হৃদয়স্পর্শী মায়াবিনী পর্ব-০৬

0
130

#হৃদয়স্পর্শী_মায়াবিনী
#নুসাইবা_ইসলাম_হুর (মিমি)
#পর্বঃ৬

দুপুরের তপ্ত রোদ আছড়ে পড়ছে ফারিসতার কোমল মুখশ্রীর উপরে। রোদের রশ্মিগুলো ফর্সা কোমল মুখশ্রীতে পড়তে যেনো আরো রাঙিয়ে তুলেছে মুখশ্রীটা। পাতলা গোলাপি ঠোঁট, কপালের এক পাশে ওয়ান টাইম ব্যান্ডেজ। কেনো যেনো মনে হচ্ছে ব্যান্ডেজটা খুব করে মানিয়েছে ওই মশ্রিন কপালে।

তাজ ফারিসতাকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পর্যবেক্ষণ করতে করতে চোখের সামনে ভেসে উঠলো প্রথম দেখা সেই ভিতুশ্রী মেয়েটাকে। যে ওর দেওয়া আঘাতের ব্যথায় আর ভয়ে চোখমুখ খিঁচে বন্ধ করে ছিলো। বৃষ্টির কণা গুলো মক্তর মতো ফুটে উঠেছিলো স্নিগ্ধ মুখশ্রীতে। ভয়ের তোপে তীর তীর কাপছিলো ওই পাতলা গড়নের গোলাপি ঠোঁট জোড়া। সেদিনের মতো আজও তাজ ফারিসতাকে নিষ্পলক ভাবে পর্যবেক্ষণ করে যাচ্ছে। মেয়েটার মাঝে সেদিন আর আজকের ভিতরে খুব একটা পার্থক্য খুঁজে পেলো না। সেদিনের মতো আজো শুভ্র ড্রেস পড়া তার উপরে এপ্রন। সেদিন ভয়ে গুটিশুটি হয়ে ছিলো আর আজ নিশ্চিতে ঘুমিয়ে আছে এই টুকুই পার্থক্য খুজে পেলো। এই ভিতু মেয়ে নাকি সাব্বিরকে তিনটা থাপ্পড় মেরেছে এ কি আদো বিশ্বাস করার মতো কথা? মেয়েটাকে দেখে মনে হয় এর একটা মশা মারার ক্ষমতা নেই। যে কেউ এই মেয়েকে দেখলে এক নিমিশে বলবে এ মেয়ে শিমুল তুলার চেয়েও কোমল তাহলে এই কোমল হৃদয়িনী কিভাবে এতো সাহসী হতে পারে মাথায় আসলো না তাজের।

তাজ যখন ভাবনায় মত্ত তখন চোখ আটকা পড়লো চেয়ারের সাথে বেঁধে রাখা হাত জোড়ার দিকে। দঁড়ির প্রতিটা ভাজের পাশে লালচে বর্ণ ধারণ করে আছে মনে হচ্ছে এখনি ফেটে বেড়িয়ে আসবে রক্তকণা। তাজ এবার দ্বিধা দ্বন্দ্ব পড়ে গেলো হাতের বাঁধনটা কি খুলে দিবে নাকি এভাবে থাকবে। পরক্ষণে ভাবলো ও কেনো খুলে দিবে। কথাটা মনে মনে ভাবলেও ওই লালচে হাতের দিকে চোখ যেতে কেনো যেনো মন চাচ্ছে না ওই কোমল হাতজোড়া এভাবে কষ্ট পাক। তাজ চোখ তুলে পুরো রুমে একবর চোখ বুলাতে চোখে পড়লো দরজার সামনে চোখ গোল গোল করে তাকিয়ে আছে আরফি। আরফিকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে মনে মনে কিছুটা হাসি পেলো তাজের। কারণ আরফির মতো ও ও প্রথম এভাবে চমকেছিলো কিন্তু পরক্ষণে কাউকে বুঝতে না দিয়ে নিজেকে সামলে নিয়েছে।

হাতের বাঁধন খুলে দে…..

হঠাৎ আজের কথায় হুঁশ আসলো যেনো আরফির। হুঁশ আসতে আরফি অস্ফুট স্বরে বলে উঠলো দোস্ত এটা সেই ভিতু মেয়ে না? এই মেয়েকে দেখে তো মনে হয়না একটা মশাও মারতে পারবে সেখানে সাব্বিরকে তিনটা থাপ্পড় মারবে তো দূরের কথা। সাব্বির মনে হয় ভুল করে এই ভিতু মেয়েকে তুলে এনেছে।

বলেছে এক কথা আর এই ছেলে রচনা বলা শুরু করেছে তা দেখে চোখমুখ কুঁচকে ফেললো তাজ। একে ফের কিছু বলে আবার এক গাদা রচনা শুনতে অনিচ্ছুক তাজ তাই আরফিকে আর কিছু না বলে ফারিসতার সামনে হাঁটু গেড়ে বসে নিজেই ওই দঁড়ি খুলে মুক্ত করে দিলো কোমল হাত জোড়া। দঁড়িটা খুলতে চোখের সামনে জ্বলজ্বল করে উঠলো দুই হাতে তিনটি করে ছয়টি লালচে দাগ। ফর্সা হতে লালচে দাগগুলো যেনো একটু বেশিই ফুটে উঠেছে। তাজ কয়েক মুহূর্ত ওই লালচে দাগ অবলোকন করে আরফির উদ্দেশ্যে বলে উঠলো পানি দে।

এতক্ষণ তাজের কাজ চোখ গোল গোল করে দেখছিলো আরফি যেনো আরেকটু হলে চোখের কোটর থেকে চোখ জোড়া খুলে টুপ করে নিচে পড়ে যাবে। যেই ছেলে কোনো মেয়েকে স্পর্শ করবে তো দূরের কথা কখনো ফিরেও তাকায় না আর সেই ছেলে একটা মেয়ের বাঁধা হাত খুলে দিচ্ছে বিষয়টা ঠিক হজম করতে পারলো না ছেলেটা। আরফি যখন বিষময়ে হতবাক হয়ে তাজকে অবলক করছিলো তখন তাজের কথায় সম্বিত ফিরে পেয়ে তুতলিয়ে বলে উঠলো,

হ…হ্যা কি?

আরিফ এমন কথায় তাজ এবার নিজের রাগ ধরে রাখতে না পেরে ধমকে বলে উঠলো আমি ওখানে আসলে তোর কি অবস্থা করবো আমি নিজেও জানিনা। এক কথা দুইবার বলা লাগবে কেনো কানে শুনিস না? কানের গোড়ায় থাপ্পড় লাগালে ভালো করে শুনতে পারবি।

তাজের ধমকে আরফি ঠোঁট উল্টে বলে উঠলো একটু ভালো করে বলা যায় না? সব কথায় খ্যাক খ্যাক করে ওঠা আর হুমকি দেওয়া ছাড়া আর কিছুই পাড়স না।

আমি আসবো ওখানে? চোখ গরম করে বলে উঠলো তাজ।

আরিফ তড়িঘড়ি করে পানির বোতলটা নিয়ে তাজের কাছে এগিয়ে গিয়ে বলল তোর আসা লাগবে না ভাই আমি এই এসেছি।

তাজ আর কোনো কথা না বলে আরফির থেকে পানির বোতল নিয়ে হাতে কিছুটা পানি তুলে হালকা করে ছিটাতে লাগলো ফারিসতার মুখে।

এদিকে ফারিসতা ফারজানা বেগমের থেকে লুকিয়ে লুকিয়ে ছাঁদে যেয়ে বৃষ্টিতে ভিজছিলো তখন আচমকা কারো সাথে ধাক্কা খেয়ে ছাঁদ থেকে নিচে পড়ে যেতে নিলে কেউ হাত ধরে ফেললো। কে ধরেছে তার মুখ দেখার আগেই সেই লোক বিশ্রী এক হাসি দিয়ে আসতে আসতে হাত ছেড়ে দিতে ফারিসতা ভয়ে গগনবিদারী চিৎকার দিয়ে আম্মু বলে উঠলো সাথে সাথে ফারিসতার চোখ জোড়া খুলে গেলো। থর থর করে কেঁপে উঠলো পুরো শরীর। চোখ খুলতে চোখের সামনে সব কিছু ঝাপসা হয়ে আসলো। তাহলে কি সত্যি সত্যি ও পড়ে গিয়ে ম/রে গিয়েছে ভাবতে ভয়ে আবার যেই চিৎকার দিতে নিবে তখম কানে ভেসে আসলো কারো চাপা কণ্ঠে ধমকে ওঠা,

এই মেয়ে এভাবে চেঁচাচ্ছো কেনো?

হঠাৎ কারো এমন চাপা কণ্ঠ শুনে চিৎকার দিতে গিয়েও সেটা গিলে ফেললো ফারিসতা। তখন চোখের সামনে আস্তে স্পষ্ট হতে লাগলো একটা মুখশ্রী। মুখশ্রীটা চোখের সামনে স্পষ্ট হতে ফারিসতা চমকালো সাথে ভড়কালো। একরাশ বিস্ময় নিয়ে তাকালো ওর সামনে হাঁটু গেড়ে বসে থাকা সেদিনের দেখা সেই দানবীয় শক্তির অধিকারী মানবের দিকে। আজকের এই মানবের সাথে সেদিন মাঝ রাস্তায় বসে ওকে আঘাত করা মানবের সাথে হুবহু মিল রয়েছে কিন্তু ওইদিন এর দেখা সেই ডক্টরের সাথে চেহারার মিল থাকলেও স্বভাব চালচনের কোনো মিল নেই। তার মানে সেদিন ও আসলেই জ্বরের ঘোরে ভুল দেখেছে। এমন গুন্ডা নিশ্চয়ই ডক্টর হওয়ার কথা না৷

সাব্বির……

হঠাৎ সামনে বসে থাকা মানব উঠে দাঁড়িয়ে চাপা কণ্ঠে সাব্বির নামটা ডেকে উঠতে ভাবনার ছেদ ঘটলো ফারিসতার। ভাবনার জগৎ থেকে বেরিয়ে আসতে ফারিসতার বুকের ভিতর হঠাৎ ধক করে উঠলো। ওঁকে তো কেউ ছাঁদ থেকে ফেলে দিয়েছিলো তাহলে ও এখানে আসলো কিভাবে কথাটা ভাবতে আস্তে আস্তে ফারিসতার খেয়াল আসলো ও যখন রাস্তার মাঝে ছেলেগুলোকে শাসাচ্ছিলো তখন আচমকা ছেলেগুলোর ভিতরে একজন ওর মুখে কিছু একটা স্প্রে করে যার ফলে সাথে সাথে মাথা ঘুরে উঠে আস্তে আস্তে গভীর অন্ধকারে হারিয়ে যাচ্ছিলো এর পর আর কিছুই মনে নেই। তার মানে এতক্ষণ স্বপ্ন দেখছিলো ভাবতে একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে নিবে কিন্তু নিশ্বাস টা ফেলার আগে আঁতকে উঠে তড়িঘড়ি করে নিজের দিকে তাকালো। নিজেকে ভালো করে পর্যবেক্ষন করে যেনো জীবন ফিরে পেলো। সব ঠিকঠাক আছে তার মানে ছেলেগুলো ওর সাথে কিছু করেনি ভাবতে ফারিসতা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো।

তাজের ডাকে ইতিমধ্যে হুমড়ি খেয়ে রুমে প্রবেশ করলো সাব্বির সাথে আরো বাকি ছেলেপেলেগুলো ও। রুমে প্রবেশ করতে তাজ তীক্ষ্ণ কণ্ঠে প্রশ্ন ছুড়লো এই কি সে মেয়ে?

সাব্বির দাঁত কটমট করে ফারিসতার দিকে তাকিয়ে উপড় নিচ মাথা নাড়িয়ে বলল জি ভাই।

সাব্বিরের কথায় আরফি চোখ বড় বড় করে বলল, তুই শিওর তো এই মেয়ে? নাকি ভুলে করে অন্য কাউকে তুলে এনেছিস?

আরফির এমন কথার মানে না বুঝে সাব্বির বলে উঠলো, ভুল করে কেনো অন্য কাউকে তুলে আনবো? কোনো মেয়ের এমন কলিজা হয়েছে নাকি যে আমাদের কাজে বাঁধা দিবে কিন্তু এই জল্লাদ মাইয়া আমারে পর পর তিনটা থাপ্পড় মারছে ভাই। একে রেখে অন্যকে তুলে আনার প্রশ্নই আসে না।

সাব্বিরকে রুমে প্রবেশ করতে দেখে ফারিসতার আর বুঝতে বাকি রইলো না ও এখানে কি করে আসলো। পরক্ষণে সাব্বিরের কথা শুনে ফারিসতার মন চাইলো আবার কশিয়ে একটা থাপ্পড় দিতে। ওকে জল্লাদ বলায় ফারিসতা তেতে উঠে কিছু বলতে যাবে তখন ওর বরাবর রাখা সামনের চেয়ারটাতে তাজকে বসতে দেখে যা বলতে চাইলো তা আবার গিলে নিলো। কেনো যেনো সামনে বসা মানবের দিকে চোখ যেতে ফারিসতার পুরো শরীর হিমশীতল হয়ে আসছে। ফারিসতা শুঁকনো ঢোক গিললো তাজের তীক্ষ্ণ নজরের চাওনি দেখে।

তাজ এতক্ষণ তীক্ষ্ণ নজরে পর্যবেক্ষণ করছিলো ফারিসতাকে। আরফির মতো ওর ও প্রথম বিশ্বাস হয়নি দুর্বল চিত্তের এই মেয়ে এমন দুঃসাহস দেখাতে পারবে কিন্তু সাব্বির রুমে প্রবেশ করতে সাব্বিরের দিকে ক্ষ্যাপাটে দৃষ্টিতে ফারিসতার তাকানো দেখে তাজের বুঝতে বাকি রইলো না এই মেয়ে উপরে দেখতে যতটা কোমল ভিতরটা ঠিক ততটা শক্ত। আর নাহলে এতগুলো ছেলের মাঝে একা একটা মেয়ে এমন দুঃসাহস দেখাবে তো দূরের কথা এগুলো কল্পনাও করতে পারবে না। তাজ ফারিসতাকে পর্যবেক্ষণ করতে করতে রুক্ষ কণ্ঠে প্রশ্ন ছুড়লো,

এলাকায় নতুন দেখে সেদিন ছাড় দিয়েছি। এর পর ও সাহস হলো কি করে এমন দুঃসাহস দেখানোর?

তাজের এমন রুক্ষ কণ্ঠে ছোড়া প্রশ্নে ফারিসতার গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেলো। কেনো যেনো সামনে বসে থাকা মানবটার ওই ধারালো দৃষ্টিতে, রুক্ষ কণ্ঠ শুনে সেই প্রথম দিনের মতো আজো ফারিসতাকে ভয়ে কাবু করে দিচ্ছে। কেনো এই মানবকে দেখলে ভীত হয় ওর মন? ও তো ভয় পাওয়ার মেয়ে না। সিলেটে থাকাকালীন কত ছেলেকে ঠেঙিয়েছে তার হিসেব নেই। তাহলে এই ছেলেকে দেখলে কেনো বার বার ভীতসাশ্র হচ্ছে ওর হৃদয় ভাবতে ঢোক গিলে জ্বিভ দিয়ে শুকনো ঠোঁট ভেজালো ফারিসতা।

এই মেয়ে আমি কিছু আক্স করেছি শুনতে পাওনি? I don’t like saying the same thing twice

প্রথমে এই মেয়ে বলে ধমকে ওঠায় কেঁপে উঠলো ফারিসতার বুক। তাজের তীক্ষ্ণ চোখের দিকে তাকিয়ে আমতা আমতা করে ফারিসতা বলে উঠলো,

ওনারা একজন বৃদ্ধাকে মারছিলো তার প্রতিবাদ করেছি।

তোমাকে কোন মন্তী দায়িত্ব দিয়েছে প্রতিবাদ করার যে প্রতিবাদ করতে ছুটে এসেছো? দাঁত দাঁত চেপে করে বলে উঠলো তাজ।

তাজের এবারের কথায় ফারিসতার রাগ লাগলো। একজন মানুষকে মারবে তার প্রতিবাদ করতে হলে দায়িত্ব কেনো লাগবে? সব ক্ষমতা কি ওনার একবার যে কেউ কিছু বলতে পারবল না ভাবতে ফারিসতা ভয় ডর ভুলে কিছুটা তেতে বলে উঠলো,

অন্যায় করেছে তার প্রতিবাদ করেছি দ্যাটস এনাফ।

ফারিসতার এমন মুখের উপরে কথা বলায় তাজের মেজাজ বিগ্রে গেলো। এতক্ষণ যথাসম্ভব নিজেকে শান্ত রাখার চেষ্টা করেছে। এমনি এই মেয়ের জন্য ওই লোক হাত ছাড়া হয়েছে। তাজ এবার চোখমুখ শক্ত করে ধমকে উঠে বলে উঠলো,

এই মেয়ে তুমি অন্যায়ের প্রতিবাদ করার কে? তুমি জানো ওই লোককে কেনো মারছিলো? ওই লোক দোষী নাকি ওরা দোষী তা জানো তুমি?

তাজের ধমকে তেতে ওঠা ফারিসতা চুপসে গেলো। সাথে তাজের এবারের কথায় টনক নড়লো আসলেইতো লোকটাকে কেনো মারা হচ্ছিলো তাতো ওর জানা নেই ভাবতে ফারিসতা আরো চুপসে গেলো।

ফারিসতার চুপসে যাওয়া মুখের দিকে তাকিয়ে কেনো যেনো আরফির মায়া হলো খুব। প্রথমদিন যেই ছেলেদের মারছিলো ওদের উপরে এতো পরিমান রেগে ছিলো যার জন্য ফারিসতাকেও দুইটা ধমক দিয়ে বসেছিলো। সেদিন বিষয়টা নিয়ে ওতোটা না ভাবলেও আজ তাজের ধমকে মেয়েটাকে চুপসে যেতে দেখে মায়া লাগছে তাই আরফি তাজের কাঁধে হাত রেখে বলে উঠলো,

থাক যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে এবারের জন্য মাফ করে দে।

আরফির কথায় সাব্বির কটকটিয়ে বলে উঠলো মাফ করে দিবে মানে? আমাকে যে তিনটা থাপ্পড় মেরেছে তার কি হবে?

সাব্বিরের কথায় আরফি সাব্বিরের দিকে ঘাড় ঘুরিয়ে তাকিয়ে বলে উঠলো আমি ওখানে গেলে আরো তিনটা পড়বে তোর গালে তাই মুখ বন্ধ রাখ।

আরিফর ধমকে সাব্বির মুখ ভোতা করে দাঁড়িয়ে রইলো। মার ও খেলো ও সাথে সবার ধমক ও খাচ্ছে ও ভাবতে মুখটা ফাটা বেলুনের মতো হয়ে গেলো।

এদিক সাব্বিরের ফাটা বেলুনের মতো মুখের দিকে তাকিয়ে ভয়ের মাঝেও হাসি পেয়ে গেলো ফারিসতার। মনে মনে বেশ খুশি হলো সাব্বির নামক বাদরের এমন মুখশ্রী দেখে। এই ছেলের জন্য আজ ও এখানে এই হনুমানের কাছে ফেঁসেছে। ফারিসতা মনে মনে পন করেছে ওই বেয়াদব সাব্বিরকে কখনো বাগে পেলে আর একটা হলেও কশিয়ে থাপ্পড় মারবে।

ফারিসতার ভাবনার মাঝে তাজ চাপা স্বরে বলে উঠলো, দ্বিতীয় বারের মতো ছেড়ে দিলাম বাট তৃতীয়বার এমন দুঃসাহস দেখালে বুঝতে পারবে এই তাজ কি জিনিস।

তাজ নামটা শুনে চমকে চোখ তুলে তাকালো ফারিসতা। তাহলে ওর অনুমান ঠিক এই সেই তাজ। কিন্তু ওই হসপিটালের ডক্টরের নাম ছিলো তাজরিয়া চৌধুরী তাজ। তাহলে কি সত্যি দুইজন একি ব্যাক্তি। বাট হাউ ইজ দিস পসিবল? কিভাবে এমন একজন ডক্টর হতে পারে ভাবতে ফারিতার মাথা ফাঁকা হয়ে গেলো। কিছুতেই কিছু মিলাতে পারছে না।

ফারিসতার ভাবনার মাঝে তাজ আরিফর দিকে তাকিয়ে গম্ভীর কণ্ঠে শুধালো পৌঁছে দিয়ে আয়।

আরফি সম্মতি দিয়ে ফারিসতার উদ্দেশ্যে বলে উঠলো এই মেয়ে আসো।

ফারিসতা কোনো বাক্য বিলম্ব না করে আরো চেখো একবার তাজের দিকে তাকিয়ে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়াতে মাথা ঘুরে উঠলো।

#চলবে?

ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
হ্যাপি রিডিং….🥰