হৃদয়াসিক্ত কাঠগোলাপ পর্ব-৭+৮

0
733

#হৃদয়াসিক্ত_কাঠগোলাপ
#সাদিয়া_জাহান_উম্মি
#পর্বঃ০৭
-‘ ঠিক আছো তুমি?’

জায়ানের কণ্ঠস্বর কানে এসে পৌছাতেই চট করে সরে আসলো আরাবী।লাজে রাঙা মুখ নিয়ে এদিক সেদিক তাকাতে লাগলো।ভয়া*নক লজ্জা পেয়েছে ও।এমন অস’ভ্য লোকের ক্ষপ্পরে পরেছে ও।যার এক একটা কর্মকান্ডে জান বেরিয়ে আসে আরাবীর।এইযে একটু আগে ওর হাতের কব্জিতে চুমু খেলো লোকটা।কি রকম একটা অনুভূতি যে হচ্ছিলো বলে বুঝানো যাবে নাহ।শরীরটা এখনো স্থির হয়ে উঠেনা।এই লোকের এমন সব কর্মকান্ডে আরাবী কাঁপতে কাঁপতে না জানি কবে ইন্তেকাল করে।আরাবীর জবাব দিচ্ছে না দেখে।জায়ান ভ্রু উঁচু করে বলে,
-‘ আমি জাস্ট তোমার হাতের কব্জিতে কিস করেছি।এতেই এই অবস্থা?’

তারপর হঠাৎ করে আরাবীর কানের কাছে এসে বললো,
-‘ বিয়ের পর তো আরো কতো কি করবো তখন কি করবে তুমি?’

আরাবী ভয় পেয়ে কিঞ্চিৎ সরে গেলো। একেবারে লেগে দাড়ালো রেলিংয়ের সাথে।রিনরিনে কন্ঠে বললো,
-‘ আমি এমন অস’ভ্য মানুষ জীবনেও দেখিনি।’

জায়ান ভ্রু-কুচকালো আরাবীর দিকে চেয়ে।কথাটা সে শুনেছে।হাতের আঙুলগুলো দ্বারা চুলগুলো ব্যাকব্রাশ করে বলে,
-‘ সে তুমি আমায় যতোই অস’ভ্য উপাধি দেও।ইট ডাজেন্ট ম্যাটার ফোর মি।আমি দুনিয়ার সবার কাছে সভ্য হলেও।শুধু একজনেরই কাছেই সারাজীবন অস’ভ্য থাকতে চাই।বুঝলে?’

কি সর্বনাষ?সব শুনে ফেলেছে।দেখা যায় এখন আর আরাবী একা একা নিজের সাথে কোন কথাই বলতে পারবে নাহ। জায়ান এগিয়ে গেলো আরাবীর দিকে।আরাবীর পেছানোর জায়গা নেই।তাও সমানে পেছাতে চাচ্ছে।পারলে ছাদের রেলিংটাকে ভেঙে আরাবী পালিয়ে যায়।জায়ান আরাবীর হাত ধরে দ্রুত নিজের কাছে নিয়ে আসলো। আরাবী ভড়কে তাকাতেই।জায়ান একধমক দিলো,
-‘ কি সমস্যা?আমি বাগ নাকি ভাল্লুক? যে তোমায় খেয়ে ফেলবো?আর একটু হলেই তো পরে যেতে।ডা’ফার একটা।’

লোকটা আসলেই পাগল।এই কিছুক্ষন আগে ওর সাথে অস’ভ্য অস’ভ্য কথা বলছিলো।আর এখন আবার ধমক দিচ্ছে।এমনিতেই জুয়েলারি শপের ব্যাপারটা নিয়ে আরাবীর মন খারাপ।এখন আবার লোকটা ধমকাচ্ছে।অভিমানে আরাবীর ছোট্ট হৃদয়টা টইটম্বুর হয়ে গেলো।নিজের হাত জায়ানের হাতের থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে চলে যেতে নিতেই। জায়ান আবারও ওকে টেনে নিজের কাছে নিয়ে আসলো।আরাবীর দুহাত এইবার জায়ান তার একহাত দিয়েই অনায়াসে ধরে ফেলেছে।আরাবী ভয় পেয়ে গেলো।কি আশ্চর্য লোকটা ওকে এমনভাবে ধরেছে কেন? আর কিভাবে আরাবীর হাতদুটো একহাত দিয়েই শক্তপোক্ত ভাবে ধরে।ওর হাত কি এতোটাই ছোট? আরে নাহ ওর হাত ঠিকই আছে।এই লোকটাই অতিরিক্ত বড় মানে লম্বা।আরাবী লোকটার দিকে তাকাতে গেলে গলা টানা দিয়ে তাকাতে হয়। লম্বা আছে লোকটা।তাই তো হাতগুলোও ইয়া বড় বড়।আরাবী চোখ বড়বড় করে বলে,
-‘ কি..কি কর..করছেন?’

জায়ান ভাবলেসহীনভাবে বলে,
-‘ কোথায় কি করলাম?এখনো কিছুই করিনি। যা করবো বিয়ের পর।’
-‘ অস’ভ্য কথাবার্তা বন্ধ করুন আমার।’
-‘ তুমি তো মেইন কথাটা শুনলেই না।শুনো তবে…’
-‘ চুপ থাকবেন?আমি কিন্তু আর আপনার সাথে কথাই বলবো নাহ।’
-‘ আচ্ছা,ভয় দেখাচ্ছো?’

আরাবী মিনমিন করলো,
-‘ ভয় দেখালেই কি আপনি ভয় পান?এমন নির্ল’জ্জ কোন মানুষ হয়।’
-‘ ঠিক আমি কাউকে ভয় পাই নাহ।এমন কি আমার লজ্জা শরমও নেই।’
-‘ তা আর বলতে।’
-‘ মিনমিন করো কেন? ‘

আরাবী চুপ করে রইলো খানিকক্ষণ। তারপর বলে,
-‘ হাত ছাড়ুন।’

জায়ানের ত্যাড়া জবাব,
-‘ আগে মন খারাপের কারন বলো।’

আরাবী মুখ ভার করে বলে,
-‘ আমার মন খারাপ নেই।’
-‘ মিথ্যে!’

আরাবী চোখ পিটপিট করে তাকালো।এই লোক কি অন্তরযামি?নাহলে বুঝলো কিভাবে ওর মন খারাপ।জায়ান এখনও আরাবীর হাত চেপে ধরে।আরাবী বুঝলো সে এখন মন খারাপের কারন জায়ানকে না বলা পর্যন্ত জায়ান তাকে ছাড়বে নাহ। তবে আরাবীর ভালো লাগছে লোকটার কাছাকাছি থাকতে।একেবারে অন্যরকম ভীষণ সুন্দর একটা অনুভূতি।আরাবী কথা ঘুরানোর জন্যে মিনমিন করে বলে,
-‘ আচ্ছা আপনি তখন ফিসফিস করে আমার কানে কি বলেছিলেন?’
-‘ কথা ঘুরাচ্ছো?’

আরাবী হা।এতো চালাক এই লোক।তবুও আরাবী মাথা নাড়িয়ে না বুঝালো।ও আসলেই তখন জায়ান কি বলেছিলো শুনতে পায়নি।প্রায় তো বেহুশই হয়ে যাচ্ছিলো ও।মাথার ভীতরে শুধু জায়ানের ওর হাতে চুমু দেওয়ার মুহূর্তটুকুই ভাসছিলো।তাই তো কৌতুহল বসত আরাবী জিজ্ঞেস করলো। জায়ান আরাবীর হাত ছেড়ে দিলো।ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বললো,
-‘ যা শুনতে পাওনি।তা আর শুনে লাভ নেই।’

আরাবী মুখ ভেংচি মারলো।জায়ান তীক্ষ্ণ চোখে তাকালো।সে দেখেছে আরাবী মুখ ভেংচি কেটেছে ওকে।জায়ান চুলে হাত বুলিয়ে বললো,
-‘ মুখের বিকৃতি আকার আবার করলে যেটা একটু আগে হাতে দিয়েছি।সেটা ডিরেক্ট ঠোঁটে দিবো।’

আরাবী চোখ বড়বড় করে তাকালো জায়ানের দিকে।জায়ান চোখ মারলো আরাবীকে। ইশারা করলো ওর ঠোঁটের দিক।আরাবী সাথে সাথে দুহাতে ওর ঠোঁট চেপে ধরলো।এখনো ভয়ার্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে মেয়েটা।জায়ান আরাবীর কান্ডে নিস্তদ্ধে হেসে দিলো।আরাবী ঠোঁট থেকে হাত সরিয়ে বলে,
-‘ এমনিতে তো সবাই বলছিলো আপনি নাকি কথা কম বলেন।দরকার ছাড়া বেশি কথা বলেন না।তো এখন আপনাকে দেখে তো সেটা আমার কাছে মিথ্যে মনে হচ্ছে।’

জায়ান গভীর দৃষ্টিতে তাকালো আরাবীর দিকে।ওর চোখে চোখ রাখলো।আরাবী জায়ানের চোখের দিকে তাকাতেই যেন ও সেই চোখের গভীরে হারিয়ে গেলো।কি স্বচ্ছ সেই চোখজোড়া।আরাবী শতোবার এই চোখের গভীরতম মায়ায় ডুবে যেতে রাজি।জায়ান আরাবীর কানের কাছে মুখ নামিয়ে বলে,
-‘ আমি কেন তোমার সাথে এতো কথা বলি?কেন তোমার এতো কাছে আসি।এর উত্তর তুমি নিজেই খুজে বের করে নিও কেমন? ফারদার আমি বুঝাতে গেলে কিন্তু বলে না করে বুঝাবো।বি কেয়ারফুল।’

কথাগুলো বলেই চট করে সরে আসলো জায়ান।আরাবীর হাত নিজের হাতের মাঝে নিয়ে বলে,
-‘ চলো ওরা অপেক্ষা করছে।’

আরাবীকে টেনে নিজের সাথে নিয়ে গেলো।নূর আর ইফতি জায়ান আর আরাবীকে হাতে হাত ধরে এখানে আসতে দেখে মিটিমিটি হাসছে।জায়ান বিরক্ত হলো।বলল,
-‘ কি সমস্যা?’

নূর মুচঁকি হেসে বলে,
-‘ কোন সমস্যা নেই।এইযে তুমি ভাবির হাত ধরে রেখেছো এতে আমাদের কোন সমস্যা নেই।তারপর ভাবির সাথে সাইডে গিয়ে একটু রোমান্স করে এসেছো এতেও আমাদের কোন সমস্যা নেই।একদম নেই।’

আরাবী নূরের কথায় যেন লজ্জায় ম’রে যাওয়ার মতো অবস্থা।গালে লজ্জা রাঙা আভা ফুটে উঠেছে। আরাবী নিজের হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করতে লাগলো জায়ানের কাছ থেকে।কিন্তু জায়ান ছাড়লে তো।সে আরো শক্ত করে ধরলো আরাবীকে।তারপর নূরের উদ্দেশ্যে বলে,
-‘ তোর ড্রেসগুলো কেন্সেল।’
-‘ এই নাহ নাহ ভাইয়া।সরি হ্যা সরি।আমি আর কিছু বলবো না বিশ্বাস করো।এইযে আমি চুপ।’

ইফতি শব্দ করে হেসে দিলো এইবার।নূর গাল ফুলালো।কাঁদো কাঁদো হয়ে বলে,
-‘ কেউ আমায় ভালোবাসে নাহ।আমি মানি আমি নাহয় একটু বেশি কথা বলি।তাই বলে তোমরা আমার সাথে এমন করবে?যাও আমি আর কথাই বলবো না তোমাদের সাথে।’

জায়ান এইবার মুচঁকি হাসলো বোনের অভিমানে। আরাবীকে নিয়ে চেয়ারে বসিয়ে দিলো।তারপর নিজেও বসে পরলো।জায়ানের একপাশে আরাবী আরেকপাশে নূর।জায়ান এইবার নূরের মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো।জায়ান এইবার নিজের পকেট থেকে একটা আংটি আর চকোলেট বের করে দিলো নূরের দিকে।নূর আংটিটা পছন্দ করেছিলো।কিন্তু মেয়েটা কথার তালে তালে সেটা কিনতেই ভুলে গিয়েছে।এটা পেয়েই নূর খুশি হয়ে গেলো।হাসিমুখে বলে,
-‘ ইস,এই আংটিটাই তো আমার পছন্দ হয়েছিলো খুব।কিন্তু কিনতে মনে নেই।ভুলে গিয়েছিলাম।এখানে এসেই মনে পরলো।ভাবছিলাম কাল গিয়ে কিনে আনবো।তুমি সেটা খেয়াল করেছিলে ভাইয়া?’

জায়ান নূরকে বুকে টেনে নিয়ে বলে,
-‘ আমার একমাত্র বোনের খেয়াল আমি রাখবো নাহ।’

ইফতি নিজেও একজোড়া নূপুর বের করে নূরকে দিলো।তারপর বলে,
-‘ কোন এক ফকিন্নি মিসকিন এর জন্যে পছন্দ হলো।ভাবলাম নিয়ে নেই।’
-‘ ভাইয়া,এই ইফতি ভাইয়াকে কিছু বলবা?’

জায়ান হাসলো।ইফতি জোড়ে হাসছে।নূর নিজেও ভাইদের হাসি দেখে হেসে দিলো।তারপর ইফতির হায় থেকে নূপুরজোড়া নিয়ে।ইয়া বড় একটা হাসি দিয়ে বলে,
-‘ থাংক ইউ সো মাচ ভাইয়া।’

আরাবী তিনভাই বোনের খুনশুটি দেখে হাসছে।কতোটা প্রাণচ্ছল তারা একসাথে।ওর ভাইটাও ঠিক জায়ানের মতো।জায়ানের মতো হয়তো এতো টাকা না থাকায় ওকে দামি দামি গিফট দিতে পারে নাহ।তবে ফাহিমের সামর্থ্যে যেটুকু হয় সব করে ওর জন্যে।ফিহার জন্যেও সেম।তবে মেয়েটা কেন যে এমন করে।ওর ভাই কিছু গিফট আনলে সেটা কমদামি, এগুলো মানুষে পরে নাকি,লো ক্লাস।এসব বলে সেই গিফট আবার ঠিকই নেয়।আরাবীর কথা তুই গিফট যেহেতু নিবিই তাহলে খামোখা প্রথমে এই কথাগুলো বলিস কেন? ফাহিম শুধু কথাগুলো শুনে মলিন হাসি দিতো।বোনটা পুরোই উশৃঙ্খ’ল হয়ে গিয়েছে।এইযে এখনো বসে কিভাবে নির্ল’জ্জের মতো ড্যাবড্যাব করে জায়ান তো আবার ইফতির দিকে তাকাচ্ছে।আরাবী বিরক্ত হয়ে নিচু স্বরে বলে,
-‘ ফিহা নজর ঠিক কর।এভাবে তাকানোর কি হলো?’

ফিহা রাগি গলায় বলে,
-‘ তাতে তোর সমস্যা কি? আমি তোর থেকে সুন্দর তাই তোর হবু বরকে পটিয়ে ফেলতি পারি এইজন্যে বুঝি ইনসিকিউরড ফিল হচ্ছে।’

আরাবী ফিহার কথায় দাঁতেদাঁত চেপে বলে,
-‘ আজেবাজে কথা বললে থাপ্প’ড় দিয়ে তোর গাল ফাটিয়ে দিবো।’
-‘ ওহ রেয়েলি?দেখি তুই কি করতে পারিস।’

-‘ এনি প্রবলেম আরাবী?’

জায়ানের প্রশ্নে আরাবী দ্রুত নিজেকে স্বাভাবিক করে নিলো।মেকি হেসে মাথা নাড়িয়ে বুঝালো কোন প্রবলেম নেই।সবাই খাওয়া দাওয়াতে মনোযোগ দিলো।জায়ান আরাবীকে এটা দিচ্ছে,তো ওটা দিচ্ছে।আরাবী এইবার সহ্য করতে না পেরে বলে,
-‘ কি হচ্ছে? আমি এতোসব খাবো কিভাবে?’

জায়ান আরাবীর প্লেটে আরেকটু ফ্রাইড রাইস দিতে দিতে বলে,
-‘ এইটুকু খাবার খেয়েই অবস্থা?জলদি শেষ করো।’

আরাবী মলিন মুখে খেতে লাগলো।শেষে আর না পেরে করুণ গলায় বলল,
-‘ আর খেতে পারছি না। সত্যি!’

জায়ান কিছু বললো না তবে আরাবীর প্লেটটা নিজের কাছে নিয়ে আরাবীর রেখে দেওয়া অবশিষ্ট খাবারটুকু খেতে লাগলো।ইফতি হেসে দিলো জায়ানের কান্ডে। হাসতে হাসতে বলে,
-‘ ভাই তোমার অনেক উন্নতি হচ্ছে।মাত্র কয়েকদিনেই এই অবস্থা?’

জায়ান নির্বিঘ্নে খেতে খেতে বলে,
-‘ ইট্স টেস্টি।’
-‘ হ্যা হ্যা,বুঝেছি।অনেক টেস্টি।’

আরাবী লজ্জায় জুবুথুবু হয়ে বসে।এই লোকটা এসব করে করে আরাবীকে লজ্জার সাগরে একদিন চুবি’য়ে মে’রে ফেলবে।ভয়ং’কর ব্যাপার-স্যাপার।বিয়ের পর এই লোকের সাথে থাকবে কিভাবে আরাবী? তখন মনে হয় শ্বাসটুকু ঠিকভাবে নিতে দিবে লোকটা।অস’ভ্য লোকটা অস’বভ্য কথাবার্তা বলে ওর শ্বাস চে’পেই ওর ইন্না-লিল্লাহ করে দিবে।তবে আরাবী এটা মানতে বাধ্য।জায়ান ভীষণ কেয়ার করে ওর।আর মানুষটার এই ছোট ছোট কেয়ারগুলোই আরাবীর ভীষণ ভালোলাগে।ভেবেই মুঁচকি হাসলো আরাবী।অতঃপর লাঞ্চ শেষে সবাই আরাবী ফিহাকে বাড়ি পৌছে দিয়ে।জায়ানরা নিজেদের বাড়ি চলে গিয়েছিলো। সবাই থাকায় জায়ান আরাবীকে আর কিছু বলতে পারে নি।শুধু ভালো থেকো/থাকিয়েন বলে দুজন বিদায় নিয়েছিলো।
____________
সুয়ে সুয়ে ফোন ঘাটছে আরাবী।এর মাঝে পেরিয়ে গেছে একদিন। কালকের সারাটা সময় জায়ানের সাথে বেশ ভালো কেটেছে।জায়ানের কথা মনে পরতেই লজ্জামিশ্রিত হাসি ফুটে উঠলো আরাবীর ঠোঁটে। লোকটার প্রতি যে ওর ভালোলাগা তৈরি হয়েছে মনে ইতিমধ্যে তা বুঝতে পেরেছে আরাবী। আরাবীর চারপাশে অদৃশ্য ভালোলাগার রঙিন প্রজাপতিরা এদিক সেদিন উড়াউড়ি করছে।ওদের ছুঁয়ে দিতে পারলেই বোধহয় ভালোবাসাও হয়ে যাবে।
বিছানা থেকে উঠে দাড়ালো আরাবী।ফাহিম ডাকছে আরাবীকে।আরাবী ভাইয়ের ডাকাডাকি শুনে দ্রুত পায়ে ফাহিমের রুমের সামনে আসলো।ফাহিমের রুমের দরজায় দুটো টোকা দিতেই ভীতর থেকে ফাহিমের কণ্ঠস্বর ভেসে আসল,
-‘ ভীতরে আয়।’

আরাবী রুমে প্রবেশ করে দেখে ওর ভাই বিছানায় বসে আছে।ফাহিম হাতের ইশারায় ওর পাশে বসতে বলল।আরাবী বিনাবাক্যে ফাহিমের পাশে গিয়ে বসল।ফাহিম বোনের মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো।আরাবী ভাইয়ের আদরে হাসলো।ফাহিম এইবার একটা ছোট্ট বক্স আর একটা ব্যাগ এগিয়ে দিলো আরাবীর দিকে।
আরাবী সেগুলো হাতে নিয়ে জিজ্ঞাসাসূচক দৃষ্টিতে তাকালো।ফাহিম চোখের ইশারায় দেখালো সেগুলো খুলে দেখতে।আরাবী আগে ব্যাগটা খুললো তারপর বক্সটা।ব্যাগের মাঝে একটা শাড়ি আর বক্সটার ভীতরে একটা স্বর্ণের লকেট।ফাহিম আলতো হেসে বলে,
-‘ বিয়ে উপলক্ষ্যে তোর জন্যে ছোট্ট উপহার আমার বোন।আমার তো ওতো ইনকাম নেই।তাই যেটুকু পেরেছি তাই এনেছি।’

আরাবীর চোখ ভড়ে উঠলো। সাথে সাথে ভাইকে ঝাপ্টে ধরে ভাইয়ের বুকে মাথা রেখে কেঁদে উঠলো।কাঁদতে কাঁদতে বলে,
-‘ তুমি আমার জন্যে যা এনেছো তাই আমার জন্যে আমার লাইফের বেস্ট গিফট ভাইয়া।আই লাভ ইউ ভাইয়া।তুমি পৃথিবীর সেরা ভাই।’

ফাহিমের চোখ ভরে উঠলো।বোনটা আর কয়দিন পর চলে যাবে।ভাবলেই কলিজা ফে’টে যায় ফাহিমের।ফাহিম আরাবীর মাথায় চুমু খেয়ে বলে,
-‘ তোকেও আমি ভালোবাসি অনেক আমার বোন।’

#চলবে____________
ভুলত্রুটি ক্ষমা করবেন।

#হৃদয়াসিক্ত_কাঠগোলাপ
#সাদিয়া_জাহান_উম্মি
#পর্বঃ০৮
সকাল থেকে বিশালভাবে তোড়জোড় চলছে।আজ আরাবী আর জায়ানের গায়ে হলুদ।দুজনের গায়ে হলুদ একসাথেই হবে এটা জায়ানের আদেশ।এর জন্যে একটা কমিউনিটি সেন্টার বুক করা হয়েছে।জায়ানের পাগলামিতে সে-কি হাসাহাসি ওর পরিবারের।কিন্তু এতে অবশ্য জায়ানের কোন ভাবাবেগ দেখা যায়নি।সে সর্বদার মতো নির্বিকার। নূর এসব আরাবীকে জানাতে সেও হেসেছে।তাকে ঘিরে যে লোকটার কতোশতো পাগলামি।আরাবী এসব ভাবতে ভাবতেই বিছানায় রাখা জায়ানদের বাড়ি থেকে হলুদের যাবতীয় সব কিছু দিয়ে গিয়েছে। সবকিছু কেমন যেন লাগছে।মনের মাঝে অন্যরকম একটা মিশ্র অনুভূতি হচ্ছে। কালকের পর থেকে জায়ান নামন ব্যাক্তিটার সাথে ওর অস্তিত্ব আজীবনের জন্যে জুড়ে যাবে। হলুদের লেহেঙ্গাটায় হাত ছোয়ালো আরাবী। ভীষণ সুন্দর লেহেঙ্গাটা।ওর বিয়ের যাবতীয় সবকিছু না-কি জায়ান নিজে পছন্দ করে কিনেছে। কারো পছন্দের মত নেইনি।হাসলো আরাবী জায়ানের কথা ভেবে।গালদুটো লজ্জায় গরম হয়ে উঠলো। এতে শ্যামবর্ণের আরাবীকে লজ্জাবতী অবস্থায় কিযে সুন্দর লাগে।এইজন্যেই বুঝি জায়ান বারে বারে আরাবীকে লজ্জা দেয়।আরাবীর ঠোঁটের কোণে মুঁচকি হাসি।
আরাবী যখন নিজের ভাবনায় ব্যস্ত।তখন আলিফা এসে তারা দিলো আরাবীকে।
-‘ কিরে? তৈরি হবি নাহ? সময় বেশি নেই তো।’

ভড়কে গেলো আরাবী।তাড়াতাড়ি ঘড়ির দিকে তাকালো।আসলেই সময় বেশি নেই।জলদি কমিউনিটি সেন্টারে পৌছাতে হবে। আরাবী দ্রুত পায়ে ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেস হয়ে আসলো। আলিফা এইবার আরাবীকে মেক-আপ করে দিতে লাগলো।আলিফা একজন মেক-আপ আর্টিস্ট।তবে ওর কোন পার্লার নেই।মাত্র কয়েকমাস হলো মেক-আপ কোর্স করেছে।ভীষণ সুন্দর করে সাঁজায় মেয়েটা। এটা অবশ্য শখের বসে শিখা।আরাবী বলে উঠলো,
-‘ কতো করে বললাম একটা পার্লার দে।কি সুন্দর সাঁজিয়ে দিস তুই।’

আলিফা হেঁসে বলে,
-‘ এইটা তো এমনি শখের বসে শিখেছি।আচ্ছা দেখি ভবিষ্যতে ইচ্ছে হলে খুলবো নেহ। এখন চুপচাপ থাক।নড়িস নাহ মেক-আপ নষ্ট হয়ে যাবে। পরে জায়ান ভাইয়া আমাকে দোষ দিবে।’

আরাবী হেসে দিলো।আলিফার কথার ধরনে হেঁসে দিলো।আলিফা আরাবীকে সুন্দর করে সাজানো শেষ করলো। আরাবীকে সসম্পূর্ণ রূপে সাজিয়ে আরাবী মুগ্ধ হয়ে বলে,
-‘ ইস,কিযে সুন্দর লাগছে না তোকে।ভাইয়া দেখলে নিশ্চিত পাগল হয়ে যাবে।’

আরাবী হাসলো।বললো,
-‘ তুই কি কম সুন্দর নাকি।আমাকে সুন্দর বলছিস।তাহলে তো তুই সাজলে তোকে পুরো হুরপরি লাগবে।তাড়াতাড়ি সেজেগুজে নেহ।’

আলিফাও তৈরি হতে চলে গেলো।আলিফা পরেছে সারারা ড্রেস।ওকেও কোন অংশে সুন্দর লাগছে না।
ওরা তৈরি হতেই দরজায় টোকা পরলো।শোনা গেলো ফাহিমের কণ্ঠস্বর,
-‘ কিরে হলো তোদের?বের হবো আমরা।’

আরাবী গিয়ে দরজা খুলে দিলো।ফাহিম বোনকে দেখে মুগ্ধ হলো।আরাবীর গায়ের রঙ শ্যামলা বলে অনেকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে।তবে তারা তো আর জানে না শ্যামবর্ণের এই মেয়েটাকে ঠিক কতোটা মায়াবতী লাগে।ফাহিম বোনের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলে,
-‘ মাশা-আল্লাহ। খুব সুন্দর লাগছে তোকে।’

আরাবী মিষ্টি হাসলো।পাশ থেকে আলিফা এসে বলে,
-‘ আমাকে কেমন লাগছে ফাহিম ভাইয়া?’

ফাহিম হেসে বলে,
-‘ তোকেও খুব সুন্দর লাগছে,মাশা-আল্লাহ! ‘

আলিফা খুশি হয়ে গেলো।আরাবী আর আলিফাকে নিয়ে বসার ঘরে আসলো ফাহিম।আরাবী সোজা হেটে গিয়ে বাবাকে জড়িয়ে ধরলো।জিহাদ সাহেব মেয়েকে বুকে জড়িয়ে নিলেন।আরাবীর চুলে চুমু দিয়ে বলেন,
-‘ একদম আমার মায়ের মতো সুন্দর লাগছে।একদম একটা মিষ্টিপরি লাগছে।’

আরাবীর চোখ ভরে আসলো।আর মাত্র একটাদিন আছে এই মানুষগুলো কাছে।এইসব ভাবলেই আরাবীর বুক ভার হয়ে আসে।বুকের মাঝে আপনজনদের ছেড়ে চলে যাবার হা’হাকারের ঝড় উঠে। আরাবীর কেঁদে দেওয়ার মতো অবস্থা দেখে আরাবীর জোড়পূর্বক হেসে বলে,
-‘ আরে কি করছিস। কান্নাকাটি করে আমার এতো কষ্ট করে দেওয়া মেক-আপ নষ্ট করিস নাহ।ফ্রিতে সাজিয়ে দিয়েছি।কেঁদেকেটে তা নষ্ট করলে টাকা দিতে হবে বলে দিলাম।’

জিহাদ সাহেব হেসে দিলেন।আরাবীকে বুক থেকে তুলে নিলেন।মেয়ের কপালে চুমু খেয়ে বলেন,
-‘ কোন কান্নাকাটি করা যাবে নাহ।তোমার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটা দিন এগুলো।মন ভরে উপভোগ করবে।দিনশেষে এইগুলোই সুন্দর কিছু স্মৃতি হয়ে থাকবে।’

আরাবী চোখের কোণে জমে থাকা জলটুকু মুছে নিলো।তারপর লিপি বেগমের কাছে গেলো।মাকে গিয়ে জড়িয়ে ধরলো।লিপি বেগম অবাক হলেন।তবে কিছু বললেন নাহ।তিনিও আরাবীর মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে আদর করে দিলেন।আরাবী যেন এটুকুতেই খুশিতে পাগলপ্রায় হয়ে গিয়েছে।
এদিকে ফাহিম হাতের ঘড়িতে সময় দেখে সবাইকে তাড়া দিতে লাগল,
-‘ আর দাঁড়িয়ে থেকো নাহ।জলদি চলো।নাহলে লেট হয়ে যাবে।চলো চলো।নিচে গাড়ি দাঁড়িয়ে সেই কখন থেকে।’
————
গাড়ি এসে পৌছালো সুসজ্জিত ঝলমলে একটা বিল্ডিংয়ের সামনে।সবাই গাড়ি থেকে নেমে দাঁড়ালো।ফাহিম এসে আরাবীকে গাড়ি থেকে নামতে সাহায্য করছে। আরাবী কমিউনিটি সেন্টারের গেটের সামনে একটা বিশাল বোর্ড দার করানো দেখলো। সেখানে লিখা ” আজ জায়ান,আরাবীর হলুদ ছোঁয়া “।

কমিউনিটি সেন্টারের ভীতরে প্রবেশ করলো সবাই।প্রায় সংখ্যক মেহমান এসে পরেছে।জায়ান’রা এখনো আসেনি।তাদের একটু দেরি হবে।ফাহিম আলিফাকে একটা রুম দেখিয়ে দিয়ে বলে আরাবীকে নিয়ে এখানে অপেক্ষা করতে।জায়ান ওরা আসলেই যেন বের হয়। আলিফা আরাবীকে নিয়ে সেই রুমে চলে গেলো।

বিছানায় বসে হাঁসফা’স করছে আরাবী। সেইযে সকাল থেকে বুকটা ধ্বুকপুক করা শুরু করেছে তো করেছেই।থামাথামির নাম গন্ধ নেই।হাতপা ঘেমে যাচ্ছে বার বার।এখানে আসা অব্দি কতো গ্লাস পানি খেয়ে নিয়েছে আরাবী।তাও যেন বার বার গলা শুকিয়ে যাচ্ছে।আলিফাটা সেইযে ওয়াশরুমে গিয়েছে আসার নামগন্ধ নেই।হঠাৎ বাহির থেকে শোরগোলের আওয়াজ ভেসে আসলো।আরাবী বুঝলো জায়ান’রা এসে পরেছে।বুকের মাঝে এইবার কাম’ড়ে ধরলো যেন।ইস, কিরকম সুখময় যেন এই যন্ত্র’না।আরাবী শক্ত হয়ে বসে রইলো। আরাবীর ভাবনার মাঝেই হঠাৎ আরাবীর ফোন বেঁজে উঠলো।আরাবী ব্যাগ থেকে ফোন বের করে দেখে ‘ জায়ান’ নামে সেভ করা নাম্বার থেকে কল আসছে।কলিজাটা ছ্যাৎ করে উঠলো।এই লোক এখানে এসেও কেন কল করছে ওকে?এখন আরাবী কথা বলবে কিভাবে? ওর গলা দিয়ে তো কথাই বের হবে না। যেই অবস্থা ওর।আকাশসম চিন্তার মাঝেই প্রথমবার কলটা ধরতে পারলো না আরাবী।দ্বিতীয়বার ফোন বেঁজে উঠতেই আরাবী কাঁপা হাতে ফোন রিসিভ করে করলো।কাঁপা গলায় নিজেই আগেই সালাম দিলো।ওপাশ থেকে জায়ান সালামের জবাব নিয়ে নরম গলায় বলে,
-‘ ফিলিং নার্ভাস?’

আরাবী সময় নিয়ে উত্তর দিলো,
-‘ হু।’
-‘ আমিও নার্ভাস।’

অবাক হলো আরাবী।জায়ান ছেলে হয়েও নার্ভাস হচ্ছে?এমন একটা কথায় আরাবী হাসবে নাকি জায়ানকে শান্তনা দিবে ভেবে পেলো না। ওপাশ হতে জায়ানের শান্ত কণ্ঠ,
-‘ ছেলে হয়েও আমি কেন নার্ভাস জিজ্ঞেস করবে নাহ?’

আরাবী মিনমিন করে বলল,
-‘ কেন?’
-‘ তোমার জন্যে!’

অবাক আরাবী।
-‘ আমার জন্যে?’
-‘ হ্যা।’
-‘ আমি কি করেছি?’
-‘ বলো একটু পর আমার সাথে কি কি করবে! এইযে তুমি এখন সুন্দরভাবে সেজেছো।নিশ্চয়ই তোমাকে একেবারে হলুদপরি লাগছে।এখন তোমাকে এই রূপে দেখবো একটু পর আমি।তখন আমার কি হবে ভাবতে পারছো তুমি?আমি পাগ’ল না হয়ে যাই।মাথা টাথা খারাপ হয়ে যাবে আমার।পরে সবার সামনে কন্ট্রোললেস হয়ে গেলে তোমাকে চুমু টুমু না খেয়ে বসি।পরে তুমিই আর কালকে বাস’র রাতে আমার কাছেই আর আসবে না।তখন আমি কি করবো বলো তো। কতোটা নার্ভাস আমি জানো তুমি এসব ভেবে? চিন্তায় আমি শেষ হয়ে যাচ্ছি।’

আরাবী হা হয়ে গিয়েছে।ও আরো কতো কি ভাবলো।কিন্তু জায়ান ওর সবকিছু উল্টেপাল্টে দিয়ে কিসব উল্টাপাল্টা কথা বলছে।খামোখা কি আর আরাবী লোকটাকে ‘ অস’ভ্য’ উপাধি দিয়েছে। ওর ভাবনার মাঝে ফোনের ওপাশ হতে জায়ানের অস্থির কন্ঠস্বর ভেসে আসলো,
-‘ আরাবী কথা বলছো না কেন? আমার কষ্টটা অনুভব করো।আমি কতোটা চিন্তিত। কোথায় আমাকে প্রেম প্রেম কথা বলে শান্তনা দিবে তা না করে চুপ করে আছো।জানো আমি কাল রাতে একটুও ঘুমাতে পারিনি।জেগে জেগে তোমায় নিয়ে কতো কি করেছি।তোমাকে কতো যে আদর করেছি। ইস,কালকের দিনটা আসছে না কেন?এতো দেরি কেন লাগছে।এইসব হলুদের ফাংশান কে আবিষ্কার করেছে? তাকে গু*লি করে মে*রে ফেলতে ইচ্ছে করছে।কোন হ্লুদ টলুদের অনুষ্ঠান না করে ডিরেক্ট বিয়ে করে নিবে এতেই না আমার মতো অস্থির মানুষ শান্ত হবে।এসব অপেক্ষা ভালো লাগে না।আমি তো অনেক বেশি অস্থির।কাল না জানি কবুল বলেই ডিরেক্ট বাসর ঘরে নিয়ে ঢুকে চুমু টুমু খেয়ে….. ‘

জায়ানের এইসব ভয়ংকর কথাবার্তা সহ্য করতে না পেরে আরাবী চেঁচিয়ে উঠলো,
-‘ বন্ধ করুন আপনার এসব অস’ভ্য কথাবার্তা।’
-‘ তুমি তো আমার কথা শুনলেই… ‘

জায়ানের কথা পুরোটা শোনার আগেই আরাবী ফোন কেটে দিলো। লজ্জায় পুরো শরীর গরম হয়ে গিয়েছে আরাবীর। সারা শরীর লজ্জায় ভয়া’বহভাবে কাঁপছে।এমনিতে তো অন্যকারো সামনে বো’ম মারলেও সহজে কথা বের হয় না।আর ওর কাছে আসলেই যেন তার টকিং মেশিন অবিরাম চলতে শুরু করে।কোন বাধানিষেধ নেই।এমন এক নির্লজ্জ লোকের সাথে আরাবী থাকবে কিভাবে?এমন ভয়ংক’র কথাবার্তা যে কেউ এমন অনায়াসে বলতে পারে কাশ্মিনকালেই ভাবেনি।আর সেটা যে ওর কপালেই এসে জুটবে।আরাবী বিরবির করলো,
-‘ অস’ভ্য ঠোঁটকা’টা লোক।লাগাম নেই লোকটার।একদম নেই।’

আরাবী দুহাতে মুখ ঢেকে ফেললো।ভীষণ গরম হয়ে আছে সারা মুখশ্রীর আরাবীর।লজ্জায় চোখ ভিজে উঠেছে আরাবীর।

#চলবে__________
ভুলত্রুটি ক্ষমা করবেন।