দুই হৃদয়ে সন্ধি পর্ব-০৩

0
171

#দুই_হৃদয়ে_সন্ধি
#পর্বঃ৩
#Nova_Rahman

বর্তমানে ___

তরুর চুল আঁচড়ানো প্রায় শেষ। ড্রেসিং টেবিলের সামনে থেকে একটা তুলি নিয়ে চুলগুলো একসাথে সেট করে নিলো।
“কালকের দিনটা ছিল তরুর জীবনে একটা অপ্রত্যাশিত দিন। না ভালো না খারাপ। গোধূলির প্রথম প্রহরে রোদের সাথে সাক্ষাৎ হওয়াটা ছিল মেঘ মুক্ত সচ্ছ আকাশের মতোই সুন্দর। গোধূলির এই সাক্ষাৎতে দুই হৃদয়ে সন্ধি হওয়ার পর্ব সূচনা হয়। গোধূলিলগ্নে দুই হৃদয়ে সন্ধির পর্বটা স্মৃতির পাতায় স্বরণীয় হয়ে থাকবে আজীবন।
গোধূলির দ্বিতীয় প্রহরে রোদের সাথে সাক্ষাৎ টা ছিল সদ্য ফুটা ফুলের মতোই স্নিগ্ধ। জেনে বা না জেনে দুই হৃদয়ের সন্ধি হয়েছে গোধূলির দ্বিতীয় প্রহরে। দুই হৃদয়ের সন্ধিতেই সন্ধিক্ষণ হবে কোনো এক গোধূলিলগ্নে।

গোধূলির তৃতীয় প্রহরটা ছিল শ’য়’তা’নের আবির্ভাব! আর এই দীর্ঘ লম্বা, উচ্চ শিক্ষিত শ’য়’তা’ন টা ছিল নীহারিকা। তরু হতাশ! খুবিই হতাশ। এই রোজা রমজানের মাসে আল্লাহ সব শ’য়’তা’নকে বন্দী করলেও নীহারিকা নামক উচ্চ শিক্ষিত শ’য়’তা’নিকে বন্দী না করে মুক্ত পৃথিবীতে ছেড়ে দিয়েছে। কি সাং’ঘা”তি’ক কি সাং’ঘা’তি’ক!
তরু দুই হাত তুলে মুনাজাতের ভঙগিতে বলতে লাগলো, হে প্রভু আমাকে শক্তি দাও, আমি যেনো ঐ উচ্চ শিক্ষিত নীহারিকা শাঁ/ক/চু/ন্নি/কে, সাদা শাড়ি পড়িয়ে শেওড়া গাছের মগডালে বসিয়ে রেখে আসতে পারি, আমিন। মুনাজাত শেষে তরু আয়নায় তাকাল, নিজেকে দেখল হাসলো আর বললো, ইশশশ! এতো সুন্দর মেয়েও পৃথিবীতে আছে। হ্যাঁ তরু তুই সুন্দর ভীষণ সুন্দর।

জাহানারা চৌধুরীর ডাকে হুঁশ ফিরলো তরুর। আয়না থেকে মুখ ফিরিয়ে দরজায় তাকাল। দরজার পাশে মাকে দেখতে না পেয়ে দ্রুত পায়ে হেটে মায়ের রুমের সামনে গেলো । তরু দরজার পাশে মাথা উঁচিয়ে দেখলো জাহানারা চৌধুরী আলমারি থেকে কাপড় বের করছে।
তরু দরজায় দুইটা টুকা দিয়ে বলল টুকি আম্মু। জাহানারা মেয়ের এমন বাচ্চামো দেখে হাসলো। পিছন না ফিরেই তরুকে রুমে আসতে বললো। তরু মায়ের রুমে এসে খাটের এক কোনায় জায়গায় নিয়ে আরাম করে বসে। জাহানারা হাতের কাপড় গুলো সাইডে রেখে নিজেও মেয়ের পাশে বসে পড়ে।

__’তা খবর বার্তা বলুন। ঘুম ভালো হয়েছে তো আম্মু?’
মায়ের প্রশ্নের বিপরীতে তরু হ্যাঁ সূচক মাথা দোলায়।
জাহানারা হাসলেন আর বললেন তরু তোমার জন্য আজকে একটা কাজ আছে। তরু মায়ের দিকে প্রশ্নোত্তুর দৃষ্টিতে তাকাল। জাহানারা মেয়েকে আশ্বাস দিয়ে বলল বলছি। জাহানারা মেয়ের হাতে একগাদা কাপড় তুলে দিয়ে বললো এই গুলো ধুয়ে দিতে হবে। আজকে পাড়ার গরীবদের মধ্যে ইফতার বিতরণ করা হবে। আমি একা হাতে সব সামলাতে পারবো না তরু। তোমার আব্বু আসবে আজকে। তাই তোমাকে এই কাজ গুলো করতে হবে। তরু লাফিয়ে উঠে। কতদিন পরে আব্বুকে দেখবে। তরু নাচতে নাচতে কাপড় গুলো নিয়ে নিজের রুমে চলে গেলো। মেয়ের কান্ড দেখে জাহানারা শরীর দুলিয়ে হাসে। ’

___ জাহানারা চৌধুরী তরুর পরে তেজকে ডেকে পাঠায় নিজের কামরায়। জাহানারা ছেলেকে একটা বাজারের ব্যাগ হাতে তুলে দিয়ে বললো। আব্বু আজকে তুমি বাজার করে নিয়ে আসবে। তেজ মায়ের দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে। ছেলেকে এভাবে তাকিয়ে তাকতে দেখে জাহানারা চৌধুরীর জিজ্ঞেস করে, কি হয়েছে তেজ এইভাবে তাকিয়ে আছো কেনো? মায়ে প্রশ্নের বিপরীতে তেজ উত্তর দিলো।
‘আম্মু আমি তো কোনোদিন বাজার করিনি। তাহলে আজকে হঠাৎ করে কেমনে বাজার করবো?’
ছেলের কথার বিপরীতে জাহানারা চৌধুরী কপাট রাগ দেখিয়ে বললো। বাজার করনি তো কি হয়েছে এখন থেকে করবে। সব দিক দিয়ে নিজেদের গড়ে তুলবে। আমি চাই না তুমি আর তরু বাবার টাকায় বসে খাও। সব দিক দিয়ে সাবলীল হতে হবে তোমাদের।__

তেজ কথা না বাড়িয়ে বাজারের ব্যাগ হাতে নিয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে পড়ে। জাহানারা পিছন থেকে ছেলেকে দেখছে আর ভাবছে। আমি তোমাদের মানুষের মতো মানুষ করে গড়ে তুলবো তেজ। বড়লোক বলে এক বিন্দু পরিমানও অহংকার করতে দিবনা তোমাদের।

__ রোদ মেডিকেল থেকে সাতদিনের ছুটি পেয়েছে। রোদের কাছে আজকে ঈদ ঈদ লাগছে। মেডিকেল স্টুডেন্টদের একদিন ছুটি পাওয়া মানে বিশ্বজয় করার মতো আনন্দ। রোদ ব্যাগ গুছিয়ে বন্ধুদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে নিচে চলে আসে। মেডিকেল থেকে বের হয়ে রোদ নিজেদের গাড়ি দেখতে পেলো। হাত উঁচিয়ে ড্রাইভারকে গাড়ি নিয়ে সাইডে আসতে বলল। ড্রাইভার গাড়ি নিয়ে রোদের সামনে এসে দাড়াল, গাড়ির দরজা খুলে ভিতরে বসলো রোদ। __

বাসা থেকে বের হতেই রাস্তায় মেহুর সাথে দেখা হয় তেজের। তেজ হাত উঁচিয়ে ডাক দেয় মেহুকে। তেজকে দেখে মেহু দৌড়ে আসে। মেহু হাঁটুতে ভর দিয়ে হাপাতে হাপাতে তেজকে প্রশ্ন করে, তা কোথায় যাওয়া হচ্ছে দোস্ত? তেজ একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো, আর বলিস না দোস্ত আম্মু পাঠিয়েছে বাজার করতে। বাসার গাড়িটা পর্যন্ত নিয়ে আসতে দেয়নি। মেহু তেজের পিঠে আস্তে করে দুইটা থাপ্পড় দিয়ে বললো, আহারে কি কষ্ট!
ব্যাপার না দোস্ত গাড়ি না নিয়ে আসলেও বাজার করা যায়। আমাদের মতো মধ্যেবিত্ত ফ্যামেলির মানুষেরা প্রতিদিন হেঁটে গিয়ে বাজার করে । প্রতিত্তোরে তেজ হেসে বলল, চল তাহলে আমিও আজকে হেটে বাজার করে নিয়ে আসবো। তেজকে হাসতে দেখে মেহু তার বুকের পা পাশটায় হাত দিয়ে চেপে ধরে। এইভাবে হাসবি না তেজ। বুকে রক্তক্ষরণ হয়,নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসে, নিজেকে কেমন মাতাল মাতাল লাগে। মেহুর কথার বিপরীতে তেজ মেহুর দিকে একটু ঝুঁকে এসে উত্তর দিলো।
“ তর নিশ্বাস বন্ধ হয়ে যাক”
‘তবুও তুই অন্যের না হয়ে আমার তাক।’

তেজকে এতো কাছে দেখে অস্বাভাবিক ভাবে হাত পা কাঁপতে তাকে মেহুর। মেহু দু পা পিছিয়ে গিয়ে নিজেকে একটু স্বাভাবিক করে তেজকে উদ্দেশ্য করে বললো, চল বাজারে যায়। তেজ আর কথা না বাড়িয়ে সামনের দিকে পা চালায়।
মেহু, তরু, তেজ এক সাথে একই ক্লাসে পড়ে। মেহু আর তরু বড্ড চঞ্চল হলেও তেজ তাদের বিপরীত। তেজ শান্ত স্বভাবের ভদ্র একটা ছেলে। কিন্তু মাঝে মাঝে ডেঞ্জারাস বোনে পাল্লায় পড়ে নিজের ব্যাক্তিত্বকে বিসর্জন দিতে হয়। তরু আর তেজ যেনো একি মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ।

রোদের গাড়ি এসে থামে একটা ডুপ্লেক্স বাড়ির সামনে। গাড়ি থেকে বের হয়ে বাসার ভিতরে প্রবেশ করে রোদ। সদর দরজায় ছেলেকে দাড়িয়ে তাকতে দেখে চৈতালি হাওলাদার দুই হাত দিয়ে ছেলেকে বাহুডোর আগলে নেই। ছেলের কপালে ছোট্ট করে চুমু খাই চৈতালি। হাতের ঘড়ি ঠিক করতে করতে নিচে নামে আরহান হাওলাদার রিক। এতো দিন পর ছেলে আর বউকে এতো খুশি দেখে রিক সাহেব কিচ্ছুক্ষণ তাকিয়ে রইল।

__কী ডাক্তার সাহেব, শুধু কি মায়ের আদরেই নিবেন নাকি বাবার আদরও প্রয়োজন আছে?
বাবার ডাকে সামনে থাকায় রোদ। দৌড়ে গিয়ে বাবাকে জড়িয়ে ধরে রোদ। বাবাকে জড়িয়ে ধরে রোদ ফিসফিস করে বললো। তা এসপি সাহেব আপনার বউকে জড়িয়ে ধরেছিলাম বলে কি আপনার হিংসা হচ্ছিল? রোদের এহেন কথায় রিক ছেলের পিঠে আস্তে করে দুইটা থাপ্পড় দিয়ে বলল। তুমি অসভ্য, অসভ্যই রয়ে গেলে রোদ। ভালো হয়ে যাও রোদ, ভালো হলে টাকা লাগে না।__

রোদ তার বাবাকে চোখ টিপ মেরে বললো, আমি অসভ্য হলে আপনিও অসভ্য এসপি সাহেব। রিক সাহেব ছেলের কথার বিপরীতে প্রশ্ন করে, সেটা কিভাবে? রোদ নিজের দিকে ইশারা করে বললো, এসপি সাহেব আপনি যে সভ্য জাতের অসভ্য লোক সেটার জলজ্যন্তু প্রমান আমি। ছেলের এমন নির্লজ্জ মার্কা কথা শুনে চোখ যেনো বেরিয়ে আসার উপক্রম।
বাবা ছেলের কথার মাঝে চৈতালি এসে জিজ্ঞেস করলো। আজকে ইফতারিতে তোমরা কি খাবে বলো? আমি আজকে তাই রান্না করবো। চৈতালিকে কথার মাঝে থামিয়ে দিল রিক।
‘আজকে আমরা কেউ বাড়িতে ইফতার করবো না। ইফতারের দাওয়াত আছে। ঐ কানেই ইফতার করবো সবাই।’
চৈতালি স্বামীকে প্রশ্ন করলো কোথায় যাবো ইফতারে। রিক চৈতালির প্রশ্নের উত্তর দিলো, “গেলেই দেখতে পারবে।”
চৈতালি আর কথা না বাড়িয়ে স্বামীর কথায় হ্যাঁ তে হ্যাঁ মিলায়। রোদ চলে যায় ফ্রেশ হতে।

মুদির দোকানের পাশে পায়চারি করছে তেজ। লিস্ট অনুযায়ী সব কিনা শেষ। এখন সবজি মলে যাবে সবজি কিনতে। কিন্তু কিভাবে কি কিনবে বুঝতে পারছে না তেজ। মেহু আশ্বাস দিয়ে বলে চিন্তা করিস না আমি আছি তো।
‘সবজি মলে গিয়ে তেজ সবজি বিক্রেতাকে জিজ্ঞেস করলো, আংকেল এক হালি শশা কত টাকা। সবজি বিক্রেতা ড্যাঁব ড্যাঁব করে থাকিয়ে রইলো তেজের দিকে।
মেহু তেজের পিটে একটা থাপ্পড় দিয়ে বললো, আরে গা’ধা শশা হালিতে না জোড়ায় বিক্রি হয়। তাই না আংকেল?
সবজি বিক্রেতা এবার পুরোপুরি নিশ্চিত এগুলো মঙ্গলগ্রহ থেকে টপকেছে।
সবজি বিক্রেতাকে ভাবলেশহীন ভাবে তাকিয়ে তাকতে দেখে তেজ জিজ্ঞেস করলো, আংকেল কিছু বলছেন না যে।
সবজি বিক্রেতা এবার মুখ খুললেন। শোনো বাবা, শশা হালিতে বিক্রি হয় না। আবার জোড়াতেও বিক্রি হয় না। শশা বিক্রি হয় কেজিতে। এক কেজির দাম ৭০ টাকা। এখন বলো শশা দিবো কি দিবো না?
এক কেজি শশার দাম ৭০ টাকা শুনে তেজের অবস্থা। ফকির হয়ে যাবো বাপ ফকির হয়ে যাবো।

কেনাকাটা শেষ করে মেহুকে সাথে নিয়ে বাসায় ফিরে তেজ। মায়ের হাতে ব্যাগ গুলো তুলে দিয়ে, তেজ বলতে লাগলো। আম্মু, দূর্লব্যের বাজারে পণ্য দ্রব্যের দাম আকাশ স্পর্শ করেছে। একটা সাবানের দাম ১০০ টাকা। আমাদের উচিৎ এখন থেকে গোসলে সাবান ব্যবহার না করে, এক বালতি পানিতে কাপড় ধুয়ার পাউডার মিশিয়ে পরিবারের সবাই গোসল সম্পন্ন করা। আমাদের এখন থেকে সাশ্রয়ী হতে হবে।

জাহানারা ছেলের এমন কথা শুনে আবেগে আহ্লাদী হয়ে পড়ে। জাহানারা ছেলেকে উদ্দেশ্য করে বললো, ঠিক আছে আব্বু আমরা এখন থেকে সাশ্রয়ী হবো। এখন তুমি বরং রেস্ট নাও গিয়ে। অনেক কাজ করেছ আজকে। মায়ের অনুমতি পেয়ে তেজ দৌড়ে নিজের রুমে চলে যায়।

জাহানারা এবার মেহুর দিকে তাকাল দেখলো আর বললো, তা বউমা শ্বাশুড়িকে একটু সাহায্য করবে বাজার গুলো গুছিয়ে রাখতে? না হওয়া শ্বাশুড়ির মুখে বউমা ডাক শুনে মেহু লজ্জায় মাথা নুইয়ে ফেলে। জাহানারা কথার বিপরীতে মেহু ছোট্ট করে হ্যা্ বললো। জাহানারা হেসে ব্যাগ নিয়ে রান্নাঘরে চলে গেলো। মেহুও গেলো পিছন পিছন।___

জাহানারা চৌধুরী মেহুকে নিয়ে সব কিছু গুছিয়ে রাখছে আর কাজের ফাঁকে ফাকে দুজন মিলে গল্প করছে। কলিং বেলের শব্দে ধ্যান ভাঙগে জাহানারা চৌধুরীর। তিনি হাতের কাজ রেখে দ্রুত যায় দরজা খুলতে। দরজা খুলতেই দেখা মিললো এক হাসোজ্জল লোকের চেহারা।
ইশশ! লোকটাকে কতদিন পরে দেখলো। প্রিয় স্বামীকে এতোদিন পরে দেখে আবেগে আহ্লাদী হয়ে পড়েন জাহানারা চৌধুরী। স্বামীকে জড়িয়ে ধরে রাখেন মিনিট খানিক। প্রেমের বিয়ে ছিল তাদের। তাও আবার পরিবারের বিরুদ্ধে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেছেন তারা। বিয়ের এক বছরের মাথায় তাদের জমজ বাচ্চা হয় তরু আর তেজ। বিয়ের এতো বছর পরেও তাদের মধ্যে ভালোবাসা ও সম্মান একটুও কমেনি।
জাহানারা স্বামীর থেকে একটু দূরে এসে দাড়াল। আর তাতান চৌধুরীকে উদ্দেশ্য করে বললো।
কি ডাক্তার সাহেব! এই কয়দিনে ভুঁড়ি বানিয়ে ফেললেন? আমি তো এই ভুঁড়ির জন্য আপনাকে ঠিক ভাবে জড়িয়েও ধরতে পারছিনা। প্রিয় বধূর কথায় তাতান সাহেব শরীর দুলিয়ে হাসলে।
তাদের এই সুন্দর মূহুর্ত গুলো দূর থেকে তিনজন দেখছিল। তরু আর তেজ একসাথে বলে উঠলো আমাদের ফ্যামেলিটা যেনো সবসময় এমন হাসি খুশি থাকে। মেহুও তাদের কথায় সায় দিলো।

চলবে___ইনশাআল্লাহ