দুই_হৃদয়ে_সন্ধি পর্ব-০৯

0
224

#দুই_হৃদয়ে_সন্ধি
#পর্বঃ৯
#Nova_Rahman

রাত দশটায় বাড়ি ফিরলেন তাতান চৌধুরী। রুমে এসে এপ্রোনটা রেখে হাত ঘড়িটা খুলতে খুলতে স্ত্রী জাহানারা চৌধুরীকে বলল ছেলেকে ডেকে দিতে। বাসায় এসেই ছেলেকে ডেকে দেওয়ার জন্য তাতান চৌধুরীকে এতো উদ্বিগ্ন হতে দেখে কিছুটা অবাক হলেন জাহানারা চৌধুরী।

আস্তেধীরে স্বামীর পেছনে গিয়ে কাঁধের উপর হাত রাখলেন জাহানারা চৌধুরী। আকস্মিক কাধের উপর কারো হাত পড়ায় চকিতে পেছন ফিরে তাকাল তাতান চৌধুরী। স্ত্রীকে দেখে ভ্রু কুঁচকে তাকালেন তাতান চৌধুরী।
স্বামীকে এইভাবে তাকাতে দেখে জাহানারা চৌধুরী কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে পড়েন। নিজেকে স্বাভাবিক করে তাতান চৌধুরীকে জিজ্ঞেস করলেন, কি হয়েছে? বাড়িতে এসেই তেজের খোঁজ করছেন যে। তাতান চৌধুরী একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো, আগে ডেকে দাও তোমার গুনধর ছেলেকে, তারপর বলছি কি হয়েছে।
স্বামীর এহেন কথায় কপালে চিন্তার বাজ পড়লো জাহানারা চৌধুরীর। রুম থেকে বেরিয়ে দ্রুত পা বাড়ালো তেজের কামরার দিকে।

তেজ ইফতার শেষে পড়তে বসেছে। সেই কখন থেকে একটানা পড়েই যাচ্ছে। তেজের এক সমস্যা একবার পড়তে বসলে পড়ার টেবিল থেকে আর উঠতে মন চাই না। অপরদিকে তরু তার একদম উল্টো। তরুকে ধরে বেঁধেও পড়ারর টেবিলে বসানো যায় না। তরুর মতে পড়তে হলে পরিক্ষার আগের দিন পড়বো। সারাবছর পড়াশোনা করে নিজের জমানো এনার্জি নষ্ট করার কোনো মানেই হয় না।

তিন চার পা হেটে তেজের কামরার সামনে এসে দাঁড়ালেন জাহানারা চৌধুরী। আস্তে করে বার দুয়েক দরজায় ঠোকা দিলো জাহানারা চৌধুরী। হঠাৎ পেছন থেকে আসা শব্দের উৎস অনুসরণ করে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাড়ালো তেজ। দরজার সামনে মাকে দাড়িয়ে থাকতে দেখে, দ্রুত পা ফেলে মায়ের মুখোমুখি এসে দাড়াল । এতো রাতে মাকে নিজের কামরার সামনে দেখে কিছুটা অবাক হলো তেজ।

‘তেজ কিছু বলতে যাবে তার আগেই জাহানারা চৌধুরী ছেলেকে মাঝ পথে থামিয়ে দিয়ে বলল, __

“তোমার বাবা খুব জরুরী তলব দিয়ে তোমাকে ডাকতে বললো। তাই আমি তোমাকে ডাকতে এলাম। তা কী করেছো তুমি? ”

মায়ের কথা শুনে তেজের গলা শুকিয়ে মরুভূমি হয়ে গেছে। বাবা যে তাকে আদর করে ডাকছে না, সেটা তেজ খুব ভালো করেই বুঝতে পারছে। মায়ের পেটের শত্রু যে বাবাকে ইনিয়ে-বিনিয়ে নালিশ করেছে, তার বুঝবার বাকি রইলো না তেজের।

‘জাহানারা চৌধুরী এখনও উত্তরে আশায় তাকিয়ে আছে তেজের দিকে। তেজ মায়ের প্রশ্নের প্রতিত্তোরে কোনো প্রতিক্রিয়া করলো না।’

‘জাহানারা চৌধুরী আর কথা না বাড়িয়ে চলে গেলেন নিজের কামরায়। মাকে চলে যেতে দেখে তেজও গেলো মায়ের পিছন পিছন।’

বাবা মায়ের রুমের দরজার সামনে দাড়িয়ে আছে তেজ। তাতান চৌধুরী খুব গম্ভীর হয়ে বসে আছে খাটের এক কোনায়। তেজ আস্তে করে বাবাকে ডাক দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করলো। তাতান চৌধুরী ছেলেকে দেখেতে পেয়ে হাতের ইশারায় কাছে ডাকলেন। তেজ কোনো প্রতিক্রিয়া না করে ভয়ে ভয়ে বাবার সামনে এসে দাড়ালো। তাতান চৌধুরী বসা থেকে উঠে কোনো কথা না বলেই চট করে তেজের কান মোচড়ে ধরলো। ব্যথা পেয়ে তেজ কুঁকড়ে উঠলো।

তাতান চৌধুরী তেজের কান ধরেই হুঙ্কার দিয়ে বলতে লাগলো,, বেয়াদ! দিন দিন নিজের বেয়াদবি প্রকাশ করছো। বাবার মানসম্মান ডুবাতে উঠে পড়ে লেগেছো। এমন চরম লেভেলের বেয়াদবি কে শিখিয়েছে তোমাকে।

‘তেজ বাবার হুঙ্কারে ভয়ে চুপসে যায়। কোনো কথা না বলে চুপচাপ মাথা নতো করে দাড়িয়ে থাকে।’

তেজকে এমন চুপচাপ দাড়িয়ে থাকতে দেখে, তাতান চৌধুরী দাঁতে দাঁতে চিপে বলে, আই আস্কড ইউ আ কুইয়েশ্চেন। আন্সার মি কুয়েকলি।

তেজ তাও কোনো কথা না বলে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে। তেজকে এমন ভাবলেশহীন ভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে তাতান চৌধুরীর রাগ দপ করে মাথায় উঠে যায়। তাতান চৌধুরী হিতাহিত জ্ঞান শূন্য হয়ে তেজের গালে কষে একটা থাপ্পড় মারে। আকস্মিক গালে সজোড়ে থাপ্পড় পরায় তেজ দু’পা পিছিয়ে যায়। জাহানারা চৌধুরী স্বামীর এমন আচারন দেখে হতভম্ব হয়ে কথা বলতেও ভুলে গেছে। দৌড়ে গিয়ে ছেলেকে দু’হাতের ভাঁজে আগলে নেয়।

__তেজ মায়ের পেছনে গিয়ে ফুপিয়ে কান্না করতে থাকে। টুপটাপ চোখের জলে তেজের পুরো চশমা ভিজে ঝাপসা হয়ে যায়। জাহানারা চৌধুরী ছেলেকে বুকে আগলে নিয়ে পরম মমতায় পিটে হাত বুলাতে বুলাতে ছেলেকে শান্ত করার চেষ্টা করে।__
তাতান চৌধুরী আর কিছু না বলে ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। তাতান চৌধুরী চলে যেতেই জাহানারা চৌধুরী তেজকে খাটে বসিয়ে দুই হাত দিয়ে তেজের মুখটাকে আঁজলা করে ধরে। কান্না করতে করতে ইতিমধ্যেই হেঁচকি উঠে গেছে তেজের।

‘জাহানারা চৌধুরী এবার তেজকে শান্তা করে জিজ্ঞেসা করলো, তেজ, কি হয়েছিল আজকে? কেনো তোমার বাবা এতো রেগে গেলো তোমার উপর? ’

“মায়ের কথার বিপরীতে তেজ নাক টেনে আজকের সব ঘটনা খুলে বললো। জাহানারা চৌধুরী একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল, এক হাতে কখনো তালি বাজে না তেজ। সমান তালে তোমরা দু’জনেই দোষী। এখানে একজনকে দোষারোপ করলে অন্যায় হবে। তুমি যদি আগে তরুকে একা ফেলে রেখে না আসতে। তাহলে তরু ইনিয়েবিনিয়ে তার বাবার কাছে নালিশ করতে পারতো না। আর নাই বা হতো এতো বড় কান্ড। তেজ একটা কথা সবসময় মনে রাখবে। তুমি তুরু ভাই, তরুকে আগলে রাখার দায়িত্ব তোমার। এখন তুমি যদি ভাই হয়ে বোনের প্রতি দায়িত্ব পালন করতে এমন অনিহা করো তাহলে কেমনে কি হবে।”

__‘আল্লাহ না করুক, আমাদের যদি কিছু একটা হয়ে যায় তাহলে তরুকে দেখে রাখার দায়িত্ব কিন্তু তোমার। তরুর প্রতি তুমি যদি এতো উদাসীন থাকো, তাহলে তরু আরো উগ্রড়ে যাবে। তরু বড্ড ছেলে মানুষ। তরু বুঝে কম চিল্লাই বেশি। এখন তুমিও যদি তরুর মতো ব্যবহার করো, তাহলে কেমনে কি হবে বলো। তোমার উচিৎ তরুকে বোঝা, তরুকে আগলে রাখা। কিন্তু তোমার উচিৎ হয়নি তরুকে এইভাবে রেখে চলে আসা।’

‘আজকে তোমার কাছে তরুর এমন উগ্র স্বভাব ভালো লাগছে না। একদিন আসবে তেজ, যেদিন এই উগ্র স্বভাবের মেয়েটাকে তুমি বড্ড মিস করবে। আর বেশিদিন নেই। আর তো মাত্র কয়টা দিন। তরুর আঠারো বছর হয়ে গেলেই আমি কন্যা বিদায় করবো। আর তুমি বোন।’

“একটা কথা মনে রাখবে তেজ। সময় থাকতে আমাদের সময়ের মূল্য দেওয়া উচিৎ। সময় পেরিয়ে গেলে আর চাইলেও অতীতে ফিরে যাওয়া সম্ভব হবে না। তোমার উচিৎ উদাসীন না হয়ে ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নেওয়া। একটা ভুল সিদ্ধান্ত আমাদের জীবনকে শেষ করে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে।”

তেজ চুপচাপ বসে থেকে মায়ের সব কথা হজম করলো। তেজ এখন বুঝতে পারছে। তার এইভাবে বোনকে রেখে চলে আসাটা উচিৎ হয়নি। তেজ জাহানারা চৌধুরীকে জড়িয়ে ধরে বলল, থ্যাংকিউ আম্মু। আমার উচিৎ ছিল ভেবে চিন্তে সিদ্ধান্ত নেওয়া। তবে আমি তরুর প্রতি উদাসীন নই৷ আমি আমার বোনকে খুব ভালোবাসি। শুধু মাঝে মাঝে তরুর উদ্ভট আচারণে হতভম্ব হয়ে কথা বলতে ভুলে যায়।

__ছেলের কথায় জাহানারা চৌধুরীও সায় দিলেন। তিনি নিজেও মাঝে মাঝে মেয়ের এমন উদ্ভট আচারণে হতভম্ব হয়ে কথা বলতে ভুলে যায়। মা ছেলে একজন আরেক জনের দিকে চোখ চাওয়া চাওয়ি করে এক সাথে হেসে দেয়।__

“তেজ এবার মায়ের থেকে বিদায় নিয়ে বেরিয়ে পরে রুম থেকে। তেজ হাঁটতে হাঁটতে চলে যায় তরুর রুমে। ”

তরু খাটের ওপর উবু হয়ে পা দুটো উপরে তুলে বই নিয়ে পড়ছে। তেজ বোনকে দেখে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল, তুই আর মানুষ হবি না তরু। তেজ হতাশ খুবিই হতাশ!

তেজ বার কয়েক দরজায় ঠোকা দিয়ে বলল, ভেতরে আসবো। তরু বই থেকে মাথা তুলে ঘাঁড় ফিরিয়ে সামনে তাকাল। দরজার পাশে তেজকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে,তরু মুখ ভেংচি দিয়ে পুনরায় পড়ায় মনোযোগি হলো। তেজ এবার অনুমতির অপেক্ষা না করে রুমে ঢুকলো। এক পা দু পা করে তরুর সামনে এসে দাঁড়ালো তেজ। কিছু বই সাইড করে খাটের এক কোনায় জায়গা নিয়ে আরাম করে বসলো তেজ।

কিচ্ছুক্ষণ নিরবতা পালন করে তেজ বোনকে উদ্দেশ্য করে দুইটি শব্দ উচ্চারণ করলো, সরি তরু।
তরুর মন ভালো করার জন্য এই দুইটি শব্দ যথেষ্ট ছিল। তরু বই রেখে তেজের দিকে থাকিয়ে একটা ভুবন ভুলানো হাসি দেয়। তেজের মনকে শান্ত করার জন্য বোনের এই মিষ্টি হাসিটাই যথেষ্ট ছিল।

__সরি একটি অদ্ভুত শব্দ। এই দুই শব্দের দু’টি অক্ষর যখন ডাক্তাররা উচ্চারণ করে, তখন প্রিয় মানুষ হারানোর শোকে কারো গোটা পৃথিবী অন্ধকার হয়ে যায়। আবার এই দুই শব্দের দু’টি অক্ষর যখন কোনো প্রিয় মানুষ তার প্রিয় মানুষের জন্য উচ্চারণ করে, তখন কারো গোটা পৃথিবী সুন্দর হয়ে যায়। কি অদ্ভুত প্রকৃতির নিয়ম! __

‘সকাল থেকেই তেজের শরীরটা খুবি খারাপ। হঠাৎ করেই পেটের ভেতর কেমন বজ্রপাতের শব্দ হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ের মতো বার বার পেটের ভিতরে মোচড় দিয়ে উঠছে। সকাল থেকে এই নিয়ে দশবার বাতরুমে যাওয়া আসার পর্ব গুছিয়েছে তেজ। অনেকবার বাতরুমে না যাওয়ার জন্য নিজেকে ধরে রেখেছে। কিন্তু বারংবার তেজ সেই কাজে ব্যর্থ। তেজ বলে আমি বাতরুমে যাবো না। বাতরুম ডাক দিয়ে বলে, তেজ তোমাকে আমার কাছে আসতেই হবে। ’

এগারো বারের মাথায় তেজ ক্লান্ত হয়ে বিছানায় শরীর এলিয়ে দেয়। হঠাৎ করে পেটের ভিতরে ঘূর্ণিঝড়ের মতো কিছু একটা ঘুরতেই গলগল করে বমি করে ফ্লোর ভাসিয়ে দিলো তেজ। জাহানারা চৌধুরী কিছু একটার দরকারে তেজের কামরায় আসছিল তেজের কাছে। জাহানারা চৌধুরী দরজা ঠেলে ভিতরে প্রবেশ করতেই, তেজের এমন অবস্থা দেখে হতভম্ব হয়ে কথা বলতে ভুলে যায়।

দৌড়ে গিয়ে ছেলের পাশে হাঁটু ভাঁজ করে বসে পড়লো জাহানারা চৌধুরী। আস্তে করে তেজের গালে কয়টা চাপড় দিয়ে ছেলের হুশ ফেরান জাহানারা চৌধুরী। হুশ ফিরতেই উদ্বিগ্ন কন্ঠে জাহানারা চৌধুরী ছেলেকে জিজ্ঞেস করলো, কি হয়েছে বাবা। তোমার এমন অবস্থা হলো কি করে? তেজ আস্তেধীরে সম্পুর্ণ ঘটনা খুলে বললো। জাহানারা চৌধুরী কিছুটা চিন্তিত হয়ে উঠে দাঁড়ালেন। পাশের টেবিল থেকে পানি নিয়ে ছেলের হাত মুখ পরিষ্কার করে দিলেন। ফ্লোরের বমি পরিষ্কার করে নিচে গেলেন স্যালাই পানি আনতে। নিচে যাওয়া আগে তরুর রুমে গিয়ে তরুকে উদ্দেশ্য করে বলে গেলো ভাইয়ের পাশে বসে থাকার কথা।

তেজের অসুস্থতার কথা শোনে তরু এক দৌড়ে চলে যায় তেজের রুমে। তরু দরজার পাশে উঁকি দিয়ে তেজকে উদ্দেশ্য করে বলল, টুকি তেজ। তেজ বিরক্ত হয়ে বলে উঠলো, টুকিটাকি রেখে ভেতরে আয়। তেজের অনুমতি পেয়ে তরু দৌড়ে যায় তেজের কাছে। তরু খাটের এক কোনায় পা তুলে আরাম করে বসে। তরু এবার তেজকে উদ্দেশ্য করে বলল, তেজ তোর নাকি ডাইরিয়া হয়েছে?

“বোনের কথায় তেজ নাক-মুখ কুঁচকে দাঁতে দাঁত চিপে উত্তর দিলো, না বোন। ডায়রিয়া না, কলেরা হয়েছে আমার। কলেররররা!”

তেজের কথার ভঙ্গিমা দেখে তরু ঠোঁট টিপে হেসে বলল, তেজ একটা কথা কি জানিস? কলেরার রোগীরা বেশিদিন বাঁচে না। তেজ একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল, তোর মতো যায় একটা বোন আছে তার কলেরা রোগ হতে হবে না সে বেচারা এমনিতেই টপকে যাবে।

‘তরু হতাশ খুবিই হতাশ! তরু হতাশ কন্ঠে তেজকে শুধালো, আমাকে এ জন্মে তুই বুঝলিনা তেজ। তোর আর উন্নতি হবে না, দেখিস।

তেজ দাঁতে দাঁত চিপে বলল, এতো বুঝাবুঝির দরকার নাই। আগে বল তুই এখানে কেনো এসেছিস?

তেজের কথার বিপরীতে তরু বিরক্ত হয়ে শুধালো,বারেহ! তুই আমার একটা মাত্র ভাই, তোর কলেরা হয়েছে আর আমি সেবা করতে আসবো না। বরাবরই আমি খুব দায়িত্বশীল মানুষ।

তরুর কথার বিপরীতে তেজ তরুকে ব্যঙ্গ করে বলল, ইসস! আসছে আমার জনদরদি আপা। আমার করবে সেবা। তা তুই কি তোর ঐ ডে/ঞ্জা/রা/স গান শুনিয়ে আমাকে সেবাদান করবি?
তেজের কথার বিপরীতে তরু উল্লাসীতো কন্ঠে শুধালো, তুই চাইলে আমি একটা কেনো হাজারটা গান গেয়ে শোনাতে পারি। যদি তুই আমার গানটাকে সেবা হিসাবে নিস।

তেজ কি যেনো একটা ভেবে বলল, ঠিক আছে শোনা তোর গান। তবে একটা কথা মনে রাখিস। এমন কোনো গান গায়বি না, যাতে করে আমার হায়াত কমে আসে। আমি এতো তাড়াতাড়ি তোর গান শোনে মরতে চাই না। তবে তুই যখন এতে করে বলছিস। তাহলে গা একটা গান। শোনি!

‘তেজের কথার ভঙ্গিমা দেখে তরু ভ্রু কুঁচকে তাকাল তেজের দিকে। তরু হতাশ কন্ঠে তেজকে শুধালো, গান গায়বো?’
‘তরুর কথার বিপরীতে তেজ ছোট্ট করে উত্তর দিলো,ওখেইইই গা!__’
তরু এবার শুরু করলো______

“ বেঁচে আছিস মরার মতো, তুই ক্যান মরিস না।”
“ মরে গেলে চল্লিশা খাবো, তুই ক্যান বুঝিস না।”
“পরে রবে তর, স্মৃতি হাসাবে আমারে।”
“ আমি খাবো তোর চল্লিশা, তুই থাকবি কবরে।”

তরুর গান শোনে তেজের কন্ঠস্বর থো মেরে যায়। শ্বাসপ্রশ্বাস থেমে থেমে আসছে। তেজ ধীরো কন্ঠে বলতে লাগে। তরুরে তরু, তোর গান শোনে মনে হয় আশেপাশের জীবজন্তুু গুলোও মইরা গেছে। আর আমি তো মানুষ। এইটুকু কথা বলতে বলতেই তেজের সারা শরীরের খেঁচুনি উঠে যায়। তেজের এমন অবস্তা দেখে তরু লাফ মেরে দাড়িয়ে পড়ে।

“তরু হিতাহিত জ্ঞান শূন্য হয়ে, চিৎকার করে ডাক দেয় মা জাহানারা চৌধুরীকে।”
আম্মায়য়য়য়য়য়য়য়য়য়া! তোমার ছেলের মিরকি ভ্যাড়াম উঠেছে। এই রোজা রমজানের মাসে তেজকে শ/য়/তা/নে ধরেছে শ’য়’তা’নে! তাত্তাড়ি আসো।

চলবে_ইনশাআল্লাহ