#আপনিময়_তুমি?[ A unbearable Crazy love]
#Season: 02
#Written_By_Åriyâñà_Jâbiñ_Mêhèr[Mêhèr]
#Part: 17…
পরের দিন ভার্সিটি গিয়ে ক্লাসে না গিয়ে বোটানিক্যাল এরিয়ায় যায় আনহা। কালকে ইহানকে ওরকমভাবে হার্ট করার পর কেন জানি ওর সামনে যাওয়ার সাহস পাচ্ছে না। কী করবে তাও বোধগম্য হচ্ছে না। কী করে পারল ও এতবড় সত্যিটাকে মিথ্যে প্রমাণ করতে। সত্যি কি ইহানের দেওয়া লকেটটা ওর কাছে শুধু ভালো লাগার বস্তু ছিল। তার সাথে ইমোশনাল কোনো কানেকশন ছিল না। কিন্তু তাই যদি হবে তাহলে জীবনের পাওয়া অনেকের গিফট তো আনহা বেখেয়ালে নষ্ট করে ফেলেছে। ইহানের দেওয়া লকেটটা তো তা নও। ছোটবেলা থেকে অতি যত্নে তুলে রেখেছে। আচ্ছা তবে কি ইহান নয় ও নিজে ইহানের প্রতি দুর্বল? ইহানের সাথে জড়িয়ে যাওয়ার ভয় পাচ্ছে। ভাবতেই স্তব্ধ হয়ে গার্ডেনের পাতা বেঞ্চে বসে পড়ে আনহা। শরীরে ভিতরে কিছু একটা শিউরে উঠছে। কেন এমনটা হচ্ছে? ও ইহানকে কিভাবে… নাহ! এটা ভাবে অন্যায়। নিজের ভালোর জন্য ও ইহানকে নিয়ে ভাবতে পারে।
বেঞ্চের দু’পাশে হাত দিয়ে ঠোঁট কামরে নিজেকে শান্ত করে চলেছে আনহা। হঠাৎই ওর হাতের ফাঁকে কোলের মাঝে কারও মাথা অনুভব করে। তৎক্ষণাৎ চোখ খুলে বিস্ফোরিত চোখে তাকায় আনহা। মুহূর্তে চোখ কপালে ওঠে। ইহান ওর কোলে মাথা দিয়েছে। ওর চোখে চোখ পড়তেই ইহান ভ্রু নাচিয়ে বলে, ‘আপনার হয়তো পিচ্চির দেওয়া জিনিসে মায়া না থাকতে পারে। কিন্তু আমার কেয়ার রয়েছে নিজের ‘আপনির’ জন্য। আপনি কী ভেবেছেন, আপনি বলবেন আর ইহান চুপচাপ চলে যাবে? কখনোই না আনহা।’
‘অয়নন…’
তৎক্ষনাৎ ইহান ওর কোল থেকে মাথা তুলে আনহার পাশে বসে। আনহার ঠোঁটে আঙুল দিয়ে চুপ করিয়ে বলে, ‘কাল রাতে রাগ করে বাসায় যাওয়ার পর বাবা আমাকে আপনার কথা বলেছে। বলেছে আপনি আমার বাসায় গিয়েছেন।’
এ-কথায় চুপসে গেল আনহা। আমতা আমতা কণ্ঠে বলল, ‘তাতে কী হয়েছে?’
স্মিথ হাসল ইহান। বলল, ‘আপনি জেনে গিয়েছেন আমিই ইহান। আর তাই তো কাল লকেটটা ফিরিয়ে দিয়েছেন।’
আনহা চুপ।
ওর নীরবতায় সম্মতির আভাস পেল ইহান। বেঞ্চ থেকে উঠে আলসেমি ঝেড়ে বলল, ‘তাই তো বলি যে মেয়ে লকেটের জন্য বাইকে ওঠে, রোমান্টিক সিনেমা দেখতে রাজি হয়। হঠাৎ করেই সেই লকেটের প্রতি এত অনিহা কেন?’
‘তু…ই যা ভাবছিস সে..র..কম কিছ..ছু না।’
‘তা তো আপনার তোতলামি দেখেই বুঝতে পারছি।’
এ-কথায় আনহা চুপ। প্রত্যুত্তরে কিছু বলতে পারল না। ইহান ব্যাঙের মতো লাফ দিয়ে আনহার কাছে বসে। আনহার কাঁধে হাত দিয়ে ভাবুক ভঙ্গিতে বলল, ‘আমি না ভাবতে পারছিলাম না। আপনি আমার সাথে এরকম একটা গেইম খেলবেন। মানে কালকের অভিনয়ে আমি তো জাস্ট হা… সত্যি ভেবে নিয়েছিলাম জানেন। ভাগ্যিস তো বাবা বলল। নাহলে তো…’
‘নাহলে কী? কথা বলতি না আমার সাথে। দূরে চলে যেতিস? ঘৃণা করতি। না করেছে কে? আমি তো শান্তি পেতাম।’ রাগে গজগজ করে কথাগুলো বলে চলে যেতে চাইল আনহা।
তৎক্ষনাৎ ইহান ওর হাত ধরল। গম্ভীর গলায় বলল, ‘এতদিনে এই চিনলেন ইহানকে। সে তো আপনার ভাগ্য ভালো যে বাবা আমাকে সবটা সত্যি বলেছে।’ বলেই টান দিল আনহাকে। ওকে বেঞ্চে বসিয়ে ইহান ওর সামনে হাঁটু গেড়ে মাটিতে বসে বলে, ‘ইহান তার আপনিকে কোনোদিনও ছাড়বে না আনহা। কাল যদি বাবার কাছ থেকে সত্যিটা জানতে না পারতাম তাহলেও আপনাকে আমি ছাড়তাম না। ইহানের পক্ষে তার আপনিকে ছাড়া সম্ভব নয়। কিন্তু হ্যাঁ…’ মুচকি হাসল ইহান। আনহার দিকে কিছুটা এগিয়ে গেল। আনহা ওর ভাব-সাব বুঝতে না পেরে কিছুটা পিছিয়ে গেল। ইহান রাক্ষসের মতো হু… হা… হা… শব্দে বাজঘাই হেসে কণ্ঠটা ভিন্ন রকম করে বলল, ‘যদি সত্যিটা না জানতাম তবে আপনার কপালে দুঃখ ছিল। বাসায় যাওয়া অবধি শুধু এটাই ভেবেছিলাম, আপনাকে আগুনে পুড়িয়ে ঝলসাব। নাকি শীতের মধ্যে পচা ডোবায় চুবিয়ে রাখব। নাকি ডাস্টবিনে আটকে এডিস মশার কামর খাইয়ে ডেঙ্গু জ্বর বাধিয়ে হাসপাতালে ফেলে রাখব। আপনার তো এখানে কেউ নেই। তাই গার্ডিয়ান হিসেবে আমি আপনার দেখা-শোনা করব। আপনার খাওয়া-দাওয়া-গো… না থাক সেটার জন্য নাহয় অন্তি শাকচুন্নিকে বলব। কী বলছিলাম হ্যাঁ, আপনার সব কাজে আমি নিজের হাতে করব। তারপর বুঝবেন আমি আপনার কে?’
সন্দিহান হয়ে ইহানের দিকে তাকায় আনহা।
ইহান কিছুটা গলা খাঁকরে ওর থেকে সরে দাঁড়ায়। অপরাধী কণ্ঠে বলে, ‘বিশ্বাস করুন আমি এসবই কিছু করতে চেয়েছিলাম। আর করতামও। কিন্তু আপনার ভাগ্য ভালো। তাই… তাই বেঁচে গেছেন।’
‘তুই আমার কে হস শুধু সেটা জানানোর জন্য এতকিছু!’
মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানায় ইহান। অজান্তেই হাসল আনহা। ইহান বলল, ‘যদি পারতাম আরও মারাত্মক কিছু করতাম।’
‘কী করতি?’
‘বিয়ে করে বউ বানিয়ে রাখতাম আপনাকে।’
সচকিত হয়ে তাকায় ইহানের দিকে। ইহান দ্রুত কথার মোড় ঘোরাতে বলে, ‘এই এই উল্টো-পাল্টা ভাব্বেন না। আপনার তো আবার সমস্যা আছে। আপনাকে বউ বানাব না। সারাজীবন থাপ্পড় খাওয়ার ইচ্ছে নেই আমার।’
‘থাপ্পড় কেন দেব?’
‘বাহ রে! ভার্সিটির রুলস তো সিনিয়র মেয়েদের প্রপোজ করলে থাপ্পড় খেতেই হবে।’
হাসল আনহা। বলল, ‘আচ্ছা ঠিক আছে।’
ইহান ওর হাসি গভীর ভাবে পর্যবেক্ষণ করে দুষ্ট হেসে বলে, ‘কোনটা ঠিক আছে? এই টপিক বন্ধ করার নাকি বউ হলে মারবেন না তার।’
ইহানের এ-কথায় মুহূর্তে হাসি মিলিয়ে যায় আনহার। কিন্তু ওকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই ইহান বলে, ‘লকেটটা কী নেবেন নাকি আমি নিজের কাছে রাখব?’
‘তোর ইচ্ছে। দিলে দিবি না দিলে নাই।’
বলেই চলে যেতে নেয়। বাধ সাধে ইহান। লকেটটা বের করে আনহার গলায় পরিয়ে দেয়। বলে, ‘আপনাকে এই লকেটায় দারুণ লাগছে। কিন্তু রাইসাকে একদম ভালো লাগবে না। বেসে রাইসাকে আপনার কেমন লাগে?’
রাইসার কথায় আনহার মুখটা কালো হয়ে আসে। না চাওয়ার মতো উত্তর দিয়ে বলে, ‘ভালোই।’
‘শুধু ভালো!’ অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে ইহান।
‘নাহলে কী বলব? যদি বলিস হ্যাঁ, রাইসা দেখতে সুন্দরী, ভালো ফ্যামিলির মেয়ে, পড়ালেখা সবদিকেই ভালো।’
‘তা ঠিক। কিন্তু আপনার কথায় কেমন জানি লাগছে। আপনি কি কোনো কারণে ওর উপর নাখোশ?’
এবার রাগল আনহা। বলল, ‘কী শুনতে চাইছিস বলত? কীভাবে প্রশংসা করব? উফফ! রাইসা কী সেক্সি, হট ব্লা ব্লা ব্লা এইসব? ঐ আমারে কী তোর থ্রাডক্লাস ইডিয়েট মনে হয় অসভ্য ছেলে।’ রাগে ফেটে পড়ল আনহা।
ইহান ওর বিনা মেঘে বজ্র পাত দেখে একহাতে মুখ ঢাকল। তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের মতো গলায় বলল, ‘হেঁ আনহা আপনার মুখে এগুলো কী ভাষা? ও মাই গড আমি তো পুরাই… ও মা গো…হিহিহি।’
ইহানের এ-কথায় আর নিজের এই ভাষায় আনহা থ। এগুলো ও কেন বলল? ও কী রাইসার প্রতি জেলাস। কিন্তু ইহানের সামনে এসব কী ল্যাংগুয়েজ।
‘আনহা বেবী আমার কী মনে হচ্ছে জানো? তুমি আমার সাথে থাকতে থাকতে আমার মতো হয়ে যাচ্ছ। পুরাই দুষ্ট।’
আনহা ইহানের এমন মেয়ে সুলভ আচরণে নাক ছিটাকায়। ইহান ওর গাল টেনে বলে, ‘এই জন্য বাচ্চাদের সামনে কিছু বলি না। বাচ্চারা নকল করতে চায়। আচ্ছা আনহা আপনার মুখে কী এগুলো মানায় বলুন। আপনি তো কেবল…’
‘চুপ একদম উল্টা-পাল্টা কমেন্ট করবি না।’
এ-কথায় শয়তানি ভঙ্গিতে হাসল ইহান। বলল, ‘ফেইসবুক আইডি আছে? আমার কিন্তু আছে রোমান্টিক দুষ্ট নামে। আপনার আইডিটা দেন। কী কমেন্ট করব দেখে নিয়েন।’
‘লাগবে না ভাই তুই যা।’
‘আনহা…’ চিৎকার করল ইহান। আনহা প্রশ্নসূচক দৃষ্টিতে তাকাতেই ইহান বলল, ‘দেখুন গাধা, ছাগল যা ইচ্ছে বলেন মাইন্ড করব না। কিন্তু দয়া করে ভাই বলে লজ্জা দিবেন না।’
‘ভাই বললে লজ্জা কেন পাবি?’
‘আসলে আমার বইন নাই তো। তাই বোনের নজরে কেমনে দেখা লাগে জানিনা।’
‘মানে?’
‘মানে, আগে ছেলেরা মেয়েদের টিজ করলে বলতে শুনতাম—তোদের ঘরে কী বইন নেই নাকি? তখন বুঝলাম যাদের ঘরে বোন আছে তারা কাউকে টিজ করতে পারবে না। কিন্তু আমি পারব।’
‘কেন?’ ভ্রু কুটি কুঁচকে জানতে চাইল আনহা।
ইহান বলল, ‘কারণ আমার ঘরে মা থাকলেও বইন কিন্তু নেই।’
এ-কথায় আনহা দাঁত কিড়মিড়িয়ে বলল, ‘লাফাঙ্গা একটা। আর আমারেও এইটার পাল্লায় পড়তে হইল।’
ইহান নিজের মতো বলতে থাকল। আনহা গুটিগুটি পায়ে সেখান থেকে সরে আসলো। আসলেই রাগ উঠেছিল ইহানের মুখে রাইসার কথা শুনে। কিছুটা হিংসায় বোধহয় লেগেছে।
আনহা ওখান থেকে বের হতেই ওর সামনে একটা ছেলে এসে দাঁড়ায়। পিলে চমকে ওঠে আনহার। তার দিকে তাকাতেই সে বলল, ‘হায় আমি উৎস। তোমার ব্যাচেই পড়ি। তুমি তো অন্তির ফ্রেন্ড তাই না।’
‘জি…’
‘হ্যাঁ, আমি জানি। আমি তোমার কথা ওর কাছে জানতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ও তোমার সাথে সরাসরি কথা বলতে বলল। তুমি নাকি নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হতে অনেক পছন্দ করো।
এ-কথায় আনহা মনে মনে একশো একটা গালি দিল অন্তিকে। মেয়েটার স্বভাব এখনো বদলায়নি। ওকে নিয়ে মিথ্যে বলা এখনো ছাড়েনি।
‘কিছু ভাবছ আনহা।’ জিজ্ঞেস করল উৎস।
‘হ্যাঁ, কিছু বললেন।’
‘বলছি তুমি কিছু ভাবছ?’
‘কই না তো?’ বলল আনহা।
‘কী আপনি আপনি করছ? আমরা সেইম ব্যাচ তুমি করে বলো। তোমার মুখে আপনি শুনে নিজেকে কেমন জানি বড় বড় লাগে। এনিওয়ে আমরা কি ফ্রেন্ড হতে পারি?’
‘যাক বাবা, ঢাল নেই তরোয়াল নেই নিধিরাম সর্দার। সোজা একেবারে ফ্রেন্ডশিপ।’ মনে মনে বলল আনহা।
উৎস ওর দিকে হাত বাড়িয়ে বলল, ‘ফ্রেন্ডশিপের জন্য বলছি। এত ইতস্তত কেন করছ?’
আনহা জোর পূর্বক হেসে হাত বাড়াতে চায়। কিন্তু হ্যান্ডশেক করার পূর্ব মুহূর্তে ইহান উৎসের হাত ধরে ক্যাবলা হেসে বলে, ‘ভাই ভালো আছেন? অনেকদিন দেখা সাক্ষাৎ নাই। কই থাকেন খবরও পাই না। আসেন কোলাকুলি করি।’
বলেই অযাচিত ভাবে জোর পূর্বক উৎসকে জড়িয়ে ধরল ইহান। উৎসের যেন হাড্ডি-গুড্ডি গুড়ি গুড়ি হয়ে যাবে। অনেক কষ্টে ইহানকে ছাড়িয়ে হাঁপাতে লাগল। বেচারার অবস্থা দেখে আনহারই খারাপ লাগল। উৎস রেগে বলে, ‘এভাবে কেউ ধরে।’
‘কী ভাই আমার মতো নরম একটা বাচ্চার জড়িয়ে ধরা সহ্য হলো না আপনার। তাহলে ভাবুন আনহা ভাবি কি করে আপনার শক্ত হাতে হ্যান্ডশেক করত? ব্যথা পেত না।’
ইহানের মুখে ভাবি শুনে উৎস বিস্ফোরিত চোখে আনহার দিকে তাকায়। আনহা নিজেও অবাক ও ইহানের কোন জন্মের ভাবি। উৎস কিছুটা হতাশ হয়ে বলল, ‘তুমি ম্যারেড আনহা।’
দ্বিধান্বিত হলো আনহা। জবাব দিতে পারল না। ইহান ৩২ দাঁত বের করে বলল, ‘না কিন্তু হবে আমার ভাইয়ের সাথে। ওদের বিয়ে ঠিক হয়ে আছে। তাই তো ভাবিকে পাহারা দিতে আমাকে রেখেছে। বর্তমানের মেয়েদের কথা তো বলা যায় না।’ ভ্রু কুঁচকে তাকায় আনহার দিকে। বলে, ‘কখন যে কী করে বসে। তাই তো পাহাড়া দিচ্ছি। আপনি জানেন না?’
‘না…’
অবাক হওয়ার ভান করল ইহান বলল, ‘হাস জানে, মুরগী জানে খালি আপনি জানেন না। সো সেড। এখন তো জানলেন। ভাবি চলেন।’ আনহার হাতটা ধরে সোজা পথে হাঁটা ধরে ইহান। উৎস কী বলবে খুঁজে না পেয়ে দীর্ঘ শ্বাস ফেলে। ইহান কিছুদূর গিয়ে ওকে ছেড়ে দাঁত কিড়মিড়িয়ে বলে, ‘ছোটবেলায় শিক্ষা হয়নি। এখন আবার প্রেম করার শখ জাগছে। এবার কিন্তু…’
‘আমি কিছু করিনি।’ ভয় পেয়ে বলল আনহা৷ কিন্তু কেন তা জানে না।
‘সেটা আমি জানি।’ বলেই মাঠের দিকে হাঁটা দেয়। বেশ অস্বস্তি লাগছে ওর। ইহান ওর হাত ধরে আছে। কেমন জানি লাগছে।
আনহা মাঠের মাধ্যে দাঁড়িয়ে আছে। ইহান ওকে দাঁড়াতে বলে কোথায় জানি গেছে। তখনি অন্তি ওকে দেখে এগিয়ে আসে। বিরক্তি ভরা কণ্ঠে রাগে গজগজ করতে করতে বলে, ‘বর্তমানে পোলাপাইন গুলা এত পাকনা। মেজাজটাই গরম কইরা দিল।’
আনহা বুঝল অন্তি তেতে আছে। ও কারণ জানতে জিজ্ঞেস করল কী হয়েছে?’
অন্তি হাত-পা ছোড়ার মতো অবস্থায় বলল, ‘আর বলিস না। দুর্গাপূজার জন্য পোলাপাইনগুলা বক্সে গান বাজাচ্ছিল।’
‘এতে রাগ করার কী আছে? এটা তো সবসময়ই হই।’
‘আরে রাখ তোর সবসময়। কী গান বাজাচ্ছিল জানিস?’
‘না বললে জানব কেমনে?’
‘ধুরঃ সালি।’
‘আরে বলত তো আগে।’
‘গান বাজাচ্ছিল।
তুমি বাসর ঘরে আর আমারে দিওনা জ্বালা। আচ্ছা এইসব কী শোনার মতো গান?’
‘যে যে গান শুনে শান্তি পায়। তোর সমস্যা কী?’
‘আমার গান নিয়ে সমস্যা নাই। তুই জানোস আজ কাল থেকে এই গানটা এক নাগাড়ে বাজছে। কয়েক হাজার বার শুনছি জানিনা। মুখস্ত হয়ে গেছে। সেটাও সমস্যা না। ‘
‘তাহলে সমস্যা কী?’
আজকে ভার্সিটিতে আসার সময় মন্দিরের কাছে যেতেই কয়েকটা ১১/১২ বছরের ছেলে নাচানাচি করছিল। আমি ওখান থেকে যাচ্ছিলাম তখন আমাকে ডাক দেয়। আমি তো ভাবলাম কোনো দরকার। কিনা সালায় কী বলছে জানোস?’
‘কী?’ হাসি চেপে জানত চাইল আনহা।
অন্তি বলল, ‘আপু গানটা কেমন?’
কথাটা শুনে হাসিতে গড়াগড়ি খায় আনহা। অন্তি রেগে বলে, ‘তুই বল এইটুকু বাচ্চার মুখে এই কথা শুনে কার মাথা না গরম হয়।’
অন্তির এ-কথার মাঝেই জিহাম আর ইহান এসে হাজির হয়ে। জিহাম ফোড়ন কেটে। সবাই কী তোর মতো গাধিরে অন্তি…’
‘তুই… ‘ তেড়ে যায় অন্তি।
ইহান ওর সামনে দাঁড়িয়ে বলে, ‘বাসর ঘরে বউরে না জ্বালাই সালিরে জ্বালানো দরকার নাকি? অন্তি আফা কী কন?’ আনহা দেখে নেয় ইহান। আনহা জিহামের সাথে হাসছে। তখনি ইহান অন্তিকে বলে, ‘আপনার কিন্তু চান্স আছে সালি হওয়ার।’
‘কোনো দরকার নাই।’ বলেই পিছু ফিরে হাঁটা দেয় অন্তি।
.
.
.
.
.
.
.
.
.
[ বাকিটা পরের পর্ব গুলোতে জানবেন ]
সবাই কথাগুলো ফান হিসেবে নেবেন। জাস্ট ফর ফান।