#গল্পঃ_ইচ্ছেটা_তোমারই
#লেখাঃ_মেহেদী_হাসান_রিয়াদ
#পর্বঃ__৪
,
?
— হোয়াট! এসব কি বলছো তুমি রাফিন? নুড পিক মানে? তোমার মাথা ঠিক আছেতো? তুমিতো এমন ছিলেনা রাফিন তাহলে?
— আরে আরে সব বিষয় এতো সিরিয়াস ভাবে নাও কেনো? আমিতো একটু ফান করেছিলাম।
— ফানের ক্ষেত্রেও একটা লিমিট থাকা দরকার রাফিন।
— আরে আরে বেবি রেগে যাচ্ছো কেনো? সরি সরি সরি। আর কক্ষনো এমন মজা করবোনা। এবার খুশি?
— হুম, তুমি এমনিতেও আগের থেকে অনেক ফাজিল হয়ে গেছো রাফিন।
— আরে বাবা বললামতো সরি। এক সরি, দুই সরি, তিন সরি। এবার হলো নাকি তোমাকে ওখানে এসে সরি বলতে হবে?
— না থাক আর বলতে হবেনা। আমি এখন ঘুমাবো, রাখছি।
— আরে আরে হ্যালো হ্যালো,
ফোনটা কেটে দিয়ে অফ করে সুয়ে পরে আখি। আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখে সে গভির ঘুমে।
,
,
সকালে ঘুমু ঘুমু চোখে বিছানা থেকে নেমে ওয়াস রুমের দিকে হাটা ধরলো আখি। ফ্রেস হয়ে বেরিয়ে আকাশকে খুজতে থাকে সে। হয়তো কিচেনে আছে। কিচেনর সামনে গিয়ে দেখে আকাশ সকালের নাস্তা তৈরি করছে। আখি দেখেই একটা মুচকি হাসি দিলো সে।
দরজায় হেলান দিয়ে বলে উঠে আখি,
— বাহ্, আপনার কপালে যেই থাকুকনা কেনো সে কিন্তু এক দিক দিয়ে বেশ হ্যাপি থাকবে।
— কি করে বুঝলে?
— বরের হাতের রান্না খাওয়া কয়জনের ভাগ্যেইবা জুটে?
— স্বামীর হাতের রান্না খাওয়াটাককে ভাগ্য বলেনা, নিজ হাতে সংসারটা ঘুচিয়ে সবকিছু নিজে সামলিয়ে রাখাই ভাগ্যবতি মেয়ের প্রধান বৈশিষ্ট।
— তা বুঝলাম কিন্তু….
— পরিস্থিতি সামলাতে সব কিছুই করতে হয়। তোমার মতো ঢেড়স হলে কি আর চলবে?
— আচ্ছা ছেলেদের সম্পর্কে আপনার ধারনাটা কেমন?
— মোটামুটি।
— রাফিনের সম্পর্কে আপনার ধারনাটা কেমন?
— সেটা আমি তোমাকে কালই বলেছি।
— কিন্তু……
— আর সেটা আমার থেকে তুমিই ভালো জানবে। নাস্তা সব রেডি। আমি যাচ্ছি তুমি এগুলো টেবিলে নিয়ে এসো বাবা যেনো বুঝে সব তুমিই করেছো।
সকালের নাস্তা শেষে ছাদে যায় আখি। বেশ সুন্দর ছাদটা। সূর্যের মিঠিমিঠি মিষ্টি রোধ চোখে এসে পরতেই তা হাত দিয়ে আড়াল করার চেষ্টা করছে আখি। বেশ সুন্দর প্রকৃতির সাজটা। সূর্যের হলুদ মিষ্টি রোদটা যেখানেই পরছে সেখানেই এক অদ্ভুদ সুন্দর্য প্রকাশ পাচ্ছে। সাজিয়ে তুলছে প্রকৃতিকে। কিন্তু এই প্রকৃতির সুন্দর্যটা যদি ছোয়া যেতো তা হয়তো আখি আকড়ে ধরে মিশিয়ে নিতো নিজের সাথে। যেনো সে নিজেও প্রকৃতির মতো সুন্দর্যে ভরে উঠবে।
বেশ ভালোই লাগছে তার এই সুন্দর মনোরম পরিবেশটা।
লেখাঃ মেহেদী হাসান রিয়াদ
সকালে অফিসে চলে গেলো আকাশ। আসিফ চৌধুরি সোফায় বসে দৈনিক পত্রিকায় চোখ বুলাচ্ছে। এক হাতে চশমাটা ঠিক করে পত্রিকাটা উচু করে ধরতেই আখি এসে বলে উঠে বাবা এই নাও চা।
একটা হাসি দিয়ে আসিফ সাহেব বলে উঠে ধন্যবাদ মা।
— বাবা কি করছেন।
— এই যে পত্রিকা পরছি। তুমি কি এখন খুব ব্যস্ত?
— না বাবা,
— তাহলে পত্রিকাটা একটু পড়তো মা, চোখে আগের মতো আর পরিস্কার দেখতে পাইনা। একটা সময় ছিলো যখন চশমা ছারাই পরিস্কার দেখতাম।
সন্ধায় আসিফ সাহেব ও আখি দুজন মিলে জমিয়েছে এক দাবা খেলার আসর। আসিফ সাহেব দাবার একজন ভালো খেলোয়ার। আখিও কিন্তু কমনা। বেশ জমে উঠেছে খেলাটা।
আকাশ ভেতরে প্রবেশ করেই দেখে দুজন খুব মনোজোগ দিয়ে দাবা খেলায় মগ্ন।
আকাশ আসিফ সাহেবের দিকে তাকিয়ে বলে,
— বাবা,
— ডিস্টাব করো না এখানে যাও গিয়ে নিজের কাজে মন দাও।
আকাশ সোজা রুমে চলে গেলো, বাবাকে ডাকলেও এখন আর কোনো লাভ হবেনা। কারণ, একটা মেয়ে পেয়ে গেছে তাই এখন আমি নিজেই তুচ্ছ।
_____________________________________
রাতে রাফিনের ফোন আসায় খুশিতে গদ গদ করে উটে আখি।
— হ্যা রাফিন বলো, আশা করি কালকের মতো ফাজলামুটা করবেনা।
— আরে না, শুন একটা কথা আছে।
— কি?
— কালকে আমাদের তোমাকে ফিরে পাওয়ার খুশিতে একটা পার্টি দিচ্ছি।
— কি বলো কখন?
— কালকে সন্ধায়। তুমি তার আগেই রেডি হয়ে চলে এসো।
— হুম, কাল সন্ধার আগেই দেখবে আমি তোমার কাছে এসে হাজির।
ফোনটা কেটে দিয়ে খুশিতে নেচে উঠে আখি। পার্টি আবার তাকে উদ্দেশ্য করে। বাড়িতে থাকলেতো মা যেতেই দিতোনা। কিন্তু এখানে কোনো বাধা নেই।
— কে ফোন করেছিলো?
— রাফিন, কাল নাকি পার্টি দিচ্ছে। সন্ধার আগেই যেতে বলছে আমায়।
— আমি কি যাবো তোমার সাথে। হ্যা যেতে পারো কোনো সমস্যা নেই।
আকাশ একটু বির বির করে বলে উঠে, সমস্যা থাকলেও যে আমায় যেতে হবে।
____________________________________
পরদিন বিকেলে গাড়ি নিয়ে রওনা দিলো দুজন। সন্ধের আগেই দুজন গিয়ে পৌছে যায় সেখানে।
কিছুক্ষন পর পার্টি শুরু হয়ে গেছে। রাফিন সকলের সামনে পরিচয় করিয়ে দিলো আখিকে। আকাশ সকলের ভিরের মাঝেই মিশে গেছে।
পার্টিতে আখি ও রাফিন একে অপরের ঘেষাঘেসি দেখে সেখান থেকে বাইরে চলে গেলো আকাশ। একটা অক্ট হাসিতে মেতে উঠে দুজন।
বেশ কিছুক্ষন বাইরে থেকে আবার ভেতরে চলে গেলো আকাশ। দেখে রাফিন আখিকে কি বিষয় নিয়ে যেনো জোর করছে। একটু সামনে গিয়ে দেখে রাফিন আখিকে ড্রিংস করানোর চেস্টা করছে আর আখি তা এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে।
আকাশ দ্রুত পায়ে সেখানে হেটে গিয়ে আখির হাতটা ধরে রাফিনের দিকে চেয়ে বলে উঠলো,
— কাওকে জোর পুর্বক কিছু খাওয়ানো ঠিক না।
আখির হাতটা ধরে টেনে সেখান থেকে বের করে নিয়ে যায় আকাশ। আখি হা করে চেয়ে আছে আকাশের দিকে। রাফিনের একহুঙ্কারে স্তব্দ হয়ে যায় সবাই।
গাড়ি ড্রাইবিং করেছে আকাশ। পাসেই আখি বসে লুচির মতো করে ফুলছে।
— এটা কি হলো?
— কোনটা?
— এভাবে সকলের সামনে দিয়ে টেনে নিয়ে আশার মানেটা কি?
— এনেছি কারন আছে?
— কি কারন? আর সেখানে আপনার সমস্যাটা কি? আমার যা ইচ্ছে তাই করবো। আপনার কি প্রবলেম?
— দেখো আখি তুমি একজনের স্ত্রী হয়ে অপর একটা ছেলের সাথে যা খুশি তা করতে পারোনা। যদি এসব করা খুব বেশি প্রয়োজন হয় তাহলে, আমার থেকে যখন আলাদা হয়ে যাবে তখন করো ওকে।
— আপনি কিন্তু লিমিট ক্রস করে ফেলছেন। রাফিন মোটেও এমন ছেলেনা। কোনো আজে বাজে কথা বলবেন না তাকে নিয়ে। আমার মাথায় কিন্তু রক্ত উঠে যাচ্ছে।
আর কিছু না বলেই ড্রাইবিং করে যাচ্ছে আকাশ। কারন কথা বললে কথা বারবে এটাই সাভাবিক।
লেখাঃ মেহেদী হাসার রিয়াদ
কয়েক দিন পর,
— দেখো আখি আমি আবার পার্টির আয়োজন করার উদ্দেশ্য এটাই, আগের পার্টিতে এমন হওয়ার কারনে। আমি চাইনা এবারও তুমি আকাশকে নিয়ে এসে আমাদের সুন্দর মুহুর্তটা নষ্ট করো।
— আরে রাফিন তুমি একধম চিন্তা করোনা। এমন ভাবে বলেছি ওর আর লজ্জা থাকলে আমার সাথে কোথাও যাবেনা।
— হুম বেবি আমিতো ওটাই চাই।
— কি বলছো বির বির করে?
— বলছিলাম, কালকের পার্টিটা একটু স্পেসাল হতে চলছে। তুমি আকাশকে না বলেই চলে এসো। খুব সুন্দর একটা সময় উপহার দিবো তোমাকে।
To be continue………