২১+২২
গোধূলির শেষ আলো?
পর্ব ২১
Writer Tanishq Sheikh Tani
দেখতে দেখতে পুরো ন মাস কেটে গেলো।তানির শরীরে পরিবর্তন শুরু হলো।মন মানসিকতায়ও তার প্রভাব পড়লো।আজকাল বড্ড খিটখিটে মেজাজের হয়ে গেছে।রাতে শরীরের যন্ত্রণায় ঘুম আসে না।শুকনো ঝাল ছাড়া আর কিছুইমুখে রোচে না।তারউপর সামান্য কথাতেই অভিমানের পাহাড় জমিয়ে ফেলে। খালিদ এসব বিষয়ে যথেষ্ট কেয়ারফুল স্বামী।তানির সকল রাগ অভিমান ভালোবাসা দিয়ে শান্ত করে।খাদিজাও বউমাকে চোখের মনি করে রেখেছে।সবরকম যত্নআত্তি করে।মাথায় তেল দেওয়া থেকে শুরু করে খাবার খাইয়ে রাতে মাথায় বিলি কাটতে কাটতে ঘুম পাড়ানো সব করে।বিকালে শ্বাশুড়ি বউমা সুপারি বাগানে হাটতে হাটতে গল্প করে।আজও এসেছে দুজন হাঁটতে। খাদিজার হঠাৎ মনে হলো মোবাইলটা ভুলে রেখে এসেছে ঘরে।
“- মা! তুমি একটু দাঁড়াও আমি মোবাইল ডা নিয়ে আসি ঘরের তে
“- ঠিক আছে মা!
খাদিজা দ্রুত পায়ে ঘরে যেতেই শুনতে পেলো মোবাইল টা বাজছে।কল রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে লিজার গলা শুনতে পেয়ে গল্প শুরু করলো।তানি হাটতে হাটতে আনমনা হয়ে সুপারি বাগানের ভেতরে ঢুকে পড়লে।হঠাৎ হাতটা কেউ টেনে ধরতেই থমকে দাঁড়িয়ে ফিরে তাকাতেই রেগে তার দিকে তাকিয়ে ঝাঝালো গলায় বলে,
“-তুই!
“- হ আমি!
“- হাত ছাড় কইছি!
“- এতোদিন তো ছাড়েই দিসিলাম আর না।
“- মাথা কি তোর পুরোপুরি খারাপ হয়ে গেছে নাকি?দেখছিস না আমার অবস্থা ?
“-তোরে আমি সর্ব অবস্থা গ্রহন করবো।তুই খালি একবার হ ক।
“- ছাড় হাত! তানি ঝটকা মেরে হাত সরিয়ে নিয়ে বাড়ির পথে যেতেই আবার পথ আগলে দাঁড়ায় তাজ।তানি তাজের পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখে নিল।বিস্তর পরিবর্তন হয়েছে তাজের।আগের মতো চেহারার ছেলেমানুষী ভাবটা নেই তার জায়গায় দৃঢ় এবং তেজি অবয়বের হয়ে গেছে তাজ। মুখে খোঁচা খোঁচা দাড়ি,কাঁচের বলের মতো ড্যাবড্যাবানো দুটো বিদ্রোহী চোখ,উশকোখুষকো কোঁকড়া চুলে বড্ড নিষ্ঠুরতা ভাব আসছে চেহারায়।চোখে মুখেও কেমন অস্বাভাবিকতা ভাব।তানি ক্ষনিক তাকিয়ে আবার পাশ কাটাতে গেলে তাজ আবার সরে দাড়ায় হাতটা মেলে বাঁধা দিয়ে।
“- দ্যাখ তাজ! সরে খাড়া কচ্ছি।
“- সম্ভব না।তানি চল আমার সাথে।তোরে আমি মেলা ভালোবাসবো রে।বুকের পিঞ্জরে যত্নে রাইখে দিবো চল না।
“- পাগল তুই।এক কথা বুঝিস না।আমি এখন অন্য একজনের বউ শুধু কি তাই?এই দ্যাখ আজ বাদে কাল আমি মা ও হবো।পাগলামী করিস নে।বাড়ি যা।আর শোন! তোর সাথে আমিও খারাপ ব্যবহার করছি ক্ষমা করে দিস।তানির পেটে চিনচিন ব্যথা অনুভব করে।
“- তানি অনেক আশা নিয়ে আইছি চল না।আমি খুব একা রে।মা নাই।আব্বা তো থাকেও নাই।আমার রাতে ঘুম আসে না, দিনে কোনোকিছুই ভালো লাগে না খালি মনে হয় তুই ছাড়া আমি বোধহয় দম আটকে মরে যাবো।
“- তাজ কেন বুঝছিস নে?জেদ না করে যা তুই।আমারে পাওয়ার আশা ছেড়ে অন্য কাওকে বিয়ে করে সুখী হ।
“- না তোরে না নিয়ে যাবো না।তোরে আমি খালিদের চেয়েও বেশি সুখ দেবো চল না আমার সাথে।আমার অন্য কেউ না তোকেই চাই।
“- ফালতু কথা বন্ধ কর তাজ।
“- খালিদ তোকে কি দিছে ক? আমি তোরে সব দেবো সব।তোর পেটের সন্তানরেও আমার নাম দেবো।চল তানি চল আমার সাথে।
তানির মেজাজ চরম খারাপ হয়ে যায়।রাগ কন্ট্রোল করতে না পেরে তাজকে এলোপাথাড়ি চড় মারে গালে।চড় মেরে হাফিয়ে গেলে সুপারী গাছে হেলান দিয়ে জোড়ে জোড়ে নিঃশ্বাস নিতে থাকে।মুখটা রাগে লাল হয়ে আছে।কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম ঝড়ে গিয়েছিল। তাজ নিজের হাত দিয়ে তানির কপালের ঘাম মুছে দিতে তানি এক লাথি দিয়ে তাজকে দূরে সরিয়ে দেয়।
“- তুই কোনোদিন ভালো হবি না।কোনোদিন না।তোরে এতো মিনতি করে বুঝালাম বুঝলি না।তুই হলি লাথি খাওয়া কুকুর।সোজা কথা কি করে শুনবি?লাথি দিলেই শুনবি।
“- তুই আমারে লাথি মার,থাপ্পড় মার যা খুশি কর।তবুও চল আমার সাথে আচ্ছা আজই যাওয়া লাগবি নে।তুই দুদিন সময় নে।তারপর বল।
“- তোর সময়ের গুষ্টি কিলায়।তুই যা সামনের তে।নয়লে কি যে করবো তোরে?
“- একটু বোঝ আমারে।আমি তোরে ছাড়া বাচতি পারছি নে।
“- তাজ!সাকিব খানের মতো বাংলা সিনেমার ডায়লগ মারিস নে।বাপ কা ঘোড়া সিপাহী কা ব্যাটা।তুইও তোর বাপের মতো চরিত্রহীন হইলি শেষমেশ।
“-তানি দ্যাখ! যা বকার বক তবুও একবার আমার জন্য ভালোবাসা তৈরি কর তোর মনে।তোর স্বামী তো দূর দেশ।না পারছে তোর চাহিদা মিটাতি না পারছে,,,
“- হারামির বাচ্চা গেলি তুই? দাড়া! তানি স্যান্ডেল খুলে তাজের দিকে তেড়ে যেতেই পেটে ভীষণ ব্যথা অনুভর করে।ও মাগো! বলে আর্তনাদ করে ওঠে পেট চেপে।তাজকে লাথি দেওয়ার সময় পেটে অনেক টান লাগছিল।রাগের মাথায় এসব মাথায় ছিল না তানির তাজ কাছে এগোতেই আদিল কে আসতে দেখে লুকিয়ে পড়ে।আদিল খালিদদের বাড়িই আসছিল তানির খোঁজখবর নিতে।পথিমধ্যে চিৎকার শুনে কাছে এগোতেই দেখে তানি ধুলোমাটিতে পড়ে ব্যথায় কাঁদছে।বউমাকে একা রেখে যাওয়ার কথা মনে পড়তে খাদিজাও তাড়াতাড়ি এসে দেখে তানির অবস্থা সংকটাপন্ন।
“- ও বউ! কি হয়ছে?
“- মা! আমার কষ্ট হচ্ছে মা।আমি সহ্য করতে পারছি না।
“- কাকি ভাবির পাশে থাকেন আমি ভ্যান আনতে গেলাম।তাড়াতাড়ি হাসপাতালে নিতে হবে।
“-আচ্ছা বাজান! তাড়াতাড়ি যা। ও মা! একটু সবুর কর।
“- মা আমি পারছি না মা।মাগো আমি মরে যাবো মনে হয়।আল্লাহ গো।
“-এসব কথা বলে না মা।আল্লাহ কে ডাক।আল্লাহ আল্লাহ কর।
তাজ গাছের ফাঁক দিয়ে দেখে।তানিকে আজও হাসিল করতে পারলো না।তানি মা হয়ে গেলে তো কোনোমতেই তানির উপর প্রতিশোধ নিতে পারবে না।না! না! তাজ এতো সহজে তানিকে ছেড়ে দেবে না।তাজের হাসি, আনন্দ, স্বাভাবিক জীবন হারিয়ে ফেলার জন্য তানিকে যে শাস্তি পেতেই হবে কঠিন শাস্তি। সম্পূর্ণ নিজের করে ভালোবাসার চাদরে আগলে একটু একটু করে যন্ত্রণা দিয়ে কাছে রাখবে তানিকে তাজ।কিন্তু কি করে হাসিল করবে তানিকে?তাজের ভাবনা ছেদ করে আদিল দুজন লোকসহ তানিকে ভ্যানে উঠিয়ে সদর হাসপাতালে গেলো।খাদিজাও ঘরে তালা দিয়ে সাথে গেলো।হাসপাতালে পৌঁছাতেই হাসপাতালের ডক্টর তানির অবস্থা দেখে যতনা রাগ হলো রিপোর্টে ওর বয়স দেখে ইচ্ছামতো কথা শুনিয়ে দিল খাদিজা আর আদিলকে।বললো,
“- আপনারা কি পাগল? এই মেয়ের তো বিয়ের বয়সই হয় নাই তারউপর আবার মা হতে চলছে। কি অবস্থা করেছেন মেয়েটার চোখে পড়ে না আপনাদের? এই মেয়ের অবস্থা তো গুরুতর। ওটিতে নিতে হবে।নরমালে কোনোমতেই প্রসব করানো যাবে না।
খাদিজা আদিল দুজনই মাথা নিচু করে ডাক্তারের ধমক হজম করলো।ওদের চুপ থাকতে দেখে ডাক্তার আরো রেগে গেলো।
“- কি হলো চুপ কেন? সাইন করুন।এই রোগীর কিছু হলে হাসপাতাল কতৃপক্ষ দায়ী থাকবে না।
খাদিজা এতোক্ষন মুখ বুজে ডাক্তারের হুঙ্কার শুনলেও এবার কান্নাজড়িত কন্ঠে প্রতিবাদ করলো।
“- এরম করছেন কেন আপনেরা।বউডা আমার বেদনায় কানতাছে আর আপনারা?
“- আমরা কি বলুন?আপনি জানেন তার পরিস্থিতি কতো খারাপ?কতো ঝুঁকি তার মা হওয়াতে? এই বয়সে তো বাচ্চা প্রসবের জন্য তৈরিই হয় না মেয়েদের শরীর।
“- হ! যতোসব আজগুবি কতা।আমাগের আমলে ১২ বছরের কম বয়সেও বিয়া হতো তারপর মা হয় নাই আমরা।কই আমাগের তো কিছুই হয় নাই?
“- এসব ফালতু কথা রাখেন।আমল নিয়ে আসছেন উনি।খালা আপনাদের আমল আর এখন অনেক তফাত।আগে মাতৃমৃত্যুর হার কতো ছিল জানেন? একটা মেয়ের অপরিনত বয়সে মা হতে কি পরিমাণ সমস্যা ফেস করতে হয় আপনি মেয়ে জাত হয়েও সেটা বুঝলেন না।আর কি করে বুঝাবো আপনাদের?
“- বাবা! ওসব কতা রাখো।আমার বউডারে দেহো বাবা।খাদিজা ডাক্তারের হাত ধরে কেদে ফেলে।
“- আচ্ছা ঠিক আছে কাঁদবেন না আপনি।দেখছি কি করা যায়।তবে কাজটা মোটেও ভালো করেন নি।আপনার ছেলের এ বিষয়টা বোঝা উচিত ছিল।নার্স পেশেন্ট কে ওটিতে সিফ্ট করো আমি আসছি।
“- জ্বি স্যার।
খালিদ কে মোবাইল করে সবকিছু জানানো হলে বেচারা নিজের ভুলে লজ্জিত হয়।আবেগের বশে তানির বয়সের অপরণতির হিসাবটাও রাখে নাই।স্ত্রীর এই কঠিন মুহুর্তে
পাশে থাকতে না পেরে কান্নায় ভেঙে পড়ে।আদিল ভাইকে স্বান্তনা দিতে থাকে।খালিদ মোবাইলে সব খবরাখবর নিতে থাকে।চিন্তায় বুকে ব্যথা উঠে গেছে খালিদের।
অবশেষে সবার মুখে হাসি ফুটিয়ে তানি এক ফুটফুটে কন্যা সন্তানের জন্ম দেয়।খালিদ মোবাইলে মেয়ের শুভ্র মুখশ্রী দেখে খুশিতে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়ে।খালিদের মনে হয় ইশ যদি পাখির মতো পাখা থাকতো ছুটে চলে আসতো নিজের ঔরসজাত সন্তানকে বুকে নিতে।তানির অবস্থা এখনও ভালো নয়।তবে ডাক্তার বলেছে আশংকা মুক্ত। ৬মাস খুব সাবধানে চলাফেরার আদেশ দিয়েছে ডাক্তার। কারন সিজারের জাগায়টা খুব নাজুক।সেলাই খোলার পসিবিলিটি আছে।তানির জ্ঞান ফেরার সাথে সাথে সব ব্যথা ভুলে যায় মেয়েকে কোলে নিয়ে।ডাক্তারের নির্দেশে ৭২ ঘন্টার মধ্যে মায়ের দুধ খাওয়ানোর নিয়ম পালন করা হয়।তানি নড়াচড়া তেমন করতে না পারলেও মেয়েকে কোল থেকে সেকেন্ডের জন্য সরাতে চায় না।
খালিদ রোজ স্ত্রী কন্যার সাথে ভিডিও কলে কথা বলে, ওদের দেখে অতৃপ্ত আবেগের কিছুটা তৃপ্ত করে।খালিদ আজকাল খুব আবেগ প্রবণ হয়ে গেছে।মেয়েকে ভালোবাসতে বাসতে কেঁদে ফেলে।সাতদিনের মাথায় মেয়ের আকিকা করার জন্য সব ঠিকঠাক করলেও করা হয়ে ওঠে না।গ্রামের পরিবেশ হঠাৎ করে অশান্ত হয়ে ওঠে আব্বাস জোয়ার্দারের অত্যাচারে,নিপিড়নে।
চলবে,,,,গোধূলি শেষ আলো?
পর্ব ২২
Writer Tanishq Sheikh Tani
সন্ধ্যার আজান পরতে পরতে খাদিজা লিজার সহযোগিতায় পাকের ঘর থেকে সব গুছিয়ে ঘরে নিয়ে আসে।তানি আজানের আগ দিয়েই জানালা দরজা বন্ধ করে বসে আছে।কারন এসময় মোটেও ভালো না।যতো খারাপ জিনিস এই ভর সন্ধ্যা বেলায় দৌড়া দৌড়ি করে।মেয়ের মাথার টা আলগোছে হাতের তালুতে নিয়ে কোলে তুলে নেয় তানি।কাজলের একটা ফোটা মেয়ের কপালের উপর দিয়ে দেয়া।মেয়ের মুখখানা দেখলে প্রবাসী স্বামীর কথা খুব মনে পড়ে তানির।সাথে সাথে পিতৃকোলের উষ্ণতা না পাওয়ায় মেয়ের জন্য খারাপও লাগে।বাপ থাকলে হয়তো এতোক্ষন বুকে আগলে রাখতো তার রাজকন্যাটাকে।ঘুমন্ত কায়েনাত মায়ের অপ্রকাশিত দুঃখ বুঝতে পারলো কিনা কে জানে? মুখটা ফুঁপিয়ে উঠলো আস্তে আস্তে চোখ খুলে।তানির কপালে ভাঁজ পড়ে গেলো মেয়ের ফুপানো দেখে।
“-ওলে সোনা! কান্দে ক্যা আমার পরিটা? ও পরি মায়ে তোমার সব দুঃখ নিজের করে নেবে। তাও তুমি কানবা না মা।মেয়েকে ভালোবাসার উষ্ণ আবেশে জড়িয়ে ঘরে পায়চারী করতে করতে নানা ছলে ভঙ্গিতে মেয়ের মুখে হাসি আনে।মা মেয়ে অনেক্ষণ একে অপরের ভালোবাসার অপত্য মায়ার বাধনে আবিষ্ট থাকে দুনিয়াদারি ভুলে।তানি আর খালিদের সমস্ত পৃথিবী এখন এই ছোট্ট জীবনটা ঘিরে।তাই তো মেয়ের নাম রেখেছে কায়েনাত।খাদিজা লিজাকে দিয়ে নাতনীর গরম কাপড় কাঁথা সব পাঠিয়ে দেয়।লিজা তানির ঘরের দরজা খুলে দেখে মা মেয়ে একে অপরের ভালোবাসার ঘোরে নিবদ্ধ হয়ে আছে।লিজার উপস্থিতি কেউ টের পায় নি।লিজা বিছানার এক পাশে কাপড় গুলো ভাজ করে রেখে মুচকি হেসে মৃদু শব্দে বলে,
“- ভাবি!
“- হু! আচমকা ডাক পড়তে পিছে ফিরে তাকায়।লিজার মুখের হাসি দেখে নিজেও হাসে
“- এবার মেয়েকে একটু দাও আমার কোলে।আমিও তো ওর ফুপু নাকি? আমারও তো হক আছে।
“- আচ্ছা নে! এই যাহ!
“- কি হলো?
“- দেখ না ঘুমিয়ে পড়লো। মেয়ে আমার বড্ড ঘুম কাতুরে হয়েছে বুঝলি লিজা?
“- এখনি ঘুমানে লাগলো? ধ্যাৎ!
“- আরে রাগ করিস নে।উঠুক তার পর নিস।
নে বালিশ টা ঠিক করে গরম খেতাটা বিছিয়ে দে।শুইয়ে দেই।
“- আচ্ছা! লিজা পরম যত্নে ভাইঝির জন্য বিছানা তৈরি করে দেয়।
তানি মেয়েকে সাবধানে কোল থেকে বিছানায় শুয়ে নিজেও শুয়ে পড়ে কোনাকুনি হয়ে।এরমধ্যে বাইরে সাইকেলের বেলের টিংটিং আওয়াজ শোনা যায়।
“- এসময় আবার কিডা আসলো? দেখতো লিজা।
“- ঠিক আছে।লিজা বারান্দায় গ্রিলের কাছে দাঁড়াতেই দেখলো বাইরে অন্ধকারে বৈদ্যুতিক বাল্বের আলোয় শর্ট পাঞ্জাবি পড়া ক্লিন সেভ অস্পষ্ট মুখশ্রীর এক যুবক দাড়িয়ে। লিজা তাকে চেনে না।তাই মাথায় ওড়নাটা টেনে গ্রিলের কাছাকাছি গিয়ে জিজ্ঞেস করলো।
“- কে আপনি?
“- আপনাদের বাড়ির কুটুম বেয়াইন সাব।
যুবকটির হাস্যোজ্জ্বল মুখে বলা বেয়াইনসাব কথাটা শুনে লিজা লজ্জায় মাথানিচু করে ফুপুর ঘরে দৌড়ে চলে আসলো।
“- কি রে কি হঅয়ছে?
“- দেখো গিয়ে কে যেন আইছে?
“- কনে?
“- বাইরে।
খাদিজা বাইরে বের হয়ে দেখে তানির ভাই ফয়েজ দাড়িয়ে। খুশিতে শব্দ করে বলে ওঠে,
“- বড় কুটুম যে!ওনে দাড়ায় আছো ক্যা।ঘরে আয় বাপ।এই লিজা! গেটের চাবিটা নিয়ে তাড়াতাড়ি। লিজা মাথা নিচু করে চাবিটা দিয়েই দৌড়ে ফুপুর ঘরের দরজার পাশে লুকায়।
“- কি করে ঘরে ঢুকি কও ফুপু? তোমাদের বাড়ির মানুষ তো চিনেও চেনে না।
“- আর কতা কচ্ছিস বাপ? খাদিজা চাবি নিয়ে কেচি গেট খুলতে খুলতে।
“- এই যে যিনি চাবি দিয়ে গেলেন।
“- আয় বাজান ঘরে আয়।ও লিজা! ও হলো আমার ভাইয়ের মেয়ে।তোরে মনে হয় চেনে না তাই লজ্জা পাইছে।কতোদিন বাদে আলি আমাগের বাড়ি।আসার আগে মোবাইল করে জানাবি না?
“- ফুপু বাড়ি আসবো তার আবার মোবাইল করে আগাম নিউজ দেওয়া লাগবি কেন?আমার পরিটা কই তাই বলো?
“- ঘরেই আছে যা।
“- হুমম।
ফয়েজ বোনের দরজায় নক করে উকি দিয়ে বললো
“- আসতে পারি?
“- ভাই! তানি খুশিতে লাফিয়ে উঠলো।মুখটা এমন করলো যেন কেঁদেই দেবে।
“-পাগলি! কাদছিস কেন? বোনকে জড়িয়ে মাথায় চুমো দিয়ে।
“- তুই অনেক খারাপ রে ভাই।আমাকে ভালো করে দেখতিও আসিস নে।
“- নিশ্চুপ
“- চুপ ক্যা ক!
“- সর! আমার পরিটাকে দেখে নি আগে।
“- না আগে বল! আমাকে তুই ভুলে গেলি ক্যা? সত্যি কি তোর চক্ষুশূল ছিলাম এতোদিন?
“- একটা থাপ্পড় দিয়ে দাঁত ফেলে দেবো তোর।তুই জানিস তোকে দেখতে এসে ফিরে যেতে ইচ্ছা করে না আমার।বাড়ি গিয়ে একদন্ড শান্তি পাই না।তুই ছাড়া পুরো বাড়ি খা খা করে।এখানে আসলে তোকে রেখে যেতে ইচ্ছা হয় না রে।মন চাই আমার বোনটাকে লুকিয়ে নিয়ে যায়।তারপর সেই আগের মতো মারামারি ঝগড়া সব করি।তুই ছাড়া তোর ভাইটার কিছুই ভালো লাগে না রে।
“- তালি নিয়ে গেলি না ক্যা?আমারও তো যে তোদের ছাড়া মন টিকতো না।
“- তাহলে লোকে তোকে বদনাম দিতো রে বোন।এই নিষ্ঠুর সমাজের ক্ষতি থেকে কি করে রক্ষা করতাম তোকে?আমার নিজেরই মাথা গোঁজার ঠাঁই নাই তোরে নিয়ে কই রাখতাম ক? একটা চাকরি যদি হতো সত্যি নিয়ে যেতাম।আবার ভাবলাম?
“- কি!
“- তুই খালিদকে ছাড়া আসবি নাকি? ও বেচারা তো বউ ছাড়া পটল তুলবে।বেচারার মজনুওয়ালা মুখটা ভেবে তোকে আর নিয়ে গেলাম না।হা!হা!হা
“- সর! খালি মজা করিস তুই।
“- আমার পরিটা কই? আম্মু! ও আম্মু।ভাগনির কপালে চুমু দিয়ে নরম তুলতুলে হাতটা গালে ঠেকায়।
“- তোর আম্মু ঘুমে টাল হয়ে আছে। তা এসময় আসলি যে? একটা মোবাইল করেও তো আসতি পারতি।
“- আমি কি তোর ননদায় নাকি যে মোবাইল করে আসবো?
“- দেখ কি শ্রীরি কথার? বল না!
“- আরে পরিকে দেখতে ইচ্ছা হলে তাই আসলাম।আর একটা কারন আছে।
“- বল না! এতো ন্যাকামি করিস ক্যা।
“- যা সাইকেলের পেছন থেকে ব্যাগটা নিয়ে আয় আগে তারপর কবো।
“- শয়তান একটা।খালি খাটিয়ে মারে।যাচ্ছি এরপরও যদি না কইস তালি দেহিস তোরে কি করি?
তানি বারান্দার ভেতরের এক কোণে দাড়া করানো ভাইয়ের বাই সাইকেলটার পেছনে বড় কালো ব্যাগ ভর্তি কিছু দেখে এগিয়ে গেলো।ব্যাগ টা কিছুটা ভারি। সেটা নামিয়ে রুমে নিয়ে বিছানার এক কোনে রেখে ভাইয়ের দিকে ভ্রুকুটি করে তাকিয়ে তাকিয়ে ব্যাগের গিট দেওয়া মুখটা খুলে অবাক।
“- মিষ্টি ক্যা! আর এসব কি? টিফিন বাটি টা খুলে দেখলো তাতে গরুর মাংস, কলিজা ভুনা,কবুতরের পাতলা ঝোল, ছিটা রুটি।রুটিটা এখনও গরম আছে।
“- তোর কি বিয়ে ঠিক হইছে ফয়েজ ভাই! হুম! হুম! ভাইয়ের গলা জড়িয়ে মুচকি হেসে বলে।
“- এমনি এমনি কি তোকে অংকে ফেল ছাত্রী কই? তুই আসলে শুধু অংকে ফেল না সব ফেল।মাথায় গোবর ছাড়া কিছুই নাই।
“- দ্যাখ ভালো হবি না কয়ে দিলাম।আমার মাথায় গোবর ভরা তোর মাথায় তো পটাশিয়াম সার এখন তুই ই বল এতো কিছু কি জন্যি? বাড়িতে কি নয়া কুটুম আইছিলো নি রে?
“- ছাগলি!নিচে তাকা।
“- এটা কি?
“- এটাও চিনিস না! আল্লাহ গো! খালিদ ভাই আপনি গ্রেট ভাই।আমার গাধী মার্কা বোনকে বিয়ে করে এখনও টিকে আছেন স্যালুট ভাই।
“- শয়তান! এটা যে একটা চিঠির খাম তা আমিও চিনি।কিন্তু কিসের?
“- পড়!
তানি খামটার যে দিকটা ছেড়া সেটা খুলে চিঠি পড়তেই চিৎকার করে ওঠে খুশিতে।
“- ভাই তোর আর্মিতে চাকরি হয়ছে?আলহামদুলিল্লাহ। মা! ও মা।দ্রুত পায়ে শ্বাশুড়ির ঘরে ছুটে যায় খুশির খবর দিতে।
তানির চিৎকার কায়েনাতের ঘুমটা অসময়েই ভেঙে যাওয়ায় কান্না জুড়ে দেয়।ফয়েজ ভাগনিকে কোলে নিয়ে আদরে আহ্লাদে ভাগনির কান্না থামাতে লাগলো।
|
|
আদিলের চোখে ঘুম নেই।উঠতে বসতে আজকাল মুনিয়ার কথা ভাবে।চিন-পরিচয়হীন একটা মানুষ হুট করে মনের সমস্তটা কি করে দখল করে নেয় আদিলের জানা নেই।জোয়ার্দারের নতুন বউ খুন হয়েছে আজ তিনদিন হলো।এই খুনের ত্রিসীমানায়ও আদিল ছিল না তবুও জোয়ার্দার আদিল আমির ও বড় মিয়ার নামে জিডি করেছে খুনের সাথে সংশ্লিষ্ট থাকার নাম করে।আমির মাত্র ইন্টার শেষ বর্ষে পড়ে সামনে ওর ফাইনাল।এসময় এমন বিপদ মোটেও আশা করে নি বড় মিয়ার পরিবার।আদিলের এক বন্ধু পুলিশের এসপি।তার কথাতেই আদিল মুনিয়ার সাথে দেখা করে।মুনিয়াকে দেখামাত্রই লাভ এট ফাস্ট সাইট হয়। অথচ আদিল সবসময়ই প্রাকটিক্যাল গোছের মানুষ।এসব প্রেম ভালোবাসার আদিখ্যেতা কখনোই স্পর্শ করে নি আদিলকে।নিজের মন নিজের অজান্তেই দিয়ে বসেছে রগচটা,রুক্ষ মেজাজের শ্যামলীমা সুন্দরী মুনিয়াকে।মুনিয়ার বাজের মতো চাহনীর হরিনী চোখের মোহে পড়ে আছে। নিজের মাথার উপরের বিপদ সব ভুলে হ্যাবলার মতো চেয়ে ছিল মুনিয়ার দিকে আদিল।মুনিয়ার সেদিকে ভ্রুক্ষেপ ছিল কি না জানে না আদিল।মুনিয়ার বলা ঝাঁঝালো গলার তীক্ষ্ণ স্বর কেন যেন নজরুলের প্রেমবীণার মতো আদিলের মনে ঝঙ্কার তোলে।কাল আবার যাবে। যেতে যে হবেই বিপদ উদ্ধার কিংবা নিজের মন উদ্ধার দুটোর খাতিরেই।
“- কিরে তাজ?দুস্ত এহানে বসে একাই মজা খাচ্ছিস? আমাগের কথা মনে নাই।
“-টাকা নিয়ে যা!
“- তিন বোতল বাংলা তুই একাই খাবি? কি কইস?
“- এতেও হবি না রে।যা আরও নিয়ে আয়।বুকের জ্বালা এহনও দাও দাও করে জ্বলছে।
“- ছাড়! যা বাড়ি যা।এতো খালি মাথা নষ্ট হয়ে যাবেন তোর।হুশ জ্ঞান ভুলে যাবি তহন।
“- আমি তো তাই চাই রে সোহাগ। আমার হুশ জ্ঞান সব ঐ তানির কথা মনে করাই দেয়।তহন তো বুকটা জ্বলে আমার।সেইরম জ্বলে রে।
“- ক এহনি শালিরে উঠোয় নিয়ে আসি।সব জ্বালা একবারে মিটাবি তহন।
“- না!এহন না।সময় সুযোগ হোক আগে। তহন আমিই আমার জ্বালা মিটানোর রাস্তা খুঁজে নিবানে।জ্বলে জ্বলে কয়লা না হলি ওরে দাগ দেবো কি করে?এহন যা টাকা নিয়ে বাজার তে আরও মদ কিনে নিয়ে আয়।
“- আজ আর না রে তাজ! তোর চোখ মুখ লাল হয়ে আছে।বাদ দে এসব।তুই যে দিন কে দিন পশু হয়ে যাচ্ছিস তাজ।
“- হা! হা! হা! সত্যি? সত্যি সোহাগ?
“- হ! না হলি নুরুন্নাহাররে এমন করে মারলি কি করে? আমার তো মনে পড়লি এহনও হাত পা কাঁপে।
“-ওয়াক থু! শালি বদ! ওরে তো কাপড় খুলে পুরো গিরাম ঘুরায়ে তারপর গুলি করে মারা উচিত ছিল।
“- তুই কি কইস! ও তোর মা ছিল?
“- মা! কিসের মা? আমার মার সংসার নষ্ট করেছে ও।স্বামী সোহাগ কোনোদিনই পাতি দেয় নি আমার মা’টারে ও।আমার চোখের সামনে আমার মার বিছানায় শুয়ে থাকে।ওরে কি ছাড়ে দিতাম? দিছি শালির মাথার ঘিলু বাইর করে।কথাটা বলা শেষ করে ঢুলুঢুলু চাহনীতে সিগারেটে টান মেরে আকাশে ধোঁয়া উড়ায় তাজ।
“- সবই বুঝলাম।কিন্তু আদিলদের নামে কেস দিলি ক্যা?
“- ঐ টাই তো ফাঁদ।আমার জ্বালা নিভানোর পথ।সময় হলিই বুঝবি।এহন যা। আর কথা বাড়াস নে।
“- তাজ!
“- যা কচ্চি! নয়তো তোর কপাল ফুটো করে দিবানে।জানিসই তো আমি আর মানুষ নেই তাই ভুলেও মানুষির মতো আচরণ আশা করিস নে।যা!
তাজের চোখে মুখের ভাব সত্যি ভয়ানক হয়ে গেছে।মানুষের ভেতর শয়তান দখল করলে যেমনটা হয় তাজের ভেতর বাহির এখন তেমনটাই। যে ছেলে উড়নচণ্ডী, খামখেয়ালি ছিল বটে কিন্তু রুক্ষ, বদ কোনোদিন ছিল না সে আজ শয়তানের রূপ ধরেছে।সোহাগ রাস্তা দিয়ে যেতে যেতে ভাবে নুরুন্নাহারকে হত্যার দিনের ঘটনা।ঐদিন রাতে আব্বাস জোয়ার্দার যেসব নেতার কারনে জেল থেকে অতি ধূর্ততার সাথে মুক্তি লাভ করে তাদের কাছে কৃতজ্ঞতা ও চাটুকারিতার জন্য যায়।তানির কাছে প্রত্যাখ্যাত হয়ে তাজের মেজাজ এমনিতেও ভালো ছিল না।এসব অপমান, দুঃখ ভুলতে তাজ মদ,চুরুটের নেশায় ডুবতে থাকে।ঐদিনও অতিরিক্ত নেশায় ধুন্ধ হয়ে বাড়ি ফিরে আধা ঘন্টা যাবত কেচি গেট ঠক ঠকিয়েও যখন কোনো সাড়া পায় না তখন খুন চেপে যায় তাজের মাথায়।এমনিতে নেশায় হিতাহিতজ্ঞানশূন্যতা তারউপর আধা ঘন্টা পর নুরির দরজা খোলা দেখে তাজ চিৎকার করে অশ্রাব্য ভাষায় গালাগালি শুরু করে।নুরি কে যা তা বলে গালি দেয়।নুরিও কম যায় না।ইচ্ছা করে তাজকে বাইরে রেখে শাস্তি দিয়ে যখন এসব গালাগালি শুনলো তখন নুরিও তাজ ও তাসলীকে নিয়ে বাজে বাজে কথা বলা শুরু করলো।মৃত মায়ের সম্পর্কে খারাপ কথা শুনে নেশার ঘোরে রাগা রাগীর একপর্যায়ে, তাজ বাপের ঘরের আলমারি থেকে লাইসেন্স ছাড়া সাইলেন্সার করা পিস্তলের ট্রিগার চেপে নুরির চুলের মুঠি ধরে কপালের দু সাইডে দুটো গুলি করে দেয়।সোহাগ তাজের পেছনেই আসছিল।বাইরের গ্রিলের ফাঁক দিয়ে এসব দেখে হাত পা ঠান্ডা হয়ে গিয়েছিল সোহাগের।তাজের চোখের সামনে না পড়লে ঐদিন দৌড়ে হাফ ছাড়তো সোহাগ।কিন্তু বন্ধুকে একা এ অবস্থায় রেখে যাওয়া যাবে না।রাতের নিস্তব্ধতা ভেঙে আরো দু বন্ধু সহ নুরির লাশ গ্রামের শেষে মাঠের আইলে ফেলে দিয়ে আসে।ঘর দোর পরিষ্কার করে ভেতরে কৌশলে দরজা লাগিয়ে তাজকে নিয়ে আবার মদ জুয়ার আড্ডায় চলে আসে।তাজের চোখে মুখে তখনও পৈশাচিক আনন্দের ছাপ।এসব ভাবতে ভাবতে সোহাগ কখন যে বাজারে চলে এসেছে টের ও পেলো না।পাশ দিয়ে যাওয়া গ্রামবাংলার ভটভট শব্দে ধ্যান ভাঙতেই মদের দোকানের দিকে দ্রুত পায়ে চলতে থাকে।
তানি ভাই সহ সবাইকে নিয়ে খেয়ে দেয়ে ঘুমানোর প্রস্তুতি নেয়।ফয়েজ তিনদিন পরই সাভার চলে যাবে ১ বছরের আর্মি ট্রেনিং এর জন্য। আজ বাড়ি যেতে গেলেও খাদিজা ও তানি জোর করায় ফয়েজকে থেকে যেতে বাধ্য হয়।রাতে ফয়েজের বিছানা খাদিজার ঘরে করা হয়।খাদিজা, লিজা এমনিতেও তানির সাথে ঘুমায়।ফয়েজ চোখ বন্ধ করতেই লিজার ছবি ভেসে ওঠে। চোখ খুলতেই দরজায় মাথা নিচু করে দাড়ানো হাতে জগ সহ লিজাকে দেখে ধড়ফড়িয়ে উঠে বসে।
“- আপনি?
“- জ্বী! রাতে যদি আপনার পিপাসা পায় তাই ফুপু দিতে বললো।
“- আমার পিপাসা তো জগের পানিতে মিটবে না বেয়াইন।
“- আমি যাই।
“- বেয়াইন! আর কতো অপেক্ষা করতে হবে বলে যান।অপেক্ষায় অপেক্ষায় আমার হৃদয় শুকিয়ে বিরান চর হয়ে যাচ্ছে।
“- ভালোই তো! সেই চরে ঘর বেধে নিলেই তো হবে।
“- আপনি পাশে থাকলে চর কেন পানির উপরও আমি ঘর বাঁধতে রাজি।থাকবেন তো পাশে?
“- আল্লাহ মালুম।লিজা একদৌড়ে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে যায়।
ফয়েজ দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে লিজার রেখে যাওয়া জগটার দিকে তৃষ্ণার্ত চাহনীতে চেয়ে রয়
” সামনে আমার জলের সাগর। তবুও তৃষ্ণা না মেটে বেয়াইন।আপনার প্রেমের তৃষ্ণায় মরি আপনি বুঝেও না বোঝেন আমায়।”
চলবে,,