গ্রামের লাজুক মেয়ে পর্ব-১৬

0
850

#গল্পঃ গ্রামের লাজুক মেয়ে ?
#লেখকঃ Md: Aslam Hossain Shovo
#পর্বঃ ১৬…

√-আমি রিতুর সামনে গিয়ে বললাম-

আমিঃ কেমন আছো রিতু…?

রিতুঃ আপনি কে?

আমিঃ আপনি করে বলছো যে, কেমন আছো বলো..? (অবাক হয়ে)

রিতুঃ আপনাকে তো আমি চিনলাম না। আপনি কে..? আমি তো অপরিচিত সবাই কে আপনি করে বলি।

আমিঃ আমি শুভ। তুমি আমায় চিনতে পারছো না?

রিতুঃ না আমি আপনাকে চিনি না। প্লিজ এখান থেকে চলে যান।

~ কাকিমার দিকে তাকিয়ে বললাম-
আমিঃ আন্টি, তাহলে কি রিতুর আগের সব সৃতিশক্তি হারিয়ে গিয়েছে, সে সব ভুলে গিয়েছে..?

রিতুঃ ওই সয়তান, আমার সব মনে আছে। আমি আপনাকে চিনি না বায়।

~ বুঝতে পারলাম রিতু আমার উপর রাগ হয়েছে খুব । রাগ তো হওয়ার কথায়, যার কেনো দোষ নেই, তাকে তার জন্য দোষী করতে রাগ তো হওয়ার কথায় ~

আমিঃ রিতু আমার ভুল হয়ে গিয়েছে। আমায় মাফ করে দেও সরি…

রিতুঃ বললাম না আপনাকে আমি চিনি না, আপনি এখান থেকে যান বলছি (খুব চিৎকার করে)

~ এর মধ্যে ডাক্তার এসে বললো, রিতুর অভিভাবকদের সাথে কথা বলবে। রিতুর আব্বু আম্মু ও আমার ভাইয়া চলে গেলেন ডাক্তারের সাথে কথা বলতে। কেবিনে আমি, রিতু ও ঈশা ~

আমিঃ সোনা পাখি, প্লিজ রাগ হও না। আমার ভুল হয়ে গিয়েছে, আর কখনো ওমন হবে না।

রিতুঃ আপনাকে না বললাম আমি, এখানে না থাকতে, আপনি তাও এখানে কেনো..? (চিৎকার করে কেদে দিলো)

আমিঃ রিতু একবার…..

রিতুঃ আপনি যান বলছি, নাহলে কিন্তু (কান্না করে)

ঈশাঃ ভাইয়া আপনি বাইরে গিয়ে দাঁড়ান। নাহলে বুবু আরো অসুস্থ হয়ে যাবে।

~ আমি মাথা নিচু করে বের হয়ে যাচ্ছি। রিতুর দিকে তাকিয়ে দেখি কান্না করছে। আমি যেই কেবিন থেকে বের হবো, আর রিতু বলে উঠলোঃ আমাকে রেখে সে চলে গেলে আমি নিজেকে শেষ করে ফেলবো বলে দিলাম ।

আমিঃ তুমিই তো বললে চলে যেতে (পিছনে তাকিয়ে)

রিতুঃ হুমম বলছি চলে যেতে, কারণ এখন আর আপনাকে আমার একদম সহ্য হচ্ছে না। আপনার সাথে কথা বলতেও ঘৃণা হচ্ছে আমার, আপনি আমার মুখের সামনে থেকে চলে যান প্লিজ, দোহাই লাগে আপনার (কান্না করে)

আমিঃ ওহহ ভালো (আবার দরজার দিকে হাঁটতে শুরু করলাম)

রিতুঃ খোদার কসম করে বলছি, আমি এখন কিন্তু নিজেকে শেষ করে ফেলবো (কান্না করে)

আমিঃ কি শুরু করলে? একবার যেতে বলো, আবার মানা করো, আমাকে কি পাগল পাইছো..?

রিতুঃ জানিনা… (হাউ মাউ করে কান্না করছে)

আমিঃ জানিনা মানে, আমি এখন কি করবো বলো তাহলে?

রিতুঃ জানিনা। আপনি আমার সামনে থেকে প্লিজ চলে যান, কিন্তু যখনি দূরে সরে যাবেন আমি নিজেকে শেষ করে দিবো বলে দিলাম ?

~ মেজাজ গেলো গরম হয়ে, শরীরের সব জোর দিয়ে দিলাম একটা ঝারি ~
আমিঃ ওই মেয়ে, আমাকে কি পাগল পাইছো নাকি, একবার যাও একবার আসো… নাকি পাগল করার ইচ্ছা আছে আমাকে, কি হলো বলো?? (জোর গলায়)

~ রিতু ছিটকে উঠছে ভয়ে ঝারি খেয়ে। ভয়ে একটু সরে বসে পড়লো, সাথে সাথে কান্না বন্ধ, চোখে মুখে ভয়ের ছাপ… দেখে হাসি পেলেও হাসি দিলাম না। যাই হক আমার কথায় ভয় পাইছে এতেই অনেক। আরেকটু ভয় দেখাতে আবারো জোরে চিৎকার করে বললাম-
আমিঃ কি হল বল, বলছি..?

রিতুঃ আচ্ছা আমি তোমার সাথে প্রেম করতে রাজি কিন্তু একটা শর্ত আছে (মাথা নিচু করে, চোখের পানি মুছতে মুছতে নরম কন্ঠে)

আমিঃ এই তো পিচ্চি, এবার লাইনে আসছো, বলো এবার কি শর্ত..?

রিতুঃ আমায় আজই বিয়ে করতে হবে ও এখুনি।

আমিঃ কি বলছো এই সব? এটা কিভাবে সম্ভব?

রিতুঃ আমি কিছু জানি না। আমি আর বাড়ি যাবো না। আমি তোমার সাথে যাবো। বাড়ি এবার যদি আমার যেতে হয়, তাহলে আমি আর বাঁচবো না বলে দিলাম ?

আমিঃ মাথা ঠান্ডা করো তুমি, সোনা এটা তো জোর করে বিয়ে করা হয়।

রিতুঃ হক জোর করে বিয়ে করা, তাও আমি করবো। প্লিজ তুমি আমায় মানা করো না।

আমিঃ রিতু তুমি বুঝার চেষ্টা করো, আমি এখনো ছোট মানুষ। বিয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়ার যোগ্য এখনো হয় নাই তো?

রিতুঃ বুইড়া বেটা, সে নাকি ছোট। আজ বিয়ে দিলে কাল হবে ৫ সন্তানের বাপ, সে আইছে ছোট সাজতে। বিয়ে করবে নাকি বলো…? নাহলে কিন্তু… ?

ঈশাঃ ডার্লিং ডার্লিং তুমি বিয়ে করে নেও ওকে…

আমিঃ চুপ সালি, বিয়ে করা কি মুখের কথা?

ঈশাঃ একদম ঠিক বলছো ডার্লিং। বুবু তো সেটা বুঝে না। এক কাজ করো বুবুর সাথে তুমি তার চেয়ে ব্রেকআপ করে দেও। আমার সাথে রিলেশন করো ☺

রিতুঃ তুই কিন্তু ঈশা খুব বেশি কথা বলিস। বড়দের মাঝে তুই কথা বলিস কোন সাহসে? এমন একটা দিবো, পরে কান্না থাকবে না… ?

~ ঈশা চুপ হয়ে গেলো…..
যাক হবু বউ আমার তার পাজি বোনকে শাসন করতে শিখছে, তারমানে একটু বড় হয়েছে সে, হা হা….

ভাবতে লাগলাম কি করা যায় এখন, কি টেনশনে ফেললো। বিয়ে করাও তো মুখের কথা না, কত ঝামেলা। ঈশার দিকে তাকিয়ে বললাম, কি করবো এখন?.. ঈশা বললো, তাহলে আব্বু আম্মু কে ডাক দেয়। আমি মানা করলাম। ভাইয়া যখন আমার বন্ধুর মতই ফ্রী, ভাইয়াকে আগে বলে দেখি। ঈশাকে বললাম রিতুর খেয়াল রাখতে। আমি হসপিটাল থেকে বাইরে বের হয়ে ভাইয়াকে কল দিলাম…

আমিঃ ভাইয়া তুমি কোথায়..?

ভাইয়াঃ এই তো রিতুর কেবিনের দেখি আসছি।

আমিঃ একটু হসপিটাল থেকে বের হয়ে আসো তো। আমি বাইরে দাড়িয়ে আছি। খুব তাড়াতাড়ি আসো…

~ ভাইয়া তাড়াতাড়ি চলে এলো। ভাবছে আমার শরীর খারাপ করছে ~

ভাইয়াঃ কি হয়েছে, শরীর খারাপ লাগছে.?

আমিঃ না তো। এমনি একটা বিপদে পড়ছি।

ভাইয়াঃ কি বিপদ…?

আমিঃ রিতু বলিতেছে এখনি তাকে বিয়ে করে আমাদের বাসায় নিয়ে যেতে। নাহলে নাকি সে বাঁচবে না।

ভাইয়াঃ তুই কি বলছিস তারপর? (ভেবে বললো)

আমিঃ আমিতো কিছু বলি নাই। কি বললো তুমি বলে দেও..?

ভাইয়াঃ আচ্ছা দেখছি কি করা যায়।

~ ভাইয়া বাসায় কল দিয়ে আব্বুর সাথে অনেক ক্ষন কথা বললো আমার থেকে দূরে গিয়ে। তারপর আরো কয়েকবার যেনো কাদের সাথে ও মোবাইলে কথা বললো। তারপর আমি রিতুর কেবিনে আসার পর রিতুর আব্বু আম্মু দের নিয়ে ভাইয়া বাইরে কোথায় যেনো গেলেন। আমি, ঈশা, রিতু হসপিটালে শুধু। আজ রিতুর আত্মীয় এসেছে যারা, তারাও ভাইয়ার সাথে গিয়েছে।

অনেক সময় কেটে গিয়েছে। দুপুর হয়ে এসেছে। আমরা তিন জন বিভিন্ন গল্প করছি।
বেলা ৩ টায় সবাই আবার আসলেন হসপিটালে। সাথে শুবশ্রী ভাবির আব্বু আম্মু ও ভাইও। ভাইয়াকে বললাম, কোথায় গিয়েছিলে, ভাইয়া বললো শুবশ্রী ভাবিদের বাসায়।সাথে আমাদের তিন জনের খাবার নিয়ে আসছে। আমরাও খাওয়া দাওয়া করে নিলাম। রুম ভরতি মানুষ। ভাইয়ার কল আসার পর ভাইয়া রুম থেকে বের হয়ে যাচ্ছে….

আমি ভাইয়াকে বললাম- কোথায় যাও…?

ভাইয়া যে উত্তর দিলো তার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। ভাইয়া বললো-
কোথায় আর যাবো, ছোট ভাইয়ের বিয়ে বলে কথা।

~ আমাদের চাসতো ও খালাতো ও ছোট ভাই আসছে, তাদের এগিয়ে আনতে যাচ্ছে ভাইয়া। ওরা নাকি কাজিও সাথে নিয়ে আসছে। এখুনি বিয়ে হবে, তৈরি থাকতে বললো ~

~ হঠাৎ এমন একটা কথা শুনে বুকের মধ্যে ধুকপুক করতে লাগলো। বিয়ে এখনি, সাথে অস্থির লাগতে শুরু করলো। মনে হচ্ছে যেনো কোনো যুদ্ধে যেতে বলে গেলো ভাইয়া । ভয় হতে লাগলো কেনো জানি।
পাশে রিতুর দিকে তাকিয়ে দেখি ওর দুই হাত কাঁপছে। এতোক্ষণ যেই মেয়ে বিয়ে বিয়ে করে পাগল ছিলো, তারই হাত কাঁপছে এখন খুব, মাত্র তার বিয়ের কথা শুনেই।

কিছুক্ষণ পর দেখি ভাইয়া ও আমার চাসতো, খালাতো ভাইয়েরা, আমার ছোট ভাই জীবন ও সাথে লম্বা দাড়ি ওয়ালা এক ব্যাক্তি। বুঝতে পারলাম সে হয়তো কাজী। তাদের হাতে শপিং ব্যাগ নিয়ে রুমে ঢুকলো।

তাদের দেখে দুই জন সুন্দরী নার্স ও আসলো। নার্স এসে বললো, আজ যে রোগীর কাছে এতো লোক।

আঙ্কেল খুশি মনে বললো-

আঙ্কেলঃ আপনাদের রোগীর বিয়ে হবে আজ এখুনি।

নার্স গুলো হেসে চিৎকার করতে লাগলো, মিষ্টি কোথায়, মিষ্টি কোথায়..?

ভাইয়া বললো, সব হবে। মিষ্টি, বিরিয়ানি সব। নার্স গুলোও খুশি হলো। নার্স গুলো দেখার মত ছিলো ? ক্রাশ খায়ছি গো ?

শপিং ব্যাগ গুলো আমার হাতে দিয়ে বললো, তারাতাড়ি এগুলো পড়ে নে। ভিতরে তাকিয়ে দেখি পাঞ্জাবি, পায়জামা ও আরেকটায় পায়ের জুতো। ঈশার হাতে আরো দুটো ব্যাগ দিয়ে বললো এগুলো রিতুকে পড়িয়ে দিতে। ঈশা বের করে দেখলো নীল রংয়ের লেহেঙ্গা পাথরের কাজ করা, সাথে রিতুর জন্য পায়ের জুতো। ভালোই হয়েছে রিতুর ও আমার পোশাকার কালার মিল হয়েছে দুইজনেরই নীল।

ভাইয়া বললো- রিতু বোন আমার কত লম্বা যে, তার মাপের কাপড় ও জুতো খুজতে খুঁজতে ক্লান্ত হয়ে গিয়েছি হা হা।

সবাই রুম থেকে বের হয়ে গেলো। আমি অন্য সাইডে গিয়ে তারাতাড়ি পাঞ্জাবি পড়ে নিলাম। হাত পা কাঁপছে তখনো। পরে আমরা আবার সবাই রুমে আসলাম। রিতু বসে আছে ঘুমটা দিয়ে। কাজী বিয়ে পড়ানো শুরু করলো।

রিতুকে কাজী সাহেব বললোঃ বলো মা আলহামদুলিল্লাহ কবুল…

রিতুঃ চুপ।

কাজীঃ বলো মা আলহামদুলিল্লাহ কবুল…

রিতুঃ তখনো চুপ…

কাজীঃ ভয় পেও না, বলো আলহামদুলিল্লাহ বলুল…

রিতুঃ তাও চুপ…

ঈশা পাশ থেকে বললোঃ- বুবু তুই কি কবুল বলবি? নাহলে তোর হয়ে আমি বলে দিলাম কিন্তু.. ?

রিতু তাড়াতাড়ি বলে উঠলোঃ- আলহামদুলিল্লাহ কবুল, আলহামদুলিল্লাহ কবুল, আলহামদুলিল্লাহ কবুল… ?

~ সবাই রিতুর তাড়াতাড়ি কবুল বলা শুনে হা হা করে হেসে দিলো। বিয়ের কাজ শেষ হওয়ার পর, হসপিটালের সবাই কে মিষ্টি খাওয়ালো, সাথে বকসিস দিলো ভাইয়া..।

? শুভ ও রিতুর বিয়েতে সবাই সবার মহামূল্যবান সময় নষ্ট করে থাকায় সবার প্রতি অনেক অনেক কৃতজ্ঞ ? এবং অনেক অনেক ধন্যবাদ সবাই ??

? সবাই যার যার ফ্রিজ খুলে মিষ্টি চুরি করে খেয়ে নিন আমাদের পক্ষ থেকে ?

তারপর ডাক্তার এসে রিতুর নাম কেটে দিলো হসপিটাল থেকে। রিতুকে রিতুর আম্মু ও ঈশা জরিয়ে ধরে কান্না শুরু করলো। আমার বউও কান্নার ঘেউ উঠিয়ে ফেলছে। সবাই এক পা দুই পা করে বের হচ্ছে হসপিটাল থেকে। আমিও বের হচ্ছি আগে আগে, শত হলেও নতুন জামাই, হাসপাতালের সবাই এগিয়ে এসেছে। অনেক ভিড় হয়ে গিয়েছে। যেমন ভাবছিলাম বিয়ে করলে অনেক মজা, কই আমিতো মজা পাচ্ছি না। আরো রিতুর হু হু কান্নার জন্য বিরক্ত লাগছে। মনে হচ্ছে মিষ্টি একটা আস্ত তার মুখে ঢুকিয়ে দেয়, তাহলে তো কান্না থামবে।

বাইরে এসে তো আমি অবাক।
আমাদের গাড়িটা তো খুব সুন্দর করে সাজিয়েছে। ভাইয়া বললো, কেমন হয়েছে সাজানো? আমি বললাম খুব সুন্দর।

তারপর রিতুকে গাড়িতে বসিয়ে দিলো। আমি এক সাইডে, রিতু মাঝে, ঈশা তার অন্য সাইডে। সামনে ছোট ভাই, আর ড্রাইভিং করছে খালাতো ভাইয়া। আর বাকি সবাই কিভাবে আসবে জানি না, আমি নতুন জামাই। আমার ওতো জেনে লাভ কি.. হুমম।

সবাই কে বিদায় দিয়ে রওনা হলাম বাসার দিকে। গাড়ি চলছে…….
রিতু ঘুমটা দিয়ে আছে বড় করে। ঈশা বাইরের দিকে তাকিয়ে সব কিছু দেখছে।
কিন্তু আমার ছোট ভাই বার বার ঈশার দিকে তাকিয়ে দেখছে। আমি মনে মনে বলি, ভাই তুই যাই করিস, প্রেম করে বিয়ে করিস না, চোখে ঘুম থাকে না প্রেম করলে। কিন্তু ভাই আমার বার বার ঈশার দিকে তাকিয়ে দেখছে ?

আমিঃ আচ্ছা এই ভাবে ব্লাকমেল করে বিয়ে করা ঠিক হল??

ঈশাঃ অবশ্যই ঠিক হয়েছে…

আমিঃ না ঠিক হয় নাই। এই ভাবে ভদ্র একটা ছেলেকে চাপে ফেলে বিয়ে ?

ঈশাঃ ভালো কিছু যদি চাপে ফেলে করা হয়, তাহলে তো ভালোই। খারাপ থেকে হয়তো কিছু ভালো হলো…

আমিঃ ওই সালি, আমি তোমার বোনকে জিগ্যাস করছি, তুমি উত্তর দেও কেনো??

ঈশাঃ বুদ্ধি যখন আমার, উত্তর তো আমি দিবো হি হি…

আমিঃ মানে??

ঈশাঃ আপনার বউকে দিয়ে কিছু হতো না বুঝলেন। সে শুধু পারে কান্না করতে ও মুখ ফুলিয়ে বসে থাকতে। একে বারে ঘোড়ার ডিম একটা সে। বিয়েতে যত কিছু হলো সব আমার বুদ্ধিতে বুঝলেন দুলাভাই?? শুধু আবেগ ছিলো বুবুর…

আমিঃ তুমি তো সালি না তো, পুরো একটা খানদানি জিনিস.. ?

ঈশাঃ ????

ঢাকা – ফরিদপুর মহাসড়ক হয়ে গাড়ি চলছে প্রায় ২ ঘন্টা হয়ে গিয়েছে। সন্ধ্যা পার হয়ে গিয়েছে। আবার সবাই চুপ করে আছে…

ছোট ভাই রিতুকে উদ্দেশ্য করে বললো-
ছোট ভাইঃ রিতু ভাবি, আপনি আজ কোথায় ঘুমাবেন..?

রিতুঃ আপনাদের বাসায় ভাইয়া (মাথায় ঘুমটা দেওয়া অবস্থায়)

ছোট ভাইঃ সেটা তো জানি, কিন্তু কার সঙ্গে?

রিতু বললোঃ মায়া বুড়ি, আমি ও ঈশা এক সাথে থাকবো…

আমিঃ কি (অবাক হয়ে)

ঈশাঃ না, বুবু আজ দুলাভাইয়ের কাছে থাকবে।

ছোট ভাই পেয়েছে সুযোগ ঈশার সাথে কথা বলার, সুযোগ কি আর ছাড়ে সে…
ছোট ভাইঃ না না তা হবে না। ভাবি আজ অন্য রুমে থাকবে।

ঈশাঃ বললেই হল..? আজ তাদের বাসর রাত বুঝলেন।

ছোট ভাইঃ হক বাসর রাত। কিন্তু আলাদা থাকবে এটা নিয়ম।

এর মধ্যে ড্রাইভিং সিট থেকে খালাতো ভাইয়া বললো- এই তোরা চুপ থাকবি..? বাসায় গিয়ে সব দেখা যাবে।

বাকি পথ এমনি গল্প করে চলে এলো। বাসায় ঢুকে সবাইকে রিতু সালাম করলো। ভাবিকে জরিয়ে ধরে কান্না করলো রিতু। তারপর রাতের খাওয়া দাওয়া শেষ হল সবার। রাত বাজে ১১ টা তখন। সবাই এক হয়ে মিটিং শুরু করলো রিতু কোথায় থাকলে ভালো হবে আজ রাতে । সবাই বললো রিতুর ননদ মানে মায়ার সাথে থাকতে আজ, কারন তার শরীর খারাপ। শুধু আমার প্রিয় শুবশ্রী ভাবি ও সালিকা ঈশার মত আমার রুমে থাকাতে রিতুকে। সবাই অনেক আলোচনা করে এবার তারা আমায় বললো… রিতু কোথায় থাকুন তুই যাস..??

~ আমি পড়লাম বিপদে, আমার তো ইচ্ছা রিতু আমার ঘরে থাকুক। কিন্তু এটা বলাও তো লজ্জার ব্যাপার, রিতু মাথা নিচু করে আছে, কি বলি কি বলি ভাবতে ভাবতে বললাম….

আমিঃ রিতু…………….. ~ গল্প চলবে ~

বিঃদ্রঃ প্রেমের বিয়ের পরে বাসর ও সংসার কেমন হয়, জানতে হবে পড়তে হবে আগামী পর্ব..