তিক্ততার সম্পর্ক পর্ব-০১

0
4633

#তিক্ততার_সম্পর্ক
লেখিকাঃ Tahmina Toma
পর্বঃ ০১

১.
ফোসকা পরা হাতের দিকে তাকিয়ে চোখের পানি ফেলছে ইমা। তার জীবনটা এমন না হলে কী খুব ক্ষতি হতো কারো ? খালাতো ভাই আরমানের কথা বিশ্বাস করে ইমার হাতে গরম খুন্তি চেঁপে ধরেছিলো ইমার খালামণি। কোনো মানুষ এতটা নির্দয় হতে পারে নিজের খালাকে না দেখলে বুঝা হতো না ইমার। ভালোবাসা কাকে বলে ইমা কখনো বুঝতে পারেনি কারণ তাকে ভালোবাসার মতো কেউ নেই এই পৃথিবীতে। বাবা মারা গেছে দুবছর বয়সে আর তিন বছর বয়সে মা বিয়ে করে নিয়েছে অন্য একজনকে। ইমা তার খালার বাসায় থাকে নানুর সাথে। নানার বাড়িটা বিক্রি করে দিয়ে যার যার ভাগের টাকা নিয়ে গেছে নানা মারা যাওয়ার পর। নানা থাকতে ভালো ছিলো এমনও নয়। তার মা ভালোবেসে বিয়ে করেছিলো। ইমার নানার পছন্দ ছিলো না ইমার বাবাকে তাই ইমাকে কখনো ভালোবাসেনি তার নানা। নানু ভালোবাসে তবে সবার আড়ালে। তবু এখনকার থেকে ভালো ছিলো নানার বাড়িতে। এতো অত্যাচার সয্য করতে হয়নি সেখানে। সেখানে শুধু মানসিক নির্যাতনের শিকার হতো কিন্তু এখানে শারিরীক নির্যাতনেরও শিকার হতে হয়। সেটাও শুধু খালাতো ভাই আরমানের জন্য।

আজ সন্ধ্যায় রাতের রান্না করছিলো ইমা হঠাৎ খালামুনি কিচেনে ঢুকে গরম তরকারি নাড়তে থাকা খুন্তিটা, ইমার হাত টেনে এনে হাতে চেঁপে ধরে। বাড়ি কাঁপানো চিৎকার করে উঠে ইমা।

ছটফট করে কান্না করতে করতে ইমা বললো, আহহহহহহহ মণি লাগছে আমার হাত ছাড়ো,,,,,।

দাঁতে দাঁত চেপে মণি বললো, তোর সাহস হলো কীভাবে আমার ছেলেকে কফি দিতে মানা করার ?

ইমা ছটফট করতে করতেই বললো, আমি কখন ভাইয়াকে মানা করেছি কফি দিতে ?

মণি আগের মতোই বললো, তুই বলতে চাইছিস আরমান আমাকে মিথ্যা বলেছে, আমার ছেলে মিথ্যাবাদী ?

ইমা হাউমাউ করে কাঁদতে কাঁদতে বললো, আমি তা কখন বললাম মণি, প্লিজ মণি ছেড়ে দাও আর সয্য হচ্ছে না। আমি সত্যি বলছি ভাইয়া আমার কাছে কফি চায়নি।

মণি খুন্তিটা সরিয়ে পাশে ঠাস করে রেখে ইমার গাল চেপে ধরে বললো, আরমান বাসায় এসে তোকে কফি দিতে বলেছে আর, তুই বলছিস দিতে পারবো না আমি রান্না করছি। সাহস হলো কীভাবে তোর না করার ?

ইমা কান্না করতে করতে বললো, বিশ্বাস করো মণি ভাইয়া আমার কাছে কফি চায়নি।

মণি গাল ছেড়ে থাপ্পড় দিয়ে বললো, একদম মিথ্যা বলবি না। আর খবরদার আরমান কিছু চাইলে বাকি সব কাজ রেখে সেটা আগে করবি।

এটুকু বলে মণি ইমাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে কিচেন থেকে বের হয়ে গেলো। ইমা হাতটা ধরে ফ্লোরে বসে পড়লো, কাঁদতে লাগলো হাউমাউ করে। কিন্তু তার কান্না এই চার দেয়ালের বাইরে কেউ কখনো শুনতে পায়নি আর কোনোদিন হয়তো শুনতেও পাবে না। হাতে ফোসকা পরে গেছে কিন্তু তার তো এভাবে বসে থাকলে চলবে না। সময় মতো সবাই খাবার না পেলে আবার কী সয্য করতে হবে কে জানে। সেই পুড়া হাতে বাকি কাজ শেষ করলো ইমা। ফোসকাটা এক সময় গলে গেলো আর মরিচের মতো জ্বালা শুরু করলো। রাতের সব কাজ শেষ করে রুমে এসে কান্না করতে শুরু করেছে।

বর্তমান

কাঁদতে কাঁদতে ফর্সা মুখটা লাল হয়ে গেছে। সবচেয়ে বেশি লাল হয়েছে নাকের ডগাটা। অনার্স ফাইনাল ইয়ারের ছাত্রী ইমা, পুরো নাম ইসমাত আবিয়াত ইমা বয়স ২৩ বছর, ৫ ফিট ৫” লম্বা, তবে স্বাস্থ্যের দিক দিয়ে একদম শুকনো, লম্বা হওয়ায় আরো বেশী শুকনো লাগে, ধবধবে সাদা গায়ের রং, গোলাপি ঠোঁট, গোল গোল চোখ, মাথা ভর্তি ঘন কালো চুল। নামের অর্থের সাথে সম্পূর্ণ মিল আছে সতী সুন্দরী স্ত্রীলোক সে। কিন্তু ভাগ্যটা একদমই বিপরীত।

কাঁদতে কাঁদতে ইমা বললো, বাবা আমি এই #তিক্ততার_সম্পর্ক গুলোয় ক্লান্ত হয়ে গিয়েছি। আমার আপন মানুষগুলোর সাথে তিক্ততার সম্পর্ক ছাড়া কিছু খোঁজে পাই না আমি।

কাঁদতে কাঁদতে ইমা একসময় ঘুমিয়ে পড়লো। সকালে আবার এই পুড়া হাতে পরোটা বানাতে হবে। আরমান জানিয়ে দিয়েছে সকালে সে পরোটা খাবে আগামীকাল।


একটা পাঁচ বছরের বাচ্চা ছেলে ভয়ে জড়সড় হয়ে বসে আছে রুমের এক কোণায়। ছেলেটার চোখের সামনে তার বাবার গলায় দড়ি পেঁচিয়ে শক্ত করে ধরে আছে বাচ্চা ছেলেটারই নিজের মা আর তাকে সাহায্য করছে মায়ের জেল ফেরত বয়ফ্রেন্ড। ছেলেটার বাবা শ্বাস নিতে না পেরে ছটফট করছে কিন্তু তাতে তাদের কোনো মায়াদয়া হচ্ছে না। তারা আরো শক্ত করছে দড়িটা যাতে তাড়াতাড়ি মারা যায়। ছেলেটা আর সয্য করতে পারলো না তার বাবার ছটফট। দৌঁড়ে তাদের কাছে গিয়ে বাবাকে ছাড়ানোর জন্য লোকটার হাতে কামড় বসিয়ে দিলো। তাতে লোকটা রেগে সজোরে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিলো ছেলেটাকে। চোখ বন্ধ হওয়ার আগে ছেলেটা দেখলো তার বাবা ছটফট করা বন্ধ করে শান্ত হয়ে গেছে। জ্ঞান হারানোর আগে বাবা বলে চিৎকার করে উঠলো।

বাবা,,,,,,,,,,

ধড়ফড়িয়ে উঠে বসলো ইয়াদ। পাশের টেবিল থেকে পানির গ্লাসটা নিয়ে ঢকঢক করে খেয়ে ফেললো সবটা। এই একটা স্বপ্ন তার জীবনকে নরক করে দিয়েছে। প্রত্যেকটা দিন এই একই স্বপ্ন দেখে ঘুম ভাঙে তার। ঘামে সারা শরীর ভিজে গেছে। ঘড়িতে তাকিয়ে দেখলো ভোর ৪ টা বাজে। এখন আর তার ঘুম আসবে না তাই বিছানা ছেড়ে উঠে গেলো। রুমের সাথে লাগানো মিনি ছাঁদে রাখা এক্সারসাইজের সরঞ্জাম দিয়ে এক্সারসাইজ করতে লাগলো। প্রতিদিনই এটা করে সকাল সাতটা পর্যন্ত, এখন এটাই করবে তারপর সাতটা থেকে আটটা শাওয়ার নিবে, ব্রেকফাস্ট করে অফিস চলে যাবে। এটাই তার প্রতিদিনের রুটিন। ইয়াদ এক্সারসাইজ করতে থাকুক ততক্ষণে তার পুরো পরিচয় জেনে নেওয়া যাক। আবরার হামিদ ইয়াদ পুরো নাম, বয়স ৩০ বছর, হলুদ ফর্সা গায়ের রং, উচ্চতা ৬ ফুট ৩ ইঞ্চি, সিক্স প্যাক বডি, মাথার চুলগুলো অনেকটা শজারুর কাঁটার মতো তবে সবসময় জেল দিয়ে সেট করেই রাখে, নাকের ডগায় রাগ থাকে সবসময়, কিন্তু অসম্ভব সুন্দর হ্যান্ডসাম আর স্টাইলিশ। বাবার বিজনেস সামলাচ্ছে, বিজনেস জগতের প্রিন্স বলা হয় ইয়াদকে আর মেয়েদের হার্টথ্রব। তবে পৃথিবীতে সবচাইতে বেশি ভালোবাসে নিজের বোনকে আর ঘৃণা করে নারী জাতিকে আর ভালোবাসা নামক শব্দটাকে। তার অবশ্য যথেষ্ট কারণও আছে।

ভাইয়া তোমার কফি নিয়ে এসেছি।

এক্সারসাইজ করতে করতে কখন সকাল হয়ে গেছে টেরই পায়নি ইয়াদ। বোনের দিকে তাকিয়ে দেখলো মুখে মিষ্টি একটা হাঁসি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে কফির মগ হাতে। সকালে বোন ছাড়া কারো হাতের কফি খায় না ইয়াদ।

মুচকি হেঁসে বললো, টেবিলে রাখ আর বস।

ইয়ানা কফির মগটা টি-টেবিলে রেখে বেতের চেয়ারটাতে বসলো। ইয়াদের রুমের এই মিনি ছাঁদটা খুব ভালো লাগে ইয়ানার কাছে। তাই মাঝে মাঝেই এখানে এসে বসে থাকে আর ভাইয়া থাকলে তো কথাই নেই।

ইয়ানা ইয়াদের দিকে তাকিয়ে বললো, তুমি তো এখনো শাওয়ারই নাও নি, শাওয়ার নেওয়ার পরই তো কফি খাও।

ইয়াদ টাওয়েল দিয়ে ঘাম মুছতে মুছতে বললো, আজ নাহয় আগে কফি খেয়ে পরে শাওয়ার নিবো।

ইয়ানা আর কিছু বললো না। চুপচাপ ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে আছে।

ইয়াদ কফিতে এক চুমুক দিয়ে বললো, আজ ভার্সিটি যাবি না ?

ইয়ানা বললো, হ্যাঁ যাবো তো, তুমি আজকে ড্রপ করে দিয়ো।

ইয়াদ বললো, কেনো তোর ড্রাইভার কোথায় ?

ইয়ানা মন খারাপ করে বললো, একটা ছেলে বেশ কয়েকদিন ধরে খুব বিরক্ত করছে। অনেকবার ভালোভাবে বুঝিয়েছি কিন্তু কোনো কাজ হচ্ছে না। তুমি একটু বলে দিবে।

ইয়ানার কথায় ইয়াদের চোখমুখ লাল হয়ে গেলো রাগে কিন্তু বোনের সামনে সেটা প্রকাশ করলো না।

কঠিন গলায় বললো বিরক্ত করছে কয়েকদিন হয়ে গেছে তুই আজ বলছিস আমাকে ?

ইয়ানা চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়িয়ে বললো, আমি ভেবেছিলাম আমি ভালো করে বললে বুঝবে কিন্তু কাজ হয়নি।

ইয়াদ দাঁতে দাঁত চেপে বললো, কিছু মানুষ আছে কুকুরের চাইতেও অধম তারা ভালোভাবে কথা ডিজার্ভ করে না।

ইয়ানা ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে বললো, ভাইয়া দেখো তুমি শুধু সাবধান করে দিবে আর কিছু করবে না বলে দিলাম কিন্তু।

ইয়াদ নিজেকে যতটা সম্ভব শান্ত রেখে বললো, হুম শুধু সাবধান করে দিবো যাতে তোর দিকে চোখ তোলে তাকাতে না পারে কখনো।

ইয়ানা বললো, ঠিক আছে তুমি শাওয়ার নিয়ে রেডি হয়ে নিচে এসো। একসাথে ব্রেকফাস্ট করে বের হবো।

ইয়ানা ইয়াদের কথায় স্বস্তির নিঃশ্বাস নিয়ে কথাটা বলে চলে গেলো। ইয়ানা জানে না তার আড়ালে তার ভাইয়া কতটা ভয়ংকর। ছেলেটার কী হাল হবে সেটা কল্পনাও করতে পারবে না ? ইয়াদ কফির মগটা রেখে সজোরে কয়েকটা পাঞ্চ করলো পাশে ঝুলিয়ে রাখা পাঞ্চিং ব্যাগে। কিন্তু রাগ কমলো না তাতে তাই সেটা রেখে শাওয়ার নিতে চলে গেলো।

শাওয়ারের নিচে দাঁড়িয়ে বিড়বিড় করতে লাগলো, কার এতোবড় কলিজা আবরার হামিদ ইয়াদের বোনকে ডিস্টার্ব করে। তার কলিজাটা আমি দেখতে চাই।

শাওয়ার শেষ করে রেডি হয়ে নিলো অফিসে যাওয়ার জন্য। ড্রাক ব্লু শার্টে বডি সেপ বুঝা যাচ্ছে, হাতা কনুই পর্যন্ত ফোল্ড করে নিয়েছে, ফর্সা হাতে চকচক করছে ব্ল্যাক রিচ ওয়াচ, ব্ল্যাক প্যান্টের সাথে ম্যাচিং বেল্ট আর শো, চুলগুলো জেল দিয়ে সেট করেছে, ব্ল্যাক ব্লেজারটা হাতে নিয়ে বের হয়ে গেলো রুম থেকে। ডাইনিং টেবিলে বসে আছে ইয়ানা, ইয়াদের বাবা ইয়াসির হামিদ, ইয়াদের মা রুবিনা কবির, আর ছোট ভাই ইশান হামিদ। ইয়ানা ছাড়া আর কাউকে সয্য করতে পারে না ইয়াদ। চুপচাপ নিজের চেয়ারে বসে পড়লো ইয়াদ। সার্ভেন্ট খাবার দিলে চুপচাপ খাচ্ছে।|লেখনীতে তাহমিনা তমা|

ইয়াদের মা তার দিকে তাকিয়ে বললো, ইয়াদ তোমার জন্য মেয়ে দেখেছি। বিয়ের বয়স তো পেড়িয়ে যাচ্ছে, বিজনেস সামলাতে শুরু করেছো এবার সংসারের কথা ভাবো।

মায়ের মুখে বিয়ের কথা শুনে ইয়াদের মুখে রহস্যময় আর তাচ্ছিল্যের একটা হাসি ফোটে উঠলো।

ইয়াদ মনে মনে বললো, তোমরা তো সেই অপেক্ষায় আছো আমি কবে বিয়ে করবো আর তোমরা তোমাদের এতো বছরের পরিকল্পনায় সফল হবে। কিন্তু সেটা তো এই আবরার হামিদ ইয়াদ কখনো হতে দিবে না মাই ডিয়ার সো কল্ড মাদার।

কী হলো ইয়াদ কথা বলছো না কেনো ?

ইয়াদ চোখমুখ শক্ত করে বললো, আমি বিয়ে করবো কী করবো না সেটা সম্পূর্ণ আমার পার্সোনাল বিষয়। আর আমার পার্সোনাল বিষয়ে কারো ইন্টারফেয়ার পছন্দ করি না সেটা খুব ভালো করেই জানেন আশা করছি।

রুবিনা একটু রেগে বললো, আমি তোমার মা ইয়াদ, তোমার বিয়ে নিয়ে চিন্তা করার অধিকার আমার আছে।

এতক্ষণ পর মুখ খুললো ইয়াসির হামিদ, আহ্ রুবিনা তুমি চুপ করো। ছেলে মেয়ে বড় হলে তাদের সিদ্ধান্তকে সম্মান জানাতে হয়। ইয়াদের যখন বিয়ে করতে ইচ্ছে হবে তখন করবে।

ইয়াসিরের কথা শুনে ইয়াদ পুনরায় রহস্যময় হাসলো। তারপর উঠে দাঁড়িয়ে বললো, ইয়ানা আমার হয়ে গেছে তুই যেতে চাইলে তাড়াতাড়ি আয় আমার অফিসে যেতে লেট হয়ে যাবে।

ইশান খাওয়া রেখে বললো, ভাইয়া আমার হয়ে গেছে আমাকেও সাথে নিয়ে চল না। তিনজন একসাথে যাবো মজা হবে।

ইয়াদ শক্ত গলায় বললো, কেনো ইশান এই কিছুদুর আগেই তো তোমার মম তোমাকে লেটেস্ট মডেলের একটা কার কিনে দিয়েছে সেটা নিয়ে যাও আমার সাথে কেনো যাবে ? ইয়ানা তাড়াতাড়ি আয় আমি গাড়িতে আছি।

ইয়াদ কথা শেষ করে গটগট হেঁটে চলে গেলো আর ইশানের মুখটা মলিন হয়ে গেলো। ইশান খুব ভালোবাসে তার ভাইয়াকে কিন্তু সে জানে না ইয়াদ কেনো তাকে সবসময় দূরে সরিয়ে রাখে। ইয়ানাকে এতো ভালোবাসে আর ইশানকে সবসময় ইগনোর করে তাতে বারবার মন খারাপ হয়ে যায় তার।
||লেখনীতে তাহমিনা তমা|| ইয়ানা একবার ছোট ভাইয়ের দিকে তাকালো। মুখটা মলিন হয়ে গেছে, ইয়ানা নিজেও ভেবে পায় না ইয়াদ কেনো ইশানের সাথে সবসময় এমন করে। ইশানের চুলগুলো নেড়ে দিয়ে ইয়ানা বের হয়ে গেলো ভার্সিটির জন্য। ইয়ানা মাস্টার্স করছে আর ইশান অনার্স ৩য় বর্ষের স্টুডেন্ট, একই ভার্সিটিতে পড়ে। খাওয়া শেষ করে ইশানও বের হয়ে গেলো ভার্সিটির জন্য।


একটু পরোটা ছিঁড়ে ভাজি দিয়ে মুখে দিয়েই থু থু করে ফেলে দিলো আরমান। ইমা পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলো কিন্তু বুঝে উঠার আগেই খাবারের প্লেটটা ছুঁড়ে দিলো ইমার মুখের দিকে।

আরমান রেগে বললো, এগুলো কী মানুষ খায় ? ভালো করে রান্না করতে পারিস না, নাকি আমি যাতে খেতে না পারি তাই ইচ্ছে করে এমন রান্না করেছিস ইমা ?

আরমানের কথা শুনে কটমট করে ইমার দিকে তাকালো তার মণি। ইমা অসহায় দৃষ্টিতে তাকালো আরমানের দিকে। তা দেখে আরমান শয়তানি হাঁসি দিলো একটা।

মনে মনে বললো, এই আরমান মাহমুদকে রিজেক্ট করার ফল তোকে ভোগ করতে হবে, তোকে বলেছিলাম ইমা। যাকে পাওয়ার জন্য ভার্সিটির সব মেয়ে পাগল তুই তাকে রিজেক্ট করেছিস। এখন তো আমার কিছু করার নেই সোনা আরো দেখ কী কী হয় ? তবে দিন শেষে তোকে এই আরমানের কাছেই ধরা দিতে হবে।

আরমান খাওয়া রেখে যাওয়ার সময় ইমার পাশে দাঁড়িয়ে বিড়বিড় করে বললো, বলেছিলাম তোকে যা করেছিস তার জন্য ভোগতে হবে নে এবার সামলা বাকিটা।

চলবে,,,,