#এক_সমুদ্র_ফুল
#পর্ব_18
Writer:: Shaanj Nahar Sanjida
।
।
কি করছো?(আমি সমুদ্রের কোলে ছুটাছুটি করতে করতে)
দেখ ফুল।বেশি নড়াচড়া করিস না!দুজনই কিন্তু পড়ে যাবো।(সমুদ্র)
ওর কথা শুনে আমি নড়াচড়া বন্ধ করে দিলাম।পড়ে নিজের কোমর ভাঙার আমার কোনো শখ নেই।
সমুদ্র আমাকে বেডে নিয়ে শুইয়ে দিয়ে বললো
ফুল।আজকে আমাকে প্লিজ বাধা দিস না।তোকে ভালোবেসে আপন করে নিতে চাই।
বলেই আমার ঠোটে ঠোঁট মিলিয়ে দিলো।
কেনো জানি হাজার রাগ থাকা সত্বেও আমি সমুদ্রকে বাধা দিতে পারলাম না।কেনো জানি ওর ভালোবাসার সমুদ্রে ডুবে যেতে ইচ্ছে করলো।মনের রাগ গুলোকে আলাদা করে রেখে সমুদ্রের ভালোবাসার ঢেউএ ভেসে যেতে ইচ্ছে করলো।তাই তলিয়ে গেলাম সমুদ্রের ভালোবাসার তলে।
।
।
ভোর চারটায়
ফুল ঘুমিয়ে আছে।সমুদ্র ফুলকে বুকের মধ্যে জড়িয়ে ধরে ওর মাথার চুল গুলো সরিয়ে কানের কাছে নিয়ে যাচ্ছে।
ফুলের ঘুমন্ত চেহারা যেনো ওকে আরো দূর্বল করে দিচ্ছে।
ফুল জানিস এখন না আমাদের সেই প্রথম দেখার কথা মনে হচ্ছে।তুই এমন করে অজ্ঞান হয়েই আমার কোলে ঢলে পড়েছিস তারপর থেকে তো তোর স্থান আমি বুকেই।যখন তোকে কোলে করে গ্রামের বাড়ি থেকে আমাদের বাড়ি নিয়ে এসেছিলাম তখনও তোর ওই ঘুমন্ত চেহারাতে অনেক মায়া ছিলো।তবে এখন আরো বেশি মায়াময় মনে হচ্ছে।হয়তো তুই আমার স্ত্রী বলে।
আমি জানি তুই অনেক রাগ করে আছিস।আমি তোর সাথে অনেক খারাপ ব্যবহার করেছি কিন্তু বিশ্বাস কর আমি তোকে খুব ভালোবাসি ফুল।তখন তোর বয়স অল্প ছিলো আমি চাই নি ওই বয়সে তোর উপর বিয়ের দায়িত্ব পড়ুক। কিন্তু নিজের রাগের বশে তোর উপর সব চেয়ে বড় অন্যায়টা আমি করেছি।জানি তুই ক্ষমা করে দিলেও আমার করা কাজ ভুলতে পারবি না।তাই আর ক্ষমা চেয়ে নয় তোকে ভালোবেসে তোর সেই সব স্মৃতি গুলোকে ভালোবাসার স্মৃতির চাদরে ঢেকে দিবো।
তোকে আমি কিছুতেই যেতে দেবো না আমাকে ছেড়ে ফুল।তুই আমার ছিলি আমারই থাকবি।তুই আর আলো যে আমার প্রাণ।আমার পরিবার।তুই যে আমার বন্য ফুল।
বলেই সমুদ্র ঘুমন্ত ফুলের কপালে একটা চুমু দিলো।
।
।
সকালে
আমি ঘুম ঘুম চোখে তাকিয়ে দেখি সমুদ্র আমাকে আস্টেপিস্টে জড়িয়ে ধরে ঘুমাচ্ছে।
কিছুতেই আমি ওর থেকে দূরে যেতে পারি না।কেনো?আমি তো সমুদ্রের উপর দূর্বল হতে চাই না।তবুও কেন ওর উপর দূর্বল হওয়া থেকে নিজেকে আটকাতে পারি না।কেনো ওকে বাধা দিতে পারি না?কেনো সব সময় ওর মায়াতে বাধা পরে যাই।
সমুদ্র কি চাও তুমি?সব সময় কাছে এসে আবার আমায় একা ফেলে দূরে চলে যাও।কিন্তু এইবার যতই তুমি আমার কাছে আসার চেষ্টা করো না কেনো?আমি তোমাকে আমার কাছে আসতে দিবো না।আর আমি ওইসব একাকীত্ব ফেস করতে চাই না।আমার ভয় হয় একাকীত্বকে।
তুমি যতো কিছুই করো না কেনো আমি তোমার করা কিছুই ভুলতে পারবো না।
বলেই সমুদ্র থেকে নিজেকে সরিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলাম।
।
।
ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে দেখি সমুদ্র এখনও ঘুমাচ্ছে।
আমি মুখ ভেংচি দিয়ে সেখান থেকে নিচে চলে আসসালাম।
।
।
নিচে
মিতু ভাবী আর মা সোফায় বসে কোনো বিষয়ে কথা বলছে।
কি হচ্ছে?আজ আপনারা রান্না ঘরের বদলে বসার ঘরে।আপনাদের তো আমি বেশির ভাগই রান্না ঘরে দেখি।(আমি মজা করে)
দূর ফুল মজা করিস না।(আয়শা টেনশন নিয়ে)
কেনো?কি হয়েছে মা?(আমি নেকামি করে)
মা আমাকে রাগী লুক দিলো ওমনি আমি চুপ হয়ে গেলাম।
ফুল।এক সপ্তাহ পর বিয়ে কতো কিছু করা এখনও বাকি।কি করবো?কি করে হবে এই সব?(আয়শা)
মা চিন্তা করো না।শুরু করে দিলে শেষ হতে বেশি সময় লাগবে না।(আমি মায়ের পাশে বসে)
এইটাই আমি এতক্ষণ বুঝানোর চেষ্টা করছি।কিন্তু মা বুঝতেই চাচ্ছে না।তুই একটু বুঝা ফুল।(মিতু)
পরেই আমরা সবাই কথা বলে কাজ গুলোকে ভাগ করে নিলাম।আর কোন সময় কি কাজ করবো সেই কাজ ঠিক করা হলো।
মা,,বাবা কোথায়?(আমি)
উনি সকাল সকাল বেরিয়ে গেছে।সোনালীর বিয়ের কার্ড ছাপানোর জন্য।কাল গভীর রাত পর্যন্ত নিজে তো জেগে ছিলো আমাকেও জাগিয়ে রেখেছে কার্ড পছন্দ করার জন্য।কালকে সব গেস্ট দের একটা ইয়া বড়ো লিস্ট করছে তোর বাবা।মেয়ের বিয়ে নাকি উনি অনেক ধুমধাম করে করবে।বলছি হাতে এখন তত সময় নেই।তবুও বলছে যেটুকু সময় আছে ওইটুকু সময়ে নাকি অনেক কিছু হবে।(আয়শা)
ধুমধাম করে বিয়ে!(আমি মনমরা হয়ে)
উপর থেকে সমুদ্র ফুলের মনমরা হওয়া চেহারা দেখছে।
ঘুম থেকে উঠে সমুদ্র ফুলকে না দেখে তাড়াতাড়ি করে ওয়াশরুম থেকে ফ্রেশ হয়েই নিচে নামার সময় ফুলের মনমরা চেহারা দেখলো।
ফুল।তোরও তো স্বপ্ন ছিলো ধুমধাম করে বিয়ে করার তাই না!(সমুদ্র মনে মনে)
সমুদ্র একটা দীর্ঘ শ্বাস নিয়ে স্বাভাবিক হয়ে নিচে নেমে আসলো
কি হয়েছে?এখানে গোল মিটিং হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।(সমুদ্র সোফায় বসতে বসতে)
হুম।হচ্ছে তো তোর কি?তুই এখানে কি করছিস কতো কাজ আছে জানিস!(আয়শা রেগে)
মা। মাত্রই তো ঘুম থেকে উঠলাম।(সমুদ্র মোচড়া মুচড়ি করতে করতে)
তো কি? কাজে লেগে পর।(আয়শা)
মা।ক্ষুদা লাগছে।কালকে রাতে অনেক খাটুনি হয়েছে।(সমুদ্র আমার দিকে তাকিয়ে)
আমি সমুদ্রকে একটা রাগী লুক দিলাম।
খাটুনি?কিসের খাটুনি?(আয়শা কৌতূহল নিয়ে)
আমি সমুদ্রের কথা শুনে রেগে যাচ্ছি।আর সমুদ্র আমাকে আরো রাগানোর চেষ্টা করছে।
এই সমুদ্রের মুখে কোনো কথাই আটকায় না।ওকে তো আমি আটকাতে পারিই না।ওর কথা তো আরোও আগে আটকানো যায় না।(আমি মনে মনে)
ঐযে তোমার নাত,,,
সমুদ্র পুরো কথা মাকে বলতে যাবে আর আগেই কোথা থেকে যেনো আলো দৌড়ে এসে আমার কোলে উঠে বললো
আম্মু।আমার আম্মু।
বলেই আমার বুকে মাথা গুঁজে দিলো।
বাহ!আজকে খুব তাড়াতাড়ি উঠে পড়েছে আমার মাটা। (আমি আলোকে কোলে নিয়ে)
জানো আম্মু আমি না সারা রাত ঘুমাতে পারি নি।(আলো চোখ কচলাতে কচলাতে)
আমিও।(আমি বিড়বিড় করে)
কি বললে?(আলো)
কিছু না।তুমি কেনো ঘুমাতে পারো নি?(আমি)
ফুপি সারারাত ফুপার সাথে কি যেনো কথা বলছিলো?তার জন্য আমার ঘুম হয় নি।(আলো)
এই আলো।তুই এখানে এসে আমার বদনাম করছিস?আজ কিন্তু আমার ঘরে ঘুমাতে দেবো না তোকে!(সোনালী নিচে নামতে নামতে)
কই আমি বদনাম করলাম ফুপি!আম্মু জিজ্ঞেস করেছে আমি বলছি।(আলো innoccent ফেস করে)
হইছে নেকা মেয়ে।(সোনালী ফুলের গাল টেনে)
আয়শা সোনালী আর আলোর কথা শুনে একটা দীর্ঘ শ্বাস নিয়ে বললো
সমুদ্র তুই না কি বলতেছিলি,, নাত,,,?
মা ছাড়ো না।(আমি)
মা আমি বলতে চাইছি তোমার নাতনি এসে পড়েছে।তাই না ফুল।(সমুদ্র আমাকে চোখ টিপ মেরে)
হুম(আমিও দাত চেপে)
তুইও না।আচ্ছা।সবাই যখন এসে পড়েছে মিতু চলো আমরা রান্না করতে যাই।আর সোনালী তুইও চল।(আয়শা কড়া গলায়)
মা।মাত্র তো ঘুম থেকে উঠেছি।(সোনালী বাচ্চাদের মত বায়না ধরে)
থাপ্পড় মেরে দাত ফেলে দিবো।এক সপ্তাহ পর বিয়ে কিন্তু তুই তো ডিম ভাজতেও জানিস না।(আয়শা)
তুমিই তো শেখাও নি।(সোনালী ঠোঁট ফুলিয়ে)
আমি শেখাই নি।তোর দুইটা গুণধর ভাবী আছে না!তোকে কোনো কাজই তো করতে দেয় নি।
আয়শা আরো কথা বলতে চাইছিলো তার আগেই মিতু ভাবী আটকে বললো
মা।হইছে হইছে কাজ করতে করতে সোনালীকে বকবে।এখন চলো।সোনালী তুমিও চলো।
থ্যাঙ্ক ইউ ভাবী।বাঁচিয়ে দেয়ার জন্য(সোনালী বিড়বিড় করে)
ব্যাপার না।(মিতু মুচকি হাসি দিয়ে)
সত্যিই আমাদের এই পরিবার যেনো কোনো স্বপ্নের রূপ কথার মতো।কেউ দেখে বলবেই না এইটা আমাদের শশুর বাড়ি।যেনো এইটা আমাদেরই বাড়ি।খুনসুটি দিয়ে দিন শুরু হয়,,মজা মাস্তি দিয়ে দিন শেষ হয়।ঠিক সূর্য উদয় আর সূর্য্য অস্তের মতো।জীবনের হাজার উথাল পাথাল সেই সামান্য পারিবারিক মুহূর্তের কাছে হার মেনে যায়।তাই তো লোকে বলে যার বাড়িতে শান্তি নেই তার দুনিয়াতে শান্তি নেই।সত্যিই বাড়ির মত শান্তি দুনিয়াতে কোথাও কেউ পাবে না।আর আমার জন্য এই পরিবার শান্তির থেকে আরো অনেক কিছু।আমার সব।মাঝে মাঝে ভাবি এই বাড়ি ছেড়ে আমি কি করে চলে যাবো,কি করে থাকবো এই বাড়ি ছাড়া,এই মানুষগুলোকে ছাড়া,এতদিন তো আলোর কথা ভেবেছি আলো কি করে থাকবে সবাইকে ছাড়া এখন ভাবি আমি কি করে থাকবো!
যতই এই বাড়ি,,এই পরিবার,,সমুদ্রের থেকে দূরে যেতে চেষ্টা করছি ততই যেনো আমি আটকা পড়ে যাচ্ছি।এই সম্পর্কের মায়াতে।শেষ পর্যন্ত দেখা যাবে আমি যেতেই পারছি না।
আমি কথা গুলো ভেবে সমুদ্রের দিকে তাকিয়ে দেখি ও আলোর সাথে খেলছে। আলোও মনের সুখে সমুদ্রের কোলে বসে হাসছে আর খেলছে।হাজার কোটি টাকার বিনিময়েও আমি ওর জন্য এই হাসি কিনতে পারবো না।তবে কি আমি এই পরিবার ছেড়ে যাওয়ার ইচ্ছে ছেড়ে দিবো?
এইসব ভাবতেই ডাক পড়লো আমার,,,
ফুল এদিকে আয় তো!(আয়শা রান্নাঘর থেকে)
আসছি মা।(আমি সোফা থেকে উঠে)
।
।
রান্নাঘরে
কি হয়েছে মা?কিছু লাগবে?(আমি)
গিয়ে থালাবাসন গুলো ধুয়ে দে!(আয়শা)
না।ভুলেও না আমি থালা বাসন জীবনেও ধুবো না।(আমি নাক শিশকিয়ে)
কেন ধুবি না?(আয়শা ভ্রু কুঁচকে)
আমার থালা বাসন ধুতে ভালো লাগে না।(আমি ঠোঁট ফুলিয়ে)
দেখ মিতু রান্নার দায়িত্ব নিছে।সোনালী সবজি কাটার দায়িত্ব।আর আমি আজ সোনালীকে সবজি কাটা শিখাবো।তুই কি চাস আমি থালাবাসন ধুই?(আয়শা)
না না।আমি কেনো তা চাইবো?কিন্তু সার্ভেন্ট দের একজনকে বলো।(আমি)
তুই জানিস রান্নাঘরে আমার অন্যদের কাজ পছন্দ না।তুই যদি না পারিস দে আমি করছি।(আয়শা)
না না।আমি করছি।
বলেই আমি থালাবাসন ধুতে লাগলাম।আমার অবস্থা দেখে মিতু ভাবী আর সোনালী আপু হাসছে।আসলে আমি বাড়ির সব কাজ করতে পারি কিন্তু থালাবাসন ধোয়া আমার একটুও পছন্দ না।তাও আবার এতগুলো কিন্তু আজ মিতু ভাবী আর সোনালী আপু আমাকে ফাঁসিয়ে দিয়েছে।এইটা বলে পরিবার?
এইটা ভেবেই একটা দীর্ঘ শ্বাস নিলাম।
।
।
সকালের নাস্তা শেষ করে প্রায় এগারোটার সময় আমরা সবাই আবার বসার ঘরে বসে আছি।
বাবা সোনালী আপুর বিয়ের কার্ড ছাপিয়ে এনেছে।তাই সবাই ঘুটিয়ে ঘুটিয়ে দেখছে।
ওয়াও বাবা অনেক সুন্দর কার্ড হয়েছে।(সোনালী কার্ড দেখতে দেখতে)
তোর পছন্দ হয়েছে?(আরমান সোনালীর মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে)
হুম।অনেক।(সোনালী খুশি হয়ে)
সত্যিই বাবা খুব ভালো হয়েছে।তাই না ফুল।(সমুদ্র আমার হাতে একটা কার্ড দিয়ে)
হুম।অনেক ভালো।(আমিও দেখে)
এইবার হয়েছে তোমার শান্তি।কাল রাত ধরে আমার মাথা ব্যাথা বানিয়ে দিয়েছি কার্ড পছন্দ করার জন্য।(আয়শা)
তবে বলতে হবে মা।বাবা কিন্তু সেই সুন্দর কার্ড পছন্দ করেছে।(মিতু)
তা ঠিক।(সোনালী)
আমরা সবাই কথা বলছি এমন সময় দরজায় কারো আওয়াজ শুনতে পেলাম।
এতো বড়ো বাড়িতে কি কোনো কাজের লোক নেই? এতো ভারী ভারী সুট কেস নিয়ে আসতে হচ্ছে আমায়!(রুবিনা — আমার শাশুরির বড়ো বোন।বাকি রইলো তার ক্যারেকটার,,পড়তে পড়তে বুঝে যাবেন)
ও শিট।আমি তো ভুলেই গেছি আজ এই শাকচুন্নি খালাম্মার আসার কথা।(সোনালী বিড়বিড় করে মাথায় হাত দিয়ে)
এই কেউ দিয়ে উনার সুট কেস ধরে নিয়ে এসো ভিতরে।(আয়শা তড়িঘড়ি করে)
পরেই একজন সার্ভেন্ট গিয়ে তার সুট কেস নিয়ে সোজা গেস্ট রুমে রেখে দিলো।
আহ্।কি গরম!মিতু যাও তো এক গ্লাস পানি নিয়ে এসো।(রুবিনা সোফায় বসতে বসতে)
আনছি খালাম্মা।
বলেই মিতু ভাবী রান্নাঘরে গেলো পানি আনতে।
এসেই শুরু করে দিলো আমার ভাবীদের উপর হকুম চালানো।(সোনালী মনে মনে)
কি যে একটা গরম পড়েছে?মানুষ একদম হাপিয়ে যায় এই গরমে?(রুবিনা)
আগে বললে আমরা ট্রেন স্টেশনে গাড়ি পাঠিয়ে দিতাম তোমাকে আনতে খালাম্মা।(সমুদ্র)
না বাবা।তুই যে বলছিস এতেই আমি অনেক খুশি।বাকি তোরা অনেক বেস্ত আমি জানি।(রুবিনা)
নেকা।(সোনালী মনে মনে)
কেমন আছো খালাম্মা?(সমুদ্র)
এইতো আলহাদুলিল্লাহ বাবা। তুই?(রুবিনা)
আলহাদুলিল্লাহ।(সমুদ্র মুচকি হেসে)
হো বাবা জানি তো জানি।পাঁচটা বছর পরিবার থেকে আলাদা ছিলি।যদিও দোষ একজনের(আমার দিকে তাকিয়ে)ছিলো।কিন্তু মাঝখানে তুই তোর পরিবার থেকে আলাদা ছিলি।(রুবিনা)
আমি তাচ্ছিল্য হাসি দিয়ে
উনি সব সময় আমাকে কথা শুনান। সমুদ্রের চলে যাওয়া নিয়ে উনি সব সময় আমাকেই দায়ী করেন।আমি নাকি সমুদ্রের গলায় ঝুলতে চেষ্টা করছি।(মনে মনে)
খালাম্মা আমার যাওয়ার নিয়ে কেউ দায়ী নয়।তুমি শুধু শুধু কাউকে দোষী করছো।(সমুদ্র)
বুঝছি বাবা।এখন ঝুলে পড়ছে তোমার গলায় আর কি করবে?রাস্তা থেকে তুলে আনা কোনো জিনিসকে ঘরে সাজালে যা হয় আর কি!(রুবিনা)
খালাম্মা।
সমুদ্র রেগে আরো কিছু বলতে যাবে তার আগেই আমি ওর হাত ধরে ইশারা দিয়ে বারণ করে দিলাম।
আমি চাইলে উনার প্রতিটা কথা জবাব দিতে পারতাম কিন্তু দেইনি।কারণ উনার সাথে তর্ক করে কোনো লাভ নেই আমার।উনি কি ভাববে তা নিয়ে আমার কোনো মাথা ব্যাথা নেই।তাই উনার কথা আমি এক কান দিয়ে শুনি আরেক কান দিয়ে বের করি।
।
।
চলবে,,