তার শহরের মায়া ২ পর্ব-৩৩ এবং শেষ

0
1512

#তার_শহরের_মায়া ২
#অন্তিম_পর্ব
#Writer_Liza_moni

ঘড়ির কাঁটা ১১টা ছুঁই ছুঁই। সকাল থেকেই কিছু খায়নি তূর্য।এক টানা বাইক চালানোর কারণে খারাপ ও লাগছে খালি পেটে থাকতে। খাগড়াছড়ি তে এসে পৌঁছে গেছে কিছুক্ষণ আগেই।খালি পেটে আর থাকতে পারবে না সে।
পাহাড়ি এলাকায় সচরাচর বড় কোনো রেস্টুরেন্ট নেই।এই দিকে আবার অনুদের বাড়ির ঠিকানা খুঁজে বের করতে হবে।হাতে সময় ও অল্প। তূর্যর ভাগ্যে ভালো ছিল। একজন লোক কে অনুর ছবি এবং তার কথা বলতেই লোক টা তূর্য কে অনুদের বাড়ির রাস্তা দেখিয়ে দেয়।
তূর্য লোক টা কে ধন্যবাদ জানিয়ে অনুদের বাড়ির পথে রওনা দেয়।

মাহির,মাহিরের বউ, এবং তার পরিবার চলে এসেছে অনুদের বাড়িতে।অনু সবার আগে মাহিরের বউকে দেখতে ব্যস্ত হয়ে গেলো।এই দিকে রান্না ঘর থেকে মিসেস আফরোজা চিল্লিয়ে যাচ্ছেন মাহিরদের নাস্তা দেওয়ার জন্য।সব কিছু তৈরি করে ট্রেতে রাখা আছে।অনু শুধু মাহিরদের সামনে দিয়ে আসবে।সেই খবর ও নেই মেয়ের।

অনু মাহিরের বউয়ের হাত ধরে টেনে নিজের কাছে নিয়ে এসে বললো,
কী নাম গো তোমার ভাবি?

মাহিরের বউ মুচকি হেসে বললো,রূপসা।

বাহ বেশ মিষ্টি নাম তো। আচ্ছা তুমি বসো।আমি নাস্তার ট্রে টা নিয়ে আসি। নাহলে অনেক বকা শুনতে হবে। বলেই অনু রান্না ঘরে চলে গেল।

এত সময় লাগে? গল্প কী পরে করা যায় না?

আরে আমি গল্প করলাম কই? শুধু নামটাই তো জিজ্ঞেস করছি।

ভালো করছেন আম্মা জান।এই বার ট্রে টা নিয়ে যা।
অনু নাস্তার ট্রে টা মাহির সামনে রেখে দাঁড়াতেই কলিং বেল বেজে ওঠে।

কে এসেছে দেখার জন্য অনু দরজা খুলতে চলে গেল। দরজা খুলে সামনে তাকাতেই অবাক হয়ে যায় অনু।

অনু বিষ্ময় নিয়ে বললে উঠলো,
আপনি? এখানে সত্যি দেখতেছি তো আমি?
তূর্য মুচকি হেসে চট করে অনুর হাতে চিমটি কেটে দেয়।

আঁউচচ,,,এত জোরে চিমটি দিলেন কেন?

আপনাকে বিশ্বাস করানোর জন্য।
এট লাস্ট আপনাদের বাড়িটা খুঁজে পেলাম।উফফ শান্তি।

তূর্য কে দেখে অনু অনেক বেশি খুশি হয়েছে।চিল্লিয়ে বলে উঠলো,
আম্মু নতুন একজন অতিথি এসেছে।

ভেতরে আসুন।আর বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে না। তূর্য মুচকি হেসে অনুর পেছন পেছন হাঁটতে লাগলো। রান্না ঘর থেকে বেরিয়ে আসলেন মিসেস আফরোজা।অনু তূর্য কে ড্রইং রুমে নিয়ে গেল। তূর্য কে দেখে মাহির উঠে দাঁড়ালো।আর সবাই জিজ্ঞাসা দৃষ্টি নিক্ষেপ করে আছে অনুর দিকে। মিসেস আফরোজা ও অনুর দিকে ইশারা করে জিজ্ঞেস করলো কে এই ছেলে টা?

আম্মু উনি হলেন তূর্য।ঢাকা থেকে এসেছেন।

আসসালামুয়ালাইকুম আন্টি।

ওয়ালাইকুমুস সালাম।বসো বাবা। তূর্য একটু তাড়া দিয়ে বললো,আন্টি আপনার সাথে কিছু কথা ছিল। আপনি যদি অনুমতি দেন তাহলে বলতাম।

এত দূর থেকে জার্নি করে এসেছো। রেস্ট নাও।কিছু খাও। তারপর না হয় কথা বলো।

আন্টি আমার হাতে সময় খুব কম।

সেই যাই হোক। আপনি আসুন ফ্রেশ হয়ে কিছু খেয়ে নিন। দেখে তো মনে হচ্ছে সকাল থেকে না খেয়ে আছেন।

তূর্য কে কিছু বলতে না দিয়েই অনু তূর্যর হাত ধরে টেনে গেস্ট রুমে নিয়ে চলে গেল।

গেস্ট রুম থেকে বের হয়ে আসার সময় তূর্য অনুর বা হাত ধরে টান মেরে দেওয়ালের সাথে চেপে ধরে।

কী করছেন কী?

চুপ। আপনাকে আমি কঠিন শাস্তি দিবো। না বলে এসেছেন কেন?

আপনাকে তো দেখা করার কথা বলে ছিলাম। কিন্তু আপনিই তো দেখা করলেন না।

আমি যদি সময় পেতাম, আমার যদি কাজ না থাকতো তাহলে কী আমি আপনার সাথে দেখা না করে থাকতাম?

হয়েছে।যা শাস্তি সব পরে দিয়েন। এখন ছাড়ুন। বাড়িতে মেহমান আছে।কেউ দেখে ফেললে খারাপ ভাবে নিবে।

তূর্য অনু কে ছাড়ার বদলে আরো গাঢ় করে ধরে। দেখুক। তাতে আমার কি?

পাগল হয়ে গেছে এই লোক। ছাড়ুন তো। আমি কী আপনার বিয়ে করা বউ লাগি নাকি?

তূর্য এই বার অনুকে ছেড়ে দিয়ে কিছুটা দূরে সরে এসে মুচকি হেসে বললো, হবেন। খুব শীঘ্রই।

আচ্ছা আপনি হঠাৎ এখানে কেন আসছেন বলুন তো?
মতলব কী?

আপনাকে কেন বলবো?যান তো এখন। খাবার রেডি করুন। অনেক বেশি ক্ষুধা লাগছে।

মানুষের বাড়িতে এসে খাবার খুঁজে।সরম নাই।

হেই ইউ,
এটা আমার হবু শ্বশুর বাড়ি।অন্য মানুষের বাড়ি না।

অনু আর কথা না বাড়িয়ে চলে গেল তূর্যর জন্য খাবার আনতে।
ছেলেটা কে অনু? তোর সাথে কীসের সম্পর্ক?

অনু প্লেটে খাবার সাজিয়ে নিতে নিতে সোজা সাপ্টা উত্তর দিলো,
উনি আমাকে ভালোবাসেন।

আর তুই?

অনু মায়ের দিকে তাকিয়ে মুচকি একটা হাসি দিয়ে বললো, আমি ও উনার ভালোবাসার মায়ায় পড়ে গেছি। মেয়ের এমন উত্তর শুনে মিসেস আফরোজা মুচকি হেসে বললেন,
বুঝতে পেরেছি। ছেলেটা কী কথা বলতে চায় আমাদের।
কিন্তু যাই বল, ছেলেটাকে আমার বেশ ভালো লেগেছে।

মেয়ের জামাই হিসেবে পারফেক্ট তো?

একদম।

তূর্য ওয়াস রুম থেকে ফ্রেশ হয়ে বের হয়েছে।অনু প্লেট ভর্তি খাবার নিয়ে তূর্যর দিকে এগিয়ে দিল।

বাহ,হবু বরের জন্য হবু বউ খাবার নিয়ে আসলো।বাহ বেশ ভালো।
.
.
আন্টি আপনারা কি আমার সাথে আজ ঢাকায় যেতে পারবেন?

কিন্তু কেন?

আসলে আঙ্কেল আন্টি, আমি আপনাদের কী করে বলবো বুঝতে পারছি না।
তূর্য কে এমন নার্ভাস হতে দেখে হেসে কুটিকুটি হচ্ছে অনু।যদি ও সে জানে সে যদি একবার বলে তূর্য কে ভালোবাসে তাহলে মা বাবা বিয়েতে কখনো অমত করবে না।

অনুর বাবা গম্ভীর গলায় বললেন,
তুমি কি অনু কে ভালোবেসো?

তূর্য সময় না নিয়ে উত্তর দিয়ে দিলো।
হুম অনেক ভালোবাসি আর ওরেই বিয়ে করতে চাই আগামীকাল।

তূর্যর কথা শুনে থতমত খেয়ে যায় অনু।কী বলে এই লোক?মাথা কী পুরাই গেছে?

অনুর বাবা একটা মিষ্টি নিয়ে মাহিরের মুখে পুরে দিয়ে বললো,অনুর বিয়ের প্রথম মিষ্টি টা তুমিই খাও।

তূর্য কখনো ভাবতেই পারেনি অনুর বাবা মা এত সহজেই মেনে নিবে।
দুপুরে খাওয়া দাওয়া শেষ করে মাহিররা চলে গেলে তূর্য অনু কে তৈরি হয়ে নিতে বলে।

আচ্ছা আপনার মাথা ঠিক আছে তো? আগামীকাল বিয়ে এই সব কী বলছেন?

আপনাকে এত কিছু বুঝতে হবে না।

পাগল লোক একটা।

এই পাগলের সাথেই সারাজীবন থাকতে হবে।রাজি তো আপনি?

পাগলের পাগলী হয়েই কাটিয়ে দিতে পারবো হাজারো বছর।
.
অনুর বাবা মা বাসে উঠে গেলেন। তূর্য আর অনু বাইকে যাবে।অনুর প্রতি যেই অভিমান জমেছিল অনুকে দেখার পর সেই অভিমান গুলো হাওয়া হয়ে গেছে।

সারা রাস্তায় খুনসুটি করতে করতে ঢাকায় ফিরে তূর্য আর অনু।
এত সব কষ্ট শুধু আপনার জন্য করতে হয়েছে আমাকে।

কষ্ট না করলে কেষ্ট মিটে না।

রাত প্রায় বারোটা। সারাদিন এর জার্নি তে তূর্য অনেক ক্লান্ত।অনু কে দেখে খুশিতে আত্মহারা জুঁই এবং মিসেস তৃনা।অনুর পুরো মুখে হলুদ মাখিয়ে দিয়ে তূর্য নিজের রুমের দরজা বন্ধ করে শুয়ে আছে।এই দিকে রাগে গজগজ করছে অনু। তূর্য কে সামনে পাইলেই আস্ত গিলে ফেলবে। বিছানায় গা এলিয়ে দিতেই চোখ জুড়ে ঘুম আসে তূর্যর।
ছোট একটা বাচ্চার কান্নায় ঘুমাতে পারছে না সে।কান্নার শব্দের উৎস টা কোথায় তা খুঁজতে থাকে। বারান্দায় গিয়ে দেখে একটা ছোট বাচ্চা গাছের ফুল ছিঁড়তে না পেরে কান্না করছে। তূর্য বাচ্চা টাকে কোলে নিয়ে বললো, পিচ্চি তোমার মায়ের কাছে চলো।
তূর্য রুমের দরজা খুলে পিচ্চির মাকে খুঁজতে চলে গেল। তূর্যর রুমের দরজা খোলার অপেক্ষায় ছিল অনু।যেই দেখেছে রুমের দরজা খুলেছে অনু দৌড়ে চলে গেল সেখানে। তূর্য পিচ্চির মাকে খুঁজে তার কাছে বাচ্চাটা কে রেখে আবার রুমে চলে গেল। রুমের দরজা লক করে বিছানায় শুতে যাবে এমন সময় অনুর আক্রমণে ভয় পেয়ে যায়। তূর্যর মুখে, গলায়, ঘাড়ে হাতে হলুদ মাখিয়ে দিয়ে খিলখিল করে হাসতে লাগলো অনু। তূর্য অনুকে কিছু বলতে যাবে এমন সময় অনুর এই হাঁসি দেখে কথাই বলাই ভুলে গেছে।

এটাকেই বলে যেমন কর্ম তেমন ফল।
.
.
মিসেস তৃনা তূর্যর প্লেন সম্পর্কে কিছুই জানতেন না। জেমির জন্য শপিং করতে গিয়ে অনুর জন্য ও শপিং করে সে।রাতে মাকে তার প্লেনের কথা জানিয়ে দেয়।

বিয়েটা কমিউনিটি সেন্টারে হবে।এক সাথে দুই জোড়া বিয়ে। ছোট বোনের বিয়েতে পার্টিসিপেট চাইলে ও করতে পারবে না তনু।মনটা তার ভীষণ খারাপ। আরাফাত ঘুমিয়ে আছে। তনুর চোখে ঘুম নেই।একটা অশান্তি তার পিছু ছাড়ছে না।আজ এক সাপ্তহ হয়ে গেল,
তনুর বাচ্চা টা দুনিয়ার আলো দেখার আগেই হারিয়ে গেছে। একজন মায়ের কাছে এর চেয়ে কষ্টের আর কিছুই নেই।

সকালে অনু আর জেমিকে এক সাথেই বউ সাজানো হয়।এত সব আয়োজন দেখে অবাকের পর অবাক হচ্ছে অনু।
না লোকটাকে পাগল মনে করছিলাম। এখন মনে হচ্ছে এর চেয়ে বুদ্ধিমান লোক আর একটা ও দেখি নাই।যাই হোক আমার জামাইটা অনেক চালাক।আলাবু জামাই।

বউ সেজে বসে থাকা অনু কে দেখে চোখ জুড়িয়ে যায় তূর্যর। দুই জোড়া মিষ্টি পাখির বিয়ে শেষ হয়ে গেল কিছুক্ষণ আগে। সবাইকে সাক্ষী রেখে অনু আজ তূর্যর হয়ে গেল।অনু আজ তূর্যর কাছে বায়না ধরেছে। তূর্যর বাইকে করে শ্বশুর বাড়িতে নিয়ে যেতে হবে তাকে। নতুন বউয়ের এই আবদার হাসি মুখে মেনে নিলেন সবাই।

তূর্য মুচকি হেসে শুধু বলে ছিল,পাগলী বউটা আমার। বাইকে উঠে বসে তূর্য। তূর্যর কাঁধে হাত রেখে বাইকের পিছনে বসে অনু। জীবনের এক নতুন অধ্যায় শুরু তূর্যর সাথে। নতুন এক পথে যাত্রা শুরু।

কতটা ভালোবাসেন আমাকে?

বলবো না।জেনে কী করবা?
চুপ হয়ে গেল অনু।আজ প্রথম তূর্য তাকে তুমি করে বলছে। অদ্ভুত অনুভূতি।
কি হলো? চুপ করে আছো কেন?

না এমনি।
তোমাকে আমি কতটা ভালোবাসি এর ব্যাখ্যা আমার কাছে নেই। কিন্তু এটা খুব ভালো করেই বলতে পারবো যে তোমাকে ছাড়া আমি শেষ হয়ে যাবো।
বেঁচে থেকেও মরে যাবো।

♥️

রাতের আকাশে উজ্জ্বল তারার মেলা বসেছে আজ।
ছাদের দোলনায় দোল খাচ্ছে তূর্য।আজ তার আর অনুর বিবাহ বার্ষিকী।সাথে তিয়াস আর জেমির ও। বারোটা বাজছে। তিয়াস হয়তো সারপ্রাইজ দিতে ব্যস্ত জেমিকে।আর জেমিও হয়তো তিয়াস কে সারপ্রাইজ দিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। তূর্য হাসছে।আপন মনেই হাসছে।বুক পকেট থেকে একটা ছবি বের করলো।অনুর ছবি।শক্ত করে বুকের বা পাশে চেপে ধরলো ছবিটাকে।
Happy married day মেঘপাখি।

হঠাৎ তূর্য ফুঁপিয়ে কেঁদে ওঠে। চিৎকার করে কান্না করতে থাকে সে।নিচ থেকে জুঁই আর মিসেস তৃনা ছুটে আসে ছাদে। হাঁটু গেড়ে বসে পাগলের মতন কান্না করছে তূর্য। মিসেস তৃনা দৌড়ে গিয়ে ছেলে কে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দিলেন। ভাইয়ের এমন কান্না দেখে জুঁই ও আর নিজেকে সামলাতে পারলো না।

মা আমার সাথেই কেন এমন হলো?বলো না,,,
আমার মেঘ পাখি টা সারাজীবন এর জন্য কেন উড়ে চলে গেল?বলো না মা,,, আমি কী করে বেঁচে থাকবো অনুক ছাড়া?মরে যাচ্ছি আমি।
সেদিন আসার সময় কেন ট্রাকটা আমাদের বাইকটা কেই চূর্ণ বিচূর্ণ করে দিয়ে গেলো? আমার পরমানু কে আমার কাছ থেকে কেন চির তরে কেড়ে নিলো?বলো না,,,,

তূর্য মায়ের কাছ থেকে সরে এসে চিল্লিয়ে বললো যাও এখান থেকে। আমাকে একা থাকতে দাও।যাও,,,

মিসেস তৃনা চোখ মুছে জুঁই এর হাত ধরে টেনে নিয়ে চলে গেলেন। তিনি খুব ভালো করেই জানেন শত চেষ্টা করেও তূর্য কে আর সুস্থ করে তোলা যাবে না। চার মাসের ও বেশি সময় মানসিক হাসপাতালে ভর্তি ছিল তূর্য। বিয়ের দিন বাড়ি ফেরার সময় নেশায় মত্ত হয়ে ট্রাক চালকের হাতে মারাত্মক দুর্ঘটনার শিকার হয় তূর্য আর অনু।

ঘটনা স্থলেই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে গেল তূর্যর বুকের বা পাশে বসবাস করা অনুমেঘা।
তূর্য মাথায় প্রচন্ড চোট পায়।অনু কে হারিয়ে ফেলার শোকে কাতর হয়ে পড়ে সে। পাগল হয়ে গেছিল।যাকে সামনে পেতো তাকেই মারার জন্য তেড়ে আসতো।
এখন কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে। সারাদিন চুপ চাপ নিজের রুমের দরজা বন্ধ করে বসে থাকে।

মেঘ পাখি,ভালো আছো? হুম আমাকে অশান্তিতে রেখে তুমি তো ভালো থাকবেই। তোমার মায়া আমি কী করে কাটাবো বলো? তুমি আমার হয়েও আমার হলে না। তোমার শহরে তো আমার বসবাস ছিল তাই না? ভেবেছিলাম বিয়ের পর প্রতিটা সকালে ঘুম থেকে উঠে তোমার মুখ দেখে দিন শুরু করবো।নিয়ম করে শত বার বলবো ভালোবাসি।তা আর হলো কই? আমার শহরের মায়া কাটিয়ে তো তুমি পরপারে চলে গেলা।আমাকে একা রেখে। আমি কী করে তোমার শহরের মায়া কাটাবো অনু?

আপনি কাঁদছেন কেন?এই যে আমি,,, পেছনে ফিরে দেখুন।

সাথে সাথেই তূর্য পেছনে ফিরে তাকায়।অনু হাসি মুখে দাঁড়িয়ে আছে। তূর্য অনু কে বুকের মাঝে জড়িয়ে ধরে। কেন কল্পনায় আসো তুমি?

অনু হাসে। মুচকি হেসে বলে, আপনাকে ছাড়া আমি ভালো নেই তূর্য।একদম ভালো নেই।

আশেপাশে অনুকে খুঁজে তূর্য। না নেই। এই দুনিয়ার বুকে অনু আর নেই। আমি কী করে তার শহরের মায়া কাটাবো? তার শহরের মায়া যে আমাকে মেরে ফেলছে।
তার শহরের মায়ায় সারাজীবন নিজেকে আটকে রাখবো আমি।অনু শুনছো,,,
তোমার ভালোবাসার মায়ায় সারাজীবন আটকে থাকবো। অনেক বেশি ভালোবাসি তোমায় মেঘ পাখি।
শুনছো অনু,,,ভালোবাসি,,,,,♥️

সমাপ্ত,,,,,💔🥀

তার শহরের মায়া সিজন-০১