গল্গ #তার জন্য
পর্ব#৩
লেখিকা#আফিফা আনতারা হুমায়রা
হাসপাতালে উপস্হিত সবার চোখে পানি।সবাই অনেক কষ্ট পেয়েছে। পাবেই না বা কেন সবার কত স্বপ্ন ছিল বেবিটাকে নিয়ে।আর আনতারাকেই বা কি বলবে তারা।আনতারা বেবিদের খুব খালোবাসে।আর সেখানে তার নিজের সন্তান……
কেউ আর কিছু ভাবতে পরছেনা।
হঠাৎ করে আনতারার মা ঘাবড়ে গেল।কারন তাকে কেউ জড়িয়ে ধরে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে।
(হু ঠিক ধরেছেন ড্রামাবাজ আয়ূশী ওটা)
আয়ূশী:চাচি মনি(কেঁদে কেঁদে),,
চাচি মনি এসব কি করে হলো..?
আনতারার মা:ফ্লোরে পা পিছলে পড়ে গেছিল(কেঁদে কেঁদে)। এখন আমার মেয়েটাকে সামলাব কেমন করে। ও যে এটা মানতে পরবে।মেয়েটা কত খুশি হয়েছিল যখন জানতে পেরেছিল ও মা হতে যাবে।
*এদিকে আয়ূশ অনুসূচনায় পড়ে যায়।কি করল ও এটা।ও জানত আনতারা বেবিদের কতটা ভালোবাসে। আর ও নিজের বেবির জন্য কতটা অপেক্ষায় ছিল।আচ্ছা বেবিটাকে না মারলেও তো হত।
আসলে ফ্লোরে আয়ূশ তেল+পানি ফেলে রেখেছিল যাতে এমন একটা কিছু ঘটে।*
আয়ূশী:চাচি মনি তুমি কোন চিন্তা কর না আমি আনতারারর খেয়াল রাখব।
তাদের কথাবার্তার মাধ্যে একজন নার্স এসে বলল আনতারাকে কেবিনে দেয়া হয়েছে আর ওর জ্ঞান ফিরেছে।
আনতারা আর আয়ূশের মা বাবা আগে কেবিনে গেল।তারা যাওয়ার পর,,,
আয়ূশ:এটা কি ঠিক করলাম আমরা..?
আয়ূশী:আমরা যা করেছি একদম ঠিক করেছি আয়ূশ,তুমি একদম গিল্টি ফিল করবা না।
তারপর ওরা দু’জনেও কেবিনে গেল।
আনতারা বেডে শুয়ে চোখের পানি ঝরাচ্ছে। সবাই তাকে শান্তনা দিচ্ছে।
আয়ূশ আনতারার কাছে এগিয়ে গিয়ে ওর মাথায় হাত রাখে।
আয়ূশ:দেখ আনতারা যা হবার……
আয়ূশ কথাটা শেষ করার আগেই আনতারা বলল আমি ঠিক আছি।আল্লাহ আমাকে যথেষ্ট সহ্য ক্ষমতা দিয়েছন।
হাসপাতালে কয়েক দিন থাকার পর আনতারাকে বাসায় আনা হয়।সাথে আয়ূশীও আসে আনতারার খেয়াল রাখার জন্য।
হাসপাতাল থেকে ফেরার পর সবসময় চুপচাপ থাকে আনতারা। সবার সাথে ঠিক মত কথা বলে না,,ঠিক মত খাওয়া করে না।শুধু শেষ রাতে উঠে নামায পড়ে আর হাত তুলে আল্লাহর দরবারে কাঁদে।
আনতারার শাশুড়ি মাও থাকবেন কিছুদিন ওদের সাথে।
আয়ূশী সুযোগ পেলেই আয়ূশ এর মাকে পটানোর চেষ্টা করে আর আনতারার নামে কান ভারী করে।এখন আয়ূশের মাও তেমন আর আনতারার রুমে যায়।কথাও বলেনা ঠিক মত।আয়ূশীর কাছেই আনতারার খরব নেয়।
আজ অনেক দিন পর আনতার রুম থেকে বের হয়।আনতারাকে দেখা মাত্রই আয়ূশের মা তার গালে চড় বসিয়ে দেয়।
আনতারা:মা(ছলছল চোখ)।
আয়ূশ,আয়ূশী তখন নাস্তা করছিল।
মায়ের এমন কাজে আয়ূশ ভীসন অবাক হয়।যে মেয়েকে তার মা কখন বকা পর্যন্ত দেয়নি আর আজ তাকে চড় দিল।
আর এদিকে আয়ূশীর মনে লাড্ডু ফুটছে। করন তার প্লান সাকসেস।সে তো আর আনতারা খেয়াল রাখতে আসেনি।কুটনিটা তো এসেছিল কুটনামি করতে।
ওদের এসব ভাবনার মাঝেই আয়ূশের মা আনতারাকে তার রুমে নিয়ে গিয়ে দরজা লাগিয়ে দেয়া
১ঘন্টা পর আয়ূশের মা রুম থেকে বের হয়ে আয়ূশকে বলে সে যে আনতারাকে তাড়াতাড়ি ডিভোর্স দেয়।মায়ের মুখে কখন এমন কথা আয়ূশ আশা করেনি।ও আয়ূশীর দিকে তাকায় তখন আয়ূশী ওকে চোখ মেরে জানান দেয় যে সব ওর কামাল।
এ ঘটনার সাত দিনের মাথায় ওদের ডিভোর্স হয়ে যায়।আনতারার বাবা-মা এসে ওকে নিয়ে যায়।যাওয়ার আগে আনতারা ওর শাশুড়ি মা কে ধরে অনেক কাঁদে। তিনিও কেঁদে দেন।মায়ের চোখে পানি দেখে আয়ূশ অবাক।কারন তিনি তো বলেছেন আনতারাকে ডিভোর্স দিতে আর এখন কাঁদছে কেন।কিছুই বোঝেনা আয়ূশ।তবে সে এটা ভেবে শান্তি পায় ওদের ডিভোর্স হচ্ছে আর খুব শীঘ্রই সে আয়ূশীকে বিয়ে করবে।
আনতারার বাবা-মা ওকে নিয়ে যাওয়ার সময় আনতারা বাড়ির দরজা থেকে ফিরে এসে আয়ূশ কে বলে,,,
“অবৈধ কোন কিছুই মানুষকে শান্তি দেয়না হোক সেটা টাকা বা সম্পর্ক। “তাই যত দ্রুত সম্ভব আয়ূশী কে বিয়ে করে নিয়।
আনতারা এমন কথা শুনে আয়ূশ হতবম্ভ হয়ে যায়।ওর জানা মতে আনতারার তো এসব কিছুই জানার কথানা।কারন সে কখনই আনতারাকে কোন কিছু বুঝতে দেয়নি। কেমন করে বুঝল সে।আচ্ছা ও কি জানে বাচ্চটা আমি মারতে চেয়েছি।
আয়ূশের এতশত ভাবনার মাঝেই আনতারারা চলে যায়।এটাই ছিল আনতারা আর ওর শেষ দেখা।
(বর্তমানে)…………..
মিষ্টি একটা কন্ঠ শুনে আয়ূশ বর্তমানে ফিরে আসে।
আংকেল তোমার কি মন খারাপ,কেউ বোকেছে তোমায় তুমি কাঁদছ কেন।আমাকে বল আমি ওকে বোকে দেব।
আসলে অতীতের কথা ভাবতে ভাবতে কখন যে ওর চোখ থেকে পানি গড়িয়ে পড়েছে নিজেই বুঝতে পারেনি।
এদিকে আনতারা ওর মেয়েকে না পেয়ে খুজতে খুজতে আয়ূশের রুমে আসে।
আনতারা:কি করছ আশু পরী।বাবা তোমাকে খুঁজছে।তুমি জাননা বাবা তোমাকে না দেখতে পেলে চিন্তা করে।চল এখান থেকে।
তখন আনতারার মেয়ে বলে দেখনা মা আংকেলটা কাঁদছে।
আনতারা:কিছু মানুষ নিজের দোষে কাঁদে। চল এখান থেকে।বলে ওর মেয়ের হাত ধরে চলে আসতে ধরে।
আয়ূশ:আ..ন..তা..রা..(কাঁপা কন্ঠে)
আনতারা আমার তোমার সাথে কিছু কথা ছিল।
আনতার:নিশ্চুপ
আয়ূশ: প্লিজ। অনলি ১০ মিনিট প্লিজ।
………….চলবে