ডিভোর্স পর্বঃ ৬

0
3483

#ডিভোর্স
পর্বঃ ৬
লেখকঃ আবু সাঈদ
সরকার

স্নেহাঃ ভিতরে যেতেই
যা দেখলাম তা আমি
কখনো কল্পনাও করতে
পারি নি…

এটা সত্যি স্বপ্নের মতো
মনে হচ্ছে..

বাড়িটা বাইরে থেকে
যতটা দেখতো সুন্দর তার
থেকেও বেশি সুন্দর
বাড়ির ভিতরটা..


সাঈদঃ কী হলো এমন
ভাবে কী দেখচ্ছো..

স্নেহাঃ এত সুন্দর
বাসায় আপনি একা
থাকতেন..

সাঈদঃ হুম তবে একলা
বলতে গেলে ভুল হবে
আমার বাসায় তো
রান্না করার কাজের
আন্টি টা থাকে এবং
গাড়ির ড্রাইভার ও,…


স্নেহাঃ আপনি কী
করেন সেটা কিন্তু
এখনো বলেন নি…


সাঈদঃ বলবো আগে
ফ্রেশ হয়ে কাপড় গুলো
চেনজ করো তার পর সব
বলবো..

স্নেহাঃ আচ্ছা কিন্তু
টিউবওয়েল টা কোথায়..

সাঈদঃ এখানে আবার
টিউবওয়েল কোথা
থেকে আসবে..

স্নেহাঃ তাহলে
কোথায় ফ্রেশ হবো..

সাঈদঃ আমার রুমের
সাথে এ টার্চ বাথরুম
আছে সেখানে..


স্নেহাঃ আচ্ছা…

তার পর ওনি ওনার রুমটা
দেখিয়ে দিলেন ওয়াও
ওনার রুমটা কত সুন্দর
আর কত গোছালো
বাথরুমে তো আসলাম
কিন্তু পানি কোথায়…

তাই বাথরুম থেকে পানি
কোথায়.

সাঈদঃ আমি রুমেই
ছিলাম তাই সব কথা
স্পষ্ট বুঝতে পারছি
ওপরে যে তিনটা গোল
স্টিলের ঢাকনার মতো
আছে সেখান কথার
প্রথমের টা ঘুরাও..

স্নেহাঃ ওনার কথা
মতো ওপরে টা ঘুরাতেই
ঝর ঝর করে পানি পড়তে
লাগলো এটা বুঝতে
পারছি না পানি টা
আসতেছে কোথা
থেকে..


তার পর ফ্রেশ যেই
বাথরুম থেকে বেড় হলাম
ঠিক তখনি…

সাঈদঃ এই ড্রেস টা
পড়ো..

স্নেহাঃ ড্রেস টা হাতে
নিতেই ওমা এত সুন্দর
শাড়ি আগে কোন দিন
দেখি নি..


সাঈদঃ আজকের পর
এটা কী এর থেকেও
আরো সুন্দর আর দামি
শাড়ি পড়বে…


তুমি পাশের রুম থেকে
শাড়িটা পড়ে আসো
আমি ততক্ষণে রেস্ট
নিয়..

স্নেহাঃ আচ্ছা…

সাঈদঃ স্নেহা রুম
থেকে যেতেই বিছানায়
শুয়ে পড়লাম আহ এত খনে
শরীরটা শান্তি পেলো..


স্নেহাঃ শাড়িটা পড়ে
নিজেই নিজেকে
চিনতে পারছি না
আচ্ছা এটা কী আমি
নাকি অন্য কেউ


সাঈদঃ হালকা ঘুম ঘুম
ভাব লেগে
আসতেছিলো ঠিক
তখনি…

স্নেহাঃ আমাকে কেমন
দেখাচ্ছে..

সাঈদঃ স্নেহার দিকে
তাকতাতেই কলিজাটা
ঠান্ডা হয়ে গেলো কত
সুন্দর লাগতেছে
তাকে…

হুম অনেক সুন্দর
লাগতেছে..

স্নেহাঃ

সাঈদঃ এখানে বসো
তোমাকে অনেক কিছু
বলার আছে..

স্নেহাঃ হুম বলেন..

সাঈদঃ তুমি পড়াশোনা
করছো..

স্নেহাঃ হুম ক্লাস টেন
পযন্ত তার পর পড়াশোনা
করার সুযোগ হয় নি..


সাঈদঃ তুমি হয়তো
আমার অতীত সম্পর্কে
কিছুই জানো না কে
আমি কী আমার পরিচয়।

তাহলে শুনো..

আজ থেকে ১৫ মাস
আগে বাবার ইচ্ছেতে
তার বন্ধুর মেয়ে সঙ্গে
আমার বিয়ে দেন আমি
তখন বিয়ে করতে
মোটেও প্রস্তুত ছিলাম
না কেনো আমি তখন
সম্পুর্ন বেকার ছিলাম
বাবার টাকায় চলতাম
কিন্তু বিয়ের কয়েক
দিন পরে বাবা হার্ট
অ্যাটাক করে মারা
যান…

বাবা মারা যাওয়ার পর
থেকে আমার বউটা
রোজ রাতে ঝগড়া
করতো কিন্তু আমি
চুপচাপ সহ্য করে নিতাম
কারণ তাকে
ভালোবেসে
ফেলেছিলাম…

কিন্তু তার অত্যার দিন
দিন বেড়েই গেলো..

এক সময় তার আর মাঝে
ডিভোর্স এর কথা উঠে
আসে আমি মনটা বিন্দু
মাএও চাইতো না যে
তাকে ডিভোর্স দিয়
কিন্তু হাজার বুঝিয়েও
কোনো লাভ হয় নি শেষ
পযন্ত ডিভোর্স হয়েও
গেলো…


ডিভোর্স পর ঠিক মতো
খাওয়া দাওয়াই ছেড়ে
দিচ্ছিলাম তার পর হঠাৎ
একটা লেটার আসে
যেটা আমার পুরো
জীবনটাকে বদলে
দেয়…

ডিভোর্স এর ঠিক ৩ মাস
আগে ব্যাংক এর
সিনিয়ার অফিসার এর
জন্য আবেদন
করেছিলাম সেটার
রেজাল্ট আসলো চাকরি
হয়ে গেছে আমার…


চাকরিতে জয়েন করার
কয়েক দিন পর বাবার
একটা চিঠি পাই ওনার
আলমারিতে যেটাতে
লেখা ছিলো..

দুনিয়াতে বেচে থাকতে
তোর মনের মতো কিছু
দিতে পারি নি কিন্তু
আমার মৃত্যুর পর আমার
সব জমানো টাকা তোর
নামে হয়ে যাবে…


তার পর আমি বাবার
ব্যাংক একাউন্ট চেক
করে দেখলাম বাবার
সারা জীবনের টাকা
আমার নামে লেখে
দিয়েছেন ব্যাংক এ
ওনি ২০ কোটি টাকা
রেখেছিলেন আমার
জন্য…

কিন্তু বাবার ইচ্ছে
ছিলো একটা সুন্দর
গাড়ির কিনার তাই
বাবার জন্যই ১৫ কোটি
টাকা দিয়ে এই গাড়িটা
কিনি হয়তো ওনি বেচে
নেই তবুও আমার মনে হয়
ওনি সব সময় আমার
পাশে বসে আমার সাথে
সব জায়গায় যান…

এভাবে দেখতে দেখতে
এক বছর কেটে যায়
আমি প্রায় সেই স্বার্থ
পর টার কথা ভুলেই
গেছিলাম কিন্তু হঠাৎ
আমার জুনিয়র অফিসার
এর বিয়েতে সেই
মেয়েকে আবার দেখতে
পাই তার পর সেই
মেয়েটাকে আবার ভুলে
যেতেই তোমাদের
গ্রামে যাই..

এর পর সেখানে গিয়ে
তোমাকে মন থেকে
ভালোবেসে ফেলি…



স্নেহাঃ এত বড় একটা
ঝড় বয়ে গেছে আপনার
জীবনের উপর দিয়ে…

সাঈদঃ হুম তখনি স্নেহা
আমাকে জরিয়ে ধরে..

স্নেহাঃ আমার এসবের
কিছু দরকার নেই
আপনার সঙ্গে আমি
গাছ তলায় থাকতেও
রাজি কেনো না এসব
টাকা পয়সা দু দিনের
আর ভালোবাসার মানুষ
টা সারা জীবনের..


সাঈদঃ হুম তো একটা
কথা ভাবছি ৪ দিন পর
আমাদের বিয়ের
আয়োজন করতে চাচ্ছি
বেশি বড়ো করে না
মোটামুটি ভাবে…

স্নেহাঃ আপনার যেটা
ভালো মনে হয় সেটাই
করেন আমার কোনো
আপতি নেই..

সাঈদঃ হুম তুমি কয়েক
দিন এই রুমে একায়
রাতে থাকবা আমি
পাশের রুমেটাতে
থাকবো..

স্নেহাঃ কেনো এক
সাথে থাকলে কী হবে..

সাঈদঃ এক সঙ্গেই
থাকতো সারা জীবন শুধু
মাএ চারটা দিন ..


স্নেহাঃ আচ্ছা…


তার পর সময় তার মতো
চলতে লাগলো দেখতে
দেখতে ৩ টা দিন কেটে
গেলো মোটামুটি
ভালোই আয়োজ করা
হয়েছে.

সারা বাড়িটা লাইট
দিয়ে সাজানো হয়েছে
৫০ জনের মতো মানুষকে
খাওয়ানোর ব্যবস্থা
করা হয়েছে এক কথাই
সব কিছু ওকে…


তার পরে দিন সব নিয়ম
নীতি মেনে আমাদের
বিয়েটা সম্পুর্ণ হলো..

ওনার অফিসের সবাই
এসেছিলেন তার পর
আশে পাশের কয়েক
জন…


সাঈদঃ সবাই আসলো
কিন্তু নীল আসলো না
কেনো ওকে এতো বার
করে বললাম ওর কিছু
আবার হয়ে যায় নি
তো…

একটা ফোন দিয় জেনে
নেই…

ফোন এর উপর ফোন
দিয়ে যাচ্ছি ধরছেই
না..


হঠাৎ যখন ফোনটা ধরলো
কান্না মিশ্রিত কন্ঠে
স্যার আপনি প্লিজ
নীলকে আমার কাছে
ফিরিয়ে দিন…

চলবে..