জোরপূর্বক ভালোবাসা part 3

0
1991

#জোরপূর্বক_ভালোবাসা
#Writer_Ashiya_Nur
#part 3

– কোথায় যাচ্ছ জান? ( আকাশ )
ভয়ে ভয়ে একবার পেছনে তাকালাম নাহ আরমান নেয়। মনে হয় দেখে নি।
– কি হলো পেছনে কি দেখছো,, আর ব্যাগ নিয়ে কোথায় যাচ্ছিলে? ( আকাশ )
– ক ই কি দেখ বো কিছু না তো ( ভয়ে তুতলিয়ে)
– ভালো আচ্ছা আজ তোমাকে আনতে যেতে পারি নি তার জন্য রাগ করেছো ( ইনোসেন্ট মুখ করে )

রাগ করবো কে আমি তো খুশি হয়েছি? আজ নিজের ইচ্ছে মতো আসতে পেরে। প্রতিদিনে যদি একটা একটা করে দেখতাম আপনি আমার পেছনে আর পরে নেয় সেদিনের মতো আমার থেকে খুশি আর কেউ হতো না।( মনে মনে এগুলো কি সামনে বলার সাহস আছে নাকি আমার )

– নাহ তো রাগ করবো কেন! ( আশিয়া )
– এই জন্য তোমাকে আমি এতো ভালোবাসি জান। তুমি কখনো রাগ করো না। আচ্ছা কিছু খেয়েছো আমার খিদে পেয়েছে তোমার চিন্তায় না খেয়েই চলে এসেছি চলো খেয়ে আসি। ( বলেই হাত ধরে কানটিনের দিকে যেতে লাগল)
– আমি খেয়ে এসেছি আপনি গিয়ে খান। আমি খাব না হাত ছারুন? ( হাত ছারানোর চেষ্টা করে )
– ওফ আমি একা খেতে পারি তোমাকে ছাড়া তুমি ও আমার সাথেই খাবে।

– আমি তো খেয়ে এসেছি আমি আর খেতে পারবো না সত্যি?
– তুমি খেয়ে আস নি আমি জানি। সকালে কে রান্না করবে তোমার জন্য?
হুম আকাশ ঠিকই বলেছে আমি খেয়ে আসি নি। আম্মুর আমাকে রান্না করে দেবার মতো পরিস্থিতি নেয়। চলাফেরা করতে কষ্ট কাজ যা আমাকেই করতে হয়। ছোট্ট একটা বোন আছে ও করে কিন্তু আমি করতে দেয় না বেশি।
– ওফ এতো জরাজরি আর সহ্য হয় না। আমার কথা কেন বিশ্বাস হয় না আপনার বলেন তো। আমি খাবো না বলছি তো খাবো না এতো জুড় করার কি আছে। সব সময় এমন ভালো লাগে না।( একটু রেগেই বললাম )

– আমার ইচ্ছে মতো চললে তো আর জোর করতাম না। তুমি তো আমার কোন কথাই শুনো না খালি না আর না কর।

আর কিছু বললাম না কলেজের সবাই অদ্ভুত নজরে আড়চোখে তাকিয়ে আবার চোখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। এটা আজ নতুন কি এক মাস ধরেই দেখে যাচ্ছে। আকাশের এমন করাতে কেউ আমার সাথে কথা বলে না এরিয়ে চলে। একমাত্র লিমা আর সুমি ছাড়া।

– জান কি খাবে বলো?
– বললাম তো কিছু খাবো না!
– ওকে না খেলে আমি খাই ( বলে খাবার অর্ডার দিল)

অশি মেয়েটা নতুন ভর্তি হয়েছে। তিন দিন আগে সেদিন আকাশ এসেছিল না কলেজে। প্রথম দিনই সুমির সাথে ঝগড়া লেগেছিল মেয়েটা মনে হ য় ধনী হবে অনেক কথা বলার সময় টাকার গরম দেখায় খালি।

আমাদের দিকে কেমন করে যেন তাকিয়ে আছে। স্যার রা কলেজের কোন ছেলে মেয়ে আমাদের দিকে তাকানোর সাহস করে না। সবাই আকাশ কে অনেক ভয় পায় কারণ আকাশের বাবা অনেক নাম ডাক। আকাশ না থাকলে অনেকেই আমার সাথে বাজে বিহেব করে আমার কিছু বলতে পারি না শুধু চুপ করে শুনি কিন্তু সাথে সুমি থাকলে সেই ঝগড়া লাগে। আমাকে কেউ কিছু বললে সুমি তাকে ইচ্ছা মতো কথা শুনিয়ে দেয়।

কারো ডাকে বাস্তবে ফিরলাম,, আর কে ডাকবে আকাশ ডাকছে।

– কি হলো চিল্লাচিল্লি করছেন কেন?
– আমার সাথে বসে আছে অথচ একবার ও আমার দিকে তাকালে না কথা বলছো না সব সময় এতো কি ভাবো তুমি।
– কিছু না।
– আচ্ছা হা করো তো( হাতে খাবার নিয়ে আমার দিকে ধরে)
– কেন হা করবো আর খাবার আমার দিকে না ধরে নিজে খান।
– আমি তো খাবোই তোমাকে ও আমার সাথে খেতে হবে।
– আমি খাবো না।
– ওফ রাগ উঠিয়ো না তো খাও
– না
– তুমি হা করবে নাকি আমি সবার সামনে কিছু করে বসবো। তুমি কিন্তু জানো আমার আবার লজ্জা কম।

সব সময় ভয় দেখানো কি আর করবো খেয়ে নি। নিজে আর কি আমাকেই সব খাইয়ে ছাড়লো।

এদিকে
অশি: কে রে এই হ্যান্ডসাম ছেলেটা? ( অশি ফ্রেন্ড টগর কে বলছে)

টগর : আকাশ চৌধুরী এখানকার নেতা বলতে পারিছ।

অশি: ওই মেয়ে সেই না যার বান্ধবীর সাথে ঝগড়া করেছিলাম প্রথম দিন।( হাত দিয়ে দেখিয়ে)

টগর : হুম

অশি: ছেলেটাকে আমার অনেক পছন্দ হয়েছে। এর সাথে আমি প্রেম করবো কিন্তু ওই মেয়ের সাথে এমন করছে কেন।

টগর : কি বলিস তুই। আকাশ ভাইয়ের সাথে প্রেম করবি এটা কল্পনা তে ও আনিস না।

অশি: কেন আনবো না আমার আকাশ কে পছন্দ হয়েছে। অনেক ছেলেই আমাকে প্রপোজ করেছে কাউকে ভালো লাগেনি কিন্তু আকাশ কে প্রথম দেখেই অনেক ভালো লেগেছে। কি না দেখতে যেমন ইসমাট তেমনি সুন্দর। কতো হ্যান্ডসাম দেখতো আমার সাথে এমন একজন কেই মানায়।

টগর : কিন্তু বৃথা সপ্ন দেখে লাভ নাই। আকাশ অলরেডি একজনের প্রেমে পাগল হয়ে আছে।

অশি: কি বলছিস তুই কার!

টগর : আশিয়া ( হাত উঠিয়ে দেখিয়ে) ওই যে দেখছিস না খাইয়ে দিচ্ছে কতো কাহিনী না করলো এই মেয়ের জন্য। সব মেয়ে ক্রাশ ছিলো আকাশ কিন্তু আকাশ সবাই কে ছেড়ে এই মেয়ের পেছনে পরে আছে।

অশি: আমার এই প্রথম কাউকে ভালো লেগেছে তাকে তো এতো সহজে ছারবো না( রেগে)

সুমি দেখেছে আকাশ আশিয়াকে টেনে কানটিনে নিয়ে যাচ্ছে। তাই এখন কানটির দিকে যাচ্ছে কারণ কলাসের টাইম হয়ে গেছে। কিন্তু হঠাৎ ঝরের গতীতে বাচ্চু সামনে এসে দাড়াল। এই ছেলেটাকে দেখলে ঠাসিয়ে চর মেরে বলতে মন চায়,,, জন্মমের হাসি আমার কাছে এসেই কেন দেস রে। সব সময় আমাকে দেখলেই একটা লজ্জা মিশ্রিত হাসি দেবে যা দেখলে আমার মনে হয় তার শাশুড়ি ইডিয়েট একটা। এখন বলবে ” সুমি ভালো আছ তোমাকে কেমন রাগী দেখাচ্ছে কারো সাথে ঝগড়া করেছো ”

বাচ্চু : সুমি ভালো আছ? তোমাকে কেমন জানি রাগী দেখাচ্ছে কারো সাথে ঝগড়া করেছো!

ওই যে আবার বলবে ” তোমাকে রাগলে না অনেক সুন্দর দেখায় বেবি ডলের মতো,,,

বাচ্চু- তোমাকে না রাগলে অনেক সুন্দর দেখায় একদম বেবি ডলের মতো। কি হলো কিছু বলো?

কিছু না বলে হাত উঠাছে তার মানে চর মারার ইচ্ছে না আর এখানে থাকা যাবে না। যদি থাপ্পড় দিয়ে বসে মান সম্মান সব যাবে এই কলেজে ভেবে পেছনে ঘুরে দৌড় বাচ্চু।

আর সুমি তো হাসতে হাসতে শেষ। আমি জানি বাচ্চু এটাই করবে যখনই কথা বলে তখনই দৌড় মারে।

আশিয়া: এতো হাসছিস কেন বাচ্চু ভাইকেও দেখলাম দৌড়াচ্ছে!

সুমি: ভেবেছি আমি চর মারবো তাই সম্মান বাচাতে পালিয়েছে।

বলেই হেসে দিলাম সাথে আশিয়া ও।

সুমি: ছারল তাহলে আমি তো ভাবছি আর ছারবে না।

ছুটির পর

গেটের দিকে যাচ্ছি হঠাৎ আরমান আমার কাছে দৌড়ে এলো। আমি একটু সরে দাড়ালাম নয়লে আমার উপরে পরতো।

আশিয়া- কি হয়েছে এভাবে দৌড়ালে কেন?

আরমান- কাল তুমি কোথায় ছিলে আর আজ আমার সাথে একটু ও কথা বললেনা যে। কি হয়েছে তোমার !

আশিয়া- কিছু না আমার সাথে আর কথা বলতে এসো না তুমি আমার থেকে দূরত্ব বজায় রেখে চলবে।

আরমান : কেন আমরা তো ভালো ফ্রেন্ড ছিলাম তাহলে হঠাৎ এমন করার কারণ আমি কিছু ভুল করেছি।

আশিয়া: নাহ কিন্তু আমি কথা বলতে পারবো না।

বলেই চলে এলাম তারাতারি আরমান অনেক ভালো আমাকে লেখা পড়ায় সাহায্য করেছে। আমি কয়েক দিন ইচ্ছে করে ওর সাথে বেশি মিশেছি যাতে আকাশ আমার পেছন ছারে কিন্তু আমার এই ডিসিশনের জন্য যে খারাপ টা হতে যাচ্ছিল। তারপর আর আমি সেই ভুল করতে পারিনা।

গেটের বাইরে এসেই দেখে আকাশ গাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। কাল না বাইক দেখলাম আজ বাইক আনে নি।

আকাশ : কি হলো দাঁড়িয়ে পরলে কেন উঠো গাড়িতে। কাল রাজু বাইকে এক্মিডেন্ট করেছে ওকে রাতে চালিয়ে আসতে বলছি ও যে বাইক ভালো চালাতে পারে না বলে ও নি।

আমার সত্যি অনেক খারাপ লাগছে রাজু ভাইয়ের জন্য লোকটা অনেক ভালো আমাকে বোন বলে তাই তো আজ তাকে দেখি নি একবার ও।

আশিয়া: এখন কেমন আছে( চিন্তিত হয়ে) বেশি ক্ষতি হয়েছে নাকি তার।

আকাশ : ভালো এক্মিডেন্টই হয়েছে কি এখন অনেকটাই ভালো। এতো চিন্তা করা দরকার নাই এখন সুস্থ আছে।

আশিয়া: ওহ।

#চলবে