হৃদয় নিবাসে তুই পর্ব-১৫

0
489

হৃদয় নিবাসে তুই
পর্ব-১৫
লেখনীতেঃ ভূমি

রাত প্রায় একটা কি দুটো।শুনশান নিরবতা চারদিকে।দূরে কোথাও গাড়ির অল্প আওয়াজ এসে কানে লাগছে।অদ্রিজা টলমলে চোখজোড়া নিয়েই ঐ বিশাল মাঠটা থেকে বেরিয়ে আসল।গভীর রাতের নিরব রাস্তায় হেঁটে চলতেই অজানা ভয় এসে ঘিরে ধরল মনকে। ল্যাম্পপোস্টের আলোতে রাস্তায় নিজের ছায়াটা চোখে পড়ল কেবল। আর কেউ নেই কোথাও।ভয়ে ক্রমশ জমে গেল সে।শুকনো ঢোক গিলে এদিক ওদিক তাকাল। না কেউ নেই।তার বাসা থেকে রক্তিমের বাইকে করে এখানে আসতে দশ মিনিটের মতো লেগেছে। তার মানে হেঁটে গেলে বিশ কি পঁচিশ মিনিটের পথ হবে।কিন্তু এই নিরব, অন্ধকার, রাতের রাস্তায আদৌ কি একা একা যাওয়া উচিত?তীক্ষ্ণ মস্তিষ্ক সঙ্গে সঙ্গেই জবাব দিল,”হ্যাঁ উচিত।রক্তিমের কাছে যদি তুমি কিছু নাই হও তবে তার সাথে বাসায় যাওয়াটাও অন্যায়।চরম অন্যায়!’অদ্রিজা রাগে জ্বলজ্বল করে আশেপাশে চাইল।টলমল করা লাল টকটকে চোখ যেন রক্তিমকে এক্ষুনি পেলে শেষ করে ফেলত।ভস্ম করে দিত তার শরীর মন।অদ্রিজা হাঁসফাঁস করল।দ্রুত পা বাড়িয়ে কয়েক মিনিট পথ এগিয়ে যেতেই কিছুটা দূরে দেখা মিলল চারটা ছেলের।টলতে টলতে হাঁটছে। বয়স হয়তো বিশ একুশ বছরেরই হবে।অদ্রিজা ভীত চাহনি নিয়ে তাকাল।হৃদয়ের ভেতর অদ্ভুত ভয় জেঁগে উঠল মুহুর্তেই।শুকনো ঢোক গিলে ভীত চাহনি নিয়ে আশেপাশে তাকিয়েই দ্রুত পায়ে হাঁটতে লাগল সে।ছেলেগুলোকে পাশ কাঁটিয়ে যেতে যাবে ঠিক তখনই তাদের মধ্যে থাকা একজন বলে উঠল,

‘ বাহ! এতরাতে মাইয়ামানুষ?এতরাতে রাস্তায় কেন তুমি ললনা?’

অদ্রিজার ভীত চাহনি এবার আরো তীক্ষ্ণ হলো।অজানা ভয়ে হাত পা কাঁপতে লাগল তার।ছেলেটার কথাকে কোনরকম পাত্তা না দিয়ে ধুকবুক করা হৃদয় নিয়ে হাঁটতে লাগল অদ্রিজা।কিন্তু রক্ষা হলো না।ঐ চারজন ছেলে এসে ঘিরে ধরল চারপাশটা।মুখচোখে বিশ্রী অঙ্গভঙ্গি করে তারই মধ্যে একজন বলে উঠল,

‘ কি মামনি?কোথায় যাও?’

অদ্রিজা মিনমিনে চোখে মুখ তুলে তাকাল ছেলেটার দিকে।ভয়ে হাত পা কাঁপছে।চারপাশে শীত শীত ভাব থাকলেও ঘামে হাত পা ভিজে উঠল তার।কপালের ঘামে চুপসে লেপ্টে গেল ছোট ছোট চুল গুলো।অদ্রিজা কিছু বলল না ছেলেটার কথার বিনিময়ে। চোখমুখ কালো করে তাকিয়ে রইল।তা দেখেই হয়তো সামনের ছেলেগুলো সাহস চওড়া হলো।একজন তার বাম হাতটা ছট করেই ধরে বসল।অদ্রিজা তৎক্ষনাৎ হাত ছাড়িয়ে নিল।অন্য হাত দিয়ে ছেলেটার স্পর্ষ মুঁছে ফেলতেই ঘষতে লাগল।কাঁপা গলায় বলল,

‘ এ্ এক্ একদম না।একদম টাচ করবেন না। ‘

ছেলেগুলো তার কথাটা তেমনভাবে নিল বলে মনে হলো না।মুখে বিশ্রী হাসি ঝুলিয়েই প্রথমজন বলল,

‘ টাচ করব না?’

কথাটা বলেই আবারও হাসল সবাই আওয়াজ করে।অদ্রিজা ভয়ে ছোট ছোট চোখ করে তাকাল।বার বার শুকনো ঢোক গিলেই এপাশ ওপাশ চাইল।কিছুটা দূরে সরু আলোর ফুলকি দেখে নিজের ভেতর একটু হলেও সাহস সঞ্চয় হলো এবার।কোনভাবে সামনের ছেলেটাকে ঠেলেই দৌড় লাগাল সামনে।বেশিদূর যাওয়া হলো না।তার আগেই সামনে এসে দাঁড়াল একটা বাইক।অদ্রিজা হাঁপাতে হাঁপাতেই হাঁটুতে ভর দিয়ে দাঁড়াল।বাইকের সামনের তীক্ষ্ণ আলোয় পেঁছনের মানুষটাকে দেখা না গেলেও ওটা যে রক্তিম তা বেশ বুঝতে পারছে। অদ্ভুত ভাবে ভয়টা মুহুর্তেই কেঁটে গেল তার।এই মানুষটার প্রতি এত কেন বিশ্বাস তার?বুঝে উঠে না সে।তবুও তাকেই মন থেকে বিশ্বাস করে সে। ভরসা করে।অদ্রিজা হাঁপাতে হাঁপাতেই
রক্তিমেন সামনে গিয়ে দাঁড়াল।রক্তিম মুচকি হাসল।মৃদু গলায় বলল,

‘ এই না হয় মিসেস রক্তিম মাহমুদ?তেজ, আত্নসম্মান এতটাই প্রখর যে মাঝরাতে এই নিরব, জনশূণ্য রাস্তায় বেরিয়ে পড়েছেন?আপনি এতটা নির্বোধ নন অদ্রিজা যে এইটুকু জ্ঞান ও আপনার নেই। জাস্ট ডিসগাস্টিং!’

অদ্রিজা ড্যাবড্যাব করে তাঁকাল।রক্তিমের রাগে লাল হওয়া চেহারাটা দেখেই থমকে গেল সে। সোজা হয়ে দাঁড়িয়েই ঘন ঘন নিঃশ্বাস ফেলে হাঁপাতে লাগল।রক্তিম একপ্রকার বিরক্তি নিয়েই বলল,

‘ এইটুুকু পথ এসেই আপনি হাঁপিয়ে গেলেন অদ্রিজা?’

অদ্রিজা টলমলে চাহনিতে তাকিয়ে রইল রক্তিমের দিকে।হাত দিয়ে ইশারা করে পেঁছনে দেখিয়েই কাঁপা কন্ঠে বলল,

‘ র্ রক্তিম?পেঁছনে কয়েকজন ছেলে, আ্ আমায়…’

অদ্রিজাকে বাকি কথাটা না বলতে দিয়ে রক্তিম ভ্রু জোড়া কুঁচকে নিয়ে হাতের ইশারায় সেদিক পানে তাকাল।গম্ভীর গলায় বলল,

‘ বাইকে উঠুন।’

অদ্রিজা সেভাবেই দাঁড়িয়ে রইল।রক্তিম এবার ধমকে বলল,

‘ কথা কানে যায় না আপনার?উঠুন।’

অদ্রিজা এবার উঠে বসল।ভয়ে দুই হাত দিয়ে খামচে আঁকড়ে ধরল রক্তিমকে।মুখটা রক্তিমের পেঁছনে একপ্রকার লুকিয়ে রেখেই ছোট ছোট শ্বাস ফেলল।রক্তিম আগের মতোই গম্ভীর রইল।বাইকটা আরেকটু এগিয়েই নিয়ে ছেলেগুলোর কাছে গিয়ে থামাল।হাত দিয়ে ইশারা করেই ছেলেগুলোকে দেখেই বলল,

‘ হাই ব্রো।’

ছেলে গুলো বোকার মতো তাকাল।একবার রক্তিম তো একবার অদ্রিজার দিকে তাকিয়ে থাকল।টলতে টলতে আরেকটু এগিয়ে এসেই চোখ কচলাল।আবারও রক্তিম আর অদ্রিজার দিকে তাকিয়েই বলল,

‘ কে ভাই? ‘

রক্তিম দাঁত কেলিয়ে হাসল।বলল,

‘ তোর বস!’

ছেলেটা ঝাপসা চাহনি সরাতেই আবারও চোখ কচলাল।রক্তিমকে ভালো মতো দেখে নিয়েই বলল,

‘ আরেহ ঐদিনের ভাইটা না?’

রক্তিম বাঁকা হাসল। বলল,

‘ ইয়েস!মনে পড়ল? তো প্রথমে ঐ জায়গায়টায় তোরা তোদের আস্তানা করলি, ড্রিংক করা, জুয়া খেলা ইত্যাদি ইত্যাদি।ওসব ছিল তোদের প্রাথমিক অন্যায়।ছোট ছোট ছেলেমেয়েগুলোর বাসস্থান তোরা জোর করে দখল করতে চাইলি আমি তার জন্য যা শাস্তি দিয়েছি তোদের তা বোধ হয় কম পরে গেল বল?তার জন্যই এবার বড়সড় অন্যায় করে বসেছিস?জানিস এর শাস্তি কি হতে পারে?ওর সাথে কি করেছিস বল!’

ছেলেগুলোর এতক্ষনকার মাতলামে করা চাহনি এবার যেন সতেজ হয়ে উঠল।ভয়ে থতমত খেয়েই একজন মাথায় হাত রেখে বলে উঠল,

‘ নিজের দিব্যি ভাই!কিচ্ছু করি নাই এই মাইয়ার সাথে।শুধু হাতটাই ধরছিলাম।আর কিছ…’

ছেলেটাকে বাকিটা বলতে না দিয়েই রক্তিম বাইক থেকে নেমে দাঁড়াল।ছেলেটার কলারটা দুই হাত দিয়ে শক্ত করে চেপে ধরেই বলে উঠল,

‘ হাত? হাত ধরেছিস?কে ধরেছিস ওর হাত?কোন হাত দিয়ে ধরেছিস।গিভ মি আন্সার ফার্স্ট!’

ছেলেটা ভীত চাহনিতে তাকাল রক্তিমের দিকে।ভয়ে কাঁপা কাঁপা গলায় বলল,

‘ ভাই?মাইরেন না দয়া করে।আমিই ধরছিলাম।’

রক্তিম ক্ষ্রিপ্ত চাহনিতে তাকাল।চোয়াল শক্ত হয়ে এল মুহুর্তেই।কলারটা আরো শক্তভাবে চেপে ধরেই বলল,

‘ তুই?তুই ধরেছিস ওর হাত?কোন হাত দিয়ে ধরেছিস?’

ছেলেটা ডানহাতটা এগিয়ে দিল। হাতটাও কাঁপছে তার।ভয়ে থতমত খেয়েই বলল,

‘ এই হাত দিয়াই ভাই।এবারের মতো ক্ষমা কইরা দেন ভাই।আর জীবনেও এমন কিছু করুম না আমি ভাই।প্লিজ!’

রক্তিম হাসল।ছেলেটাকে ভদ্রভাবেই ছেড়ে দিল।বাইকে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়েই বাকি তিনজনের উদ্দেশ্যে বলে উঠল,

‘ আর তোরা তিনজন?কিছু করিসনি তোরা?’

ছেলেগুলো ছোট ছোট চোখ করে তাকাল।মাথা নাড়িয়ে বুঝাল তারা কিছু করেনি।রক্তিম মুচকি হাসল।ঠোঁটজোড়া গোল করে শিষ বাঁজাতে বাঁজাতেই হাতজোড়া বুকে ভাজ করে দাঁড়াল।বলল,

‘ ওকে সবাইকে মাফ করে দিলাম।কিন্তু তোদের নিজস্ব কাজ দিচ্ছি।কাজ করলে ক্ষমা করে দিব।রাজি?’

চার চারটা ছেলেই সঙ্গে সঙ্গে মাথা দুলাল যে তারা রাজি।রক্তিম মুচকি হাসল।বাইকে উঠে বসেই বলল,

‘ তোরা তিনজন ওর ডান হাতটাকে ইচ্ছেমতো আঘাত করবি।যতোটা আঘাত না করলে ও বুঝতে না পারে অদ্রিজাকে স্পর্ষ করার শাস্তি কতোটা ভয়ানক ঠিক ততোটাই আঘাত করবি।এন্ড প্রুফ হিসেবে আমাকে কাল ওর আহত হাতসহ দেখাতে আসবি।আর তুই?ওরা যখন হাতটা আঘাত করা শেষ করবে? তখন তুই নিজ দায়িত্বে গিয়ে হাতের ব্যান্ডেজটা করিয়ে নিবি।ওকে?চারজনই মিলে কাল সকালে প্রুভ দিয়ে আসবি অফিসে।আমার সন্দেহ হলে আমি ব্যান্ডেজ খুলে আবার দেখব।যদি সন্দেহ সত্যি হয় তোদের চার চারজনকেই এমন কেলাব যে জীবনেও ভুলবি না।’

ছেলেগুলো বাধ্য ছেলের মতো মাথা দুলাল।রক্তিম বাঁকা হাসল।বাইক চালাতে চালাতেই অদ্রিজার ভয়ার্ত, ঘামে ভেজা মুখটা বারংবার বাইকের আয়নায় দেখল।অদ্রিজাও সেভাবেই রইল।রক্তিমের সাথে কথা বলার সাহস পেল না।হঠাৎ মোবাইলে রিংটোনের আওয়াজ শুনেই কপাল কুঁচকে চাইল সে।বোনের নাম্বার দেখেই কল রিসিভড করে ফিসফিসিয়ে বলল,

‘ হ্যালো অত্রি?আমি এই তো চলে আসছি। আর অল্প একটু।তুই আম্মুকে আরেকটু বুঝিয়ে রাখ প্লিজ!আমি চলে আসছি।’

ওপাশ থেকে অত্রিয়া মৃদু গলায় বলল,

‘ তুই সেই গেলি, দুই তিন ঘন্টা হচ্ছে আপু।আম্মু হঠাৎ জেগে গেলে আমি কি বলব?’

অদ্রিজা হতাশ হলো।কিছু বলতে যাবে ঠিক তখনই রক্তিম জোরে জোরে বলে উঠল,

‘ বলবে তোমার জিজুর সাথে ঘুরতে বের হয়েছে।আর অদ্রিজা তো তোমাদের বাসায় ফিরছে না এখন।কাল সকালে ফিরবে।তুমি বুঝিয়ে নিও অত্রিয়া।’

অদ্রিজা ড্যাবড্যাব করে তাকাল।অস্ফুট স্বরে বলল,

‘ মানে?কি বলছেন রক্তিম?এখন বাড়ি না ফিরলে আমার আম্মু রাগ করবে রক্তিম।’

রক্তিম গম্ভীর গলায় বলল,

‘ যেভাবে একা একা মাঝ রাতে রাস্তায় বেরিয়ে পড়েছিলেন তখন মনে ছিল না বাড়ি না ফিরলে আপনার আম্মু রাগ করবে?তখন যদি বাড়ি না ফিরতে পারতেন আপনার আম্মু বুঝি রাগ করত না অদ্রিজা?’

অদ্রিজা চুপ হয়ে গেল।শুকনো ঢোক গিলে কল কেঁটে দিয়ে সেভাবেই খামচে ধরল রক্তিমের শার্ট।হালকা কেঁশেই বলল,

‘ থেংক্স রক্তিম।আমাকে বাঁচানোর জন্য।’

রক্তিম হাসল। বলল,

‘ আমি মোটেই আপনার থেংক্সের জন্য আপনাকে বাঁচাইনি অদ্রিজা।’

অদ্রিজা কিছু বলল না।কয়েক মিনিট পর নিজের বাসার সামনে এসে থামল রক্তিমের বাইকটা।দ্রুত নেমেই মুচকি হেসে বলল,

‘ আবারও থেংক্স রক্তিম।আমাকে আম্মুর রাগের থেকে বাঁচিয়ে দিলেন।জানতাম আপনি মজা করছেন।যেখানে আপনি নিজের ইচ্ছায় এখানে রেখে গেলেন আমায় মুক্তির জন্য, সেখানে আমার সাথে সময় কাঁটানোর ইচ্ছে বোধ হয় আপনার হবে না বলুন?নেহাৎ ঐ পিচ্চিগুলোর আবদার রক্ষার জন্য আমায় নিয়ে গিয়েছিলেন আজ।তাই না?’

রক্তিম হাসল।বাইকের সামনে ঝুলিয়ে রাখা প্যাকেটটা থেকে বের করল দু দুটো বক্স।একটা সে বক্স যেটা অদ্রিজা তার সুইটহার্টের জন্য দিয়েছিল।গিফ্টটা দেওয়া হয় নি তাই ফেরত দিল অদ্রিজার হাতে।বলল,

‘ ঠিক বলেছেন।ঐ পিচ্চিগুলোই আমার সব। আমার জীবনে ওরা কতোটা গুরুত্বপূর্ণ আপনি জানেন ও না অদ্রিজা।ওরা আমার মতোই নিঃস্ব।আমার মতোই রাতের আকাশে মা বাবাকে খোঁজে। আমার মতোই মা বাবা হীন জীবন কাঁটায় ওরা।জানি না ওদের মা বাবার শূণ্যতা পূরণ করতে পারব কিনা তবে আমি ওদের শূণ্য থাকতে দিতে চাই না ।সুইটহার্টের পরে আমার জীবনে ওরাই সব।তাই তো আমি ওদের জন্য সব করতে পারি।আপনাকেও বিয়ে করে নিলাম ওদের জন্য। ‘

অদ্রিজা মৃদু কন্ঠে বলল,

‘ ওরাও আপনাকে অনেক ভালোবাসে মিঃ রক্তিম।’

রক্তিম মিষ্টি হাসল। হাতের অপর বক্স টা খুলে বের করল একটা পায়েল।বাইক থেকে নেমেই হাঁটু গেঁড়ে বসল অদ্রিজার সামনে। অদ্রিজার বাম পা টা একপ্রকার জোর করে ধরেই পরিয়ে দিল পায়েলটা।মুচকি হেসেই বলল,

‘ বাহ!বেশ মানিয়েছে আপনার পায়ে।’

অদ্রিজা হতবিহ্বল চাহনি নিয়ে তাকিয়ে রইল।রক্তিম উঠে দাঁড়িয়েই মুচকি হেসে বলল,

‘ গিফ্ট বক্সটা ফেরত দিলাম কেন জানেন? ঐ গিফ্ট বক্সে সুইটহার্টকে আমার প্রেমিকা ভেবে কি না কি দিয়েছেন।তাই রিস্ক নিই নি।দি ও নি সুইটহার্টকে।আর ঐ পায়েলটা সুইটহার্টের জন্য গিফ্ট কিনতে গিয়ে চোখে পড়েছিল।ভাবলাম আমার টেম্পোরারি ওয়াইফের জন্য নেওয়াই যায় গিফ্টটা। ভালো করেছি না?’

অদ্রিজা তাচ্ছিল্য নিয়ে হাসল।বলল,

‘ ভালো করেছেন কি খারাপ করেছে তা আমি কি করে জানব।’

রক্তিম বাঁকা হাসল।অদ্রিজার কানে ফিসফিসিয়ে বলল,

‘ সেটাও ঠিক।তবে পরিয়ে দিলাম বলে ভাববেন না আমি আপনাকে ভালোবাসি।পরিয়ে দিয়েছি কারণ অত্রিয়া বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আছে। ও যাতে ভেবে না বসে আমাদের মাঝে সম্পর্কটা ফেইক। তাই।’

অদ্রিজা এবারও তাচ্ছিল্য নিয়ে হাসল।বলল,

‘ জানুক না।কি হবে তাতে?দুদিন পর তো জানবেই। তাই না রক্তিম?আমি তো আর জোর করে আপনার জীবনে থাকতে পারব না আপনি না চাইলে।একদিন না একদিন তো সেই জানতে হবে।’

কথাটা বলেই আর দাঁড়াল না অদ্রিজা।একনজর নিজের রুমের বেলকনিতে দাঁড়ানো অত্রিয়াকে দেখেই মৃদু হাসল।তারপর গেইট খুলে দ্রুত ঢুকে গেল বিল্ডিংয়ে।আর রক্তিম একনজর তাকিয়েই মুখ বাঁকিয়ে হাসল।

চলবে…