#চেরি_ব্লসমের_সাথে_এক_সন্ধ্যা
#লেখা: ইফরাত মিলি
#পর্ব: ৬০ (শেষ পর্ব)
____________
[দুই বছর পর]
মার্চ মাস চলছে। কানাডায় এখন বসন্তকাল। অনেক গাছে ফুল ফুঁটে ভরে গেছে, আবার অনেক গাছে সবে ফুঁটতে শুরু করেছে। কয়েকদিনের মধ্যেই ফুলে ফুলে ভরে যাবে সব গাছ। চেরি গাছগুলোয় এবার অনেক বেশি ফুল ধরেছে। মিতুল একমনে তাকিয়ে আছে চেরি ফুলের দিকে। ও যখন ট্যুরিস্ট হিসেবে কানাডা এসেছিল, তখনকার থেকে অনেক বেশি ফুল ফুঁটেছে এবার।
মিতুল আগের বার এসে যেই রুমে থেকেছিল, এখন সেই রুমেই জানালার কাছে দাঁড়িয়ে আছে। এই রুম থেকে লনের চেরি ব্লসম দেখা যায়। সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে, জানালার কাছে দাঁড়ালে, ফুলে পূর্ন চেরি গাছগুলো দেখে নয়ন জুড়ায়। সেই সাথে জুড়িয়ে যায় মন।
জোহানের রুমে থেকে নয়ন এবং মন জুড়ানো সম্ভব নয়। জোহানের রুম থেকে চেরি ব্লসম গাছগুলো দেখা যায় না। তাই তো জোহানের রুম থেকে এই রুমে শিফট করেছে। শিফট করেছে বেশিদিন হয়নি। এই তো চারদিন হলো মাত্র। বসন্তের তিন মাস এই রুমে থাকারই প্ল্যান মিতুলের। শুধু এবারের বসন্ত নয়, প্রত্যেক বসন্তেই এই রুমে থাকবে। তবে এই থাকার ব্যাপারটা নিয়ে জোহানের সাথে ছোটখাটো একটা যুদ্ধ বেঁধেছিল ওর।
জোহান নিজের রুম ছেড়ে এই রুমে এসে থাকতে নারাজ। কিছুতেই এই রুমে থাকবে না বলে জেদ ধরেছিল। ও অনেক করে বুঝিয়েছে জোহানকে। মাত্র তিনটা মাসই তো থাকবে এই রুমে। বাকি মাসগুলো তো জোহানের রুমেই। কিন্তু জোহানকে বোঝানো যায়নি।
মিতুল বুঝতে পারে না জোহানের নিজের রুম ছেড়ে এই রুমে এসে থাকতে কী সমস্যা? ও বাংলাদেশ থেকে এসেও কী সুন্দর মানিয়ে নিয়েছিল এই রুমে। অথচ জোহান এতকাল ধরে এই বাড়িতে থেকে, এই রুমটায় মানিয়ে নিতে পারবে না?
শত বুঝিয়েও মানানো গেল না জোহানকে। জোহান মুখের উপর বলে দিলো,
“আমার পক্ষে ওই রুমে গিয়ে থাকা অসম্ভব। তোমার যদি থাকতে ইচ্ছা করে, তুমি একা গিয়ে থাকো। আমি পারবো না।”
জোহানের কথা শুনে মিতুলের যে কী পরিমাণ রাগ হয়েছিল তা বলার মতো নয়। মিতুল রাগ করে ওর সবকিছু নিয়ে একাই এই রুমে চলে আসে। জোহান আসেনি। পুরো এক দিন আলাদা ছিল ওরা। এমনকি কথা পর্যন্ত বলেনি। পরে আর জোহান একা একা থাকতে পারলো না। সকাল বেলাই এসে হাজির হলো এই রুমে। এসে বললো,
“তোমার কাছ থেকে কিন্তু আমি এটা মোটেই আশা করিনি মিতুল। তুমি আমাকে ছেড়ে কী করে এখানে একা একা থাকার মতো কঠিন কাজটা করতে পারলে? তুমি জানো না, তোমাকে ছাড়া আমি থাকতে পারি না?”
ঘটনাটা মনে পড়তে মিতুলের হঠাৎ হাসি পেয়ে গেল। জোহান আগের মতোই পাগল আছে। একটুও পরিবর্তন হয়নি। তবে কাজের ক্ষেত্রে সে বেশ সিরিয়াস। নয় মাস হয়েছে চাকরি নিয়েছে, রিকার্ডোর ড্যাডের কোম্পানিতে।
মিতুল রুম থেকে বের হয়ে টাইম হাউজের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করলো।
জোহান এখন টাইম হাউজে আছে। রাত ধরে সেখানেই ছিল। মিতুলও সেখানে ছিল রাতে। সকালে উঠে একবার বাড়ি ঘুরে আবার যাচ্ছে টাইম হাউজে। জোহান বোধহয় এখনও ঘুম থেকে ওঠেনি। জোহান এমনিতেই ঘুম পাগল। তার উপর আজ আবার উইকেন্ডে। কখন ঘুম ভাঙবে জানে না। চাকরির জন্য এখন আর আগের মতো যখন তখন পড়ে পড়ে ঘুমাতে পারে না। আগে যখন ইচ্ছা তখনই ঘুমাতো। ধরা বাধা নিয়ম ছিল না। চাকরির জন্য এখন আর সেই অবকাশ নেই। তাই সকল ঘুম এই উইকেন্ডে এসে জড়ো হয়। উইকেন্ডে খুব বেলা করে ঘুম থেকে উঠলেও, বাকি দিনগুলোয় খুব সকালে নিয়ম করে উঠে যায়।
টাইম হাউজে এসে দেখলো যা ভেবেছিল তাই। জোহান এখনও ঘুমাচ্ছে।
মিতুলের খানিক বিরক্ত লাগলো। এত ঘুমাতে পারে জোহান! ও উঠে একবার বাড়ি পর্যন্ত ঘুরে এসেছে, অথচ এর ওঠার নাম গন্ধ নেই। মিতুলের কেন যেন জোহানের এত ঘুম সহ্য হয় না। মিতুল বললো,
“তোমার ঘুম ভাঙবে কখন?”
ঘুমন্ত জোহানের কানে প্রশ্নটি গিয়ে পৌঁছলো না। মিতুলের কিছুটা রাগ হলো। একটু উচ্চৈঃস্বরে বললো,
“তুমি কি উঠবে না? দুপুর করে ফেলবে?”
জোহানের ঘুমকে নাড়াতে পারলো না মিতুলের কণ্ঠ। উইকেন্ডে জোহানের এমন ঘুম মিতুলের কখনোই সহ্য হয় না। আজ ছুটির দিন! কোথায় আরও তাড়াতাড়ি উঠে ওর সাথে পুরো সময়টা কাটাবে, তা না। মিতুল এক হাতে জোহানকে ঠ্যালা দিয়ে বললো,
“ওঠো। তাড়াতাড়ি।”
জোহানের ঘুম এখন যেন একটু নড়ে উঠলো। ঘুম কাতুরে কণ্ঠে বললো,
“প্লিজ মিতুল! ডোন্ট ডিস্টার্ব মি। আমার এখনও কিছুক্ষণ ঘুম প্রয়োজন।”
“আর কতক্ষণ? কয়টা বেজেছে খেয়াল আছে? ওঠো তাড়াতাড়ি।”
“আমি ঘুমাবো।”
জোহানের কথায় মিতুল জেদি হয়ে উঠলো। জোহানের ঘুম ভাঙিয়েই ছাড়বে ও।
মিতুল জোহানকে কিছুক্ষণ ঠেলে, টেনে শেষমেশ শোয়া থেকে উঠে বসতে বাধ্য করলো।
জোহান গলায় রাজ্যের বিরক্তি জড়িয়ে বললো,
“উহ, তোমার সমস্যা কী তুলতুল? আমি এই দিনটির জন্য কত অপেক্ষায় থাকি জানো? একটু শান্তি মতো ঘুমাবো বলে ওঁৎ পেতে থাকি এই দিনটির জন্য। অথচ তুমি প্রতি উইকেন্ডে এমন করো। একটু শান্তি মতো ঘুমাতে দাও না আমাকে। কেন করো তুমি আমার সাথে এমন?”
“শান্তি মতো ঘুম? এতটা সময় ঘুমালে, এখনও তোমার শান্তি মতো ঘুম হয়নি?”
“না হয়নি। আরও তিন, চার ঘণ্টা ঘুমালে হবে।”
“অসম্ভব! এই তিন, চার ঘণ্টা কিছুতেই ঘুমাতে পারবে না তুমি।”
“বিয়ের পর তুমি খুব কঠিন হয়ে গেছো। ভেবেছিলাম হয়তো একটু কঠিন হতে পারো। তাই বলে যে এতটা কঠিন হয়ে যাবে, ভাবতে পারিনি।”
কথাটা বলতে বলতে বেড থেকে নামলো জোহান। সোজা যেতে লাগলো প্রবেশ দরজার দিকে।
মিতুলও জোহানের পিছন পিছন যাচ্ছে। বুঝতে পারছে না কবে, কখন, কীভাবে ও জোহানের সাথে কঠিন আচরণ করেছে? মিতুল মনে মনে ভাবতে লাগলো বিষয়টি নিয়ে। কিন্তু জোহানকে কিছু বললো না। ও কানাডা এসেছে আট মাস হয়েছে। দিন গুলো ভালোই যাচ্ছে এখানে।
টাইম হাউজ থেকে বের হয়ে, সামনে থাকা ম্যাগনোলিয়া গাছটাকে একটু ছুঁয়ে দিলো মিতুল। গাছটায় কবে ফুল ফুঁটবে? কত বছর অপেক্ষা করতে হবে?
এবার কানাডা এসেই টাইম হাউজের সামনে, পাশে কিছু ফুল গাছ লাগিয়েছে। ফল গাছও লাগিয়েছে একটা। মিতুলের ইচ্ছা এখানে ছোটখাটো একটা বাগান করবে। জায়গা তো পড়ে আছে অনেক। কিন্তু জোহানের এ বিষয়ে কোনো আগ্রহ নেই। জোহানের আগ্রহ ওকে গিটার বাজানো শিখানোয়। দুই মাস ধরে চেষ্টা চালাচ্ছে, তবে কোনো সুফল পাচ্ছে না। পাবে কী করে, মিতুলের নিজেরই তো শেখার মন নেই। জোহানের গানের ব্যাপারটা আরও উন্নতি হয়েছে। তবে গান নিয়ে পড়ে থাকার সময় পায় না বেশি। চাকরির পাশাপাশি সময় খুঁজে নিতে হয়।
বাড়ি এসে গেল ওরা। গার্ডেনের যে পাইন গাছটায় দোলনা টানানো ছিল, সেটার দিকে নজর পড়লো মিতুলের। দোলনাটা এখন আর নেই। এবার এসে দেখতে পায়নি সেটা। ভাবছে ক্যামিলাকে নিয়ে নতুন একটা দোলনা তৈরি করবে। এতদিন দোলনার প্রতি কোনো ঝোঁক ছিল না। কিন্তু এখন যে বসন্ত এসে গেছে। গার্ডেনের এত এত ফুলের সমারোহের মাঝে দোলনায় কিছুক্ষণ বসে থাকলে মন ফুরফুরা হয়ে যায় একেবারে।
জোহানের ফ্রেশ হওয়ার পর ওরা ডাইনিংএ এলো ব্রেকফাস্টের জন্য। এসে রেশমী আন্টিকে দেখতে পেল। জোহানকে বিয়ে করার পর রেশমী আন্টি ওর শাশুড়ি হয়ে গেলেও, ও এখনও ‘আন্টি’ ডাকটা ছাড়তে পারেনি।
রেশমী আন্টি অবশ্য এ নিয়ে অনেক বার অভিযোগ তুলেছে। তিনি বলেন, ‘জোহান এবং জায়িনের মতো ‘মম’ বলে কেন ডাকতে পারো না?’
মিতুলও ভেবে দেখেছে ব্যাপারটা। যেহেতু রেশমী আন্টি এখন ওর শাশুড়ি হয়ে গেছে, সেহেতু ওর তো এখন মম বলেই ডাকা উচিত। কিন্তু কী করবে? পুরোনো দিনের অভ্যাস ছাড়তে পারছে না। চাইলেই তো হুট করে আন্টি থেকে মম বলে ডাকা যায় না।
জোহান এবং মিতুল রেশমীর বিপরীত দিকের চেয়ার টেনে বসলো। জোহান বসতে বসতে বললো,
“ব্রাদার কি চলে গেছে সিস্টার ইন ল’র সাথে দেখা করতে?”
রেশমী বললেন,
“হ্যাঁ, কিছুক্ষণ আগেই গেল।”
মিতুল একবার তাকালো জোহানের দিকে। জোহান যেন হবু ভাবীর খোঁজ খবর একটু বেশিই নেয়। আবার একদিন বললো তাকে না কি ওর বোনের মতো লাগে। বেশ ভাব জমে গেছে হবু ভাবীর সাথে জোহানের। তবে ওর সাথেও কম ভাব জমেনি। ওর বেশ ভালোই লাগে জায়িনের হবু বউকে। জায়িনের মতো অহংকারী অহংকারী ভাব নেই তার মাঝে। হাসিখুশি। মানুষের সাথে মিশে যায় সহজে। হবু বউয়ের নাম ‘তাসমিয়াহ’। বিয়ে আর এক মাস পর। এনগেজড হয়েছে গত মাসে। জায়িনের থেকে এক বছরের ছোট তাসমিয়াহ। বাংলাদেশি মেয়ে। কানাডার সিটিজেনশিপ। ফ্যামিলিসহ আছে এখানে। জায়িনের সাথে খুব ভালো মানায় তাকে। সে দেখতে যেমন সুন্দর, তেমনি আবার লম্বা। একদম পারফেক্ট ম্যাচ। চাকরিও করে সে। ভালো ইনকাম।
জায়িনের সাথে তার শুধু যেদিক থেকে পার্থক্য সেটা হলো, জায়িন অহংকারী টাইপ আর সে মিশুক। এই ব্যাপারটা ছাড়া দুজনকে খুব ভালো মিলেছে।
মিতুল রেশমী আন্টির দিকে দৃষ্টিপাত করলো। রেশমী আন্টি আগের থেকে অনেকটা কেয়ারিং হয়েছে জোহানের প্রতি। এই কেয়ারিং একদিনেই হয়নি। আস্তে আস্তে বেড়েছে। তবে মিতুল আশা রাখে একদিন পুরোপুরি ভাবে সম্পূর্ণটা দিয়ে জোহানের কেয়ার করবে রেশমী আন্টি। ভালোবাসবে খুব।
ইদানিং কাল মনে হয় জায়িনও তার ভাইয়ের প্রতি একটু সদয় হয়েছে। আগের থেকে দুই ভাইয়ের মাঝে সম্পর্কটা আরও অনেকটা স্বাভাবিক হয়েছে। তবে ও স্বাভাবিক হতে পারেনি জায়িনের সাথে। জায়িনের সাথে ওর সম্পর্কটা ঠিক আগের মতোই আছে। জায়িনের সাথে কথা বলতে ওর এখনও অস্বস্তি হয়। আগের থেকে আরও বেশি অস্বস্তি হয়। বিয়ে বিয়ে নিয়ে ওই ঝামেলাটা না হলে বোধহয় অস্বস্তি বোধটা একটু কমতো। কিন্তু ঝামেলাটা হয়ে অস্বস্তি বোধ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। ও সবসময় নিজের অস্বস্তি ভাবকে চেপে রাখে। কখনও প্রকাশ করে না।
জায়িনের সাথে যে খুব বেশি কথা হয় ওর, তেমনটা না। ওই আগের মতোই অল্প-স্বল্প কথা হয় মাঝে মাঝে। মিতুল সবসময় হাসিখুশি ভাবে কথা বলার চেষ্টা করে। মন না হাসলেও, মুখে বাধ্য হাসি ফুঁটিয়ে রাখার চেষ্টা করে।
“তোমাকে এই রেইনবো পুডিং পিসটা দেবো?”
ক্যামিলার প্রশ্ন মিতুলের ভাবনায় ছেদ ফেললো।
মিতুল একটু হেসে সম্মতি জানালো,
“হুহ, দাও।”
ক্যামিলাও একটু হেসে পুডিং রাখলো ওর সামনে। ক্যামিলা ঠিক আগের মতোই মিষ্টি আছে।
ব্রেকফাস্টের পাশাপাশি টুকটাক কথা হচ্ছিল। কথায় কথায় মিতুল একবার রেশমীকে আন্টি ডাকলেই, রেশমী আবার অভিযোগ তুললেন,
“এই আন্টি ডাকটা তুমি কবে বাদ দেবে বলো তো? আমার কিন্তু এখন আর আন্টি ডাক শুনতে ভালো লাগে না। ওদের দুই ভাইয়ের মতো তুমিও মম বলে ডাকবে।”
রেশমী আন্টির কথায় মিতুল কিছুটা বিব্রত বোধ করলো। জোহানের দিকে তাকালো একবার। জোহান নির্বিকার। নিজের মতো খেয়ে যাচ্ছে। মিতুল বিব্রত বোধ নিয়েও একটু হাসার চেষ্টা করে বললো,
“আসলে…পুরোনো অভ্যাস তো। সহজে ছাড়তে চাচ্ছে না।” মিতুলের কণ্ঠে ইতস্তত ভাব।
রেশমী বললেন,
“অভ্যাস দ্রুত চেঞ্জ করো।”
মিতুল সায় দিয়ে একটু মাথা নাড়লো।
______________
মিতুল রেডি হয়ে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে দেখতে লাগলো নিজেকে। ড্রেসটা বেশ ভালো মানিয়েছে গায়ে। ড্রেসটা ওর বার্থডেতে গিফট পেয়েছিল সারা এবং জেমসের কাছ থেকে।
সারা এবং জেমসকে নিয়ে একটা খুশির খবর আছে। ওদের একটা বেবি হয়েছে। ছেলে বেবি। বয়স মাত্র দুই মাস হলো। দেখতে কী সুন্দর, সেটা বলে প্রকাশ করতে পারবে না। জোহান খুব আদর করে বাচ্চাটাকে। জেমসের এপার্টমেন্টে গিয়ে, ও নিজেও অনেকবার দেখে এসেছে বাচ্চাটাকে। জেমস এবং সারার বিয়েতে থাকার সৌভাগ্য হয়নি ওর। ও দেশে যাওয়ার একমাস পরে বিয়ে হয়েছিল ওদের। তবে বিয়ের সমস্ত ফটো শুট, ভিডিয়ো যা যা করা হয়েছে, সব পাঠানো হয়েছিল ওর কাছে। বাংলাদেশ থেকে এসব দেখেই আনন্দিত থাকতে হয়েছে ওর।
সারা এবং জেমসকে নিয়ে যেমন একটা খুশির খবর আছে, তেমনি আবার একটা দুঃখের খবরও আছে রিকার্ডোকে ঘিরে। প্রায় চার মাস আগে রিকার্ডোর ব্রেকআপ হয়ে গেছে লিসার সাথে। নিউ ইয়র্কের একটা ছেলের সাথে সম্পর্কে জড়িয়েছে লিসা। তারপরই ব্রেকআপ করেছে রিকার্ডোর সাথে।
মিতুলের ধারণা ছিল না, রিকার্ডোর মতো ছেলের সাথেও কেউ ব্রেকআপ করতে পারে। রিকার্ডোর মতো এত ধনী, হ্যান্ডসাম, নিরহংকারী ভালো একটা ছেলের সাথে ব্রেকআপ করার কোনো যুৎসই কারণ খুঁজে পায়নি ও। রিকার্ডোকে ফেলে যে ছেলের সাথে রিলেশনে জড়িয়েছে, সে কি রিকার্ডোর থেকে বেশি ভালো? মিতুল জানে না সে কেমন। তবে ওর ধারণা রিকার্ডোর মতো এত ভালো হতে পারে না সেই ছেলে। রিকার্ডো কী পরিমাণ ভালো, সেটা বুঝিয়ে বলতে পারবে না মিতুল। রিকার্ডোরা খুব ধনী। ওদের টাকা পয়সার অভাব নেই। জোহানের ফ্রেন্ড সার্কেলের ভিতরে সব থেকে ধনী হচ্ছে রিকার্ডো। এত ধনী হওয়ার পরও রিকার্ডোর মাঝে কোনো অহংকারের ছোঁয়া দেখেনি আজ পর্যন্ত। মিতুলের মনে হলো রিকার্ডোকে ছেড়ে গিয়ে লিসা খুব বড়ো ভুল করেছে। রিকার্ডো লিসাকে কতটা ভালোবাসে সেটা দেখলেই বোঝা যায়। এখনও লিসাকে ভুলতে পারেনি। বন্ধুরা মিলে অবশ্য রিকার্ডোর মন থেকে লিসাকে মুছে ফেলতে কম চেষ্টা করেনি। অন্য মেয়ের সাথেও ডেট ফিক্সড করে দিতে চেয়েছে। কিন্তু কিছুতেই কিছু হয়নি।
যেদিন লিসার সাথে ব্রেকআপ হয়েছিল, সেদিন রিকার্ডো ছয়, সাতটা বিয়ারের বোতল নিয়ে জোহানের টাইম হাউজে এসেছিল। মনের দুঃখে জোহানের সাথে ড্রিঙ্কস করবে সে জন্য। মিথ্যা বলবে না, জোহান সেদিন ড্রিংকস করেছিল রিকার্ডোর সাথে। তবে খুব বেশি না। অল্প পরিমাণ। অল্প হোক আর বেশি হোক, এটা যদি কোনো রকম ভাবে মায়ের কানে যেত, তখন কেমন হতো? মাকে কত বড়াই করে বলেছে জোহান মদ জাতীয় কিছু ছুঁয়েও দেখে না। এখন যদি মা শুনতো জোহান বিয়ার খেয়েছে, তাহলে ওর এই মুখ আর থাকতো?
মায়ের কথা উঠতেই মনে পড়লো, মাকে কতদিন হলো সরাসরি দেখেনি। এই ভিডিয়ো কলে দেখে কি আর শান্তি আছে? মাকে জড়িয়ে ধরা যায় ভিডিয়ো কলে?
তাছাড়া ব্রো’র এত মিষ্টি বউটাকেও সরাসরি দেখতে পারেনি এখন পর্যন্ত। এই তিন মাস হলো ব্রোর বিয়ে হয়েছে। ব্রোর বউটা যে কী মিষ্টি…
সবটা আসলে জোহানের জন্য। জোহানকে কতবার বলেছে বাংলাদেশ বেড়াতে যাবে ও। কিন্তু জোহানের মোটে সময়ই হয় না। ঠিক আছে, নিজের সময় না হোক, ওকে একা পাঠিয়ে দিক। তাও না। ওকে কিছুতেই একা যেতে দেবে না। ওকে ছাড়া একটা দিনও থাকা না কি সম্ভব নয় তার পক্ষে।
মিতুলও অবশ্য এই ব্যাপারটা ভেবে দেখেছে। ও নিজেও জোহানকে ছাড়া থাকতে পারবে না। এটা কেমন জ্বালা সেটাই বুঝতে পারছে না ও। এরকম চললে ও কবে সামনাসামনি দেখবে নিজ পরিবারকে?
নাবিল ভাইয়া এখন হাইয়ার স্টাডির জন্য অস্ট্রেলিয়াতে আছে। সম্ভবত তিন, চার মাস পর বাংলাদেশ ফিরবে। ইতোমধ্যে ভাইয়া এবং মেহরিনের বিষয়টা দুই পরিবারের ভিতর জানাজানি হয়ে গেছে। ভাইয়া ফিরলে মেহরিনের সাথে বিয়েটা হয়ে যাবে।
বড়ো ভাইয়ের বিয়েতে থাকতে পারেনি, এখন ছোট ভাইয়ের বিয়েতেও না থাকতে পারলে মিতুলের হাসফাঁসের শেষ থাকবে না।
মিতুল ঠিক করেছে ও যাবেই। এতে করে জোহানের সব কাজ বাজ পন্ড হয়ে গেলেও ওর কিছু যায় আসে না।
টেবিলের উপর মিতুলের মোবাইলটা বেজে উঠলো। মিতুল এগিয়ে গিয়ে কল রিসিভ করলো। ওপাশ থেকে জোহান বললো,
“তোমার রেডি হওয়া হয়েছে?”
“হ্যাঁ।”
“গ্যারেজে এসো তবে।”
মিতুল ফুরফুরা মেজাজে বের হলো। বিকেল টাইম চলছে। জোহান এবং ও এখন হেনরিটটা ম্যুর এডওয়ার্ডস পার্ক ঘুরতে যাচ্ছে। প্রতি উইকেন্ডেই ওরা ঘুরতে যায়। গ্রীষ্মে ঘুরে বেড়াতে আরও বেশি ভালো।
ও যখন এসেছিল তখন গ্রীষ্মের শেষ মাস চলছিল। সেই একমাসে ঘুরেছে অনেক। জোহানের সাথে, জোহানের ফ্রেন্ডসদের সাথে, ক্যামিলার সাথে। রেশমী আন্টিও নিয়ে গিয়েছিল ঘুরতে। বলতে গেলে প্রায় প্রতিদিনই ঘুরতে বেড়িয়েছে। ঘোরাঘুরির জন্য গ্রীষ্ম ঋতুটাকে পছন্দ হলেও, এমনিতে এই ঋতুটাকে খুব অপছন্দ মিতুলের। কানাডা আসার পরই গ্রীষ্ম ঋতুটা একাধারে পছন্দ এবং অপছন্দের খাতায় নাম লিখিয়েছে।
ঋতুটা অপছন্দ হওয়ার কারণ হলো, মেয়েরা গ্রীষ্মে স্বল্প পোশাকে ঘোরাফেরা করে। যেদিকে চোখ যায় সেদিকেই শুধু দেখা যায় সুন্দরীরা স্বল্প পোশাকে ঘোরাঘুরি করছে। মিতুলের তখন ইচ্ছা করে জোহানের চোখে চারটা কালো চশমা পরিয়ে দেয়। যাতে ওই চশমা ভেদ করে কোনো মেয়ের দিকে ওর নজর না পড়ে।
এখান থেকে হেনরিটটা ম্যুর এডওয়ার্ডস পার্ক বেশি দূর নয়। খুব কাছেই। কারে যেতে মাত্র নয়, দশ মিনিটের মতো লাগে।
পাঁচ মিনিটের পথ অতিবাহিত হতেই হঠাৎ তিনটা ছেলে ইশারা করে ওদের গাড়ি থামাতে বললো। মিতুল চেনে ছেলে তিনটাকে। এরা হলো সেই রাবিশগুলো, যারা জোহানের সাথে মারামারি করে। তিনটা কেন? আরেকটা আসেনি? ঘোরে তো চারজন জোড়ায় জোড়ায়।
জোহানের সাথে এই চারজনের মারামারির বিষয়টা স্থগিত হয়েছে। জোহান এখন ফেমাস, তাই ওদের সাথে মারামারি করতে পারে না। কিছু হলেই এটা ওটা নিউজ হয়ে যাবে।
আর রাবিশগুলোও এখন আর মারার সাহস করতে পারে না। না মারলে কী হবে, জ্বালানো বন্ধ করেনি। নানা ভাবে জ্বালানোর চেষ্টায় থাকে। যেখানে সেখানে এসে ডিস্টার্ব করে। রাবিশগুলোও জোহানের মতো ভালোবাসা বাসিতে পড়ে গেল কি না কে জানে! হয়তো জোহানকে ছাড়া থাকতে পারে না। বুলিং কেস এখন কোন জায়গায় এসে ঠেকলো!
ওর আসলে এই চারজনকে ঠিক সহ্য হয় না। এই তো ওর বার্থডে পার্টিতে এসেছিল এই চারজন। পার্টিটা হয়েছিল ক্যাফেতে। শুধু জোহানের ফ্রেন্ডসরা ছিল। এই চার জনকে দাওয়াত দেওয়া হয়নি, তারপরও বিনা দাওয়াতে অভদ্রের মতো এসেছিল।
এসেছিল ভালো কথা, কিন্তু সামান্য একটা গিফট পর্যন্ত আনেনি ওর জন্য। তবে পরে অবশ্য ওর বার্থডে গিফট পাঠিয়ে দিয়েছিল বাসায়। একটা পারফিউম দিয়েছিল। পারফিউমটা দামি এবং ঘ্রাণটা চমৎকার।
জোহান গাড়ি থামাতেই তিনজন এগিয়ে এলো।
বাদামি চুলের, একটু রোগা টাইপের ছেলেটা বললো,
“আমরা তোর বাড়িতেই যাচ্ছিলাম। তোরা কোথায় যাচ্ছিস?”
জোহান কিছুটা বিরক্তির সহিত বললো,
“কেন? আমার বাড়িতে যাচ্ছিলি কেন? তোদের কী কাজ আমার বাড়িতে?”
“গান গাইতে হবে। নেক্সট ফ্রাইডে তে আমাদের আয়োজিত একটা পার্টি হবে। সেখানে গান গাইতে হবে তোর।”
“আমার কি মাথা খারাপ? আবার যাব তোদের পার্টিতে গান গাইতে? অসম্ভব! আগের বারের কথা মনে আছে। একটা ডলার পর্যন্ত দিসনি।”
“এবার দেবো। মোটা অংকের ডলার দেবো।” দলের নেতা বলে উঠলো।
জোহান বললো,
“লাভ নেই। যত ডলারই দেওয়া হোক না কেন, তোদের পার্টিতে গান গাইবো না। অন্য সিঙ্গার খুঁজে নিস।”
দলের নেতা এবার কিছুটা গরমের সাথে বললো,
“তোকেই লাগবে। যত ডলার চাস, ততোই দেবো। তোকেই গান গাইতে হবে।”
জোহান বিরক্তির নিশ্বাস ফেলে বললো,
“দেখ, ওয়াইফকে নিয়ে ঘুরতে বের হয়েছি। মাঝ পথে তোদের এমন জ্বালাতন সহ্য যোগ্য নয়। একটা সুন্দর মেজাজে ছিলাম, কিন্তু তোরা এসে মেজাজটা পুরো খারাপ বানিয়ে দিলি।”
এবার দলে থাকা অন্য ছেলেটা বললো,
“ওয়াইফকে নিয়ে ঘুরতে যাচ্ছিস ভালো কথা, আমরা কি ঘুরতে যেতে বাধা দিচ্ছি? তুই নিজেই তো সময় নষ্ট করছিস। সহজ ভাবে মেনে নে, তাহলেই তো হয়।”
জোহানকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে, দলের নেতা বলে উঠলো,
“তাহলে ওই কথাই রইল, আমাদের পার্টিতে তুই গান গাচ্ছিস। বাই, সি ইউ অ্যাগেইন।”
রাবিশগুলো যাওয়া দিয়েও হঠাৎ ব্রেক কষলো। পিছন ফিরে দৃষ্টি ফেললো মিতুলের উপর। বললো,
“ওহ হ্যাঁ, তুমিও এসো।”
বলে আর দাঁড়ালো না। চলে গেল রাবিশ দল।
মিতুলের মেজাজ হলো চরম খারাপ। এতক্ষণ রাবিশগুলোকে মনে মনে কথা শুনিয়ে কিছু বাদ রাখেনি। জোহান রাবিশগুলোকে সহ্য করতে পারলেও, ওর মোটেই সহ্য হয় না।
মিতুলরা এসে গেল পার্কে। মিতুল এই পার্ক এর আগেও ঘুরেছে। এই পার্কে চেরি গাছ আছে অনেক। গোলাপি রঙা। চেরি গাছের নিচে বসার জন্য আবার অনেকগুলো বেঞ্চিও আছে। শুয়ে বসে সময় কাটানোর জন্য আছে সবুজ চাদরে ঢাকা দীর্ঘ ওপেন প্লেস। ওরা নিজেদের সাথে আনা চাদর বিছালো ঘাসের উপর। চেরি গাছের কাছাকাছি চাদর বিছিয়েছে।
চাদরের উপর বসতেই রিকার্ডোর কল পাওয়া গেল। সন্ধ্যার পর তাদের সাথে কফি শপে মিলিত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
জোহান বালিশে মাথা এলিয়ে দিলো।
মিতুল বালিশে মাথা রাখতে নিলেই জোহান বললো,
“ওয়েট, ওয়েট…”
মিতুল থেমে গেল,
“কী হলো?”
“তোমাকে আজ অন্যরকম বালিশে শোয়াবো আমি।”
“অন্যরকম বালিশ মানে? এই বালিশই তো নিয়ে এসেছি আমরা।”
জোহান বললো,
“উহু, এটা সেরকম বালিশ নয়। ভিন্ন ধর্মী বালিশ।”
জোহান নিজের একহাত প্রসারিত করে বললো,
“এখানে শোবে তুমি।”
মিতুল না হেসে পারলো না। একটু মিষ্টি হেসে জোহানের বাড়িয়ে দেওয়া হাতের উপর শুয়ে পড়লো। তারপর চেরি ব্লসমের দিকে দৃষ্টি স্থির রেখে বললো,
“জানো, চেরি আমার খুব পছন্দের। আমি খুব ভালোবাসি চেরি ব্লসম।”
“নতুন কথা শোনালে মনে হয়!”
মিতুল চেরি ব্লসম দেখার অমৃত সুধায় নিজেকে ডুবিয়ে রেখে বললো,
“তাকিয়ে দেখো, চেরি ব্লসম কত সুন্দর। কত নিষ্পাপ, কত মিষ্টি!”
“শুধু চেরিই দেখবে? আমাকেও একটু দেখো। আমার মুখটা চেরির থেকেও বেশি নিষ্পাপ এবং মিষ্টি!”
জোহানের কথা মিতুল শুনতে পেল বলে মনে হলো না। সে চেরি দেখার নেশাতেই ডুবে আছে।
জোহান বললো,
“আমাকে পাশে রেখে চেরি ব্লসমের দিকে তাকিয়ে থাকাটা কিন্তু অন্যায়। আমার মতো এমন সুদর্শন একজন যুবক তোমার পাশে থাকতে, এভাবে চেরির দিকে তাকিয়ে থাকাটা তোমার ঠিক হচ্ছে না তুলতুল। আমার দিকে তাকাও তুমি।”
জোহানের কথা মিতুল এবার গুরুত্ব দিলো। তাকালো। বললো,
“চেরি ব্লসমদেরও হিংসা করছো তুমি?”
জোহান উত্তর দিলো না। মিতুলের মাথার নিচ থেকে হাতটা সরিয়ে, বালিশ গুঁজে দিয়ে উঠে বসলো।
“আমাকে একটা সত্যি কথা বলবে মিতুল?”
মিতুল ভ্রু নাড়িয়ে জিজ্ঞেস করলো,
“কী সত্যি কথা?”
জোহান পাশে ঘাসের উপর পড়ে থাকা কিছু চেরি পাপড়ি হাত বাড়িয়ে কুড়িয়ে এনে বললো,
“তুমি এই চেরি ব্লসম বেশি পছন্দ করো? না কি আমাকে?”
“হঠাৎ করে এই প্রশ্ন কেন করছো?”
“কারণ আমার কেন যেন মনে হচ্ছে তুমি আমার থেকেও চেরি ব্লসম বেশি পছন্দ করো। তাই কনফার্ম হতে চাচ্ছি। তোমার অধিক পছন্দের জিনিসটি কী? এই চেরি? না কি আমি?”
মিতুল উঠে বসলো। জোহানের হাতের চেরি পাপড়ি গুলোর দিকে তাকিয়ে কিছুটা ভাবার মতো করলো। তারপর জোহানের দিকে তাকিয়ে বললো,
“আমি অবশ্যই চেরি ব্লসম বেশি পছন্দ করি।”
“তার মানে?”
“মানে চেরি আমার সবচেয়ে অধিক পছন্দ।”
জোহান দাঁড়িয়ে গেল।
“তাহলে আমি?”
মিতুলও দাঁড়ালো। বললো,
“তুমি আমার সেকেন্ড পছন্দ।”
জোহান অসন্তুষ্ট হলো। ক্ষুব্ধ হলো। বললো,
“তুমি তোমার ফার্স্ট পছন্দকে নিয়েই থাকো। আমি যাচ্ছি।”
জোহান রাগ করে পা বাড়ালো পার্ক থেকে চলে যাওয়ার জন্য।
মিতুল পিছন থেকে বললো,
“ওহে আমার ওয়ার্ল্ড হ্যান্ডসাম স্বামী, দাঁড়াও!”
জোহান থামলো না। পায়ের চলন অব্যাহত রেখে বললো,
“তুমি চেরি নিয়েই থাকো। আমাকে ডেকো না। ফিরবো না আমি।”
মিতুল হাসলো। পিছন থেকে দৌঁড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরলো জোহানকে।
জোহানকে এবার থেমে যেতেই হলো।
মিতুল বললো,
“পৃথিবীর যে কোনো কিছুর থেকে তোমায় সবচেয়ে বেশি ভালবাসি। চেরি ব্লসম যতটা নিষ্পাপ, তার থেকে অনেক বেশি নিষ্পাপ তোমার জন্য আমার অনুভূতি। এটা সবকিছুর থেকে অধিক নিষ্পাপ, শুভ্র এবং মিষ্টি! তুমি আমার প্রিয় চেরি ব্লসমের থেকে বেশি প্রিয়!”
(সমাপ্ত)
______________
(চেষ্টা করেছিলাম গল্পটা গুছিয়ে লিখতে। জানি না ঠিক কতটা গুছিয়ে লিখতে পেরেছি! কতটা ভালো লেগেছে আপনাদের। ভুল গুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
ধন্যবাদ সবাইকে, এত দিন সাথে থাকার জন্য।)