তুই আমার জানপাখি পর্ব-১৭

0
3941

তুই আমার জানপাখি
Faria Siddique
Part 17

সকালে

আমি আর ছোট ভাইয়া রেডি হচ্ছি।।।। আমাদের ফ্লাইট দুপুরে তাই আমরা দুইজনে সকালে বেরিয়ে পরব।।।।
ছোটভাইয়া অনেক চেষ্টা করেও বড় ভাইয়ার সাথে যোগাযোগ করতে পারল না।।।।
আমার খুব কস্ট হচ্ছে আমার বড় ভাইয়ার জন্য
আমিঃভাইয়া বড় ভাইয়াকে না নিয়েই আমরা চলে যাব???
ভাইয়াঃ টুকু আর কখনও ফারহানের নাম আমার সামনে নিবি না।।।।
আমি আর কিছু বললাম না।। কারন আমি জানি ভাইয়া বড়ভাইয়ার ওপর অনেক রেগে আছে।।।।
আমরা ব্যাগ নিয়ে নিচে নামলাম।।দেখি সবাই নাস্তার টেবিলে বসে নাস্তা করছে।।।।।।
দাদাভাই আর দাদিমাসহ সবাই আমাদের দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।।।।
বাবাঃকোথায় যাওয়া হচ্ছে দুই ভাইবোনের????
ভাইয়াঃআমার আর আমার বোনের ব্যপারে নাক গলাতে আসবেন না মি.নুরে আলম সিদ্দিকী।।।।।
বাবাঃফারহান আমি তোমার বাবা হই।।।ঠিক করে কথা বল।।।
ভাইয়াঃ ও প্লিজ।।।। বাবা my foot।।।।
আজ থেকে আমাদের জন্য আমাদের বাবা মা মারা গেছে।।।। আমরা এতিম।।।।
বাবাঃ ফারহায়ায়ায়ায়ায়ায়ান।।।
আমিঃচিল্লাবেন না।।।।।ভাইয়া একদম ঠিক বলেছে।।।।।
দাদাভাইঃকি বলছিস এসব তোরা????
দাদিমাঃতোরা কোথায় যাচ্ছিস???
ভাইয়াঃ আমি আর টুকু লন্ডন চলে যাচ্ছি।।।।
বাবা কিছু না বলে ছলছল চোখে আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে।।।।
আমিঃহুম।। আমি আর ভাইয়া আমরা চলে যাচ্ছি।।।।এখন আর কারোর সমস্যা হবে না বোনের ছেলেমেয়েদের আদর করতে।।।
দাদাভাইঃ তোরা কি পাগল হয়ে গেছিস।।।
দাদিমাঃ আমাদের ছেড়ে যাস না।।।।
আমি জনি ভাইয়ার সামনে গেলাম।। এতোদিনের সব রাগ যে আমাকে মিটিয়ে যেতে হবে।।।আমি গিয়েই জনি ভাইয়ার গালে কতগুলা থাপ্পড় মারলাম।।
আমিঃতোমাদের জন্য আমাদের তিন ভাইবোনের জীবন নরক হয়ে গেছে।।।।ছোটবেলা থেকে আমাদের সব কিছু আমাদের থেকে কেড়ে নিয়েছ।।।আমাদের আনন্দ,খুশি সব কেড়ে নিয়েছ।।।।
এসব কথা বলেই আরও কয়েকটা থাপ্পর মেরে ভাইয়ার কাছে চলে আসলাম।।।।
ভাইয়াঃ আমরা আসি।।।।।
দাদিমাঃমার কাছে বলে যাবি না???
ভাইয়াঃ মা।।।(ব্যঙ করে)।।আমি তোমাদেরকে বললাম না আমাদের মা বাবা মারা গেছে।।।।আমরা এতিম।।।।
আমিঃ ভাইয়া চল।।।।।
তারপর আমি আর ভাইয়া লন্ডন চলে আসলাম।।।।।
তারপর ১০ বছর কেটে গেল।।।।আমি ওখানেই পড়াশুনা করতে লাগলাম।।।।।ভাইয়াও বড় ভাইয়ার আর কোন খোজখবর রাখলেন না।।।।।




বর্তমান।।।

জন এসব শুনার পর কান্না করতে লাগল।।।।
সারাও নিরবে চোখের পানি ফেলতে লাগল।।।।
জনঃthank u so much…..
সারাঃকেন???
জনঃআমাটে সব কিতু বলার জজন্য।।।।
সারা এবার হেসে দিল।।।।।
জনঃwhy are u laughing???????
সারাঃএমনিই হাসি ফেল।।।।
জন বুঝতে পারল সারা কি জন্য হাসছে তাই আর কোন কথা বলল না।।।।
সারাঃআচ্ছা আমাকে এবার উঠতে হবে।।।
জনঃওকে বাই।।।।
সারাঃআপনি চাইলে আমি আপনাকে বাংলা শিখাতে পারি।।।।।
এটা বলে একটা মিস্টি হাসি দিয়ে চলে গেল।।।।।।
জনও একটা মুচকি হাসি দিয়ে বাসায় চলে আসল।।।।
এসে শুনে আমি আর বিশাল বাহির হয়েছি।।



এইদিকে

আমি আর বিশাল শপিংমলে আসেছি।।।কারন কালকে সায়মার ভাইয়ার গায়ে হলুদ আর আমাদের তিনজনকে সবগুলা প্রোগ্রামে ইনভাইট করা হয়েছে।।।।
তাই আমি আর বিশাল শপিং করতে এসেছি।।।জনের জন্য সব শপিং আমরাই সবসময় করি তাই সে না আসলেও চলবে।।।।
আমি হলুদে পরার জন্য লালের মধ্যে একটা লেহেঙ্গা নিলাম।।বিয়েতে পরার জন্য লং জামা নিলাম কালো কালারের।।।।আর বৌভাতে পরার জন্য মেরুন কালারের লেহেঙ্গা।।।
বিশাল হলুদে পরার জন্য লাল কালারের পাঞ্জাবী।। বিয়েতে পরার জন্য কালো কালারের শার্ট আর সাদা কালারের প্যান্ট।
আর বৌভাতে পরার জন্য সাদা শার্ট আর কালো কালারের প্যান্ট।।।।
জনের জন্য বিশাল যা কিছু নিয়েছে তাই নিয়ে নিয়েছি।।কারন লন্ডনে আমরা তিনজনে সবসময় এক কালারের শার্ট প্যান্ট পরতাম।।।।।
তাই বিয়েতে পরার জন্য তিনজনই একি কালারের সব নিলাম।।।।।
আমার ভাইয়াকেও দাওয়াত দিয়েছে তাই ভাইয়ার জন্য ও শপিং করে নিলাম।।যদিও ভাইয়া আমাকে মানা করেছে।।।কিন্তু আমি তো আমিই।।।😎😎😎😎
ভাইয়ার জন্য আমার ইচ্ছা মতো শপিং করেছি।।।।।

শপিং শেষ করে বাসায় ফিরলাম।।।।।বাসায় ফিরে আমার যা দেখলাম তা দেখে আমার চোখে পানি এসে গেল।।।।।।

চলবে।।।।।।