শুরু করলেই দেখা যাবে কে জিতবে।’
সৌহার্দ্যের কথা শুনে সকলে চুপ হয়ে গেলো। সাদ টস করলো। টস করে এবারও সৌহার্দ্য প্রথমে খেলার সুযোগ পেল যা দেখে বাকিরা নিজেদের মুখ কুঁচকে নিলো কিন্তু সৌহার্দ্য হেঁসে উঠলো। সৌহার্দ্য স্ট্রাইকার হাতে তুলে নিলো। ক্যারাম বোর্ডের উপর বিজ্ঞদের মত লাইনটা মেপে নিয়ে ব্রেক শট দিলো। ‘ টক! ‘ সব গুটি ছড়িয়ে পড়ে। কালো একটা গুটি ঠিকঠাক পকেটে ঢুকে গেল। সৌহার্দ্য মুচকি হাসল।
‘ দারুণ শুরু! ভাই’
সাদ সৌহার্দ্যের খেলা দেখে নিজের উত্তেজনা চেপে রেখতে না পেরে চিৎকার করে উক্ত কথাটা বলে উঠলো। সৌহার্দ্য সাদের এমন চিৎকার শুনে মুচকি হাঁসলো।সাঁঝ সাদের কাছে বিরক্ত হলো কী সুন্দর নিজের দলের মানুষ অন্য পক্ষের মানুষের গুনগান গাইছে যা সাঁঝের পছন্দ হলো না। সাঁঝ দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছেড়ে বলে উঠলো,
‘ এটা তো হওয়ার কথা ছিলো তাহলে এতো চিৎকার করার কী আছে সাদ?’
সাদ নিজের দৃষ্টি সৌহার্দ্যের হাতের দিকে দিয়ে মৃদু কন্ঠে বলে উঠলো,
‘ চুপ করো সাঁঝ আপু, সৌহার্দ্য ভাই আবার শট নিচ্ছে।’
সৌহার্দ্য দ্বিতীয় শট নেয় এবং এটাও পকেটে গিয়ে পরে। সুবহা, সাদ আর তাসনিয়া তা দেখে হাত তালি দিলেও সাঁঝ এবং সাঈদ গম্ভীর মুখে দেখে গেলো। সৌহার্দ্য তৃতীয় শট দিয়ে কিন্তু এবার গুটি মিস করে ফেললো। গুটি মিস যাওয়াই সাদ,সুবহা আর তাসনিয়ার মুখে সৌহার্দ্যের থেকে বেশি হতাশার ছাপ দেখা গেলো। এবার পালা আসলো সাঁঝের। সাঁঝ পুরো মনোযোগ দিয়ে শট নেয়। তার প্রথম শটেই সাদা গুটি পকেটে।
‘ ওহ! এবার জমে যাবে তাই না সৌহার্দ্য? কী বলেছিলাম মেয়ে আমাদের ভালোই খেলা শিখেছে। ‘
সাঈদের কথাটা শুনে সৌহার্দ্য মুচকি হেসে সাঁঝের দিকে তাকালো কিন্তু সাঁঝের পুরো মনোযোগ ক্যারম বোর্ডের দিকে।এরপর সাঁঝ একের পর এক দুটি গুটি পকেটে ফেলতে সক্ষম হয় কিন্তু পরের স্ট্রাইকার একটুর জন্য মিস হয়ে যায়।তবে সৌহার্দ্যের থেকে ভালো খেলা করে সাঁঝ সৌহার্দ্যের দিকে নিজের এক ভ্রুঁ উঁচু করে তাকায়। সৌহার্দ্য স্বভাবত ভুলে বা কৌতুহলে নিজের এক ভ্রুঁ উঁচু করে নেয়। সাঁঝ যে তাকে কপি করে এমনটা করছে সেটা ভেবে মনে মনে হেঁসে উঠলো। এরপর পালা আসে সাদের।সাদ ক্যারামে ধীর অথচ নিখুঁত খেলোয়াড় সে প্রথম শটেই একটা কালো গুটি পকেটে ফেলে দেয়। কিন্তু পরের শটে তার স্ট্রাইকার পকেটে পড়ে যায়। সাদের স্ট্রাইকারটা পড়ে যাওয়ার সাথে সাথে বাকিরা হেঁসে উঠে। তাদের হাঁসিকে নতুন মাত্রা যোগ করতে সাঈদ সাদরের মাথায় হাত বুলিয়ে বলে উঠে,
‘ আহারে ছোট ভাইটা আমার ! মাত্র একটা পয়েন্ট কেটে গেল! ‘
সাঈদের খোঁচা দিয়ে বলা কথা শুনে সকলে হেঁসে উঠে। সাদ নিজের চোখ ছোট করে মুখে শয়তানি ভাব নিয়ে বলে উঠে,
‘ ভাইয়া আজ কিন্তু স্ট্রাইকারটা ভালো করে ধরবে।’
সাঈদ পকেট থেকে স্ট্রাইকারটা তুলে নিয়ে বলে উঠে,
‘ দেখতে থাক আমি কী করি।’
সাঈদের শটগুলো সব ভাগ্যের ওপর নির্ভরশীল। একটা ঠিক জায়গায় গেলে বাকিগুলো সব ভুল জায়গায় যাবেই। সাঈদের প্রথম শটেই সাদা গুটি পকেটে ঢুকে গেলো। গুটি পকেটে ঢোকার সাথে সাথে সাঈদ উত্তেজিত হয়ে বলে উঠলো,
‘ দেখলি সবাই ?দেখলি? এটাই আসল প্রতিভা। আমি কিন্তু এই শটটা চোখ বন্ধ করেও দিতে পারতাম কিন্তু দেয়নি শুধু তোদের কথা ভেবে।’
সকলে এতো বড় ছেলের এমন কান্ড আর কথা শুনে সকলে হেঁসে উঠলো। সাঁঝ সাঈদের দিকে চোখ ছোট ছোট করে তাকিয়ে বলে উঠলো,
‘ পাম দেওয়া বন্ধ করো। আমরা সকলে কানা নাকি যে দেখবো না? তাড়াতাড়ি খেলো না ভাইয়া।’
সাঈদ সাঁঝের কথা শুনে একহাতে কফির মগ ধরে আরেকহাতে স্ট্রাইকার ধরে শট দিল। এই শটে সে নিজের গুটি ভুল করে প্রতিপক্ষের পকেটে ফেলে দিল।
সাঁঝ সাঈদের এমন কাজে হেসে বলে ফেললো,
‘ এটাই তোমার প্রতিভা?’
সাঈদ সাঁঝের কথা শুনে নিজের দোষ ঢাকতে আমতা আমতা করে বলে উঠলো,
‘ এটা ছিল আমার স্ট্র্যাটেজি। তোমরা বুঝবে না।’
সাঈদের কথাটা শেষ হতে না হতে সকলে হেঁসে উঠে।
একদলে সাঁঝ আর সাদ অন্য দলে।সৌহার্দ্য আর সাঈদ যারফলে সাঈদ যে গুটি পকেটে ফেলে দিয়েছিলো সেটা ছিলো সাঁঝদের। সৌহার্দ্য একবার সাঈদের দিকে তাকিয়ে পকেট থেকে গুটি বের করে সাঁঝের দিকে দিয়ে দেয়।
সাঁঝ পর পর আরো দুইটা শট নেয় কিন্তু পরেরটাই লাল গুটি পকেটে ফেলে দেয় তবে তখন সে অন্য শট নিতে পারে না তাই লাল গুটি আবারও বোর্ডে ফিরে আসে।
এভাবে খেলা চলতে থাকে আর বোর্ড মাত্র কয়েকটা গুটি পরে থাকে। খেলা জমজমাট আকার ধারণ করেছে সকলে কৌতূহলী দৃষ্টিতে বোর্ডের গুটি গুলোর দিকে তাকিয়ে বুঝবার চেষ্টা করছে সামনে কী হয় তার। পরিস্থিতি উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে ওঠছে। সাঁঝের হাতে মাত্র দুটি সাদা গুটি বাকি আর সৌহার্দ্যর হাতে রয়েছে লাল কুইন কাভার করার দায়িত্ব সাথে একটি কালো গুটি। এখন সাঁঝের দান। সাঁঝ আল্লাহ, আল্লাহ করে প্রথমে একটা সাদা গুটি পকেটে ফেলতে পারলো কিন্তু শেষ গুটির জন্য নিশানা করলেও তার শটটা এবারও খুবই সামান্যর জন্য মিস হলো । সাঁঝ বিরক্তিতে নিজের চোখ মুখ কুঁচকে নিলো। এবার দান সৌহার্দ্য। সে তার কালো গুটি পকেটে ফেলল। সাঁঝসহ সকলে চুপচাপ লাল গুটির দিকে তাকিয়ে আছে। এবার সৌহার্দ্যের কুইন কাভার করার পালা। সৌহার্দ্য গুটিটা দেখতে লাগলো ঠিক তখনই সাঁঝ দুহাত তুলে বলে উঠলো,
‘ ইয়া আল্লাহ এবারের মতো একে হারিয়ে আমাকে জিতিয়ে দেও। আমি জিতে গেলে মসজিদে দশ টাকা দিবো। ইয়া আল্লাহ।’
সাঁঝ নিজের কথাটা শেষ করার সাথে সাথে উপস্থিত সকলে হেঁসে উঠলো আর সৌহার্দ্যেও সাঁঝের মতো দুহাত তুলে বললো,
‘ আল্লাহ আমি গরিব মিসকিন তাই আমার উপর দয়া করো। আমি একশো টাকা দিবো, এই পেত্নীকে হারিয়ে দেও ।’
সৌহার্দ্যের কথা শুনে বাকি সকলে হাসলেও সাঁঝ চোখ ছোট ছোট করে সৌহার্দ্যের দিকে তাকিয়ে রয়লো।
সৌহার্দ্য আর কোনো কথা না বাড়িয়ে খেলায় মনোযোগ দিলো।সে বোর্ডের প্রান্তে স্ট্রাইকার রাখল নিশানা করল আর নিখুঁত শটে লাল কুইন কাভার করে জিতে গেল। উপস্থিত সকলে আনন্দে চিৎকার করে উঠলেও সাঁঝের মুখটা ছোট হয়ে গেলো। সাঈদ অতিউৎসাহীত হয়ে সাঁঝকে খোঁটা দিয়ে বলে ফেললো,
‘ কী গো সাঁঝ রাণী? এতো প্র্যাকটিস করার পরেও তো সৌহার্দ্য ভাইকে হারাতে পারলে না। আগেই বলে ছিলাম তোকে সৌহার্দ্য ভাইয়ের পিছনে লাগতে আসবি না। ‘
সাঁঝ সাঈদের কথায় কোনো উত্তর দিলো না। কোনো এক অজানা কারণে অভিমানী চোখে সৌহার্দ্যের দিকে তাকালো। সাঈদ আবারও তাকে ব্যঙ্গ করে কিছু বলতে যাবো তার আগেই সাঁঝ সেখান থেকে উঠে চলে গেলো। সাঁঝের এমন কাজে উপস্থিত সকলে অবাক হয়ে গেলো। সৌহার্দ্য নিজের মুখে কোনো অভিব্যক্তি না ফুটিয়েই সাঁঝের দিকে তাকিয়ে রয়লো। সুবহা সাঈদের দিকে তাকিয়ে বিরক্তিকর কন্ঠে বলে উঠলো,
‘ ভাইয়া তুমি সবসময় মজা করো কেন? জানো না সাঁঝ কেমন?।’
‘ আরে আমি তো মজা করছিলাম ও এতো সিরিয়াস হয়ে যাবে বুঝিনি। ‘
সাঈদ সুবহার দিকে তাকিয়ে বোকা বোকা কন্ঠে কথাটা বলে উঠলো। সুবহা সাঈদের কথাটা শুনে দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছেড়ে বলে উঠলো,
‘ ছাড়ো এসব, আমি গিয়ে দেখি কী করা যায়। মেয়ের রাগ হলো কিনা।’
সুবহা কথাটা বলে উঠে দাঁড়ালো তারপর সেখান থেকে সাঁঝের পিছনে চলে গেলো। সৌহার্দ্য এখনও সাঁঝের চলে যাওয়া পথের দিকে তাকিয়ে রয়লো।
চলবে…..