কারণে অকারণে সে পর্ব-১৯

0
659

#কারণে_অকারণে_সে
#পর্ব:১৯
#লেখক:রিয়ান আহমেদ (ছদ্মনাম)
;
তাসনিম বেগম ইতস্তত করে বললেন,
“বৌ মা তুমি শাড়ি পড়ো নি কেন?আজ তো বিয়ের প্রথম দিন।”
আরশি কিছুটা চেপে এসে তাসনিম বেগমের গা ঘেঁষে দাঁড়ায়।এরপর ফিসফিস করে বলে,
“আম্মু আমি তো শাড়ি সামলে রাখতে পারি না।পরে যদি শাড়ি পড়ি আর সেটা পড়ে মাটিতে গড়াগড়ি খায় তখন তো আর মান সম্মান সব যাবে।”
তাসনিম বেগম মুচকি হেসে বললেন,
“কোনো সমস্যা নেই।আমি তোমাকে শাড়ি পড়িয়ে দেবো তুমি শাড়ি নিয়ে আমার রুমে চলে এসো।এমনভাবে পড়াবো যে তুমি না চাইলে ঘোমটা মাথা থেকে এক চুল নড়বে না।”
তাসনিম বেগম আরশিকে আর কিছু না বলতে দিয়ে চলে গেলেন।আর চশমা ঠিক করতে করতে ভাবে সেদিনের কথা যেদিন সাভাশের বাসায় প্রথম শাড়ি পড়ে এসেছিল।আসার আগে সে শাড়িকে বলেছিল,
“এই শাড়িটা আমার কনফিডেন্স কমিয়ে দিয়েছে।এই শাড়ি যদি আমার মান সম্মান হানির বিন্দুমাত্র চেষ্টা করে তাহলে আমি আর এর চেহারা দেখবো না।”
আরশি কথাগুলো ভেবে বিড়বিড় করে বলে,
“সেদিন আমার অর্ধেক মান সম্মান তো সাভাশের সামনেই যেতে যেতে বেঁচে গিয়েছিল।হ্যা আমার উপর রহমত করো যেন শাড়িটা আমার গায়ে সুপার গ্লু দিয়ে জিনিস আটকালে যেভাবে আটকে থাকে সেভাবে যেন আটকে থাকে।”
;
সাভাশ গোসল করে ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে দেখে একটা লাল শাড়ি পরিহিতা রমনী তার রুমে হেঁটে বেড়াচ্ছে।তার উজ্জ্বল শ্যামলা গায়ের রঙকে এই শাড়ির কারণে হলুদ ফর্সা মনে হচ্ছে।সাভাশ এই বিষয়টা নিয়ে বেশ সন্দিহান।আরশির গায়ের রঙ একেক সময় একেক রকম লাগে।আরশি বোধহয় সদ্য গোসল করেছে চুল দিয়েও পানি পড়ছে অল্প অল্প পানি পড়ছে।অদ্ভুত!কতক্ষণ আগে তো আরশির সাজ একদম অন্যরকম ছিল।

আরশি রুমে কিছু একটা খুঁজছে।সব ড্রয়ার খুলছে কিন্তু নিজের কাঙ্ক্ষিত বস্তুটির সন্ধান পাচ্ছে না।বিরক্তিতে আরশির কপালে আর নাকে বিন্দু বিন্দু ঘামের দেখা দিয়েছে।ভালোবাসার মানুষের সবকিছুকেই বিশেষ রূপে দেখা যায় এতে কোনো দোষ নেই।তাই সাভাশ আরশির কপালের আর নাকের ঘামগুলোকে মুক্তা মনে করছে।সাভাশ বুকের বাম পাশে হাত রেখে বলে,”বলবো না এই শাড়িতে তোমাকে সুন্দর লাগছি আমি বলবো এই শাড়ি তোমার মধ্যে দিয়ে নিজের সৌন্দর্য বাড়িয়ে নিয়েছে।তুমি ছাড়া এই শাড়িটা নেহাত একটা সাধারণ কাপড়ের টুকরো।”
সাভাশের কথা পুরোপুরি আরশি শুনতে পায় না।শুধু বুঝতে পারে সাভাশ কিছু একটা বলেছে।এই মানুষটার অপেক্ষায় আরশি এতোটা সময় যেন ছিল।
আরশি সাভাশের দিকে ঘুরে কিছুটা স্বস্তি নিয়ে বলে,”আপনি এসেছেন।আমাকে একটু আমার নাকফুলটা খুঁজতে সাহায্য করুন।কাল রাতে খুলে রেখেছিলাম কিন্তু এখনো খুঁজে পাচ্ছি না।”

সাভাশের কথা যেহেতু আরশির কানে যায় নি তাই প্রতিশোধ হিসেবে আরশির কথাও সাভাশের কানে যায় না।সাভাশ ধীর পায়ে আরশির দিকে এগিয়ে যেতে শুরু করে।আরশি বুঝতে পারছে লোকটা কেন এভাবে এগিয়ে আসছে তার দিকে।আচ্ছা তার দিকে নাও তো হতে পারে হয়তো তার পেছনের কোনো বস্তুর সঙ্গে সাভাশের কাজ।আরশি পেছনে তাকিয়ে হতাশ হয়।পেছনে দেয়াল এছাড়া আর কিছু নেই যা আছে তা আরশির সাইডে আছে।
তার মানে সাভাশ ওর দিকেই এগিয়ে আসছে।

সাভাশ আরশির মাঝে মাত্র এক মিটারের দুরত্ব।সাভাশের কাছে নিজের সদ্ব্য বিবাহিতা স্ত্রীকে আজ এই রূপে আবেদনময়ী নারী মনে হচ্ছে।
আরশি বুঝতে পারে সাভাশকে এবার আটকানো দরকার।তাই সে নিজের ডান হাতটা সাভাশের উন্মুক্ত বুকের উপর রেখে ভ্রু কুঁচকে বলল,
“হয়েছে এখানেই দাঁড়ান।আপনি তো আমাকে হার্ট অ্যাটাক দেবেন এভাবে কে তাকায়?ভাইরে ভাই আপনার চাহুনি দেখে আমার গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গিয়েছে।”
সাভাশ কিছু না বলে আরশির হাত ধরে টেনে আরশিকে নিজের বুকের উপর এনে ফেলে।আরশির মাথাটা নিজের বুকের উপর রাখে।
আরশি স্পষ্ট সাভাশের হৃদপিন্ডের কম্পন অনুভব করতে পারছে।আচ্ছা এই কম্পন কি হাতে গননা যাবে?আরশি সাভাশের সঙ্গে আরেকটু লেপ্টে গিয়ে দাঁড়ায় গননা করার জন্য।কিন্তু এক মিনিট পর সে ব্যর্থতা স্বীকার করে।
আরশির বোধ হয় সে কোথায় আছে।সাভাশ কি তাদের No touch চুক্তির কথা ভুলে গেছে?সমস্যা নেই ভুলে গেলে মনে করিয়ে দেওয়াটা আরশি নিজের দায়িত্ব বলে মনে করে সে শুকনো ঢোঁক গিলে বলে,
“সা,,সাভাশ আপনি হয়তো No touch এর কথা ভুলে গেছেন।সমস্যা নেই এখন তো আমি আপনাকে মনে করিয়ে দিয়েছি তাই ছাড়ুন।”
সাভাশ বলল,
“আমি তোমাকে আগে ছুই নি তুমি আমাকে আগে ছুঁয়েছো।তাই নিয়মটা তুমিই আগে ভেঙ্গেছো।নিয়ম ভাঙ্গার অপরাধে আমি না চাওয়া পর্যন্ত তোমাকে এভাবেই দাঁড়িয়ে থাকতে হবে।”
আরশি নিজের বোকামির জন্য নিজেকে কয়েকটা গালি দেয় সত্যিই তো সে নিজেই আগে সাভাশের বুকে হাত রেখে সাভাশকে থামিয়েছিল।আরশি দাঁতে দাঁত চেপে বলল,
“নিজের এডভোকেট হওয়ার সুবিধা নিয়ে এভাবে আপনি আমাকে যুক্তি দিয়ে হারিয়ে দিলেন!আমারও দিন আসবে।আমি zoology নিয়ে পড়ছি বলে যুক্তি দিতে পারবো না এমন না।”
সাভাশ নিঃশব্দে হাসে।তার জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছা করছে আরশির এই মুহুর্তে কেমন অনুভূতি হচ্ছে।সাভাশ প্রশ্ন করে,
“আচ্ছা আরু তোমার এই মুহুর্তে কেমন লাগছে?”
“কেমন লাগবে আবার।”
“মানে বলতে চাইছি আমাকে খালি গায়ে দেখে তোমার কেমন ফিল হচ্ছে।”
“কেমন আবার লাগবে?আমি তো আমার ভাইকেও খালি গায়ে দেখেছি বহু বার।এতে কেমন ফিল হবে আবার?”
সাভাশ হতাশ হয়।সে অবাক তার বউ এতোটা আনরোমান্টিক কি করে হতে পারে?সাভাশের ইচ্ছে করছে আরশির কথা শুনে বুড়িগঙ্গা নদীতে গিয়ে ডুব দিতে।সাভাশ এবার কাট কাট জবাব দেয়,
“আমি তোমার বিয়ে করা বর বুঝলে?প্রথম দিন ধর্ম ভাই বলেছো বলে আমাকে ভাইয়ের চোখে দেখবে এটা কেমন কথা?”
“আমি আপনাকে ভাইয়ের চোখে দেখবো কেন?আমি আপনাকে নিজের চোখ দিয়েই দেখি।”
কথাটা বলে আরশি দাঁত কেলিয়ে হাসে।
সাভাশ বুঝতে পারলো আরশি মজা করছে তার সাথে।

সাভাশ এবার আরশিকে ছেড়ে দেয়।আরশি বলে,
“সাভাশ আমি নাকফুলটা খুঁজছিলাম।আপনি যেহেতু আমার সময় নষ্ট করেছেন তাই খুঁজে দেওয়াটা আপনার দায়িত্ব এখন।”
“তোমার নাকফুল আমি ওয়াশরুমে ভেসিনের উপর দেখেছি।”
“ওহ আচ্ছা।”

আরশি নিজের কাজ শেষ করে রুম থেকে পগাড়পাড় হয়।না হলে সাভাশ আবার ধরে বেঁধে সামনে বসিয়ে দেবে।
আরশি মিথ্যা বলেছে কিছুক্ষণ আগে।সাভাশের ধরাটা তার কাছে স্বাভাবিক একদম ছিল না।অত্যন্ত অস্বাভাবিক একটি অনুভূতি তৈরি হয়েছে আরশির মাঝে।হাত পা কাঁপছিল মনে হচ্ছিল রুমের তাপমাত্রা 0 ডিগ্রিতে এসে নেমেছে।উঁচু বিল্ডিং এর চূড়া থেকে নিচের দিকে তাকালে মানুষের বুকটা যেভাবে অজান্তেই মোচড় দিয়ে উঠে সেভাবেই আরশির বুকটা মোড় দিয়ে উঠছিল।
কিন্তু পুরোটা ব্যাপার আরশি স্বাভাবিকভাবেই সামলানোর যথাসাধ্য চেষ্টা করেছিল।
;
;
;
;
রিজা আহসানের আর আয়েশা বেগমের বুকটা খা খা করছে মেয়ের জন্য।মেয়েটা নেই মানে তো বাড়িটা প্রাণ নেই।আয়েশা বেগম বলেন,
“সন্ধ্যা বৌ ভাতের দাওয়াত খেয়ে আগামীকাল সব আত্মীয় স্বজনেরাও চলে যাবে।আমাদের বাড়িটা একদম খালি হয়ে যাবে।এতো বড় বাড়ি রেখে কি লাভ যেখানে আমরা মানুষ মাত্র তিন জন।”
রিজা আহসান হাতের তজবিটা রেখে বললেন,
“দেখো আমি জানি তোমার আরশির জন্য কষ্ট হচ্ছে কারণ আমাদের একটামাত্র মেয়ে সে।কিন্তু শশুড়বাড়িতে তাকে তো যেতেই হবে।,,,আর বাড়ি খালি কোথায় থাকবে?কদিন বাদে আরহামের বিয়ে হবে তখন ওর বউ বাচ্চা নিয়ে আমরা বাকিটা জীবন কাটিয়ে দেবো।আর মামনির বিয়ে হয়ে গেছে এর মানে তো এই না যে সে আর নিজের বাবার বাড়িতে আসবে না।সেও আসবে থাকবে।”

আয়েশা বেগমে আঁচলে চোখ মুছে বলেন,
“হ্যা এবার আরহামের বিয়ে দিতে হবে।,,তোমাকে একজনের কথা বলবো বলবো করেও বলা হয় নি।”
রিজা আহসান আর আয়েশা বেগমের কথার মাঝেই দরজায় টোকা পড়ে।আরহাম দাঁড়িয়ে আছে।রিজা আহসান বললেন,
“আসো।”
আরহাম ঘরে ঢুকে একটা চেয়ার টেনে বসে বলল,
“বাবা তোমার বন্ধু জিহাদ আঙ্কেলরা বলছেন তাদের এখনই যেতে হবে।তোমাদের থেকে বিদায় নিতে চাইছেন তারা।”
রিজা আহসান বললেন,
“কেন?আজকে আরশি আর সাভাশের বৌ ভাতটা খেয়ে যাক ওনারা।”
“বাবা ওনার বড় মেয়ের বাবু হবে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে তাই ওনাদের জরুরী যেতেই হবে।”

রিজা আহসান কথাটা শুনে আর কিছু বললেন না।স্ত্রীকে নিয়ে বন্ধুকে বিদায় জানাতে গেলেন।
;
;
;
আরশি আত্মীয় স্বজন সকলের মাঝে বসে আছে।সবাই তার সঙ্গে কথা বলছে।আরশির নানী আর মামাতো বোন তার সাথে এসেছে।তারা দুজন বেচারির উপরে কড়া নজর রাখছে।সাভাশের এক ভাবী মজা করে আরশিকে বলল,
“সাভাশ ভাইয়ের সাথে কাল রাতে কেমন ভালোবাসা হয়েছে গো?”
কথাটা বলে উনি হাসতে হাসতে মাটিতে গড়াগড়ি খাবেন এমন একটা অবস্থা।আরশি মুখটা গম্ভীর করে ভ্রু কুঁচকে তাকায়।সে বোঝে না এভাবে পাগলের মতো হাসার মানে কি।তাছাড়া এই প্রশ্নটাই বা করার মানে কি।
আরশির নানী ওর পাশেই বসেছিল।তিনি বুঝতে পেরেছেন আরশি এখন এমন একটা কথা বলবে যা শুনে সবাই হা হয়ে যাবে।তাই তিনি আরশির হাতে চাপ দিয়ে আরশির মনোযোগ নিজের দিকে আনেন।আরশি ওনার দিকে তাকাতেই উনি ফিসফিস বলেন,
“উল্টাপাল্টা কথা একদম বলবি না।শশুড়বাড়ির লোকজন বিয়ের পরের দিন এমন কথা একটু আধটু বলবোই মজার ছলে এসবের উত্তর দিতে নাই।লজ্জা পাওয়ার মতো করে মাথা নিচু করে ফেলবি বুঝলি।”
আরশি রাগী গলায় বলল,
“নানু তুমি আমার হাত ভেঙ্গে ফেলবে না কি?আর আমি কি ওনাকে কিছু বলছি শুধু শুধু আমার সাথে এমন করো।,,যাও গিয়ে নিজের পান চাবাও।”
নানী আর কিছু না আরশির হাত ছেড়ে দিয়ে সত্যিই পান খেতে চলে গেলেন।কিছুক্ষণ পর সাভাশ সিঁড়ি দিয়ে নিচে নেমে এলো।তার গায়ে লাল পাঞ্জাবি। আরশি দুই মিনিট সাভাশের দিকে তাকিয়ে চোখ সরিয়ে নিয়ে,
“আমার লাল রঙ পছন্দ হয় না।কিন্তু আজ আম্মুর কারণে লাল শাড়ি পড়তে হয়েছে।সাভাশ কি আমার সাথে মিলিয়ে লাল পাঞ্জাবি পড়েছে?বুঝতে পারছি না লোকটাকে সবকিছুতে কিভাবে এতো মানায়।”

সবাই খাবার টেবিলে বসেছে।খাবার খেতে নয় সাভাশ আর আরশির খাবার খাওয়া দেখতে।দুজন দুজনকে আজ খাইয়ে দেবে।
আভাস বলে,
“ভাই খাওয়ানো শুরু করো ভাবীকে আর কতক্ষণ অপেক্ষা করিয়ে রাখবে।”
আরিয়ানা বলল,
“সাভাশ আরুকে জলদি খাওয়া ক্যামেরা ধরে ধরে আমার হাত ব্যাথা হয়ে গেছে।”

আরশি এর মাঝে বলে উঠে,
“আচ্ছা আমাদের এক প্লেটে খাবার দেওয়া হয়েছে কেন?জানি মেহমান বাড়িতে তাই সবকিছুর ঝামেলা আছে।কিন্তু বিয়েটা যেহেতু আমাদের তাই আমাদের একটু স্পেশাল ট্রিটমেন্ট দেওয়া দরকার।আমাদের আরেকটা প্লেট দিন।”
সবার মাঝে আরশির কথা শুনে পিন ড্রপ সাইলেন্স তৈরি হয় কয়েক মুহুর্তের জন্য।এরপর সবাই হেসে দেয়।তাসনিম বেগম হাসতে হাসতে বললেন,
“বৌ মা স্বামী স্ত্রী এক প্লেটে খাবার খেলে তাদের মাঝে ভালোবাসা বাড়ে তাই তোমাদের এক প্লেটে দেওয়া হয়েছে।”

কথাটা শুনে আরশি মনে মনে বলে,
“আম্মু এমনিতেই আপনার ছেলের ভালোবাসা অনেক বেশি।আপনারা সেটাকে আরো বাড়ানোর ব্যবস্থা করছেন।ভালোই,,,সাভাশ তো মনে মনে মহা খুশি,,হুহ।”

দুজনের খাওয়া দাওয়া শেষ হয়।
;
;
;
;
সন্ধ্যায় রিসেপশনের অনুষ্ঠান শুরু হয় আর শেষ হয় রাত দশটায়।
আরশির হাতে সাভাশ মোবাইল দিয়ে হোটেলের ওয়াশরুমে গেছে।যাওয়ার আগে বলে গেছে,
“কিউটি আন নোন নাম্বার থেকে ফোন আসবে বুঝলে।ফোনের ওপাশের পাগলটা বেশি চেচালে মনে যা আসবে তা বলে দিতে লজ্জাবোধ করবে না বুঝলে?”
আরশি দুষ্টু হেসে বলল,
“কি এক্স ফোন দিয়ে জ্বালায় না কি?সমস্যা নেই আমি বেশরম তাই একটা গালিও মাটিতে পড়বে না।”
“ওকে আমি আসছি।”

সাভাশ যাওয়ার দুই মিনিটের মাথায় সত্যিই ফোন এলো আননোন নাম্বার থেকে।আরশি রিসিব করতেই ওপাশ থেকে সত্যিই একজন পাগল ও না না পাগলি থ্রেট দিতে লাগলো,
“সাভাশ তুমি আমাকে রিজেক্ট করে ঐ চশমিশ মেয়েটাকে বিয়ে করলে কিভাবে?তুমি যদি আমার না হও তো কারো হবে না,,আমি সুইসাইড নোটে লিখে দিয়ে যাবো তুমি আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী।”
আরশি ফোনের ভলিউম কিছুটা কমিয়ে নিল মেয়েটা যেভাবে চেঁচাচ্ছে তাতে বলিউম বেশি দেওয়াটা কানের জন্য ক্ষতিকর।আরশি বলতে শুরু করলো,
“তোর সমস্যা কি আমার জামাইর সাথে তোর কি কোনোদিন কিছু ছিল?থাকলে তো আর সে আমারে বিয়ে করতো না তাই না?শোন বে আমার পরিচিতি কোথায় তা তোর ধারণার বাইরে।আমার জামাইকে যদি আর একবার জ্বালিয়েছিস তাহলে তোর বাড়িতে লোক পাঠিয়ে ভাঙচুর করবো।পুলিশ দিয়েও কিছু করতে পারবি না কারণ তোর এলাকার মেয়র আমার দূর সম্পর্কের চাচা হয়।”
মেয়েটা আরশির কথা শুনে থ হয়ে গেছে।এরপর সে বলল,
“বুঝতে পেরেছি তুমি কতো বড় পাগল।তোমার জামাইকে জেলে যেতে হবে না আমার জন্য কারণ আমি আত্মহত্যা করছি না।আমি তো এটা ভেবে আত্মহত্যা করতে যাচ্ছিলাম যে সাভাশ কিভাবে আমাকে রিজেক্ট করে অন্য মেয়ের সঙ্গে সুখী থাকতে পারে।কিন্তু তোমার কথা শুনে আমি বুঝে গেছি যে সাভাশ কতটা সুখে আছে!(তাচ্ছিল্য করে)।তোমার মতো একপা পাগলের সঙ্গে সাভাশ কিভাবে সারাজীবন কাটায় তা দেখে আমি এবার মজা নেবো।”
আরশি রেগে বলে,
“আমি পাগল না তুই আর তোর চৌদ্দ,,না না আটাশ গোষ্ঠী পাগল।পাগল কিভাবে জানবে সে পাগল হয়েছে।তোর কথা শুনেই আমি বুঝতে পারছি তুই হচ্ছিস Beauty with no brain ক্যাটাগরির মানুষ।”
মেয়েটা আরশির আর কোনো কথা না শুনে ফোন কেঁটে দেয়।
তখনই সাভাশ আসে।সাভাশ নিজের মোবাইল নিতে নিতে বলে,
“কি ঐ মেয়ের সাথে কি কথা হয়েছে?”
“এমন কথা হয়েছে যা আপনার না শুনলেও চলবে।এখন চলুন আমাদের বাসায় যেতে হবে ভাইয়া,মা,বাবাই অপেক্ষা করছে।”
“হুম চলো তোমার হিটলার ভাইয়ের সামনে আবার আমার নামে উল্টাপাল্টা কথা বলো না।”
;
#চলবে!