#পুতুল_বউ
#Afxana_Junayed
#পর্ব_২৬
“জ্যোৎস্না বিলাস হলো তোর?”
কনকনে শীতের রাত!গায়ে একটা মকমলের চাদর জড়িয়ে হোস্টেলের ছাদে উঠে তিতলি উদ্দেশ্য তার হোস্টেলের রুমমেটকে ডাকা।কিছুটা সামনেই রেলিং এর উপর উল্টো হয়ে বসে আছে মেয়েটি,লম্বা চুল গুলো বিছিয়ে মাটিতে ছুঁই ছুঁই!যেনো একটা আস্তো পুতুল তার লম্বা কেঁশ নিয়ে বসে আছে,হ্যা এটাই পুতুল।
আকাশে আজকে তারার মেলা হাজারো তারার মাঝে গোলাকার চাঁদটা দৃশ্যমান। প্রায় ঘন্টা খানেক আগে তাকে বলে ছাদে এসেছে পুতুল এখনো কক্ষে ফিরে যাওয়ার নাম নেই।হোস্টেলর কেউ যদি একবার দেখে না ছাদে কাউকে,তাহলে সবার নাস্তানাবুদ করে ছাড়বে।আর এই কন কনা শীতে কিভাবে ছাদে বসে আছে এই মেয়ে সেটাই ভেবে পায়না তিতলি।ছাদে এসে প্রশ্নটা করতেই পুতুল পেছনে তাকায়।তিতলিকে ওভাবে কুঁকড়িয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে সৌজন্য হাসে,রেলিং থেকে সাবধানতার সাথে নেমে তিতলির কাছে এসে বলে,
-হুম হয়েছে,তুমি কেনো আসলে আমি তো এক্ষুনি যেতাম।
-হুম হয়েছে,কতক্ষণ ধরে তোমার অপেক্ষা করছি সে খেয়াল কি আর তোমার আছে?
-আরেহহ দেখো না প্রজাপতি আকাশে কত চারা,পূর্ণিমার চাঁদের সাথে এতো তারা কখনো দেখেছো?এগুলো প্রাণ ভরে না দেখে কি আর যাওয়া যায় বলো।
-প্রজাপতি না তিতলি!
-যাই হোক তুমি আমার কাছে একটা রঙিন প্রজাপতি।
-আচ্ছা এখন চলো নয়তো দারোয়ান চাচা দেখলে স্যারের কাছে বিচার যাবে।
-হুম চলো।
আস্তে আস্তে পা ফেলে তারা সিঁড়ি দিয়ে নিচে নেমে যায়।নতুবা হোস্টেলর কাক পক্ষিও যদি টের পায় এতো রাতে কোনো স্টুডেন্ট ছাদে ছিলো তাহলে আর তাদের রক্ষে নেই।
ভেতরে আসতেই তিতলি পড়ার টেবিলে বসতে বসতে পুতুলকে বলল,
-আমি একটু পড়ে নি।ততক্ষণে তুই ব্যাগপত্র গুছিয়ে নে,তারপর সারারাত গল্প করবো তোর সাথে।কালকে তো চলেই যাবি,মিস করবো তোকে পুতুল।
পুতুল মুচকি হাসে,নিজের সাজানো আলোয় ঝমকালো বেডের কাছে যায়,সাইডে ড্রয়ার থেকে নিজের সব জিনিসপত্র বের করতে থাকে,হঠাৎ তার হাতে আসে একটা কালো রঙের ডায়েরি!ডায়েরির কয়েক পৃষ্ঠা উল্টানোর সাথে সাথে বেড়িয়ে আসে শুকিয়ে কাগজ হয়ে যাওয়া কালো গোলাপ গুলো।সাথে দুটো চিরকুট!
হ্যাঁ কেটে গেছে দুইটা বছর পালটে গেছে সব কিছু।যেমনটা হওয়ার কথা ছিলোনা ঠিক তেমন টাই হয়েছে,সেদিন সামির চলে গিয়েছে ঠিকি কিন্তু তার সব প্রশ্নের জবাব দিয়ে যায় নি।আর সব জানার মাত্র একটা উপায় ছিলো সেটা হচ্ছে সিজান।সামির চলে যাওয়ার তিনদিন পর পুতুল সিজানের সাথে একা দেখা করে,সিজান হয়তো বুঝে গিয়েছিলো পুতুল তাকে কেনো ডেকেছে তাই আগে থেকেই সব প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলো।সেদিন পুতুল একাই যায় লেকের পারে,সিজানকে অনেক্ষণ জেরা করার পর সিজান তাকে সবটা খুলে বলে,
‘সামির বাংলাদেশে এসেছিলো একটা কারণেই,সেটা হচ্ছে তার দাদু আর ছোট বোন সিজার হ’ত্যা কারীদের ধরতে,কারণ তার ধীর বিশ্বাস ছিলো সেদিন সিজাদের এ’ক্সি’ডে’ন্ট হয়নি করানো হয়েছে। আর সবটাই প্ল্যান মাফিক।আর তাদের ধরার দায়িত্ব ছিলো সিজানের কিন্তু একটু ভুলের জন্য সে পারেনি গন্ডগোল হচ্ছিলো ইমনের মা এর কারণে।তাই সামির কাউকে না জানিয়ে দ্রুত বিডিতে আসে।আর সেদিনই আকস্মিক পুতুল আর সামিরের রাস্তায় ছোট খাটো এ’ক্সি’ডে’ন্ট হয়।
আস্তে আস্তে যখন পুতুলের পরিবারে ঝামেলা হয় তখন সামির প্ল্যান করে পুতুলকে তাদের বাসায় নিয়ে আসে,কারণ তার ইমনের পরিবারের উপর সন্দেহ হচ্ছিলো।তারপর সিজান আসে,সিজান পুতুলের সাথে ভালো ভাব করে নেয়,সে বার বার সামিরকে ফোর্স করছিলো পুতুলকে কাজে লাগিয়ে তদন্ত করলে সব বেড়িয়ে আসবে।কিন্তু সামির তা করে নি,বলতো পিচ্চি মেয়ে ও কি করবে।তারপর তাদের সন্ধানে এলো রাকি।যে সামিরের ছোট বেলার বন্ধু ছিলো সামিয়া আন্টির চোখের মনি ছিলো,নিজের মেয়ের মতো করে স্নেহ করতেন কিন্তু হঠাৎ সে বিয়ে করে উধাও হয়ে যায়।সিজান তাকে খুঁজে বের করে,কিন্তু তা সামিরকে জানানোর আগেই পুতুলের বাবার এক্সিডেন্ট হয়।সেখানে আবার আরেক ঝামেলা ইমন নানা ভাবে তাদের ব্লাকমেইল করতে থাকে,যখন সামিরকে বলা হয় রাকির কথা,কিন্তু ততক্ষণে কাহিনির মূল বিন্দু রাকির হাসবেন্ড অর্থাৎ আরাফাতের মৃ’ত্যু হয়।যেটা করে রাকি নিজেই।সব ঘটনা জানার পর সামিরের ভীষণ রাগ হয় ঠিক তখনি রাকি নিজেকে গু’লি করে কিন্তু ভাগ্যক্রমে সামির তাকে বাচিঁয়ে নেয়।সেদিন সামিরের হাতধরা মেয়েটা রাকি ছিলো।আর এইসবের পেছনে দায়ি ছিলো ইমনের বাবা ইয়াসিন আর তার দ্বিতীয় বউ।যাকে সে প’তি’তা’লয় থেকে এনেছিলো।গ্রামের মানুষ ইমনের উপর বি’র’ক্ত হলেও তার বাবা যে কতটা জ’ঘ’ন্য তা প্রকাশে আসে নি,কারণ ইমনের মা।সে তার স্বামী আর ছেলেকে বাচানোর জন্য সব কিছু লুকিয়ে রেখে বেচে আছে।সবাই জানতো ইমনরা জেলে রয়েছে,কিন্তু ইমনরা আসলে ছিলো সামিরের হাতে বন্দি।কারণ সে চায় না তার বোন আর দাদুর খু’নী কম স্বাস্তি পাক।মারজিয়া আর সিজানের জন্মদিনের পরের দিন সকাল বেলা সামির পুতুলদের গ্রামে যায়,ইয়াসিনের প্রথম স্ত্রীর সাথে দেখা করতে।সবটা বলার পর মহিলাটি সামিরের পায়ে পরে অনেক কান্নাকাটি করে মাফ চায় যাতে তার ছেলের কিছু না করে,সামির একটু দমে যায়,ইমনকে দ্রুত জেলে পাঠিয়ে দেয়,আর বলে পুতুলের বাবা অর্থাৎ চেয়ারম্যানের কাছে গিয়ে মিথ্যা নাটক করে,ইমন কে জেল থেকে বের করে দেশের বাহিরে পাঠিয়ে দিতে,আর তিনি তাই করেন।সব কাজ সলভ হওয়ার পর পর সামিরের ফ্লাইট পরে যায়,চলে যায় আবার দু বছরের জন্য।
পুতুল সেদিন সবটা শুনে সত্যি অবাক হয়।তার চেয়েও অবাক হয় এটা যেনে যে,এইসব তার ভাই প্রণয় জানতো।তার শালিকার ধ’র্ষ’ণ হয়েছে এটা যেনেও সে চুপ ছিলো?আর সিজা!দাদু তাদের জন্য অনেক খারাপ লাগে।
তার কয়দিন পর পুতুলকেও ঢাকা পাঠিয়ে দেওয়া হয় পড়ালেখার জন্য। যখন বাবা মা ভাইয়া ভাবি স্নিগ্ধা মারজিয়াকে ছেড়ে ঢাকা নামক একটা অচেনা শহরে উঠেছিলো তখন মামা ছাড়া কাউকে সে ভালো করে চিনত না।আশেপাশে অনেক হোস্টেল খোজার পরেও যখন বিশ্বেস্ত কোনো ঘর খুঁজে পাচ্ছিলো না,তখন এই তিতলি নামক প্রজাপতি মেয়েটা তার হোস্টেলে নিয়ে যায়,কিন্তু সেখানে কোনো রুম খালি ছিলো না।তারপর সে যে রুমে থাকে সেখানে নিয়ে যায়।এরপর থেকে তারা এক সাথেই থাকে।তিতলি তার থেকে তিন ইয়ারের বড়,আপাতত ভার্সিটির সব চেয়ে সিনিয়র আপু বলা চলে।তবুও তাকে ছোট বোনের মতো স্নেহ করে এতোদিন তার কাছে রেখেছে।কয়দিন পর তার ফাইনাল এক্সাম তাই এখন সারাক্ষণ পড়ার মধ্যে দিয়েই থাকতে,কালকে পুতুল আবার তাদের বাড়ি যাবে।এর একটা বিশেষ কারণ ও আছে,আর সেটা হচ্ছে মারজিয়ার বিয়ে।
হ্যা সিজান সত্যি মারজিয়াকে ভালোবাসত মারজিয়াও আস্তে আস্তে তা টের পায়।পুতুল ঢাকা আসার পর পর তাদের আস্তে আস্তে প্রেম হয় তারপর বিয়ে।
রাতে পুতুল আর তিতলি কিছুক্ষণ গল্প করে ঘুমিয়ে যায়।ফাইনাল এক্সামের পর সেও বিয়ে করে নিবে বলেছে,পরিবার থাকে রাজশাহী সেখান থেকে বিয়ের জন্য অনেক চাপ দিচ্ছে।
সকালে প্রণয় পুতুলকে নিতে আসে,ঢাকা থাকা কালীন প্রায় প্রণয় তার সাথে দেখা করে গিয়েছে।পুতুল তিতলির কাছ থেকে বিদায় নিয়ে গাড়িতে উঠে বসে।অনেক্ষণ জড়িয়ে ধরে ছিলো তারা আসার আগে প্রণয় তিতলিকে অনেক গুলা ধন্যবাদ দিয়ে আসে এতোদিন তার কাছে রাখার জন্য।টাকা দিতেও চেয়েছিলো কিন্তু তিতলি নেয় নি,বরঞ্চ অনুনয় স্বরে বলেছে,
-এতোদিন যে লুকিয়ে আপনি আর আঙ্কেল আমার বাবা মার খরচ চালিয়েছেন,আমার পড়ালেখার খরচ দিয়েছেন সেটা আমি জানি।এটার জন্য আপনাদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ!পুতুলকে দেখে রাখিয়েন পিচ্চিটাকে মিস করবো।
প্রায় চার ঘন্টা জার্নি করার পর অবশেষে পুতুলরা গ্রামের রাস্তায় আসে।সামনের বোর্ডে নিজের গ্রামের রাস্তা দেখেই একটা প্রশান্তি শ্বাস নেয়।লেকের ব্রিজের সামনে আসতেই মনে পরে যায় সেই স্মৃতিচারণ দিনগুলোর কথা।
চেয়ারম্যান বাড়ির ভেতর গাড়ি ঢুকতেই সবাই যেনো ঝাক ধরে আসে।গাড়ি থেকে নামতেই ঝড়ের গতিতে স্নিগ্ধা এসে পুতুলকে ঝাপটে ধরে,সবার সাথে কথা বলে,ভাবি প্রেগন্যান্ট!দ্বিতীয় সন্তান আসতে চলেছে চেয়ারম্যান বাড়ি।স্নিগ্ধাও অনেকটা বড় হয়ে গিয়েছে,আসার পর থেকেই সবাই খুব যত্ন করছে তাকে এটা বলছে ওটা দিচ্ছে,কিন্তু আপাতত তার এইসব ভালো লাগছে না তাই ভাবিকে বলে নিজের ঘরে চলে আসে।ঘরে এসে আরেক দফা অবাক হয়,এটা আসলেই তার ঘর?টিয়া কালারের দেয়াল গুলো নীল রঙের হয়েছে,কোনার ছোট্ট চৌকিটার যায়গায় বিলাশ বহুল সাদা ফকফকা বেড।আরো অনেক কিছু পরিবর্তন হয়েছে,বুঝতে পারে বাবার টাকার পরিবর্তনের সাথে সাথে ঘর বাড়িও পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে।
দীর্ঘ শ্বাস টেনে ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসে পুতুল।চিকন কাঠ ড্রেসিং টেবিলটা বদলিয়ে বড় লাইট ওয়ালা ড্রেসিং টেবল এনেছে,সেখানেই সব কিছু সাজানো আছে।সামনে থেকে চিড়ুনি নিয়ে নিজের চুল আচরাতে খেয়াল করে তার পেছনে কেউ আছে,ভ্রু কুঁচকে আয়নায় ভালো করে দেখে তার মা।
-আরেহ আম্মু তুমি এখানে,আমি তো ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।
পুতুলের মা থামে!তার গভীর চোখগুলো দিয়ে মেয়েকে পর্যবেক্ষণ করতে থাকে,হঠাৎ তার চোখ পানিতে টলমল করে উঠে এক পর্যায়ে ফুপিয়ে উঠে।পুতুল এইবার বোকা বনে চলে যায়।মাকে ধরে বিছানায় বসিয়ে জিজ্ঞেস করে কি হয়েছে,কিন্তু তার কান্নার ব্যগ আরো বেড়ে যায়।পুতুল এইবার খানিকটা বিরক্ত হয়ে বলে,
-আরেহ কি মা বাচ্চাদের মতো কান্না করছো,কি হয়েছে বলবে তো।
পুতুলের মা এইবার পুতুলের সারামুখে পিঠে হাত বুলাতে থাকে,
-কিরে মা এমন শুকিয়ে গিয়েছিস কেনো,সেখানে কি ঠিক মতো খাওয়া দাওয়া করিস নি?আমি তোর বাবাকে কত করে বললাম মেয়েটাকে আমাদের থেকে দূরে পাঠিও না শুনলো না।দেখলিতো তোর কি অবস্থা।
-উফফ মা তাহলে এই ব্যপার কই আমি শুকিয়েছি?আমি তো সেখানে টাইমটু টাইম একদম খেয়েছি আর তিতলি আপু ছিলো না,সে তো আমাকে একদম তোমার মতো ট্রিট করেছে।অনেকদিন পর দেখছো তো তাই এমন মনে হচ্ছে।পুতুল একদম পুতুলের মতোই আছে দেখো।
-হুম
-এখন এইসব কান্না থামাও আমার আবার মারজিয়াদের বাসায় যেতে হবে,ওকে সারপ্রাইজ দিবো ওতো জানেনা আমি আজকে এসেছি।
-হুম মেয়েটারো বিয়ে হয়ে যাচ্ছে।তোকেও দিতে হবে।
-আসতে না আসতে আবার অন্য বাড়ি পাঠিয়ে দিতে চাচ্ছো মা?
পুতুলের মা কিছু বললেন না,চেয়ে রইলেন মেয়ের দিকে।
একটু বিশ্রাম নিয়ে পুতুল মারজিয়াদের বাসায় যায়।দোয়াড় দিয়ে যাচ্ছিলো মারজিয়া পুতুলের মতো মেয়েকে দেখে থমকে যায়,প্রথমে তো বিশ্বাসি হচ্ছিলো না।পুতুল দৌড়ে এসে মারজিয়াকে জড়িয়ে ধরে,যখন বুঝতে পারে এটা পুতুল তখন অজান্তেই চিৎকার দেয়।কিয়ৎক্ষণ পর হাউমাউ করে কেঁদে দেয়।পুতুলো তার চোখের পানি ধরে রাখতে পারে না,মারজিয়া যেনো কোনো একটা শকের মধ্যে ছিলো।বিয়ে বাড়ি বলে সেখানে মানুষের বাহার ছিলো কিন্তু কাউকে তোয়াক্কা না করে মারজিয়া পুতুলকে জড়িয়ে ধরে চিৎকার করে কেঁদেছে।
আজ মারজিয়ার গায়ে হলুদ,পুতুল মারজিয়ার ঘরে বসে বসে তাকে সাজাচ্ছে কম কথা বলছে বেশি আর পুতুলের কথা শুনে মারজিয়া লজ্জা পাচ্ছে বেশি বেশি।
-হু মারজু তখন তো খুব বড় বড় মুখ করে বলতি সিজান আপু লুচু সিজান আপু ওইটা সেইটা।এখন তারই বিবি হয়ে যাচ্ছিস।হুম তাই বলি কখন কার সাথে কি হয়ে যায় কেউ বলতে পারে না।
-তুই চুপ থাক,এতদিন পর এসে একটু ভালো কথা বলবি না শুধু লজ্জা দিচ্ছিস।
-ওমা তুই আবার লজ্জা পাস?তাই তো বলি সিজান আপু তোকে লাল টমেটো বলে কেনো।
-চুপপপপপ!
মারজিয়াকে সাজিয়ে দেয় পুতুল।তার একটু রেডি হওয়া দরকার তাই সে অন্য আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে সাজতে থাকে।ওদিকে সিজানদের বাড়ি থেকে মানুষ এসেছে বউকে হলুদ দিবে বলে,তাই মারজিয়ার মা পুতুলের হাতে মিষ্টির প্লেট দিয়ে তারা দেয় জলদি করে স্টেজে যেতে।মিষ্টি নিয়ে যাওয়ার সময় কিছু রস পুতুলের জামায় পরে,পুতুল সেটার দিকে তাকিয়ে আফসোস করে, ‘ইশশ তার সাদা জামাটা’। এক হাত দিয়ে প্লেট ধরে আরেকহাত দিয়ে জামাটা ঝাড়া দিয়ে উপরে তাকায়।সেকেন্ডেই সব মিষ্টি তার উপর পরে যায়।কিন্তু সেদিকে খেয়াল নেই তার,চোখ গুলো রসগোল্লার চেয়েও বড় বড় করে তাকায় সামনের দিকে, “সামির?”
এদিকে কিছু পড়ার শব্দ পেয়ে মারজিয়ার মা আসে,পুতুলকে এইভাবে মিষ্টি দিয়ে মাখামাখি দেখে।তার হাত ধরে ভেতরে নিয়ে যেতে থাকে,কিন্তু পুতুলের হুশ নেই,শিউর হওয়ার জন্য কিছু স্পষ্ট দেখতে যেয়েও যেনো পারলোনা।তার আগেই মারজিয়ার মা তাকে নিয়ে গেলো সে আটকাতে পারলোনা।
চলবে..!