হৃদয় নিবাসে তুই
পর্ব-১৯
লেখনীতেঃভূমি
রাতের আকাশে ছোট ছোট উজ্জ্বল তারা জোনাকির মতো জ্বলছে।মাঝখানেই বড়সড় একটা ঝলমল করা চাঁদ।জানালার এপাশ থেকে অদ্রিজা মুচকি হাসল সেই চাঁদটার দিকে তাকিয়েই। হাসিটা অবশ্য বেশিক্ষন টিকল না।কিছুটা সময় পরই তা তীব্র বেদনায় আর বিষাদে রূপান্তরিত হলো মোবাইলের স্ক্রিনে রক্তিমের নামটা দেখেই।অদ্রিজা ছোট ছোট শ্বাস ফেলল।প্রতিজ্ঞা করল কলটা সে রিসিভড করবে না।কিন্তু একবার, দুবার, তিনবারের সময় আর প্রতিজ্ঞাটা প্রতিজ্ঞার মতো রইল না।কলটা রিসিভড করেই ঝাঁঝালো কন্ঠে বলে বসল সে,
‘কি সমস্যা রক্তিম?এতবার কল দিচ্ছেন কেন আপনি?’
রক্তিম ওপাশে নিঃশব্দে হাসল।কয়েক সেকেন্ড পরই হঠাৎ টুংটাং শব্দ কানে ভেসে আসল অদ্রিজার।ভ্রু জোড়া কুঁচকে রেখেই ফোনের ওপাশে টুংটাং শব্দটা মনোযোগ দিয়ে শুনল অদ্রিজা।রক্তিম মৃদু হেসেই বলল,
‘কানের ঝুমকোটা আছে?’
অদ্রিজার ডান হাতটা তৎক্ষনাৎ গিয়ে স্থির হলো কানে।বাম কানটা চেক করে ডান কানে হাত নিতেই খেয়াল হলো, কানে দুলটা নেই।অদ্রিজা হতাশ হলো।মুখ চোখ কালো করে বলল,
‘ আপনার কাছে আমার ঝুমকো? ‘
রক্তিম হাসল।সেই হাসির মৃদু শব্দ ভেসে আসল অদ্রিজার কানেও। সাথে সাথে তীব্র বিরক্তি ছুঁয়ে গেল মনে। মুখ চোখে দেখা গেল অন্ধকার আলোর রেশ। দাঁতে দাঁত চেপেই বলে উঠল,
‘ আজব তো!হাসছেন কেন আপনি? হাসির মতো কি বলেছি আমি?ঝুমকোটা আপনার কাছে?’
রক্তিম হাসি থামাল।কন্ঠটা কঠিন দৃঢ় করার চেষ্টা করেই বলল,
‘ আমার কাছে তোমার ঝুমকো কেন থাকবে অদ্রি?’
অদ্রিজা একেবারে চমকে উঠল রক্তিমের সম্বোধন শুনে।তুমি আর অদ্রি ডাকটা রক্তিমের মুখে কিছুটা ভিন্ন শোনাল যেন।মনের ভেতর বয়ে গেল অদ্ভুত এক শিহরন।অদ্রিজা হালকা গলায় বলে বসল,
‘ কি বললেন?আমায় অদ্রি ডাকার অধিকার নেই আপনার।অদ্রিজাই ডাকবেন।’
রক্তিম পিচেল গলায় বলে উঠল,
‘ উহ!তোমার প্রেমিকের দেওয়া নামে তো ডাকছি না অদ্রি।অদ্রি ডেকেছি, দ্রিজা নয়। ‘
অদ্রিজা চুপ রইল।বিরক্তে মাথাটা ছিঁড়ে যেতে চাইল যেন মুহুর্তেই।রাগে হাঁসফাঁস করে কিছুটা সময় নিরবতার পরই রক্তিম আবারও বলল,
‘ রেগে গিয়েছো নাকি অদ্রি?কুল! তোমার বান্ধবীর ফুফাত ভাই হিসেবে এটুকু মজা আমি করতেই পারি। তাই না অদ্রি?’
অদ্রিজা কপাল কুঁচকে ফেলল।রক্তিমের কথাগুলো চরম বিরক্তি নিয়ে শুনেই কড়া কন্ঠে বলল,
‘আপনি আমার কেউ নন রক্তিম।কেউই নন।বান্ধবীর ফুফাত ভাই হিসেবে তো আপনার সাথে আমার পরিচয় হয় নি।যে পরিচয়টা হয়েছিল সেটা আমি কিংবা আপনি কেউই মানি না।হাতে গোনা আর কয়েকটাদিন পর এমনিতেও আমাদের দেখা সাক্ষাৎ হবে না আর।তাই আপনি আমার কেউই নন রক্তিম।এটুকু মজা করারও অধিকার আপনার নেই।আর অদ্রি ডাকার বা তুমি করে বলার ও অধিকার নেই।’
রক্তিম মুচকি হেসেই বলে উঠল,
‘ হ্যাঁ, জানি।তবুও অনাধিকার চর্চা করতে আমার ভালোই লাগে অদ্রি।এনিওয়েজ,আমি বোধ হয় বিরক্ত করছি।এইটুকু সময়ে তোমার প্রেমিকের সাথে কথা বললে কতগুলো অনুভূতি প্রকাশ করা হয়ে যেত। তাই না?’
অদ্রিজার রাগ আর বিরক্তিটা এবার আকাশ ছুঁলো।ক্ষুদ্ধ কন্ঠেই বলে উঠল,
‘ ইরিটেটিং! বারবার প্রেমিক বলে কি বুঝাতে চাইছেন আপনি?দিহান মোটেই আমার প্রেমিক নয়।আর আমার কোন প্রেমিক নেই। আশা করি বিষয়টা আপনাকে বুঝাতে পেরেছি।’
রক্তিম হাসল।ফিসফিস করে কাউকে কিছু বলেই কিছুটা সময় চুপ রইল।অদ্রিজাও চুপ রইল।অবশেষে ওপাশ থেকে কোনকিছু শুনতে না পেয়েই বলল,
‘ বাই রাখছি।’
রক্তিম এতক্ষন কিছু না বললেও এবার লম্বা দীর্ঘশ্বাস ফেলল।মৃদু গলায় ফিসফিসিয়ে বলল,
‘ ডোন্ট মাইন্ড অদ্রিজা।পাশে সুইটহার্ট ছিল এতক্ষন।আপনার ঝুমকোটা পকেটে দেখেই সন্দেহ করেছিল।তাই কল করে শিওর করলাম তাকে।আপনাকে তুমি আর অদ্রি বলে ডাকাটা তার উপস্থিতির জন্যই।বাই।’
সঙ্গে সঙ্গেই কলটা কেঁটে গেল।অদ্রিজা লম্বা শ্বাস ফেলল।এই মানুষটাকে বুঝা দায়।বড্ড্ কঠিন রকম এই মানুষটা।এমন কেন?অদ্রিজা ভেবে কোন উত্তর পেল না।হতাশ চাহনিতে এপাশ ওপাশ তাকিয়েই নিজের রুম পেরিয়ে ড্রয়িং রুমের একপাশে গিয়ে দাঁড়াল।ফ্লোরে পাটি বিছানো।তার উপর রাইমা, রাইমার বর, অত্রিয়া আর অত্রিয়ার শ্যামপুরুষ সহ তার চাচাতো বোন দুজনও আছে।অদ্রিজা মুচকি হাসল। তাদের কাছাকাছি আসতেই অত্রিয়া অদ্রিজার ডান হাতটা টানতেই এলোমেলো হয়ে বসে পড়ল অদ্রিজা।অত্রিয়া ফিসফিসিয়ে বলে উঠল অদ্রিজার কানে,
‘ আপু?রাইমা আপুর যে একটা প্রাক্তন ছিল জানতি তুই?খুব ভালোবাসত।কিন্তু লোকটা জঘন্যরকম খারাপ ছিল আপু।রাইমা আপুকে ফিরিয়ে দিয়ে রাইমা আপুর বেস্টফ্রেন্ডকে ভালোবেসেছিল।পরে নাকি সে বেস্টফ্রেন্ডকেও ঠকিয়েছে।জিজু কিন্তু অনেক ভালো। আপুর সবটা জেনেও আগলে নিয়েছে।এতক্ষন এসবই বলেছে আপু।তুই মিস করলি আপু।’
অদ্রিজা চকচকে চাহনিতে তাকাল।রাইমার দিকে তাকিয়েই চোখ ঘুরিয়ে রাইমার বরের দিকে তাকাল।সরু চাহনিতে রাইমাকে পর্যবেক্ষন করেই বলল,
‘ রাইমা আপু? বলো তো সে জঘন্য লোকটা ভালো নাকি জিজু?ঐ জঘন্য লোকটার সাথে বিয়ে হলে সুখী হতে এখন যতোটা সুখী?’
রাইমা মুচকি হাসল।সুন্দর ধবধবে মুখে চমৎকার হাসিটা বড্ড চমৎকার ঠেকল।বলল,
‘ কখনোই তার সাথে বিয়ে করে আমি সুখী হতাম নাহ রে অদ্রি।সে কখনো আমায় বুঝেই নি যতোটা তোর জিজু বুঝে।সে এই শহরেই থাকে।এই শহরে যেহেতু এসেছি তাকে অবশ্যই একটা ধন্যবাদ জানিয়ে যাব আমি।সে ফিরিয়ে না দিলে আমি তোদের জিজুর মতো কাউকে হয়তো পেতামই না।’
অদ্রিজা হাসল।হাসল বাকি সবাইও।রাইমার বরের চোখে মুখে দেখা গেল এক মুগ্ধ চাহনি।সেই মুগ্ধ চাহনির রেশ টেনেই অত্রিয়া খিলখিলিয়ে হেসে বলল,
‘ জিজু নতুন করে প্রেমে পড়ে গেলে নাকি রাইমা আপুর? ‘
কথাটা শুনে সবাই হেসে উঠল।অত্রিয়ার শ্যামপুরুষের মুখেও দেখা গেল গম্ভীর চাপা হাসি।হাসির আড়ালে সেই হাসিটার দিকেই তাকিয়ে রইল অত্রিয়া।কি স্নিগ্ধ হাসি।এই হাসিটা দেখার জন্য হাজারটা রসিকতা করতে হলে ও ক্ষতি নেই।আহা!কি সুন্দর।
.
‘ তুই আমায় ভালোবাসিস নেহা?’
নেহা চমকে উঠল সামনের ছেলেটার কথাটা শুনেই।হাত পা কেঁপে উঠল সঙ্গে সঙ্গেই।লোমকূপ জুড়ে শিহরণ বয়ে গেল মুহুর্তেই। অস্বস্তিতে ঘেমে উঠল হাতের তালু, পায়ের তালু।বার কয়েক দিহানের দিকে তাকিয়ে থেকেই মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে রইল সে।গলা দিয়ে যেন একটা শব্দও বের হলো না তার।দিহান বুঝতে পারল নেহার অবস্থাটা।হতজোড়া বুকে ভাজ করেই আবারও গম্ভীর গলায় বলে উঠল,
‘ কি হলো?ভালোবাসিস?উত্তর দিচ্ছিস না কেন তুই?’
নেহা এবারও কিছু বলতে পারল না।শুকনো গলা নিয়ে সেভাবেই দাঁড়িয়ে রইল।তীব্র অস্বস্তি নিয়ে কিছু না বলেই মাথা নিচু করে পালিয়ে আসতে নিতেই দিহান আবারও সামনে এসে দাঁড়াল মুহুর্তেই।গম্ভীর কন্ঠে আবারও শুধাল,
‘ নিরবতা সম্মতির লক্ষণ নেহা।তাহলে কি আমি তোর উত্তরটা হ্যাঁ ধরে নিব?ইয়েস অর নো?’
দিহানের কথাগুলো শুনেই গলাটা যেন আরো শুকিয়ে আসল নেহার।কোন রকমে মাথা দুলিয়ে হ্যাঁ উত্তর দিতেই কানে আসল দিহানের গমগমে কন্ঠ,
‘ এভাবে চুপচাপ হয়ে আছিস কেন তুই?খেয়ে ফেলব তোকে আমি?এমনিতে তো বেশ চঞ্চল আর বাচাল হয়ে থাকিস। তবে?এখন এমন বিহেভিয়ার করছিস কেন?’
নেহা মাথা তুলে তাকাল। কাঁপা গলায় বলে উঠল,
‘কো্ কোথায়?ঠিকই তো আছি দিহান।’
দিহান হালকা হাসল।এতক্ষনের গম্ভীর মুখে ঐটুকু হাসি দেখেই যেন একটু হলেও স্বস্তি পেল নেহা।সরু চাহনিতে তাকাতেই দিহান মৃদু কন্ঠে বলে উঠল,
‘ আমায় কেন ভালোবাসিস?কি কারণে?’
নেহা হতাশ হলো এবার।মনে মনে ভাবল আজ কার মুখ দেখে ঘুম থেকে উঠেছে সে।কিন্তু মনে পড়ল না।সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠেই বাসা থেকে বেরিয়ে এমন একটা জেরার মুখোমুখি হতে হবে জীবনেও ভাবে নি সে।তাও সেই মানুষটার কাছেই যাকে দেখলে সে বেসামাল হয়ে উঠে, অগোছাল হয়ে যায় সেই আজ তাকে চেপে বসেছে এভাবে?নেহা ছোট্ট শ্বাস ফেলল।দিহানের দিকে তাকিয়েই কোনভাবে বলল,
‘ দি্ দিহান, মাথা ব্যাথা করছে। আমি বাসায় চলে যাচ্ছি। তুই ভার্সিটি যা।হু?’
দিহান মুচকি হাসল।সেভাবেই দাঁড়িয়ে থেকে নেহার হতাশ হওয়া মুখচাহনিটা দেখে নিয়েই টুপ করে বলে বসল,
‘ ভালোবাসবি আমায়?’
দিহানের কথাটা যেন বিশ্বাস হলো না নেহার।চোখ মুখে খেলে গেল তীব্র বিস্ময়। চোখজোড়ায় তীব্র বিস্ময় নিয়েই কিছুটা সময় তাকিয়ে রইল দিহানের মুখের দিকে।তা দেখেই দিহান হাসল।মৃদু গলায় বলল,
‘ আমি তোকে ভালোবাসি না নেহা।তবে তোর ভালোবাসা পেতে চাইছি।ভালোবাসবি?’
‘ মা্ মানে?’
‘ ভালোবাসবি? আমি তোর সব ভালোবাসা গ্রহণ করব।আগলে নিব।কোন একদিন ভালোও বাসব। নিজের পুরোনো ভালোবাসাকে ভুলতে হবে আমায়।সাহায্য করবি নেহা?প্লিজ!’
সঙ্গে সঙ্গেই নেহার এতক্ষনকার নুঁইয়ে থাকা চাহনি জ্বলজ্বল করে উঠল।মুখে তীব্র ক্ষোভ নিয়েই বলল,
‘ তোকে ভালোবাসি আমি দিহান।তাই বলে তুই আমায় একজনকে ভুলার মেডিসিন হিসেবে পাশে চাইবি? আমি তোকে ভালোবাসি। তুই আমার হলি কি না হলি তাতে আমার কিছু যায় আসে না।কিন্তু তোকে পাওয়ার জন্য এজ এ মেডিসিন হিসেবে তোর পাশে থাকতে হবে? আমি থাকতে পারব না দিহান।স্যরি।সম্ভব নয়। ‘
দিহান হাসল।বলল,
‘ ইটস ওকে।থেংক্স।’
নেহা চমৎকার ভাবে হাসল।এই হাসিটা দেখে মনেই হবে না একটু আগেও তার চোখেমুখে ক্ষোভ ছিল, একটু আগেও মেয়েটা অস্বস্তিতে নুঁইয়ে পড়েছিল সে।মুখের চাঞ্চল্য মাখা হাসিটা তা একবিন্দুও বুঝতে দিল না। সেভাবে হাসতে হাসতেই বলল নেহা,
‘ তোর পুরোনো ভালোবাসাটা কে শুনি?আহারে!তোকে এভাবে ছেড়ে দিল?’
দিহান আশ্চর্য হয়ে তাকাল নেহার দিকে।হঠাৎ নেহার পরিবর্তিত কথায় অল্প অবাক হলেও নিজেকে সামলে মৃদু গলায় বলল,
‘দ্রিজা।’
কথাটা বলেই আর দাঁড়াল না দিহান।নেহা যেন ঐ একটা শব্দ শুনেই জমে গেল।দ্রিজা?দ্রিজা কিভাবে?তবে কি ভার্সিটির সেই গুঞ্জন সঠিক ছিল?দ্রিজা আর দিহানের প্রেমের সম্পর্ক ছিল?তারপরই দ্রিজার বিয়ে হয়েছে?নেহা বুঝে উঠল না।পাগল পাগল লাগল নিজেকে একমুহুর্তের জন্য।নিজের এতটা কাছের বন্ধু, ভালোবাসার মানুষ দুইজনের সম্পর্ক ছিল অথচ বলেইনি তাকে?জানেই না সে?দ্রিজা তো জানত সে দিহানকে পছন্দ করে তাহলে কোনদিন কেন বলল না তার আর দিহানের সম্পর্ক আছে?কেন?
.
‘ আপনাকে প্রিয় সম্বোধন করা কি আমার উচিত অদ্রিজা?জানি না আমি। তবে আমি খুব অসহায় অদ্রিজা।খুব অসহায় আমি।আমায় একমুঠো সহায্য ভিক্ষে দিবেন অদ্রিজা?আমি ভীষণ ভীষণ রকম অসহায়!আমার এই জীবনটায় আমি কম ভালোবাসা পাই নি অদ্রিজা।অনেক নারীই আমায ভালোবেসেছিল। খুব করে চেয়েছিল আমায় ।কিন্তু আমি কখনো কাউকে চাইনি অদ্রিজা।কখনোই না।আপনাকেও চাই না আমি। এটুকুও ভালোবাসি না আমি আপনাকে। তবুও আমি আপনাতে আসক্ত হয়ে যাচ্ছি। কেন বলুন তো?রাত হলেই আমার ঘুম আমায় কাছে টানছে না।মাথা ব্যাথায় মাথাটা যেন ছিড়ে যাচ্ছে আপনি নামক মানুষটার ভাবনায়। আমি কি করব অদ্রিজা?আপনি নামক মরনব্যাধির কি কোন চিকিৎসা আবিষ্কার হয়নি এখনো?আর যে সহ্য করা যাচ্ছে না এই তীব্র ব্যাথা।আমার এই দীর্ঘ জীবনের সব দুঃখের একমাত্র ঔষুধ অ্যালোকোহলও আপনি নামক ব্যাধির সাথে লড়তে পারছে না অদ্রিজা।কেন ভুলতে পারছি না?এই অসহ্য যন্ত্রনা থেকে আমায় মুক্তি দিন অদ্রিজা।মুক্তি চাই আমার।’
ভাজ করা সাদা কাগজে লেখা গুলো পড়েই চমকে গেল অদ্রিজা।কাগজটা একটা বক্সে ছিল।বক্সটা তার চেনা।রক্তিমের সুইটহার্টের জম্মদিনে যে বক্সটা সে গিফট করেছিল কিন্তু রক্তিম ফেরত দিয়েছিল সেই বক্সটার ভেতরেই এই চিরকুটটা পেল।এতদিন খুলে দেখে নি সে।বক্সের ভেতরে একজোড়া কানের দুলই উপহার দিয়েছিল সে।আজ বাসার সবাই সেঁজেছে।অত্রিয়া সাঁজার জন্য এই বক্সের কানের দুলটার পেঁছনেই পড়ে ছিল এতক্ষন।বক্সটা খুলে কাগজটা চোখে পড়তেই এক প্রকার ঝাপটে নিয়ে নিল অদ্রিজা।অত্রিয়াকে দুলজোড়া দিয়ে কোনভাবে রুম থেকে বের করে দিয়েই চিরকুটটা পড়ল সে।সঙ্গে সঙ্গেই টগবগ করে উঠল শিরায় উপশিরায় বয়ে চলা রক্ত।বুকের ভেতর হৃৎস্পন্দনের মাত্রা যেন ঘন হয়ে উঠল দ্রুত।আপসোস হলো, আরো আগে কেন বক্সটা খুলে দেখেনি?এই লেখাগুলো আরো আগে কেন পড়া হয়নি?কেন?
চলবে……