তুই আমার পর্ব-০৭

0
1994

#তুই__আমার
#লেখাঃ সাফিয়া_জান্নাত_মুন
#পর্ব ৭ম

—-এই দুধের গ্লাসে বিষ আছে।

কাব্যর কথায় সবাই বসা থেকে উঠে দারালো এ কেমন সাংঘাতিক ব্যাপার। কাব্যর কথায় কাব্যর বাবা মিস্টার শরীফ চৌধুরী এগিয়ে আসলেন তিনি গম্ভীর ভাবে বললেন
তুমি এতো শিউর কিভাবে হচ্ছো?

—-হ্যা বাবা আমি নিজে কিচেনে দেখেছি এ দুধের উপর মাছি মরে আছে।

— কাব্য তুমি কি ঠিক বলছো??

—-হ্যা বাবা আমি কেনো মিথ্যা বলতে যাবো? আর সেইদিনো ক্যান্ডেলা টা এক্সিডেন্টলি পড়েনি কেউ প্লান করে জেনে শুনে মেঘার মাথার উপর ফেলতে চেয়েছে। কেউ মেঘাকে মারতে চায়।

এমন কথা শুনে বাড়ি শুধো লোক হতবাক হয়ে গেলো একটা টেনশনের ছায়া সবার মুখে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, মেঘার মতো মেয়েকে কে বা কারা কিসের জন্য খুন করতে চাবে তা ভাবার বাহিরে।

শরীফ চৌধুরী থমথম মুখে বসে আছেন সোফায়। কেউ কিছুই বলছে না চুপচাপ বসে আছে। হুট করে শরীফ চৌধুরী বললেন,
সবাই আয়োজন করো আজ রাতে আমি কবির আর মেঘার বিয়ে দিবো।

শরীর চৌধুরীর কথা শুনে তার স্ত্রী পুতুল চৌধুরী বললো,
কি বলছো তুমি? আত্বীয় স্বজন দের আমরা কি বলবো হুট হাট করে এভাবে আজ বিয়ে দিয়ে দিলে হাজার টা প্রশ্ন করবে তখন উওর দিতে পারবে??

—আহ পুতুল তখনকার ব্যাপার আমি দেখে নিবো এখন এই বিয়ে হবে মানে হবে।

—-আমার কথার কোনো দাম নেই তোমার কাছে??

—-হ্যা বাবা জীবন তুমি আমার মেয়ের কথা শুনছো নাকো? এই মেয়ের সাথে আজি তোমায় আমার নাতির বিয়ে দিতে হবে?? বুঝি না বাপু কি সব করো আজকালকার ছেলে তোমরা জেনে শুনে এইরকম বিপদ ঘারে নিলে তো এমন দিন দেখতে হবে।

—-প্লিজ মা আপনি আর কথা বাড়াবেন না আমি কারো কথায় নিজের ডিসিশন চেজ্জন করবো না সবাই আয়োজন শুরু করো।

শরীফ চৌধুরী সিরি বেয়ে চলে গেলো উপরে।

সবাই বাধ্য হয়ে কাজে লেগে গেলো।
কাব্যর কিসব ভেবে উপরে চলে গেলো।
!
!
!
!
রাত ৮ টা বেজে ২৫ মিনিট সবাই গোল করে ঘিরে বসে আছে মেঘাকে সাজানো হচ্ছে।
লাল বেনারসি শাড়ি গা ভর্তি গহনা তার। এভাবে যে বিয়ে হয় তা জানা ছিলো না মেঘার সে নিজেকে দেখছে বারবার দেখছে কত নিষ্ঠুর পরিহাসে না হচ্ছে তার সাথে। জীবনে প্রতিনিয়ত সে ভয়ে ভয়ে বড় হয়েছে। ভয়কে জয় করার মতো শক্তিটুকু তার নেই। কেনো নেই তা ভাবতে বসলে রাত গরিয়ে দিন হয়ে যাবো তবু তার উওর খুঁজে পাবি কি না সন্দেহ থেকে যায়। মাঝেমধ্যে হিসাব মিলাতে বড্ড কষ্ট হয় কোনো কিছুই হিসাব মিলাতে পারে না সে।
বিয়ে একটা মেয়ের কাছে নাকি অনেক গুরুত্বপূর্ণ তার সুখ দুঃখ ভালোবাসার ভাগ করে নিতে হয় অপরএকজনের সাথে বিয়ে শুধু দুইজন মানুষ মধ্য সম্পর্ক তৈরি করে তা অনেক গুলো সম্পর্কের সূত্রপাত ঘটায়। সম্পর্কের কথা ভাবতে মেঘার ভয়ে বুক কেপে উঠে।

মিশু এসে মেঘার পাশে বসলো
আপু তোর মতো করে আমি সাজলে আমায় বেশি সুন্দর লাগবে না তোকে??

মিশুর কথায় মেঘা একটু অবাক হলো কি অদ্ভুত কথা বলছে মিশু?? বিয়ের সাজে প্রতিটি মেয়েকে সবার থেকে আলাদা সুন্দর লাগে। হালকা ভেবে মেঘা বললো,
আমার থেকে অনেক সুন্দর লাগবে তোকে।

মিশু হেসে আবার বললো,আপু আমি কি তোর বড় হতে পারি না।

মিশুর কথায় কিসের এতো রহস্য তা খুঁজে পাচ্ছে না মেঘা। তার কঠিন কথার উওর আজ দিতে পারছে না।

মিশু খিলখিল করে হেসে উঠল, আরে আপু তুমি এতো ভাবনা চিন্তা করতে বসে পড়ো না আমি নিচে যাচ্ছি।
!
!
মেঘার রুম টা এখন পুড়াপুড়ি ফাঁকা কেউও নেই সবাই নিচে ব্যস্ত আছে। হুটহাট করে এভাবে আজ বিয়ে হওয়াতে সবাই কাজে তাল সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে।
!
!
মেঘার দরজায় শব্দ হলো মেঘার দৃষ্টি দরজার দিকে একজন হ্যাংলা পাতলা রোগা টাইপের লোক দরজা ঠেলে ভিতরে ঢুকলো।

মেঘা ছেলে টাকে দেখে চমকে উঠলো কারন এই ছেলেটা সেইদিনের রনি নামের ছেলেটা।
মেঘা ভয়ে বিছানা ছেড়ে উঠলো ভয়ে ভয়ে পায়ে এগিয়ে যেতে লাগলো তার ভাবনা সে এখন এই রুমের বাহিরে যাবে কিন্তু রনি নামের ছেলেটা মেঘার পথ আগলে দারালো,
মাথা নিচু করে বললো
ভাবি আপনার সাথে আমি জোরজবরদস্তি করে কিছুই করতে চাই না পড়ে আপনার কিছুই হইলে ভাই আমাকে মারবে।

—-মামানে আপনি কি বলতে চাচ্ছেন।

ভাবি ভাই এর নিষেধ আছে এখন বলতে পারবো না বলে এক পা দুই পা করে মেঘার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে রনি।
মেঘা ভয়ে কুকড়ে যাচ্ছে।
রনি মেঘার হাত ধরতে যাবে মেঘা ধাক্কা দিয়ে রনিকে ফেলে দিয়ে বাহিরের দিকে দৌড় দিলো।

লেহেঙ্গা তুলে মেঘা নিজের সবটুকু নিয়ে দৌড়াছে দৌড়াতে কারো সাথে ধাক্কা খেয়ে থমকে গেলো।
দেখলো সামনে কাব্য।

—মেঘা কাব্য কে দেখে পিছুই ঘিরে যেতে কাব্য পিছুন থেকে শক্ত করে ধরলো মেঘা কে।

—কাকাব্য ভাইয়া প্লিজ আমায় ছেরে দিন এরকম আপনি করতে পারেন না প্লিজ ভাইয়া।

—-মেঘ আমি সব করতে পারি আমি শুধু তোমার জন্য সব করতে পারি।

—আমি চিৎকার করে সবাইকে বলে দিবো আপনার আসল পরিচয়।

—-হাহাহাহা আচ্ছা করো,

মেঘা চিৎকার করতে যাবে তখন
কাব্য শক্ত করে মেঘার মুখ চেপে ধরলো, অপ্রাণ চেষ্টা চালিয়েও মেঘা নিজেকে ছাড়াতে পারলো না
কাব্য মেঘাকে ধরে ওর রুমে নিয়ে আসলো সেখানে নিয়ে এসে কাব্য মেঘাকে ছাড়ে দিলো।
মেঘার রুমে রনি ও ছিলো।

কাব্য অগ্নি দৃষ্টি নিয়ে তাকালো রনির দিকে,

–তোকে বলেছিলাম না মেঘা যাতে বের হতে না পারে ওর হাত পা বেধে দিবি।

—-ভাই আমি তো তাই করছিলাম কিন্তু ভাবি তো কিছুই শুনতে চাচ্ছিলো না।

—-এই বলদ তোর ভাবি কি নিজের ইচ্ছায় কিন্ডন্যাপ হবে যে তুই তাকে বুঝাতে চাচ্ছিলি আর সে শুনচ্ছিলো না।

বেআক্কেল এর মতো হাসি দিয়ে মাথা চুলকাচ্ছে রনি।

—কাব্য ভাইয়া আমায় যেতে দিন।

—-সরি মেঘ আমি এটা করতে চাইনি কিন্তু এটাতে সবার ভালো মেঘ।

—কিসের ভালো কোনো কিছুই ভালো না।

—পড়ে বুঝবা মেঘ সেদিন হয়তো এই কাব্যকে খুঁজে পাবা না। তাচ্ছিল্য হাসি হেসে বলছে কাব্য

মেঘার সেদিকে কোনো ভাবান্তর নেই মেঘার কাছে কাব্যর কথা অহেতুক আলাপন ছাড়া আর কিছুই মনে হয় না।

মেঘা যেতে ধরলো বাহিরের দিকে, কাব্য মেঘাকে টেনে ধরে নিজের কাছে নিয়ে আসলো,

—ভাইয়া আমায় ছাড়ুন প্লিজ।

কাব্য আরো শক্ত করে ধরলো রনির দিকে ইশারা করতেই একটা রুমাল রনি নিয়ে আসলো কাব্য সেটা জোর করে মেঘার মুখে চাপে ধরলো।
মেঘা ছটফট করতে লাগলো আস্তে আস্তে মেঘা অজ্ঞান হয়ে গেলো।
কাব্য মেঘাকে কোলে তুলে নিলো।
!
!
!
!
!
মেঘার মাথা ঘুরছে চোখ খুলতে পারছে না সব ঝাপসা ঝাপসা লাগছে মেঘা চোখ মিলে চারদিকে তাকালো আরে এতো গেস্ট রুম মেঘা ঝাপ দিয়ে উঠলো, আশেপাশে কাউকে না দেখে মেঘা দৌড়ে দরজার কাছে গেলো দরজাটা খোলা পেয়ে মেঘা দৌড়ে বাড়ির হলরুমে এসে যা দেখলো,,,,,,

চলবে_______________