#পরিণীতা
#নাহিদা ইসলাম
#পর্ব ৬
১২.
আমার কোমরটা প্রায় ভেঙ্গে ই গেলো।এতো জোরে কেউ কী নিচে ফেলে দেয় নাকি।
–বেশ করেছি তোমাকে কোলে নেওয়ার কোনো ইচ্ছা ই আমার নেই। আমার দিকে এমন ভাবে তাকিয়ে ছিলে কেনো। আমার কী লজ্জা লাগে না।
–আপনার কোলে উঠে বসে থাকার ও কোনো ইচ্ছের আমার নেই। ষাড়মশাই। আর আমি একটা কথা ভাবতেছিলাম আপনার দিকে তাকিয়ে ছিলাম না লজ্জাবতী লতিকা।
–কী আবার ষাড় বললে।
–দেখতে যেমন তেমন ই বললাম।
–চিকনেচামিলির কথা না বলা ই ভালো।
–আপনার সাথে কথা বলার কোনো সখ ই আমার নেই।
আরে তোরা দুজন আবার শুরু করলি। ইলা আপুকে দেখে দুজন ই চুপ হয়ে গেলাম।
–আপু আমাকে রুমে এনে বেডের উপর ফেলে দেয় কোমর ভাঙলো প্রায়।
–হয়েছে কারো আর কোনো কথা নাই। অর্ণব যা তুই ফ্রেশ হয়ে নে। পরী তুমি ও যাও।
–পরে দেখে নিবো চিকনেচামিলি।
পরী ভেংচি কেটে চলে গেলো। অর্ণবকে বুঝা বড় দায় মাঝেমধ্যে বেশ রাগি আবার বাচ্চাদের মতো ঝগড়া।
——————
চারদিকে সূর্যের কিরন বেশ ভালো ভাবে ছড়িয়েছে। মাটির দেওয়ালে ঘড়িটার কাটা এগারো থেকে বারোটা ছুইছুই।জানালা খুলে দিতে ই সূর্যের একগুচ্ছ আলো এসে পরীর মুখে পড়লো। পরীর ঘুমটা ভেঙ্গে গেলো। উঠে ঘড়িতে তাকিয়ে দেখে ই উঠে ফ্রেশ হয়ে নেয়। একটা লং কামিজ আর লেগিংস পরে নেয়। গায়ে চাদর মুড়িয়ে বসে আছে।
অচেনা জায়গা বাহিরে বের হবে নাকি ভাবছে। ইলা আপু ও কোনো খুজ নাই। অর্ণব তো সারাক্ষণ ফোন নিয়ে ব্যস্ত থাকে।।।।।
হঠাৎ একটা মেয়ে এসে বললো,
–আপনাকে ইলা আপু ডাকে।
–কোথায়??
–আমার সাথে চলেন।
আর কোনো প্রশ্ন না করে মেয়েটির পিছনে হাটতেছি। কী অদ্ভুত বাড়িটা সব মাটির তৈরি। দুতলা বাড়িটা ও মাটি আর কাঠ দিয়ে তৈরি। চারদিকে বিভিন্ন সৌন্দর্যর ছোয়া। দেখে ই বুঝা যাচ্ছে খুব সৌখিন মানুষ এবাড়ির সবাই। আমাকে নিয়ে ওদের উঠনে গেলো সবাই একটা শীতল পাটি বিছিয়ে বসে আছে এই ঠান্ডার মধ্যে। গল্প করছে সবাই, আমি আসার সাথে সাথে অর্ণব ও আসলো। দেখতে তো বেশ লাগছে। চাদর দিয়ে নিজেকে এমন ভাবে পেচিয়েছো মনে হচ্ছে নতুন বউ।হঠাৎ আমার ভাবনার ছেদ করে একজন বলে উঠলো,
–কীরে অর্ণব বিয়ে করলি আমাদের কে তো বললি না।
অর্ণব আর পরিণীতা দুজন দুজনের দিকে তাকিয়ে আছে।
–আরে ওদের…
–থাক না ইলা অর্ণব এর হয়ে উকালতি করে হবে না তোর। বউ তো মাশাল্লাহ।
–আরে কী বলছেন এসব আপনারা।
–অর্ণব বাবা লজ্জা পাচ্ছে। বিয়ে করেছো ভালো লজ্জা পাচ্ছো কেনো। বউ আসার সাথে সাথে আসলে যে বউকে চোখে হারাও বুঝি।
–স্টপ। কী বলছেন এগুলো। উনি আমার বউ না। ফালতু বকছেন কেনো। আর একটা বাজে কথা বললে কী করি দেখতে পাবেন।
বেশ জোরে ই অর্ণব এ কথাগুলো বললো। ইলার ফুপি কথাগুলো বলেছে। উনি তো বেশ লজ্জা পাচ্ছেন এবার। কিন্তু সবাই বড্ড হাসিখুশি তাই রাগ জিনিস টা খুব কম ই আছে। যেখানে রাগ থাকে ঐখানে সুখ জিনিসটা অল্পক্ষণ ই স্থায়ি হয়। কিন্তু অর্ণব প্রচন্ড রেগে যায় তাই ঐখান থেকে উঠে চলে যায়। পরীর ও খুব কষ্ট লাগছে। নিজেকে একটা প্রবলেম মনে হচ্ছে এখন। যেখানে ই যায় কোনো না কোনো প্রবলেম হয় ই।
–পরী প্লিজ তুমি রাগ করো না।
–আপু আপনি আমার জন্য টেনশন করবেন না।আমি ঠিক আছি। আপনার ভাইকে সামলান।
১৩.
হাফেজা বেগম ইলার মা। অর্ণব এর জন্য অনেক আইটেমের পিঠা পায়েস মিষ্টি নিয়ে ছেলের রুমে হাজির। খুব ভালোবাসে অর্ণবকে।
–বাবা আসবো।
–হে আম্মু আসো।
–দেখো তোমার পছন্দের খাবার নিয়ে এসেছি। রাগ করে থাকে না বাবা। দেখো সবাই তো আর সব কিছু বুঝে না। ফুপি না হয় ভুল করে ফেলেছে। তুমি ঐসব মনে রেখো না।
–ভালো লাগছে না আম্মু।
হাফেজা বেগম অনেক বুঝিয়ে ছেলের রাগ ভাঙ্গাতে সক্ষম হলো। অর্ণব মিষ্টি জাতীয় খাবার বেশ পছন্দ করে। তাই তো অর্ণব এলে ই হাফেজা বেগম মিষ্টি জাতীয় খাবার বানাতে ব্যস্ত থাকে। ছেলেকে খাইয়ে চলে যায় হাফেজা বেগম। অর্ণব আবার ফোন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লো।
যখন ই দেখবো তখন ফোন নিয়ে ব্যস্ত কী আছে ফোনে আল্লাহ ই জানে।
–আসতে পারি স্যার।
অর্ণব চোখ তুলে দরজায় তাকাতে ই দেখে পরিণীতা দাড়িয়ে আছে।
–ইচ্ছে হলে আসুন। না হয় নাই।
–হে আমার তো প্রয়োজন তাই আসতে হবে। সরি।
–প্রয়োজন ছাড়া কী আসা যায় না নাকি। আর সরি ই বা কেনো বললেন।
–এইযে আমার জন্য আপনার মন খারাপ হয়ে গেলো।
–আরে ঐ টাইমে একটু রেগে গিয়েছিলাম। আপনি কিছু মনে করবেন না।
পরিণীতা কোনো উওর না দিয়ে ই চলে গেলো। অর্ণব বুঝতে পারলো বেশ অভিমান করেছে।
—————–
“”পরী “”
ডাকটা শুনে পিছনে তাকাতে ই দেখে ইলা।
–জি আপু বলুন
–কেমন লাগছে এইখানে।
–এইতো ভালো।
–তুমি কী জানো অর্ণব আমার নিজের ভাই না।
চলবে