হয়তো তোমারি জন‍‍্য পর্ব-০৯

0
569

হয়তো_তোমারি_জন‍‍্য
#সামানিয়া_জামান_প্রজ্ঞা
[পর্ব – 09]

অনুরাগ ভাইয়া তো আমাদের বাসাতেই তবুও একটিবার আমার সঙ্গে দেখা করার কথা ভাবলো না। এতো কেনো রাগ উনার? আমি কি এতটাই অপছন্দ করার মেয়ে?

বিকেলের দিকে খাওয়া দাওয়া করার পর আঙ্কেল আন্টি আর অনুরাগ ভাইয়া চলে যাই। যাওয়ার আগে উনি আমার রুমে এসছিলেন। উনি আমাকে কিছু বলতে চেয়েছিলেন কিন্তু মেধা সঙ্গে ছিল বলে ওকে কিছু সময়ের জন‍্য চলে যেতে বলেন । এদিকে প্রচন্ড অভিমান ভর করে আমার উপরে। আমি উনার কথার কোন উত্তর দেইনি। একবার শুধু তাকিয়েছিলাম। আমাকে অন‍্যদিকে তাকাতে দেখে চলে যান উনি। চোখটা ছলছল করছিল কিন্তু আমার কাছে এআমুহূর্তে আত্নসম্মানটা কাজ করছিলো। উনি যদি আমাকে ইগনোর করতে পারে তবে আমি কেনো পারবো না। কিন্তু আজ প্রতিটা মুহুর্ত আমি উনার আসার অপেক্ষায় ছিলাম তবুও লাস্টে উনার সঙ্গে কথা না বলাটা আমাকে ভিষণ ভাবে পোড়াচ্ছে। সেই টাইমে অদ্ভুত একটা অনূভুতি হচ্ছিলো এতোদিন কেনো আসতে চাইতো না,কেনো ইগনোর করেছিল এসব কথা মনে পড়ছিল। উনি চলে যাওয়ার পরপরই মেধা এসে হেসে বলল,

-“কি রে কি বলল তোকে অনিরুদ্ধ ভাইয়া?”

ওর কথায় মুখটা ঘুরিয়ে চোখটা মুছে বললাম,

-” কিছুই এই কেমন আছি এগুলোই বলছিল আরকিছু না।”

আমার চোখের দিকে অনেকক্ষণ তাকিয়ে মেধা বলল,

-” কিছু তো হয়েছে। আমাকে সতি টা বল তৃষাতুর। অনিরুদ্ধ ভাইয়াকি তোকে বকেছে?”

আমি ওকে জরিয়ে কেঁদে ফেললাম। ও আমার মাথায় হাত বুলিয়ে শান্ত করে বলল সব ঠিক হয়ে যাবে। কাদিঁস না তৃষাতুর! দেখ তোকে কান্না করতে দেখলে আমার ও কান্না পাই।

মেধার কথা কান্না থামিয়ে ভ্রু কুচকে তাকালাম। ও ফিক করে হেসে দেয়। আমি আবারো ওকে জরিয়ে ধরলাম।

____________

এভাবে কিছু দিন যেতেই হঠাৎ একদিন কলেজ থেকে ফিরে আয়মান আঙ্কেল আর মাহিমাকে আন্টিকে বাসাতে দেখি। যা লক্ষ‍্য করলাম উনারা বিশেষ কোন বিষয়ে আলোচনা করছিল আমি যেতেই সেটা থামিয়ে দেয়। আমি একেওপরের দিকে হা করে তাকিয়ে রইলাম কেউ কিছু বলল না। শেষে উপরে ফ্রেশ হওয়ার জন‍্য আসতেই উনারা আবারো আলোচনা শুরু করে।

বন্ধু তূণর্ব বলো তুমি কি রাজি? দেবে আমাকে তোমার মেয়েকে?

আয়মান জুবায়ের এর কথায় তূর্ণব চৌধুরী এককথায় বলে,

-“অনিরুদ্ধ বড্ড আদরের আমাদের কাছে। শিক্ষিত, ভদ্র, ভিষণ ভালো একটা ছেলে সেই সঙ্গে দেশের নাম
করা সাইনটিস্ট। এমন ছেলেকে মেয়ের জামাই হিসাবে কে না চাইবে তাই আমার কোন আপত্তি নেই এই বিয়েতে কিন্তু আমার মনে হয় অনিরুদ্ধ বাবার সঙ্গে পরামর্শ করে নেওয়া দরকার ছিল আমাদের।”

তূর্ণব চৌধুরীর কথায় আয়মান জুবায়ের বলে উঠে,

-” বন্ধু তোমার মেয়েকি কম নাকি? এতো সুন্দর লক্ষী মেয়ে তোমাদের। পড়াশোনা সহ সবকিছুতে পারফেক্ট আমাদের তো অনেক পছন্দের তুর মা। আমাদের তো মেয়ে নেই আমরা ওকে মেয়ের মতো করে রাখবো। আর অনিরুদ্ধর জন‍্য তুর মার চেয়ে যগ‍্য কেউ হতেই পারে না তুমি না করোনা বন্ধু ”

আয়মান জুবায়েরের কথায় তূর্ণব চৌধুরী আর তৃণা চৌধুরী দুজনেই সম্মতি দেয় সঙ্গে সঙ্গে আয়মান জুবায়ের আলহামদুলিল্লাহ্ পরে ডাইভারকে বলে এই মিষ্টি আনো এখুনি।

তারপর সবাই মিষ্টি মুখ করে আয়মান জুবায়ের আর তূর্ণব চৌধুরী একেঅপরকে মিষ্টি খাইয়ে দেয় আর একে অপরকে জরিয়ে ধরে। অন‍্যদিকে তূণা চৌধুরী আর মাহিমা জুবায়ের একেঅপরকে মিষ্টি খাইয়ে বলে এবার থেকে আমার একটা সঙ্গী হলো। তুর মায়ের মতো ছেলের বউমা পাওয়া ভাগ‍্যের ব‍্যাপার আমার সঙ্গে কতো মিল দেখেছো বলে হাসলেন।

তারপর সবাই ঠিক করল এই কথাটা অনিরুদ্ধ আর তৃষাতুর দুজনের কাউকেই জানাবে না। সামনে তাদের বিজনেস নিয়ে একটা পার্টি থ্রো করলে সেখানে ওদের দুজনের এঙ্গেজমেন্ট করিয়ে দিবে। এর আগে কাউকে জানাবে না। সবাই আরেকদফা হাসলো তারপর খোশমেজাজে গল্প করতে লাগল।

এদিকে ফ্রেশ হয়ে এসে দেখি সবাই খুব হাসাহাসি করছে এমনকি জমিয়ে মিষ্টি খাচ্ছে। আমি যেতেই সবাই সবার দিকে তাকিয়ে আরেকদফা হাসল এদের কাহিনী কিছু বোধগম্য হলো না আমার তাই চুপচাপ সবার মুখের দিকে তাকিয়ে দেখতে লাগলাম।

এমন সময় মাহিমা আন্টি একটা আস্ত রোসগোল্লা আমার মুখের সামনে ধরলে আমি বললাম এটা কিসের জন‍্য?

উনি মুচকি হেসে বললেন,

-” মিষ্টি খাওয়ার জন‍্য কোন কারন থাকা লাগে না এই নেও হা করো।”

আমি অল্প অল্প করতেই পুরো মিষ্টি টা মুখে পুরে দেই মাহিমা আন্টি। আমি যদি জানতাম উনারা গোপনে আমাদের বিয়ের প্লান করছে তবে কিছুতেই আমি বিয়েতে হ‍্যা বলতাম না সেদিনই ফুপির বাসায় চলে যেতাম। ওই নিরামিষ ভাব ওয়ালা সাইনটিস্টের চেয়ে কোন সরকারি কর্মজীবীকে বিয়ে করা অনেক ভালো।

ব‍্যাস উনারা উনাদের মতো হাসিমজা করে চলে গেলেন এদিকে হাসি মজা ঠাট্টার কারন খুজতে খুজতে আমি শহীদ হয়ে গেলাম। আম্মুকে দুইবার জিগ্যেস করেছিলাম আম্মু যে ঝাড়ি দিলো দ্বিতীয়বার জিগ্যেস করার ইচ্ছে নাই।

এভাবেই কাঙ্ক্ষিত সময়টা চলে আসলো। আয়মান আঙ্কেল আর আব্বুর বিজনেসে 100% লাভ হয়েছে বলে উনারা একটা পার্টির আয়োজন করে। পার্টিটা নামেই বিজনেস নিয়ে কিন্তু এর আসল কারন ছিলো আমার আর অনিরুদ্ধ ভাইয়ার এঙ্গেজমেন্ট টা করানো।তারপর সময় বুঝে আমাদের বিয়েটা দেওয়া। এই বিষয়টি ধরতেই আমার অনেক লেট হয়ে গেছে কারণ সবটা বোঝার আগেই আয়মান আঙ্কেল আর মাহিমা আন্টি আব্বু আম্মুর সঙ্গে মিলে আমাদের আংটি বদল করিয়ে দেই। এখন এটা মানতে অদ্ভুত লাগলেও আমি অনিরুদ্ধ ভাইয়ার বাগদত্তা। বিষয়টি নিয়ে আব্বু আম্মুর সঙ্গে অনেক রাগারাগি করলেও দিন শেষে এই চরম সত্যিটা আমাকে মেনে নিতে হয় । অন‍্যদিকে সবার সামনে আমাদের বাগদান হলো এতে আব্বু আর আয়মান আঙ্কেলের মান সম্মানের বিষয় জরিয়ে আছে তাই আর না করতে পারিনি। ওইদিকে একটা আশা ছিল অনিরুদ্ধ ভাইয়া হয়তো আপত্তি করবেন কিন্তু আমাকে অবাক করে সেদিন কিছুই বলেননি উনি। আমি আর চোখে উনার চোখের দিকে তাকালে উনার চোখ লাল হয়ে রয়েছে। আমার কেনো জানি মনে হচ্ছিলো উনি ঠিক নেই। সেদিন ইন্সপেক্টর মাহির আর মেধাও পার্টিতে উপস্থিত ছিলেন। বড় বড় সিকিউরিটির দায়িত্বে ইন্সপেক্টর মাহিরকে এমন অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে হয়।

সেদিন মেধা আমাকে কনগ্রাচুলেট করে বলেছিল তোর পালা তো চলে এলো তুর। কবে যে আমার পালা আসবে হালকা ধাক্কা মেরে বলল। আমি ওর দিকে কটমট করে তাকিয়ে বললাম,

-” তোর পালা তখন আসবে যখন মাহির ভাইয়া নিজে থেকে তোকে প্রপোজ করবে।”

ও দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল,

-” এর জন‍্য তবে আমাকে অনেক অপেক্ষা করতে হবে তুর!”

আমি ওর কানের কাছে গিয়ে বললাম হুম সবুরে নেওয়া ফলে।

অনুষ্ঠানটা মিটে যাওয়ার পর আমাকে আর অনিরুদ্ধ ভাইয়াকে প্রাই জোর করে ঘুরতে পাঠানো হয়। আমরা বুদ্ধি করে ইনসপেক্টর মাহির আর মেধাকেও নিজেদের সঙ্গে নিয়ে নেই। আমরা ঠিক করলাম তিনদিনের সফরে সেন্টমার্টিন যাওয়া যাক। যেই ভাবা সেই কাজ আমাদের জোর করে পাঠালেও আমরা জাইগাটা নিজেদের পছন্দ মতো ঠিক করি।

__________

অন‍্যদিকে ভুতের মতো একজন একটা রুমের বাহিরে গিয়ে দরজা ধাক্কা দিয়ে বলছে বস আমি ওদের ব‍্যাপারে সব খবর এনেছি। আপনি খবরটা শুনে অনেক হ‍্যাপি হয়ে যাবেন।

দরজার অপরপাশের লোকটি দরজা খুলে বলে,

-” কি খবর এনেছিস যেটা শুনে হ‍্যাপি হয়ে যাবো? অনিরুদ্ধ জুবায়ের কি মরে গেছে? এই খবর ছাড়া জোহা হ‍্যাপি হবে না। আমি অনিরুদ্ধ জুবায়েরের লাশ দেখতে চাই ”

লোকটি অনেকটা ভয়ে বলল,

-“বস ওরা সেন্টমার্টিন যাচ্ছে। কিছুদিন পরেই ওদের বিয়ে আর এর মধ‍্যে ওদের ভিতরে যেনো একেঅপরের প্রতি ঝগড়াটে ভাব না থাকে তাই আয়মান জুবায়ের আর তূর্ণব চৌধুরী এই ব‍্যাবস্থা করেছে। এটাই সুযোগ স‍্যার আপনার অনিরুদ্ধ জুবায়েরের ওপর বদলা নেওয়ার জন‍্য।”

ওপরপাশের লোকটি জোরে হাতটা দেওয়ালে ঘুষি মেরে বলে,

-“ঘুরতে যাচ্ছে ঠিক না? এবার অনিরুদ্ধ জুবায়ের এমন অবস্থা করবো ও কল্পনা করতে পারবে না। ওর চোখের সামনে দিয়ে তৃষাতুরকে বিয়ে করবো। এই মেয়েটার জন‍্য আমাকে বিভৎস ভাবে মেরেছিল না? কতোদিন কমায় ছিলাম আমি। প্রতিদিন তিলেতিলে কষ্ট পেয়েছি এবার দেখবে ওর সঙ্গে কি হয়! ”

আমার প্রতিটা আঘাত মনে আছে সাফি! এই আমার প্লাস্টিক সার্জিক্যাল নিউ লুক দেখছিস এটাও অনেক আঘাতের জানিস? প্রত‍্যেকটি আঘাতের বদলা নেবো ওই অনিরুদ্ধ জুবায়েরের থেকে। নিজের প্রেমিকার প্রতি গভীর ভালোবাসা না? এবার দেখবো এই ভালোবাসা তাকে রক্ষা করতে পারে নাকি?

__________

সেন্টমার্টিনে আমাদের আসা দুইদিন হয়ে গেছে। সবচেয়ে অবাক করা বিষয় আমরা এখনো ভালো মতো কথা বলতেই পারলাম না। কিন্তু মেধা আর মাহির ভাইয়ার মধ‍্যেকার দুরুত্ব অল্প অল্প করে কমছে। আজকে লাস্ট ডে বলে আমরা একসঙ্গে ঘুরতে বের হয়েছি আজকে দুইবার উনার সঙ্গে কথা হয়েছে কিন্তু সেটাও প্রয়োজনে।

পুরো বিকালটা ঘুরে সন্ধ্যায় আমরা রিসর্ট পার্টিতে গেলাম সেখানে সবকিছু ভালোই ছিলো কিন্তু হঠাৎ গুলির শব্দে পেতেই দেখি মেধা মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে ওর কাধ থেকে রক্ত গড়িয়ে পরছে। আমি কাদতে কাদতে মেধার কাছে গিয়ে ওকে জরিয়ে ধরি। মাহির ভাইয়া অনেক ইমোশনাল হয়ে মেধাকে আমার থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে বলে,

-” কিছু হবে না তোমার। প্লিজ আমাকে ছেড়ে যেও না। আমি খুব একা। আমি মিহুকে হারিয়েছি কিন্তু তোমাকে হারাতে পারবো না। ” প্লীজ ছেড়ে যেও না বলে কাদতে লাগলো মাহির ভাইয়া।

এদিকে অনিরুদ্ধ ভাইয়া মাহির কে বলেন তোরা ওকে নিয়ে হসপিটালে যা আমি দেখছি ব‍্যাপারটা। এটা বলেই উনি উনার প্রাইভেট হেলিকপ্টার কে ডাকলেন। এদিকে অনেক দেরী হয়ে যাচ্ছে দেখে পাশের কোন হসপিটালে ওকে ভর্তি করা হলো সেখানে ডাক্তাররা বলল অনেক গুরুতর অবস্থা জলদি ঢাকা নিয়ে যেতে সেখানে বিদেশের একজন নামকরা ডাক্তার আছে নাম ডা. এডওয়ার্ড। উনি ভিষণ ভালো চিকিৎসা করে রোগী দ্রুত সুস্থ হয়ে যাবে। ব‍্যাস সেদিন ই সব কিছু প‍্যাক করে আমি আর মাহির ভাইয়া উনার হেলিকপ্টারে করে ঢাকা ব‍্যাক করলাম। শুধু থেকে গেলেন উনি।
___________

“জন আমার লোকটি চাই কার এতো সাহস আমার রিসর্ট পার্টিতে এসে আমাকে মারতে চেয়েছিল?”

প্রচণ্ড রাগে চিৎকার করে বলল অনিরুদ্ধ!

এদিকে জন অনিরুদ্ধকে শান্ত করে বলল,

-” স‍্যার আমাকে একঘন্টা সময় দিন আমি লোকটিকে আপনার পায়ের কাছে এনে ফেলবো।”

অনিরুদ্ধের রাগে মাথা ছিড়ে যাচ্ছে আজকে ওর জন‍্যই মেধা মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে। ও নিজেকে কিছুতে মাফ করতে পারছে না। হঠাৎ রাগে সে বলে উঠল,

-” একঘন্টা না তিরিশ মিনিট সময় দিলাম ছেলেটাকে খুজে বের করে আমার সামনে আন। তা না হলে তোমাকে কেউ বাচাতে পারবে না।”

জন ভয়ে কপালের ঘাম মুছে বেরিয়ে যায়। অনুরাগ চুপচাপ পাইচারি করতে থাকে। অপরাধ বোধ হচ্ছে ওর প্রুচুর। সঙ্গে সবার জন‍্য প্রচন্ড দুশ্চিন্তা!! আজ ওকে গুলিটা লাগার কথা ছিলো কিন্তু ওর জাইগায় মেধা কতো কষ্ট পাচ্ছে!

এদিকে 15 মিনিটে ঢাকা পৌঁছে আমরা শহরের সবচেয়ে বড় হসপিটালে নিয়ে গেলাম মেধাকে। ডক্টর এডওয়ার্ডকে সবটা খুলে বলতে তিনি বললেন টাকা জমা করতে এখুনি অপেরেশন করে বুলেট বের করতে হবে। মেধাকে অটিতে নিয়ে যাওয়ার সময় ও মাহির ভাইকে ডেকে বলল,

-” আমার যদি কিছু হয়ে যাই আপনি প্লীজ নিজেকে কষ্ট দিবেন না। আমি আপনাকে প্রচণ্ড ভালোবাসি! কথা দিন আমার এই অবস্থায় নিজেকে দ্বায়ী করবেন না!”

মাহির ভাইয়া কেদেঁ বলল,

-” আমি মিহুকে হারিয়েছি কিন্তু তোমাকে কিছুতে হারাতে পারবো না। তুমি আমাকে বাচতেঁ শিখিয়ে নিজে চল যাওয়ার চেষ্টা করছো? আমি তোমাকে ভালোবাসি কিন্তু তুমি আমাকে ছেড়ে চলে গেলে তোমাকে একটুয়ো ভালোবাসবো না বলে দিলাম ”

বলে হাতে চুমু খেলেন। উনি পাগলের মতো কেদেঁ যাচ্ছেন। এদিকে অঝর ধারায় আমি ও কেদেঁ যাচ্ছি মেধা আমার দিকে তাকিয়ে কিছু বলতে চাচ্ছিলো কিন্তু পারলো না। মাহির ভাইয়া হুট করে কোথায় চলে গেলেন এদিকে ওযু করে আমি ও নামাজে দাঁড়িয়ে গেলাম।

খুনি যেই হোকনা কেনো সে ভেবেছিল আমরা দুজনে শুধু ঘুরতে গেছি। আর এজন্যই অনুরাগ ভাইয়াকে গুলি করতে চেয়েছিল কিন্তু গুলিটা দুর্ভাগ্য বসত মেধার কাধে গিয়ে লাগে সঙ্গে সঙ্গে সে লুটিয়ে পড়ে আর প্রচুর ব্লিডিং হয়। যতক্ষণ পযর্ন্ত অটির লাইট অফ ছিল আমি ঠি করেছিলাম নামাজ ছেড়ে উঠবো না। একটা সময় পর অনিরুদ্ধ ভাইয়াও হেলিকপ্টারে করে চলে আসেন এদিকের কি অবস্থা দেখতে। আমাকে প্রচুর ভেঙে পরতে দেখে উনি আমাকে জরিয়ে ধরে মাথায় হাত বুলাতে লাগলেন। আমি ও উনার বুকে মাথা দিয়ে কেদেঁই যাচ্ছিলাম।

এদিকে মাহির ভাইয়া মসজিদে নামাজ পরতে পরতে সিজদায় প্রচন্ড জোরে কেদেঁ উঠে সবাই বুঝতে পারে নিশ্চিত অনেক সমস্যায় পরেছে ছেলেটি এজন‍্য আল্লাহর কাছে এসে এভাবে কাদছে। মোয়াজ্জেম সাহেবের অনেক মায়া হয় ভাইয়ার প্রতি। তিনি এসে মাহির ভাইয়ার মাথায় হাত বুলিয়ে বলে,

-“সব ঠিক হয়ে যাবে আল্লাহর উপর ভরসা রাখো।”

~চলবে ইনশাআল্লাহ্