গোধূলি বেলায় প্রেম পর্ব-৪০

0
3071

#গোধূলি_বেলায়_প্রেম
#ফাবিহা_নওশীন

|পর্ব-৪০|

রীতি বাবার সঙ্গে আজ ভার্সিটিতে যাচ্ছে।বাসের মধ্যে খালি সিট নেই।রীতিকে একটা সিট ম্যানেজ করে দিয়ে রীতির বাবা রীতিকে এক প্রকার আগলেই দাঁড়িয়ে আছে।
রীতিকে বাসস্টপে নামিয়ে দিলো।তারপর মুচকি হেসে বললো,”সাবধানে যাস”।বাসস্টপ থেকে ৫-৭মিনিট হেটেই রীতির ভার্সিটি।
রীতি বাবাকে হাসিমুখে বিদায় দিয়ে বাস থেকে নেমে গেলো।

রীতি হাটছে আর ভাবছে,
“কি করবো আমি? বাবার ভালোবাসা উপেক্ষা করতে পারছিনা।বাবা আমায় কিছুক্ষণ আগেও আদর করে ভাত মাখিয়ে খাইয়ে দিলো।খাবো না বলে বাচ্চাদের মতো আদর করে নানান কথা বলে খাইয়ে দিলো।কি করবো আমি একদিকে সাদিব আর এক দিকে আমার গোটা পরিবার?বাবা-মা যারা কিনা আমায় ২১ বছর আগলে রেখেছে তাদেরকে ধোকা দিয়ে সাদিবের হাত ধরে চলে যাবো?তাদের স্নেহ, ভালোবাসা উপেক্ষা করার ক্ষমতা কি আমার আছে?আমি যদি আজ বাড়িতে না ফিরি তাহলে বাবার রিয়েকশন কি হবে?বাবা যদি অসুস্থ হয়ে পড়ে?আবার যদি হার্ট….? না না আমি এ-সব কি ভাবছি।”

রীতি দুটানায় পড়ে গেছে।কি করবে?কাকে ছাড়বে?সাদিবকেও যে বড্ড ভালোবাসে।কিন্তু স্বার্থপর হতে পারছেনা।
রীতি হাটতে হাটতে ভার্সিটির গেটের সামনে এসে পড়েছে।রীতি গেটের সামনে দাড়িয়ে সাদিবকে একটা মেসেজ করলো।তারপর ভার্সিটিতে ঢুকে গেলো।ক্লাসে না গিয়ে ক্যাম্পাসে গিয়ে বসলো।রীতি কিছুক্ষণ নীরব থেকে একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো।
রীতি ডিসিশন নিয়ে ফেলেছে।

সাদিব শুয়ে ছিলো রীতির মেসেজ পেয়ে দ্রুত রেডি হয়ে নিলো ভার্সিটিতে যাওয়ার জন্য।সাদিব জানে আজ রীতি কি বলবে।

রীতি উঠে দাড়ালো।ভার্সিটির শহীদ মিনারের পেছনে গিয়ে দাড়ালো।রীতি মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে,টেনশনে দাত দিয়ে নখ কাটছে।হৃদয়ে কম্পন শুরু হয়ে গেছে।সাদিব ধীরপায়ে আসছে।রীতি সেদিকে তাকাচ্ছে না।
সাদিব ওর সামনে এসে দাড়ালো।রীতির দিকে ভালোভাবে চোখ বুলিয়ে নিলো।রীতি মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে তখনো।তারপর মাথা তুলে আমতা আমতা করছে।আঙ্গুলে আঙ্গুল ঘটছে।শুকনো মুখে কিছু বলবে তার আগেই সাদিব হাত তুলে থামিয়ে দিলো।

সাদিব গম্ভীর গলায় বললো,
—-“আমি জানি তুমি কি বলবে?”

রীতি অসহায় ভাবে সাদিবের দিকে তাকালো।

সাদিব শুকনো হেসে বললো,
—-“তোমার উত্তর হ্যা হলে আমাকে এখানে ডাকতে না।তুমি আমাকে মেসেজ করেছো কারণ তুমি কথা বলতে পারছিলে না,তোমার বাধছিলো।তাই মেসেজ করে ডেকে এনেছো।তা সামনাসামনি ডেকে কষ্টটা না দিলে হচ্ছিলো না?মেসেজ করেই বলে দিতে।”

রীতি সাদিবের দিকে আরেকটুখানি এগিয়ে বললো,
—-“সাদিব,এটা ঠিক না।আমাদের এমন কিছু করা উচিত না।আমরা ভালোবেসেছি,পাপ করিনি।লুকিয়ে বিয়ে কেনো করবো?”

সাদিব রেগে গিয়ে বললো,
—-“আচ্ছা,তাই নাকি?পাপ করিনি?তবে শাস্তি কেনো পাচ্ছি?বলো কেনো শাস্তি পাচ্ছি?”

রীতি চুপ করে গেলো।সাদিব আবারো হেসে উঠলো।তারপর মলিন মুখে বললো,
—-“জবাব নেই তাই না?কেউ কিছু হারায়নি রীতি।আমি,এই আমি সব হারিয়েছি।সব হারানোর পরে ভেবেছি রীতি আছে।আজ সেও নেই।আমি একদম শূন্য হয়ে গেছি।কিছু নেই আমার।”

সাদিবের কথা শুনে রীতির বুক ছ্যাৎ করে উঠলো।
—-“সাদিব কি বলছেন? আমি নেই?আমি আছি।বিশ্বাস করুন।”

সাদিব আবারো করুন সুরে বললো,
—-“নাহ,নেই তুমি।তুমিও সময় মতো আমাকে ছেড়ে চলে যাবে।সব হারিয়ে আমি একদিন নিঃস্ব হয়ে যাবো।হয়তো সেই দিনটা আজ।”

রীতি মিনতির সুরে বললো,
—-“সাদিব দয়া করে এমন কথা বলবেন না।আমি সারাজীবন থাকবো আপনার সাথে।”

—-“যে এই মুহুর্তে আমার হাত ধরতে পারছেনা সে সারাজীবন কি করে থাকবে?তুমি থাকো তোমার পরিবারের সাথে।সুখে থাকো তাদের সাথে।ভালো থেকো।আমি শূন্যই থেকে যাবো আজীবন।”
সাদিব বড্ড অভিমান নিয়ে শীতল কণ্ঠে কথাগুলো বললো।

রীতির চোখ বেয়ে পানি পড়ছে।রীতি সাদিবের হাত ধরে বললো,
—-“এমন করছেন কেনো?একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে।আমাদের দু – পরিবার সব মেনে নিবে।আপনিও বাড়িতে ফিরে যাবেন।সব ঠিক হয়ে যাবে।”

সাদিব হাত ছাড়িয়ে নিয়ে বললো,
—-“তা আর হওয়ার নয়।এই স্বপ্ন আমি আর এখন দেখি না।ভালো থেকো।আমার খোজ আর করোনা।”

রীতি সাদিবের কথা শুনে কান্নার বেগ বাড়িয়ে দিলো।
—-“সাদিব আপনি এটা করতে পারেন না।আপনি আমাকে ভালোবাসেন।আমিও আপনাকে খুব ভালোবাসি।আপনি রাগের মাথায় এ-সব বলছেন।আপনি পারবেন না আমাকে ছাড়া থাকতে।নিজেকে আর কষ্ট দিবেন না।”

সাদিব রীতির কথা পাত্তা না দিয়ে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললো,
—-“ভালো থেকো।”

সাদিব চলে যাচ্ছে রীতিকে ছেড়ে।রীতি সাদিবের পেছনে পেছনে সাদিবকে মানানোর চেষ্টা করছে।সাদিব ঘুরে রাগী ফেস করে বললো,
—-“আমার পেছনে পেছনে একদম আসবে না।আমাকে একা থাকতে দেও।প্লিজ আসবেনা।”

রীতি দাঁড়িয়ে গেলো।তারপর বললো,
—-“আমাকে ছেড়ে যাবেন না প্লিজ।আমি আপনাকে খুব ভালোবাসি।আপনি কথা দিয়েছিলেন আমার হাত কোনোদিন ছাড়বেন না।তবে আজ কেনো চলে যাচ্ছেন?”

সাদিব পেছনে ঘুরছেনা,একবারের জন্য রীতিকে দেখছেনা।নিজের মতো চলে যাচ্ছে।রীতি কাদতে কাদতে বসে পড়লো।সাদিব যেনো ওর কলিজা ছিড়ে নিয়ে যাচ্ছে।
আর বিরবির করে বললো,
—-“সাদিব আমাকে ছেড়ে যাবেন না।আমাকে ছেড়ে যাবেন না।”

রীতি ঘাস খামচে ধরে কেদে যাচ্ছে।আশেপাশে কি হচ্ছে,কে আছে কিছুই পরোয়া করছেনা।সাদিব ওর ভালোবাসা ওকে ছেড়ে চলে গেছে।
রীতির সামনে কেউ হাটু গেড়ে বসেছে।রীতি চোখ তুলে তার দিকে তাকালো কান্নারত অবস্থায়।
সাদিব হাটু গেড়ে বসে আছে।ওর চোখের কোনেও পানি জমে আছে।রীতি সাদিবকে দেখে কান্না না থামিয়ে আরো বাড়িয়ে দিলো।

রীতি সাদিবের দু-কাধে দু-হাত রেখে বললো,
—-“আপনি আমাকে ছেড়ে যাবেন না।আমি জানি,আমার রব জানে আমি আপনাকে কতটা চাই,কতটা ভালোবাসি।কিন্তু এইভাবে আমি কিছুতেই বিয়ে করতে পারবোনা।আমার হাত-পা বাধা।আমি আপনার জন্য সব ছেড়ে দিতে পারি কিন্তু বাবাকে কি করে ছাড়তে পারি?বাবার অপরাধ কি?বাবা আমাকে গতকাল ক্ষমা করেছে এতোদিনে,গতকালই কথা বলেছে আমার সাথে।আর আজকেই আমি এমন একটা কাজ কি করে করতে পারি?
কিন্তু আমি আপনাকে ভালোবাসি খুব।আমার অনেক কষ্ট হচ্ছে।আমাকে ছেড়ে যাবেন না।”
রীতির কাদতে কাদতে হেচকি উঠে যাচ্ছে।কান্নার জন্য কথাও ঠিক করে বলতে পারছেনা।
সাদিব রীতিকে শান্ত করছে।
—-“রীতি,রীতি!কুল।কান্না বন্ধ করো।”

রীতি কিছুতেই ঠান্ডা হচ্ছে না।কান্নাও থামাচ্ছে না।সাদিব রীতিকে বললো,
—-“এই চুপ করো।নয়তো এখন মারবো খুব।যাচ্ছি না বাবা,কোথাও যাচ্ছি না।এই পাগল মেয়েটাকে রেখে কি যাওয়া যায়?চাইলেও যাওয়া যাবে না।যেমন আজ পারলাম না।”

রীতি কান্না বন্ধ করে বললো,
—-“প্রমিস!!”

সাদিব মুচকি হেসে বললো,
—-“প্রমিস!ভালোবাসি যে খুব।”

—-“আমিও বাসি।কোনো একদিন সুযোগ পেলে প্রমাণ করে দেবো।”

সাদিব যতই যা বলুক না কেনো,ওর ভেতরে রাগ না হলেও অভিমানেরা জড়ো হয়েছে।কিন্তু কি করবে রীতিকে ভালোবাসে যে খুব।রীতিকে ছাড়া থাকতে পারবেনা।

রাসেল ভাইয়ের সাথে সাদিবের এতো সখ্যতা জনি পছন্দ করছে না।গতকালই বলেছে,
—-“সাদিব,তোকে বলেছি না রাসেল ভাইয়ের সাথে এতো ভাব বাড়ানোর দরকার নেই।উনি খুব অদ্ভুত একজন মানুষ।উনার কথা বার্তা সব অদ্ভুত।রহস্যময় একজন মানুষ।আজ পর্যন্ত উনাকে বুঝতে পারলাম না।তাই আমি উনাকে যথাসম্ভব এড়িয়ে চলি।তুই ও এড়িয়ে চলবি।”

সাদিবের উত্তর ছিলো,
—-“আরে অদ্ভুত না।উনার আট বছরের রিলেশনের গার্লফ্রেন্ড উনাকে ছেড়ে চলে গেছে।তাই দেবদাস দেবদাস ভাব।ওনার কথায় কাজে তাই অন্যরকম টান আসে।তুই বুঝবিনা।”
সাদিবের রাসেলকে পছন্দ হয়ে গেছে তাই রাসেলকে মেনে নিচ্ছে।

.

সাদিবের মা রোজ সাদিবের বাবার সঙ্গে ঘ্যানঘ্যান করে ছেলের জন্য,কান্নাকাটিও করে খুব।সাদিবের বাবা রুড ব্যবহার করলেও তিনিও ইদানীং ছেলের জন্য ভেতরে ভেতরে কষ্ট পাচ্ছেন।কিন্তু নিজের জেদ বজায় রাখছেন।
রীতি একবার সাদিবের মায়ের সঙ্গে সাদিবকে নিয়ে কথা বলেছিলো সাদিব জানার পর অনেক রাগ করেছে তাই আর রীতি এ নিয়ে কথা বাড়ায়নি।

.

রীতির টেস্টের পরীক্ষার রেজাল্ট দিয়েছে রীতি টেনেটুনে পাশ করেছে।
যে কিনা সব সময় পরীক্ষায় টপ রেজাল্ট করে।সাদিব রীতির রেজাল্ট জেনে রেগে গেছে।আর বলেছে,
—“রীতি তুমি পড়াশোনা বাদ দিয়ে কি করছো?তুমি নিশ্চয়ই আমাকে নিয়ে আজকাল বেশী ভাবছো যদি তাই হয় আমি কিন্তু তোমার সাথে আর কিছু শেয়ার করবোনা।তুমি প্লিজ পড়াশোনা ভালো করে করো।ফাইনাল পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট না করলে তোমার বাবা
কিন্তু ভিষণ রেগে যাবে।আমাদের দুজনের প্রব্লেমের জন্য তোমার পরিবারের,তোমার বাবার স্বপ্ন নষ্ট করার মানে হয়না।তাই আজ থেকে ফাইনাল পরীক্ষা না হওয়া পর্যন্ত আমার সাথে দেখা করা যাবেনা।সারাদিন ফোনে কথা বলা যাবেনা।প্রতিদিন সন্ধ্যায় একবার কথা বলা যাবে।”

রীতি বই খোলে বসে আছে।কিন্তু পড়ায় মন নেই।ওর ইচ্ছে করছে না পড়তে।অপেক্ষায় থাকে কখন সন্ধ্যা হবে।আর কখন সাদিবের সাথে কথা বলবে।
রীতি ফোন হাতে নিলো সাদিবকে ফোন করার জন্য কিন্তু সাহস পাচ্ছেনা।রীতি সাদিবের সব কথা মেনে চলে।একটুও ভুল করতে চায়না।সাদিবকে কষ্ট দিতে চায়না।তাই আর ফোন দেওয়া হয়ে উঠেনা।

.

কয়েকদিন পরে রীতির থার্ড ইয়ার ফাইনাল পরীক্ষা।রীতি ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে।সন্ধ্যায় সাদিবের সাথে টুকটাক কথা হয়।তবে খুবই অল্প।
রীতি ফোন করবেনা করবেনা করেও ফোন করলো সাদিবকে।সাদিব ফোন রিসিভ করতেই রীতি চুপ করে আছে।কথা বলছে না।

সাদিব রীতিকে নীরব দেখে বললো,
—-“কি হলো চুপ করে আছো কেন?”

রীতি সাদিবের কন্ঠস্বর শুনে কিছুটা সাহস পেলো।তারপর বললো,
—-“আপনাকে ফোন করলাম আপনি কি রাগ করলেন?”

—-“নায়য়।রাগ কেনো করবো?”

—-“তাহলে বিরক্ত হলেন?”

সাদিব মৃদু হেসে বললো,
—-“যার সাথে আমি সারাজীবন থাকতে চাই।যার কন্ঠস্বর শোনার জন্য ব্যাকুল হয়ে থাকি।যার কন্ঠস্বর আমাকে প্রশান্তি দেয়,নতুন করে বাচার ইচ্ছে জাগায়,তার কন্ঠস্বর শুনে আমি বিরক্ত বা রাগ করবো?অসম্ভব।আমি তোমার সাথে কড়া ব্যবহার করছি তোমার ভালোর জন্য।পরীক্ষা হয়ে যাক তারপর দিন-রাত কথা বলবো।”

রীতি ব্যাকুল কন্ঠে বললো,
—-“আপনাকে দেখতে ইচ্ছে করে খুব।”

সাদিব দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললো,
—-“আমাকে না দেখাই ভালো।”

—-“কেনো?এটাও বারণ?”

—-“আমাকে দেখলে হয় কান্না করবে নয়তো টেনশন করবে।আবার এমনও হতে পারে আর ভালোবাসবে না।আমি আর সেই আগের মতো ড্যাশিং বয় সাদিব নেই।অনেক শুকিয়ে গেছি।চেহারাও নষ্ট হয়ে গেছে।তোমার সাথে দেখা করতে প্রচন্ড ভয় হয়।”

—-“ভয়?আশ্চর্যজনক কথা।আপনি ঠিক মতো খাওয়াদাওয়া করেন না তাই না?আর কি বললেন আপনি? আমি আর ভালোবাসবো না?আমি আপনার বাইরের রুপ দেখে প্রেমে পড়েছিলাম এটা ঠিক কিন্তু আপনাকে জানার পর,বুঝার পর,চেনার পর ভালোবেসেছি ভেতরটাকে।আপনি মানুষটাকে ভালোবেসেছি।”

সাদিব বললো,
—–“সিরিয়াসলি নিচ্ছো কেনো?মজা করেছি।আচ্ছা রাতে ফোন দেবো।এখন একটু বেড়ুতে হবে।নিজের খেয়াল রেখো।”

রীতি আচ্ছা বলে ফোন রেখে দিলো।রীতির এখন একটু শান্তি লাগছে।

সাদিব রাসেল ভাইয়ের সাথে বের হচ্ছে।উনার সাথে সাদিবের বিভিন্ন জায়গায় যাওয়া-আসা হয়।
সাদিবের টাকার প্রয়োজন।যা টাকা ছিলো এই কয়মাসে ফুরিয়ে গেছে।তাই বাইক বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে।রাসেল ভাই খদ্দের নিয়ে এসেছে।সাদিব এর আগে অনেক বার ভেবেছিলো বাইক বিক্রি করার কথা কিন্তু অজানা কারণে পারেনি।হয়তো রীতির জন্য।রীতিকে যে বাইকের মালিক বানিয়েছিলো ভুলবে কি করে।কিন্তু আজ সাদিব নিরুপায়।

রাসেল ভাই খদ্দেরের সাথে কথা বলছেন।সাদিব উদাসীন ভাবে বসে আছে।কিছু ভাবছে।রাসেল ভাই দামাদামি করে দাম ফিক্সড করে সাদিবের কাছে এসে মেকি হেসে বললো,
—-“কাজ হয়ে গেছে ছোট ভাই।এখনি নগদ টাকা দিয়ে দিবে।”

সাদিব চমকে গেলো।তারপর বাইকের দিকে তাকালো।এই বাইকে করে রীতির সাথে কত ঘুরে বেড়িয়েছে।রীতিকে কথা দিয়েছিলো যতদিন এই বাইক আছে পেছনের সিটটা রীতির।কিন্তু আজ এই বাইক অন্য কারো হয়ে যাচ্ছে।
সাদিব হুট করে বললো,
—-“আমি বাইক বিক্রি করবো না।”

রাসেল ভাই অবাক হয়ে বললো,
—-“মানে?বিক্রি করবে না মানে কি?এই তো বলছিলে বিক্রি করবে।তাই উনাকে এনেছি।”

সাদিব কি বলবে বুঝতে পারছেনা।
—-“বিক্রি করবোনা কারণ এই বাইক আমার নয়।অন্য কেউ এই বাইকের মালিক।আমি ধার নিয়েছি।”

রাসেল ভাই বিরক্তি নিয়ে সাদিবের দিকে চেয়ে আছে।
তারপর বাইক নিয়ে চলে গেলো।রীতির বাইক করবে না বিক্রি।

চলবে….