#অদ্ভুত_নেশা
#অধির_রায়
#পর্র_১৫ (শেষ)
৩৬.
ছোঁয়া অধিরের উম্মুক্ত লোমযুক্ত বুকে শুয়ে আছে৷ অধির ছোঁয়ার দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। ছোঁয়ার এখন ঘুমের দেশে পাড়ি জমাচ্ছে। অধিরের মনে কিছু শয়তান বাসা বেঁধেছে। ছোঁয়ার ঘুম অধিরের সহ্য হচ্চে না৷ অধির ছোঁয়ার চুল দিয়ে খেলতে শুরু করে দেয়৷
ছোঁয়া চুলে টান পড়ার জন্য ঘুম থেকে উঠে পড়ে। সাধারণ ছোঁয়ার ঘুম সকাল ১০ টার আগে ভাঙে না৷ যদি থাকে জীবন সঙ্গী তাহলে উঠতেই মন চায় না৷
[ আমার বাসর ঘরের সামনে সাইনবোর্ড টানিয়ে দিব৷ লেখা থাকবে মহাভারতে করোনার নতুন রুপ বের হয়েছে৷ সরকার তিন দিনের লগডাউন জারি করেছে🤣]
ছোঁয়া ঘুম ঘুম চোখে অধিরের দিকে কিছুটা ক্ষেপে তাকিয়ে আছে। কিভাবে অধিরকে শাস্তি দিবে ছোঁয়ার মাথায় কাজ করছে না৷ অধির ভ্যবলার মতো তাকিয়ে আছে ছোঁয়ার দিকে।
–ছোঁয়া কোন উপায় খোঁজে না পেয়ে অধিরের গলা চেপে ধরে আপনার সাহস কম নয় ছোঁয়ার ঘুম নষ্ট করেন৷
অধির চোখ বড় করে ছোঁয়ার দিকে তাকিয়ে আছে। সে কাকে বিয়ে করে এনেছে।ঘুম ভাঙানোর জন্য মেরে ফেলতে চাচ্ছে৷
— অধির কাশি দিয়ে আমাকে মেরে ফেলবে। এবার মেরে ফেললে যমরাজ আমাকে আর পৃথিবীতে ফিরে আসতে দিবে না৷
অধিরের কথা শুনে ছোঁয়া অধিরের গলা ছেড়ে দিয়ে অধিরের দিকে হাঁ করে তাকিয়ে আছে৷ মনে হচ্ছে কোন স্বপ্ন দুঃস্বপ্ন দেখেছে৷
— কি হয়েছে?এত বড় চোখ করে হাঁ করে তাকিয়ে আছো কেন?
— আপনি মারা গেছেন মানে কি? আর যমরাজ এখানে আসল কিভাবে?
— তোমার কিছু মনে নেই ছোঁয়া। আমরা জন্ম জন্মান্তরের জুটি।
— আপনি কি বলতে চাচ্ছেন? আমি কিছুই বুঝতে পারছি না৷
অধির ছোঁয়ার চোখের উপর এক হাত দিয়ে ম্যাজিক করে অধিরের হাতে একটা মাতুলি নিয়ে আসে। চোখের উপর থেকে হাত সরিয়ে
— এই মাতুলি চিনতে পারছ? কিছু মনে পড়ছে!
ছোঁয়া মাতুলিটা স্পর্শ করতেই তার দেহের ভীতর দিয়ে বিদ্যুতের মতো কিছু প্রবাহিত হয়ে যায়। ঠিক তখনই ছোঁয়া জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। কিন্তু সেটা সাময়িক। দুই মিনিটের মাঝে ছোঁয়ার জ্ঞান ফিরে আসে।
ছোঁয়া মাতুলি নিয়ে কিছু সময় চেয়ে থেকে অধিরকে জড়িয়ে ধরে। মনে হচ্ছে মা তার হারানো ছেলেকে বহুবছর পর ফিরে পেয়েছে৷ ছোঁয়া চোখের জল ফেলে যাচ্ছে। কোন কথা বলতে পারছে না৷ অধির ছোঁয়াকে শান্ত করে৷
— আমার সব মনে পড়ে গেছে। এত দিন কেন আমার মনে ছিল না৷ আমি তো প্রতিদিন তোমাকে স্বরণ করতাম৷ মাঝ খানে কিভাবে ভুলে গিয়েছিলাম?
— কারণ আমি এক্সিডেন মারা যায়। কিন্তু তোমার ভালোবাসার জন্য আমাকে সেই অবস্থায় আবার পৃথিবীতে ফিরিয়ে দেয়। যদি তুমিও মারা যেতে তাহলে আমাদের পুনঃজন্ম হতো৷
ঘটনা,,,
ছোঁয়ার যখন পাঁচ বছর তখন অধিরের বয়স সাত বছর৷ ছোঁয়া শিব রাত্রিতে অধিরের সাথে মন্দিরের বাহিরে খেলা করছিল। তখন অধির হুট করেই এক চিল্লি সিঁদুর নিয়ে ছোঁয়াকে পড়িয়ে দেয় সকলের অগোচরে।
সিঁদুর পরানোর পর আবির্ভাব হয় এক সাধুর। সাধু তাদের দুজনকে দুই টা মাতুলি দেয়৷ সাধু বলে যায় তারা দুই জন জন্ম জন্মান্তরের বন্ধে আবদ্ধ হয়েছে৷ তাদের মিলন কেউ আটকাতে পারবে না৷
পারিবারিক ব্যবসার জন্য তারা দুই জন আলাদা হয়ে যায়৷ কিন্তু মাতুলির মাধ্যমে তারা দুই জন কথা বলত। হঠাৎ একদিন অধিরের এক্সিডেন হয়৷ যার ফলে অধির মারা যায়৷ কিন্তু তার অসমাপ্ত ভালোবাসা পুরন করার জন্য যমরাজ তাকে ফিরিয়ে দেয়৷
[গল্পটা কাল্পনিক। শুধু মাত্র বিনোদনের জন্য ]
–
–
–
–তুমি মায়া শক্তি কিভাবে পেলে?
— এখানে যা কিছু দেখছ সব কিছু মহাদেব আমাকে দিয়েছে। সব কিছু আমার কথাতেই চলে৷ আমাকে মহাদেব এই শক্তি দিয়েছে।
— এই জন্য এত দিন আমার কাছ থেকে লুকিয়ে ছিলে৷ আমাকে তোমার মুখ পর্যন্ত দেখাও নি৷ (অভিমান স্বরে)
— যদি সব রহস্য বলে দিতাম তাহলে আমাদের মিলন সম্পন্ন হতো না৷
— হতো না৷ এই জন্য জোর করে আমার সাথে শারীরিক সম্পর্ক জড়িয়ে ছিলে।
— এখন সব কথা বাদ৷ আমরা এখন আমাদের জীবন নিয়ে এগিয়ে যাব। কোন বাঁধা আসতে দিব না আমাদের জীবনে।
৩৭.শেষাংশ
ছোঁয়ার আজ বউভাত। কিন্তু বাড়িতে কেউ নেই৷ না আছে অধিরের আত্মীয় স্বজনর। না আছে তার বন্ধু। ছোঁয়া মন খারাপ করে বসে আছে।
— এভাবে মন খারাপ করে বসে আছো কেন?
— কি করব?
— কি করব মানে? একটু পর তোমার বাড়ির লোকজন চলে আসবে।
— আসলে আসবে তাতে তোমার কি?
— তুমি এভাবে মন খারাপ করে বসে থাকলে আমারও তো মন খারাপ লাগে।
— তোমার মন খারাপ হয় জানা ছিল না৷ এই শূন্য বাড়িতে তারা এসে কি করবে৷
— এটা তুনি শূন্য বাড়ি বলছ।
— তা নয় কি? দশ জন মানুষও হিসাব করে পাওয়া যাবে না এখানে৷
— তাহলে দেখ এই বাড়িতে কোণায় কোণায় লোক।
— কোথায়?
অধির নিজের হাত ছোঁয়ার হাতের উপর রাখে৷ সাথে সাথে বাড়ি ভর্তি হাজার হাজার লোক চলে আসে৷
— এটা কিভাবে হলো?
— কোনটা কিভাবে হলো?
— বাড়ি ভর্তি লোক কিভাবে চলে আসল।
— সবাই এখানেই ছিল। তুমি দেখতে পাও নি৷
— আমি যা দেখতে পাচ্ছি তুমি তা দেখতে পাচ্ছ?
— কি দেখতে পাব?
— এখানে বিয়ের মন্ডব কিসের জন্য? আমাদের কি আবার বিয়ে হবে।
— না৷ আমাদের বিয়ে হবে না৷ আজ অন্য কারোর বিয়ে হবে।
— অন্য কারো বিয়ে হবে মানে? আর এখানে কার বিয়ে হবে৷
🍂 আমাদের বিয়ে হবে৷ পিছন থেকে বলে উঠে রিয়া।
— তোদের বিয়ে হবে মানে কি?(ছোঁয়া)
— আমার আর সিদ্ধার্থের বিয়ে হবে৷
–কিন্তু দাদা কোথায়?
— আমি এখানে?(সিদ্ধার্থ)
— দাদা এটা ঠিক না। আমি কত স্বপ্ন দেখেছি তোমার বিয়ে নিয়ে৷
— কি কি স্বপ্ন?
— তোমার বিয়েতে আমি নাচবো৷ গাইব৷ সকলের সাথে মারামারি করব৷ কিন্তু তুমি দিলে আমার স্বপ্নের ১২ টা বাজিয়ে।
— আরে এখনও সব কিছু করতে পারবি৷ (সিদ্ধার্থ)
— কিভাবে?
— রিয়া ছোঁয়ার কাঁধে হাত রেখে বলে এখন আমরা চার জন মিলে সবার মন জয় করব।
— আইডিয়া খুব সুন্দর।
🍂
🍂
🍂
🍂
ছোঁয়ার বউভাতে বিয়ে হয়ে যায় সিদ্ধার্থ আর রিয়ার। এখন বাড়িতে শুধু ভালোবাসার হাসি।সকলের মন জয় করে চলে রিয়া আর ছোঁয়া।
–
–
🍁🍁
পাঁচ বছর পর
স্বার্থ দাঁড়াও বলছি.. রিয়া তার ছেলের পিছন পিছন ছুটে যাচ্ছে। কিন্তু স্বার্থ কিছুতেই দাঁড়াবে না৷ সে তার বন্ধু অর্পাকে ধরেই ছাড়বে৷
স্বার্থ– স্বার্থ হলো সিদ্ধার্থ ❤ রিয়ার ছেলে।
অর্পা — অর্পা হলো অধির ❤ ছোঁয়ার ভালোবাসার সম্পদ।
— তুই আমাকে ধরতে পারবি না স্বার্থু। অর্পা
–অর্পা দাঁড়া।
ছোঁয়া এসে অর্পাকে জড়িয়ে ধরে৷ স্বার্থ এসেও ছোঁয়ার কোলে জাপিয়ে উঠে।
— পিসি অর্পা আমার বউ লাগে তো?
— তোর মতো হুনুমানকে এই অর্পা পছন্দ করে না৷
ছোঁয়া দু জনকে থামিয়ে দু জনের কপোলে আলতু করে ভালোবাসার পরশ এঁকে দেয়।
🍃🍃🍃🍃🍃🍃🍃
🍃🍃 সমাপ্ত 🍃🍃🍃
🍃🍃🍃🍃🍃🍃🍃