#পবিত্র_বন্ধনে_আবদ্ধ
#পর্ব – ৪৪ +৪৫
#Jannatul_ferdosi_rimi (লেখিকা)
ফিহার শরীরে কাপুনি ধরে গেলো। ফারহাজের কন্ঠে ফিহু ডাকটি শুনে। কতটা মধুময় ডাক। ফিহাকে চুপ থাকায় ফারহাজ আবারও বলে উঠে- তুমি শুনতে পারছো আমায়? ফিহা নিজেকে কোনোরকম সামলিয়ে বলে উঠে- হঠাৎ ফোন করলেন যে আমায়? কোনো দরকার? ফারহাজ বলে উঠে- তোমাকে দরকার ফিহু।
মনের কথাটা মনেই রেখে দেয় ফারহাজ। ফারহাজ আবারোও বলে উঠে-
নাহ মানে আমি ভাবছিলাম যে তোমাকে অই বাড়িতে কেউ তোমাকে কিছু বলেছে? নাকি আমার ফোন করতে হবে?
ফিহাঃ আপনাকে আমার বাড়ির লোককে কিচ্ছু বলতে হবে নাহ। আমি নিজেই সামলিয়ে নিতে পারবো। আর কিছু?
ফারহাজঃ বিরক্ত হচ্ছো? ( কিছুটা দৃড় কন্ঠে)
ফিহাঃ হুম! আপতত কিছুটা বিরক্ত বোধ করছি। কোচিং এ আছি। রাখছি।
এই বলে ফারহাজকে কিছু বলতে না দিয়ে ফিহা কট করে ফোন কেটে দেয়।
ফিহাঃ একটি বার কেনো বলতে পারলেন নাহ লাটসাহেব? ফিহু ফিরে এসো। ( মনে মনে)
ততক্ষনে স্যার চলে আসে। স্যার কে দেখে সবাই দাঁড়িয়ে যায়। ফিহাও অইসব বাদ দিয়ে ক্লাসে মনোযোগ দিতে থাকে।
ফারহাজ ছোট্ট করে দীর্ঘশ্বাস ফেলে। পুচকি টা বড্ড অভিমানি।
ফারহাজ উঠে দাঁড়ায়।
ফিহাদের কোচিং এর সামনে নিজের গাড়ি পার্ক করে আহান। উদ্দেশ্য বোনটাকে এক্টিবারের জন্যে দেখতে পাওয়া।
সে যতটুকু ইনফরমেশন পেয়েছে ফিহা কয়েকদিনের জন্যে ইরিনাদের বাড়িতে এসেছে মিসেস ফাতেমার কাছে।
আহানের ভাবনার মাঝেই ফিহার আগমন ঘটে।
ফিহা সিমির সাথে গল্প করছে। তখনি একজন ফিহার সামনে দাঁড়ায় । তাকে দেখে ফিহা চমক উঠে।
ফিহাঃ আপনি? আপনি তো ইরিপুর বর।
আহানঃ হুম ঠিক শুনেছো। তোমার ইরিপুর বর আমি।
ফিহা মুখটা বেকিয়ে চলে যেতে নিলেই আহান ফিহার সামনে চলে আসে।
আহানঃ এইভাবে চলে যাচ্ছো কেন? সম্পর্কে তোমাত দুলাভাই হই। আর তুমি আমাকে ইগনোর করছো? সরি তুমি আমার ছোট তাই তুমি বলেই ডেকে ফেললাম।
ফিহাঃ আপনার সাথে এক সেকেন্ড কথা বলার ইচ্ছে নেই আমার বুঝেছেন? আপনার জন্যে ভালো বাবা- আর মামনি কস্ট পাচ্ছেন। ইরিপুর সাথে নিজেদের সম্পর্কে শেষ করে ফেলেছে। সরুন। আমাকে বাসায় যেতে হবে।
কথাটা শুনে আহানা কিছুটা অপরাধীর ন্যায় বলে উঠে-
হয়তো আমার এই বিয়ের জন্যে তোমারও জীবনটা নস্ট হয়ে গেলো তাইনা? আমি তো তোমার কাছেও অপরাধি
(লেখিকাঃ জান্নাতুল ফেরদৌসি রিমি)
ফিহাঃ ঠিক বুঝতে পারলাম নাহ।
আহানঃ নাহ মানে মান- সম্মানের ভয়ে এইরকম বিয়ে নামক অদ্ভুদ বেড়াজালে পড়ে গেলে যেখানে সামনে তোমার জন্যে সুন্দর একটি ভবিষ্যৎ রয়েছে। কেনো বিয়েটা করলে? সেদিন একটিবার মানা করতে। এই বিয়ের কোনো মানেই দেখি নাহ। কিন্তু তুমি চাইলে আমি এখুনি প্রসেসিং এর মাধ্যমে তোমার আর ফারহাজের ডিভোর্স এর এরেঞ্জ করিয়ে দিতে পারি।।
খানিক্টা উত্তেজিত হয়ে বলে আহান। সে কিছুতেই তার আদরের বোনের এই বিয়েটা মেনে নিতে পারছে নাহ। যেই মির্জা বাড়ির জন্যে তাদের এই অবস্হা সেই মির্জা বাড়ির বউ ফিহা। নাহ নাহ কিছুতেই হতে পারে নাহ।
কথাটি শুনে ফিহা এইবার আহানের মুখোমু্খি ঘুড়ে বলে উঠে—
আপনার কি মনে হচ্ছে নাহ? দ্বিতীয় সাক্ষাতেই আপনি একটু বেশিই অনধিকার চর্চা করে ফেলছে।
আর আমি কখনোই আপনাকে আমার কোনো বিষয়ে দায়ী করেনি। আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্যেই করে৷ আর কি বললেন ডিভোর্স? এইটা সম্পুর্ন আমার ও আমার স্বামীর ব্যাপার।
এতো সহজে সবকিছু হয়ে যায়? আসলে আপনি নাহ বিয়ে নামক পবিত্র সম্পর্কটার মানেই বুঝেন নাহ তাই এইসব কথা বলতে পারতেন নাহ।
আহান ফিহার কথা শুনে কি বলবে বুঝতে পারছে নাহ। সে হাত মুষ্ঠিবদ্ধ করে ফেলে। এখন সে পারলে ভাইয়ের অধিকার নিয়েই ফিহাকে জোড় করিয়ে ডিভোর্স টা করিয়ে ফেলতে পারতো। বিয়ে নামক এই খেলার কোনো মানেই হয়না। কিন্তু আপতত আহান পারবে নাহ নিজের পরিচয়টা সামনে আনতে।
ফিহাঃ চলে আয় সিমি!
এই বলে ফিহা আর সিমি চলে যায়। আহান ভাবতে পারছে নাহ কী করে ফিহার মাথা থেকে এই বিয়ে নামক ভুত বের করবে? ফিহা যে এই সম্পর্কটা নিয়ে যথেষ্ট সিরিয়াস
(লেখিকাঃ জান্নাতুল ফেরদৌসি রিমি)
ফিহা সামনে হাটছে আর ফিহা পিছনে পিছনে।
সিমিঃ ফিহুরানিরে আমি তো জাস্ট অবাক! তুই ইরিপুর বরকে কী করে এতো কথা শুনালি? মানে তোকে দেখে সত্যি তখন ম্যাচিউড মনে হচ্ছিলো।
ভাবা যায়?
ফিহাঃ একটা কথা সবসময় মনে রাখবি সিমি।
—”বয়সে নয় মানুষের মাঝে ম্যাচিউরিটি আসে পরিস্হিতির উপর নির্ভর করে”।
কেউ কেউ খুব কম বয়সেই ম্যাচিউড হয়ে উঠে।
এইটা অস্বাভাবিক কিছুই নয়।
রাত এখন গভীর। সবাই এখন ঘুমে আচ্ছন্ন।
ফারহাজ কোনোরকম নিবিড়ের ঘরের চাবি জোগাড় করে নিবিড়ে রুমের প্রবেশ করে। রুমে প্রবেশ করতেই ফারহাজের বুকটা ধুক করে উঠে। নিবিড় কাকাই, আরিশা কাকি ছোটবেলার বেস্টফ্রেন্ড আদ্র বিশেষ করে নীলাঞ্জনার কথা খুব করে মনে পড়ে যায় তার। নিজের ব্রেসলেটের দিকে চোখ যায় ফারহাজের। এখনো চকচক করছে। এই বিশেষ রুবির ব্রেসলেট টা তার বড় আম্মু ( মিঃ রাইজাদার মা) তাকে এবং তার নীলাঞ্জনাকে দিয়েছিলো।
মনে পড়ে যায় অতীত
অতীত,,,,,
ফারহাজ ও আদ্র আজকে খুব এক্সাইটেড। আদ্র তো আরো বেশি এক্সাইটেড। তার বনু আসবে বলে কথা। তারা এখনো নতুন বেবিকে দেখে নি।
আজকে যে মির্জা বাড়িতে নতুন সদস্য আসবে। হ্যা আরিশা দ্বিতীয় বারের মতো মা হয়েছে৷ তার ছোট্ট একটি পরী হয়েছে। মিঃ রাইজাদা ও অনেক খুশি। রাইহান ( ফারহাজের বাবা)ও রাহাত( ফারহাজের ছোট কাকাই) মিস্টির দোকান বানিয়ে ফেলেছে বাড়িটাকে। রেনু বেগম সব কিছু তদারকি করছেন।
মিসেস ইরা( ফারহাজের দাদি) ও মিসেস প্রিয়ার ( ফারহাজের মা) কাছে সবকিছু আদিক্ষেতা ছাড়া কিছুই মনে হয়না।
তখনি ছোট্ট নীলাকে ওরফে( ফিহা) নিয়ে নিবিড় ও
আরিশা চলে আসে। ফিহা আরিশার কোলে
তাদের দেখে আদ্র ও ফারহাজ ছুটে চলে যায়।
আদ্রঃ কোথায় আমার বোনু?
ফারহাজঃ আমাকে আগে দেখাও! আমি দেখবো আগে।
আদ্রঃ নাহ আমার বনু তাই আমিই আগে দেখবো বুঝিছিস?
রেনু বেগমঃ আহা তোরা থামবি? মাত্র আরিশা এসেছে আগে ওকে একটু রেস্ট নিতে দেয়।
নিবিড়ঃ থাক ফুফু! ওরা তো ছোট। ওদের তুমি বকো নাহ।
রাইজাদাঃ আমাকে দে! সবার আগে আমি আমার দিদিভাই কে কোলে নিবো।
এই বলে রাইজাদা মির্জা ফিহাকে কোলে নিয়ে নেয়।
আরিশা রুমের গিয়ে ফিহাকে ছোট্ট বিছানাটায় শুয়িয়ে দেয়। ফিহা তার ছোট্ট ছোট্ট মায়াবী চাহনি দিয়ে তাঁকিয়ে আছে।
আদ্র ও ফারহাজ ড্যাভড্যাভ করে ফিহার দিকে তাঁকিয়ে আছে। ফারহাজ হঠাৎ চোখ যায় ফিহার সেই নীল মনি বিশিষ্ট চোখের দিকে। ফারহাজ আস্তে করে বলে উঠে-
নীলাঞ্জনা!
আদ্রঃ নীলাঞ্জনা কে?
ফারহাজ ফিহার দিকে তাঁকিয়ে বলে উঠে-
এইতো আমার নীলাঞ্জনা!
ফারহাজের কথায় আদ্র অবাক হয়ে বলে উঠে-
মানে টা কী?
ফারহাজঃ যখন আমি খুব ছোট ছিলাম তখনি রেনু দিদা আমাকে নীলাঞ্জনা পরীর কথা বলতো। যার চোখের মনি ছিলো নীল। আমারোও খুব ইচ্ছে ছিলো নীলাঞ্জনা পরীর সাথে দেখা করার। আমার মনে হয়
নীলাঞ্জনা নীলা হয়ে আমার কাছে চলে এসেছে।
আদ্রঃ কিসব বোঁকা বোঁকা কথা বলছিস?
এইসব কিছুই নাহ!
ফারহাজঃ চুপ কর তুই ( কিছুটা ধমক দিয়ে)
আমি জানি এই নীলাঞ্জনা আমার জন্যেই এসেছে।
ফারহাজের কথা শুনে বাঁকি সকলেই হেঁসে দেয়।
দাদুনঃ হুম বুঝেছি। আমাদের নীলা হলো আমাদের ফারহাজের সেই ছোট্ট নীলাঞ্জনা পরী!
ফারহাজঃ হুম একবার যখন আমি আমার নীলাঞ্জনাকে পেয়েছি আমি কখনো আমার নীলাঞ্জনাকে কোথাও যেতে হবে নাহ।
আদ্রঃ ইসস শখ কতো? আমার বোন বড় হলে
তাকে বিয়ে দিতে হবে নাহ??? তোর কাছে কেন থাকবে?
ফারহাজঃ নাহ নীলঞ্জনাকে আমি কোথাও যেতে দিবো নাহ।
আদ্রঃ বললেই হলো??ও আমার বোন।
ফারহাজঃ আর আমার নীলাঞ্জনা!
ফারহাজ আর আদ্রোর লেগে গেলো ঝগড়া নীলা ওরফে ফিহাকে নিয়ে।
ছোট্ট ফিহা কি জানে কি বুঝলো সে হাঁসছে ।
ফারহাজ অবাক হয়ে তার ছোট্ট নীলাঞ্জনার দিকে তাঁকিয়ে রইলো।
সুখে-দুঃখে চারটি বছর কেটে গেলো।
ইরিনা ফারহাজের বাড়িতে এসে ফারহাজকে খুঁজতে লাগলো।
আদ্রঃ কিরে কাকে চাই??
ইরিনাঃ ফারহাজকে
আদ্রঃ মানে?
ইরিনাঃ আসলে বললাম ফারহাজ কোথায় বলতে পারবি? আসলে আমি ওর কাছ থেকে একটা ম্যাথ বুঝতে এসেছি।
আদ্রঃ ম্যাথ বুঝতে এসেছিস? নাকি ফারহাজের সাথে লাইন মারতে( সন্দেহের দৃষ্টিতে)
ইরিনা কিছুটা ভরকে যায়।
ইরিনাঃ কি বলছিস কি তুই?এইসব কিছুই নাহ ওকে
আদ্র, ফারহাজ ও ইরিনা যেহুতু ক্লাসমেট তাই তারা একে অপরকে তুই করেই বলে। ইরিনা সেই প্রথম থেকেই ফারহাজকে পছন্দ করে কিন্তু ফারহাজ তাকে পাত্তা ই দেয়না।
ইরিনাঃ আগে এইটা বল ফারহাজ কোথায়???
আদ্রঃ দেখ বাগানে মনে হয়।
এদিকে,,,
ফিহা কোনোরকম ওড়না দিয়ে শাড়ি বানিয়ে বউ সেজে বউ বউ খেলছে। আর ফারহাজকে বসিয়ে রেখেছে।
ফারহাজ বই পড়ছে আর ফিহার কান্ড দেখে যাচ্ছে। ফিহা ফাহু ভাইয়ু বলতে অজ্ঞান। ফারহাজও তার ছোট্ট নীলাঞ্জনার সব আবদার পুরণ করে।
ফিহাঃ ফাহু ভাইয়ু আমাতে কেতম লাগতে?( ফাহু ভাইয়া আমাকে কেমন লাগছে?)
ফারহাজঃএকেবারে পরী লাগছে।
ফিহুঃ পলী?(পরী?)( ছোট ছোট করে চোখ কর)
ফারহাজ হেঁসে বলে উঠে-
হুম।
তখনি ইরিনা চলে আসে।
ইরিনাঃ ফারহাজ তুমি এখানে? আর তোমাকে আমি কখন থেকে খুঁজে যাচ্ছি।
ফারহাজঃ তুই হঠাৎ এখানে???
ইরিনাঃ আসলে আমি না তোমার কাছে একটা ম্যাথ বুঝতে এসেছি। যদি তুমি একটু বুঝিয়ে দিতে অনেক ভালো হতো।
ফারহাজঃ ঠিক আছে আমি আসছি।
এই বলে ফারহাজ উঠতে নিলে ফিহা দৌড়ে ফারহাজের গেঞ্জি ধরে টান দেয়।
ফিহাঃ টুমি কোতাও যাবে নাহ।
টুমি আমাল সাথে খেলবা। এইতে পতা আপু তুমি তলে তাও। ফাহু ভাইয়ু আমাল সাথে খেলবে
( তুমি কোথাও যাবে নাহ। এইযে পঁচা আপু তুমি চলে যাও। ফাহু ভাইয়ু আমার সাথে খেলবে)
ফারহাজঃ আচ্ছা ইরিনা তুই এখন যা। আমি কালকে স্কুলে তোকে বুঝিয়ে দিবো।
ইরিনাঃ কিন্তু
তখনি আদ্র এসে বলে —
তুই আর এখানে থেকে কি করবি? চল আমরা দুজন মিলে ভিডিও গেমস খেলি।
এই বলে ইরিনাকে কিছু বলতে না দিয়ে আদ্র( আহান) ইরিনার হাত ধরে নিয়ে যায়।
বর্তমান,,
নীলঞ্জনার কথা মনে পড়তেই ফারহাজের আবারও ফিহার কথা মনে পড়ে যায়।
ফারহাজ নিজেকে সামলিয়ে নিবিড়ের আলমারি ঘাটাঘাটি করতে থাকে যদি কোনো ক্লু পাওয়া যায়।
এদিকে,
ইরিনা বেশ কিছুক্ষন ধরে খেয়াল করছি আহান গভীর মনোযোগ দিয়ে কিছু একটা ভাবছে।
ইরিনা একটু এগিয়ে বলে উঠে-
কোনো সমস্যা?
আহানঃ নাহ!
ইরিনাঃ আপনাকে দেখে চিন্তিত মনে হচ্ছে। চাইলে শেয়ার করতে পারেন জানেন তো শেয়ারিং ইজ কেয়ারিং। শেয়ার করলে মন ও ভালো হয়ে যায়।
আহানঃ তুমি আমাকে নিয়ে একটু বেশিই চিন্তা করছো? কেনো বলোতো? ( ভ্রু কুচকে)
ইরিনাঃ সব কথা কি আর বলতে হয়? কিছু কথা জেনে নিতে হয়।
এই বলে ইরিনা মুচকি হেঁসে নিজের ঘরের দিকে পা বাড়ালো।
আহান ইরিনার হাঁসির কারন ঠিক ধরতে পারলো নাহ।
এদিকে,,
অনেক্ষন খুঁজাখুজির পর ফারহাজ তার কান্ক্ষিত ফাইলটি পেয়ে গেলো। প্রায় এগারো বছর আগের কেস। যেই কেসের দায়িত্বে ছিলেন অফিসার নিবিড় মির্জা। কেসের উপর বড় করে লেখা আছে কিং স্যার।
ফারহাজ তাৎক্ষনাক বলে উঠলো-
কিং স্যার!
ফিহা খেতে গিয়েও খেলো নাহ। মনে পড়ে গেলো কীভাবে তাকে ফারহাজ অতিযত্নে তাকে খায়িয়ে দিতো। গলায় খাবার আটকে গেলো। সে কেঁশে উঠে।
ফিহার মা তাড়তাড়ি করে ফিহার দিকে জলের পানিটুকু এগিয়ে দেয়।
ফিহা ঢগঢগ করে খেয়ে নেয়।
মিসেস ফাতেমাঃ আচ্ছা ফিহা, সত্যি করে একটা বলতো। তুই ভালো আছিস? তো? ফারহাজের সাথে কোনো সমস্যা হয়নি তো?
ফিহা প্রশ্নটা শুনে কিছুক্ষন চুপ থেকে মুখে কোনোরকম হেঁসে বলে উঠে-
নাহ নাহ! সমস্যা হবে কেনো? আমি ঠিক আছি মা।
এই বলে ফিহা উঠতে নিলে মিসেস ফাতেমা তাকে থামিয়ে বলে উঠে-
কিরে খাবি নাহ? আর?
ফিহাঃ নাহ মা! আমার নাহ মাথাটা কেমন ধরেছে।
এই বলে কোনোরকম ফিহা পাশ কাটিয়ে চলে যায়।
এদিকে,,,,,
ফারহাজ ফাইলটা নিয়ে নিজের রুমে ঢুকে। রুমে ঢুকতেই
এক আলাদা শুন্যতা অনুভব করছে। চারদিকে ফিহার স্মৃতি গুলো নাড়া দিচ্ছে। ফারহাজ ভেবেছিলো হয়তো সে নিজের কস্ট গুলো সামলাতে পারবে কিন্তু এখন নিজেকে নিয়ন্ত্রন করা একেবারেই অসম্ভব হয়ে উঠছে। নাহ এই রুমে থাকা যাবে নাহ।
ফারহাজ নিজের স্টাডি রুমে ফাইলগুলো নিয়ে গেলো।
ফিহা নিজের রুমে গিয়ে ফোনটা হাতে নিলো ভাবলো কিছুক্ষন ফেসবুকে স্ক্রল করলে ভালো হয়।
সেই অনুযায়ী ফিহা ফেসবুকে ঢুকলো কিন্তু ফারহাজকে এতো রাতে নেটে এক্টিভ দেখে কিছুটা হলেও অবাক হলো ফিহা। ফিহার জানামতে এই সময় ফারহাজ ঘুমিয়ে যায়। কেননা সকাল সকাল ফারহাজের থানায় যেতে হয় একটা গুরুত্বপূর্ণ কেসের জন্যে। ফিহার মনে অদ্ভুদ অদ্ভুদ সব প্রশ্ন নাড়া দিচ্ছে
কার সাথে কথা বলছে? কি কথা বলছে? কোনো মেয়ের সাথে কথা বলছে। ফিহা আর নিজেকে আটকাতে পারলো নাহ ফোনটা বের করে ফারহাজের নাম্বারে ফোন দিলো।
ফারহাজ স্টাডি রুমে ইন্টারনেটে টোফিও নামক বিষের কথা সার্চ করেছে। কিন্তু কোথাও সে কিচ্ছু পেলো নাহ। তাছাড়া কিং স্যারটাও বা কে?
১১ বছর আগের কেস কিন্তু এখনো পর্যন্ত এই কেসের কোনো সুরাহা করা হয়নি। ভাবতেই অবাক হয়ে যায়। কিন্তু তার জানামতে তার কাকাই যেই কেস হাত নেয় সেই কেস সুরাহা না করে সে ছাড়ে নাহ। তাহলে ১১ বছর আগে ঠিক কি হয়েছিলো?
তার কাকাইয়েও কি তার মতো কেস থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছিলো?নানারকম প্রশ্ন জাগছে ফারহাজের মাথায়। কিন্তু এইটুকু ফারহাজ বুঝতে পেরে গেছে আহান নয় এইসব কিছুর মাঝে কিং স্যার রয়েছে কিন্তু প্রশ্ন হলো কে এই কিং স্যার?
তখনি তার ফোন বেজে উঠলো। ফিহা ফোন করেছে।
হঠাৎ এইসময় ফিহার ফোন? ফারহাজ ফোনটা রিসিভ করার সাথে সাথেই ফিহা অইপাশ থেকে উত্তেজিত হয়ে বলে উঠে-
আপনি এতো রাতে এক্টিভ কেন? কার সাথে কথা বলছেন? এতো রাতে তো আপনি এক্টিভ থাকেন নাহ।
ফারহাজঃ ফিহু আস্তে আস্তে একটু দম তো নাও!
ফিহাঃ কি আস্তে আস্তে আপনি আমার প্রশ্নের উত্তর দেন বলছি।
ফারহাজঃ বউ পিচ্ছি হলে যা হয় আর কি। এরা কথায় কথায় সংদেহ করে।
ফিহাঃ হুম লাটসাহেব আমি তো পিচ্ছি নাহ? আমার তো কোনো ফিলিংস নেই। আমার কোনো ফিলিংস থাকতেই নেই। আমি জানি সেইটা। যদি আপনি বুঝতেন। (খানিক্টা অভিমানের কন্ঠে বলে উঠলো)
ফারহাজ জানে ফিহার মনে তার জন্যে কি চলছে।
ফারহাজঃ আর কিছু?
ফিহাঃ বলার ইচ্ছে টুকু নেই আর।
ফারহাজঃ আমি শুনতে ইচ্ছুক!
ফিহাঃ আর বিরক্তির কারণ হতে চাইনা আমি।
ফারহাজঃ বেশি বুঝো! ( ধমক দিয়ে)
ফিহাঃ জানি আমি!
।।।।।চলবে কি?