তোমার জন্য ফিরে আসা পার্ট-১২

0
991

#তোমার_জন্য_ফিরে_আসা
#লেখা_ইভানা
#পার্ট_১২

“বলা নেই কওয়া নেই দুম করে চুলের খোঁপায় ফুল দিলেন কেনো? আপনি তো বড্ড অসভ্য ।মেয়ে দেখলেই ঢোলে পরতে ইচ্ছে হয় ”
“একটু দম নিয়ে কথা বলুন, এতো উত্তেজিত হওয়া ভালো না ”
“মেয়েদের সম্মান করতে শিখেন ”
“অসম্মান জনক কিছু করি নি আর এটার অধিকার আমার আছে ”
“কে দিয়েছে আপনাকে অধিকার?
এই মিস্টার আমার ধারেকাছেও আসবেন না, ছ্যাকা খাবেন ”
“সেটা আমি বুঝে নিবো”
“ধ্যাত ”
ইভা চলে যাচ্ছে তখন ছেলেটা ইভার সামনে পথ আটকে দাঁড়িয়ে বললো,
“মহারানী এতো রাগ করেন কেনো? তবে রাগ করলে বেশি সুন্দরী লাগে গাল দুটো লাল হয়ে যায় তাই ”
“আমাকে মহারানী বলবেন না আমার নাম আছে। পথ থেকে সরে দাঁড়ান”
“না সরবো না আগে আমার সব কথা শুনবেন তারপর চলে যেতে দিবো ”
“মহা জ্বালা তো, বলুন কি বলার আছে? ”
“আমার দিকে ভালো করে তাকান? ”
“আজব তো, আপনার রুপ বেয়ে বেয়ে পরে নাকি যে ধরার জন্য আপনার দিকে তাকাবো “?
” তাকাতে বলছি, এতো কথা ভালো লাগে না ”

ইভা ভ্রু কুঁচকে ছেলেটার দিকে তাকালো।এতোক্ষণ কথা বলেও ছেলেটার দিকে তাকায় নি এবার তাকিয়ে দেখলো বেশি সুন্দর আছে চাপ দাঁড়ি তবে ছোট করে রাখা কিন্তু কেমন জানো চেনা লাগছে হ্যাঁ এটা তো আলিব। ও এখানে কেনো এসেছে, তাই জিজ্ঞাসা করলে,
“আপনি এখানে কেনো এসেছে? আমাকে একা কথা বলতে দেখলে সবাই এবার পাগল ভেবে পাগলা গারদে দিয়ে আসবে। ”
“একা কথা বলতে দেখবে না আমাকে সবাই দেখতে পাবে”
“কিভাবে? আপনি সত্যি মানুষ হয়ে ফিরে এসেছেন ”
“সব কথা বলবো আগে নানুর রুমে গিয়ে দেখে এসো তার অবস্থা কেমন ”

ইভা আর কথা বাড়ালো না। ইভার মাথায় অনেক প্রশ্ন ঘুরছে আলিবকে নিয়ে, ও কিভাবে সবার সামনে দৃশ্য হতে পেরেছে? ও একশো দিন থাকবে তার আগে কারো সামনে আসবে না কিন্তু আজ বিয়ের অনুষ্ঠানে কি করছে? নাহ্ আলিবের থেকে সব কিছু জানতে হবে কিন্তু এখন তো কথা বলতে পারবে না তাই ইভা ওর নানুর রুমে গিয়ে দেখলো নানু আগের থেকে একটু ভালো আছে। গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান শেষ তখন রিয়াদ ইভাকে নিয়ে ছাঁদে গেলো। ছাঁদের কোনে একজন দাঁড়িয়ে আছে সেটা স্পর্শ দেখা যাচ্ছে কিন্তু মুখ বুঝা যাচ্ছে না তাই ইভা বললো,
-ভাইয়া ছাঁদে কে দাঁড়িয়ে আছে?
-খুব স্পেশাল একজন।
-কে?
-আলিব এদিকে এসে।
আলিব সামনে এসে বললো,
-কি মহারানী এবার বিশ্বাস হলো তো আমি সবার সামনে দৃশ্য হয়েছি?
-ভাইয়া তুই সত্যি উনাকে দেখতে পাচ্ছিস? (ইভা)
-হ্যাঁ দেখছি তো (রিয়াদ)
-জানতে চাইবে না আমি কি করে দৃশ্য হয়েছি
ইভা মাথা নেড়ে হ্যাঁ সূচক দিলো তখন রিদায় বললো,
-তোমাদের মাঝে আমার থাকা ঠিক হবে না, আমি আমার বউয়ের সাথে কথা বলে আসি
রিয়াদ চলে যাওয়ার পর আলিব বললো,
“জাদুমনি গোলাপ আর সাতরং পাথর আমাকে সাহায্য করেছে দৃশ্য হওয়ার জন্য। সেদিনর বেল গাছের তলায় বেল পোড়া দিয়েছিলো সেখানে পাথর আর গোলাপ এক সাথে রাখতে আমি দৃশ্য হয়ে গেছি আবার চাইলে অদৃশ্য হতে পারবো সব কিছু সম্ভব হয়েছে তোমার জন্য। ”
“পাথর আমার কাছে রেখেছিলাম সেটা আপনার কাছে গেলো কি করে?”
“তোমার মা তোমার ব্যাগ থেকে তার আংটি বের করেছে তখন তার চোখে পড়ে পাথরটার দিকে সে সাধারণ ভেবে ফেলে দেয় আর সেটা পড়ে গিয়ে বেল গাছের তলায়। আমারও মনে পড়ে যায় জাদুমন্ত্রীর দেওয়া তথ্য তারপর পাথর খুঁজে পেলাম ঠিক জায়গায় পড়েছে তাতে আমার কাজটা সহজ হয়েছে ”
“তাহলে আপনি আর ফিরে যাবেন না? ”
“হ্যাঁ ফিরে যেতে হবে ”
“কবে আপনি পুরোপুরি হয়ে আসবেন যেনো আর কখনো ফিরে যেতে না হবে? ”
“হতেও পারে চলে যাওয়ার একশো দিন পরে ফিরে আসবো ”
“আমি আপনার জন্য অপেক্ষা করবো ”
“ফিরে না আসলেও ভুলে যেওনা ”
“আপনার সাথে সময় কাটানো মুহূর্ত গুলো কখনো ভুলবো না ”
রিয়াদ এসে বললো,
-তুমি তো আমাদের সাথে সাধারণ ভাবে থাকতে পারো তাহলে আমার বিয়ের সব অনুষ্ঠান শেষ না হওয়া পর্যন্ত তোমার থাকতে হবে
-হ্যাঁ থাকতে পারি তবে কেউ আমর পরিচয় জানতে চাইলে মুশকিল হবে
-আরে কিছু হবে না আমি আছি তো।

ওরা তিনজনে নিচে গেলো। আলিব সবারসামনে দৃশ্য হতে পেরেছে এবং থাকবে এটা জেনে ইভা খুব খুশি হয়েছে। সবার সাথে কথা বলে আলিব সবার মন জুগিয়ে ফেলেছে। পরের দিন রিয়াদের বিয়ে, কনে বাড়ি যাওয়ার প্রস্তুতি চলছে।
ইভার বাবা আলিবকে ডেকে বললো,
-তুমি কি রিয়াদের বন্ধু? সব আত্মীয় সজনদের চিনি কিন্তু তোমাকে চিনতে পারি তাই জিজ্ঞাসা করলাম।
-হ্যাঁ আঙ্কেল আমি রিয়াদের বন্ধু
-তোমার বাড়িতে কে কে আছে?
-আমি একা।
-ওহ্ আচ্ছা , তোমাকে একটা কথা বলি কালকে থেকে তোমার আচার-ব্যবহার দেখে আমার খুব ভালো লেগেছে আমার মেয়ের জামাই হিসেবে তোমাকে চাই।

এমন কথার উওর আলিব কি দিবে বুঝতে পারছে না। থমকে তার দিকে তাকিয়ে আছে, ইভার বাবা আবার বললো,
-তোমাকে আমি ভুল কিছু বলি নি তো?
-না আঙ্কেল ঠিক আছে কিন্তু,,,,,
-কিন্তু কি?
-আমার চার মাস সময় লাগবে আপনার মেয়েকে দেখেছি আমিও ওকে পছন্দ করি তাই যদি সময় দেন।
-হ্যাঁ বাবা তুমি সময় নিতে পারো সমস্যা নেই
-হুম।

রিয়াদের বিয়ের সব অনুষ্ঠান শেষ। ইভারা নিজেদের বাসায় চলে এলো। আলিবও অদৃশ্য হয়ে থাকে। দেখতে দেখতে পূর্নিমার রাত চলে আসে। আলিব মানুষ হয়ে বাঁচার জন্য বাগান বাড়ির পদ্ম পুকুরে ডুব দিলো, ইভা পাড়ে দাঁড়িয়ে আছে,

চলবে,,,,,,