তোমাকে নিয়েই গল্প পর্ব-১০

0
1129

#তোমাকে_নিয়েই_গল্প
#পর্ব:১০
#জুনাইনাহ_তাসনিম_অরহা

বাবা ভিতরে এসে জুতা খুলতে খুলতে বললো,
–কে এসেছে বাসায়??বাইরে গাড়ি দেখতে পারছি।
–আমি এসেছি
(মামা চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে বলে।বাবা মামাকে দেখে তাড়াতাড়ি চলে আসে)
–আসসালামু আলাইকুম ভাইজান।কেমন আছেন ভাইজান??
–ওলাইকুম আসসালাম।বোন বোনাই খোজ নাও না ভালো থাকবো কি করে??যাই হোক বসো এখানে আগে কথা আছে আমার কিছু।তুমি আসার জন্যেই অপেক্ষা করছিলাম।
–জ্বী
(বাবা সবার মুখের দিকে তাকাই।আমার দিকে তাকিয়ে ইশারা করে জানতে চায় কি হয়েছে।আমি মাথা নাড়িয়ে কিছুই না জানার কথাটা বোঝাই বাবাকে)
–মনি(মামা খুব গম্ভীরভাবে মাকে ডাকে)
–হ্যা ভাইজান বলো
–এতোদিন পর আবার সব ঠিক হলো তাও দুমাস হয়ে গেলো তুমি বা তোমার পরিবারের কোন সদস্য আমার বা আমার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করোনি।আমি তোমার বড় ভাই সেটা ভুলে যাবে না।বারবার আমিই তোমাকে ডাকবো না,তোমার ও তো উচিত আমাকে ডাকা তাই না??আমিন তুমিও বলো উচিত কি না?
–হ্যা তা তো অবশ্যই উচিত ভাইজান(বাবা নরম সুরে বলে)
–তাহলে করোনি কেন??
–ভাইজান আসলে…
–থাক মনি আমি তোর কোন কথা শুনতে চাই না।মা এসেছে ঢাকায়।
–মা?মা ঢাকাতে??কবে আসলো??
–এই তো ৪-৫ দিন।মা এখন অনেকটাই সুস্থ আর নাতীর বিয়েতে তার দাদি না থাকলে হবে??
–নাতীর বিয়ে??(আমি বেশ অবাক হয়ে বলে ফেলি)
–হ্যা আকাশের বিয়ে।
(আকাশ ভাইয়ের বিয়ে শুনে আপু থমকে যায়।তখনি মা কথা বলে)
–আকাশের বিয়ে দিচ্ছো তোমরা ভাইজান?
–হ্যা
–যাক ভালো কিন্তু মেয়েটা কে??বিয়ে কি ঠিক?
–না বিয়ে ঠিক হয়নি।পাত্রির বাড়িতে তো প্রস্তাব দেয়া হয়নি এখনো।
–ওহ।তা কবে দেবে প্রস্তাব নিয়ে??
–এই যে এখন এলাম।
–মানে??
(মা অবাক হয়ে বলে।আর আমরাও অনেক অবাক হয়।মামা আমার আর আপুর কাছে উঠে এসে আপুর মাথায় হাত রাখে)
–আমার ছেলেটাকে বিয়ে করবি মা??হবি কি আমার ঘরের মেজো বউ??
(আপু তো মামার কথা শুনে মামার দিকে তাকিয়েয় কেঁদে দেয়।আর আমরা বাকিরা তো একদম শকড)
–ভাইজান কি বলছো এসব?(মা বলে)
–মনি,আমিন তোমাদের বড় মেয়েটাকে আমার মেজো ছেলের জন্যে ভিক্ষা চেতে এসেছি।আমাকে ফিরিয়ে দিও না।
(মামা দুই হাত বাড়িয়ে আছে।বাবা এসে তাড়াতাড়ি মামার হাত ধরে নেই)
–ছি ছি ভাইজান এসব কি করছেন?হাত নামান আপনি।
–আমিন বলো না তোমার মেয়েটাকে দেবে আমার ছেলেকে?আমি কথা দিচ্ছি কোনদিন তোমার মেয়েকে কোন কষ্ট পেতে দেবো না।রানীর মতো করে রাখবো আমি।
–কিন্তু ভাইজান হটাত এসব?(মা বলে)
–আমি আর তোর ভাবি দু মাস আগেই মেনে নিয়েছিলাম।কিন্তু আকাশের তখন চাকরি ছিলো না।তাই কোন মুখে তোর মেয়েকে চাইতাম ছেলের বউ করার জন্যে।আকাশ এখন অন্তুদের কোম্পানিতে চাকরি করছে।গতকাল প্রথম বেতন পেয়েছে।৫৫ হাজার টাকা দিয়ে শুরু আস্তে আস্তে আরো বাড়বে।তাই আমি আর দেরি করিনি চলে এসেছি।
–কিন্তু মা??
–মা নিজেই তো আমাকে আজ ঠেলে পাঠালো।আর এটাও বলেছে তোরা রাজি থাকলে আগামীকালই ওদের এংগেজমেন্ট করাতে।এখন তুই বল তোর ডিসিশন কি??
(মামার কথা শুনে মা ওখান থেকে উঠে চলে যায়।আমি আর আপু ভয় পেয়ে যাই।কিন্তু তখনি বাবা আপুর কাছে এসে আপুকে মামার কাছে নিয়ে যায়।)
–ভাইজান আপনার বোন কি করবে জানি না তবে আমি আমার মেয়েকে আপনার ছেলের হাতে টুকে দিবো।তাতে মনির মত থাক বা না থাক।এমনিতেই আমার মেয়েটা অনেক কষ্ট পেয়েছে।আর না।
–কিন্তু আমিন মনি…
মামার কথার মাঝেই মা চলে আসে।হাতে এক প্লেট মিষ্টি।মায়ের হাতে মিষ্টি দেখে বেশ অবাক হয়।মা হাতে মিষ্টি নিয়ে মামার মুখের কাছে ধরে।
–মিষ্টি খান বেয়াই সাহেব।
–মানে??(মামা অবাক হয়ে শোনে)
–ছেলে মেয়ের শশুর শাশুড়ি তো বেয়াই বেয়াইনই হয় তাই না??
মামা আর কোন কথা বলে না।হেসে ফেলে।মামা নিজে মিষ্টি মুখ করে আর মাকেও করায়।আমি,সৌরভ তো সেই খুশি আর আপু লজ্জা পায়।

১৬.
একদিন পর,
আজ আপুর এংগেজমেন্ট।আপু গাঢ়ো সবুজ রং এর শাড়ি পরেছে আর গোল্ডেন হিজাব।আমি আজ আপুকে বলেছিলাম হিজাব পরা লাগবে না কিন্তু আপু তাও পরলো।অবশ্য আমি ওর জায়গা তে থাকলেও একি কাজটাই করতাম।১৪-১৫ বছর বয়স থেকেই দুই বোন হিজাব পরি আমরা।সবুজ শাড়ি,গোল্ডেন হিজাব হালকা মেকাপে আপুকে খুবি সুন্দর লাগছে।আপু আমাকেও একটা খয়েরি শাড়ি পরিয়ে দিলো কারন নিজে নিজে শাড়ি পরার গুন তো আমার নেই।
বিকাল ৪টার পর পরই আমরা বাসা থেকে সবাই রওনা দিলাম।ঘন্টাখানিকের মধ্যে পৌছেও গেলাম।মামার ঢাকার এই বাসায় প্রথম এলাম,এটাও অনেক বড় বাড়ি।মামাদের বাড়িতে যেই কাকা থাকেন উনি এসে দরজা খুলে আমাদের সালাম দিলেন।আমরা ভিতরে গেলাম।জানতে পারলাম আকাআকাশ ভাই এখনো ফেরেনি।অবশ্য উনি জানেও না যে আজকে ওনার এংগেজমেন্ট তা।
মামা-মামি,নানি,স্নিগ্ধা ভাবি,অন্তু ভাই আয়ান সবাই এলো।স্নিগ্ধা ভাবির বাচ্চা হওয়ার সময় হয়ে গেছে।সপ্তাহ খানিকের মধ্যেই আল্লাহ ভালো করলে বাচ্চা হবে।হাটাচলা করতে একটু অসুবিধা হয় তাই অন্তু ভাই ধরে ধরে বেড়ায়।স্বামী স্ত্রীর এরকম কিউট সম্পর্কটা দেখে বেশ ভালো লাগছে আমার।এখানে এসেছি প্রায় দু ঘন্টা হয়ে গেছে।সবাই মিলে গল্প করছি হটাত আমার মোবাইলের কথা মনে পড়লো।আমি উঠে এসে মোবাইল খুজতে লাগলাম খাবার টেবিলে।কারন একটু আগেই নাস্তা করেছিলাম এখানে।টেবিলের কাছে এসে মোবাইল টা পেয়েও গেলাম।মোবাইল নিয়ে পিছন ঘুরতেই দেখি আয়ান দাড়িয়ে।দুই হাত কোমরে দিয়ে বোকড়া দাত গুলো বের করে হাসছে।নিশ্চয় আবার কোন পাকনামি করতে এসেছে।
–কা কাকে খুজছো??আমার কাকুকে??
–কি??তোর কাকুকে খুজতে যাবো কেন আমি??মোবাইল খুজতে এসেছিলাম।আর তোর কাকার কথাতো আমার মনেও ছিলো না।
–মিথ্যা বলো না।আমি জানি তুমি কাকুকেই খুজছিলে কিন্তু বলবা না।
(স্নিগ্ধা ভাবি আয়ানকে ডাক দেয়।আয়ান ও চলেত যায়।তবে এটা আসলেই সত্যি যে আমি ওর কাকুর কথা ভাবছিলাম না।কিন্তু এখন মনে মনে ভাবতে লাগলাম)
–সত্যিই তো এসে থেকে একবারো দেখিনি।বাসায় নেই না কি??অবশ্য ও বাসায় না থাকায় ভালো।থাকলেই তো ঝামেলা করে।ধুর আমিই বা শুধু শুধু ওনার কথা ভাবছি কেন??বিরক্তিকর….

আমি ড্রয়িং রুমে গিয়ে দেখি সৌরভ আর আয়ান হাসতে হাসতে নামছে।আমাকে দেখে সৌরভ বলল,
–কোন দেশে ছিলি এতোক্ষন আমি বাড়িটা ঘুরে ঘুরে দেখলাম তুই তো পারলি না।
–আচ্ছা এভাবে বলছো কেন সৌরভ?বাড়িটা তো আর উড়ে যাচ্ছে না আর ওউ হারিয়ে যাচ্ছে না।আয়ান আবার ওকে বাড়ি ঘুরিয়ে আনবে।যাও আয়ান ফুপিকে বাড়িটা দেখিয়ে আনো।
স্নিগ্ধা ভাবির কথায় আয়ান আমাকে ওপর তলায় নিয়ে যায় কারন নীচ তলাটা আমি নিজেই দেখে নিয়েছি এতোক্ষনে।ওর বাবা মায়ের রুম,আকাশ ভাইয়ের রুম সব রুম গুলো ঘুরে ঘুরে দেখায়।ওদের দোতালার সাথে এটাচড বড় বারান্দাটাও দেখায় অনেক ফুল গাছ লাগানো সেখানে খুবই সুন্দর।আমরা একটা পর্যায়ে একটা রুমের সামনে এসে দাড়িয়ে যায়।
–কা এটা কার রুম জানো??
–না তো।কার রুম??
–কাকুর রুম।
কাকুর রুম বলেই আয়ান দৌড় দিলো।আমি হা করে দাড়িয়ে থাকলাম।কয়েকবার আয়ানকে ডাকলামও কিন্তু ও শুনলো না।আমি ও চলে আসতে চাইলাম কিন্তু কেন জানি না অভ্র ভাইয়ের ঘরটা একবার দেখার ইচ্ছা ছিলো।কিন্তু যাবো কি ভাবতে লাগলাম।বেশ ক্ষানিকক্ষন ভাবার পর মনে হলো আমি ওনার ঘরে যেতেই পারি।উনি হয়তো বাসায় নেয়।বাসায় থাকলে তো দেখা হতোই একবার কারন উনি যে মানুষ তাতে মানুষের সাথে না মিশে থাকা সম্ভব না।

একবার এদিক ওদিক তাকিয়ে আস্তে করে ওনার ঘর খুললাম।ঘরে পা রাখতেই বেশ ঠান্ডা একটা বাতাস গায়ে লাগলো।বোঝাই যাচ্ছে এসি অন রয়েছে।আমি ঘরে ঢুকতেই প্রথমে চোখ গেলো একদম সামনে থাকা অভ্র ভাইয়ের বেড।আর বেডের ঠিক ওপরের দেয়ালে বেশ বড় করে বাঁধানো ওনার ছোট বেলার একটা ছবি।ওতোটাও ছোট না,১৪-১৫ বছর বয়স হবে হয়তো।লাল হাফ হাতা শার্ট,হাতে কালো বেল্টের ঘড়ি,ওনার এজ ইউজিউয়াল কপালের ওপর এসে পড়া সিল্কি চুল আর সুন্দর একটা হাসি।ছবিটা দেখার পরেই চোখ ঘুরালাম বাম দিকে।খাটের পাশে আছে একটা বেড সাইড টেবিল তাতে বেশ সুন্দর একটা টেবিলল্যাম্প।এদিকে আছে পড়ার টেবিল,সোফা,বেশ সুন্দর কাঁচ আর কাঠ দিয়ে ঘেরা আলমারি আলমারি আর তার ঠিক পাশেই ড্রেসিংটেবিল।ওনার রুমটা এক কথায় খুবই সুন্দর একদম নীট এন্ড ক্লিন।আমি ওনার পড়ার টেবিলটার সামনে গিয়ে বইগুলো দেখছিলাম হটাত একটা সবুজ মতো ডায়েরি চোখে পড়লো।কারোর পার্সোনাল ডায়েরি দেখা উচিত না জানি কিন্তু আমার খুব ইচ্ছা হলো।আমি ডায়েরি টা খুলে দেখলাম।প্রথম কয়েক পেইজ উল্টানোর পর ইংরেজি তে একটা লাইন লেখা,”I think I got her.”লাইনটা পড়ে বেশ অবাক লাগলো কাকে খুজে পেয়েছেন উনি??কৌতুহল নিয়ে পরে পেইজ উল্টালাম।অনেক কিছুই লেখা আছে কিন্তু পড়তে যাবো তখনি পেছন থেকে কেউ বলে উঠলো,
–কে??
আমি বেশ ভয় পেয়ে গেলাম।এরকম হটাত ডাক দেয়ায় আমার হাত থেকে ভয়ে ডায়েরিটা পড়ে গেলো।লোকটা আবার বলে উঠলো,
–হু আর ইউ??আন্সার মি।
আমি আরো ভয় পেয়ে গেলাম।আমার দিকে পায়ের শব্দ এগিয়ে আসছে।আর এদিকে আমার হার্টবির্ট বেড়ে যাচ্ছে,গলা শুকিয়ে যাচ্ছে।আমি শাড়ির অাঁচল হাতের মধ্যে নিয়ে প্যাঁচাতে লাগলাম।হটাত করে যে এতোটা ভয় লাগবে আশা করিনি।লোকটার পায়ের শব্দ থেমে গেলো কিন্তু তিনি প্রায় জোরেসোরে ধমক দিয়ে বললেন,,
–হু দা হেল আর ইউ ম্যান??কে তুমি আর কথা বলো না কেন??
এতোক্ষন যে ভয়টা পাচ্ছিলাম তা এবার দ্বিগুন বেড়ে গেলো কারন এটা আর কেউ না অভ্র ভাই।এতোক্ষন ভয়েজ বুঝতে পারিনি কিন্তু এখন আমি শিউর।কি করবো,ওনাকে কি বলবো কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না।উনি যে মানুষ চুরি ওনার ঘরে ঢোকা আবার ওনার পারসোনাল ডায়েরি পড়া উনি তো আজ অপমানের শেষ রাখবেন না আমার।উনি বারবার কে কে বলেই যাচ্ছেন।হটাত উনি আমার কাধে হাত দিলেন।আমি যেন তখনি মাথা ঘুরে পড়ে যাবো।কাধে হাত দেয়ার সাথে সাথে উনি আমাকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে ফেলেন আর আমিও চোখ বন্ধ করে ফেলি।উনি কাধ থেকে হাত সরিয়ে ফেলেন।কিছুক্ষন পর খুব আস্তে করে বলে ওঠেন,

–সূচী,তুমি??আমার রুমে?বাসায়ই বা এলে কখন?কার সাথে এসেছো??

(আমি এখনো চোখ বন্ধ করে রেখেছি।কিন্তু আমার বেশ অবাক লাগলো উনি আমাকে দেখে বকা দিলেন না তো,অপমানও করলেন না।বরং জিজ্ঞেস করছে আমি কখন এলাম,কার সাথে এলাম।উনি আরো কয়েকবার আমার নাম নিলেন।আমি আস্তে করে চোখ খুললাম।কিন্তু চোখ খুলেই যা দেখলাম তা দেখার জন্যে মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না।সাদা বাদরটার খালি গায়ে যাস্ট একটা টাওয়াল পরে আমার সামনে দাড়িয়ে।আমি ওনাকে দেখেই চিল্লিয়ে উঠলাম।আর উনি সাথে সাথে আমাকে টেবিলের সাথে ঠেসে আমার মুখ চেপে ধরেন।আসলে ওনার সাদা ধবধবে শরীরে ফোটা ফোটা পানি লেগে আছে।মাথার চুল থেকেও টপটপ করে পানি পড়ছে।খালি বুকে হালকা হালকা পোষমগুলোও খুব এট্রাক্টিভ।আর তার থেকে বড় কথা আমি এইভাবে সামনাসামনি আগে কোন ছেলেকে দেখিনি তাই ভয় পেয়ে চিল্লিয়ে উঠেছিলাম।
–এই তুমি কি পাগল?এইভাবে চিলাচ্ছো কেন?বাড়ির লোক শুনে ফেললে কি হবে ভাবো তো।আর তুমি এখানে কি করছো??কার সাথে এলে??
আমি ওনার কোন কথার উত্তর দিতে পারলাম না।উনি এখনো আমার মুখ চেপে ধরে আছে।আমি শুধু চোখ বড় বড় করে ওনার দিকে তাকিয়ে আছি।উনি একের পর এক প্রশ্ন করেই যাচ্ছে।হটাত ওনার প্রশ্ন করা থেমে গেলো।আমি খেয়াল করলাম উনিও আমার চোখের দিকে তাকিয়ে আছে।আস্তে আস্তে মনে হলো উনি আমার দিকে আরো ঝুকে আসছে,এদিকে আমিও টেবিলের ওপর আরো ঝুকতে লাগলাম।ওনার ভেজা চুল থেকে টপ করে এক ফোটা পানি এসে আমার মুখের ওপর পড়লো আর আমি সাথে সাথে চোখ বন্ধ করে ফেললাম।কিছুক্ষন ওইভাবে থাকার পরর হটাত মামি আমাই ডেকে উঠলো মনে হলো।আমি সাথে সাথে চোখ খুলে ওনাকে এক ধাক্কা দিয়ে দূরে সরিয়ে দিলাম আর এক সেকেন্ড ও দেরি না করে দৌড়ে ওনার ঘর থেকে বের হয়ে গেলাম।নিচে সবার কাছে এসে আমি রিতীমতো হাপাতে লাগলাম।আমাকে দেখে মামা বলে উঠলেন,
–কি রে মা তুই এইভাবে হাপাচ্ছিস কেন??আর এতোক্ষন কোথায় ছিলি??
আমি মামার কথার উত্তর দেবো তার আগেই আয়ান বলে উঠলো,
–দাদু কা তো এতোক্ষন কা….
না আমি আয়ানের মুখ খুলার আগেই ওর মুখ চেপে ধরলাম।তারপর দীর্ঘশ্বাস নিয়ে বললাম,
–দোতলার ছাদ আই মিন বারান্দাটাই ছিলাম মামা।
–ওহ।।।

কিছুক্ষন পরেই আকাশ ভাই চলে এলো।আমাদের দেখে উনি তো শকড।স্নিগ্ধা ভাবি ওনাকে বলে উঠলেন যে আজ ওনার আর আপুর এংগেজমেন্ট।ভাবির কথা শুনে আকাশ ভাই হয়তো থতমত হয়ে গেছিলো প্রথমে কিন্তু যখন ব্যাপারটা বুঝতে পারলো তখন হেসে দিলো।আকাশ ভাইকে মামা তাড়াতাড়ি ফ্রেস হয়ে রেডি হয়ে নিতে বললেন।আকাশ ভাই নিজের রুমে চলে গেল।সবাই হাসাহাসি করেছে কিন্তু আমার মনের মধ্যে একটু আগে ঘটে যাওয়া ঘটনাই ঘুরপাক খাচ্ছে।এর মাঝে হটাত অভ্র ভাইয়ের আওয়াজ এলো আমার কানে।
–ফুপি কেমন আছো??তোমরা যে এসেছো আমি তো জানিও না।
ওনার ভয়েস শুনে আমার আবার ভয় লেগে গেলো।আবার সেই সেইম ফিলিংস।বার বার ঢোক গিলতে লাগলাম ওনার দিকে না তাকিয়েই।

চলবে…….