প্রেয়ন_পৃথুর_প্রেমসুতো পর্ব-১০(অতিরিক্ত)

0
10416

#প্রেয়ন_পৃথুর_প্রেমসুতো💖
#পর্ব_১০(অতিরিক্ত)
#লামিয়া_রহমান_মেঘলা

রাতে,
আমি রুমের জানালার কাছে বসে আছি।
জানালার পাশে খানিকটা উঁচু জায়গা আছে ওখান থেকে চাঁদটা খুব সুন্দর ভাবে দেখা যায়।
বসে আছি আমি সেখানে।

এরি মধ্যে প্রেয়ন ঘরে আসলো। বাসন্তী রঙের শাড়ি পরে আঁচল ঝুলিয়ে বসে আছে পৃথুলা৷
চাঁদের আলোতে অসম্ভব সুন্দর দেখাচ্ছে পৃথুলাকে।
প্রেয়নে কাছে এটা তো একটা পরির থেকে কম কেউ নয়৷
বুকের মধ্যে ধুকপুক শব্দ শুনা যাচ্ছে।
থম থম পরিবেশ।
পরিকে যেন নিরবতা দেখতে আরো বেশি সুন্দর দেখাচ্ছে।
প্রয়ন এক পা, এক পা করে পৃথুলার কাছে এগিয়ে আসে।
এটা হয়তো ভালোবাসা।
–( না না এ আমি কি ভাবছি)
–আপনি এসে গেছেন।
–তো কি সারা দিন বাইরে থাকবো (কড়া মেজাজে)
–না সেটা বলি নি। (আস্তে)
–তো তুই আমাকে কি বলছিস আমি বুঝি নি বলছিস। অসভ্য।
–অসভ্যতামি আমাকে আমার বাবা শেখান নি মি.খান মুখ সামলে কথা বলুন।
কথাটা বলে আমি ওনাকে পাশ কাটিয়ে চলে এলাম।
–কেন এমন করে আমি কি খারাপ কিছু বলেছি।
এদিকে,
–ক্ষমা করে দিস চাইলেও #প্রেয়ন_পৃথুর_প্রেমসুতো গাঁথতে পারবো না।
(তবে কি কারনের জন্য #প্রেমসুতো গাঁথা হচ্ছে না কারনটা আস্তে আস্তে বুঝা যাবে)



–এতো পড়া আমি কি করে শেষ করবো।
ও আপু তুই কই গেলি তুই আমাকে অনেক হেল্প করতি রে সোনা।
–মে আই হেল্প উ।
হটাৎ নিজের পেছনে চেনা কোন ছেলের কন্ঠ পেয়ে চমকে উঠে রাইমা৷
এতো রাতে তার রুমে কে?
–ক কে?
–নীল।
–নীল!
রাইমা পেছনে ফিরে অবাকের চরম সীমায় পৌঁছে গেল৷
সত্যি তার পেছনে নীল দাঁড়িয়ে।
–এগুলা কি হচ্ছে। আপনি আমার রুমে কি করছেন?
–কি করবো এখান দিয়ে যাচ্ছিলাম ভাবলাম তোমার সাথে দেখা করে যাই।
(রাইমার দিকে এগোতে এগোতে)
–দ দেখুন আমি বাবাকে ডাক দিবো কিন্তু আপনি আমার বাড়ি আসলেন কি করে?
–জানালা খুলা রাখলে যা হয় আর কি।
–আপনি জানালা বেয়ে এসেছেন,!
–হ্যাঁ তো কি তেমার বাবা আমার জন্য মেইন ডোর খুলা রেখেছে নাকি।
উপস সরি তেমার বাবা তো আবার প্যারালাইসেস এর রুগি৷
সো সেড।
–বেরোন আমার বাড়ি থেকে এক্ষুনি বেরোন।
–সত্যি (রাইমার অনেক কাছে গিয়ে)
–থাপ্পড় চিনেন।
–ওই পিচ্চি হাতে ১ না ১০০ টা থাপ্পড় খাইলেও সমস্যা হবে না।
–বেয়াদব ছেলে বেরোন লজ্জা লাগে না মাঝ রাতে একটা একা মেয়ের বাসায় আসতে।
–অন্য মেয়ে হলে লজ্জা লাগতো কিন্তু এটা তুমি না তাই লাগছে না।
আচ্ছা যা-ই হোক মুল কথায় আসি।
এর পর থেকে জানালা ৮ টা বাজার পর খোলা দেখলে তোমার খবর আছে।
কাল থেকে তোমায় কোচিং আমি নিয়ে যাবো আসার সময় নিয়ে আসবো।
বাই।
–মামা বাড়ির মোয়া নাকি।
রাইমার কথা না শুনেই নীল তার আসার জায়গা দিয়ে চলে গেল।
–ও মা এই ছেলে কে এগুলা কি হচ্ছে।
আপুকে বলবো।
না এমনি অনেক সমস্যা আর সমস্যা দেবো না।



কফি দুই মগ শেষ করেও আমার মাথা ব্যাথা কমছে না।
আমার জীবনে এই প্রেয়ন নামে গিট টা খোলার কেন নামি নাই।
যতো সময় যাচ্ছে তত গিটটা শক্ত হতে আছে।
ধুর আর ভালো লাগে না।
–এতো কফি খেলে আর ঘুমানো দরকার হবে না৷
–আপনার কি৷
–আমার কি হবে আমার কিছু না।
কথাটা বলেই প্রেয়ন আমাকে পাজকোলে তুলে নিলো।
–কি করছেন কি ছাড়ুন।
–বেশি বললে ফেলে দিবো কিন্তু।
–(কি সমস্যা কি এই লোকের ও মা আমার মথার উপর দিয়ে যায়)
উনি আমাকে রুমে এনে শুইয়ে দিয়ে আমার পাশে সুন্দর করে শুয়ে পরলেন।
বুঝলাম আমাকে এখন ঘুমতে হবে।
কিন্তু এমন কেন এই মানুষ টা আল্লাহ আমাকে কেউ সাহায্য করো।



সকালে,
–আমি বুঝতে পারছি না আমি কি করবো কেউ যদি আমাকে ওই ছেলের সাথে দেখে সত্যি ভাব্বে আমি প্রেম করি৷
সঙ্গে সঙ্গে কথাটা ভাইয়া জানবে।
আমাকে তো বিয়ে দিয়ে দিবে।
লোকটা যেভাবে রাতে এসে ধমক দিলো তাতে মনে হচ্ছে নিশ্চিত আসবে৷
ও আল্লাহ আমি কি করবো।
রাইমা পায়চারি করছে সারা ঘর ভরে।
এদিকে পড়তে যাবার সময় হয়ে আসছে।
–নাহ আমি কি করবো।
–রাইমা।
–কে?
–আমি আফিয়া।
–আফিয়া দোস্ত তুই আসছিস।
–হুম কিন্তু আমাদের লেট হচ্ছে তুই চল।
–আফিয়া আমি ফেঁসে গেছি।
–মানে।
–মানে শুন তবে,
রাইমা গোড়া থেকে শেষ পর্যন্ত সব খুলে বললো।
–সে কি এতো সমস্যা তুই আপুকে সব খুলে বল।
–আপু অসুস্থ রে আরো সমস্যা হটাৎ বিয়েটা হলো আমার মনে হয় না এর মধ্যে ওকে এসব জানানো উচিত।
–তাও ঠিক৷
আচ্ছা তুই চল তো দেখি কি সমস্যা নাও আসতে পারে।
–সত্যি
–হুম চল।
–আচ্ছা চল।



ফজরের নামাজ আদায় করে ওনাকে উঠিয়ে নামাজ পড়িয়ে নিলাম।
নামাজ শেষ করে নিচে এসে দেখি মা এখনো ঘুম।
তাই সবার খাবার টা আমি তৈরি করলাম।
আমার এসব কাজ করতে ভালোই লাগে।
রুটি বেলছিলাম হটাৎ মনে হলো কেউ পেছ থেকে আমাকে জড়িয়ে ধরেছে।
ঘটনা চক্রে কিছুটা ভয় পেয়ে গেলেও।
তার পর্ফিউমের ঘ্রাণ আমাকে জানান দিচ্ছে সে কে।
চুপচাপ নিজের কাজে মন দিলাম।
–বাহ আমার উপস্থিতিও টের পাস নাকি।
–(নিশ্চুপ কাজ করে চলেছি)
–পৃথু তুই কিন্তু পরির মতো সুন্দর।
–(মনে মনে হাসছি কিন্তু বাইরে প্রকাশ করছি না)
–ধুর আনরোমান্টিক মেয়ে।
–১ মাসের জন্য রোমান্টিক হয়ে লাভ কি।
–পৃথুলা।
মায়ের আওয়াজ পেয়ে প্রেয়ন আমাকে ছেড়ে ছিটকে অন্য দিকে সরে গেল।
কি লজ্জা বলো তো৷
–কি রে তুই রান্না,
ও মা তুই এতো সকালে।
–এমনি তোমার বৌ মার জন্য নামাজ পড়তে উঠি না।
–বাহ পৃথুলা যা আমি কখনো করতে পারি নি তাই করে দিলি।
–না মা তুমি কান ধরে তুললে ঠিক উঠতো।
–হ্যাঁ ঠিক বলেছিস৷
–বাহ শ্বাশুড়ি বৌ মা এক হয়ে আমাকে এক দিকে ফললে।
শোধ নিবো তো।
–তুই এতে হিংসা করিস কেন বাবা আমার বৌ কে।
–বৌ টা আমার জন্য পেয়েছো তুমি মা।
–চুপ থাক তুই।
সবাই মিলে হেসে দিলাম।

ওদিকে,
চলবে,
(বানান ভুল হতে পারে তার জন্য অগ্রিম ক্ষমা প্রার্থী)