অবশেষে তুমি আমার পর্বঃ০৮

0
4611

#অবশেষে_তুমি_আমার

পর্বঃ০৮

লেখাঃতাসনিম রাইসা।

– তিয়াস বাবা অধরাকে আন্টি পরিয়ে দাও তো।”

” তিয়াস যখন অধরার হাতে আন্টি পরিয়ে দিবে এমন সময় অধরা চারপাশে তাকিয়ে কাকে যেন খুঁজছিল। তিয়াস অধরার বাম হাতটার অনামিকা আঙুলে যখনি আন্টি পরিয়ে দিতে যাবে ঠিক সেই সময়ে রাজ দৌড়ে এসে অধরাকে টান দিয়ে বুকের সাথে জড়িয়ে নিয়ে বলতে লাগলো,’ এ বিয়ে হবে না। ‘
– তিয়াস রাজের এমন ব্যবহারে অবাক হয়ে যায়।
তিয়াসের সাথে ড্রয়িংরুমের সবাই অবাক হয়ে যায়। কি হচ্ছে কেউ কিছু বুঝতেছে।

– নীরবতা ভেঙে রাজের আন্টিই বললো,’ বাবা রাজ তুমিই না বলছিলে অধরার মা -বাবা কেউ নেই। আমাদেরর বাসার কাজের মেয়ে। আমি তো অধরাকে নিজের মেয়ের মতো করেই তিয়াসের হাতে তুলে দিতে চাচ্ছি। তুমি এমন করছো কেন?”

– অধরা এসব কি? উনি কে? আর এই যে ভাই আপনি আমার অধরাকে জড়িয়ে ধরছেন কেন? অধরা তুমি কিছু বলছো না কেন?

– রাজ এবার সবার সামনে অধরার ওষ্ঠজোড়াতে তার ঠোঁট জোড়া মিলিয়ে দিল! সবার চোখ বন্ধ করে ফেললো। সবাই চোখ বন্ধ করলেন কেন? তাকান এই বলে অধরাকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো। অধরা রাজের কাছ থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিতে চাচ্ছে কিন্তু পারছে না। লজ্জায় অধরার মুখমন্ডল লাল হয়ে যাচ্ছে!

– কি তিয়াস এখন তো দেখলে অধরা আমার কে?। তুই কেন আসছিস বিয়ে করতে? আর আপনারা হা করে দাঁড়িয়ে কি দেখছেন? এখনো ভালো ব্যবহার করছি। প্লিজ ভালোই ভালোই চলে যান। ”আর এর পরেও এ মেয়ের সাথে তিয়াসের বিয়ে দিবেন আন্টি?

– তিয়াস অধরার দিকে অগ্নিদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। অধরা নিজেকে রাজের বাহুডোর থেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করছে কিন্তু পারছে না। ”

– তিয়াসের মা তিয়াসকে নিয়ে চলে যেতেই, রাজ অধরার গালে ঠাস করে চড় বসিয়ে দেয়। আর বলে,’ এই আমাকে দিয়ে তোর হয় না? আমাকে না জানিয়ে বিয়ে করতে যাচ্ছিস?

– রাজ কি হচ্ছে তুমি অধরা আপুর সাথে ওমন করছো কেন? আপু আর তিয়াস ভাইয়া দুজন দুজনকে ভালোবাসে। নিজে তো ভালোবাসো বুঝই না অন্যের ভালোবায় বাঁধা হচ্ছো। এখনও সময় আছে অধরা আপু আর তিয়াস ভাইয়ার বিয়েটা হতে দাও। ”

” ত্রিযামিনী তুই চুপ করবি? অধরা কে জানিস? ”

” রাজের কথা শুনে ত্রিযামিনী অনেকটা চমকে যায়। অনেকটা বিচলিত কণ্ঠে বলে কে সে?”

– অধরা আমার ব্যবসার ত্রাস! ওকে কি এমনিতেই রেখেছি? ওর জন্য আমাকে পাঁচলক্ষটাকা দিতে হয়েছে। বিদেশী ক্লাইন্টদের জন্য অধরা পারফেক্ট। ”

– রাজের প্রতিটি কথা অধরার কলিজা গিয়ে বিঁধছে! হৃদয়ে অশান্ত ঝড় বয়ে যাচ্ছে। হৃদপিন্ডে মনে হয় কেউ ছুরি চালিয়ে দিচ্ছে। অধরা আর নিজেই চোখের পানি ধরে রাখতে পাচ্ছে না। চোখের কার্ণিশ বেয়ে কয়েক ফোটা জল মাটিতে গড়িয়ে পড়লো।

– তুমি আগে বলবে তো। আমি আরো ভাবছি তুমি একে ভালোবাসো। ওহ! বাঁচা গেল। ”

– মনে রাখিস ত্রিযামানী এ বাড়িতে যদি অধরাকে দেখতে কোন ছেলে আসে তাহলে খবর আছে তোদের। ”

– আরে কেউ আসবে না তুমি আমার হলেই চলবে। ”

– রাজ অধরাকে নিয়ে উপরে চলে যায়। অধরাকে রুমে রেখে দরজা বাহির দিয়ে আঁকটে দেয়। আর বলে দেয়, আজ সারাদিন তার খাওয়া বন্ধ।”
– অধরা রুমে বসে বসে কাঁদছে এমন সময়, ইসু ফোন দেয়। অধরা ফোন রিসিভ করতেই, ইশু বলতে লাগে, ‘ আপু তোকে নিয়ে একটা বাজে স্বপ্ন দেখেছি। তুই কেমন আছিস আপু? তোকে দেখতে ভীষণ ইচ্ছে করছে। আমার মনে হয় তুই কষ্টে আছিস। আপু কেন এতো কষ্ট দিচ্ছিস নিজেকে? ”

– অধরা চোখের পানি মুছে হাসতে হাসতে বললো,’ আরে পাগলী সব স্বপ্ন সত্যি হয় নাকি? জানিস বস আমাকে তার সব কাজের দায়িত্ব দিয়েছে। বিদেশ থেকে কত ক্লাইন্ট আসে তাদের দেখভাল আমাকেই করতে হয়। তাই তোকে দেখতে যেতে পারি না। আর তুই একদম চিন্তা করবি না। আমি একটু ফ্রি হই তখনি তোর সাথে দেখা করবো। কথাগুলো বলে ফোনটা কেটে দিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে লাগল। রাজের কথাগুলো বারবার কানে বারি খাচ্ছে! রাজ কেন তার সাথে এমন করে। আর কতো কষ্টে দিবে সে আমাকে এসব ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে যায়। ”

– রাতে বাসায় ফিরে হঠাৎ, রাজের মনে পড়ে সে মেসেজ টার কথা। কে যেন মেসেজ করে বলেছিল , ‘অধরার বিয়ে হয়ে যাচ্ছে। বিয়ে দেখতে চাইলে বাসায় আসেন। ” রাজ তখনি বাসায় এসে দেখে মেসেজের কথা গুলোই সত্যি। তাহলে কে মেসেজ করতে পারে। রাজ ফোনটা বের করে সে নাম্বারে ফোন দিল। নাম্বারটা বারবার বন্ধ দেখাচ্ছে। দিনের ঘটনাগুলো বারবার মনে পড়ছে।

” রাজ দরজা খুলেই দেখে অধরা কার সাথে যেন কথা বলছে। রাজ অধরার পিছনে চুপিচুপি দাঁড়ায়।

– তিয়াস তুমি আমাকে নিয়ে যাও। আমি আর এ নরকে থাকতে পারছি না। আচ্ছা তিয়াস তুমি কি সত্যিই আমাকে ভালোবাসো?
তুমি আমাকে ভালোবেসে থাকলে আমাকে নিয়ে যাও। আমি যে ভাবেই হোক বাসা থেকে পালিয়ে তোমার কাছে চলে যাবো। আজ অনেক কষ্ট হয়েছিল। রাজের ভয়ে তোমাকে কিছু বলতে পারিনি।

– হুম জানতাম আমার পাখিটা আমাকে অনেক ভালোবাসে। আমিও চাই আমার তিয়াস সোনাকে অনেক ভালোবাসি। লাভিউ তিয়াস সোনা। এত্তোগুলা লাভিউ। আর শোন আমি তোমাকে ছাড়া বাঁচবো না তোমাকে প্রথম দেখাতেই ভালোবেসে ফেলেছি। যেদিন তুমি আমাকে বাঁচিয়েছিলে। আচ্ছা জানপাখি এখন ফোন রাখছি। রাজ আবার এসে পড়বে। অধরা ফোনটা কান থেকে সরাতেই দেখে রাজ তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। অধরার হাত পা কাঁপছে। আল্লাই জানে রাজ আজকে কি করে।”

” বাহ বাহ ফোন রাখলে কেন, আরেকটু রোমান্টিক কথা বলতে? ”কথাটা বলে অধরার হাত থেকে ফোনটা নিয়ে ফ্লরে একটা আছাড় মেরে ফোনটাকে একদম চূর্ণ-বিচূর্ণ করে ফেলে।

– অধরা কাঁদছে!

– এই তুই কাঁদবি না। চুপ-চাপ বসে থাক। ”

-রাজ নিচে থেকে খাবার নিয়ে এসে দেখে অধরা বসে আছে সেখানেই।”

– এই নে খাবার সারাদিন খাসনি তো। আজকে যদি আবার সেন্সলেন্স হয়ে যাস। ”

” রাজ খেয়াল করলো অধরার ডান হাত কাটা। তাই বললো,’ আমি খাইয়ে দিচ্ছি। আর হাত কাটছিস কিভাবে?”

” অধরা রাজের খাইয়ে দেওয়ার কথা শুনে রাজের দিকে অসহায়ের দৃষ্টিতে তাকায়। ”

” এই এইভাবে তাকিয়ে থাকবি? হা কর। রাজ অধরাকে খাইয়ে দিয়ে তার পকেট থেকে রোমাল বের করে মুখটা মুছে দেয়। ‘

– এখনো ক্ষুধা আছে?”

” অধরা মাথা নাড়িয়ে জবাব দিল, ক্ষুধা নেই।”

– জবাব দিতে দেরী হলেও অধরার গালে চড় মারতে দেরী হয় না। চড়টা দিয়েই রাজ যেন অন্যরূপে ফিরে গেল।

– এই তোর আমাকে দিয়ে হয় না? তিয়াস জানপাখি তাই না? তিয়াসকে ছাড়া বাঁচবি না। শোন আজকের পর থেকে তোকে তিয়াস কেন কেউ বিয়ে করতে চাইবে না। এতোদিন যে কাজটা করিনি সেটা আজ করবো। আর আজ না তোকে খুব সুন্দর লাগছে। কথাটা বলে একটানে অধরার শাড়িটা সম্পূর্ণ খুলে দেয়।

” অধরা এবার রাজের দু’পা ঝাপটে ধরে বলে,’ প্লিজ আমার সতিত্বটা হরণ করবেন না। আমি আপনার কাছে আমার সতিত্ব ভিক্ষা চাই।

” ওহ্ এখন তো তিয়াস আছে সে দিবে তাই না? তিয়াসের সাথে এসব করবি আমার সাথে করবি কেন?
” চুপ তিয়াসকে নিয়ে আর একটা বাজে কথা বলবেন না। কথাটা বলেই রাজের গালে চড় বসিয়ে দিয়ে অধরা কাঁদতে লাগে। চড়টা অধরার কাছে মনে হচ্ছে, রাজের গালে নয় তার কলিজায় লেগেছে।”

এবার রাজ অধরাকে নিয়ে বিছানায় চলে গেল। অধরা প্রথমত বাঁধা দিলেও, চোখের জলে নীরব আত্মসমপর্ণ করলো। রাজ অধরার ঠোঁটে নিজের ঠোঁট জোড়া ডুবিয়ে দেয়। অধরার সারা শরীরে চুমু এঁকে দিতে থাকে । অধরা শুধু চোখ বন্ধ করে নীরব অশ্রু ঝরায়।
এক পর্যায়ে রাজ যখন অধরার চন্দ্রাকার নাভিতে চুমু দিতে দিতে বললো,’ তোমার এখানে তিলটা খুব সুন্দর লাগছে! মনে হচ্ছে এটা তোমার সৌন্দর্যে জোছনা বিলাস করছে। অধরা কিছু বলে না। অধরার সারা শরীরে বিদ্যুৎ বয়ে যাচ্ছে। রাজকে আর বাঁধা দেওয়া ক্ষমতা তার নেই। এদিকে অধরার সাথে অনিচ্ছা সত্ত্বেও ভালোবাসার জগতে হারিয়ে যায়।

এক পর্যায়ে রাজ অধরার পাশে শুয়ে পড়ে। অধরা বুঝতে পারলো সে তার নারীত্বের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদটা হারিয়ে ফেলছে।

চলবে””””